
প্রসূন গুপ্তঃ যুগে যুগে মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিজে বহু নায়ক বা অভিনেতারা এসেছেন এবং জনমানসে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন। একেবারে গোড়ার দিকে অশোককুমার শুরু করেছিলেন রোমান্টিক নায়ক হিসাবে, কিন্তু কালে কালে খলনায়কের চরিত্রেও অভিনয় করেছেন যথা জুয়েল থিফ। দিলীপকুমার দেব আনন্দ কিন্তু রোমান্টিক অভিনয় করেও চরিত্রাভিনয়ও করেছিলেন। পরবর্তীতে রাজেন্দ্রকুমার থেকে রাজেশ খান্না সকলেই জনতার মনের দাবি মেটানো ফর্মুলা ফিল্মই করেছেন। ব্যতিক্রম হওয়া শুরু অমিতাভ বচ্চন থেকে। অমিতাভ একেবারে গোড়ার দিকেই সৌদাগর বলে একটি ছবিতে একেবারে সুবিধাবাদী এক গুড় ব্যবসায়ীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন এরপর পরওয়ানা নামে এক গোয়েন্দা ছবিতে মূল খুনির চরিতে অভিনয় করেছেন। অমিতাভ তাঁর সুবর্ণ সময়ে যে সমস্ত ছবিতে অভিনয় করে মেগাস্টার হয়েছিলেন তার অধিকাংশ চরিত্র নেতিবাচক হিরো। আইন ভাঙা অথবা 'বদলা' নেওয়ার চরিত্র।
গত ২৫ বছরে ওই রোমান্টিক হিরো বা ভালোমানুষের ধারণা পাল্টে আজকের হিরোরা যে কোনও চরিত্রে অভিনয় করছেন। একেবারে শাহরুখ, অক্ষয়, অজয় দেবগন, আমির ইত্যাদি প্রায় সকলেই নেতিবাচক বা খারাপ লোকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বা করছেন। ব্যতিক্রম সলমন খান, নেতিবাচক চরিত্র থাকলেও চরিত্রটি ইতিবাচকই হয়েছে এখনও।
শাহরুখ কিন্তু সেরা সময়ে নেতিবাচক চরিত্র এবং খারাপ লোকের চরিত্রে অভিনয় করেও দর্শকের সেন্টিমেন্ট আদায় করেছেন। তবে এটা বাস্তব রাজেশ খান্নার পরে রোমান্টিক হিরো বলতে প্রথমেই শাহরুখের নাম করতেই হয়। দুই অভিনেতার মধ্যে ম্যানারিজমের ধারা বজায় ছিল। সব ক্ষেত্রে ভালো না হলেও দর্শক কিন্তু গ্রহণ করেছে।
এখন শাহরুখের বয়স ৬০ এর দোরগোড়ায়। তিনি জানেন যে, তথাকথিত রোমান্টিক নায়ক হিসাবে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা কমছে। তিনি নিজেকে পাল্টিয়ে ফেলেছেন। ডন ১ থেকে পাঠান ছবিগুলিতে তার বিপক্ষে কম বয়সী নায়িকারা কাজ করেছেন ঠিকই কিন্তু কোনওটাই রোমান্টিক ছবি বরং সাসপেন্স থ্ৰীলারে সমৃদ্ধ। অন্য শাহ্রুখকেও দর্শক গ্রহণ করছে। আজকের মাল্টিপ্লেক্স যুগে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছে শাহরুখের ছবি। সদ্য রিলিজ করা জওয়ান ছবিটি দর্শক মতে 'সুপার'। বোধহয় শাহরুখের প্রযোজিত এই ছবি বলিউডের সেরা ব্যবসার মধ্যে পড়বে।