
থাইরয়েডের (Thyroid) সমস্যা এমনই এক সমস্যা, যা এখন কারও কাছেই বিশেষ অপরিচিত নয়। আর এই সমস্যা প্রত্যেক ঘরে ঘরেই কম বেশি দেখা যায়। প্রতি বাড়িতেই কোনও না কোনও মানুষ থাইরয়েডের সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু এই রোগের ঠিকমতো চিকিৎসা না করালে পরে দেখা দিতে পারে গুরুতর সব অসুখ। এমনকি এই সমস্যা ঋতুস্রাবের ক্ষেত্রে, সন্তান ধারণের ক্ষেত্রেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে জেনে রাখা দরকার থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে খাদ্যতালিকায় ভুলেও রাখা উচিত নয় এই খাবারগুলো।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগলে বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, ছোলা জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। এ ছাড়াও সর্ষে, মুলো, রাঙা আলু, চিনে বাদাম এড়িয়ে চলাই ভালো। থাইরয়েড বেড়ে গেলে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার যেমন পনির, চিজ ডায়েট থেকে বাদ দিন। এছাড়া চিনি, রান্না করা গাজর, পাকা কলা, ময়দার রুটি, আলু, পাস্তা, মিষ্টি শরীরে কার্বহাইড্রেটের মাত্রা বাড়ায়। থায়রয়েড থাকলে এগুলোও কম খান। চা, কফি, চকোলেট, সফট ড্রিঙ্ক যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।
যাঁরা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের কপার এবং আয়রন যুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। টাটকা মাংস, কাজু, গমের আটায় প্রচুর পরিমাণে কপার রয়েছে। সবুজ শাকসবজি, বিন, আঁশওয়ালা মাছ, সামুদ্রিক মাছ, পোলট্রির ডিমে রয়েছে আয়রন। সেই সঙ্গেই ভিটামিন সি খাবার যেমন- লেবু, টমেটো, ক্যাপসিকাম খাওয়া উচিত। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, থাইরয়েডের জন্য আদর্শ হল নারকেল বা নারকেলের দুধ।
বর্ষা (Monsoon) প্রবেশ করতেই সারা দেশজুড়ে ডেঙ্গির (Dengue) প্রকোপ বেড়েছে। বিশেষ করে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আক্রান্তের পাশাপাশি বাড়ছে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যাও। পুজোর আগে আগেই ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। তাই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেই এর থেকে মুক্তি পেতে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত খাদ্য তালিকায়। শুধুমাত্র ওষুধের উপর ভরসা না করে পুষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গি থেকে রেহাই পেতে কী কী ধরণের খাবার খাদ্যতালিকায় (Dengue Diet) রাখা উচিত।
হাইড্রেশন: ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে বেশি করে জল খাওয়া উচিত। কারণ এই সময় জ্বর ছাড়তে শুরু করলে ঘাম হয়। বমি, ডায়ারিয়াও হয়ে থাকে। তাই দেহে যাতে জলের অভাব না হয় তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা উচিত।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে ডায়েটে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত। মুরগির মাংস, মাছ, ডাল থেকে শুরু করে ডিম, পনির খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও রক্ত কোষের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ মাছ খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। এই ধরনের খাবার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
আয়রন যুক্ত খাবার: আয়রন যুক্ত খাবার যেমন- মাংস, ডাল, কড়াই, পালং শাক খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। এই সময় শরীরে প্লেটলেট কাউন্ট কমে যেতে পারে। তাই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
বর্ষা (Monsoon) আসতেই রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ বাড়তে থাকে। এই সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে বর্ষা আসতেই ব্যাকটেরিয়াল বা ভাইরাল ইনফেকশন বৃদ্ধি পায়। এই সময় যে সংক্রমণ বেশি দেখা যায়, তা হল কনজাংটিভাইটিস (Conjunctivitis)। চোখের সংক্রমণের সম্ভাবনা এই সময়ে অধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। তবে এই সংক্রমণের থেকে বাঁচতে কিছু খাবার খেতে পারেন, যা চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি তো করবেই, এছাড়াও এই সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চোখের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে খাওয়া উচিত ভিটামিন সি যুক্ত খাবার। যেমন- কমলালেবু, লেবু ইত্যাদি। এছাড়াও চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন- ডিম খেতে হবে। এতে যেমন প্রোটিন রয়েছে, তেমনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন- আখরোট, আমন্ড যা ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, জিঙ্ক ও ভিটামিন ই-এ সমৃদ্ধ, যা ডায়েটে রাখা উচিত। এগুলো চোখের উন্নতির জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও ফ্ল্যাক্স বীজে চোখ হাইড্রেট করার উপাদান রয়েছে। আবার ভিটামিন এ ও অন্যান্য জরুরী উপাদানে সমৃদ্ধ গাজর ডায়েটে রাখা উচিত। গাজর চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য খুবই কার্যকরী।
অনেকেরই শর্করা জাতীয় খাবার (Foods) বা মিষ্টি খাবার পছন্দ হয়ে থাকে। যেমন- চকোলেট, বিভিন্ন রকমের মিষ্টি ইত্যাদি। কিন্তু এটা প্রায় সবারই জানা যে, সবসময়ই শর্করা জাতীয় খাবার বা চিনি (Sugar) শরীরে কতটা বিপদ ডেকে আনতে পারে। এর ফলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে বিভিন্ন ব্যাধি। তবে চিনি ছাড়া মিষ্টি জাতীয় খাবার ভাবাই যায় না। ফলে মিষ্টি খাবার খেতে ইচ্ছা হলে কী করবেন? তবে আর চিন্তা নেই, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ (Health Tips), মিষ্টি খাবার খেতে ইচ্ছা হলে এমন অনেক বিকল্প খাবার রয়েছে। আর এগুলো খেলে শরীরের কোনও ক্ষতি তো হবেই না বরং ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও উপকারী। সেগুলো হল-
ফল- দিনে যখনই মিষ্টি খাবার খেতে ইচ্ছা করবে, তখনই আপনি ফল খেতে পারেন। ফলে বিভিন্ন রকমের উপকারী উপাদানের পাশাপাশি এতে উপস্থিত চিনি শরীরের পক্ষে স্বাস্থ্যকর। ফলে চকোলেট, মিষ্টির বদলে খান ফল।
দই- দই স্বাস্থ্যকর একটি খাবার, যা প্রোটিন, ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ। এই খাবার যেমন শরীরের পক্ষে উপকারী ও তেমনি আপনার মিষ্টি খাওয়ার ক্রেভিংস কমাতেও সাহায্য করবে।
খেজুর- এই ড্রাইফ্রুট শরীরের পক্ষে যেমন উপকারী, তেমনি এটি খেতেও মিষ্টি। খেজুর ফাইবার, পটাশিয়াম, আয়রনে সমৃদ্ধ। এছাড়াও খেজুরের পাশাপাশি আমন্ড, আখরোটও খেতে পারেন। এতে স্বাস্থ্য তো ভালো থাকবেই আবার মিষ্টি খাবার খাওয়াও হয়ে যাবে।
গুড় ও মধু- চা, কফিতে চিনি না দিয়ে তার বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন মধু ও গুড়। এতে শরীরের কোনও ক্ষতি হবে না। আবার ওজন বাড়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।
ইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza) এইচ৩এন২ (H3N2) ভাইরাসের দাপট ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনার (Corona) পর নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এই ভাইরাস। সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট প্রধান উপসর্গ দেখা গিয়েছে আক্রান্তদের মধ্যে। আর এই পরিস্থিতিতে আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে ইমিউনিটি বাড়াতে খাদ্যতালিকায় বিশেষ নজর রাখা উচিত। কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতেও সাহায্য করতে পারে এই খাবারগুলি।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার: যে সমস্ত সবজি বা ফল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যেমন- বেরি, কিউই, লেবুজাতীয় ফল, খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। এছাড়াও এতে ভিটামিন সি, ই, এ, জিঙ্ক রয়েছে, যা ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
শস্য জাতীয় খাবার: মিলেট, ব্রাউন রাইস, রেড রাইস, ওটমিল এই খাবারগুলি খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, শস্যজাতীয় খাবার ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে রেহাই পেতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল খাবার: ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্তদের খাদ্যতালিকায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি জাতীয় খাবার যেমন- আদা, রসুন রাখা উচিত।
দই ও ফল দিয়ে তৈরি ড্রিঙ্কস: ডায়েটেসিয়ানদের মতে দই-এর সঙ্গে বাদাম, ফল দিয়ে তৈরি স্মুথি খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত।
স্যালাড: ডায়েটেসিয়ানের মতে, কাঁচা সবজি স্যালাড হিসেবে খাওয়া উচিত নয়। আক্রান্তদের সবসময় অল্প করে ভেজে রাখা সবজি স্যালাড হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। এতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
হাইকোর্টে বাতিল হয়ে গেল মমতা সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প (Duare Ration Scheme)। রাজ্য সরকার গৃহীত এই প্রকল্প জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা (National Food Security Law) আইনের পরিপন্থী। এই যুক্তিতে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের নির্দেশিকা খারিজ করল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ (Calcutta High Court)। আইনের চোখে এই প্রকল্পের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। বুধবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন। আদালতের এই রায়ে রেশন ডিলার্সদের বহুদিনের আইনি লড়াই সাফল্যের মুখ দেখল। এমনটাই দাবি বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ফেডারেশনের।
একুশের ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার সরকার গড়ে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের অনুকরণে দিল্লিবাসীর দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প নিয়েছেন কেজরিওয়াল সরকারও। কিন্তু এই প্রকল্পের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করে রেশন ডিলার্সদের সংগঠন। যদিও সেই মামলায় তাঁদের বিপক্ষে রায় দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু সেই রায়ের বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চে দরবার করেন বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ফেডারেশন, রেশন ডিলার জয়েন্ট ফোরামের সদস্যরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই দুয়ারে রেশন প্রকল্প বাতিল করে দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
দুয়ারে রেশন প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছিল রেশন ডিলারদের। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন তাঁরা। এই অভিযোগ তুলে প্রথম একটি মামলা দায়ের হয়েছিল মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চে। কিন্তু আদালত সেই মামলা খারিজ করে দেয়। পরে ডিভিশন বেঞ্চে আইনি লড়াইয়ে সাফল্যের মুখ দেখেন রেশন ডিলাররা।