
যস্বশী জয়সওয়ালের (Yashasvi Jaiswal) একার ঝড়েই বধ কেকেআর(KKR)। কলকাতার বিরুদ্ধে ৯ উইকেটে বড় জয় পেল রাজস্থান (RR)। কলকাতার ঘরের মাঠে যস্বশী জয়সওয়াল ও স্যামসনের ব্যাটের দাপটে ৪২ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় রাজস্থান।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জয়ের জন্য রাজস্থানকে ১৫০ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় কলকাতা। সেই রান যেন কোনো ব্যাপারই না। পাওয়ার প্লে একাই খেললেন যস্বশী জয়সওয়াল। সে যেন তাঁর স্বপ্নের ফর্মে। একটুর জন্য তাঁর সেঞ্চুরি হলো না। ১৫০ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাটে নেমে বাটলার কে তৃতীয় বলে রান আউট করে রাসেল। ঠিক তার পরেই যেন জ্বলে ওঠে যস্বশী জয়সওয়াল। খেললেন ৪৭ টি বল করলেন ৯৮ রান। পাশাপাশি সমান ছন্দে ২৯ বল খেলে ৪৮ রান করলেন স্যামসন। কলকাতার কোনো বলারকে যেন ছাড়লেন না এই দুজন।
মরণবাচন ম্যাচ জেনেই প্রথম থেকেই ছন্দে ছিলেন জয়সওয়াল। শুরুও করলেন সেভাবে। জয়সওয়ালের ইনিংসে ফিকে হয়ে গেল ভেঙ্কটেশ আইয়ারের ইনিংস। এদিন বল করতে এসে নীতিশ রানা অর্থাৎ অধিনায়ক ১ ওভারে ২৬ রান দেন। পাশাপাশি অনুকুল রায় এক ওভারে ২০ রান দেন। কলকাতাকে হারিয়ে রান রেটে কিছু এগিয়ে থাকলো রাজস্থান। সেইসঙ্গে কলকাতাকে হারিয়ে লিগ টেবিলে তিন নম্বরে উঠে এলো রাজস্থান।
এখনও অবধি আইপিএলের (IPL) দ্রুততম অর্ধশতরান করে সবার রেকর্ড ভাঙলেন যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal)। ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) বিরুদ্ধে ১৩ বলে ৫০ রান করে ভেঙে দিলেন লোকেশ রাহুল এবং প্যাট কামিন্সের নজির।
এ বারের আইপিএলে স্বপ্নের ছন্দে রয়েছেন রাজস্থান রয়্যালসের যশস্বী। কলকাতার বিরুদ্ধে নতুন নজির গড়লেন ব্যাট হাতে। বৃহস্পতিবার শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে শুরু করেন তিনি। প্রথম ওভারেই কলকাতার অধিনায়ক নীতীশ রানাকে দু’টি ছক্কা এবং তিনটি চার মারেন। প্রথম ৬ বলে করেন ২৬ রান। তার পরেও তাঁকে থামাতে পারেননি কেকেআরের বোলাররা। ১৩ বলে ৫০ রান পূর্ণ করতে যশস্বী মারলেন ৬টি চার এবং ৩টি ছয়।
এর আগে আইপিএলে দ্রুততম অর্ধশতরান করার নজির ছিল রাহুল এবং কামিন্সের। তাঁরা ১৪ বলে ৫০ রান পূর্ণ করেছিলেন। তাঁদের থেকে ১ বল কম খেলেই ইডেনে অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন যশস্বী। তাঁর সামনে কলকাতার কোনও বোলারই সুবিধা করতে পারলেন না। যশস্বীর দাপটে রাজস্থানের অন্য ব্যাটাররাও কার্যত দর্শকের ভূমিকা পালন করলেন। ২১ বছরের বাঁহাতি ব্যাটার একাই দলের ৭০ শতাংশের বেশি রান করলেন। এ ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড যুবরাজ সিংহের দখলে। তিনি ১২ বলে অর্ধশতরান করেছিলেন।
মরণ বাচন ম্যাচে আশাজনক রান করতে পারলো না কেকেআর (KKR)। টসে জিতে কলকাতাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় রাজস্থান (RR)। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু মোটামুটি হলেও মিডিল অর্ডার রানই পেল না, কেবল ভেঙ্কটেশ আইয়ার ছাড়া বাদবাকি সবাই ব্যর্থ বললেই চলে। ম্যাচের হাল ধরার চেষ্টা করেছিল অধিনায়ক নীতিশ রানা কিনটি সেও ব্যার্থ হলো। বোলিং দাপট দেখা গেল চাহলের। প্রথমে ব্যাট করে কলকাতা ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান করে।
প্রথমে ব্যাটে নেমে জেসন রয় ও গুরবাজ জলদি সাঝঘরে ফিরে আসে, হাল ধরার চেষ্টা করে মাত্র ২২ রানে চাহলের বলে ফিরতে হয় রানাকে। সেদিক থেকে রাসেল ও রিঙ্কু সিং দুজনেই আজ ব্যর্থ। যদিও রাসেলের ফর্ম এ বছর তেমন ভাবে পাওয়া যায় নি। শার্দুল ঠাকুরকে লেগ বিফোর উইকেট করে ঘরে পাঠায় চাহল। যদিও গোটা ইনিংসে একমাত্র প্রশংসনীয় খেলা খেললেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। আইয়ারের ব্যার্থে যখন রান আসছিল তখন মনে হচ্ছিল কলকাতার রান ১৮০ উপরে যেতে পারে কিন্তু ম্যাচের হাল ধরে, ভালো এবং ভরসাযোগ্য ৫৭ রানের ইনিংস খেলে আইয়ার। ৪২ বলে ৫৭ রান করে চাহলের গুগলির কাছে পরাস্ত হয় আইয়ার এবং ক্যাচ দিয়ে বসে বোল্টকে।
ওদিকে রাজস্থানের পক্ষে দারুন স্পেল করে চাহল, চাহল ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেয়। একটি করে উইকেট নেয় সন্দীপ শর্মা ও আসিফ। ও দুটি উইকেট নেয় বোল্ট।
রাজস্থানের (RR) সঙ্গে মরণ-বাঁচন লড়াইয়ে নামবে কলকাতা (KKR)। ইডেনে এই ম্যাচ দুই দলের জন্যই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। একসময় টানা ৪টি ম্যাচ হেরে লিগ টেবিলের তলানিতে চলে গিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। নিজেদের প্রথম ৭টি ম্যাচের মধ্যে কলকাতা জেতে মাত্র ২টি ম্যাচ। তবে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ান নীতিশ রানারা। পরবর্তী ৪টি ম্যাচের মধ্যে কলকাতা জয় তুলে নেয় ৩টি ম্যাচে। এমনটা নয় যে, কেকেআরের শেষ চারে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। বরং কোনও ম্যাচ হেরে বসলে কেকেআরের টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এই মুহূর্তে নাইট রাইডার্স প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রয়েছে পুরোদস্তুর। এই অবস্থায় ঘরের মাঠে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে মরণ-বাঁচন ম্যাচে মাঠে নামছে কেকেআর। হোম অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগিয়ে সঞ্জু স্যামসনদের বিধ্বস্ত করতে মরিয়া নাইটরা।
বেশ কিছুদিন হয়ে গেল উইকেটের মুখ দেখেননি সুনীল নারিন। তা সত্ত্বেও রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে কলকাতার তুরুপের তাস হতে পারেন তিনি। কারণ জোস বাটলার ও সঞ্জু স্যামসনের বিরুদ্ধে তাঁর রেকর্ড ভালো।
জেসন রয়কে দলে নেওয়ার সময়েই নাইট কোচ জানিয়েছিলেন যে, ব্রিটিশ তারকা যথাযথ ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হতে পারেন। সেই মতো জেসনকে সুয়াশ শর্মার সঙ্গে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে রদবদল করে মাঠে নামাচ্ছে কলকাতা। রাজস্থান ম্যাচেও সম্ভবত একই পদক্ষেপ নিতে পারে কেকেআর।
দিল্লির (DC) বিপক্ষে দাপট চেন্নাইয়ের (CSK)। ব্যাটে কিছুটা রান কম হলেও, চেন্নাইয়ের বল ও ফিল্ডিংয়ের দাপটে কার্যত দিশেহারা দিল্লি। নিজেদের দাপটে ২৭ রানে হারালো দিল্লিকে।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাই মোটামুটি ভালো শুরু করলেও, ঋতুরাজ ও কনওয়ে আউট হবার পর ম্যাচের রাশ ধরতে পারেননি তেমন কেউই এর পর রাহানে ও মঈন সাজ ঘরে ফিরে গেলে, ডুবে ও রাইডুর ব্যাটের গতিতে কিছুটা বেগ পায় চেন্নাই যদিও বেশিক্ষন টিকতে পারে নি দুজনের কেউই। শেষে ধোনি ও জাদেজার ঝড়ে চেন্নাই ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান তোলে।
১৬৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ডেভিড ওয়ার্নারের উইকেট তুলে নেয় দীপক চাহার। দীপক চাহারের স্লো বলে ডিপ মিডে ক্যাচ দিয়ে ঘরে ফিরে আসেন সল্ট। এর পরেই মনীশ পান্ডের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন মার্শ। মোটের উপর পাওয়ার প্লেতেই ৩ উইকেট হারায় চেন্নাই। এরপর রুশো ও মনীশ পান্ডে ম্যাচের হাল ধরেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। মনীশ পান্ডেকে এলবিডব্লিউ করে ঘরে ফেরান পাথিরানা। শেষে অক্ষর প্যাটেল চেষ্টা করলেও দিল্লির ইনিংস শেষ হলো ১৪০ রানে।
দিল্লির পক্ষে রুশো ৩৫ রান করেন, অক্ষর করেন ২১ রান, মনীশ পান্ডে উল্লেখযোগ্য ২৭ রান করেন। পাশাপাশি চেন্নাইয়ের পক্ষে, ৩ উইকেট নেয় পাথিরানা, ২ উইকেট নেয় দীপক চাহার। ১ টি উইকেট নেয় জাদেজা। চেন্নাইয়ের কাছে হেরে কার্যত এ মরশুমে প্লে অফের দৌড়ে বিদায় দিল্লির।
মরণ বাচন ম্যাচে ভালো বোলিং ও ফিল্ডিং দিয়ে আপেক্ষিক ভাবে চেন্নাইকে (CSK) বেঁধে রাখল দিল্লী ডেয়ারডেভিলস (DC)। টসে জিতে প্রথম ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় চেন্নাই। প্রথমদিকে ব্যাটিং ধস নামলেও পরের শিবম ডুবে ও রাইডুর ব্যাটে কিছুটা রান আসে। শেষ দুই ওভারে ধোনি ও জাদেজার ঝড়ে লড়াই জনক স্কোরে পৌঁছায় চেন্নাই। মোট কুড়ি ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ ১৬৭ রান।
টসে জিতে প্রথম ব্যাট করতে নেমে অক্ষরের বলে এল বি ডব্লিউ হন কনওয়ে। এরপর অক্ষরের বলেই আউট হন ঋতুরাজ। এরপরই ব্যাট করতে আসে মঈন আলি। মঈন অলিও সাত রান করে ঘরে ফেরেন। পাশাপাশি ললিত একটি দারুণ ক্যাচ ধরেন। দারুণ কাজ ধরে রাহানেকে সাজ করে ফেরান। এরপরে ব্যাটিংয়ের হাল খারাপ হলে রাইডু ও শিবম ডুবে একটু হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুরোপুরি পারলেন না। ১২ বলে ২৫ রান করে ওয়ার্নারের কাছে ক্যাচ দিয়ে বসেন ডুবে। ধোনি ৯ বলে করেন ২০ রান, যে ইনিংসে ২টি ছক্কা ও ১ টি চার আছে।
ওদিকে দিল্লির হয়ে বল করে উইকেট পাননি ঈশান্ত শর্মা। একটি করে উইকেট পায় খলিল আহমেদ, ললিত যাদব, কুলদীপ যাদব ও মিচেল মার্শ ৩ উইকেট পায়।
সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) যেন একাই একশো। তাঁর ব্যাট একাই দরমুশ করে দিলো বেঙ্গালুরুকে (Bangalore)। শুধু একা সূর্য নন, মুম্বইয়ের (MI) ম্যাচে দাপট দেখিয়ে গেছেন ঈশান কিশান, নেহাল ওয়াদেহারারা।
টস জিতে এদিন ঘরের মাঠে আরসিবিকে প্রথম ব্যাট করতে পাঠান মুম্বইয়ের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু প্রথম ওভারেই জেসন বেহরেনডফের বলে মাত্র ১ রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন বিরাট। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনে নামা অনুজ রাওয়াতের উইকেট হারায় আরসিবি।
মাত্র ১৬ রানের মাথায় ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বেঙ্গালুরু। সেখান থেকে দলের রাশ ধরেন অধিয়ানায়ক ফাফ ডু’প্লেসিস ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এই জুটির ১২০ রানের পার্টনাশিপ ম্যাচে ফিরিয়ে আনে বেঙ্গালুরুকে। ডু’প্লেসিস করেন ৪১ বলে ৬৫। এবং ম্যাক্সওয়েল খেলেন ৩৩ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। তবে আরসিবির বাকি ব্যাটাররা তেমন রান পাননি। শেষে দীনেশ কার্তিকের ৩০ রানের ঝোড়ো ইনিংসের সুবাদে, ২০ ওভার শেষে বেঙ্গালুরু ৬ উইকেট খুইয়ে তোলে ১৯৯ রান।
মুম্বইয়ের হয়ে ৩ উইকেট নেন জেসন। একটি করে উইকেট পান ক্যামেরুন গ্রিন, ক্রিস জর্ডেন ও কুমার কার্তিকেয়া।
বেঙ্গালুরুর ১৯৯ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই ঝড় তোলেন ইশান কিশান। ২১ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে যখন ইশান আউট হন তখন ৪ ওভার শেষে মুম্বইয়ের স্কোর ৫০ পেরিয়ে গেছে।
তবে এদিনের ম্যাচেও রান পেলেন না রোহিত। এদিন মুম্বই অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৭ রান। পরপর ম্যাচে রোহিতের এই ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ক্রিকেট মহলে। রোহিত আউট হতেই ম্যাচের হাল ধরেন সূর্য। নেহালকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে আসেন তিনি।
মাত্র ৩৫ বলে ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন সূর্য। তাঁর ব্যাটের ঝড়ের সামনে পড়ে কিছুটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পড়েন বেঙ্গালুরুর বোলাররা। আর তাঁকে এই ম্যাচে যোগ্য সঙ্গত দেন নেহাল। ৩৪ বলে ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে টিকে ম্যাচ জিতিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন নেহাল। এই ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলে অনেকটাই ওপরে উঠে এল মুম্বই। ১১ ম্যাচে ৬টা জিতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৩ নম্বরে রয়েছেন রোহিতরা।
ইডেনে (Eden) ম্যাচ জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন কেকেআর (KKR) অধিনায়ক নীতিশ রানা (Nitish Rana)। নীতিশ রাণার ব্যাট থেকে এসেছে একটি মূল্যবান ইনিংস। কিন্তু ম্যাচ জিতিয়ে জরিমানার মুখে কেকেআর অধিনায়ক। ম্যাচ ফি-র টাকা ফাইন হবে তাঁর। সোমবার প্রথম ব্যাট করে পাঞ্জাব সুপার কিংস তোলে ১৭৯ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালই করেন ওপেনার জুটি। তবে একটা সময় পরপর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কেকেআর। পরে নীতিশ শক্ত হাতে ম্যাচ ধরে, পরে অবশ্য রাসেল ও রিঙ্কুর দাপটে ম্যাচ জেতে কেকেআর।
কিন্তু ম্যাচ জয়ের আনন্দের মধ্যেই আসে খারাপ খবর। দলের স্লোওভার রেটের জন্য জরিমানা করা হল নাইট অধিনায়ক নীতিশকে। জানা গেছে, ১২ লাখ টাকা দিতে হবে তাঁকে জরিমানা বাবদ। বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি আইপিএলে এটা যেহেতু প্রথম ভুল তাই ১২ লাখ জরিমানা করা হয়েছে। পরে যদি একই ভুল হয়, সেক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ আরও বাড়বে।
আইপিএলে এই মরশুমে স্লোওভার রেটের কারণে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিকে জরিমানা দিতে হয়েছে। এবার সেই তালিকায় ঢুকে পড়লেন নীতিশও।
সোমবার কেকেআরের কাছে একদিকে যেমন ছিল পাওয়ার প্লে-র লড়াইয়ে টিকে থাকার ম্যাচ, তেমনই ছিল প্রতিশোধের। প্রথম লেগে পাঞ্জাবের কাছে হেরেছিল কেকেআর। ঘরের মাঠে সেই হারের বদলা নিল তারা।
সেই রিঙ্কু সিং (Rinku Singh)। সেই শেষ বল। আবার দেখা গেল রিঙ্কুর দাপট। মাঠ বদলে গেলেও বদলাল না তাঁর খেলা। এখন কলকাতা নাইট রাইডার্স (Kolkata Knight Riders) যাঁকে চোখ বন্ধ করে ভরসা করে সেই রিঙ্কুই আর একবার জেতালেন দলকে। তার আগে অবশ্য ইডেনে উঠল আন্দ্রে রাসেল ঝড়। তিনিই দলকে জয়ের কাছে নিয়ে গেলেন। বাকি কাজ করলেন রিঙ্কু।
এ বারের আইপিএলে ইডেন দেখেছে ব্যাটারদের দাপট। প্রায় সব ম্যাচেই প্রথমে ব্যাট করা দল ২০০ রানের বেশি করেছে। কিন্তু পঞ্জাবের বিরুদ্ধে পিচের চরিত্রে কিছুটা বদল ছিল। উইকেট একটু মন্থর থাকায় গতির হেরফের করলে সুবিধা পাচ্ছিলেন বোলাররা। টসে হেরে প্রথমে বল করতে গিয়ে সেটাই করেন কেকেআরের পেসাররা। তার ফলে শুরুটা ভাল করতে পারেনি পঞ্জাব। কেকেআরের পেসার হর্ষিত রানা পাওয়ার প্লে-তেই প্রভসিমরন সিংহ ও ভানুকা রাজাপক্ষকে আউট করেন।
ছন্দে ছিলেন শিখর ধাওয়ান। তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করেন লিয়াম লিভিংস্টোন। কিন্তু পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে তাঁকে আউট করে পঞ্জাবকে বড় ধাক্কা দেন বরুণ চক্রবর্তী। জীতেশ শর্মা শুরুটা ভাল করলেও বড় রান করতে পারেননি। ২১ রান করে বরুণেরই শিকার হন তিনি।
আগের ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে বল করে দলকে জিতিয়েছিলেন বরুণ। ইডেনেও ছন্দে দেখা গেল তাঁকে। ৩ উইকেট নিলেন তিনি। এক দিকে উইকেট পড়লেও অন্য দিকে ছিলেন ধাওয়ান। এ বারের মরসুমে আরও একটি অর্ধশতরান করেন তিনি। পঞ্জাবের ইনিংসকে বড় রানে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। কিন্তু কেকেআর অধিনায়ক নীতীশ বল হাতে ৫৭ রানের মাথায় আউট করেন ধাওয়ানকে।
অধিনায়ক আউট হওয়ার পরে রানের গতি কমে গিয়েছিল পঞ্জাবের। দেখে মনে হচ্ছিল, ১৬০ রানের বেশি করতে পারবে না তারা। কিন্তু শেষ দুই ওভারে আবার বদলাল খেলার ছবি। শাহরুখ খান ও হরপ্রীত ব্রার শেষ ১২ বলে ৩৬ রান করলেন। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান করে পঞ্জাব।
এই উইকেটে ১৮০ রান তাড়া করা যে খুব সহজ নয় তা কলকাতার ইনিংসের শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। পঞ্জাবের পেসাররাও গতির হেরফের করছিলেন। ফলে শট খেলা সমস্যা হচ্ছিল। কেকেআরকে প্রথম ধাক্কা দিলেন নেথান এলিস। তাঁর বলের গতি বুঝতে না পেরে ১৫ রানের মাথায় এলবিডব্লিউ হলেন রহমানুল্লা গুরবাজ়। কলকাতার অন্য ওপেনার জেসন রয় ভাল খেলছিলেন। রানের গতি বাড়ান তিনি। কিন্তু স্পিনারকে বলে আনতেই আউট জেসন। হরপ্রীতের বলে সুইপ মারতে গিয়ে ৩৮ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন ইংল্যান্ডের ব্যাটার।
জেসন আউট হওয়ার পরে কলকাতার রানের গতি কিছুটা কমে যায়। অধিনায়ক নীতীশ ও বেঙ্কটেশ চেষ্টা করলেও হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না। চাপ বাড়ছিল কেকেআরের উপর। শেষ ১০ ওভারে জিততে দরকার ছিল ১০৪ রান। অর্থাৎ, প্রতি ওভারে ১০ রানের বেশি করতে হত কলকাতাকে।
ঠিক তখনই হাত খোলা শুরু করলেন নীতীশ। লিভিংস্টোনের এক ওভারে ১৬ রান নিলেন তিনি। সেখান থেকে খেলা আবার কেকেআরের দিকে ঘুরতে শুরু করে। পঞ্জাবের স্পিনারদের বিরুদ্ধে ভাল খেললেন কেকেআর অধিনায়ক। কিন্তু তাঁকে সঙ্গ দিতে পারলেন না বেঙ্কটেশ। রাহুল চাহারের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ১১ রানের মাথায় আউট হলেন তিনি।
শেষ ৩০ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫৮ রান। ক্রিজে নীতীশের সঙ্গে ছিলেন আন্দ্রে রাসেল। একটি বড় ওভার প্রয়োজন ছিল কেকেআরের। তার মাঝেই ৩৭ বলে অর্ধশতরান করেন নীতীশ। কিন্তু তার পরেই চাহারকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ৫১ রানের মাথায় আউট হয়ে ফেরেন কেকেআর অধিনায়ক।
কেকেআরকে জয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল রাসেল ও রিঙ্কুর কাঁধে। শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩৬ রান। তখনই হাত খোলা শুরু করলেন রাসেল। তাঁকে সঙ্গ দিলেন রিঙ্কু। পরের দু’ওভারে উঠল ৩০ রান। শেষ ওভারে ৬ রান দরকার ছিল। আরশদীপ সিংহের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সমস্যা হচ্ছিল। পঞ্চম বলে রাসেল ৪২ রান করে রান আউট হয়ে যান। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। আরশদীপের বল ফাইন লেগ অঞ্চলে চার মারেন রিঙ্কু। আরও এক বার দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন এই বাঁ হাতি ক্রিকেটার। ১০ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি।
ব্যাটারদের অসাধারণ ছন্দের উপর ভর করে অবিশ্বাস্য জয় হায়দরাবাদের। রাজস্থানের ঘরের মাঠে ২১৫ রানের জবাবে হায়দরাবাদের ব্যাটারদের ঝড়ো ইনিংস। মাপা শটের উপর ভর করে জয় পেল হায়দরাবাদ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সঞ্জু স্যামসন। জস বাটলার ও সঞ্জু স্যামসনের দুর্ধর্ষ ব্যাটিংয়ের সুবাদে রাজস্থান রয়্যালস ২০ ওভারে তোলে ২১৪। মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে রাজস্থানকে বিরাট রানের টার্গেট দেয়।
রাজস্থানের ২১৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই চালিয়ে খেলে রাজস্থানের ব্যাটাররা। অনমলপ্রীত সিং ও অভিষেক শর্মা। পাওয়ার প্লে-তে দুই ওপেনারের দাপটে রাজস্থান তোলে ৫১। অনমলপ্রীত আউট হলেও ম্যাচের রাশ ধরে রাখেন অভিষেক। ৩৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হল তিনি।
তারপর রাহুল ত্রিপাঠী, গ্লেন ফিলিপস, হেনরিচ ক্লাসেনের ঝোড়ো ব্যাটিং রাজস্থানকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেয়। ত্রিপাঠীর ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৪৭ রানের ইনিংস। পাশাপাশি ফিলিপস ও ক্লাসেনের ব্যাটিং জয়ের স্বাদ দেয় রাজস্থানকে।
তারপর আবদুল সামাদ রাজস্থানের জয়ের স্বপ্নের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন। ৭ বলে ১৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন সামাদ। শেষ বলে হায়দরাবাদের জিততে চার রানের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেই টার্গেটও আজ ছোট দেখিয়েছে সামাদের সামনে। সন্দীপ শর্মার শেষ বলে ৬ মেরে কঠিন ম্যাচ বের করে দেন সামাদ। হায়দরবাদ ৪ উইকেটে এই ম্যাচ জিতে ভেসে রইল প্লে অফের লড়াইয়ে।
ঋদ্ধিমান সাহা ও শুভমন গিলের দাপটে ঘরের মাঠে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ৫৬ রানে হারালেন হার্দিক পাণ্ড্যরা। ঋদ্ধি ও শুভমন দু’জনে মিলে ১৭৫ রান করেছেন। গোটা লখনউ দল করেছে ১৭১ রান। টসে জিতে প্রথমে গুজরাতকে ব্যাট করতে পাঠান ক্রুণাল। ব্যাটে ঝড় তোলেন শিলিগুড়ির ঋদ্ধি। পেসার, স্পিনার কাউকে রেয়াত করলেন না ঋদ্ধি। পাওয়ার প্লে-র সুবিধা কাজে লাগান তিনি। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে যশ ঠাকুরকে লং রানের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে অর্ধশতরান করেন ঋদ্ধি। আবেশ খানকে স্কোয়্যার লেগ অঞ্চলে ছক্কা মারতে গিয়ে ৪৩ বলে ৮১ করে আউট হন ঋদ্ধি। তিনি মারেন ১০টি চার ও চারটি ছক্কা। অর্থাৎ, ৮১ রানের মধ্যে ৬৪ রান এসেছে বাউন্ডারিতে।
ঋদ্ধি যতক্ষণ মারছিলেন ততক্ষণ ধরে খেলছিলেন শুভমন। কিন্তু ঋদ্ধি ফেরার পরে আক্রমণাত্মক শট খেলা শুরু করলেন তিনি। বাকি সময়টা শুভমন শো। হার্দিক, মিলাররা তাঁকে সাহায্য করলেন। এ বারের আইপিএলে ভাল ছন্দে রয়েছেন শুভমন। সেটাই আরও এক বার দেখা গেল। ২৯ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। ঋদ্ধির মতো শুভমনেরও শতরান করার সুযোগ ছিল। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলের পরে সেই আশা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু শেষ দুই বলে স্ট্রাইক পাননি শুভমন। তার ফলে ৯৪ রানে অপরাজিত থেকে গেলেন তিনি। দল করল ২২৭ রান।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেছিলেন লখনউয়ের দুই ওপেনার কাইল মেয়ার্স ও কুইন্টন ডি’কক। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন তাঁরা। মেয়ার্স এ বারের আইপিএলে ছন্দেই ছিলেন। ডি’ককও প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে হাত খোলা শুরু করেন। মাত্র ৪ ওভারে দলের রান ৫০ পেরিয়ে যায়। পাওয়ার প্লে-তে ৭৮ রান করেন তাঁরা। দেখে মনে হচ্ছিল, টান টান খেলা হতে চলেছে। কিন্তু ৩২ বলে ৪৮ রান করে রশিদ খানের দুরন্ত ক্যাচে আউট হন মেয়ার্স। সেখানেই খেলার ছবি বদলে যায়। ডি’কক নিজের অর্ধশতরান করলেও বাকিরা কেউ রান পাননি। দীপক হুডা, মার্কাস স্টোইনিস, নিকোলাস পুরানরা অল্প রানে আউট হয়ে যান। ৪১ বলে ৭০ রান করে ডি’কক আউট হয়ে গেলে লখনউয়ের জয়ের সব আশা শেষ হয়ে যায়। বল হাতে ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন গুজরাতের মোহিত শর্মা।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে (World Test Championship) চান্স পেলেন না, ফলে আক্ষেপ রয়েছেই। রবিবারের ম্যাচে ঋদ্ধিমান সাহার সেই আক্ষেপেরই চরম বহিঃপ্রকাশ করলেন ব্যাটে। দেখিয়ে দিলেন মুখে নয় কাজে করে দেখাতেই ভালোবাসেন। না হলে ঋদ্ধিমান সাহার (Wriddhiman Saha) রুদ্রমূর্তি এমন আকার ধারণ করবে কেন! তিনি ২০ বলে ৫২ রান করে বোঝালেন তিনি কারও চেয়ে কম নন। মোতেরা স্টেডিয়ামে যেভাবে ঝড় বইল, তাতে তিনি প্রমাণ করলেন ভারতীয় দলে স্থান পাওয়ার যোগ্য তিনি। দ্রাবিড় মাঠে থাকলে বুঝতে পারতেন বাংলার উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে এখনও দলে দরকার।
হাফসেঞ্চুরির ইনিংসে রয়েছে ছয়টি চার ও চারটি ওভার বাউন্ডারি। ঋদ্ধি যেভাবে ইনিংস এগিয়েছেন, তাতে গুজরাতের ইনিংসও এগিয়েছে দুর্বার গতিতে। ঋদ্ধি নির্দয় ছিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের প্রতিটি বোলারের বিরুদ্ধে। সবচেয়ে বেশি মেরেছেন মহসিন খানকে। ঋদ্ধিমান সাহা ও শুভমান গিলের ওপেনিং জুটির দাপটে গুজরাত ১০ ওভারে তুলেছে ১২০ রান। ঋদ্ধি আউট হলেন ৪৩ বলে ৮১ রান করে। ইনিংসে রয়েছে ১০টি চার ও চারটি ওভার বাউন্ডারি।
দিল্লিতে (Delhi) দুই ঝামেলারই মীমাংসা হয়ে গেল। অবসান হলো দুজনেরই দ্বন্দ্বের। প্রথমত বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সঙ্গে দাদা অর্থাৎ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) দ্বন্ধ। মাঠেই সল্টের সঙ্গে সিরাজের। দিল্লিতে ফিল সল্টের ঝড় দেখেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। একের পর এক বল উড়ে গেছে বাউন্ডারির বাইরে। কিন্তু সেই ম্যাচেও বিতর্ক তৈরি হয়। ম্যাচের মধ্যেই মহম্মদ সিরাজের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন এই ব্রিটিশ তারকা। তবে সেই তিক্ততা ম্যাচ শেষে কোথাও যেন উবে গেল। দেখা গেল সৌজন্যের ছবি! একে অপরকে জড়িয়ে ধরলেন।
দ্বিতীয় ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মহম্মদ সিরাজের প্রথম ৩টি বলে ২টি ছক্কা ও ১টি চার মারেন ফিল সল্ট। পরের বলেও ব্যাট চালিয়েছিলেন দিল্লি ব্যাটার। যদিও বল ব্যাটে লাগেনি। অনেকটা দূর দিয়ে বোলিং করেন সিরাজ। তারপরে দেখা যায় কোহলিদের দলের বোলার সিরাজ কার্যত ব্যাটিং ক্রিজে পৌঁছে গিয়ে আঙুল তুলে সল্টের দিকে কী বলছেন। বোঝাই গিয়েছে তিনি মেজাজ হারিয়েছেন। অবশ্য কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি সল্ট। তবে হাসিমুখে সিরাজকে তিনিও অম্লমধুর কিছু বলেছেন। যদিও এ ঝামেলা মাঠেই শেষ। ম্যাচ শেষ হতেই সব রাগ গলে জল। সল্ট ও সিরাজ একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। সিরাজ নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে সল্টকে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান এবং আলিঙ্গন করেন। ঝামেলা সেখানেই শেষ।
ওদিকে সৌরভের সঙ্গে বিরাটের অন্তর্দ্বন্দ্ব তো ছিলই, দু’জনের মধ্যে সংঘাত লেগে গিয়েছিল। একে অপরের সঙ্গে হাত মেলাননি। সেই ছবি পালটে গেল শনিবার রাতে কোটলার মাঠে। সৌরভ এগিয়ে এসে কথা বলেন কোহলির সঙ্গে। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ৫৫ রানের ইনিংসের জন্য। পাশাপাশি সাত হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন কোহলি। সৌরভ আদৌ কথা বলেন কিনা সেই নিয়ে আগ্রহ ছিল। কিন্তু খেলা শেষে মহারাজ এগিয়ে গিয়ে বিরাটের পিঠে হাত রাখেন। মুছে যায় দুরত্ব।
বিরাটের বেঙ্গালুরুলকে (RCB) হারালো দাদার দিল্লি (DC)। দিল্লি জিতল (Win) সাত উইকেটে। প্রথমে ব্যাটিং করে কোহলির বেঙ্গালুরু ৪ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ১৮১। জবাবে দিল্লি ক্যাপিটালস সহজে সেই রান তুলে দিয়েছে। ১৮৭/৩ করে দিয়েছে ২০ বল বাকি থাকতেই। এই ম্যাচে কোহলি ৫৫ রান করেছেন। দিল্লিকে জয় এনে দেওয়ার মূল কারিগর হলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটার ফিল সল্ট। তিনি করেছেন ৪৫ বলে ৮৭ রান। তাঁর এই স্বপ্নের ইনিংসে রয়েছে আটটি চার ও ছয়টি ওভার বাউন্ডারি। দিল্লি ক্যাপিটালস এই জয়ের সুবাদে আইপিএল প্লে-অফের লড়াইয়ে ভেসে থাকল। তারা হায়দরাবাদকে টপকে লিগ টেবিলের নয় নম্বরে উঠে এল। ধরে ফেলল কলকাতাকে।
কোটলায় টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আরসিবি দলনায়ক ফ্যাফ ডু’প্লেসি। অ্যাওয়ে দল প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৮১ রানের বড়সড় ইনিংস গড়ে তোলে। আরসিবির হয়ে জোড়া হাফসেঞ্চুরি কোহলি ও মহিপালের। কোহলি ৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৪৬ বলে ৫৫ রান করে আউট হন। মহীপাল ৬টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ২৯ বলে ৫৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। বিরাট ৪২ ও লোমরোর ২৬ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরান করেন। এছাড়া নিশ্চিত হাফ-সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন ফ্যাফ ডু’প্লেসি। তিনি ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৩২ বলে ৪৫ রান করে আউট হয়ে যান। দিল্লির হয়ে অর্ধেকের বেশি কাজ করে দিয়েছেন সল্ট। পাশাপাশি রিলে রসৌও ৩৫ রান করে দলের জয় সহায়তা করেছেন।
উইনিং শট ধোনির (Dhoni) নামে, বলে দারুন দাপট দেখিয়ে মুম্বইকে (MI) অনায়াসে হারিয়ে দিলো চেন্নাই (CSK)। ফলে পয়েন্ট টেবিলে ২ নম্বরে জায়গাও করে নিলো চেন্নাই। টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় চেন্নাই। আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৩৯-৮ স্কোরে থেমে যায় মুম্বই। চেন্নাই সেই রান তুলে নিল ১৪ বল বাকি থাকতেই। সেই জয় এল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ব্যাটে।
মরশুমের প্রথম থেকেই ব্যর্থ মুম্বইয়ের ওপেনিং জুটি, শনিবার প্রথমে রোহিত এলেন না ব্যাট করতে, দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান গ্রিন। বাধ্য হয়ে নামতে হয় রোহিতকে। কিন্তু জুটি গড়তে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারে দীপক চাহার তুলে নেন ঈশান কিশনকে। অনায়াসে ধরে খেলতে পারতেন ঈশান। অতিরিক্ত আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেট খোয়ালেন তিনি।
রোহিতদের একমাত্র নেহাল ওয়াধেরা রান পেলেন, তরুণ ব্যাটার এ বারই প্রথম মুম্বইয়ের হয়ে খেলছেন। প্রতিটি ম্যাচেই নিজের মতো করে অবদান রাখছেন। এ দিনও চাপের মুখে চেন্নাই বোলারদের সামলে অর্ধশতরান করে গেলেন তিনি। ছন্দে থাকা সূর্যকুমার যাদবের কাছে সুযোগ ছিল টানা তৃতীয় অর্ধশতরানের। শুরুটাও ভালই করেছিলেন। কিন্তু ধরে রাখতে পারলেন না। জাডেজার বিরুদ্ধে উইকেট ছেড়ে চালাতে গিয়েছিলেন। বলের লাইন মিস্ করে বোল্ড। নেহাল আউট হওয়ার পরে আর কোনও আশা ছিল না। শেষের দিকে একের পর এক উইকেট পড়ল। তুষার এ দিনও দুর্দান্ত বল করলেন। বেগনি টুপিও উঠল তাঁর মাথায়। তিনটি উইকেট নিলেন মাথিশা পাথিরানাও।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মুম্বইয়ের উপর দাপট শুরু করে চেন্নাই। আর্শাদ খানের ওভার থেকে ওঠে ২০। চার ওভারে ৪৬ রান তুলে ফেলে তারা। রোহিত বাধ্য হন স্পিনারদের আনতে। প্রথম ওভারেই সাফল্য। পীযূষ চাওলার প্রথম বলে ফিরে যান রুতুরাজ গায়কোয়াড়। তাতেও চেন্নাইয়ের রান তোলার গতি কমেনি। সদ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সুযোগ পাওয়া অজিঙ্ক রাহানে নেমেই আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলতে শুরু করেন। তাঁকেও তুলে নেন চাওলা। রাহানেকে এলবিডব্লিউ করেন তিনি। অম্বাতি রায়ডুও আহামরি খেলতে পারেননি।