
চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ। আর এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা দুর্গাপুরে। ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে মৃতের পরিবারের ধস্তাধস্তি। এমনকী পুলিসকে ঘিরে ধরে প্রবল বিক্ষোভ মৃতের পরিবার- পরিজনদের। দেহ নিতে অস্বীকার পরিবারের।
দুর্গাপুরের শোভাপুরের কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালের ঘটনা। বৃহস্পতিবার এই ঘটনার জেরে হাসপাতাল চত্বরে ছড়ায় ব্যাপক উত্তেজনা। পাশাপাশি হাসপাতালের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ শুরু করে দেয় উত্তেজিত জনতা। চিকিৎসক না আসা পর্যন্ত হাসপাতালের গেটের সামনে অবস্থান মৃতের পরিবারের সদস্যদের। প্রবল বিক্ষোভের জেরে হাসপাতালে চত্বরে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পুলিস মৃতের পরিবারের সদস্যদের বোঝাতে এলে তাদের ঘিরে ধরেও শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ।
প্রসঙ্গত, গত ৮ নভেম্বর অন্ডালের কাজোড়ার কাজল মণ্ডল বুকে ব্যথা নিয়ে শোভাপুরের এই হাসপাতালে ভর্তি হন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে ভর্তি করা হয় এই হাসপাতালে।
অভিযোগ, বুধবার পর্যন্ত রোগী ভালো আছে বলে জানানো হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎই হাসপাতাল থেকে খবর দেওয়া হয়, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। কিন্তু হাসপাতালে এসে পরিবারের লোকজন দেখেন, তাঁদের প্রিয়জন মারা গেছেন। পরিবারের তরফে চিকিৎসার গাফিলতিতে এই মৃত্যু বলে অভিযোগ ওঠে। অবিলম্বে অভিযুক্ত চিকিৎসককে এসে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় হাসপাতাল গেটের সামনে। এরপরই গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলে উত্তপ্ত হয় হাসপাতাল চত্বর। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে দুর্গাপুর থানার পুলিস। হাসপাতালের বাকি রোগীদের পরিবার পরিজনকে আটকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মৃতের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। পরে পুলিসের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হলেও ক্ষতিপূরণ আর অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে চলে বিক্ষোভ। মীমাংসা না হওয়ায় দেহ নিতে অস্বীকার করে মৃতের পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল চত্বরে প্রবল উত্তেজনার ফলে থাকে পুলিস মোতায়েন। তবে গোটা ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সুখের সংসারে বাধ সাধল মাদক। মাদকের টাকা দিতে চাননি মা। শুরু চরম অশান্তি। যার পরিণতি খুন। ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট মহাকুমার ন্যাজাট থানার ঘোষপুর গজালিয়া গ্রামে।
বছর ২৮ এর ঈশ্বর বর, দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ছিল। এই নিয়ে বৃদ্ধা মা শিবানী বরের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলা হতো। শিবানীদেবীর এক বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। একমাত্র রোজগার বলতে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা। আর তা দিয়েই চলত তাঁর সংসার। ছেলে দিনমজুরের কাজ করত। কিন্তু যে টাকা আয় করত, তার পুরোটাই মদের পিছনে খরচ করে ফেলত। আবার অনেক সময় মায়ের থেকেও নিয়ে যেত টাকা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ছেলে দীর্ঘদিন ধরে নেশাগ্রস্ত হয়ে মাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করত। এমনকি মা টাকা না দিলে মারধরও করতো। ছেলে ও মায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এই ঝামেলা হত। কয়েকবার সালিশি সভায় বসলেও কোন সমাধানসূত্র মেলেনি।
মায়ের সরকারি প্রকল্পের টাকা ছেলে নেশার জন্য চাইলে মা দিতে রাজি হননি। তুমুল অশান্তি বাধে মা-ছেলের। বৃদ্ধা শিবানী বর গত মঙ্গলবার সকালবেলা বাড়ি থেকে চলে যান। তারপর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর একটি ডোবা থেকে শিবানী বরের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে, ছেলে ঈশ্বর পরিকল্পনা করে মাকে খুন করে । মায়ের সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের লোভে এমন সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ন্যাজাট জেটিঘাট থেকে ছেলে ঈশ্বর বরকে গ্রেফতার করে, বৃহস্পতিবার ভোররাতে।
পুলিস সূত্রে খবর, জেরায় মাকে খুনের কথা স্বীকার করেছে ছেলে। এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা, সেটাও তদন্ত করছে পুলিশ। শিবানীদেবীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, "ছেলেটি মাদকাসক্ত ছিল। মদ খেয়ে প্রতিদিন ঝামেলা করত। বছরখানেক আগে ওর বাবা মারা যায়। এমতাবস্থায় পাশে একটা ডোবাতে ওর মায়ের দেহ পাওয়া যায়। পাড়ার ছেলেরা জানিয়েছে, ছেলেটি বাড়িতে গিয়ে মায়ের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছিল। তার ঠিক দু-দিন পরে ডোবায় দেহ পাওয়া যায়। পাড়ার লোকেরা পুলিসকে খবর দেয়। পুলিস এসে তদন্ত করে ওকে গ্রেফতার করে।"
একেই একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে দিশাহারা চাষিরা। এবার আবার হাতির তাণ্ডব। বর্ধমান জেলায় সবথেকে বেশি উত্পাদন হয় ধান। প্রচণ্ড ঠান্ডা এবং কুয়াশা বোরো ধানের চারা উত্পাদনের সঠিক সময়। এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়েই প্রায় ৪০টি হাতি তাণ্ডব চালাল গলসি ১ নম্বর ব্লক সহ বাঁকুড়া জেলায় । যার জেরে রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী থেকে চাষিরা।
গত বেশ কিছুদিন ধরে পাত্রসায়ের জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এক দল হাতি। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে জঙ্গল লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকায়। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন চাষিরা। জানা যায়,পাত্রসায়ের রেঞ্জের নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের মুড়াপাড়া গ্রামে বিঘার পর বিঘা কফি জমি নষ্ট করেছে হাতির দলটি। অনেক কৃষকই ঋণ নিয়ে কফি চাষ করেছেন। কিন্তু হাতির তাণ্ডবে সবটাই নষ্ট। বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রশান্ত সাল। কথা বলেন কৃষকদের সঙ্গে। বন দপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে দ্রুত তাঁদের কিভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়, তার আশ্বাস দেন তিনি ।
এরই সাথে সোনামুখীর জঙ্গল লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকার ধানচাষিরাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত । এলাকা পরিদর্শন করে কৃষকদের দ্রুত আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান সোনামুখী বন দপ্তরের আধিকারিকরা ।
অন্যদিকে, গলসি ১ ব্লকের বিভিন্ন ধান জমিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সেই হাতির দল। জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকেই বাঁকুড়ার শালতোড়া জঙ্গল থেকে দামোদর পেরিয়ে এই হাতির দলটি ডুকে পড়ে গ্রামে। পিছনে এখনও আরো ৩৫ টি হাতির একটি দল রয়েছে বলে বন দপ্তর সূত্রের খবর। গলসির পোতনা, পুরসা, উচ্চগ্রাম, কুতরুকি সহ বেশ কিছু এলাকা দিয়ে যায় হাতিগুলি। হাতির দলটিতে দাঁতাল পুরুষ হাতির পাশাপাশি রয়েছে মহিলা ও শিশু হাতিও। বিঘার পর বিঘা ফসলের জমি নষ্ট করে দিয়েছে বলে জানান সেখানকার বাসিন্দারা। এত বড় হাতির দলকে কী করে বাগে আনা যায়, তা ভাবতেই ঘাম ছুটেছে বন দপ্তরের কর্তাদের।
একের পর এক জায়গায় যেখানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতি দল, সেখানে এক পূর্ণবয়স্ক হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ব্লকে। বন দপ্তর সূত্রে খবর, মৃত ওই পুরুষ হাতিটির বয়স আনুমানিক ১০ থেকে ১২ বছর। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে কুকড়াখুঁপি গ্রামের ধান জমিতে হাতিটিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। তাঁরা বন দফতরে খবর দিলে কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। ইতিমধ্যে হাতিটিকে উদ্ধার করে, তার মৃত্যুর তদন্ত শুরু করা হয়েছে। হাতিটি কোনো ক্ষয়ক্ষতি করেছে কিনা, সেই বিষয়েও তদন্ত শুরু করেছে বন দপ্তর এবং পুলিশ-প্রশাসন।
দীর্ঘ বঞ্চনার অভিযোগ। নেই জল, নেই রাস্তা।একের পর এক নির্বাচন আসে , সরকার গঠন হয়। কিন্তু বঞ্চনার অভিযোগ জমতেই থাকে সাধারণ মানুষের মধ্য়ে। সামনেই পুরসভা নির্বাচন। গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্য়মে ভোটে আম জনতা রাজনৈতিক নেতাদের ভাগ্য় নির্ধারণ করেন।কিন্তু এতে তাঁদের নিজেদের ভাগ্য় নির্ধারিত হয় কি? বোধহয় হয় না।রাস্তা, পানীয় জল সহ নানা বিষয়ে বঞ্চনার বিস্তর অভিযোগ পুঞ্জীভূত হয়। এক্ষেত্রেও তার ব্য়তিক্রম হয় নি।রাস্তার বেহাল দশা ও পানীয় জলের অভাব ও নিকাশি ব্যবস্থার দাবিতে হাওড়ার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের উনসানী ষষ্ঠীতলার বাসিন্দারা ভোট বয়কটের ডাক দিলেন।
গরপা মোড়ের পর থেকে ষষ্ঠীতলা পর্যন্ত এলাকা জুড়ে লাগানো হলো পোস্টার। পাশাপাশি ওয়ার্ডটি সংরক্ষিত করা যাবে না। আগের মতো সাধারণ প্রার্থীদের জন্য রাখতে হবে। জগাছা থানার উনসানি দক্ষিণপাড়া,লস্করপাড়া, মীরপাড়া, মিস্ত্রীপাড়া, মল্লিকপাড়া এলাকার প্রায় তিরিশ হাজার মানুষের বাস হলেও এলাকার নাগরিকদের দাবি, সেই ওয়ার্ডে মাত্র ৫ শতাংশ তপশিলি সম্প্রদায় মানুষের বাস। এখন সেই ওয়ার্ডটিতে আসন সংরক্ষিত করা হচ্ছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। যা বিগত ৫০ বছর ধরে ছিল না। ওয়ার্ডটিতে জেনারেল কাস্ট প্রার্থীই চাই। না হলে ভোট দেওয়া হবে না জানিয়ে অতি সম্প্রতি এলাকা পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে যায়।
এছাড়াও জমা জলের নিকাশি ব্যবস্থা ও অবিলম্বে পানীয় জলের বন্দোবস্ত করতে হবে, এই দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক। ভরা বর্ষায় কোমর সমান জলে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয় এলাকাবাসীকে। তার উপর জমা জলে রয়েছে সাপ সহ অন্য়ান্য় পোকামাকড়ের উপদ্রব। রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটান পুরনাগরিকরা।স্থানীয়রা পাকা রাস্তার দাবিতে সরব। ভোটের সময় রাজনৈতিক নেতাদের দেখা মেলে, কিন্তু ভোট ফুরোলই আর কেউ খোঁজ নেয় না, এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর। অন্য়ান্য় জায়গায় টাইম কল দিলেও এখানে পানীয় জলের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত বাসিন্দারা। ফলে এবারে ভোট বয়কটের পথে হাঁটছেন পুরবাসীরা।
এক দুই বছর নয, বঞ্চনার শুরু বাম আমল থেকেই। বর্তমান সরকারও উদাসীন, অভিযোগ, বছরের পর বছর প্রশাসনের কাছে রাস্তা ও পানীয় জলের দাবিতে দরবার করেও কোনও সুরাহা হয়নি। চরম দুর্ভোগে পুর নাগরিকরা। এবার নিজেদের দাবিতে অনড় পুরবাসীরা, তাই ভোট বয়কটকেই হাতিয়ার করলেন তাঁরা। বেহাল রাস্তা, এলাকায় জল জমে থাকা, পানীয় জলের সমস্যা এইসব বিষয়ে নাগরিকদের অসুবিধার কথা স্বীকার করেছেন ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট তাইবুর রহমান দর্জি।
অন্যদিকে তিন বছর ধরে কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নাগরিক পরিষেবা শিকেয় উঠেছে, নাগরিক পরিষেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত মানুষ। তাই মানুষের ক্ষোভ- বিক্ষোভ হওয়া স্বাভাবিক, বললেন বিজেপি নেতা রথীন চক্রবর্তী ।
সল্টলেকে চুরি, এ আর নতুন কথা কী। এবার চুরির ঘটনা বিধাননগর পৌরনিগমের প্রাক্তন কাউন্সিলার অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। বিএ ব্লকের ১৩৬ নম্বর বাড়ির দোতলায় চুরি। খোয়া গেল স্মার্ট মোবাইল ফোন, দামি ঘড়ি ও বহুমূল্যের হেডফোন। ইতিমধ্যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। সল্টলেকের মতো জায়গায় বাড়ির দোতলা থেকে চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত এখানে বসবাসকারীরা।
দেওয়ালের গায়ে লেগে থাকা হাত এবং পায়ের ছাপ দেখে পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, দুষ্কৃতীরা নীচে থেকে গ্রিল বেয়ে উপরে উঠেছিল। যে কারণে হাত এবং পায়ের ছাপ দেওয়ালে লেগে রয়েছে। পাশাপাশি এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আজ ভোররাতে উঠে দেখি, বাড়ির দোতলার জানলা খুলে বিছানার পাশে থাকা ঘড়ি, মোবাইল, হেডফোন সব চুরি গেছে। চুরিটা অত্যন্ত দুঃসাহসিক। কারণ বারান্দায় দেখা যাচ্ছে হাত-পা'র ছাপ। একতলা থেকে দোতলায় উঠেছে। আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত। জানলার গ্রিল ভাঙতে পারত। আমি প্রায় ৫০ বছর সল্টলেকে রয়েছি। এরকম ঘটনা প্রথমবার হল। শুধু তাই নয়, বারান্দায় একটা কাপড়ের ব্যাগ ছিল, সেটাও কেটে নিয়ে চলে গেছে। পুলিসকে জানিয়েছি। আশা করছি কোনো সমাধান পাওয়া যাবে।"
এই বিষয়ে বিএ ব্লক সল্টলেক সিটি রেসিডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রেসিডেন্ট প্রসেনজিৎ সাহা বলেন, "খুবই চিন্তার বিষয়। সকালে খবর পেলাম, এটি ভোররাতে হয়েছে। আমাদের এখানে রাতে নাইট গার্ড রয়েছে। তারা থাকাকালীন এটি হয়নি। তাহলে কি নিরাপত্তা আরও বাড়াতে হবে? এর আগে এখানে চুরিটা বেড়েছিল। ইদানিং হয়নি। আবার কেন শুরু হল, বুঝতে পারছি না। পুলিসিং ব্যবস্থা আরও বাড়াতে হবে বলে মনে হচ্ছে। বাসিন্দাদের জন্য এটি খুবই চিন্তার বিষয়।"
বাঁকুড়া শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূর দিয়ে বয়ে গেছে গন্ধেশ্বরী নদী। গন্ধেশ্বরী নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম আছে। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি যে আজও এইসব গ্রামের বাসিন্দাদের নদীর চুয়া কেটে পানীয় জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
বাঁকুড়া দু নম্বর ব্লকের মানকানালি পঞ্চায়েত এলাকায় গন্ধেশ্বরী নদীর জলের তোড়ে ভেঙে যায় জনস্বাস্থ্য় কারিগরি দফতরের পাইপলাইন । ফলে গত কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি গ্রাম পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। লাপুরিয়া, কেনবোনি, লাদনা, কাঁটাবন, কোরানজোড়া ও বাগডাঙা গ্রামগুলিতে সম্পূর্ণরূপে পিএইচই-র পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। যার ফলে এলাকার মানুষকে গন্ধেশ্বরী নদীর বক্ষ থেকে চুয়া কেটে জল সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে হচ্ছে।
এর ফলে গ্রামবাসীরা সরকারি পরিশ্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন । দীর্ঘদিন ধরে একাধিকবার পঞ্চায়েত প্রশাসন সহ বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেও মেলেনি সুরাহা। অপরিশ্রুত জলে জলবাহিত রোগও হচ্ছে বলে জানান গ্রামবাসীরা। অন্য়দিকে ভোটের আগে বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের কল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কল আছে, অথচ জল নেই। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পানীয় জলসংকট একাধিক গ্রামে। তবে পঞ্চায়েত সহ সব প্রশাসনিকস্তরে জানানো হয়েছে বলে দাবি মানকানালি পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা অর্ধেন্দু মুখোপাধ্য়ায়ের। কিন্তু প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগে সরব বিরোধী দলনেতা।
রাজনীতিকরণের কারণেই ভোটের আগে বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের কল দেওযা হয়েছিল, আর ভোট শেষে পানীয জল সংকট নিয়ে কটাক্ষ মানকানালি পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা অর্ধেন্দু মুখোপাধ্য়ায়ের। তবে জেলাস্তরে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে জানান পঞ্চায়েত প্রধান চায়না ঘোষ। দ্রুত ব্য়বস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ভোট আসে, ভোট যায়। প্রতিশ্রুতি থেকে যায় প্রতিশ্রুতিতেই। কবে মিলবে পরিশ্রুত জল, তার দিকেই তাকিয়ে গন্ধেশ্বরী নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা।
মানুষ বোঝাই নৌকা। শুধু মানুষই নয়, এই নৌকায় সওয়ার মোটর বাইক, সাইকেলও। হুগলি জেলার খানাকুলে মুণ্ডেশ্বরী নদী দিয়ে প্রতি মুহূর্তে চলে ঝুঁকির পারাপার। এখানে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সেতু। তা ভেঙে যাওয়ায় চরম সমস্যার সম্মুখীন এলাকাবাসী।
জলের স্রোতে ভেসে গেছে সেতু। সেই সেতুর আর কোনও চিহ্ন পর্যন্ত নেই। আশপাশের ১০-১২টি গ্রামের মানুষকে প্রতিদিন এভাবেই পার হতে হচ্ছে। হুগলির খানাকুলের নতিবপুর ফেরিঘাটে এই হল রোজকার ছবি। মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর এলাকার মানুষের সুবিধার্থে বাঁশের অস্হায়ী সেতু তৈরি করেছিল প্রশাসন। এই সেতু দিয়ে হেঁটেও চলাচল করত গ্রামবাসীরা। কিন্তু চলতি বছরে ভয়াবহ বন্যায় সেতুটি ভেসে যায়। আশপাশের গ্রামের মানুষের যোগাযোগের ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নদীর পাড়ে উভয় দিকের প্রায় ১০- ১২ টি গ্রামের মানুষ বিপাকে পড়ে। এখন এখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা । সেই নৌকায় করেই লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই বিপজ্জনকভাবে যাতায়াত করছে গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, যাত্রীদের স্বার্থে প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই। অস্থায়ীভাবে বাঁশের সেতু করার ফলে জোয়ার বা হড়পা বানে তা ভেঙে যায়। স্থায়ী সেতুর দাবি করছেন গ্রামবাসীরা।
এই নদীর একদিকে রয়েছে নতিবপুর, বলপাই, চিংড়া, পলাশপাই, মোস্তাফাপুর। অন্যদিকে রয়েছে বলরামপুর, গণেশপুর সহ একাধিক গ্রাম। নদীর দুই পাড়ে অবস্থিত হাসপাতাল, বাজার, ব্যাঙ্ক, স্কুল ইত্যাদি। ফলে দুই দিকের সাধারণ মানুষ চরম সমস্যায় পড়েছেন। নৌকায় ভিড়ে ঠাসাঠাসি করে যেমন করতে হচ্ছে যাতায়াত, তার উপর আবার বালি পেরোতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আট থেকে আশি সকলকেই। দীর্ঘদিন ধরে এই রকম অবস্থা। তা সত্ত্বেও প্রশাসনিক স্তরে গাফিলতির অভিযোগ আনছেন স্হানীয় বাসিন্দারা। গ্রামবাসী তথা নিত্যযাত্রীদের একটাই দাবি, এখানে সেতু হোক কংক্রিটের। তবে স্থায়ী সেতুর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান খানাকুল ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দুখিরাম দোলুই। গোটা বিষয়টি তাঁদের নজরে আছে বলে জানান তিনি। ফলে কবে মানুষের এই দুঃখ-যন্ত্রণা মেটে, সেটাই দেখার।
আইলা, আমফান, বুলবুল, ফণী, ইয়াস, গুলাব। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হরেক নাম। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ে না দক্ষিণ সুন্দরবনবাসীর। ইয়াসের ক্ষত না শুকোতেই গুলাবে তছনছ হয়েছে নগরজীবন। ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসের পর মাছচাষে ব্যাপক ক্ষতি। চিংড়ি থেকে নানা প্রজাতির মাছ, সবটাই ক্ষতির মুখে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে একদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ শিবির করা হয় কাকদ্বীপ মৎস্য গবেষণাগার কেন্দ্রে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন কাকদ্বীপের বিডিও দিব্যেন্দু সরকার, সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, ছিলেন কাকদ্বীপ গবেষণাগার কেন্দ্রের ইনচার্জ ডঃ দেবাশিস দে । কম খরচে চিংড়ি, মিল্ক ফিস চাষের পদ্ধতির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এখানে।
এবার চাষিদের অর্থনৈতিক দিক থেকে সাবলম্বী করতে ভেনামি চিংড়ি চাষের উপর জোর দেওয়া হল। সাদা পা-যুক্ত এই ভেনামি চিংড়ি চাষের প্রবণতা বাড়ছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বড় বাধা। এর জেরে ক্ষতির মুখে নানা প্রজাতির মাছ সহ চিংড়ি চাষ। মৎস্যচাষিদের পাশে থেকে তাঁদের এই কাজ করতে উৎসাহ দেন তাঁরা। কোন উপায়ে চিংড়ি চাষ করলে চাষিরা লাভবান হবেন এবং কম খরচে কিভাবে মাছ, চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়, তারও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই ক্যাম্পে।
একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে অতিমারী পরিস্থিতি। অর্থসংকটে দক্ষিণ সুন্দরবনের ভেনামি চিংড়ির চাষিরা। সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা ব্লকের শতাধিক চাষি এই অভিযোগ তুলছিলেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, মেলেনি কোনও প্রশাসনিক সহযোগিতা। অবশেষে এবার মৎস্য চাষিদের অভিযোগ মাথায় রেখে এই উদ্যোগ প্রশাসনের।
২০১৪ সালে দুই ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুরে ভেনামি চিংড়ির চাষ শুরু হয়। রাজ্যে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জুড়ে চাষ হয় ভেনামির। যেখানে শুধুমাত্র পূর্ব মেদিনীপুরের ৪ হাজার হেক্টর জমি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭০০ হেক্টর ভেড়ি জমিতে হচ্ছে ভেনামি চাষ। মৎস্যজীবীদের পাশে রয়েছে প্রশাসন। তাঁদের যে কোনও প্রয়োজনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন প্রশাসনের আধিকারিকরা, জানালেন গবেষণাগার কেন্দ্রের ইনচার্জ ডঃ দেবাশিস দে। দক্ষিণ সুন্দরবনের একাধিক জায়গায় বাগদা চিংড়ির চাষকে পিছনে ফেলে ভেনামি চিংড়ি চাষেরই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগামীতে যাতে তাঁরা ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, তার জন্যই এই উদ্যোগ। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে চাষিরা উপকৃত হবেন বলে মনে করছে মৎস্যচাষি মহল। প্রয়োজন সরকারের সহযোগিতা। তাহলেই এই চাষে লক্ষ্মীলাভ হবে অনেক বেশি। এমনকী লাভ হবে বিদেশের বাজারেও।
শহর থেকে জেলা, সর্বত্র পালিত হয়েছে ছটপুজো। কিন্তু বহু জায়গাতেই মানা হল না করোনাবিধি। বিভিন্ন ঘাটে দেখা গিয়েছে উপচে পড়া ভিড়। শারীরিক দূরত্ববিধি, তার তো বালাই নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বলা যেতে পারে, প্রায় সকলেই ছিল মাস্কবিহীন। অথচ সরকারের নির্দেশিকায় কোভিডবিধি মেনে উৎসব পালনের কথা বারবার বলা হয়েছিল। সেখানে এমন বেনজির দৃশ্য সংক্রমণের আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দিল।
একাধিক জায়গায় দেখা গেছে, তারস্বরে লাউড স্পিকার বাজাতে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে খবর, শিল্পাঞ্চলে শব্দের নির্ধারিত মাত্রা করা হয়েছে, দিনে ৭৫ এবং রাতে ৭০ ডেসিবেল। বাণিজ্যিক এলাকায় অবশ্য দিনে ৬৫ এবং রাতে ৫৫ ডেসিবেল। বসতি এলাকায় দিনে ৫৫ এবং রাতে ৪৫ ডেসিবেল। কিন্তু এই শব্দ–বিধি কি মানা হল? দেখা গেল, একসঙ্গে জড়ো হয়ে গানের তালে নেচে চলেছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, এবারও দূষণের জেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবর। এর পরিবর্তে ছটপুজোর জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল গঙ্গার ৩৭ টি ঘাট এবং যোধপুর পার্ক, পোদ্দারনগর, আনন্দপুর এবং পাটুলি মিলিয়ে মোট ১৭০ টি ঘাট। এই বিকল্প ব্যবস্থায় খুশি ছটপুজোর ব্রতপালনকারীরা।
উল্লেখ্য, বুধবার থেকে ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার অবধি চলবে ছটপুজো। তবে ৯ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১১ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা অবধি বন্ধ রাখা হয়েছিল রবীন্দ্র সরোবর পার্ক। কড়া নিরাপত্তা ও বাঁশের ব্যারিকেডে মুড়ে ফেলা হয়েছিল রবীন্দ্র সরোবর চত্বর। মূলত ভয়াবহ দূষণের ধাক্কায় রবীন্দ্র এবং সুভাষ সরোবরের জলে অক্সিজেনের মাত্রা কমে এসেছে। পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, ঢাকুরিয়া লেকে ছটপুজো হলে জলজ প্রাণীর বাঁচার সম্ভাবনা কমে যাবে। তাই এবারও রবীন্দ্র এবং সুভাষ সরোবরে বন্ধ ছিল ছট পুজো।
ছটপুজোর ঠিক পরেরদিনই দেখা গেল ঘাটের অরিচ্ছন্ন অবস্থা। ঘাটগুলিতে যত্রতত্র পড়ে রয়েছে গ্লাস, ফুলের মালা, পুজোর সামগ্রী, প্লাস্টিক ব্যাগ ইত্যাদি। এছাড়া পৌরসভার তরফে সাফাইকর্মীদের সকালেই ঘাটগুলি পরিস্কার করার কথা থাকলেও দুপুর অবধি তা হয়নি। অ্যালেক্সি ঘাট, দইঘাটের অবস্থাও একই।
ছটপুজোর দিন ঘটল বিপত্তি। মালদহের হরিশচন্দ্রপুরে ছটপুজোর প্যান্ডেল ভেঙে শিশু সহ একাধিক জন জলে পড়ে যান। তবে জলের গভীরতা কম থায় কোনোরকম বিপদ ঘটেনি। আবার বাঁকুড়ার দ্বারেকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী নদীর ঘাটে দেখা গেল উপচে পড়া ভিড়। যে কোনও সময় বিপদ ঘটতেই পারত।
সুতরাং বলা যেতে পারে, কোভিড বিধি ভুলেই সকলে মেতেছিলেন ছটপুজোর আনন্দে।
কলকাতাঃ পশ্চিমবঙ্গের করোনা সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু চিন্তা বাড়াচ্ছে দৈনিক মৃত্যু। পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার করোনা পরিস্থিতি।
রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে এই পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৯,২৬৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। এদের মধ্যে শুধু উত্তর ২৪ পরগনাতেই মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের, কলকাতায় ৩ জন। বাকি ২১ টি জেলায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মৃতের হার বেশি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা আক্রান্ত হয়ে পুরুষ রোগীর মৃত্যুর হার ৬৬.৮ শতাংশ। আর মহিলা রোগীর মৃত্যু হার ৩৩.২ শতাংশ। বয়সের নিরিখে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ৬১ থেকে ৭৫ বয়সের মানুষের। শতাংশের হিসেবে ৪১.৫ শতাংশ। এরপর ৪৬ থেকে ৬০ বয়সের রোগী। এই হার ২৬.২ শতাংশ। তুলনামূলক ৭৫ বছর বয়সী মানুষের মৃত্যুর হার কম। অর্থাৎ ২২.৪ শতাংশ।
এক নজরে রাজ্যের এক সপ্তাহের করোনা পরিসংখ্যান
১০ নভেম্বর - করোনা আক্রান্ত-৮৫৩ জন, মৃত-১৫
০৯ নভেম্বর- করোনা আক্রান্ত-৭৮৮ জন, মৃত-১২
০৮ নভেম্বর- করোনা আক্রান্ত-৬০৩ জন, মৃত-১৪
০৭ নভেম্বর- করোনা আক্রান্ত-৭২৩ জন, মৃত-১১
০৬ নভেম্বর- করোনা আক্রান্ত-৬৭০ জন, মৃত-১৪
০৫ নভেম্বর- করোনা আক্রান্ত-৭৬৩ জন, মৃত-১৩
০৪ নভেম্বর- করোনা আক্রান্ত-৯১৮ জন, মৃত-১৪
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে দৈনিক করোনা সংক্রমণ ৬০০ থেকে ৯০০ এর ঘরে থাকলেও, দৈনিক মৃতের সংখ্যা ১০ এর নিচে নামেনি।
পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়ছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নিয়ে। বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় করোনা আক্রান্ত ২২৭ জন। একই সময় মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। আর উত্তর ২৪ পরগনায় একদিনে আক্রান্ত ১৫৩ জন, মৃত্যু ৫ জনের।
রাজ্যের মধ্যে মোট সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা, এখানে এই পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৩০ হাজার ৬৪৩ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কলকাতায় মোট আক্রান্ত ৩ লক্ষ ২৪ হাজার ৬৩৫ জন।
অন্যদিকে মোট মৃতের নিরিখে প্রথম স্থানে কলকাতা। এখানে মোট মৃতের সংখ্যা ৫,১৮৪ জন। দ্বিতীয় স্থানে উত্তর ২৪ পরগনা। এই জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪,৮৬৮ জন।
সব মিলিয়ে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
বাতাসের তাপমাত্রা আরও একটু বাড়লো।
বুধবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে হল ১৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মিলে যাচ্ছে।
বাকিটা মিললে অবশ্য ফের কিছুটা দুর্ভোগই অপেক্ষা করছে আমজনতার জন্য। কারণ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মাথাচাড়া দিচ্ছে যে নিম্নচাপ, তার জেরে আগামীকাল শুক্রবার থেকেই আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসছে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং এবং দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় থাকছে হালকা থেকে মাঝারি বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা।
দক্ষিণ-পূর্ব এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে যে নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছে, বৃহস্পতিবার তা আরও সুস্পষ্ট হয়েছে। শক্তি সঞ্চয় করে সেটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের মধ্যভাগে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে আগামী ১২ ঘণ্টায় ডিপ্রেশনে পরিণত হবে। তারপর তা এগবে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে।
এর জেরেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। বাকি জেলাগুলিতে আবহাওয়া শুকনোই থাকবে। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে একমাত্র দার্জিলিং-এ।
আবহাওয়া অফিসের যা পর্যবেক্ষণ, তাতে বৃষ্টির পরিস্থিতি চলবে ১৪ তারিখ পর্যন্ত। ১৫ তারিখ সকাল থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল এইরকম। ডিগ্রি সেলসিয়াসের হিসেবে আসানসোল ১৮.৩, বাঁকুড়া ১৭.৩, বালুরঘাট ১৪ .৪, বর্ধমান ১৭, বহরমপুর ১৮.৪, দার্জিলিং ৯.৪, ডায়মন্ড হারবার ২০.৪, দমদম ১৯.৮, দিঘা ১৮.১, জলপাইগুড়ি ১৫.৬, কালিম্পং ১২.৫, পুরুলিয়া ১৬.১ প্রভৃতি।
একদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যেমন ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে, পাশাপাশি কমছে উত্তুরে হাওয়ার দাপটও। ফলে বাতাসও আগের তুলনায় কিছুটা উষ্ণ। নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ গরম হাওয়া ঢোকা শুরু হলে শীতের অনুভূতি অনেকটাই উধাও হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, এবার বৃষ্টির দাপটে জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। জেলায় জেলায় বন্যার জেরে মানুষকে অশেষ ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। যার ক্ষত এখনও শুকায়নি। এবার শুরুতে শীতের ব্যাটিং দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন, দ্রুত ঠান্ডার দাপট বাড়বে। কিন্তু নিম্নচাপের ভ্রুকুটি সেই আশায় জল ঢেলে দিল।
একের পর এক রাস্তা বেহাল। নেই কোনও সরকারি সুযোগসুবিধা, নেই কোনও পরিকাঠামো। সেইমত পটাশপুরের মঙ্গলামাড়ো থেকে তালছিটকিনি যাওয়ার প্রায় তিন কিমি রাস্তা ভাঙা। জল যন্ত্রণার পর এবার রাস্তার যন্ত্রণায় নাজেহাল হচ্ছেন রাস্তা ব্যবহারকারী প্রায় দশটি গ্রামের মানুষ। পশ্চিম মেদিনীপুরেরও কিছু অংশের মানুষ যাতায়াত করেন এই রাস্তা দিয়ে। নিম্নচাপের পর এই রাস্তার উপর জমেছিল একগলা জল। জল নেমে গেছে প্রায় একমাস। তবুও রাস্তা সারাই-এ কোনও হেলদোল নেই বললেই চলে, অভিযোগ এলাকাবাসীদের ।
এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, রাস্তা মেরামতের কোনও উদ্যোগ নেই। এবার টেন্ডার কেউ নিয়েছে কিনা, তাও অজানা তাঁদের। ২ দিন আগেই তাঁর নিজেরও দুর্ঘটনা ঘটেছিল এই রাস্তাতেই। খুব সমস্যায় আছেন তাঁরা।
এক টোটোচালক জানান, এই রাস্তা দিয়েই তাঁদের টোটো চালিয়ে পেটের তাগিদে যাতায়াত করতে হয়। ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পারাপার করতে হচ্ছে। যাতায়াত করতে গিয়ে টোটোরও ক্ষতি হচ্ছে।
এক নিত্যযাত্রী জানান, রোজগারের জন্য কাজে যেতেই হবে, বাড়িতে থাকলে তো চলবে না। তাই ভয় বা অসুবিধা নিয়েও যেতে হচ্ছে কাজে। সমস্যার সমাধান কবে হবে তা কেউ জানে না।
অন্য এক টোটোচালক জানান, রাস্তার দশার জেরে কখনও কখনও টোটো উল্টে যায়। বেশি সমস্যা হয় কোনও রোগীকে হাসপাতাল বা বাড়ি নিয়ে যেতে। বাকি মোটামুটিভাবে কিছুটা ঠিক আছে। প্রাথমিকভাবে হলেও কিছু ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করছেন তাঁরা। জল জমেছিল যেসমস্ত জায়গায়, মূলত সেই জায়গাগুলিতেই রাস্তা খারাপ হয়ে রয়েছে।
তৃণমূল নেতা মুক্তিপদ বেরা সমস্ত অভিযোগ মেনে নিয়ে জানান, রাস্তার বেহাল দশার কথা তাঁরাও জানেন। মূলত ওই রাস্তাটি নদীর কাছাকাছি হওয়ায় এই ধরনের অবস্থা। এই বিষয়ে তাঁদের বিভাগে আলোচনা হয়েছে। প্রায় ২ থেকে ৪ দিন আগেই ডিএম অতিরিক্ত কিছু টাকা অনুমোদন করেছেন রাস্তা সারাইয়ের জন্য। খুব শীঘ্রই রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হবে। সরকারি কাজ বলেই কিছু দেরি হচ্ছে।
পশ্চিমঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত পটাশপুর একটি ছোট্ট শহর। ভারতের মানচিত্র অনুসারে এবং তথ্যের ভিত্তিতে পটাশপুর একটি ছোট জনবহুল এলাকা। পটাশপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি ৩১ নম্বর কাঁথি লোকসভার অন্তর্গত। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই সমস্যার কবে সমাধান হবে, সেই দিকেই তাকিয়ে এলাকাবাসী।
মাঝেমাঝেই পুলিসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। কখনও কোনও ঘটনায় পুলিসের নিষ্ক্রিয়তা, কখনও বা কোনও ঘটনায় পুলিস-প্রশাসনের অতি সক্রিয়তা প্রকাশ্যে আসে। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাই নয়, এমন বহু উদাহরণ সামনে আসে যেখানে পুলিস মানবিক। সারা দিনরাত শুধু চোর-ডাকাত ধরাই নয়, পাশাপাশি মানবিক ও সামাজিক কাজও করেন বাসন্তী থানার পুলিস কর্মীরা।
এবার দঃ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার পুলিসের উদ্যোগে বস্ত্র বিতরণ ও শিশুদের বই-খাতা এবং স্কুলব্যাগ বিতরণ করা হল। বারুইপুর জেলা পুলিসের উদ্যোগে ও বাসন্তী থানার পক্ষ থেকে বাসন্তী ব্লকের প্রায় ২০০ দুঃস্থ মানুষের হাতে শীতবস্ত্র, কম্বল, শাড়ি, ধুতি, লুঙ্গি তুলে দেওয়া হল। বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর জেলা পুলিশের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত এসপি বৈভব তেওয়ারি, অ্যাডিশনাল এসপি (জোনাল) ইন্দ্রজিৎ বসু সহ অন্যান্য পুলিস আধিকারিকরা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। পুলিস-প্রশাসনের সঙ্গে সব সময়ই সাধারণ মানুষের সংযোগ ঘটে। এই ধরনের উদ্যোগ পুলিসের তরফে অনেক সমযই নেওযা হয়। সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতেই এই উদ্যোগ।
তবে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনায় পুলিস-প্রশাসন সব সময় কড়া পদক্ষেপ করবে বলে জানান বারুইপুর জেলা পুলিসের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত এসপি বৈভব তেওয়ারি। এছাড়াও এই বছর বাসন্তী ব্লকের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা সহ ১৫০ জন দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীর হাতে সাইকেল, স্কুলব্যাগ ও মিষ্টির প্যাকেট উপহার হিসাবে দেওয়া হয়। এই উদ্যোগে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার দুঃস্থ মানুষ বস্ত্র পেয়ে খুশি। পড়ুয়ারাও পুলিসের তরফে উপহার পেয়ে খুশি। অকারণে কেন মানুষ পুলিস সম্পর্কে ভীত থাকবে, পুলিস সাধারণ মানুষের পাশে ও সাথে আছে, এই বার্তা দিতেই এই উদ্যোগ বারুইপুর জেলা পুলিসের তরফে।
বহুচর্চিত বারাসতের শাসনে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে মাঝেমধ্যেই। আর তাকে ঘিরে জলঘোলাও কম হচ্ছে না। শাসকদলের নির্দিষ্ট কয়েকজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ অবশ্য বেশি। এলাকাবাসীর আক্ষেপ, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ঘিরে বিপন্ন হয়ে উঠেছে বারাসত ব্লক ২ অঞ্চলের শাসন গ্রাম।
মূল অভিযোগ এলাকার দাপুটে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সঈদুল ইসলাম ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগে এক তৃণমূল কর্মীকেই মারধর করে ইটভাটা লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। এবার রাস্তার গাছ কেটে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল সঈদুল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দা নিজামউদ্দিন সহ এলাকাবাসীদের অভিযোগ, পলতাডাঙা থেকে বোয়ালঘাটা রোডের দুধারের গাছ রাতের অন্ধকারে কেটে নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা মূল্যের গাছ কেটে নিয়েছে অভিযুক্তরা। সরকারি কোষাগারে মাত্র ৩ লাখ টাকা জমা করে বাকি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। প্রায় ২ মাস আগের ঘটনা, তাও কোনও হেলদোল নেই প্রশাসনের। শাসন গ্রাম পঞ্চায়েতে জানিয়েও কোনো সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে বন দপ্তরে সম্মিলিতভাবে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাঁদের একটাই দাবি, সমস্ত বিষয়ে যেন তদন্ত সঠিকভাবে হয়।
তবে এ বিষয়ে শাসন পঞ্চায়েত প্রধান শাহানারা পারভিন বিবি টেলিফোনে জানান, সবটাই টেন্ডার ডেকে নিয়ম মেনে হয়েছে। কোথাও কোনো গড়মিল নেই। অভিযুক্ত সঈদুল ইসলামেরও একই দাবি। তিনি জানান, নির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনেই গাছগুলি কাটা এবং তার মূল্যায়ন হয়েছে।
তবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ এ কে এম ফারহাদ জানান, এবিষয়ে তাঁর কাছে কোনো অভিযোগই আসেনি। বাকি যে সমস্ত আধিকারিকরা রয়েছেন, তাঁদের কাছে খোঁজ নেবেন তিনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তিনি এও বলেছেন, অভিযোগ হলেই তো সব প্রমাণিত হয়ে যায় না। বিষয়টি আগে খতিয়ে দেখবেন। এখন দেখার, কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় বা আদৌ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গার্লস হস্টেল থেকে চিকিত্সক পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ হস্টেলের রুম থেকে উদ্ধার হয় মিনি ঘোষ নামে ওই ছাত্রীর মৃতদেহ ।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগে পিজিটি ২য় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি। জানা যায়, মৃতার বাড়ি মুর্শিদাবাদের কান্দি এলাকায়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকেলে সিনিয়র ডাক্তারদের সাথে সেমিনারে অংশ নেওয়ার জন্য প্রেজেন্টেশন তৈরি করেন ওই ছাত্রী। এরপর রাতে ওই ছাত্রীকে ডাকতে গিয়ে রুমের দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় সহপাঠীদের। দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকি করেও সাড়াশব্দ না পেয়ে অবশেষে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ।
শিশু বিভাগের প্রধান ডাঃ তারাপদ ঘোষ জানিয়েছেন, মেয়েটি একটু চুপচাপ থাকতো। তবে পড়াশোনায় বেশ ভালোই ছিল। মানসিক অবসাদের জেরে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলেই অনুমান করা হচ্ছে। তবে আদতে কী কারণে মানসিক অবসাদ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। দেহটি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করতে হস্টেলের অন্যান্য সহপাঠীদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে পুলিশের তরফে। তবে চিকিৎসক পড়ুয়ার মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ সহপাঠীরা।
তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ওই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলবে বলে জানা গিয়েছে। কারণ, গত কয়েকদিনে বাড়ির লোকের সঙ্গে তাঁর কবে শেষ দেখা হয়েছিল, ছাত্রীর আচরণে তাঁরা কোনও অস্বাভাবিকতা দেখেছিলেন কি না, এসবই তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করা হবে। মনোবিদদের মতে, অনেক সময় পড়াশোনার চাপও এই ধরনের মর্মান্তিক পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়। সেই বিষয়টিকেও তদন্তের আওতায় রাখা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কী আসে, সেটাও তদন্তকারীদের কাছে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়। যদিও এদিন পর্যন্ত পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ করা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।