
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও একজনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। অভিযুক্তের নাম পার্থ সেন। তিনি ও এম আর প্রস্তুতকারী সংস্থা এন এন বসু রায় অ্য়ান্ড কোম্পানির পদস্থ আধিকারিক ছিলেন।
জানা গিয়েছে, ওই সংস্থার পোগ্রামিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ওএমআর শিট বিকৃতির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর কয়েকদিন আগেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপর সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
উত্তরপত্র মূল্যায়ন এবং ওএমআর শিট তৈরির দায়িত্ব ছিল ওই সংস্থার উপর। গতমাসে ওই সংস্থার দুই আধিকারিকের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। উদ্ধার করা হয় একাধিক নথি এবং কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক।
এবার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং আইনজীবী অনন্ত দেহাদরির বিরুদ্ধে আইনি চিঠি পাঠালেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ওই আইনি চিঠিতে মহুয়া উল্লেখ করেছেন, ঝাড়খন্ডের গোড্ডা আসনের নির্বাচনের সময় নিশিকান্ত যে শিক্ষাগত যোগ্যতার উল্লেখ করেছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। সেকারণেই নিশিকান্তের সঙ্গে তাঁর সংঘাত বাঁধে। অন্যদিকে আইনজীবী দেহাদরির সঙ্গে মহুয়ার বন্ধুত্ব থাকলেও পরবর্তীতে তা অবনতি হয়।
মহুয়ার পাঠানো ওই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, বারবার অশ্লীল মেসেজ পাঠাতেন দেহাদরি। এমনকি মহুয়ার পোষ্য কুকুরকে নিয়েও চলে গিয়েছেন বলে ওই অভিযোগ পত্রে জানানো হয়েছে।
মহুয়া মৈত্রের আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে সিবিআই এর কাছে যে অভিযোগ পত্রটি পাঠানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল। আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি টুইটও করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। সেখানে একযোগে একযোগে বিজেপি ও সিবিআইকে আক্রমণ করেন তিনি।
ভিনদেশে পাড়ি দেওয়ার পাশাপাশি নিত্যদিনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি পাসপোর্টেও মিলেছে দুর্নীতির যোগ। সেই দুুর্নীতির তদন্তেই এবার অতি সক্রিয় সিবিআই। ভুয়ো পাসপোর্ট মামলায় সোমবার সকালেও ফের ২ জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। রাজ্যের একাধিক জায়গা সহ পড়শি রাজ্য সিকিম মিলিয়ে প্রায় ৫০ জায়গায় চিরুনী তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা। এমনকি সিবিআই হানা দিয়েছে একাধিক এজেন্টের বাড়িতেও। তদন্তে গ্যাংটকের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের সিনিয়র সুপারিটেন্ডেন্ট গৌতমকুমার সাহা সহ এক হোটেল এজেন্টকেও পাকড়াও করে সিবিআই। গত শুক্রবারের পর শনিবারও জারি ছিল তল্লাশি।
উলুবেড়িয়ার মহিশালীর বাসিন্দা পাসপোর্ট কর্মী শেখ সাহানুরের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় সিবিআইয়ের ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল। অন্যদিকে নকশাল বাড়ির বাসিন্দা এজেন্ট বরুণ সিং রাঠোরের বাড়িতেও হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। বরুণ বাবু ও তার স্ত্রীকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। প্রায় ১৬ ঘন্টা জেরার পর গ্রেফতার করা হয় বরুণ সিং রাঠোরকে।
সূত্রের খবর, পাসপোর্ট দুর্নীতির ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়েছে ৬ জন। তল্লাশি অভিযানে মোট ৪০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই।ভুয়ো নথি দিয়ে পাসপোর্ট বানানোর এই বিশাল কর্মকাণ্ডে সিবিআই এর তদন্তে উদ্ধার হয়েছে একাধিক তথ্য প্রমাণ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে পাসপোর্ট, আধার কার্ড ভোটার কার্ড সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি।তদন্তের গতি বাড়াতে এবার ধৃতদের দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন সিবিআইয়ের। দফায় এজেন্ট ও আধিকারিকদের জেরা আর একাধিক জায়গায় লাগাতার তল্লাশিতে আদৌ কি পাসপোর্ট দুর্নীতির পর্দাফাঁস হবে? খোঁজ কি মিলবে দুর্নীতি কিংপিনের? প্রশ্ন থেকেই যায়।
এবার ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের তদন্তে সিবিআই হানা রাজ্যের একাধিক জায়গায়। মহালয়ার দিনও তৎপরতার সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তল্লাশি চালাচ্ছে শিলিগুড়িতে (Siliguri)। সূত্রের খবর, শুধু শিলিগুড়ি নয়, শিলিগুড়ি, গ্যাংটক-সহ মোট ৫০ জায়গায় একসঙ্গে হানা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। তল্লাশি চলছে উলুবেড়িয়াতেও (Uluberia)।
এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, শিলিগুড়ির নকশাল বাড়ির পানিঘাটা এলাকায় বরুণ জিৎ সিং রাঠোর-এর বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তল্লাশি চলছে অটল চা বাগানের অফিসেও। এর পাশাপাশি আরও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও অভিযান চলছে। পুলিস সূত্রে খবর, সিবিআই জানতে পেরেছে, ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের একাধিক আধিকারিকরাও যুক্ত রয়েছেন বলে সিবিআই জানতে পেরেছে। এমনকি একজন এজেন্ট-এর কাছ থেকে এক লক্ষ ৯০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
অন্যদিকে উলুবেড়িয়ায়ও চলছে সিবিআই তল্লাশি। উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের মহিষালি গ্রামে শেখ শাহানুরের বাড়িতে সিবিআই হানা চলছে। ভোর চারটে নাগাদ চারজনের একটি দল শাহানুরের বাড়িতে ঢোকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাহানুর পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে কাজকর্ম করতেন। দীর্ঘ সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে দশটার পর সিবিআই টিম শাহানুরের বাড়ি থেকে বের হয় এবং আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শেখ শাহানুরকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যজুড়ে সিবিআই তল্লাশি চলছে। বেশিরভাগ সময় বাইরেই থাকত কাজকর্ম নিয়ে। বাড়িতে খুব বেশি সময় থাকতেন না। এলাকায় ভালো ছেলে বলেই সকলে জানত কিন্তু তার মাঝখানে জাল পাসপোর্টের কাজ করত সেটা ভেবে পাচ্ছে না গ্রামের বাসিন্দারা।
এবার সিবিআই-এর নজরে সমবায় দুর্নীতিকাণ্ড। আলিপুরদুয়ার মহিলা সমবায় ঋণদান সমিতির চেয়ারম্যান তৃপ্তিকণা চৌধুরীর বাড়িতে ফের সিবিআই হানা। ৩ সদস্যের সিবিআই প্রতিনিধি দল পৌঁছয় তাঁর বাড়িতে। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। সেখান থেকে বেরিয়ে সিবিআই প্রতিনিধিদের দল যায় ওই সমিতির কোষাধ্যক্ষ শম্পা চৌধুরীর বাড়িতে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে তৃপ্তিকণা চৌধুরীর বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআই তদন্তকারী আধিকারিকরা। এছাড়া ওইদিন আরও দুটি জায়গায় হানা দিয়েছিল সিবিআই। আলিপরদুয়ারের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সমবায়ের ম্যানেজার তৃপ্তিকণা চৌধুরী, ক্লার্ক পঙ্কজ গুহ আচার্য-সহ আরও এক কর্মীর বাড়িতে সিবিআৎ-এর প্রতিনিধিরা গিয়েছিলেন। ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে যায় সমবায় সমিতি। গ্রাহক ছিলেন ২১ হাজার। এই সমিতির বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠে।
রবিবারের পর সোমবারও রাজ্যজুড়ে তল্লাশি অভিযান চালু সিবিআইয়ের। পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবারও তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর। এবার অভিষেকের গড় ডায়মন্ড হারবারে পৌঁছে গেল সিবিআই। জানা গিয়েছে, এদিন, সকালে ডায়মন্ড হারবারের প্রাক্তন পুরপ্রধান মীরা হালদারের বাড়িতে হাজির হয় সিবিআই আধিকারিকদের একটি দল। বাড়িতেই রয়েছেন মীরা হালদার। প্রাক্তন পুরপ্রধানের বাড়িতে এই মুহূর্তে তল্লাশি চালাচ্ছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রাক্তন চেয়ারপার্সন মীরা হালদারের বাড়িতে পৌঁছন সিবিআই আধিকারিকরা। বাড়ির বাইরে মোতায়েন রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। মীরার বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ডায়মন্ত হারবার পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেইসময় ওই পুরসভার চেয়ারপার্সন ছিলেন মীরা। রবিবার রাত্রি জুড়ে বারোটি জায়গায় হানা ও তল্লাশি চালায়। ওই অভিযান জারি রাখলো সিবিআই। সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘর ডায়মন্ডহারবার ছাড়াও নদীয়ার রানাঘাট পুরসভা, পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান, রানাঘাট পূর্ব-পশ্চিমের বিধায়কের অফিস ও বাড়ি এছাড়া বিরনগর পুরসভা, মধ্যমগ্রাম পুরসভা ও উলুবেড়িয়া পুরসভায় ও প্রাক্তন পুর-প্রধানের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই আধিকারিকরা।
এখন দেখার এই অভিযান চালিয়ে আধতে কোনও কিছু করতে পারে কিনা সিবিআই। যদিও রবিবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। এছাড়া পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে গত সপ্তাহে শুক্রবার খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সহ বেশ কিছু এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। যদিও রবিবার ১২ টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে কিছু ডিজিটাল প্রমান সহ কিছু নথিও উদ্ধার করে।
পুর নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে এবার বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দিল সিবিআই। সোমবার সকাল থেকেই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি শুরু হয়েছে। রানাঘাটের ওই বিজেপি বিধায়ক আগে রানাঘাট পুরসভার চেয়রম্যান পদে ছিলেন। এদিকে এই প্রথম পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়াল কোনও বিজেপি নেতার।
জানা গিয়েছে, একটানা ২৫ বছর রানাঘাটের পুরপ্রধান পদে ছিলেন পার্থসারথি। প্রথম ১৫ বছর কংগ্রেসের হয়ে এবং পরের ১০ বছর তৃণমূলের হয়ে ওই পদে আসীন ছিলেন। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল কংগ্রেস। জিতেও যান তিনি। কিন্তু ২০২১ সালের ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁকে রানাঘাট বিধানসভা থেকে দাঁড় করায় বিজেপি। এবং সেসময়ও তিনি জয়ী হন।
এর আগে রবিবার ফিরহাদ হাকিম ও মদন মিত্রের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। এছাড়াও আরও ১০টি জায়গায় হানা দিয়েছিল তারা। মূলত পুর নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তেই তল্লাশি চালিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। তারপর সোমবার ফের তল্লাশিতে সিবিআই।
'চাকরিপ্রার্থীদের টাকা নেওয়ার থেকে মায়ের মাংস খাওয়া ভালো,' পুর নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে এবার এমন মন্তব্য করলেন ফিরহাদ হাকিম। রবিবার সকালে রাজ্যের বারোটি জায়গায় তদন্ত সিবিআই হানা দেয়। এরই মধ্যে মদন মিত্র এবং কলকাতার মেয়ার ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা জেরা শেষে ফিরহাদ সাংবাদিকদের জানান, তিনি কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়।
কিছুটা বিস্ফোরক সুরেই বিজেপি ও কেন্দ্রীয় এজেন্সি কে প্রশ্ন ছুড়ে দেন ল, 'আমি প্রশ্ন করতে চাই আমি কি চোর? আমি কি অপরাধ করেছি? সারা জীবন একটা আদর্শ, একটা নীতি নিয়ে রাজনীতি করেছি। কি পেলেন তদন্ত করে?' এদিন তিনি আরও জানান, অয়নশীলকে আমি চিনিও না, কোনদিন জীবনে কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত হইনি। জীবনে নিজে কখনো ফুর্তি করিনি, জীবনে কখনও নেশা-ভান করিনি। মানুষ সেবা করতে এসেছি।'
এরপরেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের টেনে তিনি বলেন, 'ব্যক্তিগতভাবে সুজন বাবু আমাকে জানেন, রাজনীতি ছেড়ে বলুন, আমি চোর? বিকাশ বাবু ব্যক্তিগতভাবে বলুন, আমি চোর! দিলীপ ঘোষ ব্যক্তিগতভাবে আমাকে জানে, বলুন আমি চোর!'
এদিন উত্তেজিত সুরে ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, 'ব্যবসা থেকে টাকা নিয়ে মানুষের সেবা করেছি।' এদিন কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তোপ দিয়ে তিনি বলেন, 'যা ইচ্ছে তাই করব, নারদা হয়েছে, ভেবেছিলাম করে বিচার পাব। সেখানে বিচার হবে না, তার কারণ একতরফা হয়েছে। শুভেন্দু ওই কেসে আসামী। তাই কোনদিন চার্জ ফ্রেম হবে না। কোনওদিন বিচার পাব না। আমি মারা যাব তারপর বিচার কোনও একদিন আমি ক্লিনচিট পাবো।'
এবার তিনি বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ' আমার ফ্যামিলিকে হ্যারাস করা হচ্ছে। বিজেপিকে বলে দিই পারলে আমাকে জেলে রাখুন আমাকে, কিন্তু অপমান করবেন না। বিজেপি একটি অসভ্য, বর্বর লোকের দল। সামনে দিয়ে লড়তে পারে না মিথ্যা প্রবাদ দিয়ে পিছন দিক দিয়ে আমাদের সম্মানহানি করে।'
এদিন তিনি সাংবাদিকদের তাকে সিবিআইয়ের জেরা বিষয়ে বলেন, 'আমার দলিল দেখেছে, জেরক্স কপি নিয়ে গেছে, আমার ডকুমেন্টস দেখেছে, গোটা বাড়ি তল্লাশি করেছে উপর থেকে নিচ অবধি। কিছু বাজেয়াপ্ত করেনি,' শেষ পর্যন্ত নারদার পর ফের সিবিআই জেরে শেষে তিনি বলেন, 'আইন অনুযায়ী পৌর মন্ত্রীর সঙ্গে কোনোভাবেই পুর নিয়োগ যুক্ত নয়। পুরসভার নিয়োগের কোনও তথ্য পৌরমন্ত্রীর কাছে এসে না।'
পুর-নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে রবিবার রাজ্য জুড়ে ১২টি জায়গায় বিভিন্ন পৌরসভার প্রাক্তন পুর- প্রধানের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা। কলকাতার নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় সিবিআই। দীর্ঘ ছয় ঘন্টা তল্লাশির পর মদন মিত্রের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন সিবিআই অধিকারিকরা। এরপরেই মদন মিত্র সাংবাদিকদের জানান, সিবিআইকে তিনি প্রশ্ন করেছেন, তার সিনেমা 'ও লাভলী' দেখেছেন কিনা!
পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই হানা নিয়ে কামারহাটির বিধায়ক আরও বলেন, 'সিবিআই কিছু পায় নি, লিখে দিয়ে গেছে যে 'নাথিং ইস সিজড।' এ প্রসঙ্গে উত্তর দিতে গিয়ে মদন বলেন, 'আমার সঙ্গে অয়ন সিলের কোনও কারবার ছিল না। চাকরির জন্য আমি শেষ অবধি লড়ব, কিন্তু কোনও রকম দুর্নীতি প্রমান হলে আমি নিজেই আত্মসমর্পণ করব।'
এরপরেই সাংবাদিকদের তিনি জানান, সিবিআই তাঁকে কি প্রশ্ন করেছে! তিনি বলেন, সিবিআই তাঁকে জিগ্যেস করেছে, 'আপনার একটা বউ কিনা দুটি!' এরপর তিনি সিবিআইকে জবাব দেন, 'খোঁজ করলে পাবেন। আমার অফিসিয়াল কিছু বলতে পারব না। শুধু জানি আমি রাস্তায় হাঁটলে ৫০ টি গোপিনি হাটবে। আমার নামে কোনো ৪৯৮এ হয়নি। কৃষ্ণের এত বান্ধবী থাকতে পারে, আমার পারে না!'
রবিবার ৬ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি সেরে বেরিয়ে যাবার পর সিবিআইকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, 'সিবিআই ডাকলে জাত বাড়ে। আমার গ্ল্যামার যেমন ফেটে পড়ছে।' এরপরে তিনি অভিষেককে নিয়েও বলেন, 'পাঠান অভি জিন্দা হ্যায়, টাইগার অভি মরা নাহি, অভিষেক সেটা প্রমান করে দিয়েছে।'
পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে রবিবার সকাল থেকে ফিরহাদ হাকিম ও মদন মিত্রের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। পাশাপাশি রাজ্যের একাধিক জায়গায় চলছে তল্লাশি অভিযান। পুরো ঘটনায় প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নার ফলে বিজেপির উপর চাপ বাড়ছে। সেকারণে নজর ঘোরাতেই ফের এজেন্সিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
কুণাল ঘোষের ওই মন্তব্যের পালটা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ নস্যাৎ করে তাদের স্পষ্ট জবাব, কেন্দ্রীয় সংস্থা তাদের নিজেদের কাজ করছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় হুগলির বাসিন্দা অয়ন শীল গ্রেফতার হওয়ার পরেই পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। তার তদন্ত শুরু করে CBI। রবিবার সকালে সেই মামলার তদন্তের জন্যই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্রের বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা।
এরপর কাঁচড়াপাড়া এবং হালিশহরেও হানা দেয় সিবিআই এর দুটি টিম। ওই দুই পুরসভার দুই প্রাক্তন পুরপ্রধানের বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। সূত্রের খবর একাধিক নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে রবিবার সকালে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। এর পাশাপাশি ওই একই মামলার তদন্তে হালিশহর এবং কাঁচড়াপাড়া, উত্তর দমদম, টাকি, কৃষ্ণনগর, ব্যারাকপুর সহ মোট ১২টি জায়গায় গেল তদন্তকারী সংস্থার মত ১৭ টি দল। সেখানে প্রাক্তন পুরপ্রধানদের বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছেন সিবিআই গোয়েন্দারা।
রবিবার সকালে হালিশহর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান অংশুমান রায়ের বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই গোয়েন্দারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পুরপ্রধান ছিলেন তিনি। আলমারি থেকে একাধিক কাগজপত্র বের করতে থাকেন তাঁরা। জিজ্ঞাসাবাদও শুরু হয়েছে। অন্যদিকে কাঁচড়াপাড়া পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুদমা রায়ের বাড়িতেও সিবিআই তল্লাশি চলছে। সেখানেও একাধিক কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। ওদিকে টাকি পুরসভার প্রাক্তন পুর-প্রধান সোমনাথ মুখার্জীর বাড়িতেও তল্লাশি পুলিশের।
শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন হুগলির বাসিন্দা অয়ন শীল। তাঁকে জেরা করেই পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। শুরু হয় তদন্ত। আগেও একাধিক পুরসভায় অভিযান চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এবার রবিবার সকালে ফের ফিরহাদ হাকিম এবং মদন মিত্রের বাড়িতে হানা দেয় তদন্তকারী সংস্থার দুটি দল।
ওই দুই হেভিওয়েট নেতাদের বাড়িতে CBI পৌঁছতেই ভিড় জমান অনুগামীরা। এদিকে বাড়ি ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এমনকি, ফিরহাদ হাকিমের মেয়ে প্রিয়দর্শীনি হাকিম বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলেও তাঁকে আটকানো হয়। দীর্ঘক্ষণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে তাঁর কথাকাটাকাটি হয়। অবশেষে তাঁকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়।
পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার ফিরহাদ হাকিমের পর মদন মিত্রের (Madan Mitra) বাড়িতেও হানা সিবিআইয়ের (CBI)। সূত্রের খবর, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের ভবানীপুরের বাড়িতেও হানা সিবিআইয়ের।
সূত্রের খবর, রবিবার সকালেই ফিরহাদ হাকিমের চেতলার বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে সিবিআই হানা দেওয়ার পরই তার অনুগামীরা বাড়ির সামনে ভিড় জমাতে শুরু করে। এরপর কেন্দ্রীয় বিরোধী ও কেন্দ্রীয় এজেন্সি বিরোধী স্লোগান তুলতে থাকে তারা।
এদিকে কামারহাটির বিধায়কের বাড়িতেও একযোগে সিবিআই হানা দেয়। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের মোট ১৭ টি দল গোটা রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় হানা-তল্লাশি চালাচ্ছে। পাশাপাশি সিবিআই সূত্রে খবর, সিবিআইয়ের একটি দল মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। ফলত এটা স্পষ্ট যে গোটা রাজ্য জুড়ে অনেকেরই শান্তির ও ছুটির ঘুম উড়বে আজ।
পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) বাড়িতে সিবিআই হানা। সূত্রের খবর, রবিবার সকালে সিবিআইয়ের (CBI) একটি দল তাঁর চেতলার বাড়িতে হানা দেয়। সেসঙ্গেই ববি হাকিমের বাড়ি ঘিরে রয়েছে সিআরপিএফের একটি দল। সূত্রের খবর, এই পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে চলতি সপ্তাহেই মন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। এবার ওই একই কাণ্ডে নগর উন্নয়ন মন্ত্রীর বাড়িতে সিবিআই হানা।
ওদিকে রথিন ঘোষের এলাকার মত ফিরহাদের বাড়ির সামনে জমায়েত করেছেন তাঁর অনুগামীরা। বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন তাঁরা। উঠছে কেন্দ্রীয় সরকার-বিরোধী স্লোগান।
'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা'-র অভিযোগে দিল্লিতে তৃণমূল (TMC)। সোমবার দিল্লির রাজঘাটে ধরনায় বসেন তৃণমূল সাংসদ, বিধায়ক ও নেতা-মন্ত্রীরা। লাগাতার মোদী সরকারকে নিশানা করে চলেছেন তাঁরা। আবার কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং-কে (Giriraj Singh) গ্রেফতার করার দাবিও জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কিন্তু অবশেষে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ খুললেন গিরিরাজ সিং। এর পর রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে আনলেন তিনি। যেখানে একশো দিনের টাকা নিয়ে সুর চড়াচ্ছিলেন অভিষেক, তারই পাল্টা দিলেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। ১০০ দিনের কাজের টাকার ক্ষেত্রে বাংলায় প্রচুর ভুয়ো জব কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। আর এই একশো দিনের কাজের টাকার ইস্যুতে এবার সিবিআই তদন্তের পক্ষে সওয়াল করলেন গিরিরাজ সিং।
এদিন বাংলার তৃণমূল সরকারকে একহাত নিয়ে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেন, 'ইউপিএ আমলে ১০০ দিনের কাজের জন্য ১৪,৯৮৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। আর মোদী সরকারের আমলে এখনও পর্যন্ত ৫৪,১৫০ কোটি টাকা বাংলাকে দেওয়া হয়েছে। ৪৫ লক্ষ বাড়ি প্রথম হয়েছে। তারপর ফের ১১ লক্ষ বাড়ির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।' ফলে তাঁর দাবি ইউপিএ আমলের তুলনায় মোদী সরকারের জমানায় দ্বিগুণ তহবিল বিনিয়োগ করেছে মোদী সরকার। আবার তিনি অভিযোগ করেছেন, যখন ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে যখন অনুসন্ধান করা হয়, তখন ২৫ লক্ষ জবকার্ড হেরফের হয়েছে।
গিরিরাজ সিং আরও বলেন, 'সরকারের টাকায় লুঠ হচ্ছে। যাঁদের বাড়ি পাওয়া উচিত, তাঁরা পাচ্ছেন না। যাঁদের দোতলা বাড়ি আছে, তাঁদের বাড়ি হয়ে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও আমরা বিধবা ভাতা, পেনশন, সড়ক যোজনার কোনও টাকা আমরা আটকাইনি। কিন্তু যেখানে টাকা লুঠের খবর পেয়ে আমরা যাচাই করতে গেলাম, সেখানে আধিকারিকদের সঙ্গে সহযোগিতাটুকুও করা হয়নি।'
তাই তিনি রীতিমতো বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, 'আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে হুঁশিয়ারি দিচ্ছি, গরিবের লুঠ করা টাকা গরিবদের ফেরত দিন। ২৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ডের টাকা কোথায় ব্যবহার করা হয়েছে, এটা কেন্দ্রীয় সরকার ও দেশবাসী জানতে চায়।'
নয়াদিল্লির (New Delhi) সিভিল লাইন এলাকায় তৈরি করা হয়েছে দিল্লি মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের (Arvind Kejriwal Residence) বাসভবন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই নতুন বাসভবন তৈরি নিয়ে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। এবারে এই বিষয়ে খতিয়ে দেখতেই সিবিআই তদন্তের (CBI Probe) নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বুধবারই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ও ইতিমধ্যেই সিবিআই প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর।
সরকারি অর্থ খরচ করে কেজরিওয়াল নিজের জন্য বাংলো তৈরি করেছেন বলে একাধিকবার সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেছে বিজেপি। দিল্লির উপরাজ্যপাল বি কে সাক্সেনার কাছে বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল বাংলো সংস্কারে ৪৫ কোটি খরচ হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনীত সাক্সেনা মুখ্যসচিবকে এ ব্যাপারে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। এর পর বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফেও সিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হল তদন্ত করার।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন নিয়ে ইতিমধ্যেই সমস্ত সরকারি তথ্য দিল্লি প্রশাসনের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই। আগামী ৩ অক্টোবরের মধ্যে ওই সমস্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে আম আদমি পার্টির দাবি, কোনও ভাবেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নয় দিল্লি সরকার। তাদের পালটা অভিযোগ, বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।