
'চাইলে চাঁদও এনে দিতে পারি তোমার জন্য'। কমবেশি প্রতিটি প্রেমিক তাঁর প্রেমিকাকে এই কথা একবার হলেও বলে থাকেন। তবে একেই বাস্তব করে দেখিয়েছেন বাঁকুড়ার এক যুবক। সত্যি চাঁদই এনে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী-র জন্মদিনের উপহারস্বরূপ। একেবারে সৌরমন্ডলের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির চাঁদ। আস্ত চাঁদ না হলেও সেই চাঁদেরই এক একর জমি কিনলেন স্ত্রীর নামে।
বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের কাহারাণ গ্রামের বাসিন্দা শুভজিৎ ঘোষ। পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারের পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ফিল্ড সুপারভাইজার পদে নাগাল্যান্ডের প্রত্যন্ত লংলেং জেলায় কর্মরত। স্ত্রী রোমিলা সেনও পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। হায়দরাবাদের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত। বছর খানেক আগেই গাঁটছড়া বেঁধেছেন দুজনে। পেশার কারণে একসঙ্গে থাকা না হলেও প্রতি বছরই নিজেদের স্মরণীয় দিনগুলি একটু অন্যভাবে পালন করেন এই দম্পতি। নিজেদের বিবাহ বার্ষিকী হোক বা জন্মদিন। কখনও পথশিশুদের খাবার দেওয়া, আবার কখনও হাসপাতালের গরিব সদ্যোজাত শিশুদের জামাকাপড় দেওয়া। এভাবেই বিভিন্ন দিন পালন করে থাকেন এই দম্পতি।
গত ১৩ নভেম্বর ছিল স্ত্রী রোমিলা সেন-এর জন্মদিন। এবার স্বামী শুভজিৎ সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে থাকায় নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জন্মদিন পালনের কথা ভেবেছিলেন রোমিলা। শুক্রবার ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁতেই তাঁকে তাঁর স্বামী জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান ভার্চুয়াল মাধ্যমে। সঙ্গে বিস্ময়কর উপহার।
এমন উপহার পেয়ে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ রোমিলার। তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর পর হোয়াটসঅ্যাপটা খুলে দেখতে বলেন শুভজিৎ।
খুলে দেখেন, স্বামী তাঁর নামে চাঁদে জমি কিনে তার শংসাপত্রের ছবি পাঠিয়েছেন। এমন একটা উপহারে স্বভাবতই হতবাক রোমিলা। রোমিলা আরও বলেন, কখনও চাঁদের সেই জমিতে যেতে পারবেন কিনা তিনি জানেন না। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মকে জানাতে চান, যদি কখনো সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়, তাহলে যে শিশুরা অর্থাভাবে কোনোদিন মহাকাশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখার স্পর্ধাটুকুও দেখাতে পারে না, তারা যেন তাদের নিয়ে যায়।
মেয়ের জন্মদিনে জামাতার এমন উপহারে স্তম্ভিত রোমিলার বাপের বাড়ির লোকজন। রোমিলার মা পাপিয়া সেন জানান, অকল্পনীয় একটা সারপ্রাইজ। ওর ভালোবাসা জাহিরের পদ্ধতিটা সবার থেকে একেবারে সম্পূর্ণ আলাদা। প্রচুর গরিব বাচ্চাদের জন্যও করে। এরকম বড় মনের মানুষ থাকুক তাই চাই।
শুভজিৎ জানান, "ওর বার্থ ডেতে ইউনিক কিছু উপহার দেব ভাবছিলাম। কী দেব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তখন ইন্টারনেট ঘেঁটে এই আইডিয়াটা পাই। তারপরই খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি, ডেইনি সোপ বলে এক ব্যক্তি এররকম একটি সংস্থা চালাচ্ছেন। তাঁর থেকেই আমি ওর নামে জমিটা কিনেছি। এক একর জমি কেনা হয়েছে। ভবিষ্যতে কী করা যায়, তা দেখা যাবে। আপাতত জমি কেনার সংশাপত্র এসে পৌঁছেছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে মিলবে জমি কেনার চুক্তিপত্রও। "
কলকাতার থেকেও ২০০ বছরের পুরনো শহর বা স্থান হাওড়া | ব্রিটিশরা এদেশে আসর আগেই তৈরি হয়েছিল এই শহর। মুঘল আমলের আগেও নাকি হাওড়া নামক স্থান ছিল বলে ধারণা ইতিহাসবিদদের | ব্রিটিশরা যে সমস্ত শহর তৈরি করেছিল, স্বাভাবিকভাবে তার মধ্যে হাওড়া পড়ে না | কার্যত পরিকল্পনার অভাব ফুটে ওঠে এই হাওড়া শহরে | কারা থাকতো এই হাওড়াতে? প্রশ্নের উত্তরে জানতে পারা যায়, মুঘল সাম্রাজ্যের সময়ে আদি বাঙালিরা | ব্রিটিশরা ক্ষমতায় এসে হাওড়া শহরের উন্নয়ন করতে গিয়ে দেখে, গঙ্গাপাড়ের এই শহরটির বিস্তার অনেক। কিন্তু যেভাবে বাড়ি, ঘরদোর তৈরি হয়ে আছে, তাতে বড় শহরের সুবিধা এখানে পাওয়া সমস্যার | তারা ধীরে ধীরে এই শহরটিতে কলকারখানা খোলার পরিকল্পনা নিল | প্রাথমিকভাবে তাদের ইচ্ছা ছিল, দেশের রাজধানী করার। কিন্তু একটি রাজধানী করতে গেলে যা সুবিধা দরকার, তা পাওয়া যায়নি হাওড়াতে | দ্রুত কলকারখানা তৈরি হল। কিন্তু দ্রষ্টব্য স্থান হিসাবে হাওড়াকে কিছু দিতে পারল না তারা | অন্যদিকে শ্রমিক হিসাবে বাঙালির সঙ্গে বিশাল সংখ্যার নানান ধর্মের অবাঙালির আধিপত্য বাড়ল হাওড়াতে |
হাওড়ার আদি বাসিন্দা তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় সিএন পোর্টালকে এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, এই হাওড়ার বহু ইতিহাস আছে | সম্রাট আকবরের আমলে এক মোগল দস্যু বাহিনী হাওড়ার গড় ভবানীপুর আক্রমণ করে। তখন এই অঞ্চলের রানি ছিলেন ভবসুন্দরী | তিনি কোমরে শাড়ি গুঁজে খোলা তরোয়াল নিয়ে দস্যুদের বাধা দেন এবং তাদের সর্দারের মুণ্ডচ্ছেদ করেন| পরে সম্রাট আকবর মানসিংহকে হাওড়াতে পাঠান এবং রানিকে 'রানি ভবানী' উপাধিতে ভূষিত করেন | অরূপ আরও জানালেন, জোভ চার্ণক প্রথম নাকি হাওড়াতে ব্যবসা করতে আসেন। কিন্তু নাজিমগঞ্জের মুসলিম সমাজ তাকে হাওড়া থেকে বের করে দেয় | অরূপ রায় বললেন, এক সময় দেশের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল হাওড়া | এই হাওড়ার পাশ দিয়ে নাকি চাঁদ সওদাগর সপ্ততরী নিয়ে বাণিজ্য করতেও এসেছিলেন। তারপর থেকেই বাণিজ্য শহর হাওড়া | কিন্তু মূল শহরের রাস্তা আজও সরু রয়েছে | বর্ধিত করতে গেলে রাস্তার পাশের বাড়ি ভাঙতে হবে, যা অসম্ভব কাজ |
'খাই খাই করো কেন, এসো বসো আহারে'। ছড়ার লাইনটি কি আজকের পৃথিবীতে গ্রহণযোগ্য ? কাঁচা বাজার ছেড়ে দিলেও তৈরি খাবারের দামও প্রচুর বেড়েছে। যদিও আজকের কলকাতায় খাবার অনেক কম মূল্যেই পাওয়া যায় | নতুন কিছু বাজারে এলে আমরা তা দেখতে বা গ্রহণ করতে ব্যাকুল হয়ে পড়ি। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও কি উপায় আছে ? আজকের দরিদ্রদের অবস্থা কহতব্য নয়। মধ্যবিত্তরা জানাচ্ছে, ইচ্ছা তো অনেক আছে। কিন্তু আগে যেমন বাজারে গেলে ব্যাগ ভরে মাছ-মাংস কিংবা শাকসবজি কেনা যেত, আজ দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়াতে ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে গেলে পকেট ভর্তি খাদ্যসামগ্রী আনা যায় | নোট বাতিলের থেকেও মারাত্মক অবস্থা দাঁড়িয়েছে করোনা আবহে | মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে নিয়মিত, অথচ বেতন তো বাড়েনি, আবার অনেকেই কর্মহীন হয়েছে | তাই ইদানিং খাওয়া নয়, খাওয়ার ভিডিও দেখতেই পাগল আম নাগরিক |
অদ্ভুত দেশ এই ভারতবর্ষ | খাদ্য দুর্মূল্য তো খাবারের সিনেমা বা ফিচার দেখো | পরমানন্দে কিছু সংস্থা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে খাওয়াদাওয়ার ছবি বা ভিডিও ছাড়ছে এবং তা দেখেই আপ্লুত বঙ্গবাসী | এটি অবশ্য নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন চ্যানেলে খাওয়ার অনুষ্ঠান বা রান্না দেখানো হয়, যা দেখে গিন্নিরা রান্নার রেসিপি পেয়ে যান | কিন্তু এখন অনেকেই সোশ্যাল সাইটে সকাল থেকে শুধু খাবার খাওয়া দেখিয়ে চলেছে। আর দর্শক তাই দেখে লাইক দিচ্ছে এবং ভিউ দেখে রোজগারও হচ্ছে তাদের বিস্তর | মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই বা কলকাতার স্ট্রিট ফুড থেকে আমস্টারডাম বা দুবাই কিংবা করাচির রাস্তায় কী বিক্রি হচ্ছে বা মানুষ খাচ্ছে, তাও মোবাইল ফোনে এখন হাতের মুঠোয় | মানুষ কত খাবে বা আদৌ এই খাবারগুলি কি কিনে খেতে পারবে, থাকে প্রশ্ন | উত্তরও পেয়ে যাবেন চটজলদি, ক্রিকেট ফুটবল দেখি মানে কি খেলোয়াড় হতে হবে ? অথবা হ্যান্ডসেটে শাহরুখ খানের সিনেমা দেখি কি আর্টিস্ট হওয়ার জন্য ? বেচারা জনতা | আর বাঙালির একাংশ তো দেখেই গেল, হয়তো কারুর হাহুতাশ | ঘ্রাণেন অর্ধভোজনং |
বাঙালি হিন্দুদের সবথেকে প্রধান পুজো কিন্তু কালীপুজো | যদিও দুর্গোৎসব আম বাঙালির প্রধান উৎসব, যেখানে পুজোর থেকেও উৎসবের আয়োজন থাকে বেশি | নতুন পোশাক পড়ে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়ানো এবং নানান খাওয়া দাওয়া, তার সাথে বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডাই প্রধান থাকে দুর্গাপূজার দিনগুলিতে | এখন তো অবশ্য থিম পুজোর দিন, ফলে মানুষের কাছে আজ দুর্গাপূজা একটি প্রদর্শনীর মতো |
কালীপুজো একেবারেই ভিন্ন | পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন প্রান্তে কালী আরাধনা কিন্তু নিষ্ঠার সঙ্গে পালিত হয়ে থাকে | এখানে তন্ত্রমন্ত্রের প্রয়োগ সব থেকে বেশি | রাতভর পুজো হয়ে থাকে যে কোনও অমাবস্যায় |
কালী নানান রূপে পূজিত হন | অনেক স্থানে দেবীমূর্তি সম্পূর্ণ কালো , কোথাও নীল বর্ণের কালিকা, কোথাও কালীর গাত্র লাল | তারামাতাও কালীর এক রূপ হিসাবে পূজিত হয়ে থাকেন | এখানে কালীর মুখমন্ডল রুপোলি | আবার শিবের বক্ষে ডান পা থাকলে তার নাম দক্ষিনা কালী এবং বাম পা থাকলে বামাকালী | ভিন্ন ভিন্ন মতে কালী পূজিত হয়ে থাকেন | সারা বছর দেবী কালী প্রতিদিনই পূজিতা হলেও প্রধান দিন ওই অমাবস্যায় | কালীপুজো বিভিন্ন ক্লাব সংগঠন করে থাকে | মন্দির ছাড়াও বাড়িতেও দীপাবলির দিন কালীপূজা হয় |
কালীকে প্রধান ঈশ্বর বলেই মানে অনেকে | পশ্চিমবঙ্গের প্রতি জেলাতে কালী মন্দির আছে , খুঁজলে প্রতিটি ওয়ার্ডে কালীর ছোট থেকে বড় মন্দির দেখা যায় | ক্লাব বা বিভিন্ন সংস্থার পুজো হলেও তা কিন্তু কখনও থিমের পুজো হয় না | এই কালীপুজো আসলে দীপান্বিতা |
সারা ভারতে লক্ষ্মীপুজো হয়। এই পুজো মহালক্ষ্মী পুজো,আসলে তার হাত ধরেই দীপান্বিতা আসে। কারণ রামায়ণে কথিত আছে, দীর্ঘ ১৪ বছর বনবাস শেষে রাবনকে হত্যা করে সুদূর লঙ্কা থেকে রাম এই দিনই অযোদ্ধায় প্রবেশ করেছিল। প্রদীপের অলোতে সেজে উঠেছিল দেশ। তার জন্যই এর নাম দীপান্বিতা। তাই বাঙালিরা কালীপুজোতেই দীপান্বিতা পালন করেন।
পুরনো সম্পর্কের মতোই বাঙালির জীবন থেকে ছেড়ে গিয়েছে বেতারের কাঁটা। কানে কানে হেডফোনের জমানায় টাচ স্ক্রিনে ফ্রিকোয়েন্সি ম্যাচ করে বটে, তবে প্রাণে সেই রেডিওর বেজে ওঠা কই!
একান্নবর্তী পরিবারের ভাঙনকালে যেমন ফুলপিসি, ন’কাকার মতো সম্পর্করা স্রেফ নস্ট্যালজিয়া হয়ে গেল, স্কোয়্যার ফুটের মাপা ফ্ল্যাটের আবাসনে যেমন ব্রাত্য হয়ে গেল চিলেকোঠা, তেমনই একদা পারিবারিক সদস্য হয়ে থাকা বেতারও যেন হারিয়ে গেল বাঙালি জীবন থেকে।
তবু যে ‘ভদ্র’লোকের কাছে বাঙালির অতিবড় মহানায়কের মোহিনীকণ্ঠও হার মেনে নিয়েছিল, তিনিই মেলান। প্রতিবারই। পুরনো অ্যালবামের পাতা ওল্টানোর মতো করে সম্পর্ককে ছুঁয়ে থাকার মতো করেই বাঙালিকে তিনি বসিয়ে দেন রেডিওর সামনে। কাঁটায় মিলে যায় কাঁটা। এই অন্তত একটা দিন বাঙালির জেগে উঠতে কোনও অ্যালার্ম লাগে না।
আশ্বিনের শারদপ্রাতে আলোর বেণু বেজে ওঠা কোনও বিজ্ঞাপনের পরোয়া করে না। এ এমন এক অনুষ্ঠান যে অতিবড় কর্পোরেট বাণিজ্যব্যবস্থাও যেখানে বিরতির অছিলায় মাথা গলানোর সাহস পায় না। বছরভরের বিরতি পেরিয়ে বাঙালি এই একটা দিন মিলিত ঠিক হবেই বেতারে।
বস্তুত তিথি মহালয়ার সঙ্গে দুর্গাপুজো তথা দেবীপক্ষর দূরত্ব একদিনের। এটি তো পিতৃপক্ষের অবসান, পক্ষকাল ধরে চলা পিতৃপক্ষর শেষ দিন। পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণের দিন। ঠিক এর পরের দিন থেকে শুরু হচ্ছে দেবীপক্ষ। অথচ মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠানের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এমনই যে, বাঙালির কাছে যেন এই ভোর থেকেই পুজো শুরু।
ইতিহাস বলে, একেবারে গোড়ার দিকে দুর্গা পঞ্চমী বা ষষ্ঠীর দিনও সম্প্রচারিত হত এই অনুষ্ঠান। কিন্তু পরিবেশকরা বুঝেছিলেন, ততক্ষণে দুর্গা পুজো বাঙালির জীবনে জাঁকিয়ে বসে। অনুষ্ঠানের গুরুত্ব তাতে খানিকটা যেন ক্ষুণ্ণই হচ্ছিল। সুপরিকল্পিতভাবেই তাই অনুষ্ঠানকে এগিয়ে আনা হয় দেবীপক্ষর একটা দিন আগে। সে সিদ্ধান্ত যে কতখানি বাস্তবসম্মত তা তো আজ আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একটা তিথির গুরুত্ব একটি অনুষ্ঠানের সঙ্গে এমন অণ্বিত হয়ে পড়ার নজির খুব কমই আছে।
এই অনুষ্ঠানের দৌলতেই পিতৃপক্ষর শেষ দিনটার মধ্যে আনন্দ-বিষাদের আলোছায়া খেলে যায়। পিতৃপুরুষের তর্পণের দিন সাধারণত বিষণ্ণতার। তবে এই অনুষ্ঠানের দৌলতে এই বিষাদমাখা দিনটি কখন যে বাঙালির সেরা পার্বণের মুডখানা বেঁধে দিয়ে যাওয়ার দিন হয়ে গিয়েছে-তা হয়তো মানুষ ধরতেও পারেনি। এমন অমোঘ টানে আষ্টেপিষ্টে বেঁধে রয়েছে বাঙালি।
মুডটা কখন যেন পাল্টে দিয়েছে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ অনুষ্ঠান। যত বিজ্ঞাপন হোক, বৈদ্যুতিন মাধ্যমে যতই কাউন্ট ডাউন চলতে থাকুক, যতই সাজো সাজো রব হোক, এই অনুষ্ঠান ছাড়া খাতায়-কলমে শরৎ এলেও বাঙালির পুজো আসে না।
আসলে কিংবদন্তি রচনা হওয়ার নেপথ্যে থাকে সময়ের প্রণোদনা। নক্ষত্রজন্ম তো সময়েরই প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে। বাঙালির বিনোদন, রুচি, সাংস্কৃতিক পরিসর অপেক্ষমান ছিল এমন এক অনুষ্ঠানেরই। এবং এই শিল্পীরা সেটিকে এমন এক উচ্চতা দিয়েছে যা ভালো লাগা থেকে আবশ্যিকতার চৌকাঠ পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছে ঐতিহ্যে। ফলত এ অনুষ্ঠানের কোনও বিকল্প হতে পারে না, চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি।
অথচ শোনা যায়, একদা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর চণ্ডীপাঠ নিয়েই আপত্তি উঠেছিল। তবে ভাগ্যিস সে সব ধোপে টেকেনি। তাই এই ঘোর ডলবি-ডিজিটাল যুগেও এখনও ধুলো ঝাড়া হয় পুরনো রেডিওটার। কিনে আনা হয় ব্যাটারি। হ্যাঁ, মোবাইলেও শোনা যায় বটে। লাউডস্পিকারে দিলে সাউন্ডটাও বেশ গমগমে হয়। তবু রেডিওটা না বাজলে যেন হয় না। রাত থাকতেই বাঙালির ঘরদুয়ারে গোছানো থাকে সব।
আর ভোর চারটে বাজলেই কী এক অদৃশ্য জাদুবলে জেগে ওঠে কয়েকটা প্রজন্ম। সব আবেগের কাঁটাগুলো এক কম্পাঙ্কে মিলে গেলেই, সেই অবিস্মরণীয় কণ্ঠ গমগমিয়ে বেজে ওঠে… আশ্বিনের শারদপ্রাতে, ধরণীর বহিরাকাশে অন্তর্হিত মেঘমালা…
লালবাহাদুর শাস্ত্রী, ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী । নেহেরুর মৃত্যুর পর লালবাহাদুর ছাড়া বিকল্প কিছু ছিল না অসময়ের দায়িত্ব দেওয়ার । ১৯০৪ এ জন্ম উত্তরপ্রদেশে । শিক্ষান্তে দ্রুত চলে যান স্বাধীনতা সংগ্রামে । মহাত্মা গান্ধীর অতি প্রিয়পাত্র ছিলেন শাস্ত্রীজি । বহুবার জেল খেটেছেন । একটা সময়ে মনেই হয়েছিল তিনি কি জেলটিকে বাসস্থান করে ফেলেছিলেন । জেলে বসেও " ভারত ছাড়ো" আন্দোলনের কথা জেলবন্দীদের মধ্যে প্রচার করতেন । স্বাধীনতার পর উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব পান । তিনি চপ্পল পরে সাইকেল করে বিধানসভায় যেতেন, পরে জ্হরলাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসেন ।
লালাবাহাদুরের অনেকটা সময়ে কিন্তু যুদ্ধ বিগ্রহ সামলাতেই চলে যায় । ১৯৬২ তে চীনের আক্রমণ পরে ১৯৬৫/৬৬ তে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার হস্তক্ষেপে বৃহৎ সোভিয়েতের তাসখন্দে পাকিস্তানের সামরিক প্রধান তথা প্রেসিডেন্ট আবূব খানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন । সার্থক হয়ে সেই বৈঠক । কিন্তু তারপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয় । তিনিই তাঁর মন্ত্রিসভা সাজিয়ে তৈরী করেন এবং ইন্দিরা গান্ধীকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসেন । তাঁর আমলেই গুজরাতের আনন্দে দুধের শিল্প তৈরী হয় । গান্ধীজির জন্মদিন এবং তাঁর জন্মদিন একই দিনে হওয়ার জন্য অনেকটাই উপেক্ষিত ।
সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায়,কলকাতাঃ আফগানিস্থানের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত নিয়ে সিএন কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন সে দেশের আমিরুল্লা সালেহ ঘনিষ্ঠ মসিউল্লাহ আহমেদি। যিনি নর্দান অ্যালাইন্স এর অন্যতম সহযোগী।
আফগানিস্তান জুড়ে এখন শুধুই তালিবান রাজ। প্রত্যন্ত গ্রামে থেকে রাজধানী কাবুল সর্বত্র শুধুই কালাশনিকভ রাইফেল হাতে তালিবানি রক্ত চক্ষু। তারই মাঝে শুধুমাত্র গণতন্ত্র জেগে আছে পাঞ্জশির প্রদেশ-এ। সেখানে আমিরুল্লা সালেহ ও মাসুদ আহমেদ এর নেতৃত্বে তালিবানকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে নর্দান অ্যালাইন্স।
এখন কি অবস্থা কাবুল এর। তালিবান এবং নর্দান অ্যালাইন্স এর মধ্যে কি কথা বার্তা শুরু হয়েছে। তালিবানই কি আফগানিস্তান এর ভবিষ্যৎ। সুদূর আফগানিস্তান থেকে টেলিফোনে একান্ত সাক্ষাৎকারে সি এন কে খোলামেলা সব জানালেন আমিরুল্লা সালেহ ঘনিষ্ট এবং নর্দান অ্যালাইন্স এর সহযোগী মসিউল্লাহ আহমেদি।
তিনি আরও জানালেন, গত তিন সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তান এর ব্যবসা বন্ধ। তালিবান কার্যত ২০ বছর পিছিয়ে থাকা একটি গোষ্ঠী। যাদের চিন্তা ভাবনা ও কয়েক দশক পিছিয়ে রয়েছে। প্রশাসন বা রাষ্ট্র চালানোর দক্ষতা তালিবান এর নেই।
আলো পর্বত : আজ রাখি বন্ধন উৎসব। রাখি বন্ধন বা রাখি পূর্ণিমা উৎসবটি অন্যান্য হিন্দু উৎসবের থেকে অনেকটাই আলাদা। এই উৎসবটি ভাই-বোনের চিরন্তন ভালোবাসা ও স্নেহের উৎসব। ভারতে এই উৎসবটি পৌরাণিক কাল থেকেই পালিত হয়ে আসছে। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী এইদিন বোনেরা তাদের ভাইয়ের দীর্ঘায়ু এবং মঙ্গলের জন্য তাদের হাতে রাখী পড়িয়ে থাকে। অপরদিকে এই দিন ভাইয়েরা তাদের বোনকে সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। সামনেই মা আসছে। একটা সুন্দর মুহূর্ত। এই গোটা এক বছর করোনা অতিমারীতে মানুষের জীবন-যাপন অনেক বদলেছে।
তবে সুখ. দুঃখ নিয়েই তো বেঁচে থাকার নাম জীবন। আর এই রাখি উৎসবের দিনে সকলে তাঁর ভাই-বোনেদের সাথে নিজেদের মত সময় কাটাচ্ছে। আজ সকল থেকেই যেনো এক অদ্ভুত মনোরম পরিবেশ দেখে গেল ভাটপাড়া ভাঙা বাঁধা ঘটে. সকাল থেকেই সেখানে সবাই ভিড় জমিয়েছে। নিচে প্রবহমান গঙ্গা বয়ে চলেছে বঙ্গোপসাগরের পানে।
কেউ কেউ আবার রাখি পালন করছে। তবে এর মাঝেই দেখ গেল স্রোতের নীল আকাশ। যেখানে সাদা সাদা পেজ তুলোর মত মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। আরও এক দৃশ্য চোখে পড়ল গঙ্গায় জলের স্রোত যেন ধীর গতিতে বয়ে চলেছে। তারমাঝে গাছ-গাছড়ির ডালপালা নড়ছে। একটা অদ্ভুত মিষ্টি হাওয়া বইছে। তাই তো গানেই আছে পুজোর গন্ধ এসেছে। আর তাতেই মা আসছে তার আগমনী বার্তা। তবে মানুষের জীবনে তো দুঃখ- কষ্ট আছেই। তবু ও যেনও জানান দিচ্ছে মা আসছে। আর সকলেরই একটাই প্রার্থনা করোনা যেনও মুক্ত হয়. .
সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায়,কলকাতাঃ গ্রাম বাংলায় বাউল সংগীত আজ অনেকটাই ফিকে । কিন্তু বাউল সুরের মাদকতায় আজও মুগ্ধ হন তাবর তাবর সংগীত প্রেমী মানুষ। শিল্পির দাবি এ দেশে জাতীয় সংগীত এর সুর এর আগে কখন ও খোমাক এ তোলা হয়নি।
বাউল যন্ত্র খোমাক কে অন্য ধারায় ব্যবহার করলেন প্রবাসী সুরকার শুভাশিস সব্যসাচী ঘোষ। ভারতীয় সংগীত রিসার্চ সোসাইটির ফেলো তিনি। লিমকা বুক রেকর্ডস নাম উঠেছে এই সুরকারের। মূলত দিল্লির বাসিন্দা শুভাশিস বাবু এবার লকডাউন এর শুরু থেকেই এই রাজ্যে চলে আসেন।
তারপর থেকে সংগীত সাধনা মূলত অন লাইনে চলছে। স্বাধীনতা দিবস এর আগে খোমাক কে বিশেষ ভাবে ব্যবহার করে,তাকে সমানুপাতিক ভঙ্গিতে রেখে জন গণ মন অর্থাৎ জাতীয় সংগীত অদ্ভুত সুর মূর্ছনা তৈরি করেছেন শুভাশিস সব্যসাচী ঘোষ।
শিল্পির দাবি, এ দেশে জাতীয় সংগীত এর সুর এর আগে কখন ও খোমাক এ তোলা হয়নি । জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সুরকার শুভাশিস বাবু বাঁশ এর তৈরি যন্ত্র অনুষঙ্গ এর মাধ্যমে ই সুর এর সাধনা চালিয়ে যাচ্ছেন। যা পরিবেশ বান্ধবও।
স্বাধীনতা দিবস এর আগে প্রায় হারিয়ে যেতে বসা খোমাক এর ব্যবহার করে জাতীয় সংগীত দেশের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য সুরকার শুভাশিস সব্যসাচী ঘোষের।
আজ বিশ্ব সিংহ দিবস। সকালবেলাই নিজের টুইটারে দেশবাসীকে বিশ্ব সিংহ দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ট্যুইটে তিনি জানিয়েছেন যে বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতে সিংহের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। সিংহ একটি রাজকীয় ও সাহসী প্রাণী এবং ভারত এশিয়াটিক সিংহের বাসস্থান হওয়ায় গর্ববোধ করে, ট্যুইট বার্তা নরেন্দ্র মোদির।
বিশ্ব সিংহ দিবসে, তাঁদের প্রত্যেককে আমার শুভেচ্ছা জানাই যাঁরা সিংহ সংরক্ষণের প্রতি উৎসাহী। আপনারা জানলে খুশি হবেন যে গত কয়েক বছরে ভারতে সিংহের সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে,' ট্যুইটে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।যদিও প্রত্যেকবছর এই ১০ অগাস্টে সিংহ দিবস পালন করা হয়.এই দিনটিতে মানুষের মধ্যে সিংহের ব্যাপারে সচেতন গড়ে তোলা। এছাড়া সিংহের বাসস্থান সুরক্ষিত করা. কিছুদিন আগেই, ২৯ জুলাই পালিত হয় আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস। বাঘ সংরক্ষণেও নজির গড়েছে ভারত। গোটা পৃথিবীর প্রায় ৭০ শতাংশ বাঘই এখন ভারতে পাওয়া যায়।
When I was serving as Gujarat CM, I had the opportunity to work towards ensuring safe and secure habitats for the Gir Lions. A number of initiatives were taken which involved local communities and global best practices to ensure habitats are safe and tourism also gets a boost. pic.twitter.com/0VEGmh7Ygj
— Narendra Modi (@narendramodi) August 10, 2021
আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসীদ দিবস। বিশ্বের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা এবং তাদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সংরক্ষণ ও চর্চাকে অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত আন্তর্জাতিক বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশংসনীয়। বিশ্বের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও তাদের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ার জন্য জাতিসংঘ ও আদিবাসী জাতি এক নতুন অংশীদারিত্ব শিরোনামে ১৯৯৩ সালকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী বর্ষ ঘোষণা করে।