একদিকে যখন শিক্ষামন্ত্রীকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর সুপারিশ করল রাজ্যপাল, অন্যদিকে তখন বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতিতে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত চরমে। সম্প্রতি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকরী উপাচার্য রজত কিশোর দে-কে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়। মূলত সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে রাজভবন। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়, রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতরের বেআইনি আদেশে যে সকল উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ স্তব্ধ করে করে রেখেছেন, আচার্য তাঁদের সতর্ক করছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ‘ক্ষমতা কুক্ষিগত’ করতে চাইছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে সেখানে।
রাজভবনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উপাচার্যেরা যে সব নির্দেশ দিয়েছিলেন, আচার্য তা ক্ষমতাবলে রদ করে দিচ্ছেন। এ নিয়ে অবশ্য টুইট কটাক্ষ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এরপরেই রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার রাজ্যকে সুপারিশ করে নির্বাচনী আইন বিধি লঙ্ঘন করার জন্য ব্রাত্য বসুকে যেন শিক্ষামন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী টুইটে কটাক্ষ করে লেখেন, ‘‘আমি রাষ্ট্রপতির কাছে যদি রাজ্যপালকে সরানোর সুপারিশ করতাম, তা হলে সেটা যেমন হাস্যকর হত, এটাও ঠিক তেমনই। আমি কোনও নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করে থাকলে তা কমিশনের নজরে আনার অধিকার রয়েছে রাজনৈতিক দলের। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কোনও রাজ্যের মন্ত্রীর অপসারণ বা নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেন একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজ্যপাল এমন অভিযোগ তুলে নিজের সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার করছেন। নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ও প্রকাশ্যে এনেছেন। নিজের সাংবিধানিক সীমাও লঙ্ঘন করেছেন।’’
লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসল রাজভবন। শনিবার জলদর্শন কর্মসূচি শেষে রাজ্যপাল বোস, রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, বাংলায় কোনভাবেই হিংসা এবং দুর্নীতি বরদাস্ত করবেন না। পঞ্চায়েত-এর রেশ টেনে তিনি আরও বলেন, এরাজ্যে মানুষের রক্তে আর কোনও রাজনৈতিক হোলি খেলতে দেবেন না।সূত্রের খবর, ভোটপর্বে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজভবনের তরফে রাজ্য পুলিসকে পরিচিত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারির নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েতের হিংসা রুখতে রাজভবনে একটি পিস রুম চালু করা হয়। সেই পিস রুমের মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে পাওয়া দুষ্কৃতীদের তালিকা তৈরি করা হয়।ইতিমধ্যে, সেই তালিকাও গোপনে রাজ্য পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুষ্কৃতীদের শণাক্ত করতে রাজভবন সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত চালাচ্ছে।এমনটাই সূত্রের খবর।
ভোট ঘোষণা হয়নি, তার আগেই বঙ্গ সফর করে জনসভা প্রধানমন্ত্রীর। প্রাক্-নির্বাচনী এই জনসভায় পয়লা এবং দোসরা মার্চ আরামবাগ এবং কৃষ্ণনগরে গুচ্ছ কর্মসূচি নরেন্দ্র মোদীর। এবারই প্রথম রাজনৈতিক কাজে বাংলায় রাত্রিবাস প্রধানমন্ত্রীর। পয়লা মার্চ রাজভবনে রাত্রিযাপন করে দোসরা মার্চ কৃষ্ণনগরের জনসভা শেষে রাজ্য ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী। রাজভবনে রাত্রিবাসকালে বিজেপির কোনও প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করবে কি, সেই প্রশ্ন উঠছে। দুই দিনের জনসভায় বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের কাছে কী বার্তা রাখবেন নরেন্দ্র মোদী, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ওয়াকিবহাল মহল।
রামকৃষ্ণ মিশনের অনুষ্ঠানে এর আগে বাংলায় রাত্রিবাস করেন প্রধানমন্ত্রী। এবার রাজনৈতিক কর্মসূচিই পাখির চোখ নরেন্দ্র মোদীর, এমনটাই সূত্রের খবর। বাংলায় যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে, সে আবহে আসতে বাধ্য হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, এমনটাই দাবি বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের। বাংলার মহিলাদের পাশে থাকতে বঙ্গ সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী, মন্তব্য দিলীপ ঘোষের।
এদিকে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে রাজ্যের প্রচারের জন্য এলো বিশেষ গাড়ি। এই গাড়ি করেই নির্বাচনী রোড শো করবেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, পয়লা মার্চেই বঙ্গ বিজেপির জন্য নির্বাচনী রোড ম্যাপ তৈরি করে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। লোকসভা ভোটের আগে বাংলার শাসক দল তৃণমূলকে আক্রমণে কী রণকৌশল বিজেপির, পথ কি বাতলে দেবেন নরেন্দ্র মোদী?
রাজ্যপালের নিমন্ত্রনে রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন অসুস্থতার পর রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন মুখ্যমন্ত্রী। সৌজন্য সাক্ষাৎ হলেও রাজ্যপালের সঙ্গে বেশ কিছু প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পরে বৈঠকে। একদিকে যখন রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত অব্যাহত সেই সময়ে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে আর এন টেগোর হাসপাতাল থেকে রুটিন চেকআপ সেরে সোজা রাজ ভবনে এলেন তিনি। রাজভবনে বেশ কিছুক্ষন রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেই সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে আলোচনা হতে পারে দুদিনের বিধান সভা অধিবেশন নিয়েও। আগামী ৭ ও ৮ নভেম্বর বসছে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন। ওই অধিবেশনে আসতে চলেছে দুটি গুরুত্বপূর্ন বিল। প্রথম, বিধায়ক দের ভাতা বৃদ্ধি এবং জি এস টি নিয়ে কেন্দ্রীয় আইন কে সম্মতি দেওয়া। এই দুটো বিল নিয়েও রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
আজই কলকাতা নামছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ফলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। একদিকে রাজ্যপাল ছিলেন দিল্লি সফরে। অন্যদিকে রাজ্য পালের সঙ্গে দেখা করে ১০০ দিনের বকেয়া টাকার দাবিতে জনসাধারণের চিঠি তারই হাতে তুলে দেবেন বলে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের বকেয়া টাকা ও আবাস যোজনার বকেয়া টাকার দাবিতে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল তৃণমূল। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করা নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। সেখানেই অর্থাৎ দিল্লির কৃষি ভবন থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সমস্ত সাংসদের। এরপরেই দিল্লি থেকে কলকাতার রাজভবন অভিযান কর্মসূচি ঘোষণা করে অভিষেক। চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার কলকাতা অভিযানে নেমে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনের সামনেই ধরনায় বসেন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তার হাতে চিঠি তুলে দেবেন বলে।
ওদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আবেদনে সাড়া দিয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করতে দার্জিলিং আসার জন্য অনুরোধ করেন রাজ্যপাল। এরপর তার আবেদনে সাড়া দিয়ে তৃণমূলে তিন প্রতিনিধি সহ একটি দল অর্থাৎ মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও দুই সংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্র দার্জিলিংয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। গতকাল অর্থাৎ শনিবার এই বৈঠকের পরে আজ অর্থাৎ রবিবারে কলকাতা আসতে চলেছেন রাজ্যপাল বোস। সূত্রের খবর সন্ধ্যা সাতটা দশ মিনিটে তিনি কলকাতায় এসে পৌঁছাবেন। এ অবস্থায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার যে সাক্ষাৎ তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে গোটা রাজনীতি মহলে।
কথামতো রাতভর ধরনা মঞ্চেই কাটালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি থেকেই রাজভবন অভিযানের ঘোষণা করেছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার অর্থাৎ গতকাল বিকেলে রাজভবন অবধি তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের নিয়ে একটি মিছিল আয়োজন করে তৃণমূল। দায়িত্ব ছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর। রাজভবন ওই মিছিল পৌঁছানোর পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে যতক্ষণ অবধি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা না হচ্ছে ততক্ষণ তিনি ওখানেই ধরনা দেবেন। এবং তিনি সেখানেই ঘোষণা করেন কোনও ভাবেই তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা না করে রাজভবন ছাড়বেন না।
এরপর যে কথা সেই কাজ, রাতভর ধর্নামঞ্চেই কাটালেন অভিষেকরা। রাত বাড়লে ধর্নামঞ্চেই হল গানও। দিল্লিতে ‘হেনস্থা’র প্রতিবাদে অভিষেক ঘোষণা করেছিলেন, বৃহস্পতিবারের ‘রাজভবন চলো’ কর্মসূচির কথা। ঠিক ছিল, মিছিল করে এসে কেন্দ্রের প্রতিনিধি অর্থাৎ রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁকেই স্মারকলিপি দেবে তৃণমূল।
কিন্তু বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে উত্তরবঙ্গে এসে বন্যা পরিস্থিতি দেখে আবার দিল্লিতেই ফিরে যান রাজ্যপাল, রাজভবনে না ফেরায় তাঁর সঙ্গে দেখাও হয়নি অভিষেকদের। এরপরই অভিষেক জানিয়ে দেন, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা না করা পর্যন্ত ধরণা চলবে। ওদিকে ফাঁকা রাজ ভবনের সামনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরণা কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছে বিরোধী শিবির। তাদের দাবি ফাঁকা রাজভবনের সামনে ধরণা করে তিনি লোককে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন। এতে কোন লাভ হবে না। এছাড়া বিজেপির তরফ থেকে বিজেপির মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য জানান, লোকসভা ভোটে মানুষকে ফের বোকা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে আদতে ১০০ দিনের টাকা ও আবাস যোজনা, সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতিতে যুক্ত তৃণমূল। এ অবস্থায় মানুষকে বোকা বানাতে এ ধরনের ধরণা, প্রতিবাদ, করছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল।
দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ও বকেয়া টাকার দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল তৃণমূল। সেখানে দিল্লি পুলিসের অত্যাচারের বিরুদ্ধে দিল্লি থেকেই কলকাতার রাজভবন অভিযান ঘোষণা করে তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা না করে যাবেন না বলে রাজমহলের সামনেই ধরনায় বসলেন তিনি। সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন রাজ্যপাল। সে কারণেই তিনি উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, তৃণমূলের রাজভবন অভিযানের জন্যই তিনি পালিয়ে গিয়েছেন।
যদিও উত্তরবঙ্গ থেকে রাজ্যপাল বোস তৃণমূলের এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দেন। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার তৃণমূল কর্মীসহ তৃণমূল উচ্চ নেতৃত্ব রাজভবন অভিযান কর্মসূচি গ্রহণ করে। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই এই কর্মসূচির জন্য পথে নামে তৃণমূল। এরপর সেই মিছিল রাজভবনে পৌঁছলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে তিনি সেখানে ধরনায় বসছেন এবং সেখান থেকে তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা না করে যাবেন না।
'ওঁরা ঠিকই বলছেন, হ্যাঁ পালিয়েই তো এসেছি। দিল্লি থেকে পালিয়ে এসেছি।' সংবাদমাধ্যমকে ঠিক এমনই জবাব দিলেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, রাজভবন অভিযানের কথা পূর্বেই ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। দিল্লিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিসের ব্যাবহার, এবং অভিষেক সহ অন্যান্য সাংসদদের আটক করার অভিযোগে দিল্লি থেকেই রাজভবন অভিযানের ডাক দেয় অভিষেক। অথচ এই দিনেই রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গে, বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়েছেন।
এরই পাল্টা, রাজভবন অভিযানের দিনই তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তাঁদের কথায়, রাজ্যপাল 'পালিয়ে' গিয়েছেন। এদিন, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তারও জবাব দিলেন সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের বন্যা প্রবন এলাকা গুলি ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। মানুষ ভোগান্তির শিকার। এরপরেই সাংবাদিকরা রাজ্যপালকে প্রশ্ন করেন, তৃণমূলের মন্তব্য নিয়ে, এরই পাল্টা রাজ্যপাল বলেন, 'ওঁরা ঠিকই বলছেন, হ্যাঁ পালিয়েই তো এসেছি। দিল্লি থেকে পালিয়ে এসেছি। যখনই শুনেছি, বাংলার মানুষ সমস্যায় রয়েছেন, তখনই আমি পরের ফ্লাইট ধরে দিল্লি থেকে পালিয়ে এসেছি। এটা একদম ঠিক। '
একদিকে অভিষেকের রাজভবন অভিযান, অন্যদিকে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে পরিদর্শনে রাজ্যপাল। ফলে এ অবস্থায় অভিষেকের রাজভবনে অভিযানে কোনও রকম প্রভাব পড়বে কিনা উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে এঅবস্থায় রাজ্যপালের দেখা পাবেন কি অভিষেক।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ১০০ দিনের বকেয়া টাকা ও আবাস যোজনার বকেয়া টাকার দাবিতে আন্দোলনে দিল্লিতে কর্মসূচি গ্রহণ করে তৃণমূল। তৃণমূলের অবস্থান বিক্ষোভে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্য সাংসদদের গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। দিল্লির মুখার্জিনগর থানা থেকে ছাড়া পেয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় রাজভবন অভিযানের ঘোষণা করে। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ৪০ জনের একটি দল রাজভবন যাবে, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে।
ওদিকে রাজ্যপাল এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গে ও সিকিম সংলগ্ন এলাকায় ধস ও বন্যা বিধস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যপালের সঙ্গে কি দেখা মিলবে অভিষেকের! সেটাই প্রশ্ন। যদিও অভিষেক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটে নাগাদ রবীন্দ্রসদনে জমায়েত হয়ে সেখান থেকেই রাজভবনের উদ্দেশে রওনা দেবেন ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি প্রতিনিধি দল। অভিষেক জানান, ১০০ দিনের কাজ করেও যাঁরা টাকা পাননি, সেই বঞ্চিতদের চিঠি তুলে দেওয়া হবে রাজ্যপালের হাতে। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা না হলে রাজভবন থেকেই ফিরে ঘোষিত হবে পরবর্তী কর্মসূচি, তেমনটাই জানিয়েছিলেন অভিষেক।
দিল্লিতে পুলিশি হেনস্থার প্রতিবাদ। পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, বুধবার দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরবেন। বৃহস্পতিবার এক লক্ষ কর্মী-সমর্থক নিয়ে 'রাজভবন চলো'-এর অভিযান করবে তৃণমূল।
এবার সেই কর্মসূচির প্রস্তুতির পালা শুরু হয়ে গিয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল দেশের দুই শহরে পরপর সমাবেশ করেনি তৃণমূল। তাই এই কর্মসূচি সফল করতে তৃণমূলের বিভিন্ন শাখা সংগঠন ও জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল। নির্দেশ পাওয়া মাত্রই জেলায় জেলায় কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-ও এই কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করেছে। জানিয়েছেন, ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।
বুধবার সকাল পর্যন্ত তৃণমূলের বহু নেতাই দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরতে পারেননি। অভিষেকের নির্দেশের পরই কাজ শুরু হয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রতিবাদ সত্যাগ্রহ আন্দোলন হিসেবে গ্রহণ করা হলেও, মঙ্গলবার দিনশেষে তা আর সত্যাগ্রহ বলা চলে না। একদিকে যেমন সোমবার রাজঘাটে, দিল্লি পুলিশ ও সিআরপিএফ জওয়ানদের তাড়া খায় তৃণমূল, অন্যদিকে মঙ্গলবার কৃষিভবনে অবস্থান বিক্ষোভ করতে গিয়ে ফের দিল্লি পুলিশের হেনস্তার মুখে তৃণমূল উচ্চ নেতৃত্ব সহ সংসদরা। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করবেন বলে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল সাংসদরা।
এরই পাল্টা ওই বিক্ষোভ তুলতে এলে পুলিশ রীতিমতো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সমস্ত তৃণমূল নেতৃত্বকে টেনে-হিচড়ে চ্যাংদোলা করে প্রিজন ভ্যানে তুলে আটক করে। প্রায় দু'ঘণ্টা পর ওই সংসদের মুখার্জিনগর থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই এর পরেই পাল্টা গর্জন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। থানা থেকে বেরিয়েই দিল্লিতে হেনস্থার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কলকাতায় রাজভবন অভিযানের ডাক দেন অভিষেক। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টের সময় রাজভবন অভিযানের কথা ঘোষণা করেন তিনি।
থানা থেকে বেরিয়ে অভিষেক আরও বলেন, 'কৃষি ভবনে ঢোকার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়ে দেন তিনি ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দেখা করবেন না। বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি সেই অনুরোধ রাখেননি। আমরা সন্তানহারাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুরোধ করলেও তিনি রাজি হননি।' অভিষেক আরও বলেন, 'বেশ খানিকক্ষণ বসে থাকার পর আমরা জানতে পারি মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন না। তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন। সন্তানহারাদের সঙ্গে দেখা না করে পালিয়ে গেলেন মন্ত্রী।'
রাজ্য ও রাজভবনের শীতল লড়াই তো ছিলই। এই আবহেই রাজ্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রাজভবনের। অভিযোগ, কলকাতা পুলিস রাজভবনের উপর নজরদারি চালাচ্ছে। রাজ্য ও রাজ্যপালের লড়াই পৌঁছে দিল্লি অবধি। কখনও প্রকাশ্যে সেই লড়াই কঠিন থেকে কঠিনতম পর্যায়ে পৌঁছেছে। কখনও শিক্ষা কিংবা কখনও নির্বাচনী হিংসা, বোসের কার্যকলাপে রীতিমত শোরগোল পড়েছে রাজ্যে। সেইমত শাসকদলের মাথা ব্যাথার কারণও তিনি। এরই মধ্যে রাজ্যপাল ও রাজভবনের উপর কলকাতা পুলিসের নজরদারি চালানোর অভিযোগে রীতিমত শোরগোল পড়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে।
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে রাজভবন কতৃর্ক কেন্দ্রীয়স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, যেখানে কলকাতা পুলিসের বিরুদ্ধে নজরদারি চালানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগ, গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাতে কলকাতা পুলিসের দুই আধিকারিককে রাজ্যপাল যেখানে বসেন, সেখানে ঘোরা-ফেরা করতে দেখা যায়। এমনকি তাঁদের সেই মুহূর্তে রাজভবন কতৃর্ক চলে যেতে বলা হলেও, সেই মুহূর্তে চলে গিয়ে, ফের ফিরে আসেন তারা। এরপরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লিখে অভিযোগ জানানোর সিন্ধান্ত নেয় রাজভবন। সূত্রের খবর, রাজ্যপালের অভিযোগের ভিত্তিতেই এবার রাজ ভবনের সম্পূর্ণ নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
পুজোতেও এবার টক্কর। না দুই পাড়ার কোনও ক্লাবের মধ্যে নয়। লড়াই এবার রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের। প্রতিবছর রাজ্য সরকার কলকাতার সেরা পুজোকে পুরস্কার দেয়। বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাজভবন থেকে জানানো হল, এবার থেকে পুজোতে পুরস্কার দেবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই পুরস্কারের নাম দুর্গাভারত সম্মান।
তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে এই পুরস্কারকে। প্রথম পুরস্কার এক লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা। এবং তৃতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা। বুধবার রাজভবন জানিয়েছে, এর জন্য একটি ইমেল অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে। ওই ইমেলে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কৃতীদের নাম সহ মনোনয়ন জমা দিতে হবে।
রাজ্য পরিবর্তনের পর পুজোর ভাসানে আয়োজন করা হয় কার্নিভাল। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই কার্নিভাল এখন বিপুল ভাবেই জনপ্রিয়। এমনকী রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। এবারও কার্নিভাল হবে। তবে সরকারের পাশাপাশি এবার পুজোয় সামিল হতে রাজভবন। ওয়াকিবহল মহলের মতে, রাজ্যে সামাজিক প্রেক্ষাপটে যা বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
রাজ্যপালের হুঁশিয়ারির পরই রাজভবনে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যা বেলায় হঠাৎ রাজভবনে আসেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল ও মুখ্যসচিবের মধ্যে কিছুক্ষন বৈঠকও হয়েছে। ওই বৈঠকে রাজ্যে মন্ত্রিসভার রদবদল ও উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গ ছিল বলেই জানা যায়। একদিকে যখন রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত চরমে তখন হঠাৎ মুখ্যসচিবের রাজভবনে আগমন ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সম্প্রতি উপাচার্য নিয়োগ সহ বিভিন্ন বিষয় নয় রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে উঠেছিল। আক্রমন, পাল্টা আক্রমণে শনিবার রাজ্যপাল হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, মাঝরাত পর্যন্ত দেখুন কী করি! পালটা শিক্ষামন্ত্রী আবার তাঁর সঙ্গে ‘ভ্যাম্পায়ারে’র তুলনা করলেন! শনিবার এক্স বার্তায় ব্রাত্য লিখেছেন, 'মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় দেখতে থাকুন। সাবধান! সাবধান! সাবধান! শহরে নতুন ভ্যাম্পায়ার এসেছে। শহরবাসী আপনারা সতর্ক থাকুন। নিজেদেরকে সাবধানে রাখুন। অধীর আগ্রহে ভারতীয় পুরাণ অনুযায়ী রাক্ষস প্রহরের জন্য অপেক্ষা করছি।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত দীর্ঘদিনের। রাজ্যের মনোনীত কাউকে উপাচার্য হিসাবে না নিয়ে নিজের পছন্দমতো অধ্যাপকদের উপাচার্য পদে নিয়োগ শুরু করেছেন রাজ্যপাল। যার প্রতিবাদে রাজ্য সরকার পন্থী শিক্ষাবিদ এবং উপাচার্যরা রাস্তাতেও নেমেছেন। বুধবারই রেজিস্ট্রারদের বৈঠকে উপাচার্য নিয়োগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালকে বিঁধেছেন ব্রাত্য। ওই বৈঠক থেকে তিনি বলেন, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ‘পুতুলখেলা খেলছেন’। তাঁকে মহম্মদ বিন তুঘলকের সঙ্গে তুলনাও করেছিলেন।
যার পালটা হিসাবে শনিবারই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে বলে দিয়েছিলেন, “আমি যা করছি তার জন্য গর্বিত। আমার আচরণে আমি খুশি। মধ্যরাত পর্যন্ত দেখতে থাকুন, আসল পদক্ষেপ কাকে বলে।” রাজ্যপালের এই হুঁশিয়ারিতে স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। রাজ্যপাল কী পদক্ষেপ করতে চলেছেন, তা নিয়ে জল্পনাও শুরু হয়ে যায়।
শুক্রবার সকাল থেকেই রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় রাজভবনের উত্তর গেটের কাছে ধরনায় বসেন শাসকদল ঘনিষ্ঠ শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক থেকে প্রাক্তন উপাচার্যরা। রাজ্যপালের ভূমিকায় সরব হন অন্যান্য অধ্যাপক ও প্রাক্তন উপাচার্যরাও। তাঁদের দাবি, সংবিধান মেনে চলুন রাজ্যপাল। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হোক। এমনকি রাজ্যপালকে হুঁশিয়ারি দিতেও দেখা যায় শিক্ষাবিদদের। এদিনের ধরনা কর্মসূচির মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ৰাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র, কবি সুবোধ সরকার, অধ্যাপক উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। সুবোধ সরকার বলেন, রাজ্যপাল বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের শক্ত ঘাঁটি। পরে মিছিল করে রাজভবনের মেইন গেটের দিকে যান তাঁরা। সেখানে পুলিসি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ছিল আগে থেকেই। সেখানেই রাজ্যপালের প্রতিনিধির হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন তাঁরা।
রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত এবার নেমে এল রাস্তায়। রাজভবনের বিবৃতির বিরোধিতা করে এবার রাজভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করলেন প্রাক্তন উপাচার্যদের সংগঠন 'দ্য এডুকেশনিস্ট'স ফোরাম'। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালনা প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্যপাল মিথ্যে কথা বলেছেন।
রাজভবনকে কেন্দ্র করে সংঘাত, দ্বন্দ্ব চলছিলই। ইদানিং রাজ্য-রাজভবনের মধ্যে ফাটল আরও চওড়া হল। এই আবহেই কার্যত রাজভবনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা রাজ্যের শাসক শিবিরের। শুরুটা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষক দিবসে রাজ্যপালকে বেনজির আক্রমণ করেছিলেন তিনি। একদিকে রাজভবনের কথামত অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যদের বেতন বন্ধের হুমকি, আবার অন্যদিকে রাজভবনে একের পর এক বিল আটকে রাখার অভিযোগ তুলে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন,প্রত্যেকটা বিল আটকে রেখে এভাবে কারোর অধিকার কেড়ে নিলে তিনি রাজভবনের সামনে ধরনা দিতে বাধ্য হবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনা হুঁশিয়ারির পালটা বৃহস্পতিবার মুখ খোলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বলেন, বাইরে নয়, মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনের ভিতরে আসুন। তিনি জোড়হাতে তাকে স্বাগত জানাবেন।