১৮ জুন ফাদার্স ডে অর্থাৎ বাবাদের দিন। কেবলমাত্র যে জন্ম দিলেই বাবা হওয়া যায় তা নয়। ভালোবাসা-স্নেহ-পিতৃত্ব বাবাকে স্বর্গ থেকেও উচ্চতর আসনে বসাতে পারে। যেমনটা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে মিঠুনের ভরা সংসার। তবে অনেকেই জানেন না মিঠুনের মেয়ে দিশানী চক্রবর্তী (Dishani Chakraborty) আসলে তাঁর দত্তক কন্যা। তাঁকে খুঁজে পাওয়ার গল্প যেন একেবারে রূপকথার মতো।
যদিও মিঠুন যেই সময় মেয়েকে খুঁজে পেয়েছিলেন তখন তেমন পাপারাৎজিদের বাড়বাড়ন্ত ছিল না। যতটুকু খবর পাওয়া যায়, ফুটফুটে এই মেয়েকে পাওয়া গিয়েছিল কলকাতাতেই। মিঠুন তখন অভিনয় জগতে পসার করেছেন। অনেক ছবির কাজ রয়েছে হাতে। এমনই একদিন ডাস্টবিনের পাশে একটি বাচ্চার পড়ে থাকার খবর পাওয়া যায়। অভিনেতা ছুটে যান সেখানে। বাচ্চাটিকে বাড়ি নিয়ে যান।
ফুটফুটে এই শিশুকন্যাকে দেখে মায়া জেগেছিল মিঠুন পত্নী যোগিতা বালির মনেও। তাঁরা বাচ্চাটিকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দেরি না করে আইনি কাজ সেরে ফেলেন তাঁরা। সেই শিশুর নাম হয় দিশানী চক্রবর্তী। মুম্বইতে বড় হয়েছিলেন মিঠুন কন্যা। এরপর লস এঞ্জেলেস-এ গিয়ে অভিনয় নিয়ে নিজের পড়াশোনা শেষ করেন। বর্তমানেও সেখানেই থাকেন দিশানী। স্বপ্ন দেখেন বাবার মতো অভিনেতা হবেন।
বিচারপতি (Judge) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Avijit Ganguly) নির্দেশ (Order) খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি মামলার শুনানি ছিল, সংশ্লিষ্ট সেই মামলায় অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের রায়কে খারিজ করে দিলো কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে, ওই নিয়োগ সংক্রান্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ তা খারিজ করে দিয়েছে।
সূত্রের খবর, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগের কথা জানিয়েছিল পর্ষদ। তাতে জানিয়েছিল, প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যে সব প্রার্থী ২০২০-২২ সালে ডিএলএড প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হয়েছেন, তাঁরা চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। পর্ষদের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন সৌমেন পাল-সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী। মামলাকারীদের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ২০১৬ সালের নিয়ম অনুযায়ী ডিএলএড প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন যাঁরা, তাঁরাই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন। এক্ষেত্রে ২০২০-২২ সালের প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে তাঁরা কীভাবে চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন? বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছিলেন। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয়।
মনি ভট্টাচার্য: সরকারি স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করতে, এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ গৃহশিক্ষকরা (Private Tutor)। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে (High Court) রাজ্যের ৩২ জন সরকারি স্কুল শিক্ষকের (Goverment Teacher) বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গৃহশিক্ষকদের একটি সংগঠন গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির সদস্যদের দাবি, যারা বেআইনি প্রাইভেট টিউশনে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের আরও অভিযোগ, শিক্ষা দফতর, সংশ্লিষ্ট জেলার স্কুল পরিদর্শক ও স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বারবার, এ বিষয়ে জানিয়ে কোনও লাভই হয়নি। তাই এবার অভিযুক্ত সরকারি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে রাজ্যের শীর্ষ কোর্টের দ্বারস্থ তাঁরা।
২০১৮ সালে মার্চ মাসের ৮ তারিখে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দফতর একটি নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, সরকারি স্কুল শিক্ষকরা কোনওভাবেই পয়সার বিনিময়ে গৃহশিক্ষকতা করতে পারবেন না। কিন্তু এই নিয়ম মানা হচ্ছে কই! অভিযোগ সরকারি স্কুল শিক্ষকদের একটি অংশ নির্দ্বিধায় পয়সার বিনিময়ে গৃহশিক্ষকতা করছেন। সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানোর অভিযোগ বারবার আনা সত্ত্বেও, সরকারি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয় কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে সিএন -ডিজিটালের তরফে শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা, এটা সংশ্লিষ্ট জেলার স্কুল পরিদর্শকের ব্যাপার।'
এই মামলায় গৃহশিক্ষকদের পক্ষে হাইকোর্টের আইনজীবী মুকুল বিশ্বাস বলেন, 'আইনভঙ্গকারী প্রতিটি শিক্ষকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ শিক্ষা দফতরের। শিক্ষক সমাজের মেরুদন্ড। তাঁরা যদি আইন ভাঙ্গে, ছাত্ররা কী শিখবে? এই অবস্থায় শিক্ষা দফতর ধৃতরাষ্ট্র হয়ে থাকতে পারে না।' এ বিষয়ে গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতি সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দীপঙ্কর দাস বলেন, 'আমরা সরকারি স্কুল শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা বন্ধের জন্য ৩২ জনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি, গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়, বিভিন্ন স্কুলে যুক্ত তাঁরা। এরই প্রতিবাদে সারা রাজ্যজুড়ে পথে নেমে আন্দোলনের ডাক দিয়েছি।'
পর্ষদ সভাপতিকে কড়া ভাষায় সতর্ক করল কলকাতা হাইকোর্টের (High court) বিচারপতি (Judge) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। শুক্রবার বিচারপতি বলেন, 'মানিক ভট্টাচার্যর জুতোয় পা গলাবেন না।' আজ শুক্রবার পর্ষদ সভাপতির হাজিরা ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে। টেট সার্টিফিকেট দিতে দেরি হচ্ছে কেনো? সেই জন্য শুক্রবার, পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালকে হাজিরার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার পর্ষদ সভাপতি আদালতে জানায়, '২০১৪-র টেট সার্টিফিকেট দিতে প্রচুর অর্থ খরচ হতে পারে।'
সে প্রশ্নের উত্তরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, 'কোটি টাকা খরচ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাখতে পারছেন, আর এটুকু খরচ করতে সমস্যা? যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁদের টেট সার্টিফিকেট দিয়ে দিন।' পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও মন্তব্য করেন, 'মানিক ভট্টাচার্যর জুতোয় পা গলাবেন না।' যদিও এবিষয়ে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
নিয়োগ দুর্নীতিতে (Education Scam) ক্রমশ ফাঁস হচ্ছে হাড়হিম করা তথ্য। পার্থ (Partha), অর্পিতা, মানিক, শান্তনু, অয়ন, কুন্তলের বাড়ি, অফিস তল্লাশি করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাল গোটানোর চেষ্টা করছে ইডি (Ed)। ইডির দেওয়া রিমান্ড লেটার অনুযায়ী, বেঙ্গল প্রাইমারি বোর্ড অফ এডুকেশনের ছাত্রদের থেকে অফলাইন অ্যাপ্লিকেশনের জন্য মানিক ভট্টাচার্য ২০১৮-২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন (Manik)।
ইডির প্রকাশ করা সেই তালিকা অনুযায়ী, ২০১৮-২০২০ বর্ষের জন্য ৩৫৩ ডিএলএড কলেজ থেকে ৯৫৪৯ প্রার্থীর থেকে মানিক তুলেছিলেন ৪ কোটি ৭৭ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা। ২০১৯-২০২১ বর্ষের জন্য ৩২২ কলেজ থেকে ১২,৮২৪ প্রার্থীর থেকে মানিক তুলেছিলেন ৬ কোটি ৪১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি ২০২০-২০২২ বর্ষে ৩৬০ কলেজ থেকে ১৯০৯১ প্রার্থীর থেকে মানিক তুলেছিলেন- ৯ কোটি ৫৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল অর্থাৎ ৪ বছরের মধ্যে মানিক তোলেন ২০ কোটি ৭৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এমনকি এসবের পর ইডি কর্তারা জানিয়েছেন, এই বিপুল পরিমাণের অর্থ সংগ্রহের জন্য মানিক ভট্টাচার্য সেক্টর ফাইভের মহিষবাথানে অবস্থিত অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশনের অফিসে লোক পাঠাতেন।
এছাড়া ইডি জানিয়েছে, কুন্তল ঘোষকে জেরা করে যে তথ্য উঠে এসেছে সেটা হল, অয়ন শীল অনেক প্রার্থীর অবৈধভাবে সার্টিফিকেট মারফত শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যবস্থা করেছিলেন। ইডির দাবি, ২০১৪ টেট ও ২০১২ টেট থেকে অয়ন শীল মানিক ভট্টাচার্যের সম্মতিতে টেটের অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে ১০০ কোটি টাকা তুলেছে।
অয়নের অফিসে উদ্ধার হয়েছিল বহু তথ্য, নথি, যা হাতড়ে এজেন্ট, পুরসভার চেয়ারম্যান, মেয়র, রহস্যময়ী নারী, আরও কত কী। সেই নথি ঘেটে ইডির অধিকারিকরা জানতে পারেন অয়নের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া নথির ২০১২ সালের প্রাইমারির তালিকা ও ওএমআর শিট আছে। সেই মোতাবেক মঙ্গলবারই তড়িঘড়ি ডেকে পাঠানো হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবকে।
ইডি সূত্রে দাবি, তাঁকে ২০১২ সালের নিয়োগের তথ্য নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল যে অয়নের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া তথ্যের সমন্ধে আরও জানার জন্য তাঁকে নথি-সহ ডাকা হয়েছে। ইডির নির্দেশ মোতাবেক, মঙ্গলবার সমস্ত তথ্য সহ ইডির কলকাতা দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রতিনিধিরা, কিন্তু এদিন প্রাথমিকের সচিব এলেন না। ইডি সূত্রে খবর, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে যে নথি পাঠানো হয়েছে সে সমস্ত খুঁটিয়ে দেখা হবে, এরপরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ২০১২ টেটের নথি উদ্ধার নিয়ে, সোমবার ফেসবুক পোস্ট করে বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর দিকে আঙ্গুল তোলেন। তিনি মঙ্গলবারের ফেসবুক পোস্টে বলেন, '২০১২ টেট খাতা খুলছে, মনে হচ্ছে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীও বেশিদিন বাইরে থাকতে পারবে না। যারা চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিল তাদের বিষ্ণুমাতাও উদ্ধার করতে পারবে না।'
মামা বাড়ির সঙ্গে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির যোগ জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ (Whats App) মেসেজে সিবিআই তদন্তের দাবি। রাতারাতি সেই মেসেজ ঘনিষ্ঠদের পাঠিয়ে আত্মঘাতী (Suicide) দুর্গাপুরের (Durgapur) এক যুবক ও তাঁর পরিবার। রবিবার সকালে দুর্গাপুরের কুরুরিয়া ডাঙ্গা মিলনপল্লি এলাকার ঘটনা। পুলিস গিয়ে তাঁদের মৃতদেহ (Dead Body) উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস জানিয়েছে, ওই বাড়ির কর্তা অর্থাৎ মৃত অমিত মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী রুপা মণ্ডল সহ তাঁদের আট বছরের সন্তান নিমিত মণ্ডল ও চোদ্দ মাসের নিকিতা মণ্ডলের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস। রবিবার পুলিস আরও জানায় যে, ওই দুই শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন (Murder) করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে অমিতের মোবাইল অমিতের মামাবাড়ির অনেকের প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগের কথা উল্লেখ আছে...থেকে রাতে স্থানীয় ও ঘনিষ্ঠদের কাছে ম্যাসেজ যায়। যেখানে অমিতের মামাবাড়ির অনেকের প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগের কথা উল্লেখ আছে। রবিবার কুরুরিয়া ডাঙ্গাতে একই পরিবারের চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। যদিও গোটা ঘটনায় অমিতের মামা বাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে অমিতের শাশুড়ি। রবিবার তিনি বলেন, 'আমার জামাইকে ওঁর মামা বাড়ির লোকেরা অত্যাচার করত, অপমান করত, ওঁরাই আমার জামাইকে খুন করেছে।'
রবিবার অমিতের পরিবারের মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে বিশেষ ঝক্কি পোহাতে হয় পুলিসকে। অমিতের বাড়িতে স্থানীয়রা এসে ভিড় করে এবং পুলিসকে বাধা দেয়। এক স্থানীয়দের দাবি, 'অমিত ভালো ছেলে ছিল। কেন এমন ঘটনা ঘটাল সেটা পুলিস তদন্ত করুক।' দোষীদের উপযুক্ত সাজার দাবিতে এদিন স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
স্থানীয়দের দাবি, অমিতের পাঠানো মেসেজে লেখা ছিল অমিতের মামাবাড়িতে নাকি কোটি কোটি টাকা রয়েছে। এই দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তদন্তের দাবি জানায় সে। অমিতের এমন হোয়াটস অ্যাপ ম্যাসেজ পাওয়া মাত্রই অমিতের আত্মীয়রা কুরুরিয়া ডাঙ্গার বাড়িতে এসে দেখেন অমিতের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। তাঁর স্ত্রী রুপার দেহ বিছানায় পড়ে। আর মৃত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে তাঁদের দুই সন্তান। এরপরই তাঁরা থানায় খবর দেন। দুর্গাপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে এলে স্থানীয়রা অমিতের মামার বাড়ির বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
পুলিস সূত্রে দাবি, পূর্বেই মামা বাড়ির সঙ্গে অমিতের জমিজমা সংক্তান্ত বিষয়ে বিবাদ ছিল। সেখান থেকে কিছু ঘটলো নাকি, অমিতের পাঠানো মেসেজের আদতে কোনও ভিত্তি আছে কিনা সেটার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করছে পুলিস।
ডিসেম্বরে হওয়া প্রাথমিক টেটের (Primary TET) ফল প্রকাশ হল শুক্রবার বেলা ১টার পর। গত বছর ১১ ডিসেম্বর টেট হয়েছে, প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় বসেন। জানা গিয়েছে ফল, প্রকাশের পর পর্ষদ ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হবে। বেলা তিনটে থেকে দেখা যাবে সেই ফল। এদিকে, বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত উত্তরপত্র প্রকাশ করেছিল পর্ষদ (Primary Board)। ১১ ডিসেম্বর প্রাথমিক টেটের প্রশ্নপত্রের সঠিক উত্তর কী, তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে পর্ষদ। এই উত্তরের ভিত্তিতেই শুক্রবার প্রকাশিত প্রাথমিক টেটের ফল, আগেই জানিয়েছে পর্ষদ।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের মধ্যেই এই ফল প্রকাশের দিকে তাকিয়ে রাজ্যের লক্ষাধিক চাকরিপ্রার্থী। পরীক্ষা গ্রহণের দু'মাস পর ফল ঘোষণা বলে পর্ষদ সূত্রে খবর। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। তিনি জানান, '১১ ডিসেম্বর টেট পরীক্ষার দু মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ। নাম নথিভুক্ত করেছিলেন ৬ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৩২ জন, এঁদের মধ্যে ৬ লক্ষ ১৯ হাজার ১০২ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন।' পরীক্ষায় পাশ করেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৪৯১ জন, পাশের হার ২৪.৩১%। অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫৪৯ জন, এদিন সংবাদ মাধ্যমকে জানান গৌতমবাবু।
জানা গিয়েছে, টেট ২০২২ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের ইনা সিংহ। তিনি ১৫৫-র মধ্যে ১৩৩ পেয়ছেন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন চার জন। ১৩২ পেয়েছেন হুগলির মৌনিশা কুন্ডু, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেঘনা চক্রবর্তী এবং দীপিকা রায় আর পূর্ব মেদিনীপুরের অদিতি মজুমদার। অর্থাৎ মেধাতালিকার প্রথম এবং দ্বিতীয় দুই স্থানেই মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের জয়জয়কার। জানা গিয়েছে, প্রথম-দশমের মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন ১৭৭ জন।
ডিসেম্বরে হওয়া প্রাথমিক টেটের (Primary TET) ফল প্রকাশ হল শুক্রবার বেলা ১টার পর। গত বছর ১১ ডিসেম্বর টেট হয়েছে, প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় বসেন। জানা গিয়েছে ফল, প্রকাশের পর পর্ষদ ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হবে। বেলা তিনটে থেকে দেখা যাবে সেই ফল। এদিকে, বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত উত্তরপত্র প্রকাশ করেছিল পর্ষদ (Primary Board)। ১১ ডিসেম্বর প্রাথমিক টেটের প্রশ্নপত্রের সঠিক উত্তর কী, তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে পর্ষদ। এই উত্তরের ভিত্তিতেই শুক্রবার প্রকাশিত প্রাথমিক টেটের ফল, আগেই জানিয়েছে পর্ষদ।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের মধ্যেই এই ফল প্রকাশের দিকে তাকিয়ে রাজ্যের লক্ষাধিক চাকরিপ্রার্থী। পরীক্ষা গ্রহণের দু'মাস পর ফল ঘোষণা বলে পর্ষদ সূত্রে খবর।
টেট ২০২২ (TET 2022) আয়োজনে পর্ষদের ভূমিকায় সন্তুষ্ট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবারের পর বুধবারেও তাঁর অবস্থান একই। এদিন বিচারপতি (Justice Ganguly) বলেন, "শিক্ষা পর্ষদ (Primary Board) যদি ভালো কাজ করে তার প্রশংসা আমি করবোই। সরকারের যদি সঠিক ভূমিকা থাকে তবে মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata) কাজের প্রশংসা করবো। আবার যদি দেখি শিক্ষা পর্ষদ কোনও ভুল কাজ করছে তবে তার সমালোচনাও আমি করবো। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই।"
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের একটি মামলা চলাকালীন এই মন্তব্য করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিকে, রবিবার রাজ্যজুড়ে হওয়া টেটে বসেন ৭ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী। এই বিরাট আয়োজনকে সুষ্ঠু রাখতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য প্রশাসন। রবিবার ছুটির দিনেও পথে ছিল পর্যাপ্ত বাস, ছিল অতিরিক্ত ট্রেন।
কিন্তু প্রশাসনিক এই তৎপরতার সঙ্গেই একাধিক অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন কিছু পরীক্ষার্থী। কোথাও বায়োমেট্রিক বিকল, কোথাও অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভুল ঠিকানার মতো অভিযোগ উঠেছে। তবে পরীক্ষার সন্ধ্যায় পর্ষদ সভাপতি দাবি করেছেন সুষ্ঠু হয়েছে চলতি বছরের টেট। এই আয়োজনের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান।
১১ নভেম্বর, ২০২২ আয়োজিত টেট (TET 2022) পরীক্ষার ব্যবস্থাপনায় সন্তোষপ্রকাশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly)। 'টেট হওয়ার পর কার্বন কপি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে কাজ ভালো হচ্ছে।' এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এহেন মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের।
নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টেট-২০২২ ওএমআর শিট সংরক্ষণ করা থাকবে। ৫.৫ লক্ষের বেশি ওএমআর শিট সংরক্ষণ করা হচ্ছে। আদালতে জানালের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী। রবিবার রাজ্যজুড়ে টেটে বসেন ৭ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী। আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছিল রাজ্য প্রশাসন। ছুটির দিন হলেও পথে ছিল পর্যাপ্ত বাস, ছিল অতিরিক্ত ট্রেনের ব্যবস্থা।
যদিও একাধিক অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন কিছু পরীক্ষার্থী। কোথাও বায়োমেট্রিক বিকল, কোথাও অ্যাডমিট কার্ডের পরীক্ষা কেন্দ্রের ভুল ঠিকানার মতো অভিযোগ উঠেছে। যদিও পরীক্ষার সন্ধ্যায় পর্ষদ সভাপতি দাবি করেছেন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে চলতি বছরের টেট পরীক্ষা। এই আয়োজনের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রায় পাঁচ বছরেরও বেশি সময়ের অপেক্ষা, তার উপর লাগাতার আন্দোলন, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, আদালতের কড়া দাওয়াই, হাজার টানাপোড়েন, সব কাটিয়ে অবশেষে রবিবার রাজ্যে (West Bengal) হয়ে গেল প্রাথমিক টেট (Primary TET) পরীক্ষা। মোটের উপর রাজ্যজুড়ে শান্তিপূর্ণ ভাবেই টেট হয়েছে বলে ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কিন্তু রাজ্যজুড়ে চালচিত্র বলছে অন্য কথা। শহর কলকাতা (Kolkata) থেকে জেলা, একাধিক জায়গায় উঠে এল চরম ভোগান্তি আর অব্যবস্থার ছবি। অনেক পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ পরিবহণ ব্যবস্থা ঠিক ছিল না, রবিবার বলে যানবাহন কম ছিল। ফলে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। টেট পরীক্ষা দিলে পরিবহণের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে অভিভাবকরা।
এদিকে শুধুমাত্র যানবাহন সমস্যাই নয়, পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজতে গিয়েও হাঁড়ির হাল পরীক্ষার্থীদের। টেট পরীক্ষা কেন্দ্রের ঠিকানা ভুল নিয়ে বিভ্রান্ত পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের এডমিট কার্ডে রয়েছে ভুল ঠিকানা। সল্টলেক লবণ হ্রদ বিদ্যাপীঠ এডি ব্লকে কিন্তু এডমিট কার্ডে লবণ হ্রদ বিদ্যাপীঠ বিডি ব্লক উল্লেখ করা রয়েছে। অভিযোগ, হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করলেও কোন রকম সহযোগিতা করা হয়নি। কোন্নগর বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে টেট পরীক্ষার সিট্ পড়ে। কিন্তু পিনকোডে ভুল থাকার জন্য অনেকেই পৌঁছন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কন্যা নগর স্কুলে। আবার এক স্কুলের বাইরে নোটিস দেখা যায় যে সেখানে নয়, পরীক্ষা রয়েছে সোদপুরের একটি স্কুলে। এরপরেই বিভ্রান্ত পরীক্ষার্থীদের গাড়ি করে নির্দিষ্ট স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে বিষয় থেমে থাকেনি এখানেই। অন্যান্য বিভ্রান্তির সঙ্গেই দেখা গেল হয়রানির আরও এক চিত্র। শাঁখা পলা খুলিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশের নির্দেশ, আর যার ফলে অগত্যা মহিলাদের সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে খুলতে হয় শাঁখা। এমনকি দূর দূরান্ত থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করতে পারেননি, অথচ ব্যাগ বাইরে কোথায় রাখবেন তাও কিছু নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। ফলে ব্যাগে ফোন, পার্স ফেলে মানসিক অশান্তির মধ্যে পরীক্ষা দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ। কড়াকড়ি করতে গিয়ে সেটা বারাবারিতে পরিণত হয়েছে, দাবি পরীক্ষার্থীদের।
তবে টেট পরীক্ষা শেষ হলেও শেষ হয়নি অশান্তি। কলকাতার প্রখ্যাত দেশপ্রিয় পার্ক তীর্থপতি ইনস্টিটিউশনে বিক্ষোভে সামিল হলেন পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা নির্দিষ্ট সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে এসেছিলেন। পরীক্ষা শুরুর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম বায়োমেট্রিক। কিন্তু তাঁদের সেই পদ্ধতি সম্পন্নই হয়নি বলে অভিযোগ। এদিকে বায়োমেট্রিক না হলে তাঁরা অনুপস্থিত বলে বিবেচিত হবেন বলে আশঙ্কা, আর তাতেই বিক্ষোভে সামিল পরীক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও খবর। যতক্ষণ না সমস্যার সমাধান হবে ততক্ষণ স্কুলেই অবস্থান করবেন বলে হুঁশিয়ারি পরীক্ষার্থীদের।
অপরদিকে দূর্ঘটনার কবলে টেট পরিক্ষার্থী। সিউড়ির মাঝি গ্রাম থেকে হেতমপুরে টেট পরিক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন পরীক্ষার্থী শুভশ্রী দে। সেই সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মারে চারচাকা গাড়ি। ঘটনায় আহত শিশু সহ তিনজন। এদিন সকালে বাঁকুড়ার কোতুলপুর থেকে একটি গাড়িতে চাতরা রামাই পন্ডিত কলেজে টেটের পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গাড়িতে কলেজের একজন কর্মী ছাড়াও ছিলেন পুলিশকর্মীরা। সাঁইতাড়া ও মির্জাপুরের মাঝামাঝি গাড়িটি মুখোমুখি ধাক্কা মারে একটি পিক আপ ভ্যানে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কোতুলপুর থানার পুলিশ। এরপরই তড়িঘড়ি পুলিশের অপর একটি গাড়িতে করে প্রশ্নপত্র চাতরা রামাই পন্ডিত কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি দাবি করেন, সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে পরীক্ষা। এই আয়োজনকে সফল করার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ধন্যাব্দ জানান। পাশাপাশি পুলি প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসায় সরব ছিলেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল।
বিক্ষিপ্ত অভাব অভিযোগকে সঙ্গী করেই শেষ চলতি বছরের টেট পরীক্ষা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, প্রায় ৫ বছর পর রবিবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়েছিল চলতি বছরের টেট পরীক্ষা (TET 2022)। নির্ঘণ্ট মিলিয়ে শেষ হয় আড়াইটের সময়। রাজ্যের ১,৪৫৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৬ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৩১ জন পরীক্ষার্থী (Teacher Aspirants) বেলা আড়াইটে পর্যন্ত পরীক্ষা দেন। বহু প্রতীক্ষিত এই পরীক্ষার সুষ্ঠু আয়োজনের স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (Primary Board) অন্দরে সাজোসাজো রব। খোলা হয়েছিল পর্ষদের কন্ট্রোলরুম, জারি একাধিক বিধিনিষেধ। প্রশাসনের দাবি ছুটির দিন হলেও রাস্তায় ছিল পর্যাপ্ত সরকারি এবং বেসরকারি বাস। কলকাতার-শহরতলির পরীক্ষাকেন্দ্রে সময়ে পৌঁছতে এদিন সাতসকাল থেকে শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশনে ছিল পরীক্ষার্থীদের ভিড়।
ভিড় চোখে পড়েছে শহর লাগোয়া ফেরি ঘাটগুলোতেও। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার নির্দেশিকা দিয়েছিল পর্ষদ। কিন্তু পরিবহণ না পেয়ে, ট্রেন মিস করে অনেকে ১১টার পরেও পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেন। পর্ষদের বিশেষ অনুমতিক্রমে তাঁদের ঢুকতে অনুমতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্র। পৌনে বারোটা এমনকি পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিট আগেও অনেক পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে ঢুকতে দিয়েছে পর্ষদ। বায়োমেট্রিক পরিচয় সেরে তবেই আসনে বসার অনুমতি পেয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।
জেলা এবং শহরের কিছু জায়গা থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের ঠিকানা ভুলের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রের বাইরে ব্যাগ রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, এই অভিযোগ অনেক স্কুল থেকে এসেছে। এমনকি বিবাহিত মহিলা পরীক্ষার্থীদের অলঙ্কার এবং শাঁখা-লোহা খুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে হয়েছে বলেও অনেক জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছিল।
এদিকে, টেটের প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে রাজ্যের ছয় জেলায় সাময়িকভাবে সাসপেন্ড ইন্টারনেট পরিষেবা। পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে সাময়িক অব্যবস্থার অভিযোগ উঠলেও সমস্যা সমাধানে সজাগ ও সতর্ক ছিলপর্ষদ, প্রশাসন বলে সূত্রের খবর।
রবিবার বেলা ১২টায় শুরু চলতি বছরের টেট পরীক্ষা (TET Exam 2022), চলবে দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত। মোট ১ হাজার ৪৫৩টি পরীক্ষাকেন্দ্রে এই পরীক্ষায় বসবেন ৬ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৩১ জন। এই পরীক্ষার জন্য পরীক্ষার্থীদের নিশ্চিন্তে কেন্দ্রে পৌঁছতে রবিবার পথে নামবে ২ হাজারেরও বেশি সরকারি বাস ও ৩৬ হাজার বেসরকারি বাস। সব মিলিয়ে ৩৮ হাজার বাস নামবে ছুটির দিন। এই গণপরিবহণের (Bus-Train) পাশাপাশি চলবে বাড়তি ট্রেনও। পূর্ব রেল জানিয়েছে, বাড়তি ১৬ জোড়া ট্রেন চলবে শিয়ালদহ ডিভিশনে (Sealdah Division)। হাওড়া, আসানসোল, মালদা ও খড়গপুর ডিভিশনে সপ্তাহের অন্য দিনের মতোই ট্রেন চলবে রবিবার, পরীক্ষার দিন। পরীক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ নিশ্ছিদ্র করতে, বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে পরিচয় যাচাই, হাতে ধরা মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি, সিসিটিভি নজরদারির মতো একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়ে প্রস্তুত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (Primary Board)।
ইতিমধ্যেই পরীক্ষার্থী, অবজার্ভার, ইনভিজিলেটর, সেন্টার ইনচার্জ, পুলিশ, জেলা প্রশাসন-সহ পরীক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত সকলের কার কী করণীয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে পর্ষদের তরফে। শুক্রবার আর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে আবারও সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পরীক্ষার্থী বা অন্য যে কেউ যদি গাইডলাইন লঙ্ঘন করেন বা পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনও তথ্য বা নথি ডিজিট্যাল বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে আদানপ্রদান করেন, তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ নেবে পর্ষদ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফেও চালু রয়েছে কন্ট্রোল রুম।
দেখুন টেট পরীক্ষা ঘিরে পর্ষদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি কী রকম:
১) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে
২) অবশ্যই ঢুকতে হবে ১১টার মধ্যে
৩) ১১.৩০-র মধ্যে অ্যাডমিট কার্ড, পরিচয়পত্রর প্রমাণ যাচাই করবেন ইনভিজিলেটর
৪) ১১.৩০ থেকে ১১.৪৫-এর মধ্যে পরীক্ষা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করবেন ইনভিজিলেটর
৫) ১১.৪৫ মিনিটে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র (টেস্ট বুকলেট) এবং ওএমআর দেওয়া হবে
৬) ১১.৪৫ থেকে ১১.৫৯ পর্যন্ত টেস্ট বুকলেট ও ওএমআর-এ প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করবেন পরীক্ষার্থীরা
৭) বেলা ১২টা থেকে পরীক্ষা শুরু। ২.২৫ মিনিটে বাজবে ওয়ার্নিং বেল। পরীক্ষা শেষ হবে দুপুর ২.৩০-এ
৮) প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রবেশ-বাহির পথ ও কন্ট্রোল রুমে সিসিটিভির নজরদারি থাকবে
৯) পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার সময় হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হবে পরীক্ষার্থীদের। বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে যাচাই করা হবে পরিচয়
১০) পরীক্ষার্থীকে বৈধ পরিচয়পত্র যেমন, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে আসতে হবে। নিয়ে আসতে হবে, কালো কালির বলপয়েন্ট পেন, যে ছবি অ্যাডমিট কার্ডে আছে, সেই ছবির একটি কপি ও অ্যাডমিট কার্ডের দু’টি কপি
১১) পরীক্ষাকেন্দ্রে নিষিদ্ধ বস্তুর তালিকা দীর্ঘ। যেমন, কাগজের টুকরো, ক্যালকুলেটর, জলের বোতল, সোনার গহনা, ঘড়ি বা হাতঘড়ি, ক্যামেরা, ওয়ালেট, সানগ্লাস, হাতব্যাগ, মোবাইল ফোন, ব্লু-টুথ, ইয়ারফোন, পেজার, হেল্থব্যান্ড ইত্যাদি
১২) বসতে হবে নির্ধারিত আসনেই। পরীক্ষা শেষে গোলাপী রঙের আসল ওএমআরটি ইনভিজিলেটর জমা নেবেন, সঙ্গে একটি অ্যাডমিট কার্ডের কপি। সবুজ রঙা ওএমআর ও প্রশ্নপত্র নিয়ে যেতে পারবেন পরীক্ষার্থী
১৩) ইনভিজিলেটর উপস্থিত পরীক্ষার্থীর জন্য নীল রঙের কালিতে ও অনুপস্থিতের জন্য লাল রঙের কালিতে স্বাক্ষর করবেন
১৪) টেট পরীক্ষার জন্য পরিবহণ দফতরের দুর্গাপুর হেডকোয়ার্টারের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্তদের ফোন নম্বর ৭৩৬৩৯২০০৭০, ৯৪৩৪৬৭৩৮৪২
ডিইও শুভেন্দু দাসের ফোন নম্বর ৭৬৯৯৯৯৫৯১০
১৫) বেলঘড়িয়া ডিভিশনাল অফিসের দায়িত্ব থাকাদের নম্বর ৯৮৭৫৩৭৪২২৭, ৯৮৩৬৯৫৬১৯৯,৮৭৭৭০৪৭১৪৭
১৬) ডাব্লুবিটিসি-র কন্ট্রোল রুম নম্বর- ০৩৩ ২২৩৬০৪৬২ ও ২২৩৬০৪৬৩
'ট্রেন লেট্' (Late Train) শব্দটা সকলেরই কম-বেশি জানা। বিশেষ করে ডেইলি প্যাসেঞ্জারদের কাছে এটি খুব সাধারণ বিষয়। তবে দূরপাল্লার ট্রেনের ক্ষেত্রে দেরির সময়সীমা লোকাল ট্রেনের থেকে অনেকটাই বেশি। এমনও হয়েছে কখনও কখনও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দেরি। আবার কখনও তা বেড়ে ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টাও হয়েছে। ফলে ট্রেন দেরি করছে ভারতীয় রেলের কাছে খুবই স্বাভাবিক বিষয়।
তবে এতদিন দেখ যেত ট্রেন লেট করার জন্য যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাত। কখনও স্টেশন চত্বরে ভাঙচুর করতে দেখা গিয়েছে। এছাড়া যাত্রীদের মধ্যে বিরক্তি দেখা যায়। ক্ষেপে গিয়ে নানা কথাও বলে থাকেন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যা গোটা ধ্যানধারণাকেই পাল্টে দিয়েছে। ট্রেন লেট করার কারণে অসুবিধে হলেও ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন একদল যাত্রী।
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একটি স্টেশনে যাত্রীদের ভিড়। দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষারত তা বোঝা যাচ্ছে। প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে উঁকিঝুঁকি মারছেন অনেকে। আবার কেউ পায়চারি করছেন। কিছুক্ষণ পরেই দূরে একটা আলোর বিন্দু দেখতে পাওয়া গেল। যাত্রীদের ধরে যেন প্রাণ এল অবশেষে। সেই আলো ধীরে ধীরে আরও কাছে এগিয়ে এল। এবার স্পষ্ট হল ট্রেনের ইঞ্জিন। ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই এক দল যাত্রী আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়লেন। হাততালি দিয়ে, নেচে ট্রেনটিকে স্বাগত জানালেন। আবার মাথা ঝুঁকিয়ে প্রণামও সেরে নিলেন একজন। ৯ ঘন্টা দেরিতে ট্রেন শেষমেশ স্টেশনে ঢুকেছে। আর তাই দুঃখের মাধ্যমে উদযাপন না করে আনন্দের মধ্যে দিয়ে পালন করলেন। যদিও ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি সিএন পোর্টাল।
Our train got late by 9 hours. This is how people reacted when it arrived. pic.twitter.com/8jteVaA3iX
— Hardik Bonthu (@bonthu_hardik) November 27, 2022
রবিবার হার্দিক বোন্টু নামে এক টুইটার গ্রাহক ভিডিওটি শেয়ার করেন। ক্যাপশনে লেখেন, “আমাদের ট্রেন ৯ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছল। দেখুন কী ভাবে যাত্রীরা উল্লাসে মেতেছেন।”