মণি ভট্টাচার্য: ভোটের কাজ শেষ হওয়া সত্ত্বেও ১৬ ঘন্টা ধরে নিখোঁজ ভাঙড়ের পোলিং অফিসার। সূত্রের খবর, ভাঙড়ের দ্বিতীয় পোলিং অফিসার সঞ্জয় সর্দার শনিবার গভীর রাতে ভোটের সামগ্রী সমস্ত কিছু ও ডিসিআরসি জমা দিয়ে এখনও অবধি বাড়ি ফেরেননি। তাঁর হঠাৎ এই নিখোঁজ হওয়াতে স্বাভবিকভাবেই চিন্তিত তাঁর পরিবার। পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার সঞ্জয়ের পরিবারের তরফে জীবনতলা থানায় সঞ্জয়ের নিখোঁজ সমন্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিস জানিয়েছে, সঞ্জয়ের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিস।
সূত্রের খবর, প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক সঞ্জয় সর্দার, ভাঙড়ের ১০৭ বনম্বর বুথ দক্ষিণ গাজীপুর শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে ভোটের কাজে যান। এরপর ভোট শেষে ভাঙড়ের কাঠালিয়া হাইস্কুলে ডিসিআরসিতে ভোট সামগ্রী জমা দিয়ে শনিবার রাত ২ টো ১৫এর সময় সেখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর ১৮ ঘন্টা হয়ে গেলেও সঞ্জয় নামের ওই দ্বিতীয় পোলিং অফিসার বাড়ি ফেরেননি বলে দাবি তাঁর পরিবারের।
সঞ্জয় সর্দারের স্ত্রী টুম্পা সর্দার সিএন-ডিজিটালকে জানিয়েছেন, সঞ্জয়ের সঙ্গে শেষবার ফোন যোগাযোগ করা হয়েছিল তখন সে সবে ভোট শেষ করেছেন। এরপর থেকে তাঁকে আর ফোনে পাওয়া যায় নি। তিনি জানিয়েছেন তারপর থেকে ফোন বন্ধই ছিল। এ ঘটনায় রীতিমত ভেঙে পড়েছেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, 'আমরা আজ সকাল থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল গুলিতে ঘুরেছি। কিন্তু কোনও খোঁজ পাই নি। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভোটকেন্দ্র থেকে খুব দেরি হলেও সঞ্জয়ের বাড়ি অর্থাৎ ক্যানিংয়ে পৌঁছাতে দেড় থেকে ২ ঘন্টার বেশি লাগার কথা নয়। আমরা পুলিসকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার টিপুসুলতান হালদার সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'আমাদের ভোট কেন্দ্রে তেমন কিছু হয় নি। যখন আমরা ভোট সামগ্রী জমা দিয়ে ফিরছি তখন দেখেছিলাম ওনার ফোন বন্ধ। এরপর থেকে ১৭ -১৮ ঘন্টা কেটে গেলেও তার খোঁজ মেলেনি।'
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইটাহার ব্লকের একটি স্কুলে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে কাজ করছিলেন করণদিঘির রহতপুর হাইস্কুলের শিক্ষক রাজকুমার রায়। ভোট চলাকালীনই তিনি বুথ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। পরদিন সকালে রায়গঞ্জ থানার বামুনগাঁ এলাকায় রেললাইনের ধারে তাঁর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। স্কুল শিক্ষক প্রিসাইডিং অফিসারের ভোট চলাকালীন এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়ে ওঠে রাজ্যের কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার। এবার ২০২৩ পঞ্চায়েত ভোটে কিছু জায়গায় প্রিসাইডিং অফিসারদের মারধর করা হলেও কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটে নি। কিন্তু ভাঙড়ের এই পোলিং অফিসার নিখোঁজের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) লড়তে পারবেন না ভাঙড়ের (Bhangar) ৮২ জন আইএসএফ প্রার্থী। বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, নতুন করে আর মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে না। সূত্রের খবর, বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্বাচন কমিশনকে ভাঙড়ের ওই ৮২ জন আইএসএফ প্রার্থীর মনোনয়ন খতিয়ে দেখে, পুনরায় মনোনয়ন নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় ভাঙড়ের আইএসএফ প্রার্থীদের এসকর্ট করে বিডিও অফিসে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু আইএসএফ পরবর্তীতে আদালতে জানিয়েছিল তাদের অনেকের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। সেই মামলার শুনানি শেষে ফের মনোনয়ন জমা দেওয়ার বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
একদিকে যখন ভাঙড় (Bhangar), দেগঙ্গা (Deganga) সহ গোটা রাজ্যের বহু জায়গায় তৃণমূলের (Tmc) বিরুদ্ধে হামলা, অশান্তির অভিযোগ আনছে আইএসএফ (ISF), তখন আইএসএফ ও তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা (Chandrakona), রবিবার এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, দলীয় পতাকা লাগানো নিয়ে আইএসএফ ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বচসা শুরু হয়, তার জেরেই পরিস্থিতি সংঘর্ষের আকার নেয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিস বাহিনী। পুলিসের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিস সূত্রে খবর, এই সংঘর্ষের জেরে দুপক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত। তাঁদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া তৃণমূল সূত্রে খবর, এ ঘটনায় তিনজন তৃণমূল কর্মী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদিও এ ঘটনায় এখনও অবধি পাওয়া খবর অনুযায়ী কোনও পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নি। এই সংঘর্ষের দায় নিতে চায় নি কোনও পক্ষই। এ ঘটনায় এখনও অবধি কাউকে গ্রেফতার না করলেও স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্তে নেমেছে পুলিস।
তৃণমূল কংগ্রেস (TMC Candidate) প্রার্থীকে কোপানোর অভিযোগ উঠল আইএসএফের (ISF) বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ভাঙড়ের (Bhangar) চালতাবেড়িয়া এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, আহত তৃণমূল নেতার নাম ওহিদুল ইসলাম। তাঁকে জিরেনগাছা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানেই চিকিৎসাধীন ওই তৃণমূল প্রার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওহিদুল চালতা বেড়িয়া অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ তিনি বামুনিয়ার বাড়িতে ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেসময় বামুনিয়া কর্মতীর্থ বাজারের কাছে তাঁকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মারে আইএসএফের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেসময় ওহিদুলের সঙ্গে ছিল তাঁর সঙ্গী ইব্রাহিম। সেসময় ইব্রাহিম ও ওহিদুলের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে বাঁচাতে গেলে তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওহিদুলকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয় ওই তৃণমূল কর্মীরা। তাদেরকেও ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
যদিও এঘটনায় সম্পূর্ণ অভিযোগ অস্বীকার করেছে আইএসএফ। এ বিষয়ে ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, 'তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা আমাদের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে ,আইএসএফ শান্তিপূর্ণ ভোট চায়, এ ঘটনায় আইএসএফ জড়িত নয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় প্রচুর পুলিস। উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হলেও পুলিস পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাজ্যপাল (Governor) যেন একাই একশো। কখনও দক্ষিণ ২৪ পরগনার অশান্তির খবর পেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে (State Election Commissioner) পরিস্থিতির দিকে নজর দিতে বলছেন, কখনও পৌঁছে যাচ্ছেন উত্তপ্ত ভাঙড়ে (Bhangar), ক্যানিংয়ে। আহতদের সঙ্গে কথা বলছেন। এর জন্য অবশ্য রাজনৈতিক টিপ্পনি করেছেন শাসক দল তৃণমূল। ঠিক এরকম ভাবেই অশান্ত দিনহাটায় পৌঁছে যান রাজ্যপাল। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেখানকার পরিস্থিতি জানার চেষ্টাও করেন।
শনিবার দুপুর একটা নাগাদ তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ি প্রধান তাপস দাসের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল। শুক্রবারই গ্রেফতার করা হয় তাপস দাসকে। তার বাড়িতে পুলিশি অভিযানও চলে। স্ত্রী অনিতা দাস অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁকে মারধর করেছে। এরপরই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
'এভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনও নির্বাচন হতে পারে না।' ভাঙড়ের (Bhangar) ৮২ জন আইএসএফ (ISF) প্রার্থীর মনোনয়ন (Nomination) সংক্রান্ত একটি মামলায় এমন মন্তব্য করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ সোমবার ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সিনহা নির্দেশ দেন, ভাঙড়ে আইএসএফ-এর যে ৮২ জন প্রার্থীর নাম ওয়েবসাইট থেকে মুছে গিয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের অভিযোগ আলাদা করে খতিয়ে দেখতে হবে। তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। এই পদক্ষেপ করতে হবে ২৮ জুনের মধ্যে।
ভাঙড়ে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তারা সব আসনে মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। আইএসএফ প্রার্থীদের দাবি, অশান্তির পরেও কিছু আসনে মনোনয়নপত্র জমা করতে পেরেছিলেন তাঁরা। স্ক্রুটিনির পরেও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তাঁদের নাম ছিল বলে দাবি। এমনকি মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন অর্থাৎ ২০ জুন সকালেও কমিশনের ওয়েবসাইটে তাঁদের নাম ছিল বলে দাবি আইএসএফের। কিন্তু সেই রাত থেকে ওয়েবসাইটে তাঁরা আর নাম দেখতে পাননি বলে অভিযোগ। এর ফলে ওই সব আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
প্রাণহানির আশঙ্কা জানিয়ে হাইকোর্টের (High Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন ভাঙড়ের (Bhangar) আইএসএফ (ISF) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী (Nawsad Siddique)। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রের নিরাপত্তাও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরপরও সন্তুষ্ট নন নওশাদ। নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে ফের আদালতের দ্বারস্থ হলেন বিধায়ক। বর্তমানে সাত জন সদস্যের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান নওশাদ। যা কার্যত ওয়াই ক্যাটেগরির মধ্যে পড়ে। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না বিধায়ক। সেই কারণে আরও নিরাপত্তা বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
নওশাদের দাবি, ওই এলাকার অন্য বিধায়করা জেড ক্যাটাগরির সুরক্ষা পেয়ে থাকেন। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি রাজা শেখরমান্থা মন্তব্য করেন যে, নিরাপত্তা বিষয়টি পরিবর্তনশীল। সময়ের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে। তিন সপ্তাহ পরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিক কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড়। চলে গুলি-বোমা। আইএসএফ প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লেখেন নওশাদ সিদ্দিকী। সেখানে প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ তিনি। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে কেন্দ্রের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে মামলাও দায়ের করেন তিনি। সেই মামলা শোনেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। পরে আদালত নির্দেশ দেয় বিধায়কের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়ে।
মদের আসরে বন্ধুকে খুনের (Dead) অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ভাঙড় (Bhangar) থানার গড়ান বেরিয়া এলাকায়। মৃতের নাম অজয় পাল। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত রাজু শেখ।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে অজয় এবং রাজু একসঙ্গে বসে মদ্যপান করছিলেন। সেসময় হঠাৎ তাঁদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, তারপরেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে অজয়ের গলা কেটে খুন করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিস পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
অজয় এবং রাজু দুজনেই একই এলাকার বাসিন্দা। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অজয় একজন প্রতিমা শিল্পী। তাঁরা প্রায়শই একসঙ্গে মদ্যপান করতেন। রবিবারও একইভাবে মদ্যপান করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে কী কারণে তাঁদের মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত সেই বিষয়টিই ভাবাচ্ছে পুলিসকে। ঘটনার তদন্তে ভাঙড় থানার পুলিস।
ভাঙড়ে (Bhangar) ঢুকল কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force)। শনিবার কাশীপুর (Kashipur) থানা এলাকায় তারা রুটমার্চ করেছে বলেই জানা গিয়েছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তায় প্রথম ধাপে ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মঞ্জুর করা হয়েছে। তার আগেই অবশ্য ২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটের মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই অঞ্চল। তার জেরেই বিরোধীদের বাহিনী নিয়ে দাবি আরও জোরদার হয়েছিল।
এদিকে রাজ্যে বাহিনীর প্রবেশের সঙ্গেই বিভিন্ন জেলায় নির্দেশিকা পাঠিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বাহিনীকে বসিয়ে রাখা যাবে না। কমিশনের হিসাব বলছে, শুক্রবারই প্রাথমিক ভাবে চাওয়া ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে এসে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি, বাঁকুড়া, হুগলির মতো জেলায় তাদের রুটমার্চ চলছে। কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সকাল-বিকেল এরিয়া ডমিনেশনের কাজে বাহিনীকে ব্যবহার করতে হবে।
শুক্রবারই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে দুটি দাবি করেছিল বিরোধী বিজেপি। এক, পঞ্চায়েতের গণনার পরেও রাজ্যে বাহিনী রেখে দিতে হবে। আর দুই সরাসরি অভিযোগ জানাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ফোন করা যাবে। দ্বিতীয় বিষয়টি অবশ্য দাবি করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর এই দাবি নিয়ে সরকারি ভাবে এখনও কোনও সত্যতা নেই।
কার্যত আদালতের ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। ভাঙড়ে (Bhangar) আইএসএফ (ISF)প্রার্থীদের পুনরায় মনোনয়ন চেয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয় হাইকোর্টে। অমৃতার সিনহার (Amrita Sinha) এজলাসে এদিন এই মামলার শুনানিতে কমিশনকে ফের সন্ত্রাস সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করেন জাস্টিস সিনহা। এদিন কমিশনের আইনজীবী কাছে জাস্টিস সিনহা স্পষ্ট জানতে চান, ভোট হচ্ছে কি হচ্ছে না! নির্বাচন প্রক্রিয়া কি এখনো চলছে? এছাড়া তিনি একটি উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন করেন কমিশনের আইনজীবির কাছে যে 'নির্বাচন কমিশনার কি আছে এখনও,' এমন প্রশ্ন করে বিস্ময় প্রকাশ করেন জাস্টিস সিনহা।
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর দুটোর মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর চেয়ে পাঠানো হয়েছে জাস্টিস সিনহার এজলাসে। মনোনয়ন পর্বে গোটা রাজ্যজুড়ে হিংসা,খুনো-খুনি ও স্বতঃস্ফূর্ত সন্ত্রাসের চিত্র দেখেছে বাংলা। যার পরে বিভিন্ন দল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। গতকাল অর্থাৎ বুধবার জাস্টিস সিনহার এজলাসে কংগ্রেস প্রার্থীদের নমিনেশন ও প্রতীক সংক্রান্ত মামলায়, কংগ্রেস প্রার্থীদের সিআরপিএফ জওয়ানের নিরাপত্তার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আজ আইএসএফ প্রার্থীদের মনোনয়নের মামলা।
এদিন জাস্টিস সিনহা প্রশ্ন করেন, 'নির্বাচন কমিশনের নির্ঘন্ট মেনে এখনও কি ভোট হচ্ছে!' অর্থাৎ এ প্রশ্নের পরেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে বিচারকের এই প্রশ্ন ভীষণ ইঙ্গিত পূর্ণ। গতকালই রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যকে পঞ্চায়েত ভোটের সন্ত্রাস সংক্রান্ত বিষয় বারবার হুঁশিয়ারি করেন এবং তিনি বলেন, 'যদি নির্বাচন কমিশনার ঠিক মতন তাঁর দায়িত্ব পালন করতে না পারে, তাহলে তিনি বসে যান। এরপরেই অবশ্য গতকাল রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং লেটার ফেরান রাজ্যপাল।'
এবার ভাঙড়ের (Bhangar) তৃণমূল (Tmc) নেতা খুনে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর (Nawsad Siddique) বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করল পুলিস। সূত্রের খবর, সম্প্রতি ভাঙড়ে হওয়া তৃণমূল ও আইএসএফ সংঘর্ষে দু'জন তৃণমূল নেতা ও একজন আইএসএফ নেতা খুন হয়। তৃণমূল নেতার রাজু নস্কর খুনের ঘটনায় ৬৮ জন আইএসএস কর্মী সহ নওশাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করল কাশিপুর থানার পুলিস।
সূত্রের খবর, ওই দিন তৃণমূল ও আইএসএফ সংঘর্ষে মৃত আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায়, এর পূর্বে কাশিপুর থানার তরফে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আরাবুল ইসলাম ও হাকিমূল ইসলাম সহ কুড়ি জনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়। সূত্রের খবর, উভয় ঘটনাতেই তদন্তে নেমেছে পুলিস।
ভাঙড়ের (Bhangar) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর (Nawsad Siddique) নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। মঙ্গলবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নওশাদ সিদ্দিকীর করা মামলায় এমন নির্দেশ দেন। সূত্রের খবর, ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী নিজের প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেন, রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকারকে নিরাপত্তা জন্য আবেদন করে। সেই আবেদনে কোন সাড়া মেলেনি বলে জানায় তিনি।
সূত্রের খবর, এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে তিনি ভাঙড়ের বর্তমান পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক হিংসা, এছাড়া তাঁর প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করে নিরাপত্তার আবেদন করেন। ওই মামলার শুনানিতে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা মন্তব্য করেন, এখন রাজ্যের সহ দেশের বহু বিধায়ক সুরক্ষা পায়। সেদিক থেকে ভাঙড়ের বর্তমান পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, 'আমি রাজ্য সরকারকে প্রথম বলেছিলাম আমার নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে। আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। কেন্দ্রীয় সরকারকেও জানিয়েছিলাম, কিন্তু তাঁরা কেউই কোনও সরকারই, আমার কোনও ডাকে সাড়া দেয়নি। বাধ্য হয়ে অবশেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আজ হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার।
আরাবুল (Arabul Islam) ও তাঁর পুত্র হাকিমুল (Hakimul Islam) সহ মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করল পুলিস। ভাঙড়ের (Bhangar) কাশীপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ দায়ের করেন নিহত আইএসএফ নেতা মহিউদ্দিনের বাবা কুতুবুদ্দিন মোল্লা। নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে ১৫ জুন রাতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর।
মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকা। বোমাবাজি এবং গুলি চালানো হয় বলেও অভিযোগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত ৬টি মামলা রুজু করা হয়েছে। আরাবুল প্রসঙ্গে কুতুবুদ্দিন জানান, তাঁর ছেলে মহিউদ্দিন হিংসার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। তাঁরা শুধুমাত্র বিডিও অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেসময় গুলি চালানো হয় এবং সেই গুলি মহিউদ্দিনের গায়ে লেগে মৃত্যু হয়।
মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকা। ঘটনায় মোট ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২ জন তৃণমূল কর্মী। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
ভাঙড় (Bhangar) থেকে চোপড়া (Chopra), গত কয়েকদিন ধরে মনোনয়ন (Nomination) জমাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে অশান্তির অভিযোগ। গুলি, বোমাবর্ষণের অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবারই মনোনয়ন (Panchayet Election) জমা দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। গত কয়েকদিনের হিংসার ঘটনার একটি রিপোর্ট সামনে এনেছে নির্বাচন কমিশন। যেখানে দাবি করা হয়েছে, কোনওরকম মৃত্যুর রিপোর্ট নেই।
কমিশনের রিপোর্টে দাবি, রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত ৩৯টি ঘটনা ঘটেছে। সেই সব ঘটনায় প্রায় ১০০ জনের আহত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়। কমিশনের দাবি, ৮ জুন পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে রাজ্য জুড়ে ৬১টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ মিলিয়ে রাজ্যে মোট ৭৩,৮৮৭ আসন। তৃণমূলের মনোনয়ন জমা পড়েছে ৮৫,৮১৭। অর্থাৎ মোট আসনের থেকে ১২ হাজার বেশি। শেষ দু’দিনে তৃণমূল জমা দিয়েছে ৭৬,৪৮৯টি মনোনয়ন। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপির ৫৬,৩২১টি মনোনয়ন জমা পড়েছে।
ভাঙড়ের (Bhangar) পর এবার ক্যানিং (Canning) পরিদর্শনে রাজ্যপাল (Governer) সিভি আনন্দ বোস (CV Anand Bose)। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ের মতো সংবাদ শিরোনামে এসেছিল ক্যানিং-ও। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার ভাঙড় পরিদর্শনে যান রাজ্যপাল। এবার ওই আবহেই শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে গিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, শনিবারই তাঁর রাজ্যের বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করে ক্যানিংয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
গত বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং। বাসন্তী হাইওয়েতে তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি এবং গুলি চলার অভিযোগ উঠেছে। তার জেরে সুনীল হালদার নামে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন বলে ক্যানিংয়ের জোড়াফুল শিবিরের একটি অংশের তরফে দাবি করা হয়। তবে পুলিস জানায়, দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সংঘর্ষে। ক্যানিংয়ের এসডিপিও-সহ কয়েক জন পুলিস কর্মীও ওই সংঘর্ষে জখম হন। এর প্রতিবাদে বাসন্তী হাইওয়ে অবরোধ করা হয়। ক্যানিং তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা যায়, এলাকার ব্লক সভাপতি এবং স্থানীয় বিধায়কের গোষ্ঠীর মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে বুধবার ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। এই আবহে ক্যানিং শহরে সিপিএমের একটা অফিসেও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য যে, শুক্রবার রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত ভাঙড়ে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানকার বিজয়গঞ্জ বাজার ঘুরে দেখেন তিনি। তার পর যান ভাঙড় ১ এবং ২ নম্বর ব্লক অফিসে। সেখানে কথা বলেন আধিকারিকদের সঙ্গে। তার আগে স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। ভাঙড়ে দাঁড়িয়েই হিংসার বিরুদ্ধে বার্তা দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, 'গণতন্ত্রের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। সাংবিধানিক ভাবে হিংসাকে নির্মূল করতে হবে। হিংসা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।'