'ইডির রং-ডায়াল। উনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। উনার থেকে কিছু পাওয়া যাবে না।' তাপস রায়ের উপর এতটাই আত্মবিশ্বাস রয়েছে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির। শুক্রবার সাতসকালে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে তল্লাশি চালানো শুরু হয়েছে তাঁদের বাড়িতে। শাসক দলের দুই হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তল্লাশির খবর পেতেই পুলিস অফিসাররা পৌঁছে গিয়েছেন তাঁদের বাড়িতে। সুজিত বসুর বাড়িতে বিধাননগর কমিশনারেটের অফিসার ও তাপস রায়ের বাড়িতে কলকাতা পুলিসের আধিকারিকদের দেখা যায়।
বরানগর পুরসভায় এর আগেও অভিযানে এসেছে ইডি। চেয়ারম্যান অপর্ণা মৌলিককে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জমা নিয়েছে নথিও। এবার জানা যাচ্ছে, বরানগর পুরসভার সেসব নথি খতিয়ে দেখে তাতে তাপস রায়ের যোগ পেয়েছে ইডি। শুধু তাই না, অয়ন শীলের যে সংস্থার হাত ধরে পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে একাধিক বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, তাতেও তাপস রায়ের যোগ পেয়েছে ইডি, এমনটাই খবর। আর তাই এবার সরাসরি তাপস রায়ের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাতে হাজির ইডি। প্রিন্টার নিয়েও ঢুকতে দেখা যায় ইডির আধিকারিকদের।
ইডির আধিকারিকদের সঙ্গে রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্য কলকাতা পুলিসের তরফ থেকেও চোখে পড়ল সক্রিয়তা। তাপস রায়ের বাড়ির সামনে পুলিসের এসিপি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে মোতায়েন পুলিসবাহিনী। অবাঞ্চিত কোনও মানুষ বা তাপস রায়ের অনুগামীকে তাঁর বাড়ির সামনে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে রাজ্যের দমকল মন্ত্রীর লেকটাউনের দুটি বাড়িতে ও তাপস রায়ের বাড়িতে ইডির হানার পাশাপাশি উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তী বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা। এদিন ভোর সাড়ে ছটা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে পাঁচ ইডি অধিকারিকের একটি দল সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে পৌঁছয়। ইডি আধিকারিকদের পৌঁছনোর খবর পেয়ে প্রাক্তন পুর প্রধানের বাড়ির সামনে আসে দমদম থানার আধিকারিকেরা। যদিও তারা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেনি, রাস্তা থেকেই তাদের ফিরে যেতে হয়।
সন্দেশখালিকাণ্ডের এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই আবারও রাজ্য়জুড়ে তৎপর ইডি। সন্দেশখালি এবং বনগাঁর ঘটনার পর এবার সর্তক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পুর দুর্নীতির তদন্তে শুক্রবার সাত সকালে একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে ইডি। এদিন ভোরে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর লেকটাউন শ্রীভূমি এলাকার বাড়িতে ইডির হানার পাশাপাশি রাজ্যের বিধায়ক তাপস রায় ও উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তী বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা।
ইডি সূত্রে খবর, পুরনিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে তাপস রায়ের। বরানগর পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগসূত্র রয়েছে তাঁর। পুর নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে একাধিকবার বরানগর পুরসভায় অভিযান চালিয়েছে ইডি। সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বরানগর পুরসভার চেয়ারম্যান অপর্ণা মৌলিককে।
এছাড়া পুরসভার একাধিক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং বাজেয়াপ্ত হওয়া নথি খতিয়ে দেখে তাপস রায়ের যোগসূত্র পেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। সেই যোগসূত্র ধরেই তাপস রায়ের বাড়িতেও চলছে তল্লাশি। একইসঙ্গে তাপস রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের করছেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে আরও খবর, প্রথমে তাপস রায়কে একটি নিয়োগ সংক্রান্ত নথি দেখানো হয়েছে। যে নথিতে বরানগর পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর যোগসূত্র রয়েছে। সেই নথি দেখেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে এবং তল্লাশির কাজ চলছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য়। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ ওই নেতাকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় ফের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের হামলার মুখে পড়তে হয়। ইডি ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট, ভাঙে গাড়ির কাচ। কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠিচার্জ করে বলেও অভিযোগ। সূত্রের খবর, শনিবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর জোকা ইএসআই হাসপাতাল থেকে বের করে শঙ্কর আঢ্যকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্য়াঙ্কশাল আদালতে। এদিন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য় শঙ্করকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তাঁর মেয়ে ঋতুপর্ণা আঢ্যও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রের খবর, শঙ্করের নামে রয়েছে একাধিক সংস্থা। সেগুলিই এবার চলে এসেছে ইডি-র নজরে। শঙ্কর এবং তাঁর পরিবার একাধিক বিদেশি মুদ্রা বিনিময় ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বলেও খবর রয়েছে ইডি-র কাছে। অর্থলগ্নি সংস্থা রয়েছ বলেও সূত্রের খবর। শঙ্করের স্ত্রী, ছেলে এবং একাধিক আত্মীয় এই সংস্থাগুলির ডিরেক্টর পদে রয়েছেন বলেও জানা যায়। বিদেশি মুদ্রা বিনিময় ব্যবসার আড়ালে কি কোনও আর্থিক বেনিয়ম ঘটেছে? সেই খোঁজই চালাচ্ছে ইডি। তবে এই আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে রেশন বা শিক্ষা দুর্নীতির যোগ আছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
শুক্রবার সকালে ইডির ছয় আধিকারিকের একটি দলকে প্রিন্টিং মেশিন নিয়ে সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ বনগাঁর শিমুলতলায় শংকর আঢ্যের বাড়িতে হানা দিতে দেখা যায়। পাশাপাশি তল্লাশি অভিযান চালানো হয় মন্ডলপাড়া আইসক্রিম কল, শংকর আঢ্যের ম্যানেজার অঞ্জন মালাকারের বাড়ি এবং শ্বশুর বিনয় ঘোষের বাড়িতেও। এমনকি বসাকপাড়ায় শঙ্কর আঢ্যর এক কর্মচারী বাপ্পা ঘোষের বাড়িতেও হানা দিয়েছে ইডি। তবে বিষয়টি নিয়ে শংকর আঢ্যকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, বিচারাধীন বিষয় তাই কিছু বলা যাবে না। তবে তদন্তে সহযোগিতা করা হবে।
প্রসঙ্গত শুক্রবার যে দুই তৃণমূল নেতার বাড়িতে অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, তাঁরা দু’জনেই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বলে সূত্রের খবর। রাজনীতিতে প্রবেশের পর বালুর হাত ধরেই ফুলে ফেঁপে ওঠেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্য। ২০০৫ সালে প্রথম বনগাঁ পুরসভার কাউন্সিলর হন। পরে বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান হন। শঙ্কর আঢ্য বনগাঁ পুরসভার পরপর দুবার চেয়ারম্যান ছিলেন। স্ত্রী জোৎস্না আঢ্য একবার চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্তমানে তিনি ভাইস চেয়ারম্যান পদে আছেন বলে সূত্রের খবর।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে, রেশন দুর্নীতি মামলায় বালু ঘনিষ্ঠ এই তৃণমূল নেতার যোগ থাকলেও থাকতে পারে। আর তা খতিয়ে দেখতেই শুক্রবার সকাল থেকে সাঁড়াশি তল্লাশি শুরু করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এমনটাই সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত ইডির তরফে পেশ করা রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত চার্জশিটে এখনও পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতির সন্ধান মিলেছে। যার মধ্যে ৩৬ কোটি ঢুকেছে বালুর পকেটেই। এছাড়াও নামে, বেনামে বিপুল সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। সেই বিপুল দুর্নীতির পর্দা উন্মোচন করতেই এবার চূড়ান্ত সক্রিয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আধিকারিকরা।
নতুন বছরের শুরুতেই রাজ্য়ে তৎপর ইডি। শুক্রবার সকাল থেকেই রাজ্য়ের একাধিক জায়গায় চলছে ইডির হানা। এদিন ভোর চারটে নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে যায় ইডির ১৫ টি দল। ইডির একটি দল গিয়ে প্রথমে পৌঁছয় উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের শ্বশুরবাড়িতে। তারপর আর একটি দল যায় সন্দেশখালীর এক তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে।
সূত্রের খবর, শঙ্কর ও শেখ শাহজাহান দুজনেই প্রাক্তণ খাদ্য়মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক (বালু)-র ঘনিষ্ঠ। তাই এদিন রেশনবন্টন দুর্নীতি মামালার অভিযোগে শুরু হয়েছে ইডি তল্লাশি। সন্দেশখালীতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি আধিকারিকরা গিয়ে দেখেন তালা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেও মেলেনি সাড়া। এরপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহযোগীতায় সেই তালা ভাঙতে গেলেই বাধা দেয় ওই তৃণমূল নেতার অনুগামীরা। হামলার মুখে পড়তে হয় ইডি আধিকারিকদের। ইনভেস্টিগেশন অফিসার সহ অন্যান্য অফিসারদের ওপর চড়াও হয় সেখানকার জনতা। তল্লাশি না করেই ফিরতে হয় ইডি আধিকারিকদের। এমনকি খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয় সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকদের। এছাড়া ইডির দুই আধিকারিকদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরের ফলে ওই দুই ইডি আধিকারিকদের মাথা ফেটে যায়। বর্তমানে তাঁরা গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ইডি আধিকরিকদের অনুমান, রেশন বন্টন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন শেখ শাহজাহান। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওই এলাকার আরো অন্যান্য ব্যক্তিদের নাম সামনে আসতে পারে। সেই ভয়ে এলাকাবাসীর এই হামলা চালিয়েছে।
রাজ্য়জুড়ে ছেয়ে গিয়েছে একাধিক দুর্নীতি মামলা। আর সেই দুর্নীতিমুক্ত রাজ্য় তৈরী করতে তৎপর হয়েছে ইডি ও সিবিআই। এছাড়াও সক্রিয় আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। বুধবার সকাল সাড়ে ৬ টা নাগাদ সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসের বাড়িতে হানা দেন আয়কর আধিকারিকরা। এরপর টানা ১৯ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর বাইরন বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বেরোয় আয়কর দফতর। উদ্ধার করা হয় লক্ষ লক্ষ টাকা ও কিছু নথি এরপর বুধবার দুপুরের পর থেকে হাওড়ার একটি পেপার মিলে অভিযানে নামে আয়কর দফতর। বাগনানের বরুণদা কৃষ্ণা পেপার মিলে হানা দেয় আয়কর আধিকারিকরা। তারপর দীর্ঘ ৪৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশির পর বাগনানের বরুণদা কৃষ্ণা পেপার মিল থেকে বেরোলেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা।
তবে কী কারণে দীর্ঘক্ষণ ধরে মিলে তল্লাশি চলল তা জানা যায়নি। এছাড়াও এতক্ষণ ধরে তল্লাশিতে কী কী মিলল তার এখনও পর্যন্ত কোনো খোঁজ খবর মেলেনি। এই ঘটনায় ব্য়াপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়।
ফের সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসের (Byron Biswas) ওপর স্পট লাইট। তবে এবার দলবদলের জন্য নয়। বিধায়কের বাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল, ফ্যাক্টরিতে প্রায় ৫০ জন আয়কর আধিকারিকের হানা, কর ফাঁকির অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে। বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয় অভিযান। এরপর ১৯ ঘণ্টা টানা তল্লাশির পর বায়রন বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় আয়কর দফতর। উদ্ধার করা হয় লক্ষ লক্ষ টাকা ও কিছু নথি। আর এরই মাঝে গতকাল অসুস্থ হয়ে পড়লেন বায়রন বিশ্বাস। বুধবার সন্ধ্যার কিছু পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতে তাঁকে তাঁর নিজের নার্সিংহোমেই ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় কুয়াশায় মোড়া মুর্শিদাবাদে আয়কর দফতর হানা দেয় সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসের বাড়িতে। সূত্রের খবর, বুধবার বিধায়ক বায়রনের বাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, ফ্যাক্টরি মিলিয়ে মুর্শিদাবাদের অন্তত ৯ থেকে ১০ টি জায়গায় আইটি হানা দেয়। প্রথম গন্তব্য সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ানে বায়রন বিশ্বাসের প্রাসাদপম বসত বাড়ি। কেন্দ্রীয় সংস্থার একটি দল যায় সামশেরগঞ্জেই বিধায়কের হাসপাতালে। ততক্ষণে আরও ২ টি দলে ভাগ হয়ে আইটি আধিকারিকরা পৌঁছন রঘুনাথগঞ্জের মঙ্গলজোনে বায়রন বিশ্বাসের স্কুল এবং বংশবাটী মোড়ে একটি নির্মিয়মান কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে। তল্লাশি চলেছে বিধায়কের বাড়ি লাগোয়া গোডাউনেও। বিধায়কের বাড়ি থেকে একটি বড়সড় ব্যাগ বের করতে দেখা যায় আধিকারিকদের।
তৃণমূলের বায়রন আবারও লাইম লাইটে। সূত্রের খবর, এবার সাগরদিঘির বিধায়কের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ। রাজনীতিতে হাতেখড়ির বহু আগে থেকে বায়রন মুর্শিদাবাদের সমৃদ্ধশালী ব্যবসায়ী। ৩০-৪০ বছর ধরে বিধায়কের পরিবারের চা, বিড়ি, স্কুল, হাসপাতাল, ফ্যাক্টরি ইত্যাদির ব্যবসা। মুর্শিদাবাদের সেই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীই কর কারচুপি করলেন?
এবারে কয়লা পাচার কাণ্ডে (Coal Scam) সুপার অ্যাকশন মোডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মোট ১২ টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে সিবিআই (CBI)। ভবানীপুর, আসানসোল, মালদা সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। জানা গিয়েছে, লালা ওরফে অনুপ মাঝি ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের বাড়িতে হানা দিয়েছে সিবিআই। ভবানীপুরে লালা ঘনিষ্ঠ স্নেহাশীষ তালুকদার ও দুর্গাপুরে সৌরভের ভাড়া বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে সিবিআই। আবার কলকাতায় এক সিআইএসএফ কর্মী শ্যামল সিংহের বাড়িতেও হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবারে যে যে ব্যক্তির বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই-এর স্ক্যানারে ছিল। ফলে এদিন তাঁদের বাড়ি বাড়ি হানা দিয়েছে সিবিআই আধিকারিকরা। লালা ওরফে অনুপ মাঝির সঙ্গে কোন সূত্রে ঘনিষ্ঠ এই ব্যক্তিরা, তা খতিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে। লক্ষ্মীবারে অনুপ মাঝি ওরফে লালা ঘনিষ্ঠ স্নেহাশীষ তালুকদারের ভবানীপুরের ৪৯এ গিরিশ মুখার্জী রোডের ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। অনুপ মাঝির হয়ে হ্যান্ডেলারের কাজ করত স্নেহাশিস তালুকদার, সিবিআই সূত্রে খবর।
আবার প্রাক্তন সিআইসিএফ অধিকর্তা শ্যামল সিংহের আসানসোল, মালদা, দুর্গাপুরের বাড়ির পাশাপাশি ভবানীপুরের বাড়িতেও সিবিআই হানা দিয়েছে। আজ সকাল আটটা নাগাদ আসানসোলের হিরাপুর থানার পুরোনো হাট এলাকায় শ্যামল সিংহের বাড়িতে সিবিআই হানা দেয়। প্রাক্তন সিআইসিএফ বর্তমানে জমি ব্যবসায়ী শ্যামল সিংহ। আবার তাঁর কয়লার ব্যবসা আছে বলেও জানা গিয়েছে। ফলে তাঁর সঙ্গে লালার টাকার লেনদেন হত কিনা, কোন সূত্রে তাঁরা ঘনিষ্ঠ, এই সমস্ত কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, মালদার বাড়ি থেকে কিছু নথিও সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দা দল।
আবার লালা ঘনিষ্ঠ সৌরভের ভাড়া বাড়িতেও সিবিআই হানা দিয়েছে। দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি আনন্দনগরের ভাড়া বাড়িতে ভাড়ায় আছে বলে জানা গিয়েছে। আজ সকাল ৭ টা নাগাদ সিবিআইয়ের পাঁচ সদস্যর টিম সৌরভের বাড়িতে তল্লাশিতে আসে। প্রায় পাঁচ ঘন্টা পর দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ সৌরভের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। এক মহিলা আধিকারিকের নেতৃত্বে এই টিম আজ তল্লাশিতে আসে, কিছু মন্তব্য করতে চায়নি সিবিআই দল। সূত্রের খবর, বেশ কিছু নথি নিয়ে সৌরভের বাড়ি ছাড়ে সিবিআই দল।
এবারে আসানসোলে তল্লাশি অভিযান শুরু করল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আজ অর্থাৎ বুধবার সকাল থেকে পুরো অ্যাকশনে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। এদিন ফের এক তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলীর বাড়িতে হানা দিল আয়কর দফতর। সূত্রের খবর, তাঁর কলকাতার বাড়িতেও চলছে তল্লাশি। প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলীর স্ত্রী বর্তমানে তৃণমূলের কাউন্সিলর। তবে ঠিক কী কারণে এই তল্লাশি তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আসালসোলে শুধুমাত্র এই প্রাক্তন বিধায়কের বাড়িতেই নয়, আরও কয়েকজনের বাড়িতে ত্ল্লাশি চালাচ্ছে আয়কর দফতর।
জানা গিয়েছে, বুধবার ভোর থেকে তল্লাশি চলছে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলীর বাড়িতে। ৫টি গাড়ি নিয়ে আসেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। আসানসোলের বার্নপুর এলাকায় প্রাক্তন বিধায়কের বাড়ি ছাড়াও আসানসোল দক্ষিণ থানা অন্তর্গত পায়েল এন্টারপ্রাইজ-এর অফিস ও বার্নপুরের পুরানো হাট এলাকাতেও পঙ্কজ আগারওয়াল নামে একজনের বাড়িতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তল্লাশি চলছে বলে খবর। পায়েল এন্টারপ্রাইজ এর মালিকের নাম ইমতিয়াজ বলে জানা গিয়েছে এবং পঙ্কজ পায়েল এর সঙ্গে যুক্ত বলে সূত্রের খবর। আসানসোলের হিরাপুরে পুরানো হাট এলাকায় অরুণ আগারওয়াল-এর বাড়িতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির হানা। সূত্রের খবর, রেশনের ব্যবসা রয়েছে তাঁর। সেই বিষয়ে হানা হতে পারে। তাঁর ভাই পঙ্কজ আগারওয়াল চার্টার্ড অ্যাকাউন্টটেন্ট বলে খবর। পায়েল এন্টারপ্রাইজ এর সঙ্গে যোগ রয়েছে বলে সূত্রের খবর। আবার, আসানসোলের নুরুদ্দিন রোড এলাকায় মহেন্দ্র শর্মার অফিসেও হানা দিয়েছে আয়কর দফতর। জানা গিয়েছে, নুন, বালি সহ আরও বেশ কিছু ব্যবসা বাংলা-ঝাড়খণ্ডে রয়েছে তাঁর।
ফের শহরে হানা আয়কর দফতরের। এবারে আর্থিক কারচুপির অভিযোগ ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সোমবার সকাল থেকে তাঁর ঢাকুরিয়ার আবাসনে অভিযান চালান আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, বাড়িতেই রয়েছেন উৎপলবাবু। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তাঁর ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র এবং ব্যাঙ্কের সমস্ত নথি খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকরা।
সূত্র মারফত খবর, সকাল ৭.৩০ টা নাগাদ ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের ৭-৮ জন আধিকারিক উৎপল বাবুর ফ্ল্যাটে যান। তিনি বিদেশি মদ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ২২টি দেশে অ্যালকোহল সরবরাহ করতেন। এছাড়া বিদেশি মদ তৈরির সংস্থার আড়ালে অনেক টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি উৎপলবাবুর বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকির অভিযোগও ছিল। সবমিলিয়ে এদিন তিনি আয়কর দফতরের হাজার প্রশ্নের মুখে পড়লেন আইএফএ-এর প্রাক্তন সচিব।
লক্ষ্মীবারের সকালে বিধাননগরের কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর রাজারহাটের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই আধিকারিকরা। বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য দেবরাজের বাড়িতে প্রায় চার ঘন্টা ধরে চলে তল্লাশি। এরপর বেলা ১ টা নাগাদ দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে বেরোয় সিবিআই। সঙ্গে অবশ্য় দেখা যায় দেবরাজকেও। এরপর দমদম পার্কে দেবরাজের দ্বিতীয় বাড়িতে তল্লাশির উদ্দেশে যান সিবিআই আধিকারিকরা। এরপর এদিন দুপুর পৌনে ৩ টে নাগাদ তাঁর দমদম পার্কের দ্বিতীয় বাড়ি থেকে বেরোয় সিবিআই। জানা গিয়েছে, পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার কারণে দেবরাজের বাড়িতে এদিন হানা দিয়েছে সিবিআই।
সংবাদমাধ্য়মে সরাসারি দেবরাজ জানায়, এদিন সকালে ৮ টা নাগাদ কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সাতজন সিবিআই আধিকারিকের একটি দল সহ কেন্দ্রীয়বাহিনী আমার বাড়িতে আসে। তখন বাড়ি ছিলাম না। খবর পেয়ে তারপর বাড়িতে এসে দেখি সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে সিবিআই এসেছিল। 'আমি আমার ব্য়াঙ্ক ডিটেলস সহ পরিজনদের ব্য়াঙ্ক ডিটেলস যা যা নথি চেয়েছিলেন আমি সব দিয়েছি' তবে আমার বাড়ি তল্লাশি করে গুরুত্বপূর্ণ কোনও নথি পায় নি তাঁরা। আমাকে সার্চ লিস্ট দিয়ে গেছে সিবিআই। তিনি আরও বলেন পরবর্তী সময়ে যদি কোনও নথি দরকার পড়ে তাহলে আমি তা পেশ করব।
জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৯ টা ১০ টা নাগাদ প্রথমে তৃণমূল কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর রাজারহাটের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। কিন্তু সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না দেবরাজ। সিবিআই আধিকারিকদের দেখে দেবরাজের বাড়ির সদস্য়রা খবর দেন তাঁকে। এরপর তিনি কিছুক্ষণের মধ্য়ে গাড়ি করে নিজের বাড়ির সামনে আসেন এবং সিবিআই আধিকারিকদের নিজে নিজের বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করেন।
শাহ সফরের পরের দিনই সক্রিয় সিবিআই। সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় সিবিআই তল্লাশি শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সল্টলেক, মুর্শিদাবাদ, কলকাতার কিছু জায়গায় তৃণমূল কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীর বাড়িতে সিবিআই হানা দেয়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সকাল থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাসগুপ্তের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি শুরু হয়েছে। ওদিকে ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়িতে বৃহস্পতিবার হানা দিল সিবিআই আধিকারিকরা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত মানিক ঘনিষ্ঠ জাফিকুল জড়িয়ে আছেন কি না তার তদন্তেই এদিন সকালে ডোমকলে আসেন তারা। এর আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
গতকাল অর্থাৎ বুধবার ধর্মতলার সভা থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহ দুর্নীতি নিয়ে মমতা ও তৃণমূলকে টার্গেট করেন। তারপর দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজ্যজুড়ে বহু যায়গায় সিবিআই হানা শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, ডোমকলের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদেও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছে। বড়ঞায় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের গ্ৰেফতারের পর এবার ফের সিবিআই হানা বড়ঞায়, বড়ঞা থানার কুলি মোড়ের বাসিন্দা ঝান্টু সেখ পেশায় ব্যবসায়ী তার বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকাল সকাল কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানদের নিয়ে তদন্তকারী সংস্থা হানা দেয়। জানা গেছে এই ঝানটু শেখের বেশ কিছু বেসরকারি কলেজ ও বিভিন্ন জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকেরা ঝান্টু শেখের বাড়িতে পৌঁছেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ওদিকে পাটুলি, সল্টলেকে তৃণমূল কাউন্সিলরদের বাড়িতে হানা সিবিআইয়ের। পাটুলিতে নিয়োগ দুর্নীতির মূল মাথা পার্থ ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাসগুপের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। ওদিকে বিধাননগর পৌরনিগমের মেয়র পরিষদ সদস্য ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়িতে সিবিআই হানা। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই এর এই অভিযান বলে সূত্র মারফত খবর।
ফের রাজ্যে আয়কর হানা (Income Tax Raid)। এবারে এক মদের কারখানায় হানা দিল আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর রাতে হুগলির পোলবার মহানাদ গ্রামে এক মদের কারখানায় হানা দিলেন আয়কর আধিকারিকরা। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ অ্যালপাইন ডিস্টিলারিজ প্রাইভেট লিমিটেডে পৌঁছে যান আয়কর দফতরের টিম।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার যখন ভোরের আলোও ফোটেনি, সে সময় হুগলির পোলবার মহানাদ গ্রামে পৌঁছে যান আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। এর পর অ্যালপাইন ডিস্টিলারিজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক মদের কারখানায় হানা দেন তাঁরা। তবে শুধুমাত্র আয়কর আধিকারিকরা নন, তাঁদের সঙ্গে আসেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও। এরপর শুরু হয় তল্লাশি। জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে মোট পাঁচটি গাড়িতে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা আসে। গ্রামের লোকজনও একে একে আসতে শুরু করেন এলাকায়। তারাও এই ঘটনায় হতবাক। উল্লেখ্য, এই কারখানায় পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জন কাজ করেন।
সারা রাজ্যজুড়ে যখন বিভিন্ন দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দিয়েই চলেছে। তারই মাঝে রাজ্যে এবারে আয়কর দফতরের হানা (Income Tax Raid)। ক্যামাক স্ট্রিটের এক বেসরকারি ইস্পাত প্রস্তুতকারত সংস্থার অফিসে হানা দিয়েছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, আর্থিক লেনদেন ঘিরে বেনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া তল্লাশি অভিযান এখনও জারি রয়েছে। কিন্তু তল্লাশি ঠিক মতো নিয়ম মেনে হচ্ছে না অভিযোগ সংস্থায় কর্মরত কর্মীদের। তাঁরা জানিয়েছেন, তল্লাশির নামে তাঁদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। ফলে সংস্থার কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে পুলিস।
জানা গিয়েছে, গত শনিবার থেকে ক্যামাক স্ট্রিটের এক বেসরকারি ইস্পাত প্রস্তুতকারক সংস্থার অফিসে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা তল্লাশি শুরু করেছে। তা এখনও চলছে। কিন্তু তাঁরা যথাযথ নিয়ম মেনে তল্লাশি করছে না বলে অভিযোগ সংস্থায় কর্মরত কর্মীদের। তাঁরা জানিয়েছেন, অফিসের কর্মীদের সকলের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কর্মীদের আটকে রাখা হয়েছে। এমনকী পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছেন না তাঁরা এমনটাই অভিযোগ করছেন। সংস্থার বেশ কয়েকটি অফিস সিল করে দেওয়া হলেও আয়কর দফতরের পদ্ধতি অনুযায়ী সেটি সিল করা হয়নি বলেই কর্মীদের অভিযোগ।
ফলে আয়কর দফতরের আধিকারিকদের ঘিরে রীতিমত বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন সংস্থার কর্মীরা। তাঁদের তল্লাশি ঘিরে এক ধুন্ধুমার কাণ্ড। এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিস।
প্রায় ৪৬ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। এখনও বিষ্ণপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষের পরিবারের মালিকানাধীন চালকলে তল্লাশি চালাচ্ছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ক তন্ময় ঘোষের বাড়ি, চালকল এবং কার্যালয়ে গত বুধবার হানা দিয়েছিল আয়কর দফতর। তল্লাশি অভিযান চলতে থাকায় বুধবার থেকে মিলেই আটকে রয়েছেন অফিস কর্মীরা। বিধায়ক তন্ময় ঘোষ বৃহস্পতিবার প্রায় ১৩ ঘণ্টা রাইস মিলে ছিলেন। রাত্রি সাড়ে ন'টা নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ, শুক্রবার ফের তন্ময় ঘোষকে ডেকে পাঠান আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ রাইস মিলে ঢোকেন বিধায়ক। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তন্ময় ঘোষের সমস্ত নথি পুনরায় খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। পাশাপাশি বুধবার বিধায়কের দফতর লাগোয়া একটি অতিথিশালা এবং মদের দোকানেও তল্লাশি চালান তদন্তকারী আধিকারিকরা। তল্লাশি চালানোর সময় পুরো এলাকা ঘিরে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনী।
উল্লেখ্য, তন্ময় ঘোষ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ২০১৫ সাল থেকে রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে বিজেপি প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করেও ৩০ অগাস্ট তিনি ফের তৃণমূলে যোগ দেন। সেই তন্ময় ঘোষের সম্পত্তির পরিমাণ কত জানেন? ২০২১ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বলছে, ২০১৬ সালে তাঁর আয় ছিল ৭ লক্ষ ৬০ হাজার ৪৪৫ টাকা। ২০১৯ সালে তা দাঁড়ায় ২৮ লক্ষ ৫৯ হাজার ২৩০ টাকা। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৭৪৮ টাকা।