
'আই এম স্যাড টু সে, আই এম অন মাই ওয়ে, ওন্ট বি ব্যাক ফর মেনি এ ডে...' দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমি চললাম, অনেক দিন আর ফিরব না। নিজের গান 'জামাইকা ফেয়ারওয়েল'-এ এই কথাগুলি লিখেছিলেন আমেরিকার প্রবাদপ্রতিম গায়ক হ্যারি বেলাফন্টে। অনেক দিন নয়, আর কোনও দিনই ফিরবেন না তিনি। ৯৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বেলাফন্টে। তাঁর দীর্ঘদিনের মুখপাত্র কেন সানশাইন একথা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে সারা বিশ্বের সঙ্গীত প্রেমীদের মনে।
পঞ্চাশের দশকে আমেরিকার সঙ্গীত জগতে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। বর্ণবিদ্বেষীর শিকড় তখন ছড়িয়ে পড়েছে। শেতাঙ্গদের চরম নিপীড়নের শিকার কৃষ্ণাঙ্গরা। সেই সময়েই উত্থান হ্যারি বেলাফন্টের। তাঁর গানই হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদের ভাষা। বেলাফন্টের গান যেন একাই মিছিল। গানের প্রতিটি শব্দ যেন গণ আন্দোলনের স্লোগান। 'ক্যালিপসো', 'জামাইকা ফেয়ারওয়েল'-এর মতো অ্যালবাম তাঁরই সৃষ্টি। 'মাটিল্ডা', 'শেক শেক সেনোরা'র মতো কালজয়ী গান উঠে এসেছে তাঁর কণ্ঠে।
গরিব পরিবারে তাঁর জন্ম, তাই সংখ্যালঘুদের ব্যথা ভালোই বুঝেছিলেন। তাঁদের নিয়েই গান বাঁধতে চেয়েছেন। গানে-কথায়-ছন্দে কোনও বৈষম্য নেই, বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আমেরিকাকে। তাঁর গান সীমাবদ্ধ আটকে থাকেনি আমেরিকায়। সমগ্র বিদেশে এমনকি ভারতেও এসে পড়েছিল তাঁর উদাত্ত কণ্ঠের ব্যাপ্তি। বেলাফন্টের সংগ্রামে সামিল হয়েছিল গোটা দেশ। তাঁর মৃত্যুতে যেন থমকে গেল এক সময়কাল।