
রাজকীয় ভ্রমণ। রাম জন্মভূমি ভ্রমণ সহ একাধিক স্থান ঘোরাবে ভারতীয় রেল।
রাজকীয় ভ্রমণ। রাম জন্মভূমি ভ্রমণ সহ একাধিক স্থান ঘোরাবে ভারতীয় রেল।
ভারতীয় রাজনীতির প্রবাদপ্রতিম পুরুষ লালকৃষ্ণ আদবানির সোমবার ৯৪ বছর পূর্ণ হল | স্বাধীনতা উত্তরযুগে যে কজন রাজনীতিবিদ সারা ভারতে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন, তার অন্যতম আদবানিজি | ১৯২৭ এ অবিভক্ত ভারতের পাকিস্তানে থাকা করাচিতে আজকের দিনে তাঁর জন্ম এক সিন্ধি পরিবারে | পরিবারের নিজস্ব ব্যবসা ছিল | আদবানি মাত্র ১৪ বছর বয়সে ১৯৪১ এ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে যোগ দেন এবং তার সাথে চলে তাঁর পড়াশুনা | বরাবই ক্ষুরধার বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ ছিলেন তিনি | তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের বহু কাজের সমর্থক ছিলেন যেমন, তেমনই বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রশক্তির মিলনকে মেনে নেননি | দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও তিনি সংঘ পরিবারের প্রচারক ছিলেন। সাথে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্নেহছায়ায় পড়েন |
পরে ভারতীয় জনসঙ্ঘ গঠিত হলে তার সদস্য হয়ে ভোটে দাঁড়ান | ১৯৭৫ এ জরুরি অবস্থার সময় তিনিও গ্রেফতার হন | পরে সম্মিলিত জনতা পার্টি গঠন হলে তিনি তাতে যোগ দেন। ১৯৭৭ এ লোকসভা ভোটে জিতে কেন্দ্রের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হন | এরপর শুধুই চলা | তিনি কট্টর হিন্দুবাদীর মুখ ছিলেন | ১৯৮৯ এ কেন্দ্রে জনতা দল ক্ষমতায় আসে। কিন্তু তার আগেই ১৯৮০ তে তিনি বাজপেয়ি প্রমুখ মিলে আজকের ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি গঠন করেন | জনতা দলকে সমর্থনের একটাই শর্ত ছিল, ভারতের পথে হিন্দু রথকে চলতে দিতে হবে। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং এবং বামেদের ঘোর আপত্তি ছিল। তাতে ফলে রথ নিয়ে বেরোলে তাঁকে বিহারে লালুপ্রসাদ যাদব গ্রেফতার করেন | মন্ত্রিসভা ভেঙে যায়, ফের ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস | এরপর তিনি অর্থ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন এবং সম্পূর্ণ নির্দোষ হয়ে ভোটে দাঁড়ান |
বর্ণময় চরিত্র এই লালকৃষ্ণ আদবানি | সততা নির্ভর নিরামিষাশী চরিত্র | ১৯৬৫ তে বিবাহ করেন কমলাকে এবং তাঁদের দুই সন্তান হয় জয়ন্ত এবং প্রতিভা | ১৯৯৮ এ কেন্দ্রে এনডিএ ক্ষমতায় এলে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন | ২০০২ তে উপ প্রধানমন্ত্রীও হন তিনি | এরপর ২০০৪ এ তাঁদের দল ক্ষমতায় আসতে অক্ষম হয় | এরপর টানা ১০ বছর তিনি বিরোধী নেতা থাকেন | ২০১৪ তে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এলে ধীরে ধীরে তাঁকে পিছনের পথ দেখতে হয় | ২০১৯ এ পাকাপাকিভাবে তাঁকে রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হয় |
আজ তাঁর জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী থেকে সোনিয়া গান্ধী প্রমুখ তাঁকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান | স্বয়ং মোদী তাঁর রাজনৈতিক গুরুকে বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে আসেন |
উত্তর কলকাতার নিষিদ্ধপল্লীতে সাড়ম্বরে পালিত হল ভাইফোঁটা। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা দেবাশিস কুমার থেকে মদন মিত্র সহ অনেকেই। পেশাকে স্বীকৃতি দিয়ে যৌনকর্মীদের শ্রমিকের মর্যাদা দেওয়ার দাবি করলেন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সঙ্গে যুক্ত মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায়।
দিনের বেলায় অন্ধকার। দীপাবলির পর দিল্লির পরিবেশ উদ্বেগজনক। শুরু রাজনৈতিক তরজা।
আদি শঙ্করাচার্যের ১২ ফুটের থ্রি ডি মূর্তি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন মহীশূরের একজন শিল্পী অরুণ যোগীরাজ। সেই মূর্তি উদ্বোধন করলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রাজনীতি করতে গেলে আজকের দিনে অনেকগুলো অতিরিক্ত পঠনপাঠন দরকার | এটা বাধ্যতামূলক নয় যে ছাত্র রাজনীতি করতেই হবে | প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ছাত্র জীবনে কখনই রাজনীতিতে আসেননি | এরাজ্যে প্রয়াত জ্যোতি বসু কলেজে রাজনীতি করেননি। বরং বিলেতে ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আকৃষ্ট হন | মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির নেত্রী ছিলেন | ছাত্র পরিষদ করতেন তিনি | সদ্য প্রয়াত সুব্রত বা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি গুরু-ছাত্র রাজনীতি করে বাংলায় বিখ্যাত হয়েছিলেন | অন্যদিকে কিশোর বয়স থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিন্তু সংঘ পরিবারের প্রচারক ছিলেন | সুতরাং কেউ অল্প বয়সে রাজনীতি করেছেন, আবার কেউ অনেক শিক্ষার অভিজ্ঞতা নিয়েই রাজনীতিতে এসেছেন। যেমন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় |
মমতা খুবই কষ্ট করে দরিদ্র পরিবারের পাশে থেকে রাজনীতি করেছেন | অভিষেক কিন্তু পড়াশুনা করেছেন ভালোভাবেই | নব নালন্দা এবং বিড়লা স্কুল থেকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশুনা করে বিবিএ পড়তে চলে যান দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে পাশ করে ভর্তি হন এমবিএ পড়ার জন্য | তাঁর সহপাঠীদের বক্তব্য ছিল, অভিষেক পড়াশুনায় সিরিয়াস ছিলেন এবং কখনই ক্লাস কামাই করতেন না | কার্যত ভালো রেজাল্ট করেই পাশ করেন তিনি | ফিরে এসে প্রাথমিকভাবে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেন | পরে ধীরে ধীরে রাজনীতিতে আগমন | মমতাকে দেখেই রাজনীতি এমন নয়, বরং তাঁর রাজনীতির পঠনপাঠন অনেকটাই হয়েছে বাড়িতে রাজনীতির বাতাবরণে এবং অবশ্যই সুব্রত বক্সি বা সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে দেখেই | ২০১২ থেকেই রাজনীতিতে আসেন এবং ২০১৪ তে সাংসদ পদের প্রার্থী হয়ে ডায়মন্ড হারবারে জিতে আসেন | এরপরই ম্যান মানেজমেন্টের দিকে নজর দেন | তিনি বোঝেন, অনেকেই আছে যারা হাওয়াতে রাজনীতি করছেন | ধীরে ধীরে যুবর দায়িত্ব পান | ২০১৯ এ দলের অবস্থান অত্যন্ত খারাপ হওয়ার পর নিজের কাঁধে দায়িত্ব অনেকটাই নিয়ে নেন | ২০২১ নির্বাচনে তিনিই ছিলেন দলের সেনাপতি | তাঁর নেতৃত্বে সুবিশাল জয় আসে | এই মুহূর্তে ভারতীয় রাজনীতিতে এক আলোচ্য নাম অভিষেক | দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক |
রবিবার তাঁর ৩৪ তম জন্মদিন। কিন্তু কখনই হইচই করে জন্মদিন পালন করেননি তিনি | আজও না | তিনি মর্মাহত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে। তাই স্ত্রী ও দুই কন্যাপুত্রের সাথে দিনটি কাটাবেন নীরবে |
মর্মান্তির ঘটনা বললেও বোধহয় কম বলা হবে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোভিড ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন তাঁরা। কিন্তু কে জানত, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডই কেড়ে নেবে তাঁদের প্রাণ!
মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর ডিস্ট্রিক্ট গভর্নমেন্ট সিভিল হাসপাতাল। এখানকারই কোভিড রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের আইসিইউ-তে ভর্তি ছিলেন ১৭ জন রোগী। আচমকাই সকালে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড কেড়ে নিল ১০ জন রোগীর প্রাণ। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাসপাতালের ওই ওয়ার্ড থেকে আগুনের ঝলকানি বেরিয়ে আসতে থাকে। তারপরই গলগল করে বেরতে থাকে ধোঁয়া। মানুষ আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন। রোগীদের অন্য ওয়ার্ডে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়। খবর পেয়ে ছুটে আসে পুলিস এবং দমকল বাহিনী। কিন্তু তার আগেই ঝরে যায় ১০টি প্রাণ। প্রচণ্ড ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়েই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান।
আগুন কীভাবে লাগল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে প্রশ্ন উঠেছে, আইসিইউ-র মতো জায়গায় আগুন লাগল কীভাবে। সেখানে তো সবকিছুই ২৪ ঘণ্টা কড়া নজরদারির মধ্যে থাকে। এ ব্যাপারে ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর রাজেন্দ্র ভোঁসলে জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লাগে। তবে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই তদন্ত হবে। তদন্তে কোনওরকম গাফিলতি ধরা পড়লে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠ্যাকারেও শোক প্রকাশ করে এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মৃতদের পরিবারপিছু ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণেরও ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘটনার খবর পেতেই টুইট করে নিজের অনুভূতির কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। টুইটে তিনি লেখেন, ‘মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে সিভিল হাসপাতালে আগুন লাগার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনায় আমি অত্যন্ত ব্যথিত।' এরকম একটা দুঃখজনক সময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির প্রতি তিনি তাঁর সমবেদনা জানিয়েছেন। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁরা যাতে দ্রুত সেরে ওঠেন, সেই কামনাও করেছেন। মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি এই ঘটনায় উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। দোষীরা যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়, সেই দাবিও তিনি তুলেছেন।
সীমানা পেরিয়ে...। ভারত-পাক সীমানায় জওয়ানদের দীপাবলি।
কালীপুজোর আগের দিনই পেট্রোল এবং ডিজেলের ওপর এক্সাইজ ডিউটি কমিয়েছে কেন্দ্র। এক ধাক্কায় সেই কমানোর পরিমাণটাও ছিল উল্লেখযোগ্য, পেট্রোলে পাঁচ টাকা এবং ডিজেলে দশ টাকা। এরপর ২২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলও কেন্দ্রের পথে গিয়ে এবং সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে কমিয়ে দেয় ভ্যাট।
এই তথ্য দিয়েছে খোদ কেন্দ্র সরকারই। শুক্রবার রাতে দিল্লি পিআইবি এক প্রেস বিবৃতি জারি করে আরও যেটা জানিয়েছে, সেটাই লক্ষ্যণীয়। তারা বলেছে, ১৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এখনও এই পথে হাঁটেনি। উল্লেখ্য, এই তালিকায় নাম রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরও। তালিকায় থাকা আরও ১৩টি রাজ্য/ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, মেঘালয়, আন্দামান অ্যান্ড নিকোবর, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, পঞ্জাব, রাজস্থান।
কেন্দ্র ওই বিবৃতির মাধ্যমে আরও জানিয়ে দিয়েছে, পেট্রোলের দাম সবচেয়ে বেশি কমেছে লাদাখ, কর্ণাটক এবং পুদুচেরিতে। সেখানে দাম কমার পরিমাণ হল যথাক্রমে ১৩ টাকা ৪৩ পয়সা, ১৩ টাকা ৩৫ পয়সা এবং ১২ টাকা ৮৫ পয়সা।
বিগত কয়েক মাস ধরে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম যেভাবে প্রতিদিনই একটু একটু করে চড়ছিল, তাতে পরোক্ষে চাপ বাড়ছিল কেন্দ্রের ওপরই। কারণ, একদিকে যেমন খরচের বোঝা বেড়ে যাওয়ায় পরিবহণে সংকট নেমে এসেছে, একইভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও আকাশ ছুঁয়েছে। বিরোধীরা কেন্দ্রকে জনবিরোধী তকমা দিয়ে বারবার নিশানা করেছে। উৎসবের মরশুমে কেন্দ্র আচমকাই এক্সাইজ ডিউটি কমিয়ে নিজেদের নড়বড়ে জায়গাটা যেমন মেরামত করার চেষ্টা করেছে, তেমনই তাদের নিশানায় এবার বিরোধীরা।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে বিজেপি ইতিমধ্যেই যা ইঙ্গিত দিয়েছে, তাতে তারা এবার পাল্টা আন্দোলনে নামছে। ইস্যু একটাই, কেন্দ্র যখন এক্সাইজ কমিয়েছে, রাজ্য কেন তার ভ্যাট কমাবে না? বিধানসভাতেও তারা সরব হবে, শোনা যাচ্ছে এমনটাও। যদিও বিরোধীদের সাফ বক্তব্য, কেন্দ্র যদি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা বুঝত, তাহলে আগেই দাম কমাত। কিন্তু তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপনির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর।
বিতর্ক, তরজা যাই থাক না কেন, জ্বালানির দাম যদি আরও কমে, আখেরে উপকৃত হবেন সাধারণ মানুষই।
ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমদুয়ারে পড়লো কাঁটা | যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা ইত্যাদি মন্ত্র পড়ে ভাইফোঁটা দেয় বোনরা, তার দাদা বা ভাইকে | এটিরও দুটি দিন আছে | কালীপুজোর পরদিন প্রতিপদ আর তার পরদিন ভাতৃদ্বিতীয়া | দ্বিতীয়টিই বেশি পালন করা হয়ে থাকে | উত্তর ভারতে রাখি উৎসব ভাইবোনের মিলিত উৎসব। কিন্তু অবাঙালিরাও ভাইফোঁটা পালন করে, নাম ভাইদুজা | শোনা যায়, স্বাধীনতার পর বিখ্যাত ছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ফোঁটা নেওয়া | তাঁর বোন বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত তাঁকে ফোঁটা দিয়েছিলেন | পরে ছোট ছোট বাচ্চা মেয়েরা পণ্ডিতজিকে ফোঁটা দিতো | এটি বিখ্যাত এক ঘটনা ছিল | পরবর্তী সময়ে অনেক নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে ভাইদুজা পালন করেছেন | বিধান রায় থেকে অজয় মুখোপাধ্যায়ের বিষয়েও এমন ঘটনা শোনা যায় | জয়া বচ্চন বাঙালি হওয়াতে তাঁর বাড়িতে অভিষেককে ফোঁটা দিতেন শ্বেতা | আজ দেন কিনা জানা যায়নি | আগেকার দিনে রাজনীতিতে বিরোধীদের সরকারিপক্ষকে ফোঁটা দেওয়ার ঘটনাও আছে | বামপন্থীরা ধর্ম বা ভগবানে বিশ্বাসী না থাকলেও ভাইফোঁটা পালন করার বিষয়ে আপত্তি করতেন না | প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু পুত্র চন্দনের কন্যাদের বোন বলতেন বলে জানা যায় | মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী ভাইফোঁটা নিতেন | মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত ভাইফোঁটা দিয়ে থাকেন | তবে এবার সদ্য সুব্রত মুখোপাধ্যায় চলে যাওয়াতে ফোঁটা হবে বলে জানা যায়নি |
তবে মিডিয়া দুনিয়া চিরকালই বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের ভাইফোঁটার ছবি বা খবরই তুলে ধরে | কারণ নাকি ওটাই দর্শক বা পাঠক দেখতে ভালোবাসে | অভিনেতা প্রসেনজিতের ফোঁটা বা হৈমন্তী শুক্লার ফোঁটা বোধহয় সবথেকে আকর্ষণীয় ছবি | সাধারণ মানুষের বাড়ির ভাইফোঁটা নিয়ে আর কী খবর ? লুচি, আলুর তরকারি বা দুপুরে পাঁঠার মাংস সহ পোলাও আজ আর কোথায় | যা দ্রব্যমূল্য উর্ধমুখী, তাতে বোনরা ভাইকে খাওয়াবেটা কি? পরিশেষে রাস্তার পথ শিশুদের ফোঁটাও কিন্তু খবর হয়। কিন্তু কটি পথের অভাগা শিশুর খবর আমরা জানতে পারি ?
দিল্লি-দেরাদুন সড়ক পথে যোগাযোগ। চারধাম জুড়বে রেল পথেও। কেদারনাথে পুজো করলেন মোদি।
পেট্রোল-ডিজেলের দর নিয়ে রাজনৈতিক তরজা। দাম কমল এই রাজ্যগুলিতে
কোভিডে অভিভাবক হারানো শিশুদের সঙ্গে দীপাবলি পালন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর।
দীপাবলিতে বাজি পোড়ানো নিয়ে হইচই হলেও বছরভরই বায়ু দূষণের কবলে থাকে দেশের বেশ কিছু শহর।
বৃহস্পতিবার ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ল দিল্লি-এনসিআর অঞ্চল। হঠাৎ সকালে ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সফদরজঙ্গ বিমানবন্দরে দৃশ্যমানতা অনেক কমে যায়।
সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ওই দু’টি বিমানবন্দরে দৃশ্যমানতা ছিল ৬০০ থেকে ৮০০ মিটার।যা গতকালও ছিল ১,৫০০ থেকে ২,০০০ মিটারের মধ্যে।
এই পরিস্থিতিতে বলা যায় দীপাবলির আগে থেকেই দূষণের কবলে দেশের রাজধানী। এমনকি দিল্লিতে আগামী দু’দিন দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছে আবহাওয়া বিভাগ।
এদিকে কলকাতার বাতাসে সাধারণভাবে প্রতি ঘনমিটারে ২০০-৩০০ মাইক্রোগ্রাম পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) বা অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা থাকে। অভিযোগ দীপাবলির সময় বাজি পোড়ানোর ফলে তা অনেকটা বেড়ে যায়৷
যদিও সম্প্রতি উৎসবে সব ধরনের বাজির উপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এরাজ্যের বাজি ব্যবসায়ীরা। ওই মামলার শুনানিতেই সোমবার সুপ্রিম কোর্ট দীপাবলিতে পরিবেশবান্ধব অর্থাৎ গ্রিন বাজি ফাটানোতে সায় দিয়েছে।
এছাড়া গত বুধবার পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ দীপাবলিতে ২ ঘণ্টার জন্য পরিবেশবান্ধব বাজিতে ছাড় দেয়। বলা হয়, বাংলায় শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব বাজিই বিক্রি করা যাবে। অন্য সব ধরনের বাজি বিক্রি ও তার ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়ে, ছটপুজোয় সকাল ৬ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত আতশবাজি পোড়ানো যাবে। ২৫ ও ৩১ ডিসেম্বর রাতে ৩৫ মিনিট আতশবাজি পোড়ানো যাবে। রাত ১১ টা ৫৫ মিনিট থেকে সাড়ে ১২ টা। কিন্তু যাই পোড়ানো হোক না কেন, তা হতে হবে পরিবেশবান্ধব। তার জন্য সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের সমস্ত নিয়মাবলী মানতে হবে।
তা সত্ত্বেও উৎসবে কতটা বাজি পোড়ানো হয় সেটাই দেখার৷ তার থেকেও বড় প্রশ্ন, দীপাবলির পর দূষণ কলকাতার বাতাসে ছড়িয়ে পড়লে, তা রুখতে কতটা তৎপর পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ।