অবশেষে এক যুগ পর ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে (ICC World Cup Final 2023) উঠল ভারত। পুরো দেশ যেন উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা, আনন্দে ভাসছে। আর এই ক্রিকেট জ্বরে কাবু খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে (ICC World Cup Semi Final) ৭০ রানে কিউয়ি বধ করার পিছনে বড় অবদান রয়েছে মহম্মদ শামির (Mohammad Shami)। তিনি নিজেই ৭টি উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ জেতার পথ এক ধাপ এগিয়ে দেন 'মেন ইন ব্লু'-কে। ফলে পুরো ক্রিকেট টিমকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদী, এর পাশাপাশি পৃথকভাবে শামির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বললেন, 'শামিকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে।'
বুধবার নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ভারত ফাইনালে উঠতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "অভিনন্দন টিম ইন্ডিয়া! অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে স্মরণীয়ভাবে ফাইনালে প্রবেশ করল ভারত। আমাদের টিমের অসাধারণ ব্যাটিং ও দারুণ বোলিংই ম্যাচ জিতিয়েছে। ফাইনালের জন্য শুভেচ্ছা রইল।" এর পরই শামিকে নিয়ে তিনি লেখেন, "আজকের এই সেমিফাইনাল ম্যাচটি আরও বিশেষ হয়ে উঠেছিল একক পারফরম্য়ান্সের জন্যও। এই ম্যাচে মহম্মদ সামির বোলিং এবং গোটা বিশ্বকাপ জুড়েই তাঁর পারফরম্যান্স ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। ওয়েল প্লেড সামি!" প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছার উত্তর দিয়ে তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন শামি।
প্রসূন গুপ্ত: ভারত বাদ দিয়ে এশিয়ার সমস্ত দল এতক্ষণে দেশের মাটিতে পা দিয়ে ফেলেছে। নেদারল্যান্ডস ও ইংল্যান্ডও ফিরে যাচ্ছে। রয়ে গেলো দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ভারত। সেমিফাইনাল বুধ এবং বৃহস্পতিবার। লিগে যা হয়েছে হয়েছে কিন্তু এবারে চার দলই সতর্ক। গতবার নিয়মের গেঁড়োতে পরে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে নি কিউইরা। ভারতও সেমিফাইনালে অদ্ভুত নিয়মের প্যাঁচে পরে হেরে গিয়েছিলো এই নিউজিল্যান্ডের কাছে। দুদিন ধরে ওয়ান ডে ম্যাচ হয়েছিল। আগে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড যা রান করেছিল তা কোহলির দল আনায়াসেই তুলতে পারতো যদি দিনেরটা দিনেই খেলা হতো কিন্তু বৃষ্টির চক্করে পরে খেলা গড়ায় পরের দিন অবধি। ছন্দ সেখানেই নষ্ট হয়ে যায় বলেই দাবি অভিজ্ঞ মহলে। অবিশ্যি প্রাক্তন অধিনায়ক ধোনির দোষও অগ্রহ্য করা যায় না। অনেকেই বলে বিশ্বের সেরা ফিনিশার সেদিন এতো ধরে খেলছিল যে ম্যাচটি সেখানেই শেষ হয়ে যায়, ধোনি নাকি চান নি ফের বিশ্বকাপ অন্য কারুর হাতে উঠুক।অবান্তর ধারণা হয়তো।
তবে এ কথা ঠিক নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ভারতকে বুঝে খেলতে হবে।পূর্বতন রেকর্ড বলছে বিশ্বকাপে কিউইরা ভারতকে বেগে ফেলেছে আগেও। ভারতের এখন যা দল তাতে চিন্তা করুক কেন উইলিয়ামসরা। অনেকেই বলছে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিরাট কোহলি ৫০ তম শতরান না পেয়ে ভালোই হয়েছে। ওঁর মধ্যে জেদ কাজ করবে পরের ম্যাচে সেঞ্চুরি করার। তবে খেলা ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে, ওখানে যত বল গড়াবে ততই পিচ ঢিমে হবে কাজেই টস জিতে বিরাটের আগে ব্যাট নেওয়াই শ্রেয়।
অন্যদিকে ইডেনে অন্য সেমিফাইনাল অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার। দক্ষিণ আফ্রিকাকে সবাই চোকার্স বলে। এরা দুর্দান্ত শুরু করেও আইসিসির কোনও টুর্নামেন্টের ট্রফি পায় নি কিন্তু নক আউট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ভয়ঙ্কর। যে কেউই খেলে দেবে। আগের দিন ম্যাক্সওয়েলের খেলা মানুষ কোনও দিন ভুলবে না। যদিও গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া এখানেই হেরে গিয়েছিলো। কিন্তু বারবার ভুল ওরা করবে কি?
প্রসূন গুপ্ত: অনেকেই হয়তো আশা করেছিলেন ভারত-পাকিস্তানের ফের দেখা হবে এবং ইডেনে সেমিফাইনাল দেখতে যাবে কিন্তু যা হওয়ার তাই হলো।নিউজিল্যান্ড একেবারে ধরাশায়ী করে শ্রীলংকাকে হারালো কাজেই পাকিস্তান যদি ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় তাতেও কাজ হবে না। বিশাল রান করতে হবে এবং সামান্য রানে আউট করতে হবে ইংরেজদের।রান বা পরিসংখ্যা যা বলছে তা অসম্ভব। সুতরাং আগামী ১৫ নভেম্বর ভারত খেলবে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এবং পরদিন ইডেনে অস্ট্রেলিয়া লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। বলা ভালো, ১৯৮৭-তে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে ভারত পরাজিত হয়েছিল এবং এবারের মতোই খেলা ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। আরও মনে রাখতে হবে গত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে পরাজিত হয়েছিল ভারত।এতো নেতিবাচক দিক। ইতিবাচক হচ্ছে, ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বলতে দ্বিধা নেই আগের ভারত আর আজকের ভারতীয় দলের আকাশ পাতাল তফাৎ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এতো ভালো বোলিং সাইট-এর আগের কোনও বিশ্বকাপে কেউ পায়নি। প্রত্যেকে জীবনের সেরা ম্যাচ খেলছে। ব্যাটিংয়েও তাই। রোহিত, কোহলি তো বটেই, বাকি ৫ ব্যাটার বেশ ভালো ফর্মে। তবে রোহিতের টস ভাগ্য ভালো কাজেই টসে জিতলে চোখ বুঝে মুম্বাইয়ের মাঠে আগে ব্যাট নেওয়া উচিত।
অন্য ফাইনালে অবশ্যই দক্ষিণ আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়ার থেকে ভালো ফর্মে আছে। কিন্তু ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন কখন কি করতে পারে কে বলতে পারে? আগের ম্যাচে কে জানতো ৭ উইকেট হারানোর পরে ম্যাক্সওয়েল দ্বিশত রান করে খেলা বের করে নিয়ে যাবে! যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা আর আফগানিস্তানের বিস্তর ফারাক কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা চিরকাল সেমিফাইনালে হেরেও যেতে দেখা যায়।এরা ফুটবলের নেদারল্যান্ডের মতো। কিছুতেই চ্যাম্পিয়ন লাক নেই। যায় হোক না কেন লীগ ম্যাচের মতো নকআউট এতো সোজা হবে না। সাধু সাবধান।
ক্রিকেট আর জুয়ার সম্পর্ক বহুদিনের। এবার ভারতের মাটিতে ওডিআই বিশ্বকাপ (ICC World Cup 2023) শুরু হতেই বেটিং চক্র আরও সক্রিয় হয়ে উঠল। রবিবার ইডেন গার্ডেন্সে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ক্রিকেট (Cricket) ম্যাচ চলাকালীন কলকাতার বুকে বড়সড় জুয়াচক্রের হদিশ পেল পুলিস। শহরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিসের অ্যান্টি রাউডি সেকশন। গিরিশ পার্ক, নারকেলডাঙা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার তাদের তোলা হবে আদালতে।
রবিবার সন্ধেবেলা গিরিশ পার্ক এলাকার একটি ক্যাফেতে বসে জুয়াচক্র চালাচ্ছিল অভিষেক জয়সওয়াল নামে বছর আঠাশের এক যুবক। মাস্টার আইডি দিয়ে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে তা চালানো হচ্ছে বলে খবর পায় কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে হানা দিয়ে অভিষেককে গ্রেফতার করে পুলিস। তার কাছ থেকে একটি আইফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গিরিশ পার্ক থানায় বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে অভিষেকের বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, অভিষেকের গ্রেফতারির পরই উঠে আসে বাকি দুজনের নাম। বউবাজার এলাকা থেকে অরুণ আগরওয়াল ও প্রদীপ বর্মাকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। তারাও বেটিং চক্র চালাচ্ছিল বলে খবর। এরপর গোপন সূত্রে পুলিসের কাছে আরও খবর আসে, নারকেলডাঙা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে জুয়াচক্র চলছে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে কালু সাউ এবং কেশবপ্রসাদ মুন্দ্রা নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিস। সবমিলিয়ে রবিবার কলকাতায় বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালীন মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জুয়াচক্র চালানোর অভিযোগে।
প্রসূন গুপ্ত: রবিবাসরীয় ইডেন ছিল সত্যিকারের স্বর্গ। অসাধারণ রূপে রূপসী হয়ে রয়েছিল সে। আজকেও বলতে দ্বিধা নেই দেশের সেরা দর্শক কিন্তু ইডেনেই। বঙ্গবাসীরা চেয়েছিলো কঠিন দল দক্ষিণ আফ্রিকা হারুক, বিরাট একটি সেঞ্চুরি করুক এবং বোলাররা ফের জাদু দেখাক। সবকটিই ফলেছে কিন্তু তাই বলে অন্যতম সেরা দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ৮৩?
বর্তমানে টিম ইন্ডিয়া ১ নম্বর স্থানে আছে এবং সেমিফাইনালে হয় নিউজিল্যান্ড অথবা পাকিস্তানের সাথে ফের মোলাকাত হবে। কেউ কেউ (পড়ুন রবি শাস্ত্রী ) বলছে ল অফ এভারেজ হবে নাতো অর্থাৎ তীরে গিয়ে তরী ডুববে না তো? দেখুন, এ যা ভারতীয় দল তাতে ওসব তুকতাক খাটা উচিত নয়। এই দল সর্বকালের সেরা একদিবসীয় দল, বিশ্বকাপে তো বটেই। ৭জন ব্যাটার এবং প্রত্যেকের বাটে রান এসেছে। দলনায়ক রোহিত নিয়মিত ওপেন করতে নেমে দুরমুশ করছে বিপক্ষের পেসারদের। বিরাট কোহলির কথা কি আর বলার। রবিবারের পরে বিশ্বের সর্বকালে শ্রেষ্ঠ ব্যাটার একদিবসীয়তে। জীবনের সেরা ফর্মে রয়েছে। ধীরস্থির ভাবে খেলা ধরছে এবং অন্তত ৪০ ওভার ব্যাট করছে। দুমদাম ছক্কা না হাঁকড়ালেও প্রচুর মাটিচেরা বাউন্ডারি এবং শেষ দিকে কিছু ওভার বাউন্ডারি। ভালো খেলেছেন শ্রেয়স, রাহুল। গিল বা সূর্য্যের উপরেও ভরসা করা যায়। জাদেজা তো শেষে নেমে অন্তত ৩০/৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলছে কাজেই এমন পোক্ত ব্যাটিং সাইট নেই কোনও দলে।
বোলিং যেন স্বপ্ন জগতের। ৫ জন বোলার, ষষ্ঠ বোলার নেই , দরকারও হচ্ছে না। ৫০ ওভার অবধি খেলাই গড়াচ্ছে না। শামি এসে যাওয়াতে আরও চমৎকার হয়েছে। ওকে প্রথমে খেলানো হচ্ছিলো না কেন রহস্য। বরং হার্দিক না থাকায় শাপে বর হয়েছে। দুই স্পিনার লাট্টুর মতো বল ঘোরাচ্ছে। এই মুহূর্তে এই বোলাররাই চ্যাম্পিয়নের ট্রফি আনার পক্ষে যথেষ্ট। সবথেকে বড় কথা রোহিতের নেতৃত্ব অসাধারণ। লোকে বলে রোহিত নাকি লাকি ক্যাপ্টেন। মুম্বই ইন্ডিয়ানদের কতবার চ্যাম্পিয়ন করেছে ওর নেতৃত্ব। এবারে ভারতকে করার পালা কারণ এটাতে ইন্ডিয়া কথাটাতো আছে।
প্রসূন গুপ্ত: দীপাবলির আগেই আলোকসজ্জায় সেজে রয়েছে ইডেন গার্ডেন। ব্রিটিশ আমল থেকেই এই মাঠ ক্রিকেটারদের বিশেষ পছন্দের। অনেকেই লর্ডস এবং মেলবোর্নের আগে সেরা দর্শকের উপস্থিতি ইডেনেই থাকে বলে দাবি করেছে। তবে এই ইডেন সবার পক্ষে লাকি হয় না। এ মাঠে এক সময়ে জনতার প্রাণের খেলোয়াড় ছিলেন মুস্তাক আলি, গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ, চন্দ্রশেখর,আজহারউদ্দিন, ভিভিএস লক্ষণ, হরভজন সিং থেকে আজকের রোহিত শর্মা। এঁরা ইডেনে আসলেই সেরা পারফর্মেন্স বেরিয়ে আসতো। তবে ইডেন পাগলও ছিল সচিন তেন্ডুলকারের জন্য। একবার তাঁকে রানআউট দেওয়ার জন্য খেলাই বন্ধ করে দিয়েছিলো ক্ষিপ্ত দর্শক।
রবিবার সেই ইডেনেই ফের বিশ্বকাপের ম্যাচ। বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারের টুর্নামেন্টে সেরা দুই দল। ভারত এখনও পর্যন্ত সব কটি ম্যাচে জিতেছে কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা হেরেছে একটিতেই, তাও নেদারল্যান্ডের কাছে। কিন্তু ওই ভাবে বিচার করলে চলবে না। বাকি সব ম্যাচে ঝুড়ি ঝুড়ি রান করেছে তারা। এবারে দক্ষিণ আফ্রিকার চেষ্টা থাকবে ভারতকে হারানোর। যদি তারা জিততে পারে এক নম্বর স্থানে চলে যাবে রানরেটে। ভারত নিশ্চই চাইবে তাদের জয়ের ধারা ধরে রাখতে। এ মুহূর্তে ব্যাটিংয়ে টপ ফর্মে রয়েছে রোহিত ও বিরাট কোহলি। নিয়মিত রান পাচ্ছে। রোহিতের প্রিয় মাঠ ইডেন কাজেই ফের একটি বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা থাকবে অন্যদিকে কোহলির বিশ্বের কোনও প্রিয় মাঠ নেই। এই মুহূর্তে তিনিই ব্যাটিংয়ে সেরা কাজেই সেই খেলাটি ধরে রাখার চেষ্টা থাকবে। তবে ভারতের প্রধান অস্ত্র বোলিং। ৫ বোলারই দুর্দান্ত খেলছে। শামির নিজের মাঠ নিজের দর্শক কাজেই এই সময়ে বিশ্বের বিস্ময় তিনি এবং তাঁর ইনকাটার ইয়র্কার। মুশকিল একটিই হার্দিক পাণ্ড্য আর এই বিশ্বকাপে মাঠে নামতে পারছেন না। দরকার একজন অতিরিক্ত বলার যা ভারতের বর্তমান জয়ী দলে নেই কাজেই ষষ্ঠ বোলার হিসাবে ভরসা করতে হবে কোহলির উপর।
মনে রাখতে হবে যে জিতবে সেই দল সেমিফাইনালে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের সম্মুখীন হবে। ভারত নিশ্চই অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে চাইবে না। সব শেষে একটি কথা মনে করিয়ে দিতেই হয় \ ২০০৫ এ সৌরভ গাঙ্গুলিকে দল থেকে বাদ দেওয়াতে ক্ষিপ্ত দর্শক সেবার ভারতের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সমর্থন করেছিল।
ভারতীয় পেস অ্যাটাকের দাপটে গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। একের পর এক পেস অ্যাটাক। শামি, বুমরা, সিরাজ এর দাপটে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ল শ্রীলঙ্কা। ভারতের পাহাড় সমান রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম দিকেই ছন্দপতন হয় শ্রীলংকান ব্যাটসম্যানদের। পরপর উইকেট পড়তে থাকে। ভারতীয় পেস অ্যাটাকের সামনে ওপেনার, মিডিল অর্ডার, কেউই টিকতে পারে নি। রীতিমত এই বিশ্বকাপের সর্বনিন্ম স্কোর করল শ্রীলঙ্কা। ভারতের ৩৫৮ রানের স্কোরের সামনে শ্রীলঙ্কা মাত্র ৫৫ রানে গুটিয়ে যায়।
টসে জিতে প্রথম বল করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলংকা। প্রথম ওভারেই রোহিতের উইকেট পায় শ্রীলঙ্কা। এরপর গিল ও বিরাটের ১৮৯ রানের জুটিতে ভারত কিছুটা ধাক্কা সামলে নেয়, এরপর শ্রেয়স এর ব্যাটে আসে ৮২ রান। এরপর জাদেজা কিছুটা রান জুড়লে ভারত ৩৫৭ রান করে। ৩৫৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে রীতিমত দিশেহারা হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সিরাজ ৩ উইকেট, শামি ৫ উইকেট বুমরা ১ উইকেট ও জাদেজা ১ টি উইকেট পায়। সব মিলিয়ে ৫৫ রানে শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেট হারায়।
শ্রীলঙ্কার এরকম ছন্দপতনে রীতিমত এ বিশ্বকাপের সর্বনিন্ম স্কোরের রেকর্ড গড়লো শ্রীলঙ্কা। ভারতের পেস অ্যাটাক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও জ্বলে ওঠে। মুম্বাইয়ের মাঠে শ্রীলঙ্কার এই লজ্জার হারে রেকর্ড হয়ে রইল এ বছরের বিশ্বকাপে। পাশাপাশি আগামী দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেল সেটা বলাই বাহুল্য। এই নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে পরপর ৭টি ম্যাচ জিতল ভারত।
প্রসূন গুপ্ত: রবিবাসরীয় ভারত ইংল্যান্ডের খেলার দিকে ক্রীড়াপ্রেমীদের নজর থাকলেও কারুরই সাহেবদের দলকে পাত্তা দেয়নি। গতবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড এবারে ভারতে বাঘ থেকে বেড়ালে পরিণত হওয়া একটি দল। ইংলিশ সংস্কৃতিতে কোনও খেলাতেই দলগত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর কোনও দিনও থাকেনি। এরা ভীষণ রকম জাতীয়তাবাদী এবং মনে করে ব্রিটিশ মর্যাদার কাছে আজকেও কোনও দেশ নেই। সে অবিশ্যি অন্য প্রসঙ্গ কিন্তু যথার্থই এ বছর পুরো দলটাই ফর্মে নেই।
লখনউ-এর মাঠ বা তার উইকেট বা পিচ নিয়ে সংশয়ে ছিল ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা, আমরা শনিবারের প্রতিবেদনে পিচের একটা আভাস দিয়েছিলাম। উইকেটে নিয়মিত জল দিয়ে রোল করা হয়নি এবং ঘাস সমস্ত ছেঁটে ফেলা হয়েছিল। এই উইকেটে সাধারণত বোলাররা সুবিধা পায়। বলের গতি কমে যায়। কখনও থেমে থেমে বল আসে আবার কখনও বাউন্স করে আচমকাই।তার লক্ষণ কিন্তু সারা খেলায় দেখা গিয়েছে। এই উইকেটে যত বল গড়াবে তত ভয়ঙ্কর হবে বোলাররা। জানিনা টস জিতে ইংল্যান্ড কেন বোলিং নিলো রবিবার।
এই উইকেটে ২৫০ রান যথেষ্ট। ভারত প্রথমে ব্যাট করে তোলে ২২৯ রান , যা কিনা লড়াইয়ের পক্ষে ভালো বলা যায়। সাধারণত রোহিত শর্মা শুরু থেকেই চালিয়ে খেলেন।চার ছয়ের টক্কর থাকে। শুরুও করেছিলেন রোহিত দুটি ছক্কা এবং একটি চার দিয়ে। কিন্তু পরপর তিন উইকেট পরে যাওয়ার পরে, বিশেষ করে কোহলি আউট হতেই খেলার ধরণ পাল্টিয়ে দেখে খেলতে শুরু করেন তিনি। অবিশ্যি রাহুল এবং সূর্যকুমারও সহযোগিতা করেন। ইংল্যান্ডের স্পিনারদের তখন ভয়ঙ্কর রূপে দেখা যায়। ২২৯ এ শেষ হওয়ার পরে ইংল্যান্ড খেলতে নেমে বলের দিশাই খুঁজে পান না।
নিঃসন্দেহে বুমরা এবং শামি সেরা ফর্মে বল করেন সাথে স্পিনাররাও বিশেষ করে কুলদীপ। ১০০ রানের ফারাকে ইংল্যান্ডের এ বারের মতো বিশ্বকাপ থেকে তাদের ছিটকে দিলো। রোহিতকে ম্যান অফ দা ম্যাচ বেছে ঠিকই হয়েছে কারণ এই পিচে ৮৭ রান অসম্ভব ভালো। এবারে সেমিফাইনালে ভারত কি করে দেখার।
প্রসূন গুপ্তঃ একেবারে অন্দরের খবর যে বাংলাদেশ ম্যাচে পায়ে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান হার্দিক পাণ্ড্য। বিশ্বকাপে ভারতের পক্ষে এটি মোটেই সুবিধার বিষয় নয়। এখনও পর্যন্ত ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপের যে খেলা হয়েছে নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে টিম ইন্ডিয়াই সেরা। ৫টি ম্যাচের প্রতিটিতে জিতেছে ভারত এবং দাপটের সঙ্গে। কখনওই সমস্ত উইকেট হারায়নি তারা। এক নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ৪৮ ওভার অবধি খেলা গড়িয়েছিল। ভারতের পরেই নিউজিল্যান্ডের অবস্থান। এবারে দুটি কঠিন দল অপেক্ষা করছে, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ঠিক এই সময়ে হার্দিকের প্রয়োজন ছিল দলে, কিন্তু জানা যাচ্ছে তাঁর পায়ের চোট অনেকটাই। সারতে অন্তত দিন কুড়ি সময় ন্যূনতম লাগা উচিত বলেই সূত্রের খবর।
যে কোনও দল কতটা শক্তিশালী তা নির্ণয় হয় দলে কতজন অলরাউন্ডার আছে তার উপরে। ১৯৮৩-তে ভারতীয় দল তেমন আহামরি ছিল না কিন্তু দলে নিয়মিত ৬জন অলরাউন্ডার ছিল। ২০১১ তে যুবরাজ সিং সহ বেশ কয়েকজন ব্যাটার বল করতে পারতেন। এবারের ভারতীয় দলে সঠিক অলরাউন্ডার রয়েছেন হার্দিক পাণ্ড্য ও জাদেজা। এর মধ্যে হার্দিক যদি মাঠের বাইরে থাকেন তবে তাঁর জায়গা নেবে কে? ৫জন বোলার কি যথেষ্ট? কোনও একজন ফ্লপ করলে ষষ্ঠ বোলার কোথায়? শার্দুল ঠাকুর অনেকটা দলের বোঝা। ব্যাট পরীক্ষিত নয়, বোলিং খুব কাজের নয় কাজেই হার্দিকের জায়গা নেবে কে। হার্দিক চোট পাওয়াতে দুটি পরিবর্তন করতে হয়েছিল কিউইদের সঙ্গে। মহম্মদ শামি এবং সূর্যকুমার যাদব। এবারে শামি অসাধারণ বল করতে ম্যাচ উৎরে গিয়েছিলো কিন্তু এরপর নকআউট পর্যায়ে ষষ্ঠ বোলার তো দরকার। ভারতীয় বোর্ড আরও অপেক্ষা করতে চাইছে। যদি আগামী সপ্তাহে ঠিক না হয় তবে হয়তো খেলোয়াড় বদল হতে পারে। কিন্তু কে হবেন সেই খেলোয়াড়? জানা যায়নি।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মাঠের যুদ্ধে শক্তিশালী পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে উঠে কার্যত 'বোমা' ফাটালেন আফগানিস্তানের তারকা ক্রিকেটার ইব্রাহিম জাদরান। ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিতে গিয়ে কোনও রাখঢাক না করে খোলাখুলি আক্রমণ করলেন পাকিস্তান সরকারকে।
ধারাভাষ্যকার তথা পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার রামিজ রাজার সঙ্গে কথা বলছিলেন আফগান তারকা। রামিজের প্রশ্নের উত্তরে জাদরান সরাসরি বলেন, আফগানিস্তানের যে শরণার্থীদের দেশ থেকে বিতাড়ন করছে পাকিস্তান, সেই মানুষগুলিকে ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার উৎসর্গ করছেন তিনি৷
আগামী ১ নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত নথিবিহীন শরণার্থীদের পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের সরকার। এর ফলে বিপদে পড়েছেন প্রায় ১৭ লক্ষ আফগান শরণার্থী। ম্যান অফ ম্যাচের পুরস্কার তাঁদের উৎসর্গ করলেন ব্যাট হাতে ৮৭ রানে ঝকঝকে ইনিংস খেলা জাদরান। উল্লেখ্য, এই প্রথম একদিনের আর্ন্তজাতিক ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান।
ইংল্যান্ডের পর এবার পাকিস্তান। না কোনও চমক নয়। রীতিমতো পরিকল্পনা মাফিক পার্টনারশিপ, উইকেটের গতি বুঝে বোলিং ও ফিল্ডিং। এক ওভার বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে বাবর ব্রিগেডকে হারাল আফগানিস্তান।
পরপর দুটি ম্যাচ হেরে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন আফ্রিদিরা। এই ম্যাচে হেরে বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে বড়সড় ধাক্কা খেলেন বাবরা। এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তোলেন তাঁরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে রহমাতুল্লাহ গুরবাজ ৬৫ রান করেন। আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদ্রান করেন ৮৭ রান। ৭৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন রহমত শাহ। ৪৫ বলে ৪৮ রান করেন অধিনায়ক শাহিদি। খেলা শেষ করে ফেরে আফগানিস্তান।
বিশ্বকাপের মাঝেই ভারতীয় ক্রিকেটে শোকের আবহ। প্রয়াত ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার বিষাণ সিং বেদী । ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর। বিশ্বকাপ চলাকালীন বিশ্বক্রিকেটেও শোকের ছায়া। ১৯৬৭-১৯৭৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছিলেন তিনি।
বিষাণ সিং বেদি দেশের হয়ে ৬৭টি টেস্ট ও ১০টি ওয়ানডে খেলেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর ২৬৬টি উইকেট ও ১৪টি পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির আছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৭ উইকেট তুলেছিলেন একবার।
১৯৪৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অমৃতসরে জন্ম বিষাণ সিং বেদীর। বাঁ হাতি স্পিনার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাড়া ফেলেঠিলেন। ১৯৬৬ সালে ভারতীয় ক্রিকেট দলে অভিষেক করেন তিনি। ১৯৭১ সালে ইংল্যান্ড সফরে সিরিজ জয়ের নেপথ্যে ছিলেন তিনি। অজিত ওয়াদেকার চোট পেয়ে বাদ পড়ায় তাঁর নেতৃত্বেই সিরিজ জেতে ভারত।
বিশ সাল বাদ। বিরাট ব্যাটেই ভাঙল বিশ্বকাপের মিথ। ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ঘরের মাঠে শীর্ষে ভারত। কিউইদের ২৭৪ রান তাড়া করতে নেমে ভারত জিতল চার উইকেট।
পুণের পর ধর্মশালাতেও আরও একটা রূপকথা ইনিংস খেলে ভারতকে জেতাল বিরাটের ব্যাট। ৯৬ রানে শেষ হল তাঁর রূপকথার ইনিংস। এই বিশ্বকাপে ক্রমেই তিনি ফিনিশার হয়ে উঠছেন। বাংলাদেশ ম্যাচ শেষ করেছিলেন। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে জাডেজার কাঁধে দায়িত্ব দিয়ে মাঠ ছাড়লেন।
ধর্মশালার পাটা পিচকে কাজে লাগিয়ে দুরন্ত শুরু করেন রোহিত ও শুভমন। এই ম্যাচে একদিনের ক্রিকেটে দ্রুততম ২ হাজার রান পূর্ণ করেন শুভমান। নিজের মেজাজেই শুরু করেন হিটম্যান।
কিন্তু তিনি ৪৬ রানের মাথায় আউট হয়ে যান। ২৬ রান করেন শুভমান। এরপর হিমাচলের কোলে কিং কোহলি শো। উল্টোদিকে শ্রেয়স, রাহুল, সূর্যরা চলে গেলেও, কিউইদের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে অবিচল ছিলেন বিরাট।
ভারত জিতল, বিশ্বকাপের শীর্ষে উঠল। কিন্তু এই একটা ম্যাচে অনেক ভুল বিভ্রান্তি হয়ে গেল। যা নিয়ে ইংল্যান্ড ম্যাচে আগে ভাবতে হবে কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে। বিশেষ করে তিনি প্রার্থনা করবেন লখনউ ম্যাচে ফিরে আসবেন হার্দিক। কারণ, তাঁর না থাকা দলের ভারসাম্যে সত্যিই প্রভাব ফেলেছে।
চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (বিধায়ক/অভিনেতা): ক্রিকেট ফুটবল আমার জীবনের চলার পথে অন্যতম সাথী। এক সময়ে ছেলেবেলায় দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে খেলেওছি। খেলা দেখা আমার একটা নেশা। বিশ্বকাপ ফুটবল হোক বা ক্রিকেট, দেখতে তো হবেই। পুজোর সময়ে আমার কেন্দ্রে যাওয়া আসা থাকবে কিন্তু তারই ফাঁকে আজকের অধিনায়ক মোবাইলে খেলায় চোখ রেখেছি। আমার কাছে সব ম্যাচই প্রাধান্য পায়। আমি আগের লিখনিতে লিখেছিলাম যে, দুরন্ত ফর্মে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। আমাদের প্রথম চার ব্যাটার অর্থাৎ রোহিত, গিল, কোহলি এবং রাহুল প্রায় প্রতিদিনই ভালো ব্যাট করে দিচ্ছে কিন্তু তার আগে বোলিংয়ে বুমরা, সিরাজ এবং জাড্ডু ও কুলদীপ এতটাই ভালো বল করছে যে ব্যাটারদের টেনশন নিতে হচ্ছে না। আমি একটা ব্যাপার দেখে অবাক হচ্ছি, চারটি ম্যাচেই উল্টোদিকের দল শুরুটা বেশ ভালো করেও শেষ পর্যন্ত হঠাৎ খেলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও বাংলাদেশের একই ব্যাপার। দিব্বি শুরু করেছিল লিটন দাস। ৯০ রান উঠে যাওয়ার পরে মনে হচ্ছিলো বাংলাদেশ আজ হয়তো ৩০০ পার করবে কিন্তু হঠাৎ গুটিয়ে গেলো। জাড্ডু বা জাদেজা যেমন ফিল্ডিং করেছে তেমনিই বোলিং কিন্তু ম্যাচের সেরা হলো সেঞ্চুরি করা কোহলি। ভারত ফের ৭ উইকেটে জিতলো। এখন এটা একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
ভারতের এখন যা দলগত অবস্থা, আমি বলবো সর্বকালের সেরা একদিবসীয় দল। ওপেনিংয়ে রোহিত নিয়মিত ভালো রান পাচ্ছে কিন্তু ওঁর একটাই সমস্যা, ছক্কা হাঁকাতে চায়। মারবে না কেন? মারার জন্যই তো স্বল্প ওভারের ক্রিকেট কিন্তু একেবারে অনসাইড হিটার। একটা সিক্সারের পর ফের পরের বলেও ওই চেষ্টা। কালকে আউটও হলো ওই ভাবেই। ও অধিনায়ক এটা ভুলে গেলে চলবে কেন? আমি বরং বলবো টপ ফর্মে খেলছে বিরাট কোহলি। জীবনের অন্যতম সেরা ফর্মে আছে। ফের বলতেই হয় সচিনের অভাব পেতে দিচ্ছে না বিরাট। অসাধারণ খেলা। কি ধৈর্য কি পরিশ্রম। মাঠ কামড়ানো স্ট্রোক। কিন্তু আমার চিন্তা হার্দিক প্যান্ডিয়াকে নিয়ে। কাল পায়ের গোড়ালিতে ছোট পেয়ে গেলো। দেখুন চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে মিডলে এমন একজন খেলোয়াড় দরকার যে ব্যাট করবে আবার বলটিও করবে। অর্থাৎ অলরাউন্ডার। দেখবেন অলরাউন্ডারদের জন্যই ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুবার। ১৯৮৩-তে কপিল, মহিন্দার, ২০১১-তে যুবরাজ সিং। এবারে সেই কাজটিও করা দরকার এবং এক্সপার্ট হচ্ছে হার্দিক। আমি মনে করি শার্দুল ঠাকুর মোটেই সেই কাজটি করতে পারবে না। শ্রেয়স কিন্তু ভালো খেলছে না, আবার সে বোলারও নয়। সুতরাং হার্দিক ফিরে আসুক। (অনুলিখনঃ প্রসূন গুপ্ত)
ভারতের বিরুদ্ধে শাকিব না থাকলেও ভালো শুরু বাংলাদেশের। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে দুজন ওপেনারই হাফ সেঞ্চুরি করেন। এরপরে হাসান কুলদীপের বলে লেগ বিফোর হয়ে সাজঘরে ফিরে যায়, ওদিকে শান্ত অর্থাৎ অধিনায়ককে লীগ বিফোর করে ঘরে পাঠায় জাদেজা। মিরাজকে ঘরে ফেরায় সিরাজ। ওদিকে লিটন ৬৩ রানে ব্যাট করছে। ২৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১২৯ রানে ৩ উইকেট। ভারতের বিরুদ্ধে খেলছেন না শাকিব-আল-হাসান। ভারতের বিরুদ্ধে পুণের ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্ত। টস জিতে এদিন ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ড ম্যাচে ঊরুতে চোট পেয়েছিলেন শাকিব। তখন থেকেই চলছিল টানাপোড়েন। তার ইতি পড়ল পুণেতে। এদিনের দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেছেন বাংলাদেশ।
পুণে রোহিতও জানালেন টস জিতলে, তিনি আগে বলই করতেন। এই ম্যাচে অপরিবর্তিত ভারতীয় দল। কারণ, অহেতুক দল পরিবর্তন করতে নারাজ ভারত অধিনায়ক। এদিনও রোহিতের গলায়, দীর্ঘ টুর্নামেন্টের কথা। একইসঙ্গে ফের জানালেন ভারতকে ঘুরে ঘুরে খেলতে হচ্ছে। তাই এত তাড়াহুড়ো করতে নারাজ তিনি।
প্রাক্তনদের মতে, এই মাঠে রান তাড়া করা একটু কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। সুনীল গাভাসকর এবং নাসের হুসেনের মতে, বাংলাদেশকে ২৫০ রানের মধ্যে আটকে জিতে পারলে এই ম্যাচেও এগিয়ে থাকবে ভারত।