মণি ভট্টাচার্য: ঠিক কোন আইনের ভিত্তিতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) এজলাস থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির (Primary Scam) সমস্ত মামলা? সম্প্রতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের তরফে করা অভিযোগে, অভিষেক মনু সিংভি ও কপিল সিব্বালের সওয়ালের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) এ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে শুক্রবারের মধ্যে একটি রিপোর্ট চেয়ে পাঠান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। আজ অর্থাৎ শুক্রবার ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে, সবদিক যাচাই করে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির সমস্ত মামলা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
ঘটনাটি কী ঘটেছিল: ১৩ই এপ্রিল কুন্তল ঘোষের করা একটি অভিযোগ নিয়ে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন ইডি-সিবিআই চাইলে কুন্তল ঘোষ ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারবে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের ভিত্তিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মামলার শুনানিতে গত ১৭ এপ্রিল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশে দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
তবে জাস্টিস গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ কী! ২৪শে এপ্রিল অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের পক্ষে মনু সিঙ্ঘভি ও কপিল সিব্বাল অভিযোগ করেন, 'নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় অর্থাৎ বিচারাধীন মামলায় সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কোড অফ কন্টাক্ট ভেঙেছেন। যার পরেই এর সমস্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।'
সংবাদ মাধ্যমে ঠিক কী বলেছেন জাস্টিস গাঙ্গুলি
নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিচারাধীন মামলায় সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'এরকম দুর্নীতি তিনি আগে দেখেননি, সবদিক দেখে বুঝেছি এখানে দুর্নীতি আছে।' এছাড়া তিনি পুলিস ও সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা করেন। এছাড়া গোটা মামলার গতি প্রকৃতি আলোচনা করেন।
কোন আইনে ওনার এজলাস থেকে মামলা সরল:
১৯৯৭ সালের ৭ই মে সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিচারপতিদের জীবনযাপন ও ভ্যালু নিয়ে একটি খসড়া তৈরি করা হয়, যে খসড়ার ৮ এবং ৯ নম্বর নিয়ম অনুযায়ী কোনও বিচারপতি পাবলিক ডিবেট বা কোনও জায়গায় বিচারাধীন কিছু নিয়ে তাঁর নিজস্ব মন্তব্য পেশ করতে পারবেন না। এমনকি কোনও রাজনৈতিক বক্তব্যও প্রকাশ্যে করতে পারবেন না। এ ছাড়া ওই খসড়ার ৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী কোনও বিচারপতি কোনও সংবাদ মাধ্যমকে বিচারাধীন কোনও বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না। এছাড়া ব্যাঙ্গালোর প্রিন্সিপালস অফ জুডিসিয়াল কন্ডাক্ট, ২০০২ নামক একটি নিয়মাবলী তৈরি হয় বিচারক ও বিচারপতিদের জন্য। সেই নিয়মেও তিনি কোনও সংবাদমাধ্যমকে বিচারাধীন কোনও বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে পারবেন না। যদিও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সাক্ষাৎকারের সময় বলেছিলেন তিনি ব্যাঙ্গালোর প্রিন্সিপালস অফ জুডিশিয়াল কন্ডাক্ট মেনেই কথা বলছেন এবং সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, আইন নিয়ে কোন বিচারপতি কোন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে।