প্রসূন গুপ্ত: আজ থেকে ৯ বছর আগে এই ধর্মতলাতে ৩০ নভেম্বর জনসভা করেছিল তৎকালীন রাজ্য বিজেপির পরিচালন মন্ডলী। সেদিনও প্রধান বক্তা ছিলেন অমিত শাহ , যদিও তখন তিনি সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন বিজেপির। বেশ ভিড় হয়েছিল রাহুল সিনহার নেতৃত্বে। এটা বাস্তব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২১ জুলাইয়ের বিষয় একেবারেই ভিন্ন সুতরাং ওই দিনের সঙ্গে তুলনা করা ছেলেমানুষি হবে। সেবারে উদ্দেশ্য একটি ছিল নিশ্চই যে সদ্য ক্ষমতায় এসেছিলো বিজেপি কেন্দ্রে এবং নতুন সভাপতিকে বরণের বিষয় ছিল কিন্তু বুধবার রাজ্য বিজেপির কোনও এজেন্ডাই ছিল না। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সামনে লোকসভা নির্বাচন কাজেই ধর্মতলায় ভিড় জমিয়ে তাঁর কোনও সুবিধা নেই কিন্তু ভোট প্রচারের টেম্পোটি তুলে দিলে মন্দ কি। অন্যদিকে বিধানসভার বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বছর দুয়েক আগেও তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রী ছিলেন কাজেই তিনি জানেন ধর্মতলার মহিমা কিন্তু যে কোনও এই ধরণের হাই প্রোফাইলের নেতাকে নিয়ে জনসভার নিশ্চই কোনও উদ্দেশ্য থাকবে যা কিনা অনুপস্থিত ছিল আজ।
সভা শুরু হয়ে যায় দুপুরের আগেই। তখন কোনও কোনও নেতারা ভাষণ দিতে থাকেন। কিছু গান বাজনা ইত্যাদি ছিল। এরপরেই মূল সভা শুরু হয়ে যায় মধ্য দুপুরে। মঞ্চে দিলীপ ঘোষ , সুকান্ত মজুমদার বা শুভেন্দুকে অন্যান্য নেতাদের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। ভিড়ে বাড়তে শুরু হয় তখনই যদিও রাহুল সিনহার ২০১৪ র জনসভাকে টেক্কা দিতে পারলো না আজকের জনসভা।
যতটা ঝাঁজ ছিল শুভেন্দু বা অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যে ততটাই মামুলি ছিল প্রধান বক্তা অমিত শাহের ভাষণ। ধুরন্ধর এই রাজনৌতিক নেতা যেন কিছুটা বাংলার নেতাদের আবদার রাখতেই মঞ্চে উঠেছিলেন। অমিত ভাষণে বারবার নরেন্দ্র মোদির কৃতিত্ব তুলে ধারা হয়। অমিত একেবারে কাগজ তুলে জানান যে ইউপিএর আমলে বাংলা যতটা বঞ্চিত হয়েছে ততটাই সুবিধা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আসন্ন লোকসভাতে রেকর্ড ভোট যাতে বাংলার মানুষ দেয় তার আবেদনও ছিল ভাষণে। তিনি বার দুয়েক জানালেন যে আসন্ন ২০২৬ এর নির্বাচনে বিজেপি এই রাজ্য থেকে দুই তৃতীয়াংশ আসন পাবে। কিন্তু বুদ্ধিমান অমিত জানেন এতো দ্রুত বিধানসভার প্রচার করে লাভ নেই। একবার জেলে বন্দি তৃণমূল নেতাদের নাম করলেন, একবার 'ভাতিজা' কথাটি উঠে এলেও বেশি আক্রমণে গেলেন না তিনি। দ্রুত শেষ করলেন তাঁর বক্তব্য। শেষ পর্যন্ত বোঝা গেলো না বুধবারের ধর্মতলার জনসভার উদ্দেশ্যটি কি ছিল ?