
সোমবার কোর্ট নির্দেশে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) সশরীরে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালত থেকে বেড়িয়ে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশে জানান, আমি দলের সঙ্গেই আছি। সবাই ভালো থাকুন। যদিও এদিন সকালে সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে একপ্রস্থ মেজাজ হারান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তবে এদিন শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় নয়, এসএসসি (SSC Scam) নিয়োগ দুর্নীতিতে আরও ৬ জনকে হাজির করানো হয়েছিল আদালতে (Court)। এজলাসে ছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, প্রসন্ন রায়-সহ অন্যরা। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন জামিনের পক্ষে সওয়াল করেছেন। যদিও সেই আবেদন খারিজ করে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজত হয়েছে পার্থ-সহ ৭ জনের।
তিনি সওয়াল করেন, 'আমি জামিনের আবেদন করছি। চার্জশিট ফাইল হয়েছে, আমি এখনও হেফাজতে। পাঁচ জনের একটা কমিটি ছিল, যারা কিছু রহস্যজনক কাজ করেছে। আমি ওই কমিটির কেউ ছিলাম না, মন্ত্রী ছিলাম। হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে। তারা তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারও করতে পারে, আবার নাও পারে।' তিনি জানান, অন্য আরও একটি তদন্তকারী সংস্থা আমায় গ্রেপ্তার করল। আমি বিধায়ক, তদন্তকারী সংস্থা জন প্রতিনিধিত্ব আইন মানলো না। গ্রেফতারির পর চার্জশিট তৈরি হলো।একটা চার্জশিটে নাম নেই, অন্যটায় নাম আছে। আমাকে বহুবার সিবিআই ডেকেছে, আমি তাদের তদন্তে সহযোগিতা করেছি।
তাঁর আবেদন, 'আমায় জামিন না দিলে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হোক। আমার বাইরে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। দরকার হলে আমার পাসপোর্ট জমা রাখুক।' এই প্রসঙ্গে এদিন বিচারক সিবিআইকে প্রশ্ন করে, তদন্ত শেষ হতে কতদিন? অনন্তকাল লেগে যাবে মনে হচ্ছে।' পাল্টা কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, 'আরও ৫-৬ মাস লাগবে। ধৃত প্রত্যেকে ক্ষমতাশালী, ওরা জামিন পেলে প্রমাণ লোপাট হবে। প্রচুর প্রমাণ ছড়ানো আছে এখনও। বেআইনি নিয়োগ নিয়ে প্রচুর তথ্য আছে। আরও তথ্য সংগ্রহ করা বাকি।'
সিবিআইয়ের অভিযোগ, 'পরিকল্পনামাফিক অপরাধ করা হয়েছে। অভিযুক্তর সংখ্যা অনেক, বেআইনি নিয়োগে সংখ্যা বাড়তে পারে। প্রচুর ছেলেমেয়ের জীবনে বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। ৩৫০ জন এমন চাকরি প্রার্থীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা গিয়েছে, এঁরা প্রত্যেকে হাইকোর্টের আবেদনকারী।'
এদিন কোর্ট নির্দেশে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। পার্থ-সহ নিয়োগ মামলায় ধৃত ৭ জনকে কোর্টে আনা হয়। শুক্রবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে ভার্চুয়ালি কোর্টে হাজির করা হয়েছিল। সেই মোতাবেক আবেদন করেছিল জেল কর্তৃপক্ষ। সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় কোর্ট কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল।
এবার আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের (Partha-Manik) আঁতাতের বিষয়টা ইডি (ED) লিখিত আকারে প্রকাশ করল। ইডির তরফে জানানো হয়েছে, মানিক ভট্টাচার্য এবং তাঁর ছেলে দু'জনে মিলে যে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছিল, সেই সম্বন্ধে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানতেন। এই বিষয় সম্পর্কিত বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, সেগুলো পার্থ এবং মানিক দুজনের মোবাইল থেকেই ইডির আধিকারিকরা উদ্ধার করেছেন। সেই সব খতিয়ে দেখে ইডির দাবি মানিক ভট্টাচার্যের দুর্নীতির কথা জেনেও চোখ বন্ধ করেছিলেন। এই দাবি আদালতে করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা (CBI-ED)।
মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ, পাল্টা মানিক ভট্টাচার্যকে পাঠিয়ে দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালতে জানিয়েছে ইডি। এদিকে, প্রেসিডেন্সি জেলে একই ওয়ার্ডে আছেন মানিক ভট্টাচার্য ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে এখনও মুখোমুখি হয়নি দু'জন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে মানিক ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থা ভালোই। আগামী সোমবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাজিরা নির্দেশ আছে।
অপরদিকে, জেলে গিয়ে মানিককে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি সিবিআইয়ের। শুক্রবার ইডি-সিবিআই স্পেশাল আদালতে সিবিআইয়ের আবেদনে সাড়া দিয়েছে। পাশাপাশি আরও ১৪ দিন মানিকের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সশরীরের হাজিরার নির্দেশ থাকলেও কেন ভার্চুয়াল শুনানিতে পার্থকে (Partha Chatterjee) হাজিরা। প্রেসিডেন্সি জেলের (Presidency Jail) এই আচরণে ক্ষুব্ধ আদালত। আগামি সোমবার তাই সশরীরেই আদালতে হাজির করাতে হবে বন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এসএসসি (SSC Case) সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে আদালতে হাজির করাতে হবে। শুক্রবার স্পষ্ট জানিয়ে দিল কোর্ট (Court Hearing)। ৩১ অক্টোবর এই মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিংহ, কল্যাণময় বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সশরীরে হাজিরা করাতে হবে।
শুক্রবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মামলার শুনানি সংক্রান্ত একটি জটিলতা দেখা দিয়েছিল। নেটওয়ার্ক সমস্যা থাকায় শুনানি লিঙ্ক কাজ না করায় ভার্চুয়ালিও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে আদালতে হাজির করতে পারেনি জেল কর্তৃপক্ষ। এহেন আচরণে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ কোর্ট। সূত্রের খবর, লিঙ্ক কাজ না করায় যেহেতু ভার্চুয়ালি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে হাজির করানো যায়নি। প্রত্যাশিত ছিল সশরীরে তাঁকে আনা হবে। কিন্তু তাঁকে সশরীরেও কোর্টে আনেনি জেল কর্তৃপক্ষ।
যদিও ইডির হাত ঘুরে আপাতত সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার পার্থকে ভার্চুয়ালি হাজির করানোর আবেদন করে আদালতে চিঠি দিয়েছিল জেল কর্তৃপক্ষ। সশরীরে হাজিরা করার নির্দেশ থাকা সত্ত্বে, কেনো ভার্চুয়ালি আবেদন জেলের? এদিন আদালত সেই প্রশ্নও তুলেছে।
প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency Jail) পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে ওয়ার্ডে রয়েছে, সেই ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে মানিক ভট্টাচার্যকেও (Manik Bhattacharya)। দু'জনের সেলও আলাদা। সূত্রের খবর, মানিক ভট্টাচার্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সঙ্গে কথা বলতে গেলে এড়িয়ে যান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁদের দু'জনের মধ্যে এযাবৎকাল কোনও কথা হয়নি। এমনটাই জেল সূত্রে খবর। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয়েছে মানিক ভট্টাচার্যকে। আদালতের নির্দেশে অপসারিত পর্ষদ কর্তাকে তাঁর সেলে ঢোকানোর সময় মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। কিন্তু তাঁর থেকে কোনও পাল্টা সাড়া পায়নি মানিক ভট্টাচার্য।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে আর্থিক তছরূপের দায়ে ইডির হাতে ধৃত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। ১৪ দিনের ইডি হেফাজত শেষে আপাতত তিনি কোর্ট নির্দেশে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত প্রেসিডেন্সি জেলেই বন্দি। এদিকে, এই ইডি ২৩ জুলাই গ্রেফতার করেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। প্রাক্তন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ অপ্রিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ, সঙ্গে গয়না এবং বিদেশি মুদ্রা। সেই অর্পিতা আবার আলিপুর মহিলা জেলে বন্দি।
প্রায় ১০০ দিন পেরোলেও এখনও পর্যন্ত জামিন পাননি পার্থ বা অর্পিতা কেউই। পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে এযাবৎকাল তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর হাতে এসেছে। ইতিমধ্যে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার পরামর্শদাতা কমিটির চেয়ারম্যান এসপি সিনহা, শিক্ষা কর্তা অশোক সাহা এবং এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (SSC Scam) লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত জেলেই কাটাবেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। শুধু পার্থবাবু নয়, এই দুর্নীতি-কাণ্ডে অভিযুক্ত হিসেবে আপাতত জেলেই থাকতে হচ্ছে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা-সহ অন্য ধৃতদের। ৫ অক্টোবর ভার্চুয়ালি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে হাজিরা করা হয়েছিল। সেই শুনানিতে জামিনের আবেদন (Bail Plea) করেনি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আইনজীবী।
বরং তাঁর মক্কেলের জন্য সঠিক চিকিৎসা এবং জেলের খাবারের গুণগত মান ভালো করার আবেদন কোর্টকে করেন আইনজীবী। এদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যর ইডি দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গত মাসে ম্যারাথন জেরার পর বৃহস্পতিবার ফের তাঁর ডাক পড়ে। ইডি সূত্রে খবর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারির পর জেরা করে এবং সব সম্পত্তির উৎস খতিয়ে দেখে নাম উঠে এসেছিল কল্যাণময় ভট্টাচার্যের। মূলত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে ও জামাইয়ের নামে পিংলায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। সেই সম্পত্তির উৎস জানতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামাইকে বিভিন্ন নথি নিয়ে ডেকে পাঠানো হয়। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইডি দফতরে এলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য।
ইডির (ED) পর এবার এসএসসি নিয়োগ (SSC) দুর্নীতি-কাণ্ডে চার্জশিট জমা দিল সিবিআই (CBI)। পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ ১৬ জনের নাম আছে চার্জশিটে। কেন্দ্রীয় সংস্থার চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে নাম আছে শান্তিপ্রসাদ সিনহা, অশোক সাহার নামও। এই দুর্নীতি-কাণ্ডের তদন্তে নেমে যে এফআইআর করে সিবিআই, সেই এফআইআর-র ৫ জনের নাম চার্জশিটে (Charge Sheet) উল্লেখ করেছে সিবিআই। জানা গিয়েছে, সেই এফআইআর-এ নাম ছিল না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে ৫ দিনের জন্য পার্থর সিবিআই হেফাজত পেয়েছে সিবিআই। এসএসসি গ্রুপ-সি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই চার্জশিট বলে সিবিআই সূত্রের খবর। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের তদন্তে নেমে ৫১ দিনের মাথায় এই চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। ষড়যন্ত্র, প্রতারণা এবং জালিয়াতি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে চার্জশিটে।
জানা গিয়েছে, সিবিআই এফআইআর-এ নাম থাকা পাঁচ জনের মধ্যে ইতিমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাঁদেরকে জেরায় আরও ১০ জনের নাম উঠে এসেছে। এদিকে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেলেই থাকছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামিনের আবেদন খারিজ করেছে আদালত। একইভাবে জেলে পাঠানো হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে অন্যত্ম অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। এই দু'জনকে ইডি, তাদের প্রথম চার্জশিটে অভিযুক্ত দেখিয়েছে।
তাদের দাবি, 'নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড ১০০ কোটি টাকার বেশি কেলেঙ্কারি। পার্থ-অর্পিতার নামে একাধিক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। পার্থকে নমিনি করে তৈরি বিমার হদিশ পেয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা।'
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) এবার ১৪ দিনের জেল হেফাজতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। অর্থাৎ পুজোয় জেলেই কাটাতে হবে তৃণমূলের একদা সেকেন্ড ইন কমান্ডকে। তবে শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় নয়, ৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে অশোক সাহা, এসপি সিনহা এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি নিয়োগ মামলায় এই চার জনের পুজো কাটবে গারদের পিছনে। বুধবার আলিপুর আদালতে (Alipur Court) তুলে পার্থ- কল্যাণময়ের আর হেফাজত দাবি করেনি সিবিআই (CBI)। তবে জেলে যাতে তাঁদের জেরা করা যায়, কোর্টকে আবেদন করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই আবেদন গ্রাহ্য করে এবং পার্থ-সহ অন্যদের জামিনের আবেদন খারিজ করেছে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত।
যদিও এদিন জামিনের আবেদন করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, দেশ ছেড়ে যাবেন না আমার মক্কেল। অসুস্থতার জন্য চিকিৎসার দরকার এবং অনেক পারিপার্শ্বিক বিষয় কাজ করছে। তাই জামিন দেওয়া হোক। পাশাপাশি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আইনজীবীর সওয়াল, 'মন্ত্রী মানে দফতরের সব কিছুর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ থাকবে? রেল লাইনে গণ্ডগোল হলে কি রেলমন্ত্রী যুক্ত হয়? রাস্তায় দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কি পরিবহনমন্ত্রী যুক্ত? সিবিআইয়ের আবেদন শিশুসুলভ।
এদিকে, সিবিআই আইনজীবী বলেন, কারও জামিনের আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। ২০১৯ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রী ছিলেন। অযথা আদালতকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও অশোক কুমার সাহা মামলায় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছেন। সব পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে এদিন কিছুক্ষণ নির্দেশ স্থগিত রাখে আদালত। অবশেষে বিকেলের দিকে এই চার জনকেই ৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে ৫৮ দিনের মাথায় পার্থ-অর্পিতার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা ইডির। জানা গিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি এবং অর্পিতার দুই ফ্ল্যাট মিলিয়ে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে। নাম রয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়েরও। এই দুজনের নামে ছয়টি সংস্থার হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এই দু'জনের প্রায় ১০৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সোমবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জমা করা চার্জশিটে দাবি করেছে ইডি। ১৭২ পাতার এই চার্জশিটে ৪২ জন সাক্ষীর নাম উল্লেখ করেছে ইডি।
ইতিমধ্যে ২২ জুলাই দিনভর পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। এই তদন্তে অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫০ কোটি টাকা নগদ-সহ সোনার গয়না এবং বিদেশি মুদ্রা। গত প্রায় দু'মাস তদন্ত চালিয়ে পার্থ এবং অর্পিতার একাধিক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ইডি। কয়েক কোটি টাকার এলআইসি পেপার বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা। নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় এই সম্পত্তি কিনা খতিয়ে দেখেই চার্জশিট জমা ইডির।
এদিকে, ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সিবিআই হেফাজত। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে এই কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে ইতিমধ্যে তিন প্রাক্তন শিক্ষাকর্তা গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতেই পার্থকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই।
অপরদিকে, গত দু'মাসে একাধিকবার অসুস্থতার যুক্তি দেখিয়ে জামিনের আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিন্তু প্রতিবার সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
অনুনয়-বিনয় সার। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। একইভাবে ধৃত প্রাক্তন পর্ষদকর্তা কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়েরও ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজত (CBI Custody)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আবেদন এবং সওয়ালকে প্রাধান্য দিয়েই এই নির্দেশ আলিপুর আদালতের বিশেষ সিবিআই কোর্টের। যদিও এদিনও জামিনের পক্ষে নিজেই সওয়াল করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
রীতিমতো কান্নায় ভেঙে তিনি আদালতকে বলেন, 'সব সওয়াল-জবাব শুনলাম। এবার একটু বলতে চাই। আমি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ছিলাম। এসএসসি স্বসাশিত সংস্থা। তাদের কোনও কাজেই আমি হস্তক্ষেপ করিনি। বোর্ড পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সব দফতর করে। এখানে মন্ত্রীর কী করার? তাছাড়া আমি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, পিএইচডি। আমার আত্মীয় শিবদাস বন্দোপাধ্যায়। বহু বছর চাকরি করেছি। পরবর্তীকালে জনপ্রতিনিধি হয়েছি। আমাকে ষাট দিন একটা সংস্থা হেফাজতে রাখল। এখন একটা সংস্থা হেফাজতে চাইছে। আমি ক্লান্ত,অসুস্থ, প্রচুর ওষুধ খেতে হয়। যেকোনও শর্তে আমাকে জামিন দিন। আমি বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল। আপনার কাছে বিচারের প্রত্যাশা করি।'
এদিকে, শুক্রবার একই এজলাসে তোলা হয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। তাঁর হয়েও জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী। তিনি জানান, কল্যাণময়বাবু একজন উচ্চবিত্ত ঘরের ব্যক্তি। একসঙ্গে একাধিক মামলা দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর বিরুদ্ধে ১২০-বি-সহ আলাদা আলাদা মামলা। তদন্তকারী সংস্থা জানেই না কী কারণে গ্রেফতারি। আমার মক্কেলের বিরুদ্ধ কোনও অভিযোগ নেই তথ্য নেই।
বিচারকের প্রশ্ন, আপনি নিয়োগপত্রে সই করেছেন? সেটাকে ষড়যন্ত্র বলা যায় কি? কল্যাণময়ের আইনজীবীর পাল্টা, 'সেটা আমি বলছি না। সিবিআই বলছে নিয়োগপত্র ভুয়ো। ভুয়ো নিয়োগপত্র যাঁদের পাওয়ার কথা ছিল, তারা পায়নি। একজন ষাট বছরের অধ্যাপককে যদি হেফাজতে চায় তাহলে বলার কিছু নেই।'
প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতির আইনজীবীর দাবি, 'আমার মক্কেল কোনও নিয়োগপত্রে সই করেনি। তাঁর সই স্ক্যান করে বসানো হয়েছে। তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে সই করেনি।' বিচারকের পাল্টা প্রশ্ন, 'আপনার সই স্ক্যান কে করবে?' জবাবে কল্যাণময় বাবুর আইনজীবী জানান, আমার মক্কেলের স্ক্যান সই পর্ষদে থাকতো। তিনি পর্ষদের দারোয়ান নয়। তাই জানা নেই ওটার অপব্যাবহার হয়ছে কিনা। কল্যাণময় বাবু কোনও পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ নিতেন না। শুধু নির্দেশ দিতেন।
অপরদিকে, এদিন আলিপুর কোর্ট থেকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হেফাজতে পেতে আলিপুর আদালতে সওয়াল সিবিআইয়ের (CBI)। ইডির হাতে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজত হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে মূল অভিযুক্ত (Partha Chatterjee) হিসেবে পার্থর হেফাজত চায় সিবিআই। সেই মর্মেই এদিন আদালতে সওয়াল করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার আইনজীবী। যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীর সওয়াল, তাঁর মক্কেলকে কেন আদলতে আনা হলো জানি না। কী জন্য ডাকা হল, না জানলে সওয়াল করব কী করে? পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে ইডি (ED)। এখন সিবিআই তাঁকে হেফাজতে চাইছে। ওদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। এতে আমার মক্কেলকে হেনস্থা করা হচ্ছে।
এই সওয়ালের পরই সিবিআই আইনজীবীকে বিচারকের প্রশ্ন, আপনাদের কপি অপরপক্ষের কাছে পৌঁছয়নি? আপনার কাছে অন্য কোনও কপি আছে? সিবিআইয়ের জবাব আমরা জানিয়েছি। পাল্টা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, আমাদের কাছে কিছু আসেনি। সিবিআই আমার মক্কেলকে গ্রেফতার করেনি। গ্রেফতার না করে কীভাবে হেফাজতে চাইতে পারে? ওরা জেলে গিয়েও এই মামলায় আমার মক্কেলকে জেরা করতে পারে। এদিকে, পাল্টা সিবিআই আইনজীবী জানান, এসএসসি গ্রুপ সি নিয়োগের পরীক্ষা হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের হাত ধরে। সেখানে অশিক্ষককর্মী নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর হয় কাউন্সেলিং। যারা চাকরি পায় তাদের রেকমেন্ডেশন লেটার দিয়ে নিয়োগ হয়। তদন্তে এই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। ৪০০-র বেশি মানুষ ভুয়ো নিয়োগপত্র পেয়েছে। যারা অনেকেই পাশ করেনি বা পরীক্ষা দেয়নি। বেশিরভাগ রেকমেন্ডেশন লেটার ভুয়ো। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এই ভুয়ো নিয়োগ ষড়যন্ত্রের মূল চক্রী।
পাশাপাশি তাঁদের সওয়াল, 'এই দুর্নীতি হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তে। অন্য অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিনহা, অশোক কুমার সাহা তাঁদের আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়ছে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। তাই প্রধান অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। অন্য ধৃতদের সামনাসামনি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এতদিন তিনি ইডি হেফাজতে ছিলেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের এর প্রয়োজন। তাই পুলিস কাস্টডি চাইছি।'
পার্থর আইনজীবীর পাল্টা, 'অভিযুক্ত একজন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব। তাঁর বিরুদ্ধে করা এফআইআর-এ আইপিসির ৪২০ এবং ১২০-বি ধারার উল্লেখ রয়েছে। এই ধরনের এফআইআর একজন জনপ্রতিনিধির নামে হয়েই থাকে। কিন্তু এখানে তদন্তকারী সংস্থা অনেক কিছু লুকনোর চেষ্টা করছে, অপরপক্ষকে ধোঁয়াশাতে রাখছে। আমরা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। গ্রেফতারির আগেও তাঁকে ডাকা হয়েছে, প্রতিবা তিনি গিয়েছেন। মোট তিন বার ডাকা হয়েছিল, তিনবারই গিয়েছেন। অর্থাৎ অভিযুক্ত প্রত্যেকবার সিবিআইকে সাহায্য করছে।
এই সওয়াল জবাবের পর বিচারকের মন্তব্য, 'তদন্তকারী দল ভিন্ন তাই তাদের প্রয়োজন ভিন্ন।' অপরদিকে, শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে সদ্য ধৃত কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় পার্থবাবুর। দু'জনকে এজলাসে নিচুস্বরে কথা বলতেও দেখা গিয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) হেফজত চাইল সিবিআই (CBI)। এই মর্মে আলিপুর কোর্টে আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে সশরীরে আলিপুর আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আদালতে তোলা হয়েছিল। এদিনও জামিনের আবেদন খারিজ করে দু'জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান ইডি-সিবিআই (ED Court) আদালতের বিচারক।
যদিও বুধবারই প্রথমবার কোর্টে জামিনের সওয়াল করেন ইডির হাতে গ্রেফতার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। একইভাবে 'আমি অসুস্থ, আমাকে শান্তিতে বাঁচতে দিন, জামিন দিন', কাঁদতে কাঁদতে এই আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে কান্নাকাটি বৃথা, ফের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে এই দুই অভিযুক্ত। বুধবার অবশ্য শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঁদতে কাঁদতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিচারকের কাছে বলেন, 'আমার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। আমাকে জামিন দিন, বাঁচতে দিন। ইডি ৩০ ঘন্টা ছিল আমার বিরুদ্ধে কিছুই সংগ্রহ করতে পারেনি। আমি জানতে চাই কে এটা করেছে? ইডি আমার বাড়িতে আসুন। আমার বিধানসভা কেন্দ্রে আসুন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন।'
ভিডিও কলে হওয়া শুনানিতে পার্থর সওয়াল, 'আমি বৃদ্ধ মানুষ, একজন জনপ্রতিনিধি। অর্থনীতিতে স্নাতক। বহুদিনের রাজনীতিবিদ। আমার শারীরিক সমস্যা সংক্রান্ত ইএসআই জোকার রিপোর্ট জমা আছে দেখে নিতে পারেন।'
১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে (Partha Arpita) আদালতে তোলা হয়। এদিনও জামিনের আবেদন খারিজ করে দু'জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে (Jail Custody) পাঠান ইডি-সিবিআই (ED Court) আদালতের বিচারক। যদিও এই প্রথমবার কোর্টে জামিনের সওয়াল করেন ইডির হাতে গ্রেফতার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। রীতিমতো কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, 'স্যার আমার বাড়িতে ইডি প্রায় ৩০ ঘন্টা ছিলেন। আমি জানি না কীভাবে তারা নগদ পেলেন। আমি বাথরুমে ছিলাম ৪ ঘন্টা, তারপর বেডরুমে ছিলাম। আমি জানি না কীভাবে এত নগদ উদ্ধার হল। আমার বাবা নেই, বৃদ্ধা মা আছেন। তাঁকে দেখানো জন্য আমার দরকার।'
এই সওয়ালের পরেই অর্পিতাকে বিচারকের প্রশ্ন, 'টাকা কোথা থেকে পাওয়া গেল? আপনি কি মায়ের সঙ্গে থাকেন? ফ্ল্যাট কার নামে? আপনি টাকার বিষয়ে কিছু জানেন?'
জবাবে অর্পিতা জানান, ফ্ল্যাট আমার নামে। সেখান থেকেই টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু এই নগদের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার এন্টারটেইনমেন্টের ব্যবসা আছে। সংস্থার নাম ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্ট। কিন্তু নগদ উদ্ধার নিয়ে আমি অবগত নই। আমার কাছে এটাই আশ্চর্যের যে আমার বাড়ি থেকে এতো নগদ কীভাবে উদ্ধার হল!
একইভাবে 'আমি অসুস্থ, আমাকে শান্তিতে বাঁচতে দিন, জামিন দিন', কাঁদতে কাঁদতে এই আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে কান্নাকাটি বৃথা, ফের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে এই দুই অভিযুক্ত। এদিন অবশ্য শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঁদতে কাঁদতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিচারকের কাছে বলেন, 'আমার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। আমাকে জামিন দিন, বাঁচতে দিন। ইডি ৩০ ঘন্টা ছিল আমার বিরুদ্ধে কিছুই সংগ্রহ করতে পারেনি। আমি জানতে চাই কে এটা করেছে? ইডি আমার বাড়িতে আসুন। আমার বিধানসভা কেন্দ্রে আসুন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন।'
ভিডিও কলে হওয়া শুনানিতে পার্থর সওয়াল, 'আমি বৃদ্ধ মানুষ, একজন জনপ্রতিনিধি। অর্থনীতিতে স্নাতক। বহুদিনের রাজনীতিবিদ। আমার শারীরিক সমস্যা সংক্রান্ত ইএসআই জোকার রিপোর্ট জমা আছে দেখে নিতে পারেন।'
দুই অভিযুক্তের এই সওয়াল পালা শেষে ইডির যুক্তি, 'নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড ১০০ কোটি টাকার। আরও বাড়তে পারে টাকার অঙ্ক। রাসবিহারী কানেক্টর এবং যামিনী রায় রোডে সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। অর্পিতার অ্যাকাউন্টে আরও ৫ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। যত তদন্ত এগোবে, এই টাকার অঙ্কের পরিমাণ আরও বাড়বে।'
ইডি আইনজীবী আদালতকে জানান, 'আমরা যেদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিলাম উনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। উনি দলের সেকন্ড ইন কমান্ড। আমরা যে সিজার লিস্ট অনেক দিয়েছিলাম, ওটা উনি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তারপর এসএসকেএম-এ ভর্তি হয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে আরও তিনটি কোম্পানি পাওয়া গিয়েছে। পিংলায় একটি স্কুলের খোঁজও পাওয়া গিয়েছে।' দুই তরফের এই সওয়াল-জবাবের পর এদিন প্রায় ঘণ্টা চারেক রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। অবশেষে সন্ধ্যা ৭টার পর জামিনের আবেদন খারিজ করে ফের দু'জনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে (Partha Arpita) আদালতে তোলা হয়। এদিনও জামিনের আবেদন খারিজ করে দু'জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান ইডি-সিবিআই (ED Court) আদালতের বিচারক। যদিও এই প্রথমবার কোর্টে জামিনের সওয়াল করেন ইডির হাতে গ্রেফতার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। একইভাবে 'আমি অসুস্থ, আমাকে শান্তিতে বাঁচতে দিন, জামিন দিন', কাঁদতে কাঁদতে এই আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে কান্নাকাটি বৃথা, ফের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে (Jail Custody) এই দুই অভিযুক্ত।
এদিন অবশ্য শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঁদতে কাঁদতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিচারকের কাছে বলেন, 'আমার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। আমাকে জামিন দিন, বাঁচতে দিন। ইডি ৩০ ঘন্টা ছিল আমার বিরুদ্ধে কিছুই সংগ্রহ করতে পারেনি। আমি জানতে চাই কে এটা করেছে? ইডি আমার বাড়িতে আসুন। আমার বিধানসভা কেন্দ্রে আসুন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন।'
ভিডিও কলে হওয়া শুনানিতে পার্থর সওয়াল, 'আমি বৃদ্ধ মানুষ, একজন জনপ্রতিনিধি। অর্থনীতিতে স্নাতক। বহুদিনের রাজনীতিবিদ। আমার শারীরিক সমস্যা সংক্রান্ত ইএসআই জোকার রিপোর্ট জমা আছে দেখে নিতে পারেন।'
পার্থর পরেই এদিন কান্নায় ভেঙে জামিনের আবেদন করে অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'স্যার আমার বাড়িতে ইডি প্রায় ৩০ ঘন্টা ছিলেন। আমি জানি না কীভাবে তারা নগদ পেলেন। আমি বাথরুমে ছিলাম ৪ ঘন্টা, তারপর বেডরুমে ছিলাম।আমি জানি না কীভাবে এত নগদ উদ্ধার হল। আমার মা অসুস্থ, মায়ের সঙ্গে থাকতে হবে।' এই সওয়ালের পরেই অর্পিতাকে বিচারকের প্রশ্ন, 'টাকা কোথা থেকে পাওয়া গেল? আপনি কি মায়ের সঙ্গে থাকেন? ফ্ল্যাট কার নামে? আপনি টাকার বিষয়ে কিছু জানেন?'
এই প্রশ্নের জবাবে অর্পিতা জানান, ফ্ল্যাট আমার নামে। সেখান থেকেই টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু এই নগদের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার এন্টারটেইনমেন্টের ব্যবসা আছে। সংস্থার নাম ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্ট। কিন্তু নগদ উদ্ধার নিয়ে আমি অবগত নই। আমার কাছে এটাই আশ্চর্যের যে আমার বাড়ি থেকে এতো নগদ কীভাবে উদ্ধার হল!
দুই অভিযুক্তের এই সওয়াল পালা শেষে ইডির যুক্তি, 'নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড ১০০ কোটি টাকার। আরও বাড়তে পারে টাকার অঙ্ক। রাসবিহারী কানেক্টর এবং যামিনী রায় রোডে সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। অর্পিতার অ্যাকাউন্টে আরও ৫ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। যত তদন্ত এগোবে, এই টাকার অঙ্কের পরিমাণ আরও বাড়বে।'
ইডি আইনজীবী আদালতকে জানান, 'আমরা যেদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিলাম উনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। উনি দলের সেকন্ড ইন কমান্ড। আমরা যে সিজার লিস্ট অনেক দিয়েছিলাম, ওটা উনি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তারপর এসএসকেএম-এ ভর্তি হয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে আরও তিনটি কোম্পানি পাওয়া গিয়েছে। পিংলায় একটি স্কুলের খোঁজও পাওয়া গিয়েছে।' দুই তরফের এই সওয়াল-জবাবের পর এদিন প্রায় ঘণ্টা চারেক রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। অবশেষে সন্ধ্যা ৭টার পর জামিনের আবেদন খারিজ করে ফের দু'জনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (APA) বিচারক বদল। ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ ইডি-সিবিআই (ED-CBI Court) আদালতের নতুন বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায়ের এজলাসে হবে জামিন মামলার শুনানি। বিচারক জীবন কুমার সাধু অবসর নেওয়ায় এই রদবদল। বিচার ভবন সূত্রে এমনটাই খবর। এদিকে, বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ-অর্পিতাকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে হাজির করা হবে। ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত এই দু'জন জামিনের আবেদন করেন কিনা? সেদিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্য।
নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভার্চুয়াল শুনানির আবেদন করা হয় জেল কর্তৃপক্ষের তরফে। সেই আবেদন গ্রাহ্য করে এই দুই বিচারাধীন বন্দিকে ভার্চুয়ালি হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক তছরূপের মামলায় এখনও অবধি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পেয়েছে ইডি। সেই তথ্য-প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এদিনের শুনানিতে জামিনের বিরোধিতা করতে পারেন ইডির আইনজীবী।
গত শুনানিতে যেকোনও শর্তে জামিন চেয়ে আদালতে দরবার করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও ইডির পাল্টা যুক্তিতে খারিজ হয়েছে সেই জামিনের আবেদন। বুধবার শুনানিতে কী ঘটতে পারে, সেদিকে তাকিয়ে রাজ্য রাজনীতি।
রাজ্যব্যাপী একাধিক দুর্নীতি-কাণ্ডের তদন্তে জেলে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। সম্প্রতি আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের একাধিক বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই (CBI)। এই পরিবেশে দুর্নীতি প্রশ্নে বিস্ফোরক মন্তব্য খড়দহের তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Minister Sovondeb)। তিনি জানান, আমি চাই না কেউ আমাকে ব্যবহার করে তাঁর সম্পদ বাড়াক। চাই না কেউ আমার গায়ে কালি ছিটিয়ে দিক। এত বয়স হয়েছে, এতদিন মাথা উঁচু করে বেঁচেছি।
তাঁর মন্তব্য, 'আপনারা যাকে ভোট দেবেন, তাঁর চালচলন, আচরণ দেখবেন না। আমাকেও দেখুন। আমি কাজ করছি না ক্ষমতা বলে সম্পদ বাড়াচ্ছি খেয়াল রাখুন। আমার কিছু ছিল না, একজন বাস কন্ডাক্টর, হঠাৎ করে ৫০ বিঘা জমির মালিক হয়ে গেল! এটা কী করে সম্ভব?' রাজ্যের মন্ত্রীর বক্তব্য, 'আমার বাবা আমাকে বিধায়ক, মন্ত্রী করেনি। দল করেছে, তাই কাউকে টাকা দেবেন না। কেনই বা টাকা দেবেন।'