সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ খারিজ হতেই শনিবার সকালেই এসএসকেএম-এ হাজির জ্যোতিপ্রিয়র কন্যা ও দাদা। রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় (Ration Scam) ইডির হাতে গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick)। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগে রাখা হয়েছে তাঁকে। তাঁর কেবিনের ভিতরে সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও শুক্রবারই সেই নির্দেশকে খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এবারে সিসিটিভির বদলে কেবিনের বাইরে সিআরপিএফ-এর নিরাপত্তারক্ষী রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ খারিজ হতেই শনিবার সকালে এসএসকেএম-এ হাজির বালু কন্যা প্রিয়দর্শিনী ও দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক।
আদালতের নির্দেশ মত, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কেবিনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ আধিকারিকরা নিয়ে এলেন রেজিষ্টার। রেজিষ্টার নিয়ে কার্ডিওলজি বিভাগে ঢুকলেন দুজন সিআইএসএফ আধিকারিক। এর পরই সকাল ১০ টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগে বাবাকে দেখতে এলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিক ও দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক। মিনিট দশেক কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টে থেকে প্রবেশ করলেন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিংয়ে। কেন এসেছেন, কেমন দেখলেন, এসব প্রশ্ন করাতে কিছুটা বিরক্ত বোধ করলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। অন্যদিকে বালুর দাদাকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি হাইকোর্টের নির্দেশ দেখতে বললেন সংবাদমাধ্যমকে।
আবার কিছুটা বেলা গড়াতেই জ্যোতিপ্রিয়র কেবিনে প্রবেশ করলেন সিআরপিএফ জওয়ানের সঙ্গে ইডির আধিকারিকরা। কার্ডিওলজি ইমার্জেন্সিতে আরও ৬ জন সিআরপিএফ জওয়ান প্রবেশ করেন।
এসএসকেএম-এ (SSKM) 'কালীঘাটের কাকু'র মেডিক্যাল রিপোর্ট বিকৃত করা হচ্ছে, এমন দাবি আগেও করা হয়েছে ইডির তরফে। এবারে কলকাতা হাইকোর্টে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর শারীরিক অবস্থা প্রশ্নের মুখে। এর আগে বারবার ইডি প্রশ্ন তুলেছে, কালীঘাটের কাকু কতটা অসুস্থ সেটাই তাদের কাছে স্পষ্ট নয়। অথচ তারা কোনওভাবেই কাকুর কণ্ঠের নমুনা নিতে সফল হচ্ছে না। শুক্রবার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের জামিন মামলায় আরও একবার সে প্রশ্নই উঠল। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। কাকুর অসুস্থতাকে 'বানানো গল্প' বলেই মনে করছে ইডি। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক অবস্থা জানিয়ে এবং কেন তাঁকে জামিন দেওয়া যাবে না, সেই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের। অন্তর্বর্তী জামিনের শুনানি আগামী ১৯ ডিসেম্বর।
জামিন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে জামিনের আর্জি করেন তিনি। বৃহস্পতিবার দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ‘কাকু’র আইনজীবী। শুক্রবার এই মামলার শুনানির সময় ইডির দাবি, কালীঘাটের কাকুর মেডিক্যাল রিপোর্ট বিকৃত করা হচ্ছে। এছাড়াও এদিন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি তাঁর জামিনের বিরোধিতা করে জানান, সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে যে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নয়, জামিনের বিষয় বিচার করতে হবে। এসএসকেএম-কে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। এসএসকেএম বলছে রোগী উঠতে পারছে না। অথচ সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে তিনি সোফায় বসে আছেন। সিস্টেমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন হচ্ছে। তাই ইএসআই-তে চিকিৎসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে ইডি। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামীকালই তাঁকে এসএসকেএম থেকে ইএসআই তে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করাতে চায় ইডি।
এদিন সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী কিশোর জানান, 'হার্টের অপারেশনের পর তিনি জেলে গিয়েছিলেন কিন্তু সেখানে বমি শুরু হয় সেই জন্য তাঁকে হসপিটালে আনা হয়।' আবার ইডির আইনজীবী জানান, 'মেডিক্যাল সার্টিফিকেট সব ম্যানুফ্যাকচার করা হচ্ছে। কালকে ইএসআই-তে নিয়ে যাওয়া হোক। এরপরই আগামী ১৯ ডিসেম্বর সুজয়কৃষ্ণের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ইডির বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
শারীরিক অবস্থার উন্নতি। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ এসএসকেএম-এর আইসিইউ থেকে কার্ডিওলজি কেবিনে সরানো হল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে। বুধবারও মোটামুটি সুস্থ রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারির পর থেকেই একাধিকবার অসু্স্থ হয়েছেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ। বেশ কয়েকমাস ধরেই এসএসকেএমের নিরাপদ আশ্রয়ে বহাল তরিয়তে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও এখনও অবধি কাকুর টিকিও ছুঁতে পারেননি ইডি আধিকারিকরা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এসএসকেএম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে প্রতিদিনই মেডিকেল রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে ইডিকে। এই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, ধমনীতে ক্যালসিয়াম জমে গিয়েছিল, রক্তচাপ ওঠানামা করছিল সুজয় বাবুর।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার থেকে এসএসকেএম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে আইসিসিইউতে শিশুদের সংরক্ষিত বেডে ভর্তি ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। জানা গিয়েছিল, আইসিসিইউ থেকে বার করা হলেই, সুজয়কৃষ্ণকে নিয়ে যাওয়া হবে, জোকা ইএসআই হাসপাতালে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য। এই কারণে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছিল এসএসকেএমের কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিসিইউ-এর বাইরে। পাশাপাশি গত সোমবার থেকেই ২ জন করে ইডি আধিকারিক এবং দুজন সিআইএসএফ এর নিরাপত্তারক্ষী থাকছেন কালীঘাটের কাকুর নজরদারিতে। এমনকি কাকুর জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ৫জি অ্যাম্বুলেন্সেরও।
তবে বিভিন্ন টালবাহানায় আটকে রয়েছে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের পরীক্ষা। এক্ষেত্রে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগও উঠে এসেছে। এবার কী পদক্ষেপ করবে ইডি? কবে হবে কণ্ঠস্বর পরীক্ষা? সেদিকেই নজর সকলের।
রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী মদন মিত্র একাধিক সমস্যা নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দিন দশেক আগে শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে। হঠাৎই হাইপক্সিয়ার ফলে তাঁর খিঁচুনি ওঠে। পড়ে গিয়ে ভেঙে যায় বাঁ কাঁধের হাড়। উডবার্ন ব্লক থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় হাসপাতালের মেইন ব্লকে। রবিবার তাঁর জন্য গঠন করা হয় মাল্টি ডিসিপ্লিনারি বোর্ড। সেই বোর্ডের চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ বুধবার এসএসকেএম-এর ট্রমা সেন্টারে কাঁধের অস্ত্রোপচারের জন্য সকাল ১০টায় নিয়ে যাওয়া হয় মদন মিত্রকে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা থেকে শুরু করে এমআরআইও করা হয় কালারফুল বয় মদন মিত্রের। আপাতত খুব একটা স্থিতিশীল নন মদন মিত্র। ভাঙা হাড়ের অসহ্য যন্ত্রণাতে কষ্ট পাচ্ছিলেন। সেই খোশমেজাজের মদন মিত্র এই মুহূর্তে হাসপাতালে অসুস্থতার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন। তাঁর অনুগামীদের অপেক্ষা, কবে আবার তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন। কবে আবার 'ওহ লাভলি' শুনতে পাবেন কামারহাটির বিধায়কের গলায়।
বেশ কয়েকমাস ধরেই এসএসকেএমের নিরাপদ আশ্রয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও এখনও অবধি কাকুর টিকিও ছুঁতে পারেননি ইডি সিবিআই আধিকারিকরা। গত শুক্রবার থেকে এসএসকেএম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে আইসিসিইউতে শিশুদের সংরক্ষিত বেডে ভর্তি রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। মঙ্গলবার পঞ্চম দিনে পড়ল কাকুর এই আইসিসিইউ যাত্রা। ইতিমধ্যেই কাকুর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির রিপোর্ট এসে গিয়েছে এবং সেই রিপোর্টে তেমন ভয়ের কারণ উঠে আসেনি। আর এই সুযোগকেই এবার কাজে লাগাতে চাইছে ইডি। গত সোমবার সরাসরি এসএসকেএমের আইসিসিইউতে পৌঁছে গেলেন ইডি আধিকারিকরা। এই কদিনে শারীরিক অবস্থার কতটা উন্নতি হয়েছে ভদ্র কাকুর, তা খতিয়ে দেখতেই এসএসকেএমে পৌঁছন ইডি কর্তারা।
সূত্রের খবর, আইসিসিইউ থেকে বার করা হলেই, সুজয়কৃষ্ণকে নিয়ে যাওয়া হবে, জোকা ইএসআই হাসপাতালে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য। এই কারণে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে, এসএসকেএমের কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিসিইউ -এর বাইরে। পাশাপাশি গত সোমবার থেকেই ২ জন করে ইডি আধিকারিক এবং দুজন সিআইএসএফ এর নিরাপত্তারক্ষী থাকছেন কালীঘাটের কাকুর নজরদারিতে। এমনকি কাকুর জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ৫জি অ্যাম্বুলেন্সেরও।
তবে বিভিন্ন টালবাহানায় আটকে রয়েছে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের পরীক্ষা। এক্ষেত্রে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগও উঠে এসেছে। আর ঠিক কতদিন এসএসকেএমের শিশুর বেড দখল করে থাকবেন কালীঘাটের কাকু? এ প্রশ্নের উত্তরে কার্ডিওলজির বিভাগীয় প্রধান জানান, বেশি দিন রাখা সম্ভব নয় আইসিসিইউতে, তবে সব কিছুই পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে। প্রায়শই বেড না পাওয়ার অভিযোগ শুনতে পাওয়া যায় এসএসকেএমের বিরুদ্ধে। তারপরেও রীতিমত শিশুর বেড দখল করে ৫ দিন ধরে সেখানে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। বেশ কয়েক মাস ধরে কী এমন চিকিৎসা চলছে তাঁর? পাশাপাশি কাকুর ভবিষ্যতই বা কী? আদৌ কি তিনি কথা বলবেন? আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।
এসএসকেএম হাসপাতাল নিয়ে একের পর এক অভিযোগ রোগীদের। সেখানে রাজ্যের সাধারণ মানুষ ভর্তি হতে গেলে শিকার হচ্ছেন হয়রানির। অথচ শাসক দলের নেতৃত্বদের জন্য সবসময় দরজা খোলা এসএসকেএমে। প্রশ্নের মুখে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবারও এসএসকেএম হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠে আসে একই অভিযোগ। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে রোগী এমারজেন্সিতে রয়েছে কিডনি, লিভার,হার্টের সমস্যা নিয়ে। তবুও হাসপাতালের তরফে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রোগীর পরিবারের। জানা গিয়েছে, রোগীর নাম হাসিনা বিবি(৩৮)। রাজারহাট থানার অন্তগর্ত মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বিহারের বাসিন্দা এক শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ভর্তি না নিয়ে বাইরে অ্যাম্বুলেন্সেই ফেলে রাখা হয় দীর্ঘক্ষণ। কারণ হিসেবে বলা হয় হাসপাতালে নাকি বেড নেই। পরবর্তীতে অবশ্য CN-এর খবরের জেরে একপ্রকার বাধ্য হয়ে শিশুটিকে ভর্তি করে তার চিকিৎসা শুরু করে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি গত শনিবার বেডের জন্য টানা ১৮ ঘন্টা হয়রানির শিকার হয়ে, এই এসএসকেএম-এর সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন, জগৎবল্লভপুরের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সী আখলিমা বেগম। রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল বলা হয় এই এসএসকেএম-কে।
এই এসএসকেএম-এ ভর্তি রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। ভর্তি রয়েছেন মদন মিত্রও। রীতিমত এসএসকেএম-এর কার্ডিওলজি বিভাগে, শিশুর বেড দখল করে রয়েছেন 'ভদ্র' কাকু। ইডির হাত থেকে বাঁচতে এসএসকেএমের নিরাপদ আশ্রয়কেই বেছে নিয়েছেন তিনি। তাই বারংবার সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য ইডি, সিবিআইয়ের তরফে আবেদন জানানো হলেও, এসএসকেএমের দৌলতে তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছে না তারা।
আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি শুধুমাত্র রাজ্যের শাসকদলকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই রয়েছে, রাজ্যের প্রথম সারির এই হাসপাতাল? শাসকদলের নেতৃত্বরা সহজে বেড পেয়ে গেলেও, কেন সাধারণ মানুষকে এসএসকেএমে ভর্তি হতে গেলে, বারংবার হয়রানির শিকার হতে হবে? প্রাণের দাম কি শুধুই শাসকদলের নেতৃত্বদের? কেন বেডের অভাবে এসএসকেএমে ভর্তি হতে পারবেন না সাধারণ মানুষ? কেনই বা বারংবার বেঘোরে প্রাণ যাবে তাঁদের? একাধিক অভিযোগের পরেও, এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মুখে কুলুপ কেন? কাদের অঙ্গুলি হেলনে চলছে এই এসএসকেএম? প্রশ্নগুলো কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
এসএসকেএম হাসপাতালের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিইউতে শিশুদের জন্য সংরক্ষিত বেড আঁকড়ে রয়েছেন কালীঘাটের কাকু। ৩ দিন হয়ে গেল, শিশুদের বেডেই আছেন কাকু। এই কদিনে কাকুর শারীরিক পরিস্থিতির কি কোনও উন্নতি হয়নি? তা খতিয়ে দেখতেই সোমবার সকাল ১০.৫০ নাগাদ SSKM হাসপাতালে এলেন ইডির এক আধিকারিক।
উল্লেখ্য, কালীঘাটের কাকু এসএসকেএম হাসপাতালের আইসিইউতে আসার পর, এই প্রথম ইডির কোনও আধিকারিক তাঁকে দেখতে এলেন। আর কতদিন আইসিইউতে একজন শিশুর জন্য সংরক্ষিত বেড আটক রাখবেন কাকু?
আর কতদিন লাগবে কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পেতে, শারীরিক ভাবে আদতে কেমন আছেন কালীঘাটের কাকু? শারীরিক অসুস্থতার গুরুত্ব ঠিক কতটা- এই সবটা নিজের চোখে খতিয়ে দেখতেই ইডির আধিকারিক আসেন SSKM হাসপাতালে। এর আগেও দেখা গিয়েছে কার্ডিওলজি বিভাগের একটি কেবিন আঁকড়ে কালীঘাটের কাকুকে সেখানে থেকে যেতে, এখন দেখা যাচ্ছে একেবারে শিশুর বেড দখল করে হাসপাতালে রয়েছেন তিনি। তাই এখানেই প্রশ্ন জাগছে কাকুর ভবিষ্যৎ তবে কী? ছিলেন জেলে, সেখান থেকে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এলেন হাসপাতালে। অতঃপর সেখানেই রয়ে গেলেন। সেই কারণেই কাকুর ভবিষ্যৎ কী আর কাকুর কণ্ঠস্বর নমুনা নেওয়ার ভবিষ্যৎই বা কী? সেই নিয়ে কাটছে না ধোঁয়াশা। ইডির আধিকারিকের আসার পর কী এবার কাকুর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহে খানিক তৎপরতা দেখা যাবে ? প্রশ্নগুলো থেকেই যাচ্ছে।
কালারফুল মদন মিত্র এই মুহূর্তে গুরুতর নিউমোনিয়ার জেরে ভর্তি এসএসকেএম হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার রাতেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জেরে তাঁকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে। এরপরে শুক্রবার রাতে হঠাৎই হাইপক্সিয়ার ফলে তাঁর খিঁচুনি ওঠে। পড়ে গিয়ে ভেঙে যায় বাঁ কাঁধের হাড়। উডবার্ন ব্লক থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় হাসপাতালের মেইন ব্লকে। এরপরে রবিবারই তাঁর জন্য গঠন করা হয় মাল্টি ডিসিপ্লিনারি বোর্ড। চিকিৎসকদের পরামর্শ মত হবে নানা শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা।
জানা গিয়েছে, মদন মিত্রের রক্তচাপ আপাতত ওঠানামা করছে। যে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে তাঁর চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন এরপর তাঁর কী কী শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। তবে এমআরআই করাতে হবে মদন মিত্রের, এমনটাই হাসপাতাল সূত্রে খবর। তবে এমআরআই হোক বা ভেঙে যাওয়া হাড়ের অস্ত্রোপচার- কোনওটাই সম্ভব হবে না, যতদিন না পর্যন্ত তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে।
আপাতত খুব একটা স্থিতিশীল নন মদন মিত্র। শ্বাসকষ্ট রয়েছে, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও ঠিক নেই তাঁর। ভাঙা হাড়ের অসহ্য যন্ত্রণাতেও কষ্ট পাচ্ছেন তিনি। সেই খোশমেজাজের মদন মিত্র এই মুহূর্তে হাসপাতালে অসুস্থতার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন। তাঁর অনুগামীদের অপেক্ষা, কবে আবার তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন। কবে আবার 'ওহ লাভলি' শুনতে পান কামারহাটির বিধায়কের গলায়।
এসএসকেএম-এর কার্ডিওলজি বিভাগে শিশুদের জন্য বরাদ্দ বেডে এই মুহূর্তে ভর্তি রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। আর এই কার্ডিওলজি বিভাগের বাইরের চত্বরে নজর রাখলে দেখা যাবে ২৭ বছরে এক যুবতী গলায় দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সার ও চোখে জল নিয়ে চেয়ে রয়েছেন পথ চলতি মানুষের দিকে। যুবতীর নাম ত্রিলোচনা। তিনি মুর্শিদাবাদ থেকে এসে ২৭ দিন ধরে হাসপাতাল চত্বরে অস্থায়ী ঠিকানা তৈরি করে চিকিৎসা চালাচ্ছেন নিজের। মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল এ রোগের চিকিৎসা এখানে করা সম্ভব নয়। তাই কলকাতায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।
এসএসকেএম হাসপাতালে এসে চিকিৎসা পেয়েছেন ত্রিলোচনা, গলায় অস্ত্রপচারও করা হয়েছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই দীর্ঘ চিকিৎসা চালাতে গেলে তাঁকে শহর কলকাতার কোথাও থাকতে হবে। টাকার অভাবে বাড়ি ভাড়া করতে পারেননি। স্বামীকে সঙ্গে করে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগের বাইরের চত্বরে ঠিকানা হয়েছে ত্রিলোচনা ভাস্করের।
ত্রিলোচনা মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা। মুখে টিউমার হয়েছিল। সেই টিউমারের চিকিৎসা করতে যান মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। তারপর সেখান থেকে শিয়ালদহের আর আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ। সেখানে ভুল চিকিৎসার পর তিনি চলে আসেন এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই চলছে তাঁর চিকিৎসা। অনেকটা সুস্থ হয়েছেন কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। যতদিন না সুস্থ হয়ে উঠছেন ততদিন হয়ত তাঁকে এই এসএসকেএম হাসপাতালের বাইরে এভাবেই দিন কাটাতে হবে। আর কলকাতার হাসপাতালগুলি বাইরের চত্বরে এভাবেই দিন কাটাছেন হাজারও ত্রিলোচনা, শুধু অপেক্ষা করছেন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার।
ভালো নেই মদন মিত্র। কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক এখন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি এসএসকেএম হাসপাতালে। এর মধ্যেই খিঁচুনির জেরে তিনি বেড থেকে পড়ে যান, ভেঙে যায় তাঁর বা কাঁধের হাড়। হাসপাতালে মদন মিত্রকে দেখতে আসেন সাংসদ সৌগত রায়।
কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডর পাশাপাশি যিনি কালারফুল বয় হিসেবেই বেশি পরিচিত। সবসময় খোশ মেজাজে দেখা যায় মদন মিত্রকে। সেই মদন মিত্রই এখন গুরুতর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতেই শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা শুরু হয়েছিল তাঁর। সঙ্গে ছিল জ্বর। এই অবস্থায় তাঁকে প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে ভর্তি করা হয়। ডাঃ অতনু পালের অধীনে চিকিৎসা চলছে তাঁর। তিনি জানান, মদন মিত্র গভীর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে অসুস্থতার মধ্যেই হাইপক্সিয়ার ফলে হঠাৎ করেই শুক্রবার রাতে তাঁর খিঁচুনি ওঠে। দাঁতে দাঁত লেগে যায় তাঁর। যার জেরে তাঁকে ধরতে যাওয়ায় টানাটানিতে পড়ে গিয়ে তিনি আঘাত পান। ফলস্বরূপ, গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত, মদন মিত্রের বাঁ কাঁধের হাড় ভেঙে যায়। তাই আপাতত হাড় ভাঙা, নিউমোনিয়া সঙ্গে নিয়ে ভালো নেই বিধায়ক মদন মিত্র।
এই আবহে মদন মিত্রকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে আসেন সাংসদ সৌগত রায়। কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে দেখতে এসে দমদমের সাংসদ সৌগত রায় মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের।
সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে নিয়ে জল্পনা কাটতে চাইছে না কিছুতেই। শুক্রবার দেখা গিয়েছিল, এসএসকেএম হাসপাতালের আইসিসিইউতে শিশুদের জন্য সংরক্ষিত বেড দখল করে সেখানে থেকে যান কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এদিকে পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাকুর কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহের জন্য ইডির আধিকারিকরা শুক্রবার সকাল সকাল এসএসকেএম হাসপাতালে এসে পৌঁছেছিলেন কাকুকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কাকুর শারীরিক অবস্থা ভালো নেই, সাফ জানান হাসপাতাল সুপার। প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কাকুর কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহ না হওয়ায় একেবারেই সন্তুষ্ট নন ইডির আধিকারিকরা। কাকুকে কেন ইডির হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হল না, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি আদতে ঠিক কীরকম- সেই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তলব করে ইডি। সেই তথ্য ইতিমধ্যেই ইডির হাতে তুলে দিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে তাঁকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা ভাবা হবে। তবে, কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহের জন্য এভাবে আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে, সে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বারবার ইডির আধিকারিকরা বলেছেন, কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পাওয়া গেলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের মোড় ঘুরে যেতে পারে, বেরিয়ে আসতে পারে নানা অজানা তথ্য। তবে তা সত্বেও এসএসকেএম হাসপাতালের কোনও সক্রিয় ভূমিকা দেখছেন না ইডির আধিকারিকরা। তাই এবার আবারও এই বিষয়ে আদালতের মুখাপেক্ষী হতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। না হলে কাকুর কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহে আরও কত বিপাকে ইডিকে পড়তে হতে পারে, সেই নিয়েই দ্বন্দ্বে আছেন ইডির আধিকারিকরা।
রাজ্যের দুই প্রান্তের সরকারি হাসপাতালে ভিন্ন দুটি ছবি। একদিকে বেড না থাকার কারণে অসুস্থ হয়ে শিশু মারা যাচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় ৯ টি শিশুর মৃত্যু ঘটেছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। অন্যদিকে রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এ ধরা পড়ল অন্য চিত্র।
এসএসকেএম হাসপাতালে শিশুদের জন্য রাখা বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। তিনি শুক্রবার সকাল থেকেই অসহ্য বুকে ব্যথা অনুভব করেন। আর সেজন্যই কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তিন সদস্যের চিকিৎসক দলও তৈরি হয়ে গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে আরও খবর, এসএসকেএম-এর কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিইউ-তে ২০টা বেড রয়েছে। যার মধ্যে ১ থেকে ১৭ নম্বর বেড বড়দের জন্য বরাদ্দ। আর ১৮,১৯,২০ নম্বর বেড শিশুদের জন্য রাখা হয়েছে। ওই ১৮ নম্বর বেডে রয়েছেন কালীঘাটের কাকু। কারণ হিসেবে হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে দ্রুত আইসিইউ-তে দেওয়ার দরকার ছিল। তাই শিশুদের জন্য বরাদ্দ বেডে রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে তাঁকে।
কিন্তু হঠাৎ করে এত বুকে ব্যথা? শুক্রবার সকালেই হানা দিয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। কাকুকে আজই নিয়ে যাওয়া হবে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য। ইডির আধিকারিকরা আর সময় নষ্ট করতে চাইছেন না। ইএসআই হাসপাতালেই এই কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ পরীক্ষা হবে। দুয়ারে ইডি বলেই কি কাকুর বুকের ব্যথা বেড়ে গিয়েছে? এমনই প্রশ্ন করছেন রাজনৈতিক বিরোধী শিবির।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদে ৯ শিশু গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছে। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের স্পেশাল নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটস বা এসএনসিইউ অকেজো হয়ে পড়ায় সেখান থেকে থেকে নবজাতকদের মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে ট্রান্সফার করা হয়। একসঙ্গে এত শিশুর মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে 'রেফার রোগ'? তা নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের রেড জোনে ভর্তি বিহারের নওয়াদা জেলার শিশুটি। শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার আশঙ্কাজনক অবস্থার পরেও ওই শিশুটিকে ভর্তি না নেওয়ায় বিতর্কের মুখে পড়েছিল এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেড় বছরের গুরুতর অসুস্থ শিশুকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে বসে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েছিল শিশুটির পরিবার। এমনকি সে সময় অক্সিজেনের ঘাটতিও দেখা যায়। পরবর্তীতে সিএন-এর খবরের জেরে এসএসকেএমের তরফে ভর্তি নেওয়া হয় শিশুটিকে।
সেখানেই খেলতে গিয়ে হঠাৎই ছাদ থেকে পড়ে যায় সে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আসানসোল হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু আর্থিক পরিস্থিতির কারণে সেখান থেকে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। এখান থেকে শিশুটিকে রেফার করে দেওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। এরপরেই বেড না থাকার কারণ দেখিয়ে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেয় এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেড় বছরের গুরুতর অসুস্থ শিশুকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে বসে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েছিল শিশুটির পরিবার। অক্সিজেনের ঘাটতিও দেখা যায়। পরবর্তীতে CN- এর খবরের জেরে অবশেষে এসএসকেএমের তরফে ভর্তি নেওয়া হয় শিশুটিকে।
আপাতত এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের রেড জোনে ভর্তি রয়েছে ওই শিশুটি। উঁচু জায়গা থেকে পড়ে যাওয়ার ফলে শিশুটির শরীরের কোথাও ব্লাড ক্লট হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে একজন নিউরোলজিস্ট এর পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামীতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য একজন ফরেন্সিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে শিশুটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে তাকে ইয়োলো জোনে পাঠানো হবে বলে সূত্রের খবর।
যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক চাইলেই এসএসকেএমে ভর্তি হতে পারেন। সেখানে একটি ছোট্ট শিশুকে কেন এভাবে সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালের বাইরে পড়ে থাকতে হবে? বারংবার রোগী এবং তাঁদের পরিজনকে কেন এসএসকেএমে এসে সমস্যার মুখে পড়তে হবে? রাজ্যের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা তাহলে কোথায়?
এসএসকেএম-এ (SSKM) নেই বেড, ফলে মাথায় গুরুতর চোট পাওয়া এক দেড় বছরের শিশুকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সেই দেড় বছরের শিশু যখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে চলেছে, সেসময় তাকে এসএসকেএম-এ নিয়ে এলে বলা হয়, তাকে ভর্তি করানো যাবে না। এর পরই পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েন ও হাসপাতালের সামনেই অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে এই পরিস্থিতি সিএন-এর পর্দায় সম্প্রচার করা হলে অবশেষে চিকিৎসার জন্য খুদেকে ভর্তি নেওয়া হয় ও ইতিমধ্যেই তার চিকিৎসা শুরু হয়ে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, শিশু ও তার পরিবার বিহারের নওয়াদা জেলার বাসিন্দা। বিয়ে বাড়ি উপলক্ষে মামাবাড়িতে আসানসোল এসেছিল। কিন্তু খেলতে গিয়ে ৩ ডিসেম্বর বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর চোট পায় এই দেড় বছরের খুদে। তাকে প্রথমে আসানসোল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে পুরোপুরি চিকিৎসা না হওয়ায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু খুদের পরিস্থিতি এতটাই আশঙ্কাজনক যে তাকে পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু এসএসকেএম-এ পৌঁছতেই জানানো হয়, হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করানোর জন্য বেড নেই। ফলে হাসপাতালেই বাইরে অ্যাম্বুলেন্সেই পড়ে ছিল শিশুটি। এমনকি জানা গিয়েছে, গাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেনও ছিল না। ফলে ক্রমশ জটিল হয়ে পড়ছিল তার পরিস্থিতি। এসব দেখেও টনক নড়েনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এর পরই সিএন-এর সাংবাদিক হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতেই নড়েচড়ে বসেন তাঁরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর অবশেষে শিশুটিকে ভর্তি করেন তাঁরা।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বর্তমানে এসএসকেএম হাসাপাতালেই ভর্তি। সোমবার রাতে মদন মিত্র হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকেও এখানেই ভর্তি করা হয়। এছাড়াও দেখা গিয়েছে, রাজ্যের কোনও মন্ত্রী অসুস্থ হতেই প্রথমে তাঁকে এসএসকেএম-এই নিয়ে আসা হয়। ফলে তাঁরা যখন-তখন বেড পেয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু সাধারণ মানুষের সময় বেড নেই! এই প্রশ্নই উঠছে সাধারণ মানুষের মনে।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বর্তমানে রয়েছে এসএসকেএম-এ। কিন্তু হাসপাতালে থেকেও নেই তাঁর স্বস্তি। কারণ আদালতের নির্দেশেই তাঁর কেবিনে বসানো হল সিসিটিভি ক্যামেরা। শুক্রবার ক্যামেরা লাগানো হলেও সম্ভবত শনিবারই কাজ করতে শুরু করবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপর নজরদারি করা দুই সিসিক্যামেরা।
জানা গিয়েছে, এই দুই ক্যামেরার দুটি ফিড পাওয়া যাবে, একটি ফিডের লিঙ্ক জেল সুপারকে দিয়ে দেওয়া হবে। তার পাশাপাশি আরেকটি লিঙ্ক এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এই ব্যবস্থায় সবসময়ের জন্য নজরদারি চালাতে পারবে জেল-ইডি। মূলত, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কেবিনে কারা আসছেন বা কারাই বা ঘোরাফেরা করছেন। তৃতীয় ব্যক্তির ঘোরাফেরা বন্ধ করতে এই ব্যবস্থা।
সূত্রের খবর, এসএসকেএম-এ গিয়েও স্বস্তি নেই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র। নগর দায়রা আদালতের নির্দেশ মতো শুক্রবার সকাল সকাল এসএসকেএম হাসপাতালে এসেছিলেন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের আধিকারিক এবং ক্যামেরা বিভাগের আধিকারিক। হাসপাতাল সুপারের সই নিয়েই সিসিটিভির নজরাধীন হন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। মূলত সারাদিন তিনি কী করছেন, প্রভাবশালী মানুষের প্রভাব কোথাও খাটছে না তো? এসব দেখতেই সিসিটিভির নজরাধীন হচ্ছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয়কে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।