গরু পাচার মামলায় প্রথম জামিন। ৭ মাস পর দিল্লি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন অনুব্রত মণ্ডলের হিসেব রক্ষক মনীশ কোঠারি। গত ১৩ই মার্চ দিল্লিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন মণীশ। তার পর থেকে তিহার জেলে বন্দি ছিলেন মনীশ।
১৩ মার্চ ইডির তলবে হাজিরা দিতে এসে গ্রেফতার হয়ে যান অনুব্রত মণ্ডলের হিসেবরক্ষক মণীশ কোঠারি। সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডল, তার কন্যা সুকন্যা এবং প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডলের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উৎস থেকে একাধিক ভুয়ো কোম্পানি খোলার কারণ জানাতে পারেননি মণীশ। আমাদের প্রতিনিধি মফিজুল ইসলামের সামনেই তিনি বলেছিলেন, তিনি শুধু ইনকাম ট্যাক্স জমা দিতেন, কোনও অন্যায়ের সঙ্গে তিনি থাকেন না। গ্রেফতার হওয়ার পর কাঁদতে কাঁদতেও নাটকীয় ভাবে বলেন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়াই তার ভুল হয়েছে।
অথচ অনুব্রত মণ্ডলই জেরায় জানিয়েছেন, তার একাধিক শেল কোম্পানি খোলার বিষয়ে জানেন একমাত্র মণীশই। মণীশই ভুয়ো কোম্পানি তৈরির ক্ষেত্রে অন্যতম মূল পাণ্ডা, এমনই দাবি ইডির। তার পর দীর্ঘ আইনি লড়াই। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্ট থেকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন মিলল মনীশ কোঠারির। জামিন দিতে গিয়ে আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, জামিন তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। ২৪ ঘন্টা মোবাইল খোলা রাখতে হবে। পাশাপাশি আদালতের শর্ত, তদন্তের প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ডাকলে হাজিরা বাধ্যতামূলক। ঠিকানা পরিবর্তন করা যাবে না। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
পাশাপাশি, কোনওভাবে তদন্তে অসহযোগিতা করতে পারবেন না। এমনকি তদন্ত বা সাক্ষীদের প্রভাবিত করা যাবে না বলেও জামিনের শর্তে জানানো হয়েছে। এছাড়াও জামিনে থাকাকালীন, এই তদন্তের সাথে যুক্ত কোন ব্যক্তির সাথে দেখা করতে পারবেন না মনীশ। এমনকি এই সময় কোনরকম অপরাধমূলক কাজের সাথে যুক্ত হতে পারবেন না বলেও স্পষ্ট করে আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মনীশ কোঠারির জামিনের খবরে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছসিত অনুব্রত মণ্ডল। মনীশ কোঠারির জামিনে খুশি অনুব্রত মণ্ডল জানালেন তার আইনজীবী সম্পৃক্ত ঘোষাল। ভিডিও কনফারেন্সিং-এ মনীশ কোঠারির জামিনের বিষয়টি অনুব্রত মণ্ডলকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। মনীশ কোঠারির জামিনের ফলে অনুব্রত এবং সুকন্যা মন্ডলের জামিন মামলায় যথেষ্ট সুবিধা হবে বলেই জানান সম্পৃক্তা ঘোষাল। যদিও অনুব্রত ও সুকন্যার জামিন খারিজ হওয়ায় পুজোতে তিহারেই থাকতে হচ্ছে তাঁদের।
অস্বস্তি বহাল সায়গল হোসেনের। কলকাতা হাইকোর্টে খারিজ হয়ে গেল অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের জামিনের আবেদন। বুধবার জামিনের আবেদন খারিজ করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। শুনানির সময় সিবিআই-এর তরফে জানানো হয়, যেহেতু মূল মামলা দিল্লিতে,তাই এই আদালত এই মামলা শুনতে পারে না। এর পরেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ সায়গল হোসেন জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। ২০২২ সালের জুন মাসে গরুপাচার মামলায় বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর মধ্যেই, গত জুন মাসে আসানসোল সিবিআই আদালতে সিজার লিস্ট জমা করে সিবিআই। প্রায় ১ কোটি টাকার নতুন সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। ৩টি নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ৭টি জমির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। ওই সম্পত্তিগুলি সায়গল হোসেনের মা ও স্ত্রীর নামে রয়েছে। ৭টি জমির মধ্যে একটি সিউড়িতে বাকি ৬টি ডোমকলে রয়েছে। জমিগুলির বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। যদিও সিবিআই-এর দাবি, এই মূল্য কম করে দেখানো হয়েছে। জমিগুলি সায়গলের স্ত্রী সোমাইয়া খন্দকার ও সায়গলের মা লতিফা খাতুনের নামে আছে বলে সিজার লিস্টে উল্লেখ করেছে সিবিআই। শুধুমাত্র জমি নয়, সায়গলের স্ত্রীর নামে আরও ৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। ওই ৩টি অ্যাকাউন্টে মোট প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা রয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই। অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই মূল মামলা দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে স্থানান্তরিত হয়েছে। জোর কদমে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই কারণেই সিবিআই-এর আইনজীবীর আবেদনে সাড়া দিয়ে এদিন তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলের।
অস্বস্তি বহাল সায়গল হোসেনের। কলকাতা হাইকোর্টে খারিজ হয়ে গেল অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের জামিনের আবেদন। বুধবার জামিনের আবেদন খারিজ করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। শুনানির সময় সিবিআই-এর তরফে জানানো হয়, যেহেতু মূল মামলা দিল্লিতে,তাই এই আদালত এই মামলা শুনতে পারে না। এর পরেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ সায়গল হোসেন জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন।
২০২২ সালের জুন মাসে গরুপাচার মামলায় বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর মধ্যেই, গত জুন মাসে আসানসোল সিবিআই আদালতে সিজার লিস্ট জমা করে সিবিআই। প্রায় ১ কোটি টাকার নতুন সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। ৩টি নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ৭টি জমির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। ওই সম্পত্তিগুলি সায়গল হোসেনের মা ও স্ত্রীর নামে রয়েছে।
৭টি জমির মধ্যে একটি সিউড়িতে বাকি ৬টি ডোমকলে রয়েছে। জমিগুলির বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। যদিও সিবিআই-এর দাবি, এই মূল্য কম করে দেখানো হয়েছে। জমিগুলি সায়গলের স্ত্রী সোমাইয়া খন্দকার ও সায়গলের মা লতিফা খাতুনের নামে আছে বলে সিজার লিস্টে উল্লেখ করেছে সিবিআই। শুধুমাত্র জমি নয়, সায়গলের স্ত্রীর নামে আরও ৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। ওই ৩টি অ্যাকাউন্টে মোট প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা রয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই। অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই মূল মামলা দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে স্থানান্তরিত হয়েছে। জোর কদমে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই কারণেই সিবিআই-এর আইনজীবীর আবেদনে সাড়া দিয়ে এদিন তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলের।
অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদনের মামলায় সিবিআই-কে নোটিস দিল শীর্ষ আদালত। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদির বেঞ্চ সিবিআইকে ওই নোটিস জারি করে।
গরুপাচার মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই আবেদন খারিজ করে হাই কোর্ট। নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী। এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের।
বিচারপতি বসু জানান, আদালত সিবিআই-কে নোটিস জারি করার নির্দেশ দেন। তদন্ত কোন পর্যায় আছে, তা জানা দরকার বলেও মনে করেন বিচারপতি। তারপরই জামিনের আবেদন বিবেচনাও করা হবে। এমনই জানিয়েছেন তিনি।
পিছিয়ে গেল গরু পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদনের শুনানি মামলা। সিবিআই-এর গ্রেফতারির প্রেক্ষিতে জামিনের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুব্রত। এর আগে নিম্ন আদালত এবং দিল্লি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন তাঁর খারিজ হয়ে যায়। শীর্ষ আদালতে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস এবং বেলা এম ত্রিবেদির এজলাসে শুনানি তালিকাভুক্ত ছিল। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী শুক্রবার।
বারবার অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদনেরর মামলার শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছে। অনুব্রতর আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, যে কোনও মূল্যে তাঁর মক্কেলকে জামিন দেওয়া হোক। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই জেলে রয়েছেন। সিবিআই-এর আইনজীবী অবশ্য বারবারই অনুব্রতর বিরুদ্ধে প্রভাবশালী তত্ত্ব খাঁড়া করেছিলেন। সিবিআই-এর বরাবরই বক্তব্য, ‘উনি ভীষণই প্রভাবশালী ব্যক্তি। তদন্ত এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই সময় তাঁকে জামিন দেওয়া হলে স্বাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন।’
এর আগে অনুব্রতর সিবিআই- বিশেষ আদালত, দিল্লি হাইকোর্টেও অনুব্রতর জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে। সিবিআই-এর বিশেষ আদালত অনুব্রতর আর্জিই সেভাবে শোনেনি।
প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় গত বছরের অগস্ট মাসে গ্রেফতার করা হয় অনুব্রতকে। তারপর তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। বর্তমানে তিহাড় জেলেই রয়েছেন তিনি। তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও বর্তমানে জেলেই। তিনিও জামিনের আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্টে তাঁর জামিনের আবেদনও চার মাস পিছিয়ে যায়। তাঁর জামিনের আবেদনের পরবর্তী শুনানি ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি।
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলার তদন্ত এখন বাংলা থেকে সরে দিল্লিতে গিয়েছে। আসানসোল সিবিআই-এর বিশেষ আদালত থেকে সরে মামলা গিয়েছে দিল্লি রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে। গরু পাচার মামলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আর্থিক দুর্নীতি মামলাও। ৪৪/১ সি ধারায় স্থানান্তরের আবেদন করে ইডি। তাতে নিম্ন আদালতের বিচারক সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারপরই মামলা সরে দিল্লিতে।
মণি ভট্টাচার্য: মুখ্যমন্ত্রী দ্বারা প্রদত্ত পুলিস মেডেল পাচ্ছেন রাজ্যের ৬ আইপিএস অফিসার। রাজ্য পুলিস প্রশাসন মারফত, ২৪ জুলাই একটি নির্দেশিকার মাধ্যমে এ বিষয়ে জানানো হয়। সূত্রের খবর, অসাধারণ এবং প্রশংসনীয় পরিষেবার জন্য, রাজ্যের এক এডিজি পদমর্যাদার অফিসার এবং ৫ পুলিস সুপার পদমর্যাদার অফিসারকে এই পদক দেওয়ার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১৫ অগাস্ট সংশ্লিষ্ট অফিসারদের এই পদকে সম্মানিত করা হবে। ওই তালিকায় রয়েছেন, এডিজি ও আইজি ওয়েস্টার্ন জোন, ত্রিপুরারি অথর্ব এবং পুরুলিয়া জেলা পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায়, আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী, হাওড়া গ্রামীণ পুলিস সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া, হুগলি গ্রামীণ পুলিস সুপার আমানদীপ, এবং পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিস সুপার ধৃতিমান সরকার।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রেই খবর, ১৯৯৮ সালের ব্যাচের ১ আইপিএস অফিসার, ২০১৩ সালের ব্যাচের ৩ আইপিএস অফিসার, ২০১৪ সালের ব্যাচের ২ আইপিএস অফিসারকে নির্বাচিত করা হয়েছে। উক্ত অফিসাররা দীর্ঘদিন ধরেই অসামান্য পরিষেবা দিয়ে আসছেন এবং তাঁরা বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অবস্থায় বহু অপরাধ দমনে বিশেষ ভাবে সক্ষম। এছাড়া তাঁরা রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সঠিক ভূমিকা পালন করেছেন। ওই অফিসারদের পুরস্কৃত করার খবর পেয়ে উচ্ছ্বসিত সাধারণ মানুষও। ইতিমধ্যেই শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁদের কে বার্তা পাঠাতে শুরু করেছেন বহু মানুষ।
পুলিস মেডেলে পুরস্কৃত হয়ে আগামীতে আরও ভালো কাজ করতে চান সমস্ত অফিসারই। এ বিষয়ে অপরাধ দমনে বিশেষজ্ঞ পুরুলিয়া জেলা পুলিস সুপার আইপিএস অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় সিএন ডিজিটালকে বলেন, 'এই পুরস্কার আমাদের আগামীর অন্য অনুপ্রেরণা দেবে, আমরা আরও ভালো ভাবে কাজ করার চেষ্টা করব।' এছাড়া হুগলি গ্রামীণ পুলিস সুপার আইপিএস আমানদীপ, সিএন ডিজিটালকে বলেন, 'আগামীতে আরও ভালো ভাবে কাজ করতে চাই।' পাশাপাশি পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী আলিপুরদুয়ারের মানুষদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, 'আমাকে সমর্থন করার জন্য আমি আলিপুরদুয়ারের জনগণ এবং আলিপুরদুয়ারের সমস্ত পুলিস সদস্যদের কাছে কৃতজ্ঞ।'
দু'দিনের ফ্রান্স সফর শেষে এবারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসে পৌঁছেছেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (UAE) আবু ধাবিতে। শনিবার সকাল ১১ টা নাগাদ সেদেশের মাটিতে অবতরণ করেছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিমান। একদিনের সফরে সেখানে পৌঁছনোর পর আবু ধাবির আল ওয়াতান প্রাসাদে (Qasr Al Watan) তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাগত জানান আরব আমিরশাহীর প্রেসিডেন্ট মহম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান (UAE President Mohammed bin Zayed Al Nahyan)। মোদী সেখানে পৌঁছনোর আগেই তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন আরব আমিরশাহীর প্রেসিডেন্ট। এরপর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। এরপর বৈঠকের শুরুতেই আবু ধাবির প্রেসিডেন্টকে মোদী বলেন, 'প্রতিটি ভারতবাসী আপনাকে প্রকৃত বন্ধুর চোখে দেখেন।'
ফ্রান্সের 'ব্যাস্টিল ডে'-তে যোগ দেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী যান আবু ধাবিতে। সেখানে পৌঁছে সেদেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে শিক্ষা, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষা নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে। ভারত ও আরব আমিরশাহীর মধ্যে কিছু মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক মজবুত করতে শিক্ষা সংক্রান্ত একাধিক মউ-এ স্বাক্ষর করেছে ভারত। এরপর মোদী আরব আমিরশাহীর প্রেসিডেন্টকে প্রকৃত বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন।
এরপর এই বৈঠক শেষে অবশেষে বিকেল ৫ টা নাগাদ তিনি ফের ভারতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সেদেশ ছাড়ার আগে মোদী তাঁর আতিথেয়তার জন্য প্রেসিডেন্ট আল নাহিয়ানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ে খুশি অনুব্রত মন্ডল। কিন্তু কবে জেল থেকে মুক্তি হবে, তা জানতে পারেননি। গরুপাচার মামলায় এক বছর ধরে জেলে আছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। এবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন অনুব্রত। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অনুব্রত মন্ডলকে জেরা করতে পারে ইডি, এমনটাই সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তে নেমে মিলেছে বিস্ফোরক তথ্য। এই মামলায় এখনও অবধি তৃণমূল নেতা, মন্ত্রী সহ বহু সরকারি আধিকারিকও গারদের ওপারে আছেন। এবার এই মামলায় বীরভূমের বেতাজ বাদশাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ইডি।
সূত্রের খবর, বয়ান রেকর্ড করার জন্য ইতিমধ্যেই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে আবেদন করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। আগামী ২০ জুলাই বিচারক রঘুবীর সিংয়ের বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি আছে। ইডির আবেদন মঞ্জুর হলে অনুব্রতকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে জেরা করতে পারে ইডি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শাসক দলের একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়িয়েছে। জেলে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, জীবনকৃষ্ণ সাহার মতো নেতারা। টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
বীরভূম মানেই অনুব্রত মণ্ডলের খাস তালুক। কিন্তু জেলার বদলে তিহার জেলে বর্তমানে ঠাঁই হয়েছে তাঁর। সেকারণে পঞ্চায়েতে ভোটে সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে ফের সেখানেই ঘাসফুল ফোটালেন একদা অনুব্রত বিরোধী বলে পরিচিত কাজল শেখ। তবে ইতিমধ্যে তিহার জেলে বসেই নির্বাচনের ফল সংক্রান্ত সব খবর পেয়ে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। সূত্রের খবর তাতে যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত তিনি। এদিকে কাজল শেখের মন্তব্য, বীরভূমে জয়ের অংশীদার অনুব্রত মণ্ডলও।
বীরভূমের জেলা পরিষদের মোট ৫২টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে, ৫১টি আসনই ঘাসফুল শিবিরের দখলে। নির্বাচনের জন্য বীরভূমে বিশেষ কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কমিটির গুরুদায়িত্ব ছিল কাজল শেখের উপর। একটি সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাজল শেখ জানিয়েছে, বীরভূমে তৃণমূলের জয়ের অংশীদার অনুব্রত মণ্ডল। কারণ তাঁর দেখানো পথেই জেলায় জয় এসেছে বলে দাবি।
গত বছর গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তারপর থেকেই জেলা নিয়ে বেশ কিছুটা চিন্তায় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূম জেলায় গিয়ে সেখানকার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ফিরহাদ হাকিম। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে বীরভূমের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর সেখানেই কাজল শেখকে নির্বাচনের জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেন তৃণমূল নেত্রী।
মামলা লড়াইয়ের খরচ জোগাড় করতে ছয় সপ্তাহের জন্য জামিন (Bail) চাইলেন অনুব্রত মণ্ডলের (Anubara Mondal) কন্যা সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal)। ১০ জুলাই এই মামলার শুনানি রয়েছে। পাশাপাশি সুকন্যার এই আর্জির ভিত্তিতে ইডির বক্তব্য জানতে চেয়েছেন বিচারক রঘুবীর সিং। আদালতের কাছে সুকন্যার আর্জি, মামলা লড়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নেই। এমনকি, বাড়িতেও টাকা জোগাড় করার মতো কেউ নেই। তাঁর বক্তব্য ছয় সপ্তাহের জন্য জামিন পেলে তিনি আইনজীবীদের ফি দেওয়ার অর্থ জোগাড় করতে পারবেন।
এই প্রথম নয়, এর আগেও জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন সুকন্যা মণ্ডল। তখন প্রভাবশালী তত্ত্বে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ইডির অভিযোগ, গরু পাচারের ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনওভাবে জড়িত ছিলেন না বলে বারবার দাবি করলেও কালো টাকা সাদা করার কাজ দেখভাল করতেন তিনি। পাশাপাশি খাতায় কলমে তিনি স্কুল শিক্ষকা হলেও তাঁর নামে কোটি কোটি টাকা সম্পত্তির হদিশ মিলেছে।
এদিকে আদালতে সুকন্যা জানিয়েছেন, তিনি এখন আইনজীবীদের ফি জোগাড় করতে পারছেন না। পরিচিত ও আত্মীয়দের থেকেও টাকা চাইতে পারছেন না। সেকারণে ৬ সপ্তাহের জন্য জামিনের আবেদন করেছেন।
ফের অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) জামিনের (Bail) আবেদন খারিজ করে দিল আদালত। প্রায় ৩২৩ দিন জেল হেফাজতে রয়েছেন তিনি। শুক্রবারও প্রভাবশালী তত্ত্ব খাড়া করে জামিনের বিরোধিতা করেন সিবিআই (CBI) আইনজীবী। শুক্রবার ভার্চুয়াল শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রথম থেকেই জামিনের জন্য আবেদন করে আসছিলেন অনুব্রতর আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ। কিন্তু পাল্টা যুক্তি দেন সিবিআই আইনজীবী। দুপক্ষের শুনানি শেষে ফের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক।
শুক্রবার শুনানি চলাকালীন, বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সি বি আইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্যর উদ্দেশে বলেন, ২৮৩ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়েছে। আর কতজনের সাক্ষী লাগবে?? জবাবে সুশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, তদন্তে নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। তাই এখনও কয়েকজনের বয়ান প্রয়োজন। পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দেন, দ্রুত শেষ করা হবে তদন্ত।
দুপক্ষের বক্তব্য শুনে প্রথমে রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। যদিও তার ঘণ্টা দুয়েক পর অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। ২০২২ সালের ১১ অগাস্ট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ৫টি চার্জশিট জমা পড়েছে। তবে কবে থেকে ট্রায়াল শুরু হবে তা এখনও জানা যায়নি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Election) আগে শাসক দলে ভাঙন অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) জেলায়। ময়ূরেশ্বর বিধানসভার ঝিকোড্ডা গ্রামে প্রায় ৬০০ তৃণমূল (TMC) কংগ্রেস কর্মী কংগ্রেসে যোগ দেন। অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর বিধানসভাতেও একই ছবি দেখা গেল। সেখানে তৃণমূল যুব সভাপতি সহ শাসক দলের প্রচুর কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলবদলের ঘটনায় বেশ কিছুটা অস্বস্তিতে দুই জেলারই তৃণমূল নেতৃত্ব।
রবিবার বিকালে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন মল্লারপুর কোর্ট গ্রামের তৃণমূল বুথ সভাপতি সানোয়ার মোল্লা। তাঁর সঙ্গে কয়েকশো তৃণমূল কর্মীও কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সহকারী সভাপতি সৈয়দ কাসাফদ্দোজ্জা শেখ।
এদিকে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সানোয়ার মোল্লা। এই ঘটনার পর গ্রামের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়টিও দখল করে নেয় কংগ্রেস।
অভিনেতা গৌরব মন্ডল (Gourab Mandal) টলিউডের ধারাবাহিক জগতের জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন। একাধিক ধারাবাহিকে কাজ করেছিলেন। তবে বর্তমানে তাঁকে আর টলি পাড়ায় তেমন দেখা যায় না। গৌরবের সামাজিক মাধ্যম দেখলে স্পষ্ট তিনি আধ্যাত্মিকতার পথ বেছে নিয়েছেন। এই পথে গৌরবের সঙ্গী তাঁর প্রেমিকা তথা বাগদত্তা চিন্তামণি ডায়ানা (Chintamani Diana)। বিদেশিনী ডায়ানা মজেছেন কৃষ্ণনামে। তাই পশ্চিমি সংস্কার ভেঙে ভারতীয় সংস্কারে নিজেকে মুড়ে ফেলেছেন তিনি।
অভিনেতা গৌরব এবং ডায়ানা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের ছবি ভিডিও আপলোড করে থাকেন প্রায়শই। সম্প্ৰতি এক ভিডিওতে গৌরবকে অন্য মেজাজে দেখা গেল। বাগদত্তার সামনে বসে গৌরব হারমোনিয়ামে সুর তুলেছেন। একইসঙ্গে গাইছেন, উত্তম কুমারের লিপে জনপ্রিয় গান, 'কে প্রথম কাছে এসেছি।' পাশে বসে একমনে গান শুনছেন বিদেশিনী চিন্তামণি। মাঝেমধ্যে আবার গৌরবের সুরে সুর মিলিয়েছেন তিনিও।
কাছের মানুষদের উপস্থিতিতে বাগদান সেরেছেন গৌরব এবং চিন্তামণি। বর্তমানে এই জুটি নেটিজেনদের খুব পছন্দের। তাঁরা বারংবার বলেছেন, 'আমরা নিজেদের রাধা-কৃষ্ণ ভাবি না। আমরা তাঁদের সন্তান এবং আমাদের আত্মা তাঁদের সেবাতেই নিয়োজিত থাকবে।'
মণি ভট্টাচার্য: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা হার মানিয়েছে গত ৪ দশকের ভয়াবহতাকেও। ছাপিয়ে গিয়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এরপর করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে অভিশপ্ত বলতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। রেল সূত্রে খবর, এই দুর্ঘটনায় এখনও অবধি মৃতের সংখ্যা ২৭৫ জন। আহতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে বলেই খবর। কিন্তু এই ২৭৫টি প্রানের মৃত্যুর দায় কার? এই দায় কি কেবল ঈশ্বরের? হয়ত নয়। হয়ত এর মধ্যে অন্তর্ঘাত রয়েছে, কিংবা রয়েছে রেলের গাফিলতি। এ বিষয়ে সন্দিহান প্রকাশ করেছে স্বয়ং রেলমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীও।
শুক্রবারের এই রেল দুর্ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে বাহানাগা স্কুলে রাখা মৃতদেহের স্তূপে নিজের ছেলেকে খুঁজছেন বাবা। চারিদিকে স্বজনহারা কান্না। বাতাসে যেন মুহূর্তে মিশে গিয়েছিল রক্তের মাদকতা। এখনও ওই বিষাক্ত জায়গায় মুছতে পারেনি রক্তের ছাপ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মৃতদেহের কোনও ধর্ম ছিল না। কেবল লাশ হিসেবেই চিহ্নিত করা ছিল তাঁরা।
প্রাথমিক ভাবে মৃতদের সনাক্তকরণ নিয়েও চাপে আছে রেল। ঘটনার পরেই দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে তদন্তে নেমেছে রেলের সুরক্ষা কমিশনার। এরই মধ্যে রেল মন্ত্রী অস্বিনী বৈষ্ণব এ ঘটনায় সিবিআই তদন্ত শুরু করার সুপারিশ করেছেন। সেইমত সোমবার থেকেই মাঠে তদন্তে নেমে পড়ছেন সিবিআই। যদিও এই ঘটনায় আপাতত বেঁচে আছেন ওই দুই ট্রেনের ড্রাইভার ও গার্ডরা। ওদিকে সোমবারই খড়্গপুর ডিভিশনের রেল আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসছে সিবিআই।
প্রাথমিক ভাবে রেলের সিগন্যাল জনিত কারণ দেখালেও, রেলমন্ত্রীর দাবি ছিল এ ঘটনায় অন্য কোনও ষড়যন্ত্র আছে। উনি জানিয়েছিলেন সমস্তটা তদন্ত সাপেক্ষ, সময় হলে সমস্তটা প্রকাশ হবে। ঘটনাস্থলে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছিল, এ ঘটনায় দোষীরা সাজা পাবে। যদিও এখনও অবধি স্বজন হারা মানুষ গুলোর কাছে দুষবার মত ঈশ্বর ছাড়া কেউই নেই।
বাহানাগা বাগ স্কুলে যেখানে মৃতদেহ রাখা ছিল সেখানে রক্তের ছাপ পুরো মুছতে পারছে না কতৃপক্ষ। ১৯৮১-র পর এতবড় দুর্ঘটনা দেখেনি রেল। স্বজনহারা মানুষগুলো এখনও খুঁজে বেড়াচ্ছে তাঁদের প্রিয়জনকে। কেউ কেউ হয়ত প্রিয়জনকে খুঁজে পেয়েছে কিন্তু খুঁজে পায়নি প্রিয়জনের হাত, কিংবা পা। কেউ কেউ প্রিয়জনের শরীরের নির্যাস টুকু পেয়েছে। তাতেই হয়ত তাদের শান্তি। সত্যি বলতে এত গুলো লাশ। একসাথে এত মৃত্যু অনেক দিন দেখেনি বাতাস। সেদিন যেন বাতাসে লাশের গন্ধ। দুর্ঘটনার পরের দিন সকালেই দেখছিলাম রেল লাইনে স্বজনের মৃতদেহ ঢেকে রেললাইনে বসে আছেন মহিলা। শোকতাপ হীন। এই মানুষগুলো যেন মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠে, ঈশ্বর ছাড়া অন্তত কাউকে পাক এ মৃত্যুতে দুষবার। এই কেবল প্রার্থনা।
একটা দুর্ঘটনা, তাতে রেলের ক্ষতি কত ? শুক্রবারের ঘটনার হিসাব-নিকেশ কষতে বসে রেল কর্তারা জানিয়েছেন, আপাতত ২৪ কোটি টাকার ধাক্কা খেয়েছে ভারতীয় রেল। ওড়িশায় বালেশ্বরে করমণ্ডল দুর্ঘটনায় এটা প্রাথমিক রিপোর্ট বলেই দাবি করা হয়েছে। দিন যত বাড়বে, খরচ আরও বাড়তে পারে বলেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত আধুনিক কোচ সম্বলিত দুই সুপারফার্স্ট ট্রেন। তার সঙ্গে রয়েছে মালগাড়ি। দুটি ট্রেনের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। সঙ্গে আরও সাড়ে তিন কোটি টাকার বেশি ধাক্কা লেগেছে মালগাড়ির ক্ষেত্রে।
এদিকে, রবিবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের আশা প্রকাশ করে দাবি করেছেন, আগামী বুধবার থেকে বালেশ্বরের উপর দিয়ে যেতে পারবে কলকাতায় থেকে দক্ষিণ ভারত ও পুরীগামী ট্রেন। শনিবারই এই ঘটনার জন্য সিগন্যালিং ব্যবস্থাকেই প্রাথমিক রিপোর্টে দায়ী করেছিল রেল। রবিবার কার্যত তাতেই সিলমোহর বসালেন রেলমন্ত্রী। দাবি করলেন করমণ্ডল দুর্ঘটনার মূল কারণ, এবং এর পিছনে কারা, তাদের চিহ্নিত করাা গিয়েছে। তবে, এর থেকে বেশি আর কিছুই বলতে চাননি তিনি। তবে জানিয়েছেন, রিপোর্ট খুব দ্রুতই পেশ করা হবে। এদিনও বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল।
রবিবার সকালেই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দক্ষিণ-পূর্ব রেল দাবি করে খুব তাড়াতাড়ি হলেও মঙ্গলবারের আগে লাইন মেরামতির কাজ শেষ হবে না। তাও তারা চেষ্টা করছে দ্রুত এই কাজ শেষ করতে। বেলায় ফের ঘটনাস্থলে যান রেলমন্ত্রী। গোটা এলাকা ঘুরে তিনি জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে বুধবার সকাল থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হতে পারে। কারণ, দিনরাত এক করে রেলের এক হাজারের বেশি শ্রমিক লাইন মেরামতির কাজ করেছেন।
ওড়িশার বালাসোরে (Balasore) ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু মিছিল। ঘটনাস্থল রাজ্য থেকে ২৫০ কিমি দূরে হলেও এর প্রভাব বাংলায় ভয়াবহ। ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে আটকে পড়া স্পেশাল ট্রেন প্রায় ২০০ জন যাত্রী নিয়ে হাওড়া (Howrah) ফিরেছে। রেলসূত্রে খবর, আরও প্রায় ১০০০ যাত্রীকে নিয়ে হাওড়া ফিরছে স্যর এম বিশ্বেশ্বরায়-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। হাওড়া স্টেশনের ৮ নম্বর প্লাটফর্মে উপস্থিত রয়েছেন রেলের আধিকারিকরা। এছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স, ওলা উবের সহ আরও বিভিন্ন গাড়ি প্রস্তুত করা রয়েছে যাতে শ্রুত আহতদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া যায়। স্টেশনে উপস্থিত রয়েছেন চিকিৎসকদের একটি দল। খড়্গপুর স্টেশনে যাত্রীদের জল, চা এবং খাবার দেওয়া হয়।
ওড়িশার বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২৮৮। এবং আহতের সংখ্যা ৯০০-এর অধিক। রেলের তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে। যদিও মৃত ও আহতের সঠিক সংখ্যা জানানোর ক্ষেত্রে রেলের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ করেছেন অনেকেই।