প্রসূন গুপ্তঃ পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে নানান জল্পনা রয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের মধ্যে। অনেকেই ভেবেছিলেন এ বছর ফেব্রুয়ারিতে হয়তো হতে পারে। তেমনভাবেই প্রচার শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নভেম্বর থেকে কিন্তু সেই আশায় জল ঢালা হয়ে গিয়েছে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ইত্যাদি পরীক্ষা সময়ে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হয়েছেও তাই। এরই মধ্যে দলের সভায় মমতা জানিয়েছিলেন যে, দুয়ারে সরকার থেকে লক্ষীর ভাণ্ডার ইত্যাদি প্রকল্পগুলি নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করতে হবে। কাজের দায়িত্ব নেতা-মন্ত্রী থেকে বিভিন্ন সভাপতিকে পথে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্র। সেই মোতাবেক কাজে নেমেছিলেন তৃণমূল নেতারা। এরই মধ্যে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে।
ত্রিপুরা থেকে সাগরদিঘির উপ-নির্বাচনে অখুশি তৃণমূল সুপ্রিমো। পাশাপাশি সংখ্যালঘু ভোট, যা কিনা মমতার নিশ্চিত ছিল, তা কিন্তু বাম/কংগ্রেসের দিকে কিছু সরে গিয়েছে। ফলে দুয়ারে সরকারের মতো প্রকল্পগুলির প্রচার ৩০ এপ্রিল অবধি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কাজেই নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার, রাজ্য সরকারের অনুমোদন পেলে অনুমোদনের দিন থেকে ২১ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ভোটের দিন ধার্য করতে পারবে। মনে রাখতে হবে এই ভোট কিন্তু রাজ্য সরকার পরিচালনা করবে অর্থাৎ রাজ্য পুলিস দিয়ে ভোট হবে। ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে বিজেপির বিরোধী নেতা কোর্ট-কাছারি করেছিলেন, কিন্তু আদেশ তাঁর বিরুদ্ধেই যায়।
এবারের প্রশ্ন কবে নাগাদ দিন ঠিক হতে পারে। অন্দরের খবর মে মাসে হচ্ছে না বলেই ধারণা। সেক্ষেত্রে জুন মাসে হতে পারে। কিন্তু জুনে হলে কবে নাগাদ হবে। মনে হয়ে প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে। রাজ্যজুড়ে প্রচন্ড দাবদাহ চলেছে এবং অন্য বছরের তুলনায় বেশি গরম এ বছর পড়তে পারে বলেই শোনা গিয়েছে। অন্যদিকে জুনের ৮ তারিখ থেকে এ রাজ্যে বর্ষা শুরু হয়, এই সময়ে কি ভোট সম্ভব? উঠতে পারে প্রশ্ন। তৃণমূলের অন্দরের বক্তব্য দাবদাহে হিট স্ট্রোক হতে পারে, কাজেই গরম একটু না কমলে ভোট দিতেই আসবে না মানুষ। তাঁদের হাতেই ক্ষমতা , তাঁদের ইচ্ছাতেই ভোট।
প্রসূন গুপ্ত: একেকটি ভোট মানে একেক রকম প্রস্তুতি। লোকসভায় প্রচার মানে জাতীয় রাজনীতি। থাকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, চিন-পাকিস্তান কিংবা গত ৫ বছরের সার্বিক প্রতিশ্রুতি পূরণ নিয়ে তরজা। তেমনই বিধানসভায় থাকে রাজ্যের উন্নয়ন, আইন-শৃঙ্খলা, নারী নিরাপত্তা বা কর্মসংস্থান। পুরো বা পৌরসভা মানে এলাকার জল, রাস্তা ইত্যাদি নিয়ে প্রচার। সেরকম পঞ্চায়েত ভোটের সিংহভাগে থাকবে গ্রামের কথা, জমির বা ফসলের কথা এবং অবশ্যই ভূমিহীনদের জন্য অন্য কাজে রোজগারের কথা। তবে ভারত মূলত কৃষি প্রধান এবং শ্রমনির্ভর দেশ। তাই কৃষক এবং শ্রমিক যেদিকে, জয় সেদিকেই হয়ে থাকে। এই হিসাব দেখে সরকারি দল বা বিরোধীরা চেষ্টা করে যেভাবেই হোক বিভিন্ন পঞ্চায়েত দখল করা। দখল করা বললেও কাজটি কঠিন।
প্রতিদিনের লড়াই থেকে এ দেশের কৃষকরা বেঁচে থাকার তাগিদ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করে। ব্যতিক্রম নয় এ বাংলাও। সামনে পঞ্চায়েত ভোট কাজেই উচিত প্রচার অভিযানে সমস্ত দলের নেমে যাওয়া, মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের। তৃণমূল বেশ কিছুদিন হলো প্রচার অভিযানে নেমেছে পক্ষান্তরে। এদিকে এখনও প্রস্তুতিতেই রয়েছে প্রধান বিরোধী বিজেপি। অন্যদিকে কংগ্রেসের প্রচার এখনও শুরুই হয়নি এবং সিপিএম অতি গোপনে তাদের আস্তিনের তাস বের করছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন প্রসারের দায়িত্বে যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহ থেকেই প্রচারে নেমেছেন। খোঁজ নিচ্ছেন সেই অঞ্চলগুলি, যেখানে গত লোকসভা এবং বিধানসভায় তাঁদের দল খুব খারাপ ফল করেছে। যথা ডুয়ার্স বা বাঁকুড়া-পুরুলিয়া। বাঁকুড়ায় লোকসভার দুটি আসনই বিজেপির দখলে, সাথে বিধানসভার অধিকাংশ আসনও। যদিও গত পৌরসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার সবকটি পুর ভবন তৃণমূলের হাতে। কিন্তু পঞ্চায়েতে জয় না আসলে লোকসভায় তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। কাজেই কাল বিলম্ব না করে অভিষেক দুর্বল কেন্দ্রগুলিকে বেছে নিচ্ছেন।
বুধবার বাঁকুড়ার ওন্দাতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক তুরুপের তাস হিসাবে তুলে ধরলেন ১০০ দিনের কাজের কথা। তিনি জানেন, এই বাঁকুড়া জেলা প্রবল গরমে খরার কবলে পরে। তিনি বক্তব্যে জানালেন যে , ধর্ম নয় বাঁচতে গেলে দরকার অর্থ। এই ১০০ দিনের কাজে শ্রমিকরা টাকা পাচ্ছেন না এবং তাই দিল্লিতে দরবার করতে হবে এবং কোটি প্রতিবাদ পত্র নিয়ে তিনি দিল্লিতে যাবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা প্রকল্পে যে বাঁকুড়া অধিবাসী সুবিধা পাচ্ছেন তাও জানালেন অভিষেক যদিও ট্রাম্প কার্ড ওই ১০০ দিনের কাজ।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় রাস্তার বেহাল (Road problem) দশা নিয়ে অভিযোগ আগেই ছিল। এবার হুগলি (Hooghly) ও মুর্শিদাবাদ, দুটি আলাদা জেলার বহু রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে অভিযোগ স্থানীয়দের। অভিযোগ, দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও মেরামত করা হচ্ছে না প্রয়োজনীয় রাস্তা। পথশ্রী প্রকল্প-সহ জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েতের কোনও ফান্ডের মাধ্য়মে তাদের রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) গুধিয়া থেকে মনিহারপুর ঘাট পর্যন্ত সাড়ে তিন কিমি রাস্তায় বেহাল দশা। যার কারণে ধুঁকছে পর্যটনের শহর মুর্শিদাবাদ।
কুড়ি বছর আগে রাস্তাটি নির্মাণ হলেও এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি পাকা রাস্তা। প্রথমদিকে রাস্তার কাজ শুরু হলে সেখানে মোরাম দিয়ে কাজ চালানো হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার বেহাল দশা স্পষ্ট, ফলে কঙ্কালসার রাস্তায় বেড়িয়ে গিয়েছে মাটি। অভিযোগ, 'বর্ষাকালে নাজেহাল অবস্থায় পড়তে হয় স্থানীয়দের।'
ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, 'এই রাস্তায় প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজারের বেশি লোক যাতায়াত করে এবং আশেপাশের দশটির বেশি গ্রাম এই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। স্কুল কলেজ হাসপাতাল থেকে শুরু করে সমস্ত পরিষেবা নিতে গেলে এ রাস্তাটিকে ব্যবহার করতে হয়। ওই সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশায় রয়েছে। সেই কারণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।' স্থানীয়দের একটাই দাবি, রাস্তা ঠিক করতে হবে।
পাশাপাশি অভিযোগ, 'নিম্নমানের মাল সামগ্রী দিয়ে পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তা তৈরি হচ্ছে। রাস্তাটি চওড়ায় ও উচ্চতায় সরকারি পরিকাঠামো অনুযায়ী করছেন না ঠিকাদার। রাস্তা তৈরিতে ব্য়বহৃত বালি-সিমেন্টের পরিমাণ নিয়েও। যার ফলে রাস্তা তৈরির একদিনের মধ্যেই রাস্তায় ফাটল দেখা দিচ্ছে।' এই ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাটের বালি পঞ্চায়েতের জগতপুর এলাকায়। অভিযোগ, 'জগতপুর থেকে সাঁকরা মেলাতলা পর্যন্ত যে দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের মাল সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে। সেই অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করে দেয় গ্রামের মানুষ।' অভিযোগ, 'সেই রাস্তা গ্রামের মানুষের সুবিধার জন্য করে দেওয়া হয়েছে। ওটা কোনো টেন্ডার হয়নি।'
জাতীয় দলের (National Party) তকমা হারানোর পরদিনই পদত্যাগ সাংসদ(Mp) লুইজিনহোর। তৃণমূল (Tmc) সূত্রে খবর, মঙ্গলবার তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ লুইজিনহো ফেলেইরো রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিলেন। সূত্রের খবর, জাতীয় দলের মর্যাদা হারানোর পরদিনই, তিনি উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন জগদীপ ধনখড়ের দফতরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আসেন। ইস্তফা দেওয়ার খবর স্বীকারও করে নিয়েছেন ফেলেইরো।
সূত্রের খবর, ২০২১ সালের কংগ্রেস ছেড়ে ফেলেইরো নাম লেখান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে। ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সদবদলে তৃণমূলে যোগদান করেন ফেলেইরো। নভেম্বর মাসেই তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন তিনি। পাশাপাশি সর্বভারতীয় সংগঠনে তাঁকে সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় জানানো হয়েছিল, রাজ্যসভার সাংসদ হলেও, গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফেলেইরো ভোটে লড়েননি। তৃণমূল সূত্রে খবর, ফেলেইরোর ইস্তফা প্রসঙ্গে কোনও খবর ছিল না তৃণমূলের কাছেও।
আজ অর্থাৎ সোমবার দুপুর ৩টের সময় রাজ্যের, সমস্ত যুব এবং মাদার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা ও ব্লক, সভাপতিদের নিয়ে ভার্চুয়াল মিটিং করবেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। আর কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হবে এই মিটিং। এই ভার্চুয়াল মিটিং পঞ্চায়েত ভোটের আগে, দলের নিচু স্তরে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
এখনও দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও দ্রুত পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পর্কে ঘোষণা করতে পারে রাজ্যের নির্বাচন কমিশন৷ সেই কারণে শাসক-বিরোধী সবপক্ষই নির্বাচনের প্রস্তুতিতে পুরোপুরি লেগে পড়েছে৷ আর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সোমবার জরুরি সাংগঠনিক বৈঠকে বসতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ তৃণমূল সূত্রে খবর মিলেছে, সমস্ত জেলার জেলা সভাপতি, বিধায়ত ও ব্লক সভাপতিরা থাকবেন সেই বৈঠকে৷ সেখানেই নির্বাচনের একাধিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে৷
এছাড়া আলিপুরদুয়ারে দলীয় সভা থেকে তিনি ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ১ কোটি চিঠি প্রদান করবেন তিনি। এই মিটিংয়ে কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনাকে হাতিয়ার করে স্বাক্ষর গ্রহণ ও পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি শুরু করবেন বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। এছাড়া এ ধরণের মিটিংয়ে দলের নিচু স্তর ও সাধারণ মানুষের মধ্যেও যে জনসংযোগ বাড়বে সেটা বলাই বাহুল্য।
পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার আগেই ক্যানিংয়ে (Canning) বিধায়কের নেতৃত্বে দেওয়াল লিখন তৃণমূলের (TMC)। রাজ্যে এখনও ঘোষণা হয়নি পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ। কিন্তু তার আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিংয়ে ভোটের প্রচার ও দেওয়াল লিখন শুরু করল তৃণমূল।
জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে ক্যানিংয়ের দীঘিরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাসের হাত ধরে শুরু হল দেওয়াল লিখন। সঙ্গে দিনভর চলেছে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারও। এদিন সকালে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিধায়ক ক্যানিং এলাকার বেশ কয়েকটি দেওয়ালে দলের প্রতীক চিহ্ন নিজেই আঁকেন। পাশাপাশি প্রখর রোদ উপেক্ষা করে একটি মিছিলও করেন দলের কর্মীদের নিয়ে।
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ভালো ফল করবে বলে আশাবাদী বিধায়ক। রবিবার ভোটের প্রচার ও দেওয়াল লিখনের সময় বিধায়ককে রাস্তা ও জলের দাবিও জানানো হয় এলাকার সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে। এমনকি সেই দাবি দ্রুত মেটানোর প্রতিশ্রুতিও দেন বিধায়ক।
এই বিষয়ে বিধায়ক পরেশরাম দাস বলেন, "একটি রাস্তা উদ্বোধন করতে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে তৃণমূলের কর্মীদের দেওয়াল লিখন ও প্রচার করতে দেখি। তারপরই আমি গাড়ি থেকে নেমে তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে কয়েকটা দেওয়াল লিখেছি। এমনকি দলের হয়ে গ্রামের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটও চেয়েছি।"
পাঁচ বছর ধরে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বহরমপুরের হাতিনগর অঞ্চলে এলাকার দীর্ঘ দুই কিলোমিটার রাস্তায় বেহাল (Road Problem) অবস্থা। অভিযোগ, পথশ্রী প্রকল্প চালু হলেও সেখানে নাম আসেনি হাতিনগর অঞ্চল এলাকার। স্থানীয়দের একটাই দাবি রাস্তার বেহাল অবস্থা ঠিক করতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষাকালে রাস্তায় এত পরিমাণ জল জমে যায় যে, স্কুলপড়ুয়ারা (School Students) ওই রাস্তা দিয়ে স্কুল যাওয়ার পথে জল-কাদা মেখে আবার বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়। এমনকি রাস্তা দিয়ে কোনো গাড়ি গেলেই রাস্তার আশেপাশের বাড়িগুলিতে ধুলোবালি ঢুকে যায়। হাতিনগর অঞ্চলের এই রাস্তার উপর নির্ভর করে রয়েছে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল। যার কারণে এলাকাবাসীরা প্রতিনিয়ত সমস্য়ার সম্মুখীন হচ্ছে।
অভিযোগ, বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সমস্য়ার সমাধান মেলেনি। স্কুল কলেজ ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র এই রাস্তার উপর দিয়ে যেতে হয়। আশেপাশের বেশ কয়েকটি কারখানা রয়েছে। মালপত্র আনতে নিতে অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। বর্ষাকালে একহাঁটু পর্যন্ত জল জমে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এই এলাকার উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই রাস্তা। কবে ঠিক হবে রাস্তা সেই অপেক্ষায় রয়েছে এলাকাবাসী।
তৃণমূলের (TMC) বুথ কমিটির সভা শেষে চললো গুলি। গুলিবিদ্ধ চার জনের মধ্যে মৃত ২। দলুয়া হাসপাতাল থেকে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে (Islampur Hospital) আনার পথে এক গুলিবিদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। অপর গুলিবিদ্ধকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে (North Bengal Medical College) নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে চোপড়ার দিঘাবানা এলাকার এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে। জানা গিয়েছে, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayet Vote) টিকিট পাওয়াকে কেন্দ্র করেই শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ। গুলিতে আরও কয়েকজনের জখম হওয়ার খবর মিলেছে। মৃত দু'জনের নাম হসু মহম্মদ ও ফইজুল রহমান।
জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী হিসেবে নাম ছিল ফইজুল রহমানের। যার জেরেই শুরু এই দ্বন্দ্ব। এমনকি সেই দ্বন্দ্বকে ঘিরেই চলেছে এই গুলি। যাঁরা গুলি চালিয়েছে এবং যারা মারা গিয়েছে; দু'পক্ষই শাসক দলেরই কর্মী। এমনটাই নাকি মৃতের পরিবারের অভিযোগ। মৃতের পরিবারের আরও অভিযোগ, 'মূলত পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট পাওয়াকে কেন্দ্র করেই এই দ্বন্দ্ব।'
ইতিমধ্যেই চোপড়ার দিঘাবানা এলাকায় বিশাল পুলিসবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কারা কারা এই হামলায় জড়িত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। এমনটাই পুলিস সূত্রে খবর।
ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা আন্দোলন (DA Agitation), নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড, স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে লাগাতার ধর্না আন্দোলন। পাশাপাশি সাগরদিঘির (Sagardighi Bye Poll) ফল এবং একের পর এক তৃণমূল নেতার (TMC Leader) জেল যাত্রা। এই আবহে সামনেই কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote)। আর তাই অনুব্রত-হীন বীরভূমের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। যেহেতু বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই দলের ত্রুটি-বিচ্যুতি ঢাকতে তৃণমূলকে এবার বাড়তি সময় দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটের বৈঠকে (Kalighat Meeting) এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, জেলা ধরে ধরে প্রতি শুক্রবার হবে সাংগঠনিক বৈঠক। এদিন দলের সুপ্রিমো একাধিক দায়িত্ব ভাগ করে দেন। আগামি পঞ্চায়েত ভোট ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ার ডাক দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিনের বৈঠকে যুব সংগঠন শক্তিশালী না করতে পাড়ার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। এদিন সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, মালা রায় এবং বিধায়ক অতীন ঘোষ, পরেশ পালকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন মমতা। পুরনো ফরম্যাট মেনে জেলাভিত্তিক পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব এদিন ভাগ করে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জেলা দেখার দায়িত্বে গৌতম দেব। কোচবিহার জেলা বিশেষভাবে দেখার জন্য পার্থপ্রতিম রায়, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং উদয়ন গুহকে নির্দেশ। সাগরদিঘি ভোটের প্রভাব তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলে। তরুণ মোশারফ হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংখ্যালঘু সেলের সভাপতির দায়িত্ব। উত্তর দিনাজপুর মালদা-মুর্শিদাবাদ দেখার দায়িত্বে দুই সংখ্যালঘু মুখ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ও মোশারফ হোসেন।
বিশেষ দায়িত্বে রয়েছেন সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও। দক্ষিণ দিনাজপুর দেখবেন তাপস রায়, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়ার দায়িত্বে মলয় ঘটক। মানস ভুঁইয়া দেখবেন দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা। জানা গিয়েছে, ফিরহাদ হাকিম দেখবেন হাওড়া-হুগলি, উত্তর দিনাজপুর আর বীরভূম দেখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। বর্ধমান, দার্জিলিংয়ের সঙ্গে নদীয়া জেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে অরূপ বিশ্বাস। এই প্রসঙ্গে দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান , এঁরা কেউ অবজারভার নয়। এঁদের উপর সংগঠন দেখার দায়িত্ব।
প্রসূন গুপ্ত: শুক্রবার কালীঘাটে নিজের বাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিশেষ সভা ডেকেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যেক বিধায়ক, সাংসদ ও বিশিষ্ট নেতাদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মূলত তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বক্তা ছিলেন। আশা করা গিয়েছিল তিনি হয়তো বিশেষ বার্তা দেবেন, হলো তাই। তাঁর বিশেষ বার্তার মধ্যে অন্যতম, রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পের প্রচার যাতে প্রতি ঘরে পৌঁছয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
মমতা সাগরদিঘি থেকে পঞ্চায়েত হয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তথা দলের ভাবমূর্তি নিয়েই কথা বলেছেন বলেই সূত্রের খবর। তিনি পরিষ্কার জানান, 'প্রতি মাসে তিনি জেলা ধরে ধরে পর্যালোচনা বৈঠক করবেন। জেলার সর্বস্তরের সমস্যা দেখবেন নিজেই। দলের মধ্যে কোনও বেচাল সহ্য করা হবে না।'
তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব ইমেজ আজকেও স্বচ্ছ, তিনি অতি সাধারণ জীবনযাত্রা করেন। তাঁর সততার ভাবমূর্তি আজকেও অটুট, কাজেই তিনি চান সকলের মধ্যে সেই পরিবেশ আসুক। অন্যথায় দল থেকে বেড়িয়ে যেতে পারেন। এই বার্তাও ঠারেঠোরে দিয়েছেন দলের সুপ্রিমো।
তিনি জানান, 'আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে হবে একসঙ্গে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানা হবে না।' তিনি পরোক্ষে নাকি জানান, 'সাগরদিঘি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ভোট বিচার করা যায় না। আজকেও সংখ্যালঘু ভোটাররা তাঁর সঙ্গেই আছে। তাঁর কাছে ধর্মের কোনও ভেদাভেদ নেই। তিনি যেমন সংখ্যালঘু উন্নয়নে কাজ করছেন সেভাবেই চালিয়ে যাবেন। সংখ্যালঘু বন্ধুরা যদি বিদেশযাত্রা করতে চান তবে তারও ব্যবস্থা করা হবে। সমস্যা হলে তিনি বিষয়টা নিজেই দেখবেন।'
এছাড়া সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তিনি সম দূরত্ব বজায় রাখবেন বিজেপি ও কংগ্রেস থেকে। তিনি মনে করেন, বিজেপি চাইছে রাহুল বিরোধী মুখ হোক এতে পদ্মশিবিরের সুবিধা। তবে তিনি এও জানান, 'যে যে রাজ্যে যে দল অধিক শক্তিশালী তিনি তাদেরই সহযোগিতা করবেন।' এবিষয়ে তাঁর সঙ্গে এসপি নেতা অখিলেশ যাদবের কথা চলছে। অন্যান্য দলের কথাও উল্লেখ করেন যথা বিজু জনতা দল। ২৩ মার্চ ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার বৈঠক হওয়ার কথা। অর্থাৎ কোথাও ভোটের আগে দলের ব্যাটন নিজের হাতেই রাখলেন মমতা।
পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) দিন ঘোষণার জট কাটলো না। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার উপর স্থগিতাদেশ বাড়ালো কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি। শুক্রবার পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ালো কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। শুনানি শেষ না হওয়ায় বাড়ানো হলো মেয়াদ। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) হলফনামাই গ্রহণ করলো না ডিভিশন বেঞ্চ।
অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবিতে সরব রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। ইতিমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রস্তুতি শুরু করেছে সবকটি রাজনৈতিক দল। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে চলতি বছরের পঞ্চায়েত ভোট চেয়ে সরব প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তারা অবাধ-শান্তিপূর্ণ ভোটের দাবিতে দ্বারস্থ হাইকোর্টের। সেই আবেদনের উপরেও চলছে শুনানি। এখন রাজ্য রাজনীতির কারবারীরা তাকিয়ে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের দিকে। সূত্রের খবর, কোর্টের নির্দেশ নিয়েই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরে প্রাক-ভোট প্রস্তুতিতে নামতে পারে নির্বাচন কমিশন।
ভাঙড়ের (Bhangar) আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে (Naushad Siddiqui) আটকাতে শওকত মোল্লাকে বিকল্প হিসেবে তুলে ধরছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। ক্যানিং পূর্বের (Canning Purba) বিধায়ককে এভাবে ভাঙড়ে নিয়ে এসে আরাবুল-কাইজারদের মাথায় বসানোয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত পাচ্ছে রাজ্য রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা, ভাঙরের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভায় কি আইএসএফ-কে আটকাতে ব্যর্থ আরাবুল ও কাইজার জুটি?
জানা গিয়েছে, শওকতকে ভাঙড়ের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়ায় একদমই খুশি নয় আরাবুল ও কাইজার। যদিও শনিবার শাসক দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির বাড়িতে বৈঠক হয়েছে ভাঙর প্রসঙ্গে। শওকত মোল্লা ছাড়াও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আরাবুল এবং কাইজার। কিন্তু ভাঙর তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, জোর করে তাঁদের মাথায় বসানো হল শওকত মোল্লাকে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে কি ভাঙড়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বাড়বে? ঘুরিয়ে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল আরাবুল ইসলামকে। তিনি স্পষ্ট জানান, 'ভাঙড়ে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি আমাদের মতো করেই নেব।' সংখ্যালঘু ভোট কি তৃণমূলের থেকে সরছে? এই প্রশ্নের জবাবে জানান, 'এরম কোনও ব্যাপার নেই।' একইভাবে ভাঙড়ের অপর এক তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদকে বৈঠকের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, 'কী আলোচনা, বাইরে সংবাদ মাধ্যমকে বলা বারণ রয়েছে। দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা মেনে নিয়েছি। বসে শুধু আলোচনা খাওয়া-দাওয়া হয়েছে।'
এদিন বৈঠক সেরে বেড়িয়ে শওকত মোল্লা বলেন, 'আইএসএফ জেতার পর ভাঙড়ে উন্নয়ন স্তব্ধ। আমরা সবাই একসঙ্গে নজর দেব সার্বিক শান্তি ও উন্নয়নে। সেভাবেই রাজ্য সভাপতি আমাদের নির্দেশ দেন। দলকে সাংগঠনিক ভাবে আরও শক্তিশালী করার দায়িত্ব সবার উপর পড়েছে। ভাঙরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে কোনও শব্দ নেই। আমরা সবাই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী।'
এখন একটি প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে শওকত কি পারবে গোষ্ঠী কেন্দল সামাল দিতে? কারণ একসময় দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাম নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন এই শওকত মোল্লা। ডান হাত ছিলেন তৎকালীন বাম নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার। তখন তাঁর সঙ্গে জোর লড়াই ছিল এই আরাবুল-কাইজারদের। সেই পুরনো শত্রুতা ভুলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে কি সম্ভব একসঙ্গে কাজ করা?
সেতু ও রাস্তার (Road-Bridge) দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক গ্রামবাসীদের। পাকা সেতুর দাবিতে রীতিমতো ব্যানার টাঙিয়ে ভোট বয়কটের (Vote Boycott) ঘোষণা। বালুরঘাট (Balurghat Block) ব্লকের জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট দেউড়া গ্রামের ঘটনা। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগেই ভোট বয়কটের ডাক ছোট দেউড়া গ্রামের বাসিন্দাদের।
জানা গিয়েছে, গত বিধানসভা ভোটেও সেতু-রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করেছিল ছোট দেউড়া গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের দাবি, গত বিধানসভা ভোটে প্রশাসন পাকা সেতু ও রাস্তা নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছিল। তবে সেই প্রতিশ্রুতি আজও পূরণ করেনি প্রশাসন। তাই এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগেই ফের ভোট বয়কটের পথে নেমেছেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, সেতু ও রাস্তা না থাকায় প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তাদের দাবি, এখন খাড়িতে জল কম থাকায় বাঁশের সেতু দিয়েই চলাচল করতে হয়। তবে বর্ষাকালে তাতে জল ভরে গেলে খাড়ি পারাপার করতে সমস্যায় পড়তে হয়। যার জেরে বন্ধ হয়ে যায় গ্রামের বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া।
এমনকি বর্ষাতে সেতু না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় অসুস্থ রোগীদেরও। অভিযোগ, বারবার বি়ডিও-র দারস্থ হয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা। এমনকি বারবার বিডিও গ্রামবাসীদের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেতু-রাস্তার কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এখনও তৈরি হয়নি কোনও রাস্তা-সেতু।
এলাকার বিজেপি নেতা বুধন মার্ডি জানান, আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে ভোট বয়কটকে সমর্থন করি না। তবে গ্রামবাসীদের রাস্তা ও সেতুর দাবি ন্যায্য। বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ গ্রামবাসীদের দাবি মেনে এলাকার রাস্তা ও ব্রিজের কাজ দ্রুত শুরু করা।
জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান গোপাল মুর্মু জানান, 'পঞ্চায়েত থেকে ঢালাই রাস্তা করে দেওয়ার কথা হয়েছিল। তবে গ্রামবাসীরা পিচ রাস্তার দাবি জানায়। যার জেরেই রাস্তার কাজ হয়নি। বর্তমানে রাস্তা ও ব্রিজের জন্য ওই তহবিলে টাকা ঢোকার কথা আছে, টাকা এলেই দ্রুত কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।'
সোমবার উত্তর-পূর্বের দুই রাজ্যের ১১৯টি আসনে চলছে ভোট গ্রহণ। ৬০ আসন বিশিষ্ট মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডের ৫৯টি আসনে সকাল থেকে শুরু ভোটগ্রহণ। জানা গিয়েছে সেভেন সিস্টার্সের আওতাভুক্ত এই দুই রাজ্য মিলিয়ে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৫৫২ জন। ভোটগ্রহণ শুরু বিকেল ৪টে পর্যন্ত এবং ভোটগণনা হবে ২ মার্চ। সকাল ৯টা পর্যন্ত মেঘালয়ে ভোট গ্রহণ প্রায় ১১ শতাংশ আর নাগাল্যান্ডে ভোট গ্রহণ প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ।
মেঘালয়ে গত পাঁচ বছর ন্যাশানাল পিপলস পার্টি বা এনপিপি এবং বিজেপির জোট সরকার চলেছে। কিন্তু এবার ভোটে পৃথক ভাবে লড়ছে দুই দল। এদিকে ত্রিপুরার পর প্রথমবার মেঘালয়ের ভোটে অংশ নিয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। অন্যদিকে নাগাল্যান্ডে জোট করে লড়ছে বিজেপি। এনডিপিপি-র সঙ্গে জোট করে লড়ছে পদ্মশিবির।
এদিকে, সোমবার ভোট শুরু হওয়ার পরেই ‘কংগ্রেসকে সুযোগ দিন’ বলে দুই রাজ্যের ভোটারদের কাছে আর্জি করেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। পাশাপাশি দলে দলে এসে ভোট দিতে, মেঘালয়-নাগাল্যান্ডের নতুন ভোটারদের টুইটবার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তবে নাগাল্যান্ডের ভোট হিংসা এড়াতে পারেনি। ভোটকেন্দ্রে চলা গুলিতে আহত এক এনপিপি সমর্থক।
অভিযোগ, বুথের ভিতরেই এনপিপি সমর্থককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন এক এনপিএফ সমর্থক। ওই বুথে ভোটগ্রহণ কিছু সময়ের জন্য স্থগিত থাকলেও আবারও শুরু ভোটগ্রহণ। এখন সেভেন সিস্টার্সের তিন রাজ্য ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড এবং মেঘালয়ে ২ মার্চ ফল ঘোষণা। মানুষের রায় কোনদিকে যায়, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
প্রসূন গুপ্ত: সোমবার নাগাল্যান্ড এবং মেঘালয়ের ভোট। আর কয়েক ঘণ্টা পর সমস্ত দলের প্রচার শেষ হবে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট। ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকেই শুরু হয়ে যাবে বিভিন্ন চ্যানেলের বুথ ফেরত সমীক্ষা। অবশ্য সারা ভারতের মিডিয়ার নজরে কিন্তু ত্রিপুরা। নাগাল্যান্ড বা মেঘালয়ে মিলিজুলি সরকারের রাজ্য ছিল এবং এই দুই রাজ্যে বিজেপি কিন্তু সহযোগী দল সরকারের। কিন্তু ত্রিপুরায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপি কাজেই দেখার বিষয় তারা তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে কিনা।
ত্রিপুরার অন্দরে কিন্তু সবকটি দল ইতিমধ্যে প্রচার মাধ্যমের কাছে দাবি করেছে যে তারা ক্ষমতায় আসছে, কিন্তু সেসব তো রাজনৈতিক কথা। আসল পরীক্ষা তো ২ মার্চে সকাল ৯টা থেকে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই।
বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জানিয়েছেন যে ভোট সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে এবং রাজ্যের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছে। ফলে বিজেপির ফের ক্ষমতায় আসাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা | মানিকবাবু মিষ্টিভাষী মানুষ, ধৈর্য্য ধরে মিডিয়ার নেতিবাচক প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেন। তাঁর একটাই কথা , আমার ফিরে আসছি।
ত্রিপুরার জনপ্রিয় নেতা তথা কংগ্রেসের সুদীপ রায় বর্মন সরাসারি সিএন পোর্টালকে জানালেন যে এবারের ভোট বিজেপির বিদায় আসন্ন। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ক্ষমতায় জোট নাকি জোটের সঙ্গে তিপরা মোথাও থাকবে? ইঙ্গিতপূর্ণ উত্তর দিলেন সুদীপ। জোট ক্ষমতায় আসবে কিন্তু ত্রিপুরার মহারাজ প্রদ্যোত দেববর্মার ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না।
শুক্রবার মিডিয়ার মুখোমুখি হলেন সিপিএম প্রার্থী তথা ত্রিপুরা সিপিএমের সম্পাদক জিতেন চৌধুরী। তিনি বললেন, ফলের আগে কোনও কথা বলাটা উচিত না হলেও জোটটির ক্ষমতায় আসাটা নিশ্চিত। তিনি বললেন, ভোট দিতে বাধা দেওয়া হলে সাধারণ মানুষ পথে নেমে প্রতিবাদ করে ভোট দিয়েছে। তাঁর ধারণা ৯০% বেশি মানুষের ভোট পড়েছে এটি নাকি সরকার বিরোধের লক্ষণ। তবে জিতেনবাবু কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন | এখন অপেক্ষা ২ মার্চ অবধি। (পরের পর্ব দেখুন)