অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য সিবিআই-এর হাতে। পাচার হওয়া গরু পিছু আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা কমিশন (Commission) ধার্য করে দিয়েছিলেন কেষ্ট। পাশাপাশি তা বেড়ে দাঁড়াত পাঁচ থেকে ছ’হাজারে। আবার কয়লার ক্ষেত্রে গাড়ি পিছু ১০ হাজার টাকাই ছিল ফিক্সড রেট। অর্থাৎ শুধু গরুই নয়, পাশাপাশি কয়লাতেও অনুব্রত মণ্ডলের যে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল, সেটাও সিবিআই-এর (CBI) তদন্তে উঠে এসেছে। ২০১৫ থেকে শুরু গরু পাচারের ডিল। তিন মাসে ৬ কোটির ডিল হয়েছিল। এনামুল টাকা দিত সায়গলকে, সায়গলের কাছ থেকে অনুব্রতর কাছে টাকা আসত। সূত্রের খবর, এমনই প্রমাণ এসেছে সিবিআই-এর কাছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে অনুব্রত বাহিনীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে সিবিআই।
গরু পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের বাহুবলী হিসাবে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু কীভাবে পরিচালিত হত এই চক্র?
২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মালদহ, মুর্শিদাবাদ সীমান্তে ২০ হাজার গরু ধরা পড়ে। কিন্তু পাচারের অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বরং খাতায় গরুগুলিকে বাছুর দেখানো হয়। সিবিআই তদন্ত করে আরও জেনেছে,
সেই গরুগুলিকে বাছুর দেখিয়ে কম দামে নিলামে বিক্রি করা হত। এরপর সেই গরুগুলিকে এনামুলের সিন্ডিকেটের হাতে বিক্রি করা হত। নিলামে কেনার পর সেই সব গরুর বেশিরভাগ চলে যেত ইলামবাজারের হাটে। অভিযোগ, এখান থেকে দুভাবে লাভবান হতেন অনুব্রতর মতো প্রভাবশালীরা। গরুর লরি জেলাতে প্রবেশ করতে দেওয়া বাবদ টাকা। তারপর ইলামবাজার হাট থেকে সীমান্ত পার করতে সেফ প্যাসেজ করে দেওয়া বাবদ টাকা।
অভিযোগ, হাট থেকে শুরু করে বাংলাদেশে গরু পাচারের ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই কাজ দেখভাল করত সায়গল।
ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে অসুস্থ প্রসূতিকে এক বেসরকারি নার্সিংহোমের (Private nursing home) সামনে এনে বিক্ষোভে (protest) সরব পরিবারের সদস্যরা। নার্সিংহোমে তালা বন্ধ করে চম্পট দেয় চিকিৎসক (doctor) ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় নার্সিংহোম চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনাটি শুক্রবার রাতে উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur) জেলার ইসলামপুর শহরের নিউটাউন সংলগ্ন এলাকার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ইসলামপুর থানার পুলিস (police)।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ ই অগাস্টে পারভিন খাতুন নামে বছর প্রায় ২৫ এর এক মহিলাকে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের লোকজনের দাবি, ইসলামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের পরামর্শে সেই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় পারভিনকে। এরপর সিজার করার জন্য ২৫ হাজার টাকা দাবিও করেন ওই চিকিৎসক বলে অভিযোগ পরিবারের। তাতেও রাজি হয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেদিন দুপুরে সিজার করে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ওই প্রসূতি মহিলা। তবে সিজার করার পর থেকে ওই প্রসূতি মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেদিন সন্ধ্যায় ওই চিকিৎসক শিলিগুড়ি মেডিক্যালে রেফার করে দেন পারভিনকে। পরিবারের সদস্যরা শিলিগুড়ি মেডিক্যালে নিয়ে গেলে ওই প্রসূতির শারীরিক অবস্থা দেখে সেখানকার চিকিৎসকরা ভর্তি নেননি।
তারপর পরিবারের সদস্যরা বিহারের কিষানগঞ্জে এক বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যান পারভিনকে। কিন্তু সেখানেও তাঁদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আবার ওই প্রসূতিকে নিয়ে শিলিগুড়ির এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। টানা ৬ দিন সেই নার্সিংহোমে চিকিৎসা চলার পর ওই মহিলার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে পরিবারের সদস্যরা সেখান থেকে ছুটি করে আবার ইসলামপুরের এই নার্সিংহোমে নিয়ে আসেন। তবে সেখানের দৃশ্য দেখেই চক্ষুচড়কগাছ পরিবারের।
নার্সিংহোমে তালা মেরে পালিয়ে গিয়েছেন চিকিৎসক ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। ঘটনার খবর জানাজানি হতেই ওই মহিলার আত্মীয়স্বজনেরা জমায়েত করতে শুরু করেন। এরপর সেই প্রসূতিকে নার্সিংহোমের সামনে রেখেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ইসলামপুর থানার পুলিস ও স্থানীয় তৃণমূলের নেতৃত্ব। ওই প্রসূতিকে সুস্থ করার দাবি তুলেছেন পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল নেতা জাভেদ আকতারও।
বেশ কয়েকমাস ধরেই স্কুলে মিড ডে মিল (Mid day meal) চলছে না, অথচ সরকারি পোর্টালে দিব্যি আপলোড হচ্ছে, মিড ডে মিল চালু রয়েছে। দুই শিক্ষিকার ব্যক্তিগত উদ্যোগে খুদে পড়ুয়াদের (student) কপালে দুপুরের খাবার জোটে। কিন্তু সেটাও প্রতিদিন নয়, এমনটাই অভিযোগ অভিভাবকদের। খিদের জ্বালার ভয়ে এখন অভাবি পরিবারের খুদে পড়ুয়ারা স্কুলমুখী হতে ভয় পাচ্ছে। কেউ কেউ আবার তো স্কুলেই (school) আসছে না। এমন এক কাণ্ডে তোলপাড় শহর দুর্গাপুর (Durgapur)।
দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্যাসাগর শিশু শিক্ষা কেন্দ্র। আনন্দপুর গ্রামের এই শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে নয় নয় করে ষাট জন খুদে পড়ুয়া রয়েছে। যাদের বাবা-মা হয় অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে, নচেৎ কেউ রাজমিস্ত্রির হেল্পার অথবা ভ্যান চালিয়ে সংসারে দু বেলা দু মুটো অন্নের সংস্থান করেন। আজ তাঁদের সন্তানদের স্কুলে গিয়ে দুই শিক্ষিকার দয়াতে দুপুরের খাবার জোটে। সেটাও আবার অনিয়মিত, দিদিমনিরা সামান্য মাইনে থেকে যেটুকু পারেন, সেইটুকু হয়। তাই প্রতিদিন সেই খাবার জোটানো সম্ভব হয়ে ওঠে না।
সিবিআই তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ফল খাওয়ার খরচ ছিল হাজার হাজার টাকা, আর সেখানে দুর্গাপুরের এই শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের খুদে পড়ুয়ারা খিদের জ্বালার ভয়ে এখন আর স্কুলমুখী হতে চাইছে না। বেশ কয়েকবার আবেদন নিবেদন করা হয়েছে সরকারিস্তরে, কিন্তু কাজ হয়নি। আর এতে এখন ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিবাবকরা। এইভাবে স্কুল না চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হোক, দাবি পড়ুয়াদের অভিভাবকদের।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর নগর নিগমের শিক্ষা দফতরের আধিকারিক সংঘমিত্রা দাসগুপ্ত জানান, সশরীরে তাঁকে গিয়ে তদন্ত করতে হবে। কারণ সরকারি পোর্টালে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে বলে আপলোড করা রয়েছে। প্রশ্ন, তাহলে কি সমন্বয় আর নজরদারির অভাব রয়েছে দুর্গাপুর নগর নিগমের? নচেৎ কিভাবে ভুল তথ্য সরকারি পোর্টালে আপলোড হয়ে যায়? না এতেও রয়েছে প্রভাবশালীর তত্ত্ব? এই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হবে বলেই আশাবাদী শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা।
বৃহস্পতিবার আটক হওয়ার সময় বাড়ি থেকে আড়াই কেজি মুড়ি (Puffed Rice) নিয়ে বেরিয়েছিলেন। মূলত এটাই গত ৪৮ ঘণ্টায় তাঁর খোরাক। সিবিআই শসা (Cucumber) এনে দিয়েছিল। এছাড়া সেই অর্থে রান্না করা বাইরের খাবার (Cooked Food) খেতে চাইছেন না অনুব্রত। তবে দিনে বার তিনেক চা ও ক্রিম ক্র্যাকার বিস্কুট খেয়েছেন। যদিও চা বলতে দুধ-চিনি ছাড়া লাল চা।
অন্যদিকে, বিপুল অঙ্কের টাকা কোথায় কোথায় এবং কার কার কাছে গচ্ছিত রেখেছেন অনুব্রত? জেরায় জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। বোলপুরে পৈতৃক বাড়ি ছাড়া বাকি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি কী কী আছে? কোথায় কোথায় আছে? জানার চেষ্টা চলছে। অনুব্রতর নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সামান্য টাকা আছে। তাঁর খরচ চলে কিভাবে? বিলাসবহুল জীবনযাপন কীভাবে? ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডলের চিকিৎসার বিপুল খরচ কিভাবে মিটিয়েছেন তিনি? এসব নিয়েউ প্রশ্ন করতে চলেছে সিবিআই।
জানা গিয়েছে, অনুব্রতর নিজের নামে প্রায় কিছুই নেই। সবই বেনামে। বাড়ি থেকে উদ্ধার ডায়েরির সূত্র ধরেই প্রশ্ন করতে চলেছে সিবিআই।
গরু পাচারকাণ্ডে (Cow Smuggling) যুক্ত থাকার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার বীরভূমের দাপুটে নেতা তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) সিবিআই হেফাজতে যান। তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যান সিবিআই (CBI) আধিকারিকরা। এই ঘটনার পর বিরোধী শিবিরের নেতা-কর্মীরা উল্লাসে ফেটে পড়লেও এর প্রতিবাদে পরবর্তীতে আবার তৃণমূলের তরফ থেকে পাল্টা মিছিল বের করা হয়। অন্যদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার খোয়াইয়ের সোনাঝুরি হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল সোনাঝুরি হাট কমিটি।
শনিবার সোনাঝুরি হাটে (Sonajhuri Hat) বাইরে থেকে প্রচুর পর্যটকদের (Tourist) আগমন হয়। সেই মতো পর্যটকরা এদিন এখানে বেড়াতে এসে অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে পড়েন। তাঁরা হঠাৎ এদিন এসে দেখতে পান, হাট বন্ধ রয়েছে।
তবে পর্যটকদের অসুবিধা হলেও হাট কমিটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পর্যটকদের একদিন অসুবিধা হচ্ছে সেটা মানছি। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল এখানকার অভিভাবকের মতো। যে কারণেই সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আজ হাট বন্ধ রাখা হবে এবং দুপুরবেলায় এই এলাকার হস্তশিল্পীদের তরফ থেকে একটি মিছিল করা হবে। সেই মিছিল যাবে রেল ময়দান পর্যন্ত।
অনুব্রত মণ্ডলের চিকিৎসা কাণ্ডে এবার নাম জড়াল সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর। বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর মৌখিক নির্দেশ পেয়ে অনুব্রত মণ্ডলের চিকিৎসা করতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন ওই হাসপাতালেরই চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারী। তারপরই ডাঃ অধিকারী বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, তাঁকে সুপার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার জন্যই অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। এরপরই অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হন। আর সেই দিনই সিবিআইয়ের প্রতিনিধিদল চন্দ্রনাথ অধিকারীর বাড়িতে যায় এবং হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুকেও নোটিস করা হয়।
অন্যদিকে, হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর দাবি, এই নির্দেশটা আমাকে দিয়েছিলেন জেলা পরিষদের জেলা সভাধিপতি তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। তাঁকে ফোন করে বলেছিলেন, অনুব্রত মণ্ডল খুব অসুস্থ। তাড়াতাড়ি উনার বাড়িতে মেডিক্যাল টিম পাঠান। আমি উনাকে বলেছিলাম, যদি কোনওভাবে উনাকে হাসপাতালে আনা যায়। তারপরেও উনি বলেছিলেন, তাড়াতাড়ি মেডিক্যাল টিম পাঠান, উনি খুব অসুস্থ।
সুপার বলেন. আমি তখন ছুটিতে ছিলাম। তাই আমার এক সহকর্মী, যিনিও সেদিন ডিউটিতে অফ ছিলেন, তাঁকে অনুরোধ করেছিলাম, উনি যদি বাড়িতে গিয়ে একটু দেখে দিয়ে আসেন। সেই হিসাবেই ডাক্তারবাবু গিয়েছিলেন।
কেউ অসুস্থ হলে এভাবে কি মেডিক্যাল টিম পাঠানো যায়? প্রশ্নের উত্তরে সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু বলেন, অনুব্রত মণ্ডল উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান, তার সঙ্গে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। বোলপুর একটি ইয়ারমার্কড হাসপাতাল। সুপারের হাতে চিকিত্সার ক্ষমতা দেওয়া থাকে, ব্লাডও মজুত রাখতে হয়। সেই হিসাবেই টিম গিয়েছিল।
তিনি অবশ্য পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ১৪ দিনের বেড রেস্ট লেখার কোনও নির্দেশ তাঁর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। আর সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশনের ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, যেহেতু অনুব্রত মণ্ডল হাসপাতালে আসেননি এবং আমার কাছে কোনও লিখিত নির্দেশ ছিল না, তাই আমি সরকারি কাগজ ব্যবহার করতে বারণ করেছিলাম।
তিনিও এখন ছুটিতে রয়েছেন। তবে সিবিআই ডাকলে তিনি অবশ্যই যাবেন, সহযোগিতা করবেন এবং এই কথাগুলিই বলবেন বলে জানিয়েছেন।
নিজাম প্যালেসের (Nizam Palace) এমএসও বিল্ডিং-এর ১৪ তলায় সিবিআই গেস্ট রুমের (CBI Guest Room) একটি ঘরে কাল শিফট করা হল অনুব্রত (Anubrata) মণ্ডলকে। ঘরে আছে তক্তপোশ। মাথার ওপর পাখা। একটি বালিশ। একটি চাদর। একটি কম্বল। গেস্ট রুমের বাইরে দুই সিআরপিএফ জওয়ান মোতায়েন রাখা হয়েছে। ১৪ নম্বর ফ্লোরে মোট মোতায়েন আটজন জওয়ান।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘরে একটি টিভি (TV) রাখার আবদার করেছেন অনুব্রত। তিনি নাকি খবর দেখতে চান। খবরে মূলত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব জানতে চান কেষ্ট। পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর মন্ত্রীত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দল থেকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। তাঁর ক্ষেত্রে দলের মনোভাব কী? খবর দেখে জানতে চান বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি।
কাল মেয়ের সঙ্গে ফোনে দুবার কথা হয়েছে। মাহারা মেয়ে কেঁদেছেন। স্পিকার ফোন অন করে দুবার কথা বলার সময় চোখে জল ছিল অনুব্রতরও। একজন বাড়ির লোককে সঙ্গে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁকে পুরুষ হতে হবে। কে থাকবেন, এখনও স্পষ্ট নয়। কাল বুকে ব্যথা হয়েছিল। কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে নতুন করে আর কোনও শারীরিক সমস্যার কথা বলেননি তিনি। তারাপীঠ মন্দিরের প্রসাদ ও ফুল একটি কাগজের খামে ভরে নিজের কাছে সর্বক্ষণ রাখছেন অনুব্রত।
বীরভূমের (Birbhum) দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি (Anubrata Mandal) ঘিরে এখনও সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। একদিকে, দলীয় নির্দেশ মেনে রাস্তায় নামল তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন। অন্যদিকে পথে নেমে সুর চড়াল বিরোধীরা।
এরই মধ্যে ফের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারি (Chandranath Adhikari)। তিনি জানান, "বৃহস্পতিবার সকালবেলা সিবিআই-এর তিনজন অধিকর্তা এসেছিলেন আমার বাড়ি। এসে একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন। শুরু থেকে শেষ অবধি একই বয়ান আমি দিয়েছি। আমার বয়ান একটি সাদা কাগজে লিখে নেন তাঁরা। তারপর আমাকে ভয়েস রেকোর্ডিং-য়ের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়। আমি সংবাদমাধ্যমকে যা যা রেকোর্ডিং দিয়েছি, সেসব তাঁদেরও দিয়েছি। এরপর খুব বেশি সময় নয়, আধ ঘণ্টার মত কথা বলে আমার সঙ্গে তাঁরা চলে যান।" তবে এদিন তিনি আরও জানান, রাজনীতি নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও মন্তব্য নেই। কারণ, তিনি একজন চিকিত্সক, সরকারি কর্মী। তবে এই সমস্ত ঘটনার পর সুপার কোনও যোগাযোগ করেননি তাঁর সঙ্গে, জানান চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নিজের বাড়ি থেকেই গ্রেফতার হন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে আগেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, গত কয়েকদিনে যে নিম্নচাপের প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কমবে। অর্থাৎ ক্রমশই শক্তি হারিয়ে ফেলবে এই নিম্নচাপ। আর শুক্রবার থেকে তাই হচ্ছে।আর এই নিম্নচাপের (Low Pressure) প্রভাব কমতেই দক্ষিণবঙ্গের (South Bengal) জেলাগুলিতে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তির পরিবেশের দেখা মিসছে। তবে আবহাওয়া (Weather) দফতরের পূর্বাভাস, ফের একটি নিম্নচাপ সক্রিয় হতে চলেছে উত্তর বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal)। যার জেরে মূলত, শনিবার থেকে সোমবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির (Heavy Rain) সম্ভাবনা থাকছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় তা আরও শক্তিশালী হবে বলেই মনে করছে আবহাওয়া দফতর। তবে তা পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে যাবে। এর প্রভাবে ১৩ থেকে ১৫ অগাস্টের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের কোনও কোনও জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কোনও কোনও জেলায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিও হতে পারে। তবে মূলত এই নিম্নচাপের প্রভাবে রবিবার ১৪ অগাস্ট পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই সময়ে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিরকোথাও কোথাও হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টির সঙ্গেই বইতে পারে দমকা হাওয়াও।
অন্যদিকে শনিবার সকালের মধ্যে উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস না থাকলেও শনিবার এবং রবিবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাকি জেলাগুলিতেও হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
কলকাতায় মূলত মেঘলা আকাশ থাকবে। সঙ্গেই বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯.৬ ডিগ্রির আশেপাশে ঘুরবে।
সম্প্রতি দক্ষিণবঙ্গে (South Bengal) নিম্নচাপ শুরু হয়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি (rain) শুরু হয়েছে। তবে এতেই বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাচ্ছে বড়সড় বিপত্তি। খোলা বৈদ্যুতিক তারে দুর্ঘটনা প্রায়শই শোনা যায়। এবার নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের জলেশ্বর তিলিপাড়ার এক বাসিন্দারা দিন কাটাচ্ছেন ভয়ে ভয়ে। কারণ, বাড়ির উঠোনে খোলা বৈদ্যুতিক তার (electric wire), চারবার লিখিত অভিযোগ করেও মেলেনি ফল। শিশুকন্যাকে নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাছেন গৃহবধু।
তিলিপাড়ার বাসিন্দা সরমা বিশ্বাস মজুমদার, তাঁর পাঁচ বছরের একরতি শিশুকন্যা নিয়ে বেশিরভাগ সময় একাই থাকেন। কারণ, স্বামী পুলিসকর্মী (police) হিসেবে কলকাতায় কাজ করেন। ওই গৃহবধূর অভিযোগ, প্রায় দু-বছর আগে কেনা জমির উপর দিয়েই বিক্রেতা স্বপ্না হালদার, শান্ত মনি হালদারদের বৈদ্যুতিক সংযোগের তার ছিল। বিক্রির সময় কথা দিয়েছিলেন দু-মাসের মধ্যে ওই তার সরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু দু'বছর পার হয়ে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে চারবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও মেলেনি ফল।
পুলিসকর্মীর স্ত্রী হিসেবে শান্তিপুর থানায় অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও মেলেনি ফল। আর এই কারণে বাচ্চা রয়েছে ঘরবন্দী, এমনকি অপরিচিত ব্যক্তি যদি হঠাৎ কেউ এসেও পারেন, তরিদাহত হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। তবে ওই বাড়ির সামনে ইলেকট্রিক অ্যাঙ্গেল ভেঙে পড়ার কারণে রাতের অন্ধকারেও যেকোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এবিষয়ে পূর্ববর্তী জমি বিক্রেতারা জানান, সেই সময় ইলেকট্রিক তার দেখেই জমি কিনেছিলেন স্বপ্না হালদার।
স্থানীয় পাড়ার যুবকরা জানান, দীর্ঘদিনের সমস্যা অনেকবার বসেও মেটানো সম্ভব হয়নি। জমির মালিকানা স্বত্ব পরিবর্তিত হলেও ইলেকট্রিক তারের কী হবে তা কোনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়নি ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই।
ইলেকট্রিক সাপ্লাই সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা বিনামূল্যে ইলেকট্রিক পোল এবং অ্যাঙ্গেল দিতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু পূর্ববর্তী জমির বিক্রেতা তা যদি নিতে না চান, তাহলে তাঁদের কিছু করার নেই। একজন গ্রাহকের ইলেকট্রিক কেটে দেওয়ার যথাযথ যুক্তি নেই।
প্রথমে চুরির অপবাদ, এরপর শুরু হয় মারধর। তবে এখানেই শেষ নয়, ঘরে গিয়ে নিচুজাতি বলে পরিবারকে গ্রামছাড়া করার হুমকিও (threat) পর্যন্ত দেওয়া হয়। আর এসবের ফল মর্মান্তিক। ওই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় কিশোরের ঝুলন্ত দেহ (hanging body)। মর্মান্তিক এই ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের ভাতার (Bhatar) থানার মোহনপুর গ্রামের।
পরিবার সূত্রে খবর, মৃতের নাম বিষ্ণু বাগদী ওরফে আকাশ বাগদী, বয়স ১৩ বছর। মৃতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস (police) ইতিমধ্যেই দোকান মালিক মিলন কুন্ডু ও কর্মচারী বিশ্বজিৎ পালকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের শুক্রবার বর্ধমান আদালতে তোলা হয়।
পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মোহনপুর গ্রামের বটতলা এলাকায় মিলন কুন্ডু নামে এক মুদিখানা ব্যবসায়ীর দোকানে সামগ্রী আনতে যায় আকাশ বাগদী। অভিযোগ সেই সময় চুরির অপবাদ দিয়ে দোকান মালিক মিলন কুন্ডু ও দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎ পাল তাকে মারধর করে। এমনকি বাড়িতে চড়াও হয়ে নিচুজাতি বলে গ্রামছাড়া করারও হুমকি দেয়। এরপরই অপমানে আকাশ বাগদী গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
পরিবারের দাবি, তাঁদের ছেলের এই মৃত্যুর একমাত্র দায় দোকান মালিক মিলন কুন্ডুর। সঠিক বিচারের আর্জি জানিয়েছে পরিবার। তবে একবিংশ শতকে দাড়িয়েও এমন ঘটনায় চক্ষুচড়কগাছ গ্রামবাসীদের।
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে (Raiganj University) সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার (BJP) আন্দোলন ঘিরে ধুন্ধুমার রায়গঞ্জে (Raiganj)। শুক্রবার প্রতিবাদ মিছিলে বের হলে মাঝপথেই মিছিল আটকায় পুলিস (Police)। এরপরই পুলিসের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
জানা যায়, এদিন প্রথমে রায়গঞ্জের বিদ্রোহী মোড়ে পুলিসের তরফে মিছিল আটকানো হয়। সেখানেই ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিসের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রাস্তার ওপর বিজেপির কর্মীরা বসে পড়েন। ফলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় ওই এলাকায়। কিছুক্ষণ পরই সেখানে উপস্থিত হন রায়গঞ্জ লোকসভার সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। এরপর তাঁর নেতৃত্বে মিছিল এগোতে থাকলে সেই মিছিল ফের আটকায় পুলিস। কিন্তু নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের ফলে একসময় পুলিস পিছু হটে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদ জানান, "রাজ্যজুড়ে একের পর এক তৃণমূল নেতৃত্ব গ্রেফতার হওয়া শুরু হয়েছে। রাজ্যে সমস্ত চাকরির ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগ থেকে পিএইচডি, বিল্ডিং তৈরি থেকে সর্বত্র দুর্নীতি হয়েছে। তাই এদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা যারা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের কেউ পার পাবেন না। আমরা চাই অতি দ্রুত কেন্দ্রীয় সংস্থা রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্ত করতে আসুক।"
প্রসূন গুপ্ত: প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর টেলিভিশনে ঘন্টার পর ঘন্টা খবর ছিল তাঁকে নিয়ে। খবরের কাগজে পাতার পর পাতাজুড়ে পার্থ-অর্পিতার খবর। প্রাক্তন মন্ত্রীর কতজন বান্ধবী, তাঁদের কোথায় বাড়ি, আরও কত টাকা উদ্ধার হল ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখানেই শেষ নয় পার্থ কতটুকু বললেন ইডিকে, পার্থ অর্পিতাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরায় কী বেরোল। এই ধরনের খবরে ঝোঁক থাকতো আম আদমির। ট্রাম-বাস, ট্রেনে আলোচনার বিষয়বস্তুও তাঁরাই। পার্থ কী খেলেন, কোথায় শুলেন এই করতে করতে পার্থর খবরে ম্রিয়মান হয়ে গেলো অনুব্রত-কাণ্ডে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরে শুধুই অনুব্রত। বাড়ি ঘিরে নিয়ে প্রথমে আটক, তারপর বিকেলের দিকে গ্রেফতার। লহমায় লহমায় পরিবর্তন হলো অনুব্রত-কাণ্ড। বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায় সিবিআইয়ের দফতরে। তারপর এদিন সকাল থেকে মাত্র একটাই খবর, অনুব্রত সকালে ডায়বেটিক ডায়েট মেনে চিনি ছাড়া চা, বিস্কুট এবং মুড়ি খেয়েছেন। এরপর আর খবর নেই, রহস্য এখানেই কেন অনুব্রতর অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে না?
পার্থ ও অনুব্রতর মধ্যে বিস্তর ফারাক। প্রথমত অনুব্রত সংগঠন করা নেতা। বীরভূম জেলার পাতা নড়তো না তাঁর আদেশ ছাড়া। রাঙা মাটির দেশে একপ্রকার 'মুকুটহীন সুলতান' ছিলেন তিনি। এই জনপ্রিয়তা পার্থর কোথায়? পার্থকে গ্রেফতারের সঙ্গে ইডির হাতে এসেছিলো কোটি কোটি টাকার বান্ডিল এবং মহিলা বান্ধবীর প্রসঙ্গ। এই অবস্থান পার্থর বিপক্ষে গিয়েছে। দলও তাঁর দায় ঝেড়ে ফেলেছে। অনুব্রতর ক্ষেত্রেও দলের অভিমত অপরাধ প্রমাণ হলে রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলকেও সরিয়ে দেওয়া হবে। ব্যক্তিগত অপরাধের দায়িত্ব নেবে না দল। কিন্তু হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে অনুব্রতর নাম আসা সত্বেও তৃণমূলের হাজার হাজার সমর্থক তা মানতে নারাজ। তাঁরা ক্ষিপ্ত, তাঁদের বক্তব্য মদন মিত্রদের মতোই অনুব্রত ফেঁসে গিয়েছেন। দুটি ঘটনাই দলের উচ্চ নেতাদের নজরে এসেছে।
আজ এবং আগামীকাল এই নিয়ে রাজ্যের জেলায় জেলায় আন্দোলনে নামছে তৃণমূল যদিও প্রসঙ্গ অনুব্রত নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা।
গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার-কাণ্ডে ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand MLA) তিন কংগ্রেস বিধায়ককে গ্রেপ্তার করেছে হাওড়া গ্রামীণ পুলিস (Howrah Rural Police)। ধৃতদের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলা থেকে সরলেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এই মামলার টেকনিক্যাল পয়েন্ট দেখিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন সিঙ্গল বেঞ্চের (Single Bench)। সেই মামলা ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে শুনানির জন্য।
শুক্রবার শুনানিতে আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার হাওড়া বিশেষ আদালতে তোলা হয়েছে অভিযুক্তদের। সেই আদালত তিন দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও গ্রেপ্তারটাই বেআইনি। এই শুনানিতে পুলিসের পক্ষ থেকে শ্বাশত গোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, গত রাতে অভিযুক্তদের বিশেষ আদালতে তুলে তিন দিনের পুলিস হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আমরা ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চাই, এই টাকার উৎস কী?
পাল্টা অভিযুক্তদের আইনজীবীর সওয়াল,'সিজেএম কোর্টে বিধায়কদের একাধিকবার তোলা। পাশাপাশি ৪৬৭ ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যখন আমার মক্কেলদের জামিনের আবেদন হাইকোর্টে চলছে।
পুলিসের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে এই মামলার কেস ডায়রি আদালতে জমা পড়েছে। এই সওয়াল-জবাবের পরেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ ৪৬৭ ধারায় যেহেতু ৭ বছর বেশি ১০ বছর সাজা হয়। তাই দুর্নীতি দমন আইনে এই জামিনের আবেদন সিঙ্গেল বেঞ্চ শুনতে পারে না। এই বলেই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন এনং জামিন সংক্রান্ত মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) আদালতে তুলে সিবিআই দাবি করেছিল, তৃণমূল নেতার দেহরক্ষী সায়গল হোসেন অনুব্রতর হয়েই টাকা তুলত। সিবিআই (CBI) সূত্রের খবর, গরু পাচার করার জন্য অনুব্রতর সঙ্গে এনামুল হকের (Enamul Haq) একটা রফা হয়েছিল। সেই রফায় বলা ছিল, প্রত্যেক তিন মাস অন্তর ছয় কোটি টাকা করে দিতে হবে এনামুলকে। এমনকি, এই কথোপকথন হত ফোনের মাধ্যমেই।
এদিকে, অনুব্রতকে গ্রেফতারের দিনেই তাঁর চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর বয়ান রেকর্ড করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। পাশাপাশি সিবিআই র্যাডারে আসতে চলেছে বোলপুর হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুও। বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুকে সিবিআইয়ের নোটিস পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, শুক্রবার ভোররাতে অনুব্রতকে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌছয় সিবিআই। তারপর সেখানেই অস্থায়ী ভাবে ক্যাম্প খাটে তৃণমূল নেতার বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এদিন সকাল থেকেই ফের কেন্দ্রীয় সংস্থার জেরার মুখে অনুব্রত মণ্ডল। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন আধ ঘণ্টা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন তৃণমূল নেতা।
জানা গিয়েছে, সায়গল হোসেনের বয়ানের ভিত্তিতে অনুব্রতকে বেশ কিছু প্রশ্ন করতে পারেন সিবিআই অফিসাররা। কারণ, সায়গলের সঙ্গে অনুব্রতর বেশ কিছু ফোনের রেকর্ডিং মিলেছে। এমনকি, একজন নিরাপত্তারক্ষী হয়ে কীভাবে তার এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি হল, এর উৎস কোথায়? সেই বিষয় সেসময়ে সেহগালকে প্রশ্ন করা হয়। সেই সংক্রান্ত বিষয়ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অনুব্রতকে।
বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির নেপথ্যে কী রয়েছে এই গরু পাচার। এই সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখতে চাইছেন সিবিআই অফিসাররা।