
মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল চারজন যুবকের। সোমবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে কান্দি সাঁইথিয়া রাজ্য সড়কে বড়ঞা থানার হরিবাটি গ্রামের কাছে। বাইকে যাওয়ার সময় কালভার্ট অথবা কোনও গাড়ির ধাক্কায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান। তবে স্থানীয় বাসিন্দা নয় ওই ৪ জন যুবক বলেই জানায় স্থানীয়রা। ৪ জনের দেহ উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিস। ঘটনাস্থল থেকে একটি বাইক উদ্ধার করেছে পুলিস।
সূত্রের খবর, ওই ৪ জন যুবক রবিবার রাতে যাত্রা শুনতে গিয়েছিলেন। পরিবার জানত যাত্রা শুনে বাড়ি ফিরবে ঘরের ছেলেরা। কিন্তু তা আর হল না। সকাল থেকে খোঁজাখুজির পর পরিবারের কাছে ফোন আসে থানা থেকে। এরপরই জানা যায় দুর্ঘটনার কথা। জানা যায়, তাঁদের মধ্য়ে তিন জনের বাড়ি বেলগ্রামে, অপরজনের বাড়ি তালমা গ্রামে। তবে কীভাবে তাঁদের মৃত্য়ু হল তা এখনও স্পষ্ট নয়। শোকের ছায়া পরিবারে।
ঘর করার টাকা না দেওয়ায় মায়ের উপর অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী (suicide) এক পরিবহণকর্মী। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে মুর্শিদাবাদের (murshidabad) ইসলামপুরে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর ৪০ এর মৃত ঐ পরিবহণকর্মীর নাম জয়ন্ত দাস। তাঁর বাড়ি ইসলামপুরের চক সদরঘাট সংলগ্ন এলাকায়। বছর দু'য়েক আগেই পিতৃহীন হন জয়ন্ত। তারপর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে একাই থাকতেন তিনি। সম্প্রতি তাঁর মা পারিবারিক কিছু সম্পত্তি বিক্রির দরুণ নির্দিষ্ট অঙ্কের কিছু টাকা আমানত হিসেবে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখেন। জয়ন্ত ঐ টাকা দিয়ে বাড়িতে নির্মীয়মান ঘর সম্পূর্ণ করার প্রস্তাব দেয়। যা নিয়ে মায়ের আপত্তিতেই বচসা বাধে তাঁদের মধ্যে। গতকাল অর্থাত্ বৃহস্পতিবার এই ঘটনার জেরে অভিমানে বাড়ি সংলগ্ন এক বেল গাছে গামছা দিয়ে ফাঁস লাগান তিনি।
শুক্রবার সকালে প্রতিবেশীরা তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পেয়ে পুলিসে খবর দেয়। ইসলামপুর থানার পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে।
কলকাতায় ফেরি করার কাজে রওনা দিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের ৬ শ্রমিক। গত রবিবার পুরনো গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঝাউদিয়ার দুজন ও বেলডাঙ্গার চারজন গুরুতর আহত হন। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছিলেন জলঙ্গি থানার ঝাউদিয়া গ্রামের জাহারুল মণ্ডল। বৃহস্পতিবার রাত দেড় টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বাকিরা এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, তাঁদের গ্রামের অনেক মানুষই অর্থের অভাবে কলকাতায় রোজগারের জন্য আসেন। সংসার চালাতে কেউ কেউ ফেরির কাজ করেন। সেরকমই জাহারুল মণ্ডল কলকাতায় যান ফেরি করতে। জাহারুলের উপরই দুই মেয়ে এবং স্ত্রী নির্ভরশীল ছিলেন। এখন সরকারি সাহায্য পেলে তাঁরা খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারবেন। তাই সরকারি সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, কান্নায় ভেঙে পড়েছে জাহারুলের পরিবার। শোকের ছায়া নেমেছে গ্রামে। এখন অপেক্ষার এই অসহায় পরিবার সরকারি সাহায্য পায় কিনা। সংসার চালাতে কলকাতা গিয়ে প্রাণ হারালেন। কীভাবে সংসার চালাবেন দুই মেয়েকে নিয়ে জাহারুলের স্ত্রী? রয়ে গেল ধোঁয়াশা।
সাত সকালেই মর্মান্তিক পরিণতি। সকাল থেকেই নিজেদের মধ্যে চলছিল বাকবিতণ্ডা। এরপরই গুলিবিদ্ধ হয়ে কর্মরত দুই বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়। ঘটনাটি মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানার কাকমারি চরের বিএসএফ ক্যাম্পে ১১৭ নম্বর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মধ্যে। ঘটনার পর থেকে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
বিএসএফ সূত্রে খবর, মৃত দুই বিএসএফ জওয়ানের একজন এসজি শেখর (৪৪)। তাঁর বাড়ি তামিলনাড়ুতে। এবং অন্যজন জনসন থাপা (৪৫)। তাঁর বাড়ি ছত্তিশগড়ে। আজ সকাল থেকেই তাঁদের মধ্যে চলছিল অশান্তি। আজ সকাল প্রায় সাড়ে ৬ টা নাগাদ একে অন্যের উপর চড়াও হয়। প্রথমে হাতাহাতি ও পরে ঝামেলা বাধে। আর তারপরই মর্মান্তিক পরিণতি। নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি করে নিহত হন দুই জওয়ান। বিএসএফ ক্যাম্পের ভিতরে গুলি চলার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় কাকমারি বিএসএফ ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায়। তবে ঠিক কী কারণে ওই বিএসএফ জওয়ানরা নিজেদের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
দু'জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে সাগরপাড়া থানার পুলিস সূত্রে খবর। সামগ্রিক ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করেছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ এবং সাগরপাড়ার পুলিস। কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সাত সকালেই বড়সড় পথ দুর্ঘটনা। মুখোমুখি ডাম্পার ও ট্রাক্টরের সংঘর্ষে গুরুতর জখম ১। ঘটনাটি বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা কাশিনগর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে ঘটে। ঘটনার পর স্থানীয় ও পুলিসের যৌথ সহযোগিতায় আহতকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
সূত্র মারফৎ জানা যায়, জঙ্গিপুর থেকে মালদা যাওয়ার পথে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে পাথর বোঝাই ট্রাক্টর হঠাৎ খারাপ হয়ে যায়। সেই সময় পেছন থেকে দ্রুতগতিতে একটি ডাম্পার এসে ট্রাক্টরের পিছনে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনায় ডাম্পারের চালক গাড়ির মধ্যে আটকে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তড়িঘড়ি খবর দেয় ফরাক্কা থানার পুলিসকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফরাক্কা থানার পুলিস। ঘটনাস্থল থেকে চালককে উদ্ধার করে জঙ্গীপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
ফের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা। বহরমপুর পুরাতন হাসপাতাল হাজরাপাড়ার ঘটনা। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত এগারোটা নাগাদ স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতী বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় সেলিম সেখ নামে বছর ৫৫-র এক ব্যক্তিকে। অভিযোগ, তাকে মদের আসরে নিয়ে গিয়ে গুলি করা হয়। এরপর বাড়ির লোক খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
এলাকাবাসী জানান, তিনি খুব নিরীহ ব্যক্তি ছিলেন। এমনকী মাদকাসক্ত ছিলেন না। একটি সাইকেলের দোকানে কাজ করতেন। কিন্তু কী কারণে খুন, কিছুই বুঝতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। শোকস্তব্ধ পরিবারের সদস্যরা প্রকৃত দোষীর শাস্তির দাবি করেন।
গৃহবধূর রহস্য়মৃত্য়ু ঘিরে চাঞ্চল্য়। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। পরিবার সূত্রে জানা গেছে,স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী ওই গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। মৃত ওই গৃহবধূর নাম রুমা বিবি(২৪)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিস। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগে মহাদেবনগর এলাকার ওই গৃহবধূর সঙ্গে ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার এক যুবকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হতে থাকে।
মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগ, বৃহস্পতিবারও রুমা ও তাঁর স্বামীর মধ্যে গণ্ডগোল হয়। স্বামী প্রায় নেশা করে আসত। আর রুমা এর প্রতিবাদ করলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুনতে হত। এমনকি মারধরও করা হত রুমাকে। আর এতে রুমার শাশুড়ি পুরোদস্তুর মদত দিত বলে অভিযোগ। আর এদিন ঝামেলার পরই ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রুমা।
শুক্রবার সকালে মৃতদেহ জঙ্গিপুর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। আত্মহত্যা নাকি খুন তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিস। ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।
মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে (Murshidabad Jalangi) রান্নার উনুনের আগুনে (Fire) পুড়ে ভস্মীভূত দুটি ঘর। ঘটনাটি ঘটে বুধবার সন্ধ্যার সময়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আনতে সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সরকারি সাহায্যের আবেদন করে।
জানা গিয়েছে, জলঙ্গি থানার ঘোষপাড়া অঞ্চলের সর্বপল্লী এলাকার হাফিজুল মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে রান্নার উনুনের আগুন থেকে পাটকাঠির বেড়ায় আগুন ধরে যায়। তারপরে মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন গোটা বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে । আগুন দেখে স্থানীয়রা তড়িঘড়ি নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রক্ষা করতে পারেননি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, হাফিজুল খুবই দরিদ্র। লোকের জমিতে চাষাবাদ করেন। চাষের কিছু ফসলও রাখা ছিল। সব পুড়ে গিয়েছে। অসতর্কতার কারণেই আগুনে লেগেছে বলে তাঁর অনুমান। তবে দমকলের চেষ্টায় আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
হাফিজুল মণ্ডলের পরিবার সরকারি সাহায্য পায় কিনা সেটাই দেখার।
প্রশাসনিক জটিলতায় আটকে আছে জল প্রকল্পের কাজ। অভিযোগ, ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আটকে জল প্রকল্পের কাজ। জলের ট্যাঙ্ক তৈরি হয়ে গেছে, বাড়ি-বাড়ি পাইপ লাইন বসানোর কাজও প্রায় হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও চালু হয়নি পরিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের কাজ। মুর্শিদাবাদের লালগোলার কালমেঘা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশগাড়া এলাকার ঘটনা।
জানা গেছে, মুর্শিদাবাদের লালগোলা ব্লকের কালমেঘা আর্সেনিক ও আয়রনপ্রবণ এলাকা। তাই সেখানে তৎকালীন কংগ্রেস সাংসদ প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গ্রামে-গ্রামে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য জলপ্রকল্প তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়। আর এই পরিপ্রেক্ষিতে কালমেঘা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশগাড়া এলাকায় একটি জলপ্রকল্প তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু এখনও ১০ বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও জলপ্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। জানা গেছে, প্রায় ২ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছিল এই জলপ্রকল্পটির জন্য।
জল সংকটে স্থানীয়রা। প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ আনছেন তাঁরা।
কংগ্রেস নেতা মহম্মদ সুজাউদ্দিনের অভিযোগ,কেন্দ্র সরকার টাকা দিয়ে দেওয়ার পরও রাজ্য সরকারের উদাসীনতার জন্য প্রকল্পটি বাস্তবে রূপায়িত হচ্ছে না।
যদিও জেলা তৃণমূল নেতা চাঁদ মহম্মদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রকল্পটি যাতে তাড়াতাড়ি শেষ করা যায় এরজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার চলছে। শাসকদলের নেতাদের পকেটের উন্নয়ন হচ্ছে বলে কটাক্ষ বিজেপির। বড় বড় ট্যাঙ্ক তৈরি হলেও সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছচ্ছে না বলে দাবি দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ বিজেপির সাধারণ সম্পাদিকা অনামিকা ঘোষের।
'মৃত্যুর' ৫ বছর পর বাড়িতে ফিরলেন সত্তরোর্ধ বৃদ্ধ। ৯ সন্তানের বাবা! খুশির কান্নায় ভেঙে পড়ল পরিবার।
মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার কয়থা গ্রাম। এই গ্রামেই ভরা সংসার ছিল নিমাই খানের। পরিবারের কাছে এতদিন মৃত ছিলেন তিনি। কিন্তু না, তিনি নিরুদ্দেশ ছিলেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
পরিবারের কাছে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল আজ থেকে ঠিক পাঁচ বছর আগে। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর নামে থাকা সমস্ত সম্পত্তিও বিক্রি করে দিয়েছিল পরিবারের লোকজন। এমনকি তাঁর মৃত্যুর খবর বিশ্বাস করতে না পেরে সেই শোকে বছর দুয়েক আগে মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রীর। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অল্প মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন নিমাই খান। তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর খোঁজ না মেলায় গোটা কয়থাবাসী জানতেন, তিনি হয়তো আর নেই।
তবে অবাক কাণ্ড ঘটল বুধবার। কয়থার বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামলেন পাঁচ বছর আগেই মৃত সেই নিমাই খান! পরে সেখান থেকে টোটো করে বাড়িতে প্রবেশ করতেই, তাঁকে দেখার জন্য ভেঙে পড়ল গ্রামের লোকজন! তাঁর ছয় মেয়ে ও তিন ছেলে তাঁকে দেখেই কান্নায় ভেসে গেলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক অশান্তির কারণে আজ থেকে পাঁচ বছর আগে পরিবার ছেড়েছিলেন নিমাই খান। তারপর বিভিন্ন জায়গায় থাকার পর পৌঁছন বিহারের মুজাফফরপুর এলাকায়। সেখানে তাঁকে মিথ্যা অপহরণের অপরাধে দীর্ঘ তিন বছর সংশোধনাগারে থাকতে হয়। পরে মাসখানেক আগে তিনি বেকসুর খালাস পান। এবং সেখানকার এক মহিলা আইনজীবী তার খোঁজের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনিক মহলে তাঁর ছবি সহ পরিচয়পত্র পাঠান। অবশেষে বড়ঞা থানা থেকে বড়ঞা ব্লক যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও বড়ঞা প্রশাসনের সহযোগিতায় তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। বুধবার তিনি বাড়ি ঢুকতেই তাঁকে দেখার জন্য ঢল নামে গ্রামবাসীদের। আত্মজদের দেখে খুশি নিমাই খান।
শীতের রাতে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। মুর্শিদাবাদের সুতিতে লরির সঙ্গে একটি চার চাকার সংঘর্ষে মৃত্যু হলো এক ব্যক্তির। জখম আরো ৫।
সোমবার মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটেছে সুতি থানার ধলার মোড় সংলগ্ন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এলাকায়। মৃত ওই ব্যক্তির নাম সুমন দাস। ইতিমধ্যেই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুর মহুকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জখমদের চিকিৎসা চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন রাতে অরঙ্গাবাদ থেকে বিয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে বামূহা যাচ্ছিল একটি চারচাকা। ধলার মোড় সংলগ্ন এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ওই চারচাকার সঙ্গে লরির ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থল থেকে তড়িঘড়ি জখমদের উদ্ধার করে প্রথমে মহেসাইল হাসপাতালে ও পরে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। যদিও জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালেই মৃত্যু হয় সুমন দাসের। গুরুতর জখম অবস্থায় আরও একজনকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কোভিড(Covid-19) আবহে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ(Closed School-College) । মাঝে বার কয়েক স্কুলগুলিকে আংশিকভাবে খোলা হলেও, তা বেশিদিন খুলে রাখা যায়নি। করোনার(Corona) বাড়বাড়ন্তের জেরে আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুল। আর সেসময়ে পড়ুয়াদের ভরসা ছিল একমাত্র অনলাইন ক্লাস(Online Class) ।
কিন্তু তাতেও সমস্যা। অনেকের কাছেই স্মার্টফোন নেই। আবার অনেকের ফোন থাকলেও নেটওয়ার্কের সমস্যা। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের পড়ুয়াদের কথা ভেবে 'পাড়ায় শিক্ষালয়' প্রকল্প চালু করছে রাজ্য সরকার। ৭ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এই প্রকল্প। পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হবে এই প্রকল্পে। তবে পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষার বিরোধিতা করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন।
মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকে এসআইও-এর পক্ষ থেকে প্রথম শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনে পঠনপাঠনের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি করা হয় আন্দি খরর্জুনা ও কুলি এলাকায়। রবিবার কুলি বাজার সংলগ্ন এলাকায় ট্যাবলো পরিক্রমা ও পথসভা করা হয়।
স্টুডেন্ট ইসলামিক অর্গানাইজেশন-এর মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মতিরুল রহমান শেখ বলেন, "পাড়ায় শিক্ষালয় নয়, পাড়ার ছেলে মেয়েদের শিক্ষালয়ে শিক্ষা চাই। অষ্টম শ্রেণি থেকে শ্রেণিকক্ষে বসানো গেলে প্রথম শ্রেণি থেকে শ্রেণিকক্ষে বসিয়ে ক্লাস নিতে সমস্যা কী?"
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অষ্টম শ্রেণি থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন । সেই মতো খুলে গেছে অষ্টম শ্রেণি থেকে শুরু করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ও। তবে পঞ্চম শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণিও খুলে দেওয়া যায় বলে মনে করছে সংগঠনটি।
পঞ্চম শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি 'পাড়ায় শিক্ষালয়' করার যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে তা নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এটি অবৈজ্ঞানিক ও অদূরদর্শী একটি সিদ্ধান্ত। শহরাঞ্চলে এতো খোলা মাঠ কি আদৌও আছে ? বৃষ্টিমুখর দিনে পাড়ায় শিক্ষালয় কীভাবে করা হবে ? মিড ডে মিলের কী ব্যবস্থা হবে? একাধিক সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন রেখেছেন এসআইও।
পাচারের আগে প্রায় কোটি টাকার হেরোইন বাজেয়াপ্ত করল পুলিস। বিপুল পরিমাণ হেরোইন ও মাদক তৈরির কাঁচামালও উদ্ধার। রাজ্য পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার মথুরাপুর গ্রামে হানা দিয়ে উদ্ধার করে হেরোইন ও মাদক তৈরির ওই কাঁচামাল।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এসটিএফ মঙ্গলবার হানা দেয় মাদক কারবারি আশরাফ আলির বাড়িতে। মাদকসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতরা হল আশরাফ আলি (৪০), মর্জিনা খাতুন(৩০), আতাবুর রহমান (৫৬)। ধৃতদের নামে মাদক মামলায় অভিযোগ রুজু হয়েছে। সাতদিনের পুলিসি হেফাজতে নিয়ে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ওই বাড়ি থেকে হেরোইন ও মাদক তৈরির কাঁচামাল উদ্ধার করে পুলিস। মোট ১ কেজি ৭০০ গ্রাম কাঁচামাল উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া নগদ ৫ লক্ষ টাকা এবং ১০ কেজি সোডিয়াম কার্বোনেট উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৮ কোটি টাকার সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে।
সূত্রের খবর, এই বাড়িতেই আশরাফ ও তার স্ত্রী নিয়মিত হেরোইন তৈরি করে পাচার করত বলে জানা গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই মাদক কারবারীরা লালগোলায় তাদের ব্যবসা জমিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু নবগ্রাম এলাকায় বাড়ি নিয়ে নতুনভাবে হেরোইন বানিয়ে সাপ্লাই দেওয়ার কাজ শুরু করে বলে পুলিস সূত্রে খবর। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা ৱ্যাকেটটিকে জালে তুলতে চাইছে পুলিস।
বাংলার গ্রামীণ শিল্পকে চাঙ্গা করতে ও বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্য পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ শিল্পগুলিকে আধুনিক বাজারে জায়গা দেওয়ার পাশাপাশি গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলা। সেই লক্ষ্যেই পাটের বিনুনি করে স্বনির্ভর হচ্ছে গ্রামের মহিলারা। গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছড়িয়ে পড়েছে পাটের বিনুনির কাজ। মুর্শিদাবাদের সীমান্ত সংলগ্ন রাণীনগর ও ইসলামপুর এলাকার বিভিন্ন গ্রামে এখন চলছে বিনুনি বুননের কাজ।
নিপুণ হাতে বিনুনি বুনে চলেছেন মহিলারা। বাড়ির সমস্ত কাজ করার পাশাপাশি বিনুনি বুনে দিনে প্রায় ৫০ টাকা আয় করছেন বাড়ি মহিলারা। মাস গেলে রোজগার হচ্ছে প্রায় দেড় থেকে দু হাজার টাকা। তবে এই বিনুনি পাটের। হাড় ভাঙা খাটুনি করা হাতে সূক্ষ্ম বিনুনি দু-চার পয়সা এনে দিচ্ছে নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসারে।
কী পদ্ধতিতে হয় পাটের বিনুনি জানালেন তারা, প্রথমে পাট ভিজিয়ে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তার পর সেই পাট ছিঁড়ে পাকানো হয় বিনুনি। তারা জানান, একশো হাতে বিনুনি তৈরি করে পারিশ্রমিক মেলে ২০ থেকে ২৩ টাকা । ঘর সামলে কেউবা ২০০ হাত কেউবা ৩০০ হাত পাটের বিনুনি তৈরি করেন তারা। এছাড়াও বাড়ির মেয়েরাও হাত লাগায় এই কাজে। দিনের শেষে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বাড়তি উপার্জন করছে এক একটি পরিবার।
ওই গ্রামের এক কারিগর জানান গত আট বছর ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন তারা। এখন গ্রামের প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রামের বেশিরভাগটাই এই কাজে যুক্ত হয়েছেন। তারা জানান, এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে পড়ুয়ারাও। লেখাপড়ার ফাঁকে এই কাজে হাত লাগায় তারা। এই পাটের বিনুনি প্রথমে যায় কলকাতায়। তারপর সেখান থেকে চলে যায় দিল্লি, কেরালা সহ আরও বিভিন্ন জায়গায়। পাট ব্যবসায়ীরা জানান বর্তমানে এর চাহিদা বেড়েছে । ফলে এই কাজে যুক্ত মহিলাদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বনির্ভর হতে পেরে খুশি তারা। পাটের বিনুনি তৈরি করে আর্থিক দিক দিয়ে স্বনির্ভর হয় খুশি রাণীনগর ও ইসলামপুর গ্রামের মহিলারা।
বাড়ি দখলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদের বড়ঞা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে লাঠিচার্জ পুলিসের। মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা ডাকবাংলা এলাকার একটি বাড়ি দখলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা । ঘটনা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিসবাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খড়গ্রাম থানার নগর এলাকার এক বাসিন্দা ডাকবাংলা স্টেট ব্যাঙ্ক রোডের একটি তিনতলা বাড়ি কিনেছেন। বাড়ির মালিকের কাছ থেকে ন্যায্য দাম ও সমস্ত নথিসহ বাড়িটি কিনেছেন তিনি। তবে ওই বাড়িটিতে এলাকার এক ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবৎ ভাড়া থাকার কারণে বর্তমানে সেই বাড়িটি তিনি জোরপূর্বক ছাড়তে চাইছে না । বর্তমান বাড়ির মালিক জানান, এক বছর আগে একটি চুক্তি হয় যে চুক্তিতে সোমবার বাড়িটি খালি করার কথা ছিল ওই ভাড়াটিয়ার। তবে চুক্তিপত্র নিয়ে তারা নিজেদের বাড়ি দখল করতে আসলে ভাড়াটিয়া বাড়ি থেকে উঠতে নারাজ হয়। পরে বাড়ির মালিক প্রশাসনকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে আসে বড়ঞা থানার পুলিস।
স্থানীয়দের অভিযোগ এলাকার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা তার কিছু দলবল নিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়াকে সমর্থন করে বাড়ির মালিককে সরে যাওয়ার কথা বলেন । আর তারপরেই বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে এলাকাবাসী। বিধায়ক বেআইনি দাবি তুলছে বলে সরব হয়ে পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় এলাকাবাসীর। পরে পুলিসের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ঘটনাস্থলে লাঠিচার্জ করা হয়। ঘটনায় ওই ভাড়াটিয়া সহ উভয়পক্ষের মোট চারজনকে আটক করে বড়ঞা থানার পুলিস। ঘটনাস্থলে থানার পক্ষ থেকে মোতায়েন বিশাল পুলিসবাহিনী।