ফের দেশ-বিদেশে বাড়ছে করোনার প্রকোপ। তার মধ্যে আবার নয়া ভাইরাসের খোঁজ! তাও আবার কিনা চিনের (China) মাটিতেই। শুধু তাই নয়, H3N8 অর্থাৎ বার্ড ফ্লু'য়ের মতো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক মহিলার মৃত্যুও হয়েছে সে দেশে। আর এই মৃত্যুকে ঘিরেই আতঙ্ক। ফের কি বিপদের মুখে বিশ্ব? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অর্থাৎ হু বলছে, বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে এটাই বিশ্বের প্রথম মৃত্যু। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও মৃত্যু হয়েছে এমন কোনও রেকর্ড নেই।
ফলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মহিলার মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতেই নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি, এই স্ট্রেন মানুষের মধ্যে খুব একটা সংক্রমক নয়। ফলে এখনই এত আতঙ্কের কিছু নেই বলেই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
এমনকি এই স্ট্রেন খুব একটা মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ায় না বলেও জানানো হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, চিনের মাটিতে যে মহিলার মৃত্যু হয়েছে তাঁর বয়স ৫৬ বছর। দক্ষিণে গুয়াংডং প্রদেশে ওই মহিলা থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। হু-এর তথ্য অনুযায়ী, আরও দুই ব্যক্তিকে আক্রান্ত করেছে H3N8 অর্থাৎ বার্ড ফ্লু। চিনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানাচ্ছে, মৃত ওই মহিলা গত মাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। যদিও ওই মহিলার মৃত্যু নিয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে ওই মহিলা আরও বেশ কিছু রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
সারা বিশ্বের বিত্তশালীদের মধ্যে রয়েছেন বিল গেটস, ইলন মাস্ক, জুকারবার্গরা। প্রতিপত্তিতে তাঁরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন মাথার উপর। একদিনেই বড়লোক হয়ে যাননি তাঁরা। তাঁদের জীবন সংগ্রামের কথা, দীনতার কথা শুনেছেন অনেকেই। কিন্তু দামি গাড়ি, দামি বাড়ি, দামি জামাকাপড় ছাড়া তাঁদের চোখে দেখেননি। আচ্ছা গরীব হলে তাঁদের কেমন দেখতে হত তা ভেবে দেখেছেন?
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে, বিল গেটস, ইলন মাস্ক, ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্ক জুকারবার্গ এমনকি মুকেশ আম্বানি দাঁড়িয়ে রয়েছেন বস্তির সামনে। পিছনে কোটি টাকার বাড়ির পরিবর্তে স্পষ্ট ভাঙা চালের বাড়ি। পরনে কয়েক লাখি স্যুটের বদলে নোংরা পোশাক। শরীর যেন ভেঙে পড়েছে অপুষ্টিতে। তাঁরা কেউ যেন আর ধনী নয়, বরং সর্বহারা।
অনেক নেটিজেন জানতে চাইছেন 'এই ছবিগুলি দেখে তো একেবারেই নকল বলে মনে হচ্ছে না, তাহলে কী সব হারিয়ে এমন হয়ে গিয়েছেন তাঁরা?' এর উত্তর রয়েছে। প্রযুক্তির জগতে সাম্প্রতিক আমদানি 'এআই' অর্থাৎ আর্টিফিসিলিয়াল ইন্টেলিজেন্স। 'মিডজার্নি' বলে একটি অ্যাপ, নিজের কল্পনার ছবি তৈরি করা যায়। সেই সফটওয়্যার থেকেই এই ছবির উৎপত্তি।
নয়া পালক কিং খানের (King Khan) মুকুটে। টাইম পত্রিকার (Time Magazine) বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছেন অভিনেতা শাহরুখ খান। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এসআরকে (Shah Rukh Khan) ভক্তদের মনে খুশির জোয়ার। শুধু তিনি শীর্ষস্থানেই নেই, ছাপিয়ে গিয়েছেন লিওনেল মেসি, ইলন মাস্ক, মার্ক জুকারবার্গের মতো তাবড় তাবড় ব্যক্তিত্বদের।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি কে, তা জানতে এক সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেই সমীক্ষায় মোট ১২ লক্ষ মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন এতে। এরপর মোট ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে সেরার সেরা হয়েছেন এসআরকে। অর্থাৎ মোট ৫০ হাজার মানুষের ভোট পেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়েছেন।
প্রথম স্থানে শাহরুখ থাকলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে একজন করে নেই। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ইরানের নারীরা ও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বিশ্বের সকল স্বাস্থ্যকর্মীরা। ইরানের নারীরা যেভাবে সেদেশের পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে আসছেন, তার জন্য তাঁরা দ্বিতীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। আর যেভাবে কোভিড মহামারীর সময় সারা বিশ্বের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিন নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যের সেবা করে গিয়েছেন তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন। চতুর্থ স্থানে রয়েছেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল। পঞ্চম স্থানে লিওনেল মেসি।
চলতি মাসের শুরুতে টানা বৃষ্টির কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। এই জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াতে আবহাওয়া অনেক শুষ্ক রয়েছে এবং তাপমাত্রা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। এই পরিবেশে তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে কী করা উচিত? শুনুন চিকিত্সক কুণাল সরকার কী বলছেন:
বছরে তিনটি মাস আমাদের গরম থাকে এবং এই গরমে আমরা অভ্যস্ত। তবে গরম সহ্য করতে অভ্যস্ত হলেও আমাদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে। কারণ হঠাত্ করে আমরা এখন প্রায় ঘরের মধ্যে আছি কিংবা কেউ কেউ বাতানুকূল পরিবেশের মধ্যে আছি। তবে আজ থেকে প্রায় ১৫-২০ বছর আগে আমরা এত পরিমাণ বাতানুকূল পরিবেশের মধ্যে ছিলাম না। যেটা এখন খুবই বেড়েছে। তাই এখন আমরা ঘরের ভিতর থেকে যখন বাইরে বেরাচ্ছি তখন একটা সম্পূর্ণ আলাদা তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসছি। আর যখন আমরা এই আলাদা তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসছি তখন আমাদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
কারণ বাড়িতে আছি ২৩ ডিগ্রিতে কিন্তু যখন বাইরে বেরাচ্ছি তখন তা ৪০ ডিগ্রি হয়ে যাচ্ছে। তখন আমাদের এই তাপামাত্রার তারতম্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু অসুবিধা হতে পারে। কারণ আমাদের ব্রেনের বিশেষ কিছু কিছু সেন্টার আছে যেখান থেকে আমাদের এই তাপমাত্রা মানিয়ে নেওয়ার কাজগুলো করে।
তাই তিনি জানিয়েছেন, যখন আমারা ঘর থেকে বাইরে বেরবো তখন যেন সরসরি রোদে না দাঁড়িয়ে, ছায়াতে দাঁড়াই। এখন উত্তপ্ত রোদে অর্থাত্ ৩৮-৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় খোলা আকাশের নিচে না দাঁড়ানোই উচিত। এমনকি শুধু ছায়াতে দাঁড়ালেই হবে না সঙ্গে শরীরের ফ্লুয়েডের পরিমাণ বাড়াতে হবে। খেতে হবে অনেক জল। এই কয়েকটি বিষয় খুব ভালো করে মেনে চলতে হবে বাচ্চা-বড় সবাইকেই।
কাশির সমস্যা ছোট থেকে বড় সবার মধ্যেই দেখা যায়। তবে কাশি দু'রকমের হতে পারে। এক শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি, অন্যটি শুকনো কাশি। সবথেকে মানুষকে বিরক্ত করে দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি। সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা-গরমের ফলে শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি আর ধুলোবালি, দূষণের ইত্যাদির কারণে শুকনো কাশি হয়ে থাকে। তার মধ্যে এখন কোভিড-১৯, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, অ্যাডিনো ভাইরাসের ছড়াছাড়ি, ফলে কাশি যেন কমার নামই নেয় না। তবে আর চিন্তা নয়, কাশির জন্য আপনাকে এখন সবসময় ওষুধ খেতে হবে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বাড়িতেও কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি আপনার দীর্ঘদিনের কাশি থেকে রেহাই পেতে পারেন। তবে কী সেই উপায়গুলি?
চিকিৎসকের পরামর্শ, প্রথমেই আপনাকে আপনার গলাকে বিশ্রাম দিতে হবে। সঙ্গে কিছু খাবার ও পানীয় খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে। যা আপনার গলাকে আর্দ্রতা দেবে। আপনাকে দিনে বারবার গরম জল, গরম স্যুপ, তরল জাতীয় খাবার, গরম চা, কফি খেতে হবে। তবে বিশেষ নজর দিতে হবে যাতে চা, কফি বেশি না খাওয়া হয়ে যায়।
কারণ এতে পরে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য ফল, শাকসবজিও খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আর সবথেকে প্রয়োজনীয় ও উপকারী উপায় হল গার্গেল করা। উষ্ণ গরম জলের সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে সারাদিনে বারবার গার্গেল করতে হবে। এতে আপনার গলা ব্যথা থাকলে সেটি কমবে ও কাশি থেকেও দ্রুত মুক্তি পাবেন।
প্রতি বছর ঋতু পরিবর্তনের সময় ফ্লু (Flu) ভাইরাসের দাপট বেড়ে যায়। আবার কলকাতায় শুরু হয়েছে ঝড়-বৃষ্টি। ফলে এই গরম, এই ঠান্ডা, এই পরিস্থিতিতে সর্দি-কাশি হওয়াটা স্বাভাবিক। তার মধ্যে দেশজুড়ে নতুন করে শুরু হয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের চোখরাঙানি। এই আবহে চিকিৎসকরা তাই খাবারের উপরে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন। কীভাবে বা কোন খাবার খেলে ইমিউনিটি বাড়ানো যাবে, সে বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। পুষ্টিবিদদের মতে, এই খাবারগুলি খেলে সর্দি-কাশি থেকে দূরে থাকবেন।
মুগ স্প্রাউট: পুষ্টিবিদদের মতে, মুগ স্প্রাউট ভিটামিন ও মিনারেলে ভরপুর একটি খাবার। এতে রয়েছে anti-oxidants, magnesium, phosphorus, manganese, and vitamin K, যা মরশুম বদলের সময়ে ইমিউনিটি বাড়িয়ে যে কোনও রোগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে।
রসুন: Antibacterial এবং Antifungal বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন উপাদান অ্যালিসিন রয়েছে রসুনে যা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম ও সর্দি-কাশি বা ফ্লু থেকে দূরে রাখে।
পেঁপে: পেঁপে হাই ফাইবার ও প্যাপাইন এনজাইমে সমৃদ্ধ খাবার যা হজমে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি এতে উপস্থিত vitamin c রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে সাহায্য করে।
দই: দই শরীরে ইমিউনিটি বাড়িয়ে কোনওরকমের ফ্লু, সর্দি-কাশি থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।
সজনে: vitamin C এবং antioxidants সমৃদ্ধ খাবার হল সজনে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সজনের উপকারিতা অপরিসীম। এছাড়াও এতে vitamin B যেমন- thiamine, riboflavin, niacin, and vitamin B12 ইত্যাদি রয়েছে যা বিপাক ক্রিয়াকে ঠিক রাখে।
ভিটামিন সি যুক্ত ফল ও সবজি: বিশেষ করে মরশুম বদলের সময়ে এই ভিটামিন সি যুক্ত ফল-সবজি যেমন- কমলালেবু, আমলা, টোম্যাটো খাওয়া উচিত। এগুলি শরীরে খুব সহজেই ইমিউনিটি বাড়িয়ে দেয় ও যেকোনও ভাইরাস সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza) এইচ৩এন২ (H3N2) ভাইরাসের দাপট ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনার (Corona) পর নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এই ভাইরাস। সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট প্রধান উপসর্গ দেখা গিয়েছে আক্রান্তদের মধ্যে। আর এই পরিস্থিতিতে আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে ইমিউনিটি বাড়াতে খাদ্যতালিকায় বিশেষ নজর রাখা উচিত। কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতেও সাহায্য করতে পারে এই খাবারগুলি।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার: যে সমস্ত সবজি বা ফল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যেমন- বেরি, কিউই, লেবুজাতীয় ফল, খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। এছাড়াও এতে ভিটামিন সি, ই, এ, জিঙ্ক রয়েছে, যা ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
শস্য জাতীয় খাবার: মিলেট, ব্রাউন রাইস, রেড রাইস, ওটমিল এই খাবারগুলি খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, শস্যজাতীয় খাবার ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে রেহাই পেতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল খাবার: ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্তদের খাদ্যতালিকায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি জাতীয় খাবার যেমন- আদা, রসুন রাখা উচিত।
দই ও ফল দিয়ে তৈরি ড্রিঙ্কস: ডায়েটেসিয়ানদের মতে দই-এর সঙ্গে বাদাম, ফল দিয়ে তৈরি স্মুথি খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত।
স্যালাড: ডায়েটেসিয়ানের মতে, কাঁচা সবজি স্যালাড হিসেবে খাওয়া উচিত নয়। আক্রান্তদের সবসময় অল্প করে ভেজে রাখা সবজি স্যালাড হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। এতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
দেশ জুড়ে বাড়ছে ভাইরাল ফ্লু-তে (Viral Flu) আক্রান্তের সংখ্যা। জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগী এখন ঘরে ঘরে। জ্বর (fever) সারলেও থেকেই যাচ্ছে কাশি, গলা খুসখুস। হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর ভিড়। এই ভাইরাসের (Virus) সংক্রমণের ক্ষমতা অন্যান্য ভাইরাসের তুলনায় অনেক বেশি। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এক রোগীর শরীর থেকে অন্য লোকের শরারে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। এর ফলে যে ফ্লু হয়, তাকেই বলা হয় ‘হংকং ফ্লু’(H3N2 virus)।
জ্বরের পাশাপাশি, এই ভাইরাসের আক্রমণে কাশি, নাক থেকে জল পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গলাব্যথা ও মাথাব্যথার মতো উপসর্গ লক্ষ করা যায়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে ডায়েরিয়া, বমি, সারা শরীরে যন্ত্রণাও লক্ষ করা যাচ্ছে। তবে অন্যান্য উপসর্গ কমতে শুরু করলেও কাশির সমস্যা কমতে ১৫ দিনের বেশি সময় লাগছে।
আইসিএমআর-এর দাবি, অন্য উপরূপগুলির তুলনায় এটি অনেক বেশি ক্ষতিকর। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই এইচ৩এন২ কারণেই রোগীরা সবচেয়ে বেশি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এই বিষয়ে চিকিৎসক ধীরেন গুপ্ত বলেন, ‘‘ ইনফ্লুয়েঞ্জার অতি সাধারণ উপরূপ এইচ৩এন২-এর আক্রমণে শিশুদের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ছে। দিন দিন হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই উপরূপ প্রাণঘাতী নয়। কোমর্বিডিটি থাকলে যে কোনও ভাইরাসই প্রাণঘাতী হতে পারে। এইচ৩এন২-এর বিরুদ্ধে টিকাকরণের কার্যকারিতা কম।’’
উল্লেখ্য, কোভিডের মতোই এইচ৩এন২-র দাপটে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে, এখনই সেরকম কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা।
জ্বর-শ্বাসকষ্টজনিত কারণে শহরে অব্যাহত শিশুমৃত্যু। নেপথ্যে অ্যাডিনো আক্রমণে? জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের দুই হাসপাতালে ৫ শিশুর মৃত্যুর খবর মিলেছে। জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের প্রভাবে এই শিশু মৃত্যু বলে খবর। বিসি রায় হাসপাতালে জ্বর এবং শ্বাসকষ্টজনিত কারণে এই শিশু মৃত্যু বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, ১৭ ফেব্রুয়ারি জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় হরিণঘাটার বাসিন্দা এক সদ্যজাতকে। তারপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিসি রায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাকে। এদিন সকালে ৬ টা নাগাদ মৃত্যু হয়েছে সেই শিশুর। পাশাপাশি দেগঙ্গার বাসিন্দা ৭ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার। ২৪ ঘণ্টায় বিসি রায় হাসপাতালে ৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
জানা গিয়েছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে আরও দুই শিশুর মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিউমোনিয়ার জেরে এই শিশু মৃত্যু বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। মৃত শিশুদের মধ্যে একজনকে অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ থাকায় ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। মৃত এক শিশুর পরিবার সূত্রে খবর, প্রথমে আরজি করে ভর্তি ছিল ওই শিশু। সুস্থ বলে ছেড়ে দেওয়ার পর, বাড়িতে গিয়ে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় কলকাতা মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের ১ বছর ৮ মাসের এক শিশুর গায়ে জ্বর, শ্বাসকষ্ট এবং র্যাশ ছিল। ওই শিশুকে উদয়নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কলকাতা মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছিল। আজ সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয়েছে ওই শিশুর।
এদিকে, সোমবার স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে হাসপাতালগুলোর বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে। রেফার বেশি হচ্ছে বিসি রায় হাসপাতালের। একদম শেষ মুহূর্তে জেলা হাসপাতাল থেকে কলকাতার হাসপাতালে বিশেষ করে বিসি রায় হাসপাতালে এই রেফারের জেরে রোগী বাড়ছে। ফলে নাজেহাল অবস্থা হাসপাতালগুলোর।
এই প্রসঙ্গে এক শিশু চিকিৎসকের মন্তব্য, 'অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হন। অভিভাবক, চাইল্ড কেয়ার গিভার প্রত্যেকে সতর্ক থাকুন। এই রোগ নিয়ে সচেতন থাকলে আমরা প্রস্তুত থাকতে পারতাম। করোনার সময় যেভাবে বিধি মেনে চলেছি সেভাবেই থাকতে হবে।'