
মুম্বই সিনেমা জগতে ৫০-৬০ এর দশকে সুপারস্টার বলে কোনও শব্দ ছিল না। তখন সিনেমার স্ক্রিন কাঁপিয়ে একের পর এক হিট ছবির নায়ক-নায়িকারা ছিলেন দেব আনন্দ, দিলীপকুমার, রাজ্ কাপুর থেকে রাজেন্দ্র কুমার, সুনীল দত্ত, ধর্মেন্দ্র জিতেন্দ্র প্রমুখ। এঁদের ছবি সুপারহিট হত। রাজেন্দ্র কুমারের ছবি রেকর্ড করে একের পর এক সিলভার জুবিলি হওয়াতে তাঁর খেতাব জুটেছিল 'জুবিলি কুমার'। কিন্তু ব্যাস, ওই অবধিই। হিরোরা ব্যক্তিবিশেষের প্রিয় ছিলেন। অর্থাৎ কেউ এনার ভক্ত, তো আরেকজন অন্য নায়কের। অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রেও তাই। চমৎকার অভিনয়ের জন্য খ্যাত ছিলেন তৎকালীন নায়িকারা।
প্রথম সুপারস্টার হন ১৯৬৯ এ, রাজেশ খান্না। আরাধনা রিলিজ করার পর আকাশচুম্বী চাহিদা হয় রাজেশের। একের পর এক ছবির অফার এল এবং রাজেশ সেসব ছবি করে সারা ভারতের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে গ্রেটেস্ট হয়ে যান। তখন রাজেশকে দেখার জন্য তাঁর বাড়ির সামনে সারা ভারত থেকে ফ্যান এসে সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকত এক ঝলক দেখার জন্য। রাজেশ খুব বেহিসাবি এবং সময়জ্ঞানহীন মানুষ ছিলেন। ধীরে ধীরে তিনি দ্রুতই তলিয়ে যেতে শুরু করলেন এবং তাঁর স্থান নিলেন অমিতাভ বচ্চন।
অমিতাভেরও ভয়ঙ্কর চাহিদা তৈরি হয় এবং তাঁকে নিয়েও উন্মাদনা শুরু হয়। তাঁকে শুধু সুপারস্টার নয়, মেগাস্টার বলা হয়েছে। আজ তাঁর বয়স প্রায় ৮০। আজও তিনি একই রকম 'গড অফ সিনেমা'।
কিন্তু এরপর অনেক সুপার হিরোই সিনেমায় আসেন। শাহরুখ খান, আমির খান সলমন খান, অক্ষয়কুমার, অজয় দেবগন প্রমুখ। এঁদের ছবি নিয়েও উন্মাদনা ছিল। শাহরুখ তো হিন্দি সিনেমার বাদশা হয় গিয়েছিলেন। কিন্তু তথাকথিত সুপারস্টার খ্যাতি হারিয়ে গিয়েছিল। উন্মাদনা নিশ্চয় ছিল। কিন্তু এখন এঁদের নতুন ছবি রিলিজ করার আগে বিভিন্ন মিডিয়ায় ছবির প্রমোশন করতে হয়। কারণ একটি ছবি বানাতে আজকের দিনে কয়েকশো কোটি টাকা খরচ হয়। সবথেকে সমস্যার বিষয়, এক সময়ের সিনেমা হলগুলি প্রায় আর নেই। ছবি দেখতে শপিং মলে যেতে হয়। নিয়মের কোনও বালাই নেই। এ এক অদ্ভুত সময় চলছে হিন্দি সিনেমার জগতে। আজও অমিতাভ রয়েছেন, কিন্তু কেউই আর সুপারস্টার নন।