বড়দিনের আগেই বড় খবর রাজ্যবাসীর জন্য। অবশেষে ডিএ বৃদ্ধির (DA Hike) ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন বছর শুরুর আগেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করা হল মহার্ঘ ভাতা। ১ জানুয়ারি থেকেই এই বৃদ্ধি কার্যকর করা হবে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী অ্যালেন পার্কের 'ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যালে'র অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। আর সেই অনুষ্ঠান থেকেই মহার্ঘ ভাতা নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) প্রতি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) উপহাস তোলপাড় ফেলেছে সংসদীয় রাজনীতিতে। জগদীপ ধনখড় দেশের উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। তাই তাঁকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূল সাংসদের এহেন আচরণ মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং লোকসভার অধ্যক্ষ। আবার তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মিমিক্রি করার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি জানান 'মিমিক্রি বা নকল করা একটা শিল্প।'
নতুন সংসদ ভবনের মকর দ্বারের সামনে বিরোধী সাংসদদের অবস্থান বিক্ষোভে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অঙ্গভঙ্গি। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে নকল করে উপহাস করেছেন তিনি আর সেই নকল করার ভঙ্গিমাকে ভিডিও করছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। এরপরে ক্রমেই নিন্দার ঝড় ওঠে সামাজিক মাধ্যম ও জাতীয় রাজনীতিতে। দেশের সংবিধান প্রধান তথা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও সামাজিক মাধ্যমে অভিযুক্ত সাংসদকে সাংবিধানিক রীতি-নীতির পাঠ শেখান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জগদীপ ধনখড়কে ফোন করেছেন। গত ২০ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী নিজেও এমন আচরণের শিকার বলেও মাননীয় উপরাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন। বুধের সকালে সামাজিক মাধ্যমে এহেন পোস্ট করে জগদীপ ধনখড় লেখেন, "আমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোনে কথা হয়েছে। সংসদ চত্বরে মাননীয় সাংসদদের কীর্তিতে উনি বেদনা পেয়েছেন। উনিও গত ২০ বছর ধরে এমন আচরণের শিকার। কিন্তু সাংবিধানিক পদে বসে থাকা এমন একজনের উদ্দেশে এহেন আচরণ তাও সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে দুর্ভাগ্যজনক, এমনটাই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।"
মঙ্গলবার শ্রীরামপুরের সাংসদের কীর্তি ঘিরে হৈচৈ আর নিন্দার ঝড় উঠতেও আজ অর্থাৎ বুধবার অবস্থান বদল করেননি তৃণমূল সাংসদ। এক মিনিটের ব্যবধানে ধারাবাহিক পোস্ট করেন তিনি। মিমিক্রি বা নকল করা একটা শিল্প দাবি করে সংসদ থেকে শতাধিক বিরোধী সাংসদের সাসপেন্ড হওয়ার প্রসঙ্গকে হাতিয়ার করেন আইনজীবী-সাংসদ। এমনকি, ধনখড়জিকে তিনি শ্রদ্ধা করেন তাঁকে আঘাত করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের সামনে আবার কল্যাণ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীজিও লোকসভায় মিমিক্রি করেন। আমার কাছে সেই প্রমাণও আছে, বিষয়টি সবাই হালকা ভাবে নেয়। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, আমি যেভাবে নকল করেছি, ঠিক সেই আচরণ কি রাজ্যসভায় করেন ধনখড়জি।'
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তৃণমূল সাংসদের যে প্রতিনিধি দল দেখা করে, সেই তালিকায় ছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সংসদের ভিতর ঢোকেননি। কল্যাণের কর্মে বিতর্ক বাড়তেই কি তাঁর থেকে দূরত্ব তৈরি করতে চাইলেন খোদ দলনেত্রী। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে কি ব্রাত্য থাকলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ, উঠছে প্রশ্ন। বুধবার অবশ্য কল্যাণ প্রশ্নে কৌশলী অবস্থানে ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। জগদীপ ধনখড়ের উদ্দেশে করা কল্যাণের মিমিক্রিকেও ছোট্ট ঘটনার মোড়কে হালকা ভাবে নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন মমতা। উল্টে তিনি গোটা-কাণ্ডের দায়ভার ঘুরিয়ে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর ঘাড়ে চাপিয়েছেন।
২০ ডিসেম্বর, বুধবার সংসদে ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্যের বকেয়া আদায়ের দাবিতে এদিন সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সকাল ১১টার পর বৈঠক শুরু হতেই ২০ মিনিটের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। এর পর জানা যায়নি যে, আদৌ কিছুর সুরাহা হয়েছে কিনা। এর পর বিজয় চকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী কী কথা হয়েছে ও প্রধানমন্ত্রী কী জানিয়েছেন।
এদিন সংসদ ভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি ১৫৫ বার ব্যাখ্যা দিয়েছি। আজকে আবার দিয়ে এলাম। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা প্রকল্প, হেলথ মিশন, ফিন্যান্স কমিশন সহ একাধিক প্রকল্পে কেন্দ্রের অর্থ বকেয়া রয়েছে। রুপিয়া নহি মিলা হ্যায়। যা যা ব্যাখ্যা চেয়েছিল সব দিয়েছি। আগেও তিনবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই মর্মে দেখা করেছি। আজ আবার করে এলাম।'
#WATCH | After meeting with the PM, West Bengal CM Mamata Banerjee says, "A ten-member delegation including our MPs met the PM today. I urged the PM to release the funds due to the state. The PM said there will be joint meetings between officers from Centre and West Bengal on… pic.twitter.com/7YAJRFrQgR
— ANI (@ANI) December 20, 2023
মমতা আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন এই বকেয়া নিয়ে একটি জয়েন্ট কমিটি গঠন করা হবে। যেখানে রাজ্যের একজন অফিসার এবং কেন্দ্রের অফিসার প্রতিনিধি থাকবেন। আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে আসা হবে। আমরা দ্রুততার সঙ্গে এই কাজ সম্পন্ন করতে অনুরোধ জানিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে। ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। গরিব মানুষের এই টাকা একটু তাড়াতাড়ি পৌঁছে দিলে ভালো হয়, এটাও অনুরোধ জানিয়েছি।' তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর কথা প্রধানমন্ত্রী মন দিয়ে শুনেছেন। সমস্যা মেটানোর আশ্বাসও দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই সরব তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। রাজ্যের পাশাপাশি দিল্লিতেও এই বিষয়ে তাঁরা আন্দোলন করেছেন। এবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অভিষেক বন্দোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের ১০ জন সাংসদকে সঙ্গে নিয়ে তিনি মোদীর সঙ্গে দেখা করলেন। জানা গিয়েছে, আজ, ২০ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। তবে নির্ধারিত সময়ের আগে ২০ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় ওই বৈঠক। রাজ্যের বকেয়া টাকা পাবেন কিনা, বৈঠকে কী কী কথা হয়েছে, এই নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে।
সূত্রের খবর, ২০ ডিসেম্বর, বুধবার মোদী-মমতার বৈঠক শুরু হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় ওই বৈঠক। প্রধানমন্ত্রীকে মমতা জানিয়েছেন যে, ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা প্রাপ্য রয়েছে বাংলার। জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সমস্ত কিছু মন দিয়ে শুনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আর কী কী কথা হয়েছে মমতা, তা বিজয় চকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০২৪ সালেই লোকসভা নির্বাচন। ফলে এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। আর এরই মধ্যে মঙ্গলবার নয়া দিল্লির অশোকা হোটেলে বৈঠকে বসল বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র বৈঠক। আর এদিন এক চমক দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসাবে প্রস্তাব দিলেন মল্লিকার্জুন খাড়্গের নাম। আর এতে সম্মতি জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মঙ্গলের বৈঠকে মূলত ইভিএম, আসন ভাগাভাগি, যৌথ প্রচার পরিকল্পনা, ইতিবাচক এজেন্ডা তৈরি করার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের চতুর্থ বৈঠক সম্পন্ন হল। এদিন দুপুর ৩টের পরই শুরু হয় ইন্ডিয়ার বৈঠক। এতদিন বিরোধী জোটের মুখ হিসাবে রাহুল গান্ধীকেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু এদিন বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে সরাসরি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের নাম প্রস্তাব করেন মমতা। তাঁকে সমর্থন করলেন আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। তবে মমতার এই প্রস্তাবে বাকি দলগুলি খুব একটা উৎসাহ দেখায়নি। যদিও এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি মঙ্গলবারের জোট বৈঠকে। মমতার এমন প্রস্তাবের পরই খাড়্গে জানালেন, 'পরে আলোচনার মাধ্যমে তা ঠিক হবে।'
জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হলেও তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে আসন সমঝোতা নিয়ে ডেডলাইন বেঁধে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ এর মধ্যেই সেরে ফেলতে হবে আসন সমঝোতার বিষয়টি। তৃণমূল নেতৃত্ব আজ এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সূত্রের খবর। আগামী ২০ দিনের মধ্যেই ফের বিরোধী জোটের পঞ্চম বৈঠক বসতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
আর মাত্র কয়েক মাস। এরপর বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই ফের একবার একজোট বিরোধীরা। ইতিমধ্যে 'ইন্ডিয়া' জোট তৈরি করে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী শক্তিগুলি। রণকৌশল ঠিক করতেই আজ, মঙ্গলবার ফের একবার বৈঠকে 'ইন্ডিয়া' জোটের সদস্যরা। দিল্লিতে এই বৈঠক হবে। অন্যদিকে, নজিরবিহীন ভাবে একের পর এক প্রায় ৭৮ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
রাজ্যসভা এবং লোকসভার বিরোধী সাংসদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। আর এই ঘটনার পরেই বিরোধী সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গে। যেখানে একাধিক বিরোধী সাংসদ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এদিনের 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই জোটে মোট ২৮ টি বিজেপি বিরোধী দল যোগ দিয়েছে।
ইতিমধ্যে এই বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এছাড়াও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, লালু প্রসাদ যাদব সহ একাধিক বিরোধী দলের নেতারা এদিনের বৈঠকে যোগ দিতে চলেছেন বলেই খবর। কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী উপস্থিত থাকতে পারেন।
প্রসূন গুপ্তঃ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে দিল্লিতে। রবিবারেই পৌঁছে গিয়েছেন রাজধানীতে। দুটি বিষয়ে তাঁর দিল্লি আগমন। প্রথমত, মঙ্গলবার 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠক এবং বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার। সকলের নজরেই এই দুটি দিন রয়েছে।
জোটের চিত্র এই মুহূর্তে একেবারেই পাল্টিয়ে গিয়েছে। ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে জাতীয় কংগ্রেসের ভাবনা এক রকম ছিল যে তাঁরা হয়তো জিততে চলেছেন, কিন্তু তিন রাজ্যে তাদের পরাজয় হয়েছে। কাজেই বেশ চাপের মুখে জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস পার্টি। এই তিন রাজ্যে জিততে পারলে জোটের বৈঠকে অনেকটাই প্রাধান্য নিয়ে তারা দাবি রাখতে পারতো, কিন্তু ফল সম্পূর্ণ উল্টে যাওয়াতে এবারে তাদেরই অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বলেই ধারণা।
কেন্দ্রীয় স্তরের জোট এর আগে অনেকবার হয়েছে। ১৯৭৭-এ ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের বিরুদ্ধে জোট যা হয়েছিল বা সরকার তা একেবারেই অসম। চরম ডানপন্থীরা সঙ্গে বামপন্থীদের জোট। টেকেও নি। ফের জোট হয়েছিল ১৯৮৯-এ। রাজীব গান্ধীর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপি ও বামেদের সাহায্য নিয়ে জনতা দল যে জোট করে সরকার গড়েছিল তাও টেকেনি। এরপর ১৯৯৬ থেকে ৯৮ অবধি একটা জোট হয়েছিল, সেটিরও গঙ্গা প্রাপ্তি হয়েছিল। কিন্তু এরপরে টানা ১৬ বছর এনডিএ এবং ইউপিএ জোট সরকার চালিয়েছিল। যদিও ওই দুই সরকারে প্রাধান্য ছিল প্রথমে বিজেপির পরে কংগ্রেসের।
এবারে বর্তমান মোদী সরকার যথেষ্ট শক্তিশালী। তাদের বিরুদ্ধে জোট কিভাবে কাজ করবে তা নিয়ে অনেক জটিলতা রয়েছে, সাম্প্রতিক ৫ রাজ্যের ভোটে কংগ্রেস জিততে পারলে কিন্তু এই জোটের এক প্রকার শক্তি বাড়তো। হয় নি তা। এবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার ফর্মুলা দিয়েছেন যে, যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী তাদের ইচ্ছার উপরে এলাকা ভিত্তিক জোট হবে। বিষয়টি সমর্থন করেছেন স্তালিন, শারদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে, হেমন্ত সোরেন, অখিলেশ যাদব বা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ওই ফর্মুলাতে চললে এই রাজ্যে কংগ্রেসের বরাদ্দ দুটি আসন। তেমনই দিল্লির ৬টি আসনের মধ্যে কেজরিওয়াল হয়তো ৪/৫ টি আসন চাইবে। সে যাই হোক না কেন শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্য ভূমিকা যে নেবেন তা স্পষ্ট বলে দেওয়া যায়।
চারদিনের দিল্লি সফরে তিনটি মেগাবৈঠকে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবারই মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সূচি চূড়ান্ত হয়েছিল। আজ, রবিবার দিল্লি সফরের উদ্দেশ্যে বিশেষ বিমানে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্র মারফত খবর, সোমবার দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার দুপুরে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে যোগ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকাল ১১ টার সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই সাক্ষাৎ পর্বে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে একাধিক বিষয় তুলতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ১০০ দিনের বকেয়া টাকা তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি বিমানবন্দর থেকে রওনা দেওয়ার কথা।
প্রয়াত বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী অনুপ ঘোষাল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শুক্রবার দুপুর ১.৪৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রয়াত গায়ক ও উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়কের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার কলকাতায় নিজের বাসভবনে দেহত্যাগ করেন অনুপ ঘোষাল। মূলত নজরুলগীতির জন্যই জনপ্রিয় ছিলেন অনুপ ঘোষাল। তবে নজরুলগীতি ছাড়াও তিনি বাংলা, হিন্দি-সহ অন্যান্য ভাষার চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘হীরক রাজার দেশে’র মতো ছবিতে গান গেয়েছেন শিল্পী। সেখান থেকেই তাঁর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর কিছু কালজয়ী গান- ‘দেখোরে নয়ন মেলে’, ‘ভূতের রাজা দিলো বর’, ‘ও মন্ত্রী মশাই’, ‘মোরা দুজনায় রাজার জামাই’। ‘সাগিনা মাহাতো’ চলচ্চিত্রে তিনি সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১১ সালে তাঁকে 'নজরুল স্মৃতি পুরস্কার' ও ২০১৩ সালে 'সঙ্গীত মহাসম্মান' প্রদান করে।
অনুপ ঘোষালের মৃত্যুর খবরে শোকপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "অনুপ ঘোষালের প্রয়াণে সঙ্গীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি অনুপ ঘোষালের আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।"
প্রসূন গুপ্তঃ কংগ্রেস এবং তৃণমূল কতটা কাছাকাছি এলো তাই নিয়ে চলেছে অনেক জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কি এই রাজ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট হচ্ছে? উত্তর নিশ্চই আছে, তবে তা ১৯ ডিসেম্বরের 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠকের পরে। আপাতত এই জোট বৈঠকে ২৬ দল ছাড়াও আরও নতুন দল যোগ দিতে পারে বলে খবর। নতুন বলতে ওই তারাই যারা এবারের তিন রাজ্যের কংগ্রেসের পরাজয়ের অন্যতম হোতা। তবে পশ্চিমবঙ্গে জোটের বিষয় যে, এই বৈঠকে দীর্ঘ সময়ের আলোচনার নয় তা এক প্রকার নিশ্চিত। কিছুদিন আগেই নাকি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টেলিফোনে কথা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কংগ্রেসকে দুটি আসন হয়তো ছাড়বে তৃণমূল, হয়তো তিনটিও হতে পারে। এই আসন অবশ্যই উত্তরবাংলায় কারণ দক্ষিণবঙ্গে তৃণমূল একাই লড়বে বলেই জানা গিয়েছে। আরও একটি বিষয় পরিষ্কার সিপিএমকে বা বামেদের কোনও আসন ছাড়বে না তৃণমূল। বামেরাও তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যেতে আগ্রহী নয়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সিপিএম/ কংগ্রেসের জোটের কি হবে? এক দিল্লির কংগ্রেসি নেতা নাকি জানিয়েছেন যে এই রাজ্যে সিপিএমের এমন কোনও ভোট নেই যার উপর ভরসা করে তাদের সাথে জোট করতে হবে। আসলে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বামেদের উপর ভরসা হারিয়েছে।
এবারে মূল চমক কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি নাকি ফের এই রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন থাকতেই পারে যেখানে বিধায়কদের ভোট রাজ্যসভার সদস্য হওয়া যায় সে ক্ষেত্রে বিধায়কহীন পশ্চিমবঙ্গ থেকে কি করে কংগ্রেসের কেউ রাজ্যসভায় যাবেন? উত্তরে জানা যাচ্ছে, স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি উদ্যোগ নিয়ে তৃণমূলের ভোট দিয়ে মনু সিংভিকে রাজ্যসভায় পাঠাতে আগ্রহী। যদিও এই বিষয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনও প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় নি। শোনা গেলো এটি নাকি তৃণমূলের তরফ থেকে কংগ্রেসকে 'উপহার'।
মনু সিংভি এই রাজ্য থেকে সংসদে গেলেও রাজ্য কংগ্রেস নিয়ে তাঁর কোনও উৎসাহ নেই। তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিখ্যাত আইনজীবী। তিনি এ রাজ্যের নানান প্রশাসনিক আইনি বিষয়টিতে রাজ্য সরকারের হয়ে সওয়াল করেন কোর্টে, তার সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেস তো আছেই। সুতরাং ....
অবশেষে পাওয়া গেল তারিখ। চলতি মাসেই সাক্ষাৎ হবে মোদী-মমতার (Modi-Mamata)। সূত্রের খবর, ২০ ডিসেম্বর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মূলত বাংলার ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের বকেয়া অর্থ নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান মমতা।
জানা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য এই মাসেই মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। গত শনিবারই বাগডোগরা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে হুমকির সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'চিঠি দিয়ে সময় চেয়েছি। সময় দিলে ভাল। না হলে যা করার করব।' এর পরই আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর), প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় দুই নেতার বৈঠক হবে। রাজ্যের বকেয়া নিয়ে দাবি জানাতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে থাকবেন সংসদদের প্রতিনিধি দলও।
একদিকে, দিল্লিতে রয়েছে ইন্ডিয়া জোটের বিশেষ বৈঠক। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ। এই দুই লক্ষ্য নিয়েই চারদিনের সফরে দিল্লি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর উদ্দেশে রওনা হবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ১৯ তারিখ রয়েছে ইন্ডিয়া জোটের চতুর্থ বৈঠক। সেখানে যোগ দেওয়ার কথা তৃণমূল সুপ্রিমোর। এরপর ২০ তারিখ তিনি বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
উত্তরবঙ্গে GTA-র ক্ষেত্রে গ্র্যাচুইটির টাকা বাড়ানোর ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দক্ষিণবঙ্গে আবার প্রাপ্য ডিএ-র দাবিতে রাজপথে সরকারিকর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী কেন বিমাতৃসুলভ আচরণ করছেন, প্রশ্ন তুলে সুর চড়িয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বকেয়া ডিএ প্রদানের ক্ষেত্রে কোষাগার শূন্য আর উত্তরবঙ্গে গ্র্যাচুইটি বৃদ্ধির ঘোষণায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
৯ ডিসেম্বর SLST চাকরীপ্রার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভের হাজার দিন। বকেয়া ডিএ-র দাবিতে শহরের রাজপথে সরকারীকর্মীরা। এই যখন অবস্থা তখন উত্তরবঙ্গ সফরে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। GTA-র ক্ষেত্রে গ্র্যাচুইটির টাকা বাড়ানোর ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু বঞ্চিত রাজ্যের সরকারিকর্মীরা, সেই প্রতিবাদে দক্ষিণবঙ্গে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। কেন এই পৃথক অবস্থানে বাংলার প্রশাসনিক প্রধান, উঠছে প্রশ্ন। দক্ষিণে যখন বঞ্চনার যন্ত্রণা, তখন উত্তরের মন জয়ের চেষ্টায় কেন এই বিমাতৃসুলভ আচরণ, এই প্রশ্ন তুলছেন ডিএ আন্দোলনকারীরা। উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের সংগঠনকে শক্ত ভিতে দাঁড় করাতেই কি উদার মুখ্যমন্ত্রী? আর তাই সরকারীকর্মীরা ডিএ চাইলে বলা হয় কোষাগার ফাঁকা, কটাক্ষ আন্দোলনকারীদের। জিটিএ কর্মীদের মধ্যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ নিরসনে ভোট রাজনীতিকে মাথায় রেখে একটা ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, বলছেন এক আন্দোলনকারী। এই মুখ্যমন্ত্রী বাম সরকারের আমলে বলেছিলেন, যে সরকার ডিএ দিতে পারে না, তার ক্ষমতায় থাকার দরকার নেই। এখন আবার বলছেন ডিএ আবশ্যক নয়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিসন্ধি ঘিরে প্রশ্ন তুলছেন এক ডিএ আন্দোলনকারী।
জিটিএ-র জন্য এক ঘোষণা আর সরকারীকর্মীদের জন্য অপর এক ঘোষণা। কেন এই বৈষম্য, প্রশ্ন তুলছে সংগ্রামী যৌথমঞ্চ। মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান সবসময় মিথ্যাচার করেন, অভিযোগ এক আন্দোলনকারীর।
বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। লোকসভা থেকে তাঁকে বহিষ্কার করার কথা আগেই সুপারিশ করেছিল এথিক্স কমিটি। আজ, শুক্রবার লোকসভায় পেশ করা হল সেই রিপোর্ট। তারপরই সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্ত জানান স্পিকার। সঙ্গে সঙ্গে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান মহুয়া সহ তৃণমূলের সব সাংসদরা। একেবারে রুদ্ধমূর্তি ধারণ করে মহুয়া বলেন, তিনি আবার ফিরবেন। এর শেষ দেখে তবেই তিনি ছাড়বেন।
ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করে কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন সাংসদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, ভোটে হারাতে না পেরে মহুয়াকে বহিষ্কার করেছে। লোকসভা ভোটে এর জবাব দেবে জনগণ। দল মহুয়ার পাশে আছে। বিরোধী জোটের সঙ্গে মিলে এই ঘটনার রাজনৈতিক মোকাবিলা করা হবে।
মহুয়ার বেরিয়ে যাওয়ার পর একে একে বেরিয়ে যান সোনিয়া গান্ধী, অধীর চৌধুরী সহ কংগ্রেসের সাংসদরাও। সব বিরোধীদের পাশে নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দেন মহুয়া মৈত্র। এদিন লোকসভায় বারবার কথা বলার চেষ্টা করলেও বসিয়ে দেন স্পিকার।
প্রসূন গুপ্ত: মঙ্গলবারের একটিই খবর বাংলায় যে, শাহরুখ খান এবারের কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আসবেন না তবে কি হবে? এ ছিল খবরওয়ালাদের প্রশ্ন মাত্র। কয়েক মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুম্বই সফরে গেলে তাঁকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান অমিতাভ বচ্চন। কিছু গল্পগুজবের পরে অমিতাভ নাকি তাঁর শারীরিক কারণ দর্শিয়ে এ বছর ফিল্ম উৎসবে আসতে পারবেন না জানিয়েছিলেন। অমিতাভের যথেষ্ট বয়স হয়েছে। তিনি অনেকটাই কাজ কমিয়ে ফেলেছেন এবং খুব একটা বাইরে শুটিং করছেনও না কিন্তু বাংলার ব্র্যান্ড এম্বাসেডর শাহরুখ খানও আসছেন না এটা হয়তো বোঝা যায়নি। জানা গেল ইদানিং শাহরুখ প্রচন্ড ব্যস্ত তাঁর ছবির প্রচারে এবং অন্য ব্যবসায়ে। মমতা সময়ের সঙ্গে চলতে পটু কাজেই দেরি করেন নি, বাণিজ্য মেলাতেই সৌরভ গাঙ্গুলিকে বাংলার ব্র্যান্ড এম্বাসেডর ঘোষণা করলেন। সেই সাথে এবারের সিনেমা উৎসবে চমক দিলেন বলিউডের আর এক সুপারস্টার সলমন খানকে আমন্ত্রণ জানিয়ে।
কে বেশি জনপ্রিয় একেবারে অতি সাধারণ জনতার কাছে তা কিন্তু পরিষ্কার হলো মঙ্গলবারই। সলমন। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে নেতাজি ইনডোরে প্রবেশের আগেই ধর্মতলা চত্বরে প্রবল ভিড় শুধু একবার 'ভাইজান'কে দেখার জন্য। বাস্তবে সকলেই তো আর প্রবেশ পত্র পায় না। বিশাল হর্ষধ্বনি নিয়ে সলমন অনেকটা চুলবুল পান্ডের মতোই প্রবেশ করলেন। হলে প্রবেশের পরে কয়েক হাজার নানান পেশার দর্শকের ফের হল কাঁপিয়ে চিৎকার। এ যেন ইডেনে সচিন টেন্ডুলকারের ব্যাট করতে নামার মতোই। যখনই সলমন কিছু করছেন তখন আর ঘোষকের কথা বা অন্য প্রসঙ্গ চাপা পরে যাচ্ছে। বিগত বছরগুলির মতো নিয়ম মেনে সময়োপযোগী অনুষ্ঠান এবারে আর দেখা গেলো না কারণ ওই সলমন। হাসি ঠাট্টা মজা করেই কাটিয়ে দিলেন সময়টা। সলমন হয়তো অমিতাভ বা শাহরুখের মতো কলেজের ডিগ্রি নিয়ে ছবির জগতে আসেন নি, কিন্তু তাঁর পরিবার চিরকাল মুম্বই সিনেমাকে দিয়ে এসেছে নানান প্রতিভা। বাবা সেলিমতো শোলে থেকে ডন হয়ে নানান ছবির কাহিনীকার। সেলিম অন্তত সলমনকে শিখিয়েছেন ব্যক্তি জীবনের চিত্রনাট্য কি হতে পারে। একই সাথে কৃতিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও, তিনি জানেন প্রয়োজনে কীভাবে রাজনীতির চিত্রনাট্য বদলাতে হয়।
আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সন্ধেবেলায় নেতাজি ইন্ডোরে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গাওয়া হল রাজ্য সঙ্গীত। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়েই এবার উদ্বোধনী মঞ্চে হাজির হয়েছেন বলিউড তারকা সলমান খান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অনিল কাপুর, মহেশ ভাট, শত্রুঘ্ন সিনহা, সোনাক্ষী সিনহা, বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে চলচ্চিত্র উৎসবের শুভ সূচনা করলেন সলমন খান। আজ, অর্থাৎ ৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব।
উল্লেখ্য, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই কলকাতায় আসেন সলমন খান। মঙ্গলবার সকাল ৬.৪৫ নাগাদ বিমানবন্দরে নামতেই মিলল উষ্ণ অভ্যর্থনা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে গাওয়া হল রাজ্য সঙ্গীত ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’। সকলে উঠে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একত্রে গলা মেলালেন এই গানে। চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে রাজ্য সঙ্গীত গাওয়া হবে, সেকথা সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের মঞ্চ থেকে এদিন বলেন, 'বাংলার মানুষ সিনেমা ভালোবাসে। সিনেমার কদর করতে জানে। বাংলা দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী। বাংলা কাউকে ভয় পায়না, দেশকে ভালোবাসি।'