মায়ের কাতর কণ্ঠ, ‘ছেলেটা মরে গেলে খোঁজ ও পেতাম না’। করমণ্ডলে (Coromondal) চেপে চেন্নাইয়ে (Chennai) কাজে যাচ্ছিলেন রানাঘাট (Ranaghat) হবিবপুর দোয়ার পাড়ার সুখেন রায়। সাক্ষাৎ মৃত্যুদ্বার থেকে ফিরলেন যেন তিনি। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। বিকেল ৬.৩০টা, জানলার ধরে বসেছিলেন সুখেন। হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে বগি। লাইনে আগুন লেগে যায়। উল্টে পড়ে যাত্রীরা, তিনি নিজেও। কোনওক্রমে বের হয়ে আসেন সুখেন বাবু , সঙ্গে আরও কিছু যাত্রীদেরও বের করে আনেন। বাইরে তখন রণক্ষেত্র, চিৎকার হাহাকার, মৃত্যুর কোলাহল। সেসবের ধার ঘেঁষেই ঘরের ছেলে ফিরে আসে ঘরে। পরিবারের সকলেও ছেলেকে ফিরে পেয়ে স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, ওড়িশার করমন্ডল এক্সপ্রেসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রাজ্যের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আহতদের ১ লক্ষ, জখমদের ৫০ হাজার টাকা দেবে রাজ্য। ওড়িশায় রেলমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েই ঘোষণা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজ্যের আহতদের কলকাতা ফিরিয়ে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করবে রাজ্য
মনি ভট্টাচার্য: করমন্ডল এক্সপ্রেসের (Coromondal Express) দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আড়াইশো ছাড়িয়েছে। সিএন-ডিজিটাল কে ওড়িশা শহরের আইজি বালাসোরের (Balasore) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন অবধি মৃতের সংখ্যা ২৮৮ জন। আইজি বালাসোর শ্রী হিমাংশু কুমার লাল শনিবার সিএন ডিজিটালকে বলেন, 'এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৩৫০ জনের অধিক।' এবং তিনি আরও বলেন, 'এই দুর্ঘটনায় এখনও অবধি ১০০০ জনের উপরে আহত।' উড়িষ্যার বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।'
সূত্রের খবর, এখনও অবধি করমন্ডল এক্সপ্রেসের এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৮৮ জনের বেশি। যা হার মানিয়েছে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের (Jnaneswari Express) দুর্ঘটনাও। রেল সূত্রের খবর, ২০১০ সালে ২৮শে মে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা ঘটে, যে দুর্ঘটনায় ১৪৮ জনের অধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ওই দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা ছিল ২০০-এর অধিক। আপাতত করমন্ডল এক্সপ্রেস এরই দুর্ঘটনা হার মানিয়েছে অন্যান্য অনেক দুর্ঘটনাকেই।
গতকাল রাত থেকেই উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিল স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বায়ু সেনা, সেনা, আধা সেনা ও সামরিক বাহিনী। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপায়ে তাদের উদ্ধার কার্য চালাচ্ছে তাঁরা। এখনও অবধি স্থানীয় মারফত যে খবর তাতে সম্প্রতিকালে এই দুর্ঘটনার একটি বৃহৎ দুর্ঘটনা। পাশাপাশি দক্ষিণ পূর্ব রেল ও খড়গপুর ডিভিশন সূত্রে খবর করমন্ডল এক্সপ্রেস ও হামসফর এক্সপ্রেসের মোট ১৭ টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় জেনারেল কামরা অর্থাৎ আনরিজার্ভড কামরার যাত্রীদের পরিচয় উদ্ধারে বেগ পেতে হচ্ছে উড়িষ্যা ও রেল প্রশাসনকে।
এ বিষয়ে উড়িষ্যার স্বরাষ্ট্র সচিব সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে। যাদের পরিচয় উদ্ধার করা যায়নি, তাদের ছবি আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে পৌঁছানোর চেষ্টা করব, সেইখান থেকেই তাদের পরিচয়ের খোঁজ চালানো হবে।'
গরু পাচারকাণ্ডে আগে থেকেই তিহারে আছেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। সম্প্রতি তিহারে পাঠানো হয়েছে তাঁর মেয়ে সুকন্যকেও (Sukanya Mondal)। এবার তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ নিতে দিল্লি যাচ্ছেন দলের দুই সাংসদ (MP)। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন এবং বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল শুক্রবার জেলবন্দি অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করবেন। দেখা করার জন্য তিহার জেল কর্তৃপক্ষের তরফে প্রয়োজনীয় অনুমতিও মিলেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ তিহার জেলে যাবেন দোলা এবং অসিত। ১২টা পর্যন্ত তাঁদের সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের শাসকদলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে অবশ্য এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
বৃহস্পতিবারই গরু পাচার মামলায় সুকন্যার জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। অনুব্রতের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানিও স্থগিত হয়ে যায় বৃহস্পতিবার। সোমবার থেকে আদালতে গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় আগামী এক মাসে আর এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই মনে করা হচ্ছে, গোটা জুন মাসে তিহার জেলেই কাটাতে হবে অনুব্রত এবং সুকন্যাকে।
দলে ‘দক্ষ সংগঠক’ হিসাবে পরিচিত অনুব্রত একাধিক ভোট বৈতরণী পার করিয়েছেন বলে মনে করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত এবং জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দিলেও গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রতের ক্ষেত্রে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি দল। বরং, বীরভূমের জেলা সভাপতি হিসাবে তাঁকেই রেখে দিয়েছে দল। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বহু বার প্রকাশ্যেই তাঁর পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। এর আগে দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত দলের দুই যুবনেতাকেও বহিষ্কার করেছিল তৃণমূল।
সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই প্রথম দলের জেলবন্দি কোনও নেতাকে দেখতে যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, দলের একদম উচ্চ নেতৃত্বের অনুমোদনক্রমেই অনুব্রতকে দেখতে যাচ্ছেন তৃণমূলের দুই সাংসদ। দল যে এই ‘বিপদের দিনে’ও অুনুব্রতর পাশে আছে, তাতেই আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পড়তে চলেছে দলীয় প্রতিনিধিদের এই তিহার-সফরে।
গরুপাচার (Cow Smuggling) মামলার তদন্তে এবার আরও কঠোর পথে হাটল ইডি (ED)। সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি। ইডির দাবি, গত ৭-৮ বছরে নামে-বেনামে বিপুল টাকার সম্পত্তি করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। কোনওটা প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডলের নামে। আবার কোনওটা মেয়ে সুকন্যার নামে। বুধবার ইডি অনুব্রত,তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। ইডি সূত্রে খবর, অনুব্রতের ১১ কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এর আগে অনুব্রত মণ্ডলের ২৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু অ্যাকাউন্ট তাঁর মেয়ের নামেও ছিল। সেই অ্যাকাউন্ট এখন ইডির দখলে। জানা গিয়েছে, তাঁর হিসেবরক্ষক মনীশ কোঠারির ২৫ লক্ষ টাকাও বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এর আগে সিবিআইও অনুব্রতের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। এবার সেই পথে হাঁটল ইডি।
এদিন ইডির বাজেয়াপ্ত তালিকায় আছে বিপুল পরিমাণ জমি। শিব-শম্ভু ও ভোলে ব্যোম রাইস মিল-সহ আরও অনেক সম্পত্তি। অনুব্রতের অস্থাবর সম্পত্তির দিকেও নজর ইডির।
ফের শহরে বেপরোয়া বাস। এবার সরকারি বাসের (Bus) ধাক্কায় (Accident) আহত (Injured) বিবাদীবাগে কর্মরত তিন মেট্রো কর্মী। বুধবার সাতসকালে ডালহৌসিতে (Dalhousie) ঘটে এই দুর্ঘটনাটি। ঘটনায় জেরে গুরুতর জখম হন মেট্রোর তিন কর্মী। তাঁদের এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সূত্রের খবর, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতে উঠে যায় সরকারি বাসটি। এরফলে বাসের ধাক্কায় গুঁড়িয়ে যায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর গুমটি। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। শিয়ালদহ থেকে ঠাকুরপুকুর যাওয়ার পথে, নির্মীয়মান মহাকরণ মেট্রো স্টেশনের কাছে বাঁক নেওয়ার সময়ই বিবাদীবাগ মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতে উঠে পড়ে এস-৩এ রুটের সরকারি বাসটি। দুর্ঘটনার পরেই বাস ফেলে পালিয়ে যান চালক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেপরোয়াভাবে ছুটছিল বাসটি। সম্ভবত সেই কারণেই চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। যার জেরেই এমন ঘটনা।
মঙ্গলবারে বীরভূমে (Birbhum) 'নবজোয়ার' যাত্রায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) মুরারইয়ে সভা করেন। সেখান থেকে সুকন্যা মণ্ডল অর্থাৎ অনুব্রত (Anrbrata Mondal) কন্যার বিষয়ে মন্তব্য করেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। ওই মঞ্চ থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তিনি। অভিষেক বলেন, 'সম্প্রতি ইডি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে দিল্লিতে নিয়ে গিয়েছে। তদন্ত তদন্তের মতো চলবে। আমি কাউকে ডিফেন্ড করছি না। কিন্তু ইডি চার্জশিটে বলেছে, বিএসএফ গরুপাচারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদত দিয়েছে। বিএসএফ কার অধীনে? অমিত শাহের অধীনে। তাহলে তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হবে না?’
এরপরেই সুকন্যার প্রসঙ্গ টানেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘সুকন্যা মণ্ডলের ১৫০ গুণ সম্পত্তি বেড়েছে বলে তাঁকে গ্রেফতার করেছে। অমিত শাহের ছেলের সম্পত্তি বেড়েছে ৮০ হাজার গুণ। তাহলে তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হবে না? এই প্রশ্ন কেন কোনও সংবাদমাধ্যম তুলছে না?’ এখানেই থামেননি অভিষেক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়ে বলেন, ‘বিএসএফ যে পাচার থেকে টাকা তোলে তা অমিত শাহের কাছে যায় না তাঁর ছেলের কাছে যায়?’
ইতিমধ্যে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধে তৃণমূল ব্যবস্থা নিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত করার পাশাপাশি ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে। সেইসঙ্গে দুই যুব নেতা কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। তবে ব্যতিক্রম হলেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁকে জেলা সভাপতি পদে রেখে দিয়েছে তৃণমূল। এ নিয়ে মাস দুয়েক আগে অভিষেক বলেছিলেন, ‘সময় হলে সব দেখতে পাবেন।’ তবে এদিন অনুব্রত ও তাঁর মেয়ের গ্রেফতারি কোনও প্রশ্ন না তুললেও অভিষেক কেন্দ্রীয় এজেন্সির দ্বিচারিতা তুলে ধরতে চেয়েছেন। তাঁর কথায়, অনুব্রতর মেয়ের সম্পত্তি বৃদ্ধির জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয় তাহলে জয় শাহ নন কেন?
মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় (Road Accident) মৃত্যু (Death) হল দুই বাইক আরোহীর। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur) জেলার ডালখোলা থানার বস্তাডাঙ্গি এলাকার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই বাইক আরোহীর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ডালখোলা থানার পুলিস (Dalkhola Police)। পুলিস মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডালখোলা থানার পুলিস। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত ওই দুই জনের নাম সৌরভ সরকার (২০) ও দীপঙ্কর মণ্ডল (১৭)। তাঁরা ডালখোলা থানার সূর্যাপুর এলাকার বাসিন্দা। শনিবার সন্ধ্যায় ডালখোলা থেকে বাড়ি ফেরার পথেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে কীভাবে এই ঘটনাটি ঘটেছে তা এখনও জানা যায়নি।
সম্প্রতি বাবা, মেয়ে ও তার পরিবারের সিএর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ইডি (ED)। ইডির কৃপায় জেলে (Jail) আছেন তিনজনই। একই জেলে আছেন বাবা ও মেয়ে অর্থাৎ অনুব্রত মন্ডল (Anubrata Mondal) ও তাঁর কন্যা সুকন্যা মন্ডল (Sukanya Mondal)। একই জেলে থাকলেও গ্রেফতারের পর অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে একবারও দেখা হয়নি সুকন্যা মন্ডলের। মেয়ের গ্রেফতারীর পর অবশ্য প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন আমার মেয়েকে গ্রেফতারী ঠিক নয়।
শনিবার অনুব্রত ও তাঁর কন্যার অনুরোধে, অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে সুকন্যা মন্ডলের ১০ মিনিটের জন্য দেখা করার অনুমতি দেয় ইডি। অনুব্রত মণ্ডল পূর্বেই জানিয়েছিল শনিবার মেয়ের সঙ্গে দেখা হবে। এদিন মেয়ের সঙ্গে দেখা করে বেরোনোর পর অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞেস করা হয়, তাঁদের কথোপকথনের বিষয়ে। সে বিষয়ে অবশ্য অনুব্রত মণ্ডল এবং সুকন্যা মন্ডল কেউই মুখ খোলেননি।
সম্প্রতি ইডির চার্জশিটে, ইডি জানিয়েছে অনুব্রত কন্যা সুকন্যার আয় বলতে শিক্ষকতার টাকাই ছিল। শিক্ষকতার টাকা ছাড়া বাদবাকি সবই বাবা অনুব্রত মন্ডলের আঙ্গুলি হিলনীতেই হয়েছে। পাশাপাশি সুকন্যার গ্রেফতারীর পর প্রথমবার জামিনের জন্য আবেদন করা হয় দিল্লির রাউস এভিনিউ আদালতে। কেষ্টকন্যা সুকন্যা মন্ডলের এই আবেদন আগামী ১২ তারিখ শুনানি হবে বলে সূত্রের খবর।
কেউ সচরাচর দুর্নীতির (Scam) টাকা নিজের নামে রাখেন, কিংবা কেউ ওই টাকায় বেনামি সম্পত্তি করেন। কিন্তু অনুব্রত মন্ডল (Anubrata Mondal) তা করেননি। ইডির দেওয়া চার্জশিটে ইডি (ED) জানাচ্ছেন, গরু পাচারের সমস্ত টাকা নিজের নামে ও পরিবারের নামেই করেছিলেন অনুব্রত মন্ডল। তাঁর লোকলস্কর কম ছিল না। সংগঠনের কাজে ব্লক স্তরের নেতাদের ভরসা করলেও অপরাধের টাকার ব্যাপারে কারও উপর আস্থা রাখেননি অনুব্রত মণ্ডল। বেনামীদের অ্যাকাউন্টে না রেখে সব জড়ো করেছিলেন নিজের নামে। ইডি চার্জশিটে উল্লেখ করেছে, গরু পাচারের ৭৭ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার সম্পত্তি করেছেন কেষ্ট মণ্ডল।
এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী হিসাব এটাই। প্রথমে ইডি জানিয়েছিল ২৯ কোটি টাকার হিসাব। তারপর আরও ৪৮ কোটি টাকার বেশি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে ২০৪ পাতার সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিটে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এই ৪৮ কোটি টাকা কোন কোন খাতে অনুব্রত ঢুকিয়েছেন নিজের পকেটে তারও একটা হিসাব দিয়েছে ইডি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির চার্জশিটে উল্লেখ করেছে, ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার বেশি ক্যাশ ডিপোজিট হয়েছিল অনুব্রতর অ্যাকাউন্টে। তাঁর মেয়ে ও স্ত্রীর নামে যেসব সংস্থা রয়েছে সেগুলির নামে সম্পত্তি কেনা হয়েছে ২০ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকার। সেই সংস্থাগুলি থেকে লভ্যাংশ হিসাবে অনুব্রত পেয়েছেন পাঁচ কোটি টাকার বেশি। বেনামী অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে প্রায় ছ’কোটি টাকা। লটারিরও বিপুল টাকা ঢুকেছিল তাঁর অ্যাকাউন্টে।
গরু পাচারের কাঁচা নগদ সহযোগীদের দিয়ে নিজের অ্যাকাউন্টে ব্যাঙ্ক মারফত নিতেন অনুব্রত। ইডি দাবি করেছে, অনুব্রত যে সব কায়দা নিয়েছিলেন তা অভিনব। তবে অনেককে ব্যবহার করলেও খুব বেশি টাকা তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামে নেই। সবটাই তিনি নিজের ভাণ্ডারে জড়ো করেছিলেন। চার্জশিটে ইডি আরও বলেছে, ২০১৭-১৮ সাল নাগাদ তাঁর ঘনিষ্ঠ কিছু লোকের নামে অনুব্রত টাকা রাখলেও ২০১৯ সাল থেকে আর ঝুঁকি নেননি। নগদ, জমি, রাইস মিল কেনা—যা করেছেন সব নিজের, স্ত্রীর ও মেয়ের নামেই করেছেন।
বাবা যেখানে বলতেন, সেখানেই সই করে দিতাম। ইডির (ED) কাছে এমন জানিয়েছেন অনুব্রতর (Anubrata Mondal) কন্যা সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal)। এরফলে বাবার সঙ্গে মেয়ের বক্তব্যের তালমিল খুঁজতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছে ইডির আধিকারিকরা। ইডির চার্জশিটে এবার নাম এসেছে সুকন্যার। পেশায় সাধারণ স্কুল শিক্ষিকা। অথচ তাঁর নামে অ্যাকাউন্টে বিপুল অর্থ! কোথা থেকে এল সঙ্গতিহীন টাকা? বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা গরু পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সুকন্যা মণ্ডল ইডির এই প্রশ্নের জবাবে যা বলেছেন, তার সঙ্গে বিস্তর ফারাক খুঁজে পাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা ইডি। বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে ইডির তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিটে উঠে এসেছে সেই অসঙ্গতির বিবরণও।
ইডির দাবি, সুকন্যা জেরায় জানিয়েছেন, তিনি একটি স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি করেন। সেই বাবদ প্রাপ্ত বেতনই তাঁর আয়ের একমাত্র উৎস। কিন্তু তদন্তে উঠে এসেছে আরও একাধিক ফার্ম এবং সংস্থায় শেয়ারহোল্ডার হিসাবে নাম রয়েছে অনুব্রতের কন্যার। ইডির এই প্রশ্নের জবাবে সুকন্যা দাবি করেছিলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। সবই জানেন তাঁর বাবা, অনুব্রত মণ্ডল।
পাশাপাশি ইডির চার্জশিটে সুকন্যাকে উদ্ধৃত করে আরও দাবি করা হয়েছে যে, তিনি বাবার কথাতেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম-সহ বিভিন্ন নথিপত্রে সই করতেন। মেসার্স এএনএম অ্যাগ্রোকেম ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড নামে সংস্থার মালিক হিসাবে নাম রয়েছে সুকন্যার। সুকন্যা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে কিছুই জানা নেই তাঁর, বাবা জানেন। এ ছাড়া ভোলেবোম রাইস মিল নিয়েও কিছু জানেন না বলে ইডিকে জানিয়েছেন অনুব্রত-কন্যা। তাঁর জানা নেই, রাইস মিলের ডিরেক্টর এবং ম্যানেজার কে। তবে ইডিকে সুকন্যা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাঁর বাবা কিছু জানলেও জানতে পারেন।
বেশিদিন বেনিয়ম করেননি ইডি (ED), বাবার গ্রেফতারীর ৮ মাসের মাথায় বাবার কোলে মেয়েকে ফিরিয়ে দিয়েছে তাঁরা। অর্থাৎ অনুব্রতর (Anubrata Mondal) গ্রেফতারীর পরে সুকন্যাকেও (Sukanya Mondal) গ্রেফতার করেছে ইডি। রবিবার সুকন্যার ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত, আপাতত তাঁকে কাটাতে হবে তিহার জেলে।
এবার মেয়েকে গ্রেফতার করা নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন অনুব্রত মণ্ডল। তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি বর্তমানে তিহারে বন্দি। আবার গরু পাচার মামলায় বর্তমানে তিহাড়ে বন্দি কেষ্ট-কন্যা সুকন্যাও। সোমবার অনুব্রতকে হাজির করানো হয়েছিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে। সেখানেই সুকন্যার গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বিচারক সোমবার অনুব্রতকে আগামী ৪ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার আদালতে হাজির করানোর সময় সুকন্যার গ্রেফতার নিয়ে মাত্র চার শব্দে প্রতিক্রিয়া দেন অনুব্রত। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মেয়েকে গ্রেফতার করা অন্যায়।’ মেয়েকে গ্রেফতারের পর এই প্রথম তা নিয়ে মন্তব্য করলেন ওই তৃণমূল নেতা। গত বুধবার গরু পাচার মামলায় দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল সুকন্যাকে। তার পর তাঁকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গরু পাচার মামলাতেই সাড়ে আট মাস আগে অর্থাৎ গত ১১ অগস্ট গ্রেফতার করা হয়েছিল সুকন্যার বাবা অনুব্রতকে। তার পর থেকে তদন্তকারীদের নজরে ছিলেন মেয়েও।
গত ৩০ এপ্রিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে হাজির করানো হয়েছিল সুকন্যাকে। সেই সময় বিচারক তাঁকে তাঁকে ১২ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
বাবার কোলেই ফিরলেন মেয়ে। অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) মতো কন্যা সুকন্যা মণ্ডলও (Sukanya Mondal) আপাতত তিহাড় (Tihar) জেলেই থাকবেন। রবিবার তাঁকে ১২ দিনের জেল হেফাজতে পাঠাল দিল্লির রাউস এভিনিউ আদালত। গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত সুকন্যা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাঁকে দিল্লির আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সেখানেই তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হল।
গত বুধবার গরু পাচার মামলায় দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সুকন্যাকে। তারপর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র হাতে গ্রেফতার হন তিনি। গ্রেফতারির পর শনিবার পর্যন্ত ইডির হেফাজতে পাঠানো হয় তাঁকে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়। এই গরু পাচার মামলায় সাড়ে আট মাস আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তার পর থেকেই তদন্তকারীদের নজরে ছিলেন সুকন্যা। বুধবার সকালেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল সুকন্যাকে। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অনুব্রত-কন্যাকে। ইডি সূত্রে দাবি, সুকন্যা জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসহযোগিতা করেন। তারপরই সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ইডি। অনুব্রত এবং তাঁর পরিবারের সম্পত্তি সংক্রান্ত খোঁজখবর জানতে সুকন্যাকেও তলব করেছিল ইডি। গত মার্চ মাসেই তাঁকে এক বার তলব করা হয়। কিন্তু তিনি হাজিরা এড়ান। তার আগের বার আইনজীবী মারফত চিঠি দিয়ে সুকন্যা বেশ কিছু দিন সময় চেয়েছিলেন। তৃতীয় বারও তিনি ইডির তলব এড়ান। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানানো হয়, সুকন্যা শারীরিক ভাবে অসুস্থ।
সুকন্যার নামে বিপুল সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি ইডির। বোলপুরে তাঁর মালিকানায় প্রচুর জমিজমা রয়েছে। ব্যাঙ্কে ১৬ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজ়িটও রয়েছে সুকন্যার। এই সম্পত্তি হিসাব বহির্ভূত বলে দাবি ইডির। গরু পাচারকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর যোগ থাকতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। ইডি দাবি করে, বিপুল সম্পত্তি নিয়ে কেষ্ট-কন্যার কাছে প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু তিনি সদুত্তর দেননি। তিনি জানিয়ে দেন, ওই সব প্রশ্নের উত্তর তাঁর বাবা এবং হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিই (যিনি এখন ইডি হেফাজতে) দিতে পারবেন। ইডি সূত্রে খবর, ওই কারণেই অনুব্রত এবং সুকন্যাকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভাবা হয়।
অনুব্রত (Anubrata Mondal) কন্যা সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal) কে তিনদিনের ইডি (ED) হেফাজত দিল আদালত। বুধবার রাতে জেরা করার সময় তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে পেশ করা হয় অনুব্রত কন্যাকে। বৃহস্পতিবার তাঁকে তিনদিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয় ওই আদালত।
প্রসঙ্গত গরু পাচার মামলায় ২০২২ সালের ১১ ই আগস্ট গ্রেপ্তার হয় তাঁর বাবা অনুব্রত মণ্ডলকে। এরপর ইডি এ ঘটনার তদন্ত করে জানতে পারে, সুকন্যার নামে বিপুল সম্পত্তি রয়েছে, যার হদিসও পায় ইডি। এরপরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে তলব করা হয়, কিন্তু সেই হাজিরা বারবার বিভিন্ন অছিলায় এড়িয়ে ছিলেন তিনি। এরপর বুধবার ইডির দিল্লির দফতরে হাজারে দিতে যায় সুকন্যা মন্ডল, সেখানেই জেরায় অসঙ্গতি পেয়ে পিএমএলএ ৩ অ্যাক্টে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে (Sukanya Mondal) গরু পাচার (Cattle Smuggling) কাণ্ডের তদন্ত সূত্রে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তথা ইডি (ED)। বৃহস্পতিবার সুকন্যাকে আদালতে পেশ করে হেফাজতে চাইবে কেন্দ্রীয় এই তদন্ত এজেন্সি। তারই মধ্যে এদিন আবার শুনানি ছিল অনুব্রত মণ্ডলের।
তিহাড় থেকে এদিন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানিতে যোগ দেন অনুব্রত ও তাঁর একদা দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। বিচারক প্রথমে তাঁর কাছে জানতে চান, কেমন আছেন? শুনে অনুব্রত বলেন, 'একদম ভাল নেই। একদম না।'
তিহাড় থেকে আসানসোল জেলে ফিরতে চেয়ে মামলা করে রেখেছেন অনুব্রত। বিচারক এদিন জানতে চান সেই মামলার কী অবস্থা? জবাবে অনুব্রত বলেন, মামলা চলছে। আদালত চাইলে তাঁকে আসানসোলে ফেরত পাঠাতে পারে। সেই সঙ্গে অনুব্রত অভিযোগ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ফলস কেস সাজিয়েছে সিবিআই। সব মামলা মিথ্যা। এ কথা বলে জামিন চান অনুব্রত। বিচারক শুনে বলেন, তিনি অনুব্রত মণ্ডলের কথা শুনলেন ঠিকই। কিন্তু এ সব কথা অর্থহীন। আদালতের কাছে শুধুমাত্র কাগজেরই মূল্য রয়েছে।
অনুব্রত মণ্ডল ও সায়গল হোসেন ছাড়াও এই মামলায় ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মনীশ কোঠারিকে। তার পর এবার মেয়ে সুকন্যাকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। অর্থাৎ বীরভূমে কেষ্টর কাছে লোক আর কেউ এখন বাইরে নেই। সবাই হয় জেলে, নয় হেফাজতে রয়েছে।
গরু পাচার (Cattle Smuggling) মামলায় বাবাকে পূর্বেই গ্রেফতার করেছিল ইডি (ED)। বুধবার রাতে অনুব্রত (Anubrata Mondal) কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে (Sukanya Mondal) গ্রেফতার করে ইডি। বারবার হাজিরার নির্দেশ অমান্য করেন সুকন্যা। গ্রেফতারি নিশ্চিত জেনেই কি হাজিরা এড়াচ্ছিলেন অনুব্রত কন্যা, এ প্রশ্নও উঠছিল বারবার। বুধবার ইডির দিল্লির অফিসে হাজিরা দিতে যান সুকন্যা মণ্ডল। তাঁকে জেরা করে কিছু অসঙ্গতি মেলায় সুকন্যাকে গ্রেফতার করে ইডি। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে পেশ করবেন ইডি আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, সুকন্যার কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ তথ্যাকারে আদালতকে জানাবে ইডি।
চাকরিতে প্রভাব খাটানো থেকে শুরু করে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, নানা অভিযোগ অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের বিরুদ্ধে। গরু পাচার মামলায় সেই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের পরেই বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির অভিযোগ, সুকন্যা তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন। ইডি সূত্রে খবর, সুকন্যার নামে ব্যাঙ্কে কোটি কোটি টাকা গচ্ছিত আছে। এর পাশাপাশি, ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, অনুব্রতের নামে বোলপুরে ২৪০ কাঠা জমি রয়েছে। আর তাঁর কন্যা সুকন্যার নামে রয়েছে ১২০ কাঠা জমি! বোলপুর পুর এলাকার মধ্যেই এই বিপুল পরিমাণ জমি আছে বলে ইডি সূত্রে খবর। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী, এই জমির আনুমানিক মূল্য ২৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। আগেই বীরভূমের বোলপুরে অনুব্রতের নামে ২৪০ কাঠা জমির কাগজ প্রকাশ্যে এসেছিল। এ বার সুকন্যার নামে ১২০ কাঠা জমি সংক্রান্ত সরকারি নথিও প্রকাশ্যে আনতে চলেছে ইডি।
বোলপুর পুর এলাকায় প্রত্যেক কাঠা জমির আনুমানিক দাম অন্তত ৭ লক্ষ টাকা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অনুব্রতের ২৪০ কাঠা ও তাঁর মেয়ে সুকন্যার ১২০ কাঠা জমির আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। আর এই কোটি কোটি টাকার সম্পত্তিই এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে। বৃহস্পতিবার সুকন্যাকে আদালতে পেশ করার সময় ইডি এই নথিও প্রকাশ্যে আনতে পারে। ইডি সূত্রের খবর, গরু পাচারের টাকা বিনিয়োগ করতেই এই জমিগুলি কেনা হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশির ভাগ জমিই ফাঁকা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যা থেকে তদন্তকারীদের অনুমান, অবৈধ উপায়ে পাওয়া টাকা বিনিয়োগ করার জন্যই জমিগুলি কেনা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর, ১২০ কাঠা জমির বাইরে শিবশম্ভু রাইস মিলেও রয়েছে অনুব্রত-কন্যার জমি।