
মঙ্গলবার সাতসকালে আগুনে বিপর্যস্ত পুনে (Pune Fire Incident)। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) এই জেলায় রয়েছে একাধিক বহুতল, হোটেল-সহ গুরুত্বপূর্ণ ইমারত। আর সেরকমই একটি হল লুল্লানগর এলাকার মার্বেল বিস্তা বিল্ডিং। এদিন সকালে ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে পড়ল সেই হোটেল। তবে আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই বিল্ডিংয়েরই এক তলায় রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের প্রাক্তন তারকা জাহির খানের (Zaheer Khan) রেস্তোরাঁ, আর আগুন লাগে এর উপরের তলায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দমকলের ৬টি ইঞ্জিন পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন দমকলকর্মীরা।
জানা গিয়েছে, জানলা কাঁচ দিয়ে আটকানো বলে ভিতর থেকে বাইরে বেরোতে পারছে না ধোঁয়া, ফলে বাড়ছে সমস্যা। কাঁচ ভেঙে তা বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত হতাহতের খবর না পাওয়া গেলেও যে সকল কর্মীরা রাতে সেখানে ঘুমোন তাঁরা কেউ আটকে রয়েছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অবশ্য কিছু স্পষ্ট নয়। তবে ঠিক কী কারণে এই অগ্নিকাণ্ড সেটি নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা পেসার জাহির খান। ভারতের হয়ে ৯২টি টেস্ট, ২০০টি এক দিনের ম্যাচ এবং ১৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন এই তারকা ক্রিকেটার। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সি গায়ে আইপিএলের ময়দানও কাঁপিয়েছেন তিনি। এখন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স টিমের মেন্টর হিসেবে যুক্ত রয়েছেন জাহির খান।
বিরাট সমস্যায় বিরাট(Virat kohli)। আমজনতার দুয়ারে কিং বিরাটের অন্দরমহল। সৌজন্যে অত্যুৎসাহী ভক্ত আর সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media)। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T20 World Cup 2022) খেলতে অস্ট্রেলিয়াতে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। রোহিত, হার্দিকরা শেষ ম্যাচ খেলেছেন পার্থে। ওখানেই ক্রাউন টাওয়ার হোটেলে ছিল টিম ইন্ডিয়া।
অভিযোগ, মাঠে ছিলেন বিরাট। ওই সময় হোটেলের ফাঁকা ঘরে ঢুকে কেউ বানিয়ে ফেলেন ভিডিও। ব্যাট, বুট, জুতো, জামা-কাপড়, চশমা ,টুপি, ডায়রি এমনকি ওয়ার্ডরোবের দৃশ্য রয়েছে ভিডিওতে। ব্যস, আর যায় কোথায়। মুহূর্তে ভাইরাল ওই ভিডিও। বিরাটের নজরে আসতে দেরি হয়নি। প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন তিনি। প্রোটিয়া ম্যাচের পর হোটেলে ফিরে সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করেন তিনি। এই ধরণের ভিডিও তাঁর গোপনীয়তা ক্ষুন্ন করেছে। হোটেলের রুমে এমনটা হলো কি করে? প্রশ্ন তুলেছেন তারকা ক্রিকেটার।
বিরাটের স্ত্রী তথা সিলভার স্ক্রিনের তারকা অনুষ্কা শর্মাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি নিন্দা করে কড়া পোস্ট করেছেন। সব মিলিয়ে হাওয়া গরম। হোটেল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সেটা খুঁজে বার করার। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, যারা ভিডিওটি বানিয়েছিলেন, তাঁরা কোট-প্যান্ট পরে রয়েছেন। পোশাক দেখে মনে হচ্ছে, তাঁরা হোটেলেরই কর্মী। যদিও এব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি।
এই ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিরাট।পাশাপাশি তিনি আতঙ্ক প্রকাশও করেছেন। সেই ভিডিও শেয়ার করে কোহলি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘‘আমি জানি, অনুগামীরা সবসময় তাঁদের প্রিয় খেলোয়াড়কে দেখে আনন্দ পান, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান। আমি তাঁদের সমর্থন করি। কিন্তু এই ভিডিও দেখে আমি আতঙ্কিত। যদি আমার হোটেলের ঘরেই আমার গোপনীয়তা রক্ষা না হয়, তা হলে কোথায় আমার ব্যক্তিগত বিষয় রক্ষা হবে?’’
এই ঘটনায় যে তিনি চরম বিরক্ত, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন কোহলি। লিখেছেন, ‘‘এই ধরনের ভালবাসা আমি চাই না। এভাবে কারও ব্যক্তিগত পরিসরে ঢোকা উচিত নয়। দয়া করে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন। তাঁদের বিনোদনের পণ্য করে তুলবেন না।’’
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ঠান্ডা খাবার নিয়ে সমস্যায় পড়েছিল ভারতীয় দল। অনুশীলনের পর ঠান্ডা, শক্ত স্যান্ডউইচ দেওয়া হয়েছিল দলকে। ক্ষুব্ধ ভারতীয় দল খাবার প্রত্যাখ্যান করে। অভিযোগ করা হয় আইসিসির কাছে। সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই ফের বিড়ম্বনা। সমস্যা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। তারকা হবার জ্বালা কি কম?
নিজেদের মাঠে হওয়া আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) ছিটকে যেতে পারে অস্ট্রেলিয়া (Australia)। সময় যত এগোচ্ছে, ততই জটিল হচ্ছে বিশ্বকাপে গ্রুপ ১-এর অঙ্ক। শুক্রবার দুটি ম্যাচই বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল একটি ম্যাচ। ডু অর ডাই এই ম্যাচে দু’দলকেই জিততে হত। এই মুহূর্তে দু’দলের ঝুলিতে এক পয়েন্ট ঢুকেছে।
এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, গ্রুপের প্রথম চার দলের রয়েছে তিন পয়েন্ট। নিউজ়িল্যান্ড বাদে বাকি সব দল তিনটি করে ম্যাচ খেলেছে। কিউইদের রান রেট সবচেয়ে ভাল (৪.৪৫০)। এরপরেই রয়েছে ইংল্যান্ড (০.২৩৯)। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে তারা হেরে গেলেও রান রেটের বিচারে দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে। তৃতীয় স্থানে আয়ারল্যান্ড, যাদের রান রেট (-১.১৬৯)। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আচমকা জয় হঠাৎই সেমিফাইনালের দরজা খুলে দিয়েছে আইরিশদের সামনে। চতুর্থ স্থানে -১.১৫৫-সহ রয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, পরিস্থিতি যা, তাতে রান রেটই এই গ্রুপে পার্থক্য গড়ে দেবে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এখনও ইংল্যান্ডের খেলা বাকি। সেই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ, হতে পারে তিন দলই সাত পয়েন্টে শেষ করল। সে ক্ষেত্রে, রান রেটই কাজে লাগবে। এদিকে ক্রিকেট লিখিয়েদের একটি অংশের বক্তব্য, বৃষ্টিবিঘ্নিত অস্ট্রেলিয়াকে কেন টি২০ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে বাছলো আইসিসি। এই সময় ক্যাঙ্গারুর দেশে বরশার মরশুম, সেটা কি জানত না বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা?
ভারতীয় ক্রিকেটে (Indian Cricket) ঐতিহাসিক মুহূর্ত। লিঙ্গবৈষম্য ধুয়েমুছে সাফ করলেন রজার বিনি, জয় শাহরা। বহুদিনের বঞ্চনা সরিয়ে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে (indian womens cricket) আজ নতুন সূর্যোদয়। ম্যাচ ফি'র ক্ষেত্রে আর পুরুষ-মহিলা ভেদাভেদ করবে না বিসিসিআই (BCCI)। রীতিমতো ট্যুইট করে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন বোর্ড সচিব জয় শাহ (Jay Shah)। জয়ের ট্যুইট থেকে জানা গিয়েছে বেতন ইকুইটি নীতি বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
যে হারে এযাবৎকাল ম্যাচ ফি পেয়ে এসেছেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, মহম্মদ শামিরা, একই হারে ম্যাচ ফি পাবেন হরমনপ্রীত, শেফালি বর্মা, স্মৃতি মন্দানারা। অর্থাৎ টেস্ট ম্যাচপিছু ১৫ লক্ষ টাকা, ওডিআইপিছু ৬ লক্ষ টাকা এবং টি-২০ বাবদ তিন লক্ষ টাকা। বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত ট্যুইট করেছেন সচিব জয় শাহ।
এদিন ট্যুইটে জয় শাহ লেখেন, 'ভারতীয় ক্রিকেটে লিঙ্গবৈষম্য অবসানের ব্যাপারে বোর্ড অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। সেই প্রতিশ্রুতি পালন করতে পেরে আমরা খুশি।'
অস্ট্রেলিয়া (Australia) যাওয়া ইস্তক খুব একটা ভালো আপ্যায়ন পাচ্ছে না ভারতীয় ক্রিকেট দল (India Cricket Team)। শুধু সিডনিতে মধ্যাহ্নভোজ নয়, অস্ট্রেলিয়ায় (Australia) নামার পর থেকেই নানাভাবে অপদস্থ টিম ইন্ডিয়া। এর আগে ব্রিসবেনে অব্যবস্থার শিকার হয়েছিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, মহম্মদ শামিরা। সেখানে ভারতীয় দলকে থাকতে হয়েছে নিম্নমানের হোটেলে।
বিশ্বকাপের দিন কয়েক আগে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে ব্রিসবেনে যায় ভারত। সেখানেও আয়োজকদের ব্যবস্থায় খুশি হয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। আইসিসির প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দলকে যে মানের হোটেলে রাখার কথা, ব্রিসবেনে ভারতীয় দলের হোটেল সেই মানের ছিল না। আয়োজক অস্ট্রেলিয়াকে প্রত্যাশিত মানের হোটেলে রাখা হলেও, ভারতীয় দলকে থাকতে হয়েছে তুলনায় নিম্ন মানের হোটেলে। অথচ অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নারদের পড়শি করা হয়েছিল পাকিস্তান দলকে। অর্থাৎ, শুধু সিডনির খারাপ মধ্যহ্নভোজ নয়, ব্রিসবেনে খারাপ হোটেলে থাকতে বাধ্য করা হয় ভারতীয় দলকে। এমনটাই অভিযোগ করছে বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র।
জানা গিয়েছে, ব্রিসবেনে বিরাট কোহলিরা হোটেলে ছিলেন, ঘরগুলি ছোট। হোটেলে জিম, সুইমিং পুল থাকলেও বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়া একটি দলের উপযোগী নয়। আসবাব পত্র, খাবারের মানও যথাযথ নয়। এমনকি রুম সার্ভিস থেকে হাউস কিপিং জাতীয় পরিষেবাও প্রত্যাশিত মানের নয়। হোটেলটি ব্রিসবেনের যে জায়গায়, সেই অবস্থান পছন্দ হয়নি রোহিত, কোহলি, পান্ড্যদের। ব্রিসবেনের হোটেল নিয়ে অপছন্দের কথা ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে আইসিসিকে জানানো হয়েছিল। তাও হোটেল পরিবর্তন করে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
কুড়ি কুড়ি বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। দ্বিতীয় পর্বে প্রথম জয় তুলে নিল বাংলাদেশ (Bangladesh)। নেদারল্যান্ডসকে (Netherlands) ৯ রানে হারালেন তাসকিন, মোসাদ্দেকরা। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৪৪ রান তোলে বাংলাদেশ। ২৭ বলে ৩৮ আফিফ হোসেনের। শেষ দিকে অসাধারণ খেলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক হোসেন। ডাচদের শুরুতেই ধাক্কা দেন তাসকিন। ফিরিয়ে দেন বিক্রমজিত সিং-কে। ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে একা লড়াই করে গেলেন কলিন একারমান। ৪৮ বলে ৬২ করলেন কলিন। ৯ রান দূরে থেমে গেল নেদারল্যান্ড। চার উইকেট নিলেন তাসকিন। ম্যাচে দুই দফা বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হলেও কোনো ওভার কাটা যায়নি।
ম্যাচ জিতে শাকিব বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নপূরণের কথা বলেন। শাকিব ইন্টারভিউতে বলেন, 'তিনি ২০০৭ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলছেন। কিন্তু কোনওবার জিততে পারেননি। এবার আশা করছেন বিশ্বকাপ জেতার স্বপন পূরণ হবে।' নেদারল্যান্ডসকে হারানোর কৃতিত্ব অবশ্য তিনি দল বোলারদের দিলেন।
শাকিব আরও বলেছেন, ‘‘আমরা জানি অস্ট্রেলিয়ায় জোরে বোলাররা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দলে কয়েক জন তরুণ জোরে বোলার রয়েছে। ওরা নজর কাড়ছে।’’ এবারে বিশ্বকাপে শাকিবের অন্যতম লক্ষ্য, ফিল্ডিং। ফিল্ডিংয়ে বিশ্বের সেরা দল হয়ে উঠতে চান তিনি। আর তার জন্য প্রস্তুতিও শুরু করেছেন। শাকিব বলেছেন, ‘‘আমরা ফিল্ডিংয়ে বিশ্বের সেরা হতে চাই। আমাদের দলে বেশ কয়েক জন তরুণ ক্রিকেটার রয়েছে। ফিল্ডিংয়ে যদি প্রতি ম্যাচে ১০ রান বাঁচাতে পারি তা হলে সেটা আমাদেরই কাজে লাগবে।’’
মেলবোর্নে বিরাট জয়। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T-20 World Cup 2022) শেষ বলের থ্রিলার। পাকিস্তানকে চার উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল ভারত (India VS Pakistan) । জয় এল ভারতের ঝুলিতে।দীপাবলির আগেই বড়ো উপহার দিল কিং কোহলির (Virat Kohli) ব্যাট। একা কুম্ভের মতো দুর্গ রক্ষা করলেন। কোহলির চওড়া ব্যাট যেন খাপ খোলা তরবারি। ৫৩ বলে অপরাজিত ৮২। ছ'টা চার। চারটে ছয়। শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হ্যারিস রৌফদের জারিজুরি শেষ কোহলির ব্যাটের সামনে। আর বিরাটকে সঙ্গ দেন হার্দিক। ৪০ রান করে দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। আর ফ্রি হিট, ওয়াইড, আউট, ওভার বাউন্ডারির মতো ঘটনাবহুল রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভারে আসে তৃপ্তির জয়।
মেলবোর্নে শুরুটা ছিল ভারতের। শেষেও মেন ইন ব্লু-এর দাপট বজায় ছিল।টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ান রান পাননি। তবে লড়াই করার মতো রান করেছিল পাকিস্তান। ৮ উইকেটে ১৫৯। তিন উইকেট পেলেন পান্ডিয়া। অর্শদীপ আরও তিন। আর ভারত করেছে ৬ উইকেটে ১৬০ রান।
প্রথমে নড়বড়ে শুরু করেছিল ভারত। রাহুল, রোহিত, সূর্যকুমার কেউ রান পাননি। কিন্তু কোহলি ছিলেন। ওয়াঘার সীমান্তের ওপারে পৌঁছে যাওয়া ম্যাচ এপারে নিয়ে এলেন। মেলবোর্ন থেকে ভারত। শুধু জয় হো।
প্রসূন গুপ্ত: আশা ছিল হয়তো বা বিসিসিআইয়ের সভাপতিত্ব গেলেও শেষ পর্যন্ত আইসিসি বা বিশ্ব ক্রিকেটের দরজা খুলেও যেতে পারে। কিন্তু বোর্ডের বার্ষিক সভায় আইসিসি চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে সৌরভের নাম নাকি আলোচনাতেই আসেনি। এমনটাই হয়তো হওয়ার ছিল। সূত্র মারফত খবর, সৌরভ নাকি বেশ কিছুদিন আগেই বুঝতে পেরেছিলেন যে তাঁর গদি যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দিশেহারা হলেও শেষ পর্যন্ত কী হয় তার অপেক্ষায় ছিলেন।
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পয়লা সেপ্টেম্বরের ইউনেস্কোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৌরভ। তিনিই উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানিত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শোনা যাচ্ছে, তখন থেকেই সৌরভ অবস্থান বদলাতে শুরু করেন। এরপর কার্নিভালে সৌরভ-জায়া ডোনার ডান্সগ্রুপ নৃত্য পরিবেশনা করে। অসুস্থ শরীরেও ডোনা উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। এতে যারপরনাই খুশি হয়েছিলেন দিদি। যদিও এগুলোকে কাকতালীয় হিসেবে দেখতে চাইছেন অনেকে। অনেকের আবার অভিমত, সবই তাবু পাল্টানোর বিষয়।
এদিকে, মঙ্গলবার বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সভায় পাকাপোক্ত বিদায় জানানো হলো সৌরভকে। মমতার সোমবারের আবেদনে কাজ হল না মোটেই। যদিও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিত জানতেন সৌরভকে আইসিসিতে পাঠানোর আবেদন প্রধানমন্ত্রীকে করলেও, ফল হবে না কিছু। কিন্তু তিনি বাংলার জনতার কাছে এই বার্তাটি দিলেন যা একমাত্র তিনিই সৌরভের পাশে।
এবার সিএবি সভাপতি হতে চাইছেন দাদা। কাজটি খুব সোজা কারণ রাজ্য সরকারের সহযোগিতা তিনি পাবেনই। কিন্তু সমুদ্রের তিমিকে এবারে পুকুরের পোনা মাছ হতে হচ্ছে তা মনের দিক থেকে কতটা মেনে নেবেন সৌরভ? তিনি তো বলেছিলেন, আরও বড় জায়গায় যাবেন। সেটা হচ্ছে কি? এখনই হয়তো না তবে লাস্ট ল্যাপে সৌরভ যে কিছু একটা করবেন, যা আগেও করেছেন, যা বঙ্গবাসী অনুমান করতে পারছে না। কিন্তু স্টেপ আউট করেই কামব্যাক করবেন প্রিন্স অফ ক্যালকাটা। এমনটাই মনে করছে দাদার ঘনিষ্ঠ মহল।
ডেথ ওভারে মহম্মদ শামির বোলিংয়ে বিশ্বকাপ (T-20 World Cup) প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে (India beats Australia) ৬ রানে হারাল ভারত। ২০ ওভারে পড়েছে চার উইকেট, তার মধ্যে একটি রান আউট বাদে বাকি তিন উইকেট শামির (Mohammad Shami) ঝুলিতে। এদিন ফিল্ডিংয়ে অসামান্য ছিলেন বিরাট কোহলি (virat kohli)। ডিরেক্ট থ্রো-তে একটি রান আউট করেন কিং কোহলি। পাশাপাশি শেষ ওভারে বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁর দুর্দান্ত ক্যাচ ম্যাচ ঘুরিয়েছে ভারতের দিকে।
টি-২০ বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপ এবং তারপর সাউথ আফ্রিকা সিরিজ, ডেথ অভার ভুগিয়েছে ভারতকে। ১৯ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের স্পেলে বিপক্ষ ম্যাচ জিতে বেড়িয়ে গিয়েছে। মহম্মদ শামির এদিনের আগুনে বোলিং সেই শূন্যস্থান পূরণ করে দিল। এমনটাই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
টি-২০ বিশ্বকাপে নামার আগে প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৮৬ রান তোলে ভারত। অর্ধশতরান করেন কেএল রাহুল ও সূর্যকুমার যাদব। সেই রান তাড়া করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ডেথ ওভারে ভাল বল করলেন ভারতীয় বোলাররা। দীর্ঘদিন পর ভারতীয় দলের প্রথম একাদশে ফিরে সেই আগুনে স্পেল মহম্মদ শামির। যা কিছুটা হলেও উদ্বেগ কমিয়েছে রোহিত শর্মা, রাহুল দ্রাবিড়দের।
প্রসূন গুপ্ত: রজার বিনির (Roger Binny) বিসিসিআইয়ের (BCCI) সভাপতি হওয়ার চিত্র পরিষ্কার। নিশ্চিত অমিত পুত্র জয়ের (Jay Shah) সচিব পদে থেকে যাওয়া। কিন্তু বাকি অনেক পরিবর্তন হচ্ছে ভারতীয় বোর্ড তথা ক্রিকেট দলে বলে গুঞ্জন বাজারে। প্রথমে হকি তারপর ফুটবল, শেষে ক্রিকেট বোর্ডেও পরোক্ষভাবে কেন্দ্রীয় শাসক দলের অঙ্গুলিহেলন। এমন একটা সমালোচনা বিরোধী শিবিরে। যদিও ক্রীড়া সংস্থা এমন একটা প্রতিষ্ঠান, যেখানে বরাবর রাজনৈতিক মধ্যস্থতা। যে যখন ক্ষমতায়, কমবেশি তাঁদের গুডবুকের লোকেরা শীর্ষ পদে। একাধিক পদে নেতা মন্ত্রী বা তাঁদের ঘনিষ্ঠরা দায়িত্বে। এই বিষয়ে জোর চর্চা জাতীয় ক্রীড়ামহলে।
তবে রাজ্য ক্রীড়া সংস্থায় এভাবে নিজেদের লোক বসানো কঠিন। যেমন পশ্চিমবঙ্গ, দেখার সিএবিতে কারা আসছেন। যাঁরাই আসুন তাঁদের মাথার উপর যে রাজ্য শাসক দলের আশীর্বাদ থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি সৌরভের আমলে ভারতীয় ক্রিকেট দলে অনেক পরিবর্তন এসেছিল। রবি শাস্ত্রীকে এক প্রকার বিদায় জানিয়ে সৌরভের বন্ধু এবং ভারতীয় ক্রিকেটের মিস্টার ডিপেন্ডেবল রাহুল দ্রাবিড়কে কোচিংয়ের দায়িত্বে এনেছে বিসিসিআই। একইভাবে জুনিয়র দলে দায়িত্ব পেয়েছিলেন সৌরভের আরও এক প্রিয়পাত্র ভিভিএস লক্ষণ।
তাঁরা এখনও দায়িত্বে আছেন এবং চট করে তাঁদের সরানো কঠিন কাজ। তা হবু বোর্ড কর্তারা ভালোই জানেন। তবে দ্বিতীয় টার্মে তাঁদের রাখা হবে কিনা সময় বলবে। এমএস ধোনির উপর শোনা গিয়েছে সৌরভ অখুশি ছিলেন। তাঁকে বিভিন্ন সাংবাদিক বৈঠকে বিরাট কোহলির প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে। তবে বিরাটের অধিনায়কত্ব ছাড়া আবার এই সৌরভের আমলেই। ধোনি আচমকাই খেলা ছেড়ে দেন। প্রথমে টেস্ট ম্যাচ, পরে ওয়ান ডে ক্রিকেট থেকেও। অবশ্য তার অনেক আগে তাঁর হাত থেকে ওডিআইয়ের নেতৃত্ব নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কোহলি কিন্তু গাঙ্গুলি স্যারের ইয়েস ম্যান না হয়ে নতুন কোচ রবি শাস্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বিসিসিআইয়ে এমনটাই কানাঘুষো।
বিরাটের খেলার ফর্মের অবনতি ঘটলে রোহিত শর্মাকে নিয়ে আসা হয় অধিনায়কত্বে। এই পরিবর্তনের পিছনেও নাকি দাদার মস্তিষ্ক কাজ করেছে। সম্প্রতি শোনা গেলো নতুন কমিটি নাকি কোহলির বিষয় ফের উৎসাহী। অন্যদিকে বাংলার শামিকে শুধুমাত্র টেস্ট ম্যাচের জন্য ধরে রাখা হয়েছিল। বুমরার চোট থাকায় দ্রুত শামিকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অবশ্য রবিবারের প্রাকটিস ম্যাচ এবং সোমবারের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছেন শামি। রইলো বাকি কোহলির প্রিয় উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহা, দেখতে হবে তিনিও ফিরছেন কিনা।
এশিয়া কাপে (Asia Cup) গ্রুপ পর্যায় থেকেই বিদায় নিয়েছে ভারতের পুরুষ ক্রিকেট দল। কিন্তু এশিয়া সেরা হয়ে দেশে ফিরছেন মহিলা ক্রিকেট দল (India Womens Cricket)। শনিবার ফাইনালে পড়শি শ্রীলঙ্কার (Srilanka) মহিলা দলকে ৮ উইকেটে হারালেন হরমনপ্রীত, স্মৃতি মন্দানারা। এদিন প্রথম ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে করে ৬৫ রান। জবাবে ৮.৩ ওভারে সেই লক্ষে পৌঁছে যায় ভারতের মহিলারা। তাঁরা ২ উইকেট হারিয়ে করেন ৭১ রান।
এশিয়া কাপ ফাইনালে শনিবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু। কিন্তু প্রথম থেকেই শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ধস। সিলেটের ২২ গজে যে ব্যাট করা কঠিন হবে, তা টসের পরেই বলেন হরমনপ্রীত। কিন্তু এতটা কঠিন, সেটার পূর্বাভাস পায়নি। তাহলে হয়তো টসে জেতার সদ্ব্যবহার করতে পারতেন লঙ্কাবাহিনী।
শ্রীলঙ্কার মাত্র দু'জন দু’অঙ্কের রান করেছেন। এদিন ভারতের হয়ে রেণুকা সিং ৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন। স্নেহ রানা এবং রাজেশ্বরী গায়কোয়ার দুটি করে উইকেট পান। জয়ের লক্ষে ৬৬ রান তাড়া করতে নেমে সমস্যায় পড়ে ভারতের ওপেনার ব্যাটাররা। ওপেনার শেফালি বর্মা ৫ রান করেই ফেরেন, রান পাননি জেমাইমা রডরিগেজও। তবে উইকেটের এক দিক ধরে রেখেছিলেন ফর্মে থাকা স্মৃতি মন্দানা। তিনি ২৫ বলে ৫১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন।
শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ২২ গজে কাটিয়েছেন অধিনায়ক হরমনপ্রীতও। তিনি অপরাজিত থাকলেন ১৪ বলে ১১ রান করে। এদিকে, মোট সপ্তম বার মহিলাদের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত। আগের সাত বারের ছ’বারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারতীয় দল। শুধু শেষ বার ২০১৮ সালের ফাইনালে বাংলাদেশের কাছে হেরে যান ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল।
বোর্ড (BCCI) সভাপতি বিতর্কের মধ্যেই আরও বড় দুসংবাদ বিসিসিআই কোষাগারে। বিপুল আর্থিক ক্ষতির সামনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ভারত সরকার যদি পরের বছর বিশ্বকাপ (World Cup 2023) আয়োজনের সময় কর ছাড় না দেয়, তা হলে কমবেশি হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম ধনী এই সংস্থার। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। ক্ষতির অঙ্ক জানিয়ে সব রাজ্য সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়েছে বোর্ডের তরফে।
আইসিসির নিয়ম, কোনও দেশ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চাইলে সরকারের তরফে কর ছাড়ের অনুমতি আদায় করতে হয়। যদি কর ছাড় না পাওয়া গেলে, সেই অর্থ আয়োজক দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে দিতে হয়। সেক্ষেত্রে, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে যত টাকা কর দিতে হবে আইসিসিকে, সে টাকা বাদ যাবে আইসিসি থেকে পাওয়া বোর্ডের লভ্যাংশ থেকে।
ভারতের করের নিয়মে এ ধরনের ছাড়ের কোনও নিয়ম নেই। সে কারণে ২০১৬-তে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে বিসিসিআইয়ের কোষাগার থেকে বেরিয়েছিল ১৯৩ কোটি টাকা। সেই নিয়ে এখনও আইসিসির আদালতে মামলা চলছে। ক্ষতির পরিমাণ অনেক বাড়তে পারে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গেলে।
প্রসূন গুপ্ত: ঠিক কী চাইছেন এখনও সেই চিত্রটি পরিষ্কার জানাচ্ছেন না ভারতীয় বোর্ডে প্রাক্তন হতে চলা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি অপসারিত হয়ে যে প্রবল অপমানিত তা কিন্তু বৃহস্পতিবার এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের অনুষ্ঠানে কিছুটা অভিমানের সুরে জানিয়েছেন। সৌরভ অপমানিত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। সেই গ্রেগ চ্যাপেল জমানা থেকে চলছে। জীবনের প্রথম বিদেশ ট্যুরে গিয়েছিলেন ১৯৯২-তে এবং মাত্র একটি ম্যাচ খেলিয়েই আজহারউদ্দিন পত্রপাঠ তাঁকে ভারতীয় দল থেকে ছেঁটে ফেলেন।
ফের জগমোহন ডালমিয়ার কল্যাণে ১৯৯৬-তে ভারতীয় দলে ফেরেন। এই সময়ে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। ২০০৪-০৫ অবধি তাঁকে দল থেকে সরানো যায়নি। বেটিং কেলেঙ্কারিতে যখন ভারতীয় দল বিধস্ত, তখন অধিনায়ক হয়ে হাল ধরেছিলেন। ভারতীয় ক্রিকেটের সেই তিনিই দলের কোচ করে নিয়ে আসেন গ্রেগ চ্যাপেলকে। গ্রেগ এসেই তাঁকে দল থেকে ছেঁটে ফেলেন। নেপথ্যে ফিটনেস সমস্যা। ফের এক বছরের মধ্যে কামব্যাকও করেন এবং ২০০৭-০৮ অবধি খেলেন।
ওই সময়ে তিনি যে অবসর নেন তার পিছনেও বোর্ডের তৎকালীন শ্রীনিবাসন লবি এবং এমএস ধোনির চাপ ছিল বলেই সংবাদ। ২০০৮-এ শুরু হয় আইপিএল, এবার তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে নতুন ইনিংস শুরু করেন। এবার আইপিএল-র দু'বছর বাদে কেকেআর মালিক শাহরুখ খান তাঁকে বসিয়ে দেন। তিনি পুনে দলে যোগ দিয়ে আরও দু'বছর খেলেন।
এরপর জগমোহন ডালমিয়া যখন সিএবি প্রেসিডেন্ট, তখন সৌরভ সম্পাদক পদে আসীন হন। ডালমিয়ার মৃত্যু এবং বাংলার মসনদে রাজনৈতিক পালাবদল। মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব নিয়ে সৌরভকে সিএবি প্রেসিডেন্ট করেন। এরপরের ইতিহাস আবার বিজেপির সঙ্গে প্রিন্স অফ কলকাতার সখ্যতা বাড়া। তিনি বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর জোর চর্চা অমিত শাহের কল্যাণে তিনি নাকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে শীর্ষ আসনে। যদিও ক্রীড়া মহলের একাংশ তাঁকে যোগ্যতম বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হিসেবে তুলে ধরে। তবে শাহরা চেয়েছিলেন একুশের ভোটে সৌরভ বাংলায় তাঁদের দলের মুখ হোন। এমন একটা গুঞ্জন তৈরি হয়। সৌরভ বুদ্ধিমান, নানা বাহানা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত যেকোনও ভাবেই হোক পূর্বের তাঁর জীবনের একাধিক ঘটনাপ্রবাহের মতো একপ্রকার তাঁকেও বিদায় দেওয়া হয়।
কিন্তু প্রশাসক সৌরভ এবার কিছুটা ক্ষিপ্ত। তাঁর সামনে অবশ্য বিকল্প কিছু নেই। তিনি সিএবি প্রেসিডেন্ট হয়ে রাজ্য ক্রিকেট বোর্ডে ফিরতে পারেন, যেমন এক সময়ে তাঁর মেন্টর ডালমিয়া হয়েছিলেন। কিন্তু ডালমিয়ার পিছনে নাকি সুভাষ চক্রবর্তীর মতো নেতার হাত ছিল।
এবার সিএবি-তে তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বরূপ দে। যার সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জোর চর্চা। এই বিশ্বরূপ দে এখন তৃণমূলের কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর। ফলে প্রশাসক হিসেবে সৌরভকে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় ফিরতে গেলে মমতার আশীর্বাদ যে দরকার, তা একপ্রকার স্বীকার করছেন অনেকেই। সেখানে কি এবার তাঁকে কিছু দিতে হবে? ফের শুরু হয়েছে চর্চা।
একদিনে কেউ সচিন তেন্ডুলকর, নরেন্দ্র মোদী হয় না। বিসিসিআই (BCCI) সভাপতি বিতর্কের মধ্যে প্রথমবার মুখ খুললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। আরও বড় কিছু করার ইঙ্গিত তাঁর গলায়। বৃহস্পতিবার বেসরকারি এক ব্যাঙ্কের অনুষ্ঠানে যোগ দেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। সেই অনুষ্ঠানে তাঁর মন্তব্য, 'বড় লক্ষে পৌঁছতে প্রথমে ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে হয়। একলাফে সাফল্য পাওয়া যায় না। সেটা সম্ভব নয়। একদিনে কেউ সচিন তেন্ডুলকর, নরেন্দ্র মোদী (Sachin-Modi) হয় না।'
তিনি জানান, আমিও সেভাবে এগিয়েছি। ক্রিকেট খেলা ছেড়ে সিএবি সভাপতি হয়েছি, তারপর বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট। সামনের দিনে আরও ভালো কিছু করব। তবে আমার ক্রিকেটার জীবনের ১৫ বছর স্মরণীয়।' ভারতীয় ক্রিকেটের দাদার মন্তব্য, 'সব কিছুর একটা শেষ থাকে। গত তিন বছর ধরে বিসিসিআই করোনা কালে আইপিএল আয়োজন করেছে। মহিলা ক্রিকেটের উন্নতিতে উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছি। কমনওয়েলথ গেমসে আমাদের মহিলা দল রুপো পেয়েছে। ফলে কেরিয়ারে যতটা সময় যে যে জায়গায় কাজ করেছি, আমি সন্তুষ্ট। চেষ্টা করেছি যাতে নিজের কাজ সম্পূর্ণ নিষ্ঠা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে করতে পারি।'
তাঁকে আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। এই মন্তব্য করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বলেন, 'সবাই শেষটাই দেখে। প্রশাসক হিসেবে হয়তো আমার এখানেই ইতি। আবার নতুন কিছু, সেখানে তো আবার শূন্য থেকে শুরু।'
প্রসূন গুপ্ত: ১৮ অক্টোবর বিসিসিআইয়ের সাধারণ সভা (BCCI AGM) বা এজিএম। সভায় কী হবে মোটামুটি ধারণা হয়ে গিয়েছে। সম্ভাব্য সভাপতি হচ্ছেন ৮৩-র বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য রজার বিনি (Roger Binny)। রজার বিনি খুব শান্ত, মার্জিত প্রকৃতির মানুষ। একটা সময়ে বিশ্বনাথ খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর কিছুদিন কর্নাটকের অধিনায়ক হয়েছিলেন। কিন্তু দলের খুব কিছু একটা সুবিধা হয়নি। মুম্বই, দিল্লি এবং কর্নাটক চিরকাল ভারতকে সেরা খেলোয়াড় দিয়েছে। কর্নাটক পরবর্তীতে ব্রিজেশ প্যাটেলের পর ভাল ক্রিকেটার এবং অধিনায়ক দিয়েছে; যেমন রাহুল দ্রাবিড়, অনিল কুম্বলে প্রমুখ।
সেরা কর্নাটক দলে অবশ্যই বিনি অন্তর্ভুক্ত। একাধারে তিনি ওপেনিং ব্যাটার এবং বোলার ছিলেন। তাঁর প্রাক্তন সতীর্থ এবং ৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের প্রথম একাদশের সদস্য তথা উইকেটরক্ষক সৈয়দ কিরমানির মতে, 'বিনির মতো জেন্টলম্যান আর হয় না। কিন্তু বিনি নাকি বরাবরই নীরব কর্মীর মতো খেলে গিয়েছেন।' তিনি ক্রিকেট জীবনে কোনওদিন বিতর্কেও জড়াননি। আবার আগ বাড়িয়ে কোনও উপদেশ দেননি। কাজেই প্রশ্ন উঠেছে, বিনিকে কাঠের পুতুল বানিয়ে কি জয় শাহ বোর্ড চালাবেন, যা কিনা সৌরভের আমলে সম্ভব ছিল না বলেই গুঞ্জন। কিন্তু সৌরভ কি করবেন এরপর?
অভিষেক ডালমিয়া বর্তমানে বাংলা ক্রিকেট বোর্ড বা সিএবি-র সভাপতি। কিন্তু এবার তাঁর প্রথম টার্ম শেষ হচ্ছে। আগামীতে আইপিএলের সাব কমিটিতে তিনি স্থান পেয়েছেন, অতএব জাতীয় ক্রিকেটে তিনি দায়িত্ববান হচ্ছেন। অভিষেক অবশ্য এই প্রতিবেদককে বললেন, ১৮-র এজিএম পৌরোহিত্য করবেন মহারাজদা অর্থাৎ সৌরভ স্বয়ং। তারপর পরের সভাগুলি হবে ৬ জনের বিশেষ কমিটি সদস্যদের মধ্যে। যেখানে অবশ্যই সৌরভ থাকবেন না। এক বছর বাদে ফের সাধারণ সভায় সব রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
যদিও প্রশ্ন থাকছে এরপর সিএবির পরবর্তী সভাপতি কে হবেন? সাধারণত এই রাজ্যের শাসক দল পরোক্ষে তা ঠিক করে থাকে। যেমন এক সময়ে সুভাষ চক্রবর্তী, জ্যোতি বসুরা জগমোহন ডালমিয়াকে ওই পদে রাখতে ক্ষমতার কসুর করেননি। আবার ডালমিয়াকে সরিয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রসূন মুখোপাধ্যায়কে সিএবি সভাপতি করেছিলেন। এরপর মমতা ক্ষমতায় আসার পর সৌরভ এবং অভিষেক ক্ষমতায় আসেন। এবার কি ফের মমতা দায়িত্ব নিয়ে সৌরভকে ফের বাংলা ক্রিকেটের মসনদে বসাবেন এবং সৌরভ কি দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাবেন? ১৮র পর চিত্র পরিষ্কার হবে।