চারিদিকে সিনেমা বোদ্ধাদের মধ্যে মৃদু স্বরে গুনগুন রব, 'কালকক্ষ' (Kalkokkho) নিয়ে। অনেকেই বলছেন, বাণিজ্যিক সিনেমার ভিড়ে ঢেকে যায় অনেক ভালো ছবি, কালকক্ষ-এর ভাগ্যেও তাই জুটল। অরোরা ফিল্মসের প্রযোজনায়, পরিচালক রাজদীপ রায় ও শর্মিষ্ঠা মাইতি পরিচালিত এই ছবি নিয়েই এখন যত আলোচনা। সম্প্রতি জাতীয় পুরস্কারের পালক যুক্ত হয়েছে সিনেমার মুকুটে। তারপরেই পশ্চিমবঙ্গে সিনেমা মুক্তি করতে চাইছিলেন প্রযোজক সংস্থা। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হল না।
সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ কালকক্ষ মুক্তির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সিনেমার প্রযোজক সংস্থা অরোরা ফিল্মসের তরফে জানানো হয়, সিনেমার প্রদর্শনের জন্য সঠিক হল, সঠিক শো টাইম পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছি, সিনেমাটিকে আপনাদের কাছে পৌঁছে দিতে।' বাংলার সমস্ত সিনেমাহলে এখন প্রাইম টাইম নিয়ে রয়েছে, গদর-২, রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি, ওহ মাই গড-২, ড্রিম গার্ল-২। ওদিকে দেবের ব্যোমকেশ ও দুর্গ রহস্যও রয়েছে সেই তালিকায়। এই সিনেমাগুলির মাঝে কী কালকক্ষ-কে জায়গা দিতে চাইছেন না হল মালিকরা?
যদিও কালকক্ষ নিয়ে হল মালিকদের পূর্ব অভিজ্ঞতাও খুব একটা ভালো নয়। গত বছর সিনেমাহলে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। তবে দর্শক একেবারেই হলমুখী হয়নি। দুর্বল প্রচার ব্যবস্থার জন্য সিনেমাটির কথা জানেন না অনেক দর্শক। তাই মনে করা হচ্ছে, কেবল বাণিজ্যিক সিনেমার জন্য নয়, সব মিলিয়েই কালকক্ষ-তে ভরসা রাখতে পারছেন না হল মালিকরা।
বাংলা সিনেমা জগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী চূর্ণী গাঙ্গুলি (Churni Ganguly)। তাঁর অভিনয় দক্ষতা-ব্যক্তিত্ব নিয়ে চর্চা সর্বত্র। সম্প্রতি টলিউডের সীমানা ছাড়িয়ে বলিউডে পা দিয়েছেন তিনি। 'রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি' সিনেমায় ডেবিউ করেই সকলের নজর কেড়েছেন। সিনেমার সমালোচকরাও এক বাক্যে প্রশংসা করেছেন চূর্ণীর। এত গর্বের মুহূর্তে, সাফল্যের মাঝেও মনে ভয় চূর্ণীর। কিন্তু কেন?
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে অভিনেত্রী বলেছেন তাঁর আশঙ্কার কথা। চূর্ণী বলেছেন, 'আমার ভয়, রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি'-এর অঞ্জলীর চরিত্রটিতে অভিনয় করার পর বলিউড আমাকে টাইপকাস্ট করবে। আমি যে চরিত্রটিতে অভিনয় করেছিলাম তা একেবারে স্বতন্ত্র। আমি আবারও একই চরিত্রে অভিনয় করতে চাই না। যদি প্রস্তাব আসেও, তাহলে চরিত্রটিকে অঞ্জলীর থেকে আলাদা হতে হবে।'
চূর্ণীর ছোট ছোট চুলের জন্য টলিউডের পরিচালকেরা তাঁকে সব চরিত্রে নিতে চান না, সাক্ষাৎকারে একথাও জানিয়েছিলেন চূর্ণী। অভিনেত্রী বলেছেন, 'আমার ছোট ছোট চুলের জন্য ট্র্যাডিশনাল চরিত্রে আমাকে কাস্ট করা হয় না। আমার দুটি সিনেমা সফল হওয়ার পরেও টলিউডের পরিচালকেরা আমাকে চট করে কোনও সিনেমায় নিতে চান না।'
একসময় অঙ্কুশ হাজরা, জিৎ-এর মতো অভিনেতাদের সঙ্গে চুটিয়ে সিনেমা করেছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sayantika Banerjee)। ছবির সংখ্যা খুব বেশি না হলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে 'মহানায়িকা' সম্মানও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সায়ন্তিকাকে ইদানিং রাজনীতির মঞ্চে কিংবা সামাজিক মাধ্যমে দেখতে পাওয়া গেলেও, সিনেমার পর্দায় তিনি গড় হাজির। তাঁর অভিনীত শেষ কয়েকটি সিনেমা বক্স অফিসে তেমন সাফল্য পায়নি। শোনা যায়, টলিউডে কাজের সংখ্যা নাকি কমেছে। তাই কী এবার টলিউড (Tollywood) ছেড়ে ঢালিউডে (Dhallywood) যাচ্ছেন সায়ন্তিকা?
বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা জায়েদ খানের বিপরীতে 'ছায়াবাজ' ছবিতে দেখা যাবে সায়ন্তিকাকে। সিনেমার পরিচালক তাজু কামরুল নাকি তাঁর এই সিনেমায় নায়িকার চরিত্রে টলিউড অভিনেত্রীকেই খুঁজছিলেন। যদিও তাঁর প্রথম পছন্দ ছিল, নুসরাত জাহান কিংবা শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। এদিকে সিনেমার শ্যুটিং শুরু হবে সেপ্টেম্বরে। শেষ হবে নভেম্বরের দিকে। এইসময় ফাঁকা নেই নুসরাত কিংবা শ্রাবন্তী। অগত্যা প্রস্তাব পাঠালেন সায়ন্তিকাকে। তিনিও রাজি হয়ে গেলেন।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে সায়ন্তিকা তাঁর আসন্ন ছবির সহ অভিনেতা জায়েদ খানের সঙ্গে ছবি দিয়েছেন। একইসঙ্গে চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন অভিনেত্রী। সেই ঝলকও দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। টলিউডে সায়ন্তিকার কেরিয়ার তেমন সফল না হলেও, ঢালিউডে তাঁর ভাগ্য খোলে কি না সেইটাই দেখার।
হিয়া দে (Hiya De), ছোট থেকেই খুদে শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন টালিগঞ্জের তাবড় ধারাবাহিকে। তবে খ্যাতির শুরু 'পটল কুমার গানওয়ালা' ধারাবাহিকের পটলের চরিত্র থেকে। সামাজিক মাধ্যমে বেশ সক্রিয় অভিনেত্রী। সেখানেই পাওয়া গেল তাঁর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য। শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেন। দেখা গিয়েছে, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রয়েছে অভিনেত্রী। ক্যাপশনে লিখেছেন, 'গুরুতর অপারেশনের মধ্যে দিয়ে গেলাম।'
স্বাভাবিকভাবেই তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন নেটিজেনরা। কী হয়েছে অভিনেত্রীর? এমন প্রশ্নে ছয়লাপ হয়েছিল নেট দুনিয়া। এবার জানা গেল, হিয়ার অসুস্থতার কারণ। অভিনেত্রীর পরিবারের তরফে এক সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, হিয়ার নাকি সিস্ট হয়েছিল। অন্যটিকে জরায়ুর পিছনে ১৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ বিশিষ্ট একটি বড় টিউমর জন্মেছিল। বৃহস্পতিবার চিকিৎসকেরা সেই সিস্টের অপারেশন করেন।
স্বস্তির খবর, সফলভাবে অস্ত্রোপচার হয়েছে হিয়ার। তবে দুদিন থাকতে হবে হাসপাতালেই। শুক্রবার কেটে গিয়েছে, এবার শনিবারের রাতটুকু কাটাতে পারলেই রবিবার বাড়ি যেতে পারবেন অভিনেত্রী। পটলকুমারের ভক্তরা চাইছেন, খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন হিয়া।
শোকের ছায়া নেমে এলো টলিউড অভিনেতা দীপঙ্কর দে-র (Dipankar De) জীবনে। বুধবার রাতে কন্যাহারা হলেন অভিনেতা। দীপঙ্করের বড় মেয়ে বৈশালী, বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। হৃদযন্ত্র ও কিডনির সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। সকলে চেয়েছিলেন বৈশালী ফিরে আসুন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। মাত্র ৫২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অভিনেতার বড় কন্যা।
অভিনেতা দীপঙ্কর দে-এর বয়স এখন ৭৯। তারও নানারকম শারীরিক জটিলতা রয়েছে। সন্তান হারানোর অভিঘাত তিনি বহন করছেন। অভিনেতা এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'বড় মেয়ের হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। অকালে চলে গিয়েছে।' হতভাগ্য বাবার মুখ থেকে আর কোনও কথা বেরোয়নি। এই অবস্থায় দীপঙ্করকে সামলাচ্ছেন তাঁর সহধর্মিনী দোলন রায়।
তবে দোলনও এই মুহূর্তে বেশ জটিল পরিস্থিতিতে রয়েছেন। একদিকে সন্তানহারা হয়ে ভেঙে পড়েছেন স্বামী। তাঁর পাশে থাকা জরুরি। অন্যদিকে অভিনেত্রী শ্যুটিং থেকে ছুটি পাননি। তাই বাধ্য হয়ে কাজে যোগ দিতে হয়েছে দোলনকে। অভিনেতার জামাই অনিল কুরিয়াকোস পেশায় সিনেমার প্রযোজক। স্ত্রীকে হারিয়ে তিনিও ভেঙে পড়েছেন।
রাখি পূর্ণিমার সময় শুরু হয়েছে বুধবার, ৩০ অগাস্ট থেকে। ভাই-বোন নির্বিশেষে রাখির বাঁধনে বাঁধেন অনেকে। সেই দলে ছিলেন ঐশ্বর্য শর্মা। তিনি প্রয়াত অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার (Aindrila Sharma) দিদি। বোনকে ছেড়ে এই প্রথম রাখি। নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারছেন না ঐশ্বর্য। বুধবার সামাজিক মাধ্যমে ঐন্দ্রিলার একটি ছোট্ট ভিডিও আপলোড করেন তিনি। সেই পোস্টের ক্যাপশনে লেখেন, 'তোকে ছাড়া প্রত্যেকদিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। শুভ রাখি বুনু।'
ঐশ্বর্যর পোস্ট করা ভিডিওতে ঐন্দ্রিলাকে দেখে নেটিজেনদের আবারও মন খারাপ হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বৃষ্টি পড়ছে অঝোরে, শান্ত হয়ে বসে সেই মুহূর্ত উপভোগ করছেন ঐন্দ্রিলা। সেই ভিডিওতেই অভিনেত্রীকে আরও এক রূপে দেখা গিয়েছে, নীল আকাশের নিচে সবুজে ঘেরা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে আছেন ঐন্দ্রিলা। অভিনেত্রী যে প্রকৃতির থেকেও সুন্দর, তা আবারও স্পষ্ট হয়েছে ওই ভিডিওতে।'
টলিউড অভিনয় জগতে উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার। যেমন তাঁর অভিনয়, তেমনই মিষ্টি স্বভাবের ভক্ত ছিল অনেক। কিন্তু ভাগ্য দেবতা হয়তো তাঁর জন্য অন্য পরিকল্পনা রেখেছিলেন। ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর প্রয়াত হন তিনি। ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর অভিঘাত নেমে এসেছিল আপামর বাংলাবাসীর মনে। আজও ঐন্দ্রিলার শূন্যস্থান রয়ে গিয়েছে সকলের মনে।
টলিউড ধারাবাহিক জগতের জনপ্রিয় পরিচালক ও অভিনেত্রী জুটি স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার (Swornendu Samaddar) এবং শ্রুতি দাস (Shruti Das)। ত্রিনয়নী ধারাবাহিক দিয়ে টলিউড অভিনয় জগতে ডেবিউ করেছিলেন শ্রুতি। সেই ধারাবাহিকের পরিচালক ছিলেন স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার। ধারাবাহিকের সেট থেকেই তাঁদের প্রেম শুরু। এরপর সামাজিক মাধ্যমে সম্পর্কের ইজহার করেন শ্রুতি। অনেক সমালোচনা ভেসে এলেও সেসব গায়ে মাখেননি শ্রুতি। সুযোগ পেলেই স্বামীর জন্য নিজের অনুভতি ব্যক্ত করে থাকেন শ্রুতি।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি রিল ভিডিও আপলোড করে আবারও স্বামী স্বর্ণেন্দুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন শ্রুতি। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কাজ করতে করতে স্বর্ণেন্দু ঝালমুড়ি খাচ্ছেন। ক্যাপশনেই লুকিয়ে স্বামীর জন্য শ্রুতির শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। অভিনেত্রী লিখেছেন, '২০ টি ধারাবাহিকের পরিচালনা করা সফল পরিচালক, প্রত্যেকদিন শট ডিভিশনের আগে ঝালমুড়ি খান দেখে আমি অবাক হয়ে যায়। অনেকের মনে হতে পারে আমি জাহির করছি কিন্তু হ্যাঁ সামাজিক মাধ্যমে বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখানো শো অফ ছাড়া আর কিছুই নয়।'
শ্রুতি আরও লিখেছেন, 'শো অফ তোমার উৎকর্ষ তোমার গুণ প্রকাশ করে না। সাধারণ থাকা তোমার পরিচয় এবং ব্যক্তিত্ব। এই একটাই কারণে আমার অভিভাবক এবং আমার স্বামী আমার অনুপ্রেরণা।' প্রসঙ্গত শ্রুতি কিছুদিন আগেই শ্রুতি দাস সমাদ্দার হয়েছেন। আইনি বিয়ে সেরেছেন স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে। সঠিক সময়ে সামাজিক বিয়েও সারবেন বলে জানিয়েছেন।
ধারাবাহিক জগৎ থেকেই দর্শকদের কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন শন বন্দ্যোপাধ্যায় (Sean Banerjee)। 'এখানে আকাশ নীল', 'আমি সিরাজের বেগম', সাম্প্রতিক সময়ের 'মন ফাগুন' ধারাবাহিকে দর্শকেরা তাঁর অভিনয় বেশ পছন্দ করেছিলেন। গত বছর শেষ হয়েছিল শন অভিনীত ধারাবাহিক, 'মন ফাগুন'। কিন্তু এরপর থেকে তাঁকে আর দেখা যায়নি ছোট পর্দায়। অভিনেতার অনুরাগীর সংখ্যা অনেক। তাই শনকে পর্দায় দেখতে না পেয়ে আকুল হয়ে উঠেছেন সকলে। সকলের মনে প্রশ্ন, শন কী আর ধারাবাহিকে ফিরবেন না?
ধারাবাহিকে ফেরার প্রসঙ্গে অবশ্য এখনই আশার কথা শোনালেন না শন। ইতিমধ্যেই কয়েকটি ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন তিনি। ধারাবাহিকের পাশাপাশি তাই ওটিটির পর্দাতেই কাজ করতে চাইছেন অভিনেতা। তবে ধারাবাহিকের জন্য যে তাঁর কাছে প্রস্তাব যাচ্ছে না তা নয়। হাতে এই মুহূর্তে বেশ কিছু প্রস্তাব রয়েছে শনের। তবে চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সচেতন অভিনেতা।
ছোট পর্দায় ধারাবাহিকের গতে বাধা চরিত্রের অংশ হতে চাইছেন না তিনি। যদি ভিন্ন কোনও চরিত্রের প্রস্তাব শনের কাছে যায়, তবে তিনি ভেবে দেখতে রাজি আছেন। কিন্তু তা না হলে, এই মুহূর্তে দূরেই থাকবেন অভিনেতা। অভিনেতা হয়তো টাইপ কাস্ট হতে চাইছেন না, তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরবর্তীতে শনকে কোথায় দেখা যায়, এখন সেইটাই দেখার।
চলতি বছর দুর্গা পুজোয় বাংলা সিনেমার দামামা বেজে গিয়েছে। টলিউড সিনেমা জগতের জনপ্রিয় পরিচালক জুটি শিবপ্রসাদ ও নন্দিতাও তাঁদের সিনেমার ঘোষণা করেছেন। এই অকালবোধন আসতে চলেছে তাঁদের ছবি রক্তবীজ (Raktabeej)। ইতিমধ্যেই সিনেমার টিজার মুক্তি পেয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে আবির ও মিমিকে। কিন্তু দর্শকের প্রতীক্ষা বাড়ছে অন্য এক কিংবদন্তি অভিনেতার জন্য।
বর্ষীয়ান অভিনেতা ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু বছর পরে সিনেমা জগতে প্রত্যাবর্তন করতে চলেছেন। রক্তবীজের অনেকটা জুড়ে থাকবেন অভিনেতা। বাংলা-সহ আন্তর্জাতিক মহলে সমাদৃত অভিনেতা। কিন্তু টলিউড যেন তাঁর প্রাপ্য দিতে পারেনি। প্রসেনজিৎ, তাপস পাল, চিরঞ্জিতের যুগে তিনি যেন চাপা পড়ে গিয়েছিলেন কোথাও। তবুও আজও দর্শক যখন ফিরে যান ঘরে-বাইরের মতো সিনেমার স্মৃতিতে সেখানে নিখিলেশ হয়ে জেগে ওঠেন ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন কিংবদন্তি অভিনেতাকেই আবার সিনেমার পর্দায় ফিরিয়ে আনছেন শিবপ্রসাদ ও নন্দিতা।
ইতিমধ্যেই সিনেমার শ্যুটিং শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে রক্তবীজকে টেক্কা দিতে তৈরি রয়েছেন টলিউডের অন্যান্য পরিচালকরাও। সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'দশম অবতার' আসছে এই পুজোতেই। দেবের 'বাঘাযতীন' আসছে। অরিন্দম শীল পরিচালিত সিনেমা, 'জঙ্গলে মিতিন মাসি'-ও আসছে এই পুজোতে। প্রত্যেক বছরের মতো যে এই বছরেও দর্শকেরা পুজোয় ধামাকা পেতে চলেছেন, তা হলফ করে বলা যায়।
কয়েক দশক ধরে বাংলা সিনেমা জগতে অবাধ বিচরণ অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর (Rituparna Sengupta)। উইকিপিডিয়া বলছে, অভিনেত্রীর কেরিয়ার জীবনে সিনেমার সংখ্যা নাকি ২১৮। এর মধ্যে ১৮১টি বাংলা সিনেমা। অভিনেত্রীর বয়স যত বেড়েছে, অভিনয়ে শান দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় অভিনেত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনেক বছর, চিত্রনাট্যের বিবর্তনে পার্শ্ব চরিত্রেও অভিনয় করেছেন। ঋতুপর্ণাচিত ছাপ রেখেছেন সর্বত্র। এবার সামাজিক মাধ্যমে নিজের সাহসিকতার প্রমাণ দিলেন।
ঋতুপর্ণা সাহসী অবতারে আসতে ভয় পান না, একথা সকলেই জানেন। সামাজিক মাধ্যমেও এবার কোনও পরোয়া না করে তুলে ধরলেন কিছু ছবি। ইনস্টাগ্রামে নিজের একাউন্ট থেকে বেশ কিছু ছবি শেয়ার করেছেন তিনি। ছবিগুলি বিকিনি পরা নিজস্বী। প্রত্যেকটি ছবিতেই লাস্যময়ী দেখাচ্ছে অভিনেত্রীকে। কিন্তু ছবি দিলেও কি এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন যাবতীয় বিতর্ক বা নেতিবাচক মন্তব্য? অভিনেত্রীর ক্রিয়াকলাপে অবশ্য তাইই মনে হয়।
কারণ ছবির কমেন্ট বক্সে কোনও কমেন্ট নেই। সাধারণত যে সমস্ত ছবি দেখলে সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনরা তেড়ে আসেন, নেতিবাচক মন্তব্য করে থাকেন। ঋতুপর্ণার ছবির ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি, কারণ অভিনেত্রী কমেন্ট বক্স বন্ধ করে রেখেছেন। তবে ক্যাপশনে এতটুকু জানিয়েছেন, তাঁর ছবি 'দত্তা'-এর শ্যুটিং শুরুর আগে, নিজস্ব সময় কাটাতে গিয়েই তিনি ছবিগুলো তুলেছেন।
'ভালোবাসা ডট কম' ধারাবাহিক দিয়ে দর্শকদের কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন মধুবনী (Madhubani Goswami) ও রাজা (Raja Goswami) জুটি। রিল লাইফের প্রেম গড়িয়েছিল রিয়েল লাইফেও। রাজা ও মধুবনী বর্তমানে টলিউডের সুখী দম্পতিদের মধ্যে অন্যতম। তবে বিয়ের পর অভিনেত্রীর জীবনে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। কোভিডের সময়েই মা হয়েছেন তিনি। সেই থেকে মধুবনী নিজের অভিনেত্রী সত্তা ভুলে হয়ে উঠেছেন ছেলে কেশবের পৃথিবী। নাকি ছেলে কেশব হয়ে উঠেছে তাঁর পৃথিবী?
কোভিড পরবর্তী সময়ে সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও, মধুবনী অভিনয়ে ফেরেননি। কেশব ছোট, তাই নিজের সমস্ত সময়টুকু তাতেই দিতে চেয়েছেন অভিনেত্রী। এই চার বছরে অনেক কাজের সুযোগ গিয়েছে মধুবনীর কাছে, মুখ্য চরিত্রেও অভিনয় করার প্রস্তাব পেয়েছিলেন। তবে অনায়াসে সেসব ফিরিয়ে দিয়েছেন। ছেলে একটু বড় না হলে তিনি কাজে ফিরবেন না কঠোরভাবে মনস্থির করে নিয়েছিলেন বোধহয়।
অবশেষে আবারও পর্দায় দেখা যেতে চলেছে অভিনেত্রীকে। 'শ্যামা' ধারাবাহিক দিয়ে কামব্যাক করতে চলেছেন ছোট পর্দায়। এই ধারাবাহিকের মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেতা হানি বাফনা ও টুম্পাকে। ধারাবাহিকে ফিরতে গিয়ে মধুবনী আবার ছেলের যত্নে কোনও গলদ রাখতে চান না। শ্যামাতে তাঁকে দেখা যাবে, মা কালীর চরিত্রে। তবে এই চরিত্রটি বেছে নেওয়ার পিছনেও একটি কারণ আছে। মাত্র ১২-১৩ দিন শ্যুটিং করলেই হয়ে যাবে। আর বাকি সময়টুকু ছেলের জন্য তুলে রেখেছেন মা। তাহলে কী আর মধুবনীকে আগের মতো পর্দায় দেখা যাবে না? অভিনেত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ছেলে কেশব যতদিন না স্কুলে যাওয়া শুরু করছে, ততদিন পর্যন্ত পুরোদমে কাজে ফিরবেন না অভিনেত্রী।
১৫ অগাস্ট, আজাদীর ৭৭ তম বছরে পা দিয়েছে ভারত। কিন্তু এতগুলো বছর পরেও দেশ স্বাধীন করার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মবলিদানের কথা শিহরণ জাগায় দেশবাসীকে। সেলুলয়েডের পর্দায় বহুবার উঠে এসেছে ভারতের বেশ কিছু স্বাধীনতা সংগ্রামীর কাহিনী। বাস্তবে না হলেও, পর্দায় সেই চরিত্র তুলে ধরা, অভিনেতা অভিনেত্রীদের কাছে গৌরবের। সেই গৌরব অনুভব করার ইচ্ছে রয়েছে টলিউড অভিনেত্রী কোয়েলের (Koel Mallick)।
এক ইংরেজি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কোয়েল জানিয়েছেন, 'আমি নিদারুণভাবে দেশাত্ববোধক সিনেমায় অভিনয় করতে চাই, যেখানে কোনও জনপ্রিয় স্বাধীনতা সংগ্রামীর চরিত্রে অভিনয় করব। আগে আমি অনেক শক্তিশালী স্বতন্ত্র মহিলা চরিত্রে অভিনয় করেছি।'
কোন সিনেমাগুলি দেখে কোয়েলের মনে দেশাত্ববোধক ভাবনা জেগেছে? অভিনেত্রী সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, 'আমার মনে হয় লাগান এবং টি লেজেন্ড অব ভগৎ সিং, দুটিই চমৎকার সিনেমা। এই সিনেমাদুটিই আমার মনে জোরালোভাবে দেশাত্ববোধক ভাবনা গড়ে তুলেছে।'
টলিউডে (Tollywood) অভিনেত্রীদের (Actress) সম্পর্ক (relation) নিয়ে সবসময়ই চর্চা হয়। গ্ল্যামারের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে যারা থাকেন, তাঁদের জীবনে প্রেম নেই, প্রেমিক নেই, তা মানতেই পারেন না দর্শকেরা। মাঝেমধ্যেই নানা ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তাঁদের নাম জড়ায়, কিন্তু বিয়ে না করলেই নানা প্রশ্ন ওঠে। অভিনেত্রীদের সামাজিক মাধ্যম দেখলেও সেখানে 'বিয়ে কবে করবেন?', 'কার সঙ্গে প্রেম করছেন?' এরকম অনেক প্রশ্ন পোস্টের কমেন্ট বক্সে দেখা যায়। টলিউড সিনেমা জগতে এখনও কোন অভিনেত্রীরা সিঙ্গেল জানেন?
মিমি চক্রবর্তী: পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে মিমির প্রেমের কথা সকলেই জানতেন। পরিচালকের বিয়ে হওয়ার পর বেশ কিছু বছর সিঙ্গেল ছিলেন অভিনেত্রী। এরপর এক বিদেশী ব্যবসায়ীর সঙ্গে মিমির প্রেমের চর্চা শোনা যায়। যদিও এইসব গুঞ্জনে সমর্থন করেন না মিমি। তাঁর জীবন জুড়ে এখন কেবল অভিনয় এবং রাজনীতি।
রাইমা সেন: অভিনেত্রী রাইমা সেনের ভক্ত সংখ্যা অনেক। সকলেই জানতে চান, তিনি কবে বিয়ে করবেন? পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল অভিনেত্রীর। যদিও অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা কেবল বন্ধু। তবে রাইমা কোনও সম্পর্কে জড়াননি এখনও। তিনি সাফ জানিয়েছেন, সিঙ্গেল জীবন নিয়েই তিনি খুশি। ভালো চরিত্রে পেলে অভিনয় করেন, নয়তো ল্যাদ খেয়ে বাড়িতে সময় কাটানো তাঁর সবচেয়ে বেশি পছন্দের।
মধুমিতা সরকার: অভিনেতা ও পরিচালক সৌরভ চক্রবর্তীকে বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী। ২০১৯ সালে তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেন মধুমিতা। এখন তিনি সিঙ্গেল। কিন্তু এই নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই। হাতে সিনেমা সিরিজের কাজ রয়েছে। এর মাঝে সময় পেলেই পাহাড়ে কিংবা সমুদ্রে ঘুরতে চলে যান অভিনেত্রী।
বেশ কয়েক দিন ধরেই টলি পাড়ায় দুই অভিনেত্রীকে নিয়ে জোর চর্চা চলেছে। এই আলোচনার একদিকে ছিলেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকার (Sohini Sarkar)। আরেকদিকে ছিলেন তৃণা সাহা (Trina Saha) দুই অভিনেত্রীর উত্থানই ছোট পর্দা থেকে। সোহিনী বর্তমানে বড় পর্দায় সিরিজে চুটিয়ে অভিনয় করছেন। তৃণাকে বড় পর্দায় সেভাবে দেখা না গেলেও সিরিজে নিয়মিত মুখ অভিনেত্রী। তবে জনপ্রিয়তার নিরিখে বিচার করা হলে, দুই অভিনেত্রীরই ভক্ত অনেক। তাঁদের মধ্যেই সংঘাতে সরগরম হয়েছিল বিনোদন জগৎ।
ঠিক কী হয়েছিল? 'মাতঙ্গী' ওয়েব সিরিজে অভিনয় করার কথা ছিল সোহিনী এবং তৃণার। তবে শ্যুটিং ফ্লোরে এসেই তৃণা বুঝতে পারেন, অভিনেত্রী সোহিনীর জন্য আলাদা জায়গায় মেকআপ এবং হেয়ার স্টাইলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সোহিনীর ব্যক্তিগত মেকআপ আর্টিস্ট এবং হেয়ার স্টাইলিস্টই থাকছেন অভিনেত্রীর জন্য। এরপরই তৃণা নিজের জন্যও এই সুবিধাই চেয়েছিলেন। প্রযোজক সংস্থা অভিনেত্রীর এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তৃণা তিনি নাকি রেগে গিয়ে সেট ছাড়েন।
এই ঘটনায় কী প্রতিক্রিয়া সোহিনীর? সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানের মাঝে বিরতিতে অভিনেত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'ইগো আমাদের কমবেশি সকলেরই রয়েছে। আমাদেরও রয়েছে। তবে শ্যুটিংয়ের ফ্লোর ছাড়া কোনও সমাধান নয়। আমরা যখন অভিনেতা অভিনেত্রী হয়েছি তখন অনেক কিছু ভুলেই আমাদের ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হয়।'
টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তৃণা সাহা (Trina Saha)। কয়েকটি ধারাবাহিকে অভিনয় করেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমেও অভিনেত্রীর অনেক ফলোয়ার। ফলে দিনের পর দিন তাঁর জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। তবে সম্প্ৰতি অভিনেত্রীকে নিয়ে বিনোদন জগতে সবচেয়ে বেশি চর্চা। 'মাতঙ্গী' ওয়েব সিরিজে কাজ করার কথা ছিল তৃণার। তবে শ্যুটিং শুরুর আগেই শুরু হয় সমস্যা।
একই সিরিজে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকার। তিনি তাঁর মেকআপের জন্য এবং হেয়ারস্টাইলের জন্য বিশেষ সুযোগ পেয়েছেন। তা দেখে, প্রযোজক সংস্থার কাছে তৃণাও আলাদা মেকআপের ব্যবস্থা চেয়েছিলেন। তবে প্রযোজনা সংস্থা থেকে এই ব্যবস্থা করে না দেওয়ায়, রেগে গিয়ে শ্যুটিংয়ের সেট ছাড়েন তৃণা। এই ঘটনা মেনে নিতে পারেননি প্রযোজনা সংস্থা। তৃণার বদলে নতুন অভিনেত্রী নিয়েই কাজ করতে চলেছেন তাঁরা। তবে এই ঘটনার প্রভাব কী পড়তে চলেছে তৃণার কেরিয়ারে?
টলি পাড়ায় কান পাতলেই নাকি শোনা যাচ্ছে, তৃণাকে নিয়ে কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন প্রযোজক এবং পরিচালকেরা। অনেকের মত, প্রযোজক সংস্থার সঙ্গে মনোমালিন্য হতেই পারে, তা বলে শ্যুটিং ফ্লোর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া ঠিক কাজ নয়। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির কথা ভেবেই তৃণাকে নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন পরিচালকেরা।