
২৬১ দিন ধরে নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য ফুটপাতে বসে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন হবু শিক্ষকরা। এসএসসি-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁদের বিক্ষোভ-অবস্থান চলছে। প্রেস ক্লাবের সামনে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ২১ দিনের অনশন চলাকালীন দেওয়া প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রী পূরণ করুন। এই দাবিতেই চলছে আন্দোলন। সেই একই দাবি জানাচ্ছে আন্দোলনকারীদের আর একটি হবু শিক্ষকদের সংগঠন।
গান্ধীমূর্তির পাদদেশে গত 8 অক্টোবর থেকে দুটি সংগঠন বিক্ষোভ-অবস্থান করছে। দাবি একই, কিন্তু মতাদর্শগত মতভেদের জন্য তারা আলাদাভাবে বিক্ষোভ-অবস্থান করছে বলে দাবি যুব অধিকার মঞ্চের সদস্যদের। সংগঠনের পক্ষ থেকে রাগিব শেখ জানান, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আশ্বাস তাঁরা পাননি। তবে কিছুদিন আগে বিধায়ক মদন মিত্র তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁদের সমস্যার কথা জানাবেন।
অন্যদিকে একইভাবে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের আর এক সংগঠনের দাবি, দুর্নীতি নিয়ে কোনও আপস করবে না তারা। সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদুল্লাহ জানান, আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা আছে।
সাতসকালে বিস্ফোরণ। ঘটনাস্থল বিধাননগর পূর্ব থানার সল্টলেক সুইস গেটের সামনের ডাস্টবিন। পাশেই খেলা করছিল সল্টলেক নয়াপট্টি এলাকার বেশ কিছু বাচ্চা। বিস্ফোরণে দুজন বাচ্চা আহত হয়। তাদের বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিধাননগর ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানার পুলিস।
রোজকার মতো বৃহস্পতিবার সকালেও বাচ্চারা খেলছিল নয়াপট্টি এলাকায় ওই ডাস্টবিনের আশেপাশে খেলার জায়গায়। ঠিক তখনই ঘটে যায় বিস্ফোরণ। কী থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখছে বিধাননগর থানার পুলিস।
আহত দুজনের মধ্যে একজনের নাম বুবাই দাস, বয়স ১১। অপরজন লোকেশ সরকার, বয়স ৯। দুজনেই নয়াপট্টির বাসিন্দা। বিস্ফোরণের ফলে দুজনের শরীরের একাধিক অংশ পুড়ে যায়। ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আহত শিশুদের পরিবারের লোকজন।
আহতদের সঙ্গেই সেসময় খেলছিল যে বাচ্চাগুলি, তাদেরই একজন জানায়, খেলতে খেলতে যখন তারা ডাস্টবিনের কাছে যায়, তখন বুবাই সেখান থেকে কিছু একটা হাতে তুলে নেয়। সে বুবাইকে ওদিক থেকে চলে আসতে বলে। তখন বুবাই ওটা ছুঁড়ে মারলে সজোরে বিস্ফোরণ ঘটে।
বিধাননগর ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার জয়দেব লস্কর বলেন, তিনি শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সুইস গেটের কাছেই পৌরসভার ভ্যাট রয়েছে। সেখানেই এই বিস্ফোরণটি ঘটে। তিনি আহত বাচ্চাদের পরিবারের পাশে রয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব তাঁরা নেবেন। বোমা নাকি অন্য কিছু থেকে এই ঘটনা ঘটেছে, তা পুরোটাই তদন্ত সাপেক্ষ। পুলিসকে দ্রুত এর তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
বিধাননগরের ডিসি ইন্দ্রানী মুখার্জি বলেন, সকাল সাড়ে দশটায় তাঁরা খবর পান। তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, ব্যাটারি জাতীয় কিছু থেকেই এই বিস্ফোরণ। বোমা রাখা ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আহত বাচ্চারা এখন অনেকটাই সুস্থ আছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য,পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থলে যান বিধাননগর বোম স্কোয়াডের আধিকারিকরাও।
পারিবারিক অশান্তির জেরে আত্মহত্যা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের।
লকডাউনে কাজ হারান বাবা সুশোভন দেবনাথ। আয়ার কাজ করে কোনওক্রমে সংসার চালাচ্ছিলেন মা। চরম অনটনে পরিবারে হামেশাই অশান্তি, ঝামেলা লেগেই থাকতো। তার মধ্যে বারবার ক্লাসে ফেল করছিল ছেলে রবীন দেবনাথ। ফলে বের করে দেওয়া হয় স্কুল থেকে। একটি প্রাইভেট স্কুল থেকে পাশ করার চেষ্টা করছিল ২৩ বছরের তরুণ। কিন্তু তাতেও সফল হচ্ছিল না সে। এরপরই তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকে ওই তরুণ। এরই মধ্যে মর্মান্তিক পরিণতি তার। ঘটনাটি কলকাতার বাঁশদ্রোণীর প্রগতি পার্ক এলাকার। শহর কলকাতার বুকে এই ঘটনায় রীতিমতো শিউরে উঠছেন পাড়াপ্রতিবেশীরা।
রোজই ঝামেলা হত এই পরিবারের। বুধবারও ঠিক একই ঘটনা। স্বভাবতই প্রতিবেশীরা আর এই বিষয়ে সেইভাবে নজর দেননি। ভেবেছিলেন, রোজকার মতো এদিনও আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ঝামেলা হতে হতেই সব নিস্তব্ধ। প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন, মেঝেতেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রবীন।
প্রতিবেশীরা জানান, বুধবার সকালে সবাই নিজেদের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। এর মধ্যেই আর্তনাদ। গিয়ে দেখেন, কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মা। মা তাঁদের প্রথমে জানান, তাঁর স্বামী সমস্ত টাকা নিয়ে ছেলেকে ছুরি মেরে পালিয়েছে। তবে পুলিস আসতেই বয়ান পরিবর্তন করেন তিনি। তবে ঘটনার পর দেখতে পাওয়া যায়নি সুশোভনবাবুকে। যদিও পরে আবার তিনি ফিরে আসেন বলেও জানান। প্রতিবেশীরা আরও জানান, ফ্ল্যাটের অন্যান্য মানুষদের মতো এই পরিবার ছিল না। কোনও অসুবিধার কথাও বলেনি কোনওদিন তাঁদের কাছে। এমনকি প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলত না। একঘরেই থাকত এই পরিবার। ফলে তাঁরা কোনও আঁচই পাননি এই বিষয়ে।
অভিযোগ, প্রবল অশান্তি ও অবসাদের জেরেই রান্নাঘরের সবজি কাটার ছুরি দিয়ে নিজের পেটে উপর্যুপরি আঘাত করে রবীন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু রবীনের মা-বাবার অভিযোগ, যখন তাঁদের ছেলে মাটিতে পড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছে, তখন পুলিস আধিকারিকরা ছেলেকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আরও দেরি হয় হাসপাতাল নিয়ে যেতে। আর এরপরই মৃত্যু হয়। যদি জিজ্ঞাসাবাদ না করে হাসপাতাল নিয়ে যেত তড়িঘড়ি, তাহলে হয়ত ছেলে আজ বেঁচে যেত।
কিন্তু ঘটনায় স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন উঠেছে, কেন মা বদল করলেন বয়ান? কেনই বা প্রথমে বাবার দেখা মেলেনি? আবার কেন বাবা আসতেই পুলিসের সামনে মায়ের বয়ান পরিবর্তন? আসল ঘটনা কী?
ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিস। আদতে কি আত্মহত্যা, নাকি অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।
বারবার রোগী পরিষেবা নিয়ে আঙুল ওঠে সরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে। কখনও রোগীর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, তো কখনও আশঙ্কাজনক রোগীর ভর্তি নিয়ে টালবাহানা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় হাসপাতালগুলিকে। সরকারকেও বিভিন্ন সময় কড়া পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাতে মূল সমস্যা মিটেছে কি?
এবার সরকারি হাসপাতালে রেফার করা বৃদ্ধকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ট্রলির মধ্যেই পড়ে থাকতে হল, এমনটাই অভিযোগ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে। বৃদ্ধের নাম দিলীপ হাওলি। তিনি হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা। হার্নিয়া রোগ নিয়ে উত্তরপাড়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। উত্তরপাড়া থেকে রেফার করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, সাধারণ চিকিৎসা পরিষেবাটুকুও ঠিকঠাক পাচ্ছেন না। তার পাশাপাশি পেশেন্ট-এর অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু ভর্তির কোনও ব্যবস্থা নেই। আদৌ কি ভর্তি হতে পারবে রোগী? তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে তাঁদের।
আরও এক অমানবিক চিত্র দেখা গেল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। রায়দিঘি থেকে আসা বিজলা হালদার নামে এক বৃদ্ধা রোগীর পরিবারের অভিযোগ, পায়ে ইনফেকশনের কারণে প্রথমে রায়দিঘি হাসপাতলে ভর্তি করানো হয়েছিল। রায়দিঘি থেকে রেফার করা হয় ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে। ফের ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু এখানে বৃদ্ধার পরিবার জরুরি পরিষেবা বিভাগে নিয়ে গেলে বেড নেই, ডাক্তার নেই বলে জানানো হয়। হাসপাতালের মেঝেতেই রোগীকে নিয়ে বসে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এমনকি সেখানেই রাত কাটাতে হয় বলে জানান রোগীর পরিবার।
অপরদিকে, একইদিনে এনআরএস হাসপাতালের বিরুদ্ধেও ওঠে পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ। দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে হাসপাতাল থেকে। তার কারণ চিকিৎসক নেই বলে জানাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই কারণে পরিষেবা পাওয়া যাবে না।
চিকিৎসকদের বিক্ষোভের কারণে বিপদের মুখে পড়তে হচ্ছে রোগী এবং রোগী পরিবারকে। সকাল দশটা থেকে এসেও চিকিৎসা পরিষেবাটুকু পেলেন না, এমনটাই অভিযোগ উঠল এনআরএস হাসপাতালের বিরুদ্ধে। তার পাশাপাশি জরুরি পরিষেবায় সামনের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যেকটি অ্যাম্বুলেন্স এবং রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এছাড়াও রোগীর পরিজন জানায়, বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর কথাও বলা হয়েছে হাসপাতালের তরফ থেকে।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকদিন ধরেই নিয়োগ নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারা। দিল্লিতে সোমবার জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর পুলিসি হস্তক্ষেপের পর এই বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়। এর ফলে, ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাঁর পরিবারের লোককে।
রাজনৈতিক নেতাদের, বিশেষ করে ভোটের সময় কংগ্রেস সংস্কৃতিতে দেওয়ালে লেখা থাকত, 'যখন ডাকি তখন পাই, অমুক দাদাকে আবার চাই'। দিন পাল্টেছে। এখন কংগ্রেস বলে তেমন কোনও সংগঠনশীল দল নেই। কারণ তার স্থান দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের কাউন্সিলর নির্বাচনে দেওয়ালে এই স্লোগাটিই লেখা থাকে 'যখন .... ।' এটাও এক সময় ভোটদাতাদের চালু মন্তব্য ছিল যে 'ভোটের আগে পায়ে ধরা, ভোটের পরে সরে পড়া'। এখন স্লোগান বা চুটকি যাই হোক না কেন, একদল জিতে আসা নেতা কিন্তু এলাকা কামড়ে পরে থেকে কাজ করতেন। এ বিষয়ে অজিত পাঁজার জুড়ি মেলা ভার। অজিতবাবুর একটা টিম কাজ করত,যাদের রীতিমতো মাইনে দিয়ে তিনি অফিস চালাতেন। এই টিম গোটা উত্তর কলকাতার খবর রাখত এবং চেষ্টা থাকত জনতার পাশে থাকার।
এবার কলকাতা পুরনিগমের ভোটের আগেই ববি হাকিম এই একই স্লোগান তুলেছিলেন " যখন ডাকি তখন পাই "। ববি বা ফিরহাদ হাকিম কিন্তু বিগত সময়ে তাঁর পুরভবনে 'টক টু মেয়র' চালু করেছিলেন। অর্থাৎ কলকাতার অধিবাসীদের যে কেউ সুনির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট দিনে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন, তা তিনি পুরুষ, মহিলা যে কোনও স্তরের মানুষ হন না কেন। ববি ধৈর্য ধরে নিয়মিত মানুষের কথা বা সমস্যার কথা শুনতেন। ফোন যে কেউই করলে তা কিন্তু কলকাতা পুরসভায় লিপিবদ্ধ হত। এবার চেষ্টা চলত সেগুলির সমাধান করার। আমফান বা ইয়াসের পর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। তাঁর ফিরে আসার পিছনে এটা একটা মস্ত সমর্থন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও খুশি হয়েছিলেন ববির এই কাজে।
মঙ্গলবার শপথ নিয়ে ববি ফের জানালেন, তাঁদের প্রতিজ্ঞা, যখন ডাকি তখন পাই।
আজ কলকাতার ৩৯ তম মেয়র হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন ফিরহাদ হাকিম। কর্পোরেশনের লনে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। এর আগে ২০১৫ তে শোভন চট্টোপাধ্যায় কলকাতা টাউন হলে শপথ নিয়েছিলেন। এবার ফের শপথ অনুষ্ঠান ফিরে যাচ্ছে পুরভবনেই। তবে বাম আমলে শপথ অনুষ্ঠান হত পুরভবনের অন্দরে। কিন্তু এবার বাইরের লনে সেই শপথগ্রহণ হচ্ছে বলে খবর।
সুবিশাল জয়ের রেকর্ড গড়ে তৃণমূল তথা টিম ফিরহাদের জয় এসেছে। ১৪৪ টি আসনের মধ্যে ১৩৪ আসন দখল করেছে তারা। বিরোধী বলতে বামেরা দুটি, কংগ্রেস দুটি এবং বিজেপি তিনটি আসনে জয় পেয়েছে মাত্র। বাকি দুটি আসন পেয়েছে বিদ্রোহী তৃণমূল, যারা এখনই দলে ফিরতে চাইছে। জানা যাচ্ছে, ববি মেয়র হলেও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যপদ বাতিল হচ্ছে না।
সাজো সাজো রব এখন পুরভবনে। ৫০০ অতিথি আমন্ত্রিত। আমন্ত্রিত হয়েছেন কলকাতার সমস্ত বিধায়ক, সাংসদ ও তৃণমুলের অন্যান্য নেতা। সাজানো হচ্ছে পুরভবন। নতুন করে সাজানো হচ্ছে মেয়রের ঘরও। নতুন কার্পেটে ঢাকা হচ্ছে, আসবাবপত্র সাজানো হচ্ছে। ব্রিটিশ আমলের চেয়ার-টেবিল না পাল্টে সেগুলোই পরিষ্কার করা হয়েছে। এই চেয়ারে কোনও এক সময় বসেছিলেন নেতাজি সুভাষ, চিত্তরঞ্জন দাশ, ডঃ বিধান রায় প্রমুখ। ববির ঘরে দেখা যায় বহু পুরাতন ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র। তবে ওয়ালপেপার লাগানো হচ্ছে দেওয়ালে। পাশাপাশি চেয়ারপার্সন মালা রায়, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ সহ বাকি মেয়র পারিষদদের ঘরেও পরিবর্তন আসছে। সেখানেও লাগানো হচ্ছে ওয়ালপেপার। আজ ববির সাথে শপথ নেবে বাকি মেয়র পরিষদ। মঞ্চে অন্তত ৩০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক অভ্যাগত অতিথি উপস্থিত থাকলেও থাকছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আজই গঙ্গাসাগর মেলায় যাচ্ছেন, থাকবেন তিনদিন।
উল্লেখ্য, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর হবে কলকাতা পুরবোর্ডের বৈঠক। আর তারপরই টক টু মেয়র কর্মসূচির রূপরেখা প্রকাশ করবেন নবনির্বাচিত মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভা সূত্রের খবর, টক টু মেয়র আবার নতুন করে শুরু হতে চলেছে। আর সেই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা কলকাতা ভিশন ২০২২ প্রকাশ করবেন নবনির্বাচিত কলকাতা পুরসভার ৩৯ তম এবং দ্বিতীয়বারের মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
আগামী বছর ২০২২ -এ ১ থেকে ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। ১৪ জানুয়ারি পুণ্যস্নান। গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে নবান্ন সভাঘরে বিশেষ প্রশাসনিক বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলথানাথন -সহ পুলিস ও রেল আধিকারিকরা। শুধু ভিন রাজ্য নয়, ভিন দেশ থেকেও মকর সংক্রান্তিতে অতিথিরা আসেন গঙ্গাসাগরের মেলায়। আর সেই কারণেই তত্পর রাজ্য সরকার।
মেলায় কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে একাধিক ব্যবস্থা। এদিন বৈঠকের শুরুতেই জানান মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। মেলা উপলক্ষ্যে প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু ব্যবস্থা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গঙ্গাসাগর মেলায় ৫১ কিলোমিটার জুড়ে ব্যারিকেড করা হবে। নজরদারিতে থাকছে ১০৫০ টি সিসিটিভি। থাকছে ২০ টি ড্রোন। থাকছে জিপিএস গাইডেড ইনটেলিজেন্স ক্রাউড মনিটরিং, ইন্ট্রিগেটেড কন্ট্রোল রুম, স্কাইলিংক-সহ একাধিক ব্যবস্থা। রাজ্য সরকারের তরফে ২৫০০ জন ভলান্টিয়ার, ৬০০ বেডের কোভিড হাসপাতাল, ১৩ টি আরটিপিসিআর টেস্ট সেন্টার এবং ২ টি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। এছাড়া ই পুজোর মাধ্যমে থাকবে গঙ্গাসাগরের মেলা এবং গঙ্গাস্নান দেখার সুযোগ। অ্যাপের মাধ্যমে অর্ডার করলেই বাড়িতে পৌঁছে যাবে পবিত্র গঙ্গাজল। এছাড়া ভিড় সামলানো থেকে হারিয়ে যাওয়া মানুষজনকে খুঁজে দেওয়া এমনকি কোভিড সংক্রান্ত তথ্যের জন্যও থাকছে অ্যাপ।
এছাড়াও থাকছে দমকলের ব্যবস্থা। তীর্থযাত্রীদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা বিমার সুযোগ। এছাড়াও মেলা চত্বর পরিষ্কার রাখার জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য। মেলা প্রাঙ্গনে যাতে সাধারণ মানুষ সহজে পৌঁছতে পারেন, তার জন্যে রাখা হচ্ছে সমস্ত রকম ব্যবস্থা, জানান মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে রেলকে অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর কথা বললে ৭০ টি অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর কথা জানান রেল কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও মন্ত্রী পুলক রায়, অরূপ বিশ্বাস, মণীশ গুপ্ত, ফিরহাদ হাকিম, মন্টুরাম পাখিরা, বঙ্কিম হাজরা সহ অন্যান্যদের গঙ্গা সাগর মেলা দেখভালের দায়িত্বভার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন অপেক্ষা শুধু সেই মাহেন্দ্রক্ষণের।
গ্রুপ ডি স্বাস্থ্যকর্মীদের বিক্ষোভ পথে নেমে। "নিজ জেলায় বদলি চাই" এই দাবিতে সল্টলেক স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভে সামিল স্বাস্থ্যকর্মীরা।
স্বাস্থ্যকর্মীদের মূলত অভিযোগ, ২০১৭ সালে তাঁরা পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এরপর তাঁদের কোনওরকম কাউন্সেলিং না করিয়েই উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে ৭৬ জনকে আয়ুর্বেদ বিভাগে নেওয়া হয়। বর্তমানে তাঁরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত। নিজের এলাকার থেকে ৫০০-৬০০ কিলোমিটার দূরে কাজ করতে যেতে হচ্ছে। যে কারণেই তাঁরা সমস্যার মধ্যে পড়েছেন।
স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, এই সমস্যা নিয়ে এর আগেও বহুবার বিভিন্ন স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। এরপরেও কোনওরকম সুরাহা হয়নি। তাই সোমবার তাঁরা বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। পাল্টা অভিযোগ, তাঁরা বিভিন্ন দফতরে সমস্যার কথা জানাতে গেলে, দফতর থেকে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয় তাঁদের। শুধু তাই নয়, তাঁরা যে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন সেই চাকরির ব়্য়াঙ্ক পর্যন্ত পাননি তাঁরা। কোনও কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি তাঁদের। একই সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে কীভাবে কিছু পরীক্ষার্থী এলাকার থেকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে পেল? প্রশ্ন তুলছেন বিক্ষোভকারীরা।
অবিলম্বে নিজের নিজের এলাকায় গিয়ে কাজ করার দাবিতে আন্দোলনকারীরা চাইছেন উচ্চপদস্থ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আবহাওযার খামখেয়ালিপনায় মুখ্য়মন্ত্রীর গঙ্গাসাগর সফরের সূচি পরিবর্তন। বুধবারের পরিবর্তে মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওইদিনই কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দেবেন তিনি। বিধানসভায় জানিয়েছেন খোদ মুখ্য়মন্ত্রী।
উল্লেখ্য়, বর্ষ শেষে বৃষ্টির সম্ভাবনা। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী পশ্চিমী ঝঞ্ঝায় সোমবার থেকে বৃষ্টি হতে পারে রাজ্যে। আগামী ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তবে ২৯ ডিসেম্বর বৃষ্টির প্রকোপ তুলোনামূলকভাবে বাড়বে। ৩০ ডিসেম্বরে দার্জিলিং, কালিম্পং এবং আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টির প্রভাব থেকে যাবে। ফলে কমতে পারে শীত।
কথাতেই আছে সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার। এই মেলা রাজ্যের অন্যতম বড় মেলা। শুধু ভিন রাজ্য নয়, বিভিন্ন দেশ বিদেশ থেকে অতিথিরা আসেন গঙ্গাসাগরের মেলায়। আসেন নানা প্রান্তের সাধু-সন্তরা। সকলেই পুণ্যের খোঁজে মকর সংক্রান্তিতে অবগাহন করেন কনকনে হিমশীতল জলে। তবে এতো বড় মেলার প্রস্তুতিতে সতর্ক প্রশাসন। বড়সড় দুর্ঘটনা এড়াতে তত্পর প্রশাসনিক কর্তারা। সতর্ক থাকেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। বিশেষ করে কড়া নজর থাকে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর।
কোনও উৎসবের প্রস্তুতিতেই খামতি রাখে না রাজ্য প্রশাসন। দুর্গাপুজো থেকে ইদ, বড়দিন বা গঙ্গাসাগর মেলা, প্রতিটি উৎসব শান্তিতে সম্পন্ন করতে উদ্য়োগী প্রশাসন।এবার তাই গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তিনদিনের সফরে প্রশাসনিক বৈঠকও রয়েছে তাঁর।
আগামী মঙ্গলবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর হবে কলকাতা পুরবোর্ডের বৈঠক। আর তারপরই টক টু মেয়র কর্মসূচির রূপরেখা প্রকাশ করবেন নবনির্বাচিত মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভা সূত্রের খবর, টক টু মেয়র আবার নতুন করে শুরু হতে চলেছে। আর সেই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা কলকাতা ভিশন ২০২২ প্রকাশ করবেন নবনির্বাচিত কলকাতা পুরসভার ৩৯ তম এবং দ্বিতীয়বারের মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
২০১৯ সালের ১৩ আগস্ট লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের আসন ৩৪ থেকে কমে ২২ এ এসে থমকে গিয়েছিল। যেখানে বিজেপি ২ টির বদলে ১৬ টি বেশি পেয়ে ১৮ টি আসন দখল করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ইতিহাস গড়েছিল। তারপরই শুরু হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে তাঁর প্রথম মাস্টার স্ট্রোক ছিল 'দিদিকে বলো কর্মসূচি'। যার মাধ্যমে রাজ্যের সাধারণ মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি তাঁদের সমস্যার কথা বলতে পেরেছিলেন। তাঁদের সেই সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান করতে পদক্ষেপও গ্রহণ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একইভাবে তৎকালীন কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ২০১৫ সালের জুন মাসে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে শহরবাসীকে নাগরিক পরিষেবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য এবং নগরবাসীদের অভাব-অভিযোগ ও সুবিধা-অসুবিধার পাশাপাশি সমস্যার কথা মেয়রকে জানানোর জন্য একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছিলেন। সেই নম্বর ছিল 833598888। এই নম্বরে যোগাযোগ করে বিস্তারিত অভিযোগ জানাতে পারতেন শহরবাসী। ২০১৮ তে পদত্যাগের পর নতুন মেয়র নির্বাচিত হন ফিরহাদ হাকিম। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে একইভাবে ফিরহাদ হাকিমও সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ, অসুবিধা-সুবিধার কথা শুনতে অভিনব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সরাসরি কলকাতা পুরসভার মেয়রের সঙ্গে শহরবাসী নাগরিক পরিষেবা নিয়ে ফোনের মাধ্যমে তাঁদের অভিযোগ ও সুবিধা-অসুবিধার কথা বলতে পারতেন। সেই কর্মসূচি ছিল 'টক টু মেয়র'। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ১৪৪ টি ওয়ার্ডের নাগরিকদের সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান করার চেষ্টা করতে সক্ষম হয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। প্রথমদিকে টোল ফ্রি নম্বর চালু হয়, যার নম্বর ছিল 18003451213। আর প্রতি বুধবার বিকেল ৪ টে থেকে ৫ টা পর্যন্ত মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজেই ফোন করে কলকাতাবাসীদের সমস্যা শুনে সমাধান করতেন। পরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজের ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর 9830034493 তে সেই টক টু মেয়র চালিয়ে যান।
কিন্তু ২০২০ সালের মে মাসে কলকাতা পৌর নিগমের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তারপরেই গঠন হয় বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা পুর প্রশাসকমণ্ডলী। আর সেই প্রশাসকমণ্ডলীর প্রশাসক হন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর নেতৃত্বে প্রশাসক বোর্ড হাওয়ার কারণে সেই টক টু মেয়র বন্ধ করে শুরু হয় 'টক টু কেএমসি'। তবে সেই কর্মসূচি বুধবার থেকে পরিবর্তন করে শনিবার দুপুরে ১ টা থেকে ২ টো পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু কলকাতা পুরসভার নির্বাচন ঘোষণা হাওয়ার পরই তা বন্ধ হয়ে যায়।
শেক্সপিয়র সরণিতে শুক্রবার রাত দুটোর সময় একটি নাইট ক্লাবে তাণ্ডব চালাল মদ্যপ যুবক-যুবতীরা। ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাদের বাইরে বের করে দিলেও রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে তারা অভব্যতা দেখাতে থাকে, এমনটাই অভিযোগ ক্লাব কর্তৃপক্ষের। পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে আসেন শেক্সপিয়ার সরণি থানার আধিকারিকরা। সেই সময় পুলিশকেও বাধা দেওয়া হয়, অভিযোগ যুবক-যুবতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গতকাল ওই যুবক-যুবতীরা থিয়েটার রোডের একটি নাইট ক্লাবে ঢোকে রাত সাড়ে ১১টা-১২ টা নাগাদ। সেই সময় সেখানে তারা কিছু খাবার অর্ডার করে। খাবার খাওয়ার সঙ্গে তারা মদ্য়পান করে এবং একজন ওয়েটারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। তা দেখে নাইট ক্লাব কর্তৃপক্ষ বাধা দিতে এলে তাদের সঙ্গেও ওই যুবক-যুবতীরা অভব্য আচরণ করে বলে অভিযোগ। তারা যখন এরকম বিশৃঙ্খল আচরণ করছিল, তখন ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাদের বাইরে বের করে দেয়।
কিন্তু বাইরে বেরিয়েও থিয়েটার রোডের ওপর তারা দাপিয়ে বেড়াতে থাকে। পরিস্থিতি দেখে ক্লাব কর্তৃপক্ষ শেক্সপিয়র সরণি থানায় খবর দেয়। ক্লাব থেকে থানার দূরত্ব ১০০ থেকে ২০০ মিটার হবে। ফলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিস পৌঁছে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করলে তারা পুলিসের ওপরও চড়াও হয়। তাদের বিরুদ্ধে পুলিসকে মারধর করারও অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীকালে পুলিস চারজনকে গ্রেফতার করে। তাদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চায় পুলিস।
ইতিমধ্যেই নাইট ক্লাবের যে সিসিটিভি ফুটেজ, সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। সেই কারণে কর্তৃপক্ষের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলবেন পুলিস আধিকারিকরা। কারণ, চারজনকে গ্রেফতার করা হলেও ঘটনার সময় ছিল আরও অনেকেই। তারা কারা, ঘটনার সময় তাদের আচরণ কেমন ছিল ইত্যাদি বিষয সিসিটিভির ফুটেজ দেখার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে। ফলে গ্রেফতারের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বড়দিন উপলক্ষ্যে পার্ক স্ট্রিট বা আশপাশের এলাকায় এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। তাই নিরাপত্তা আরও বাড়াতে সক্রিয় পুলিশ।
মহেশতলার সম্প্রীতি উড়ালপুলে ফের মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল নাবালক সহ একই পরিবারের তিনজনের। আহত হয়েছেন একজন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একবালপুরের বাসিন্দা মোহম্মদ ফিরোজ (৩৫), তাঁর স্ত্রী নাগমা খাতুন (২৮) এবং তাঁদের নাবালক পুত্রসন্তান ফারদিন খানকে (১০) নিয়ে বজবজের একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় হঠাৎ একটি ট্যুরিস্ট বাসের সঙ্গে তাঁদের বাইকের সংঘর্ষ হয় এবং ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। পাশাপাশি পিছনে থাকা বিষ্ণুপুর আমতলার বাসিন্দা বাইক আরোহী পঙ্কজকুমার মণ্ডল, যিনি বাটানগর পোস্ট অফিসে কর্মরত, তাঁকে আহত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বিদ্যাসাগর হাসপাতালে পাঠায়।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি জানান, তিনি বাজার করে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি যা দেখেছেন, বাইকে যাওয়ার সময় একটি বাসকে ওভারটেক করতে গিয়েই মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ফিরোজ। কোনওভাবে বাসের সঙ্গে তাঁর বাইকের ধাক্কা লেগে তিনি বাইক সমেত স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে পড়ে যান। ওই সময় তাঁর বাইক অন্য় একটি বাইককেও ধাক্কা মারে। তাতে সেই বাইক আরোহী পায়ে আঘাত পান।
এক সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয়বার ভূতল বাসে মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে এক যাত্রীর কাছ থেকে টাকাপয়সা সহ সর্বস্ব লুট করে নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। ধর্মতলা থেকে রামগঙ্গাগামী বাসে ঘটে এই ঘটনা। অচৈতন্য অবস্থায় তারাতলা এলাকায় কন্ডাক্টর দেখতে পেয়ে নামাবার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশী এক যুবকের তৎপরতায় গদামথুরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয় অসুস্থ যুবকটিকে। তাঁর নাম গোরাচাঁদ বাগ, বয়স ২৭।
কন্ডাক্টরের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, তারাতলায় টিকিট চেক করতে গিয়ে ওই যুবককে বাসের মধ্যে অসংলগ্ন কথা বলতে দেখেন তিনি। তিনি তারাতলায় নামিয়ে দিতে চেয়েছিলেন ওই যুবককে। শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের কথায় তিনি বাসে করে নিয়ে আসেন। নামার কথা ছিল শেষ ভূতলের বাসস্ট্যান্ড রামগঙ্গায়। পাশে এক পরিচিত যুবক থাকায় তিনি ওই যুবকের বাড়িতে ফোন করে দেন। বাড়ির লোকজন গুরুদাসপুর হাসপাতাল মোড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের একটি আলুর স্টোরে দুর্গাপুজোর পর কাজ করতে যান ওই যুবক। বাড়িতে বারবার টাকা চাওয়া সত্ত্বেও গত তিনমাসে কোনও টাকা পাঠাতে পারেননি। একইসঙ্গে টাকা নিয়ে দেনা শোধ করবেন বলে শুক্রবার বাড়িতে আসছিলেন। এদিন সকালে স্ত্রীকে ফোন করে জানান, ধর্মতলা থেকে ভূতল পরিবহণ নিগমের বাসে উঠেছেন। সঙ্গে ২০ হাজার টাকা এবং ছেলের জন্য বিভিন্ন খাবার রয়েছে। কিন্তু সর্বস্ব লুট হয়ে যায়।
এই নিয়ে একমাসের মধ্যে চারবার একই ঘটনা ঘটল ধর্মতলা-রামগঙ্গা ভূতল পরিবহণ নিগমের বাসে। এদিন ঘটনাটি ঘটে দুপুর বারোটা দশ নাগাদ। সহযাত্রীরা জানান, ধর্মতলা থেকে সম্ভবত ওই সমস্ত দুষ্কৃতীরা উঠে যাত্রীদের পাশে বসে খাতির জমায়। তারপরই খানিকক্ষণ আলাপের ফাঁকে কিছু খেতে দেয় তাকে। তারপর অজ্ঞান করে সমস্ত লুট করে। অসুস্থ বাসযাত্রী গদামথুরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি আছে।
শীতের মরসুমে বড়দিনের উত্সবের আবহে এ ধরনের ঘটনায় আতঙ্কিত বাসযাত্রীরা। রীতিমতো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাঁরা।
এক সময় কলকাতার ক্রিসমাস গ্রেট ইস্টার্ন ও নাহুমস-এর কেক ছাড়া পালন করার কথা কেক বিলাসিরা ভাবতেই পারতেন না। ওয়াটারলু স্ট্রিটের সেই পুরনো গ্রেট ইস্টার্নের কেকশপের দরজা অনেকদিন বন্ধ হয়ে গেছে। যদিও একই জায়গায় নতুনরূপে ললিত গ্রেট ইস্টার্নের অভিষেক হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। তবে সেই পুরনো ঐতিহ্যবাহী গ্রেট ইস্টার্নের ১৭৫ বছরের প্রাচীন কেক ওভেনে তৈরি কেকের যে ঐতিহ্য বা জাদু ছিল, তা আর নেই। সারা ভারতের পুরনো কেকপ্রেমীদের প্রিয় ছিল গ্রেট ইস্টার্নের কেক।
১১৯ বছরের প্রাচীন নিউ মার্কেটের ঐতিহ্যবাহী নাহুম কনফেকশনারির ক্রিসমাস স্পেশাল ফ্রুট কেক ও প্লাম পুডিংয়ের দেশজোড়া সুনাম ছিল,আজও আছে। সেই পুরনো দিন থেকে আজও বড়দিনের আগে নাহুমের দোকানের ভিতর থেকে বাইরে কেকপ্রেমীদের লম্বা লাইন পড়ে। সত্তরের দশকে বড়দিনের সময় নাহুমের বড়দিন স্পেশাল ফ্রুট কেক ও প্লাম পুডিং কেনার লাইনে নিয়মিত দেখা যেত সত্যজিৎ রায়, অপর্ণা সেন, রবি ঘোষ প্রমুখ অনেক বিখ্যাত মানুষদের। অন্য সময় যে যত খুশি কেক কিনতে পারলেও বড়দিনের সময় বিখ্যাত মানুষ থেকে সাধারণ ক্রেতা, কাউকেই দুটির বেশি কেক বিক্রি করা হত না। আজও সেই নিয়ম চলছে।