ফের আক্রমণের মুখে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। তিনি এজলাসে দেরিতে বসেন। এই অভিযোগ পত্র বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় প্রধান বিচারপতির (chief justices ) কাছে। এই চিঠি ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে জানান যারা এই চিঠি লিখেছেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার (contempt of court)মামলা করা হবে। তার আগে তাদের হলফনামা (affidavit) দিয়ে আদালত জানতে চাইবে এই চিঠি তে সই করার কারণ।
বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই বার্তা পেয়ে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে আবেদন করেন আইনজীবী অরুনাভ ঘোষ (Arunavo Ghosh)। অরুণাভ ঘোষের দাবি, যত দিন যাচ্ছে বিচারপতি-আইনজীবীদের সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে। এর প্রত্যুত্তরে প্রধান আইনজীবী জানান আদালতের গরিমা রক্ষার দায়িত্ব বিচারপতি এবং আইনজীবী উভয়েরই। পাশাপাশি আইনজীবীদের দাবি, কোর্টে সংবাদমাধ্যমের (media) অবাধ বিচরণ বিচার ব্যবস্থাকে ক্ষুণ্ণ করছে। কোর্টরুমের প্রসিডিং ভিডিওগ্রাফি করছে সংবাদ মাধ্যম। সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করার আবেদনও জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তাঁদের এই আবেদন ও ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
সম্প্রতি ভরা এজলাসে একেরপর এক উত্তপ্ত কথোপকথনে জড়িয়ে পড়েন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এবং আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। সুকন্যা মণ্ডল শুনানিতেও উত্তেজক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল। এই বাগযু্দ্ধের জেরে আইনজীবীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত চত্ত্বরে ব্যানারও পড়েছিল। এবার অভিযোগ স্বয়ং বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনায় দ্বিধাবিভক্ত বিচার ব্যবস্থা।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়ে একাধিক মামলা বিচারাধীন কলকাতা হাইকোর্টে। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা। ২০১১-র পর থেকে বিপুল সম্পত্তিবৃদ্ধি হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের। যদিও তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে সাধারণ পরিবারের সদস্য বলে দাবি করেন বারবার। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি মাধ্যম (পাবলিক ডমেন) যে নথি রয়েছে, সেই নথি ঘেঁটে দেখা গিয়েছে
২০১১-র পর থেকে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার বিপুল সম্পত্তি বেড়েছে। এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তিবৃদ্ধির উৎস কী? এই প্রশ্নের উত্তর চেয়ে আদালতে দরবার করলেন আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।
তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক উত্থান অনেকের অনুপ্রেরণা। কিন্তু বিশেষ করে ২০১৩-র পর থেকে তাঁর পরিবারের সম্পত্তিবৃদ্ধির রকেট গতি দেখা গিয়েছে। আর সেই বছরেই চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে সর্বস্বান্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। আর এই ঘটনার পর কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, চিটফান্ডের সব টাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে লুকোনো রয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় জানা গিয়েছিল তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৫ কোটি টাকা। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ নিজেকে সমাজসেবী বলে দাবি করেন।
আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, 'আমার মামলায় দুটি আবেদন করা হয়েছে। প্রথমে যারা সমাজকর্মী বলে দাবি করেন তাঁদের এহেন সম্পত্তিবৃদ্ধি কারণ কী? আয়কর দফতর বিষয়টার তদন্ত করুক, আর দুই ইডি-কে দিয়ে এই বিপুল তহবিলের উৎস সন্ধান করা হোক।' টালির চালায় যারা থাকে, তাঁদের কাছে এত সম্পত্তি আসল কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর চেয়েই মামলা। আগামি ৬ তারিখ পরবর্তী শুনানি। সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানান তরুণজ্যোতিবাবু।
ঠিক কী বলেছেন এই আইনজীবী?
যদিও এই মামলা প্রসঙ্গে এদিন মেয়ো রোডের সভায় মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে তাঁর সুর ছিল যথেষ্ট চড়া। তিনি বলেন, 'আমার সম্পত্তি নিয়ে মামলা এখানে কেন আন্তর্জাতিক কোর্টে হওয়া উচিৎ। এখানে তো বিজেপি যা শিখিয়ে দেবে তাই বলবে।'
শুনুন সেই বক্তব্য:
এতদিন রোগীর পরিবারের সদস্যদের হাসপাতাল (hospital) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে। তবে এবার রোগীর (patient) পরিবারের লোকজনকে মারধরের অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল বজবজের (Budge Budge) একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের (nursing home) রোগীর পরিবারের।
মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা নেহা পারভিন। পেটের যন্ত্রণার সমস্যা নিয়ে বজবজের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হয় রবিবার। পরিবারের লোকজন যেমনটা জানান, রাত দেড়টা নাগাদ পরিবারের লোকজনদের বলা হয় রোগীর সঙ্গে দেখা করার জন্য। এর মধ্যেই ভোরবেলা পরিবারের লোকজনের কাছে খবর আসে নেহা পারভিন মারা গিয়েছে। পরিবারের লোকজনদের রোগীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে সিকিউরিটি বাধা দেয়। রোগীর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, হাসপাতালের এমার্জেন্সি গেট বন্ধ করে দেয় সিকিউরিটি। এবং হাসপাতালের অন্য একটি গেট দিয়ে বেশ কয়েকজন হাতে লাঠি, বাঁশ এবং রড নিয়ে এসে পরিবারের লোকজনের উপর চড়াও হয়। রোগীর পরিবারের লোকজনের মধ্যে আহতও হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
পাশাপাশি হাসপাতালে বিল নিয়ে বচসা শুরু হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বজবজ থানার পুলিস। কিছুক্ষণ পরই হাসপাতালে পৌঁছয় বজবজ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সহ বিশাল পুলিসবাহিনী। পুলিস পৌঁছে আহতদের খড়িবেরিয়া হাসপাতালে পাঠায় চিকিৎসার জন্য।
ব্যবসার কাজে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে অপহৃত হয়ে প্রায় ৪ দিন মাদুরদহে নজরবন্দি। অবশেষে উপস্থিত বুদ্ধির জোরে কলকাতার পুলিস কমিশনারকে ফোন। সিপির নির্দেশ এবং আনন্দপুর থানার সক্রিয়তায় দুষ্কৃতী ডেরা থেকে উদ্ধার দিল্লির ব্যবসায়ী অশোক থাপা। টানটান এই চিত্রনাট্য কোনও ওয়েব সিরিজের নয়, বরং বাস্তবের কলকাতার। এই ঘটনায় কলকাতা পুলিসের হাতে গ্রেফতার তিন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস জানতে পেরেছে ব্যবসায়িক শত্রুতার জের এই ঘটনা।
কলকাতা পুলিস সূত্রে খবর, দক্ষিণ দিল্লির বাসিন্দা বছর ৫৫-র প্রৌঢ় অশোক থাপা। তিনি পাইপ লাইনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। দিন পনেরো আগে ব্যবসার কাজে কলকাতা আসেন এবং ইডেন গার্ডেন্সের সামনে থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। এরপর ছ’দিন ধরে শহরেই আটকে রাখা হয়েছিল অশোকবাবুকে। খানিকটা নিজের উপস্থিত বুদ্ধির জোরে অপহরণকারীদের হাত থেকে মুক্তি পেলেন অশোক।
ধৃতদের জেরা করে পুলিস জানতে পেরেছে, অশোক থাপাকে দু’দিন ধরে কলকাতার একটি হোটেলে আটকে রাখা হয়েছিল। তারপর চারদিন তাঁকে রাখা হয়েছিল মাদুরদহের একটি পরিত্যক্ত গুদামে। সেখান থেকে দুষ্কৃতীদের চোখ এড়িয়ে সটান কলকাতার পুলিস কমিশনারকে ফোন করেন তিনি। গুগল থেকে খুঁজে বার করেন নম্বর। এরপরই তাঁর অবস্থান চিহ্নিত করে ওই গুদামের কাছে পৌঁছে যায় আনন্দপুর থানার পুলিশ। উদ্ধার করে প্রৌঢ়কে।
যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নাম আলি, শাহানওয়াজ এবং শম্ভু। এঁরা সকলেই কুন্তল গুছাইত নামের এক ব্যক্তির লোক বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের দাবি, এই কুন্তলের সঙ্গেই দিল্লিতে ব্যবসায় আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত গোলমাল ছিল অপহৃত অশোক থাপার। সেই কারণেই ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে লক্ষাধিক টাকা চেয়েছিলেন দুষ্কৃতীরা। ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত করছে পুলিস।
দুই পথচারীর বচসা মেটাতে গিয়ে বটির ঘায়ে আক্রান্ত মহিলা পুলিসকর্মী। তাঁর শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন এবং মাথার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ বাঁধতে হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। বারাসাত টেলিফোন এক্সচেঞ্জ মোড়ের এই ঘটনায় আতঙ্কে স্থানীয়রা।
জানা গিয়েছে, একটি চার চাকার গাড়ি, এক সাইকেল আরোহীকে ধাক্কা মারার চেষ্টা করলে শুরু হয় দু'পক্ষের বচসা। যদিও আক্রান্ত পুলিসকর্মীর দাবি, বড়সড় দুর্ঘটনার আগেই সেই চার চাকার গাড়ি ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু সাইকেল আরোহী মহিলা তখন উত্তেজিত হয়ে গাড়ির সওয়ারিদের উপর চড়াও হয়েছিলেন। সেই বচসা থামাতে এগিয়ে আসেন কর্তব্যরত পুলিসকর্মী অষ্টমী মণ্ডল।
এরপরেই নাকি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সেই পুলিসকর্মীর উপর চড়াও হয় অভিযুক্ত তরুণী। দু'জনের মধ্যে হাতাহাতি বাঁধে। এরপর পুলিসের গাড়ি অভিযুক্তকে তুলতে এলে সেই তরুণী একটি বটি নিয়ে এসে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারকে কোপ বসাতে যান। তখনই আবার রুখে দাঁড়ান পুলিসকর্মী অষ্টমী মণ্ডল। সেই সময়েই ধারালো অস্ত্রের ঘায়ে জখম হয়েছেন তিনি।
দেখুন হাতাহাতির সেই ভিডিও এবং আক্রান্ত পুলিসকর্মীর কী বলছে?
এরপরেই বারাসাত হাসপাতালের নিয়ে গিয়ে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয় ।পরবর্তীতে বারাসাত থানার পুলিস গিয়ে ওই মহিলাকে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, স্থানীয় এক দোকান মালিকের মেয়ে ওই অভিযুক্ত তরুণী। ঘটনার সময় সম্ভবত তিনি সাইকেল চালিয়ে দোকানের দিকেই যাচ্ছিলেন।
এদিকে,অভিযুক্ত মহিলার দাবি তিনি কোনও অন্যায় করেননি। তাঁর সাইকেলের উপরে চারচাকা উঠে গিয়েছিল। অথচ তাকেই দোষারোপ করা হচ্ছিল। সেজন্য তিনি উত্তেজিত হয়েছিলেন।
শুক্রবার বকেয়া ডিএ-র (DA) দাবিতে নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ে বিক্ষোভ দেখান সরকারি কর্মীদের সংগঠন সংগ্রামী ঐক্য মঞ্চ। শনিবার তারাই রাজপথে নেমে প্রতিবাদ মিছিলে (Protest Rally) পা মেলালো। দাবি সেই একটাই, সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা অবিলম্বে প্রদান করুক মমতা সরকার (Mamata Government)। এদিনের প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের প্রায় ২৯টি সংগঠন।
তবে শুধু প্রাপ্য ডিএ নয়, এদিনের মিছিলে স্বচ্ছভাবে স্থায়ী নিয়োগের দাবিও উঠেছে। সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত আয়োজিত করা হয়েছিল এই মিছিল। মিছিল থেকে প্রশ্ন ওঠে, রাজ্য সরকার পুজো অনুদান দিলেও, প্রাপ্য ডিএ কেন মিলছে না? ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট মে মাসে নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে প্রাপ্য বকেয়া। চলতি মাসেই শেষ সেই সময়সীমা। যদিও ডিএ মেটাতে আরও সময় চেয়ে ফের আদালতের দ্বারস্থ রাজ্য সরকার।
এই পদক্ষেপ ঘিরে ফের তুঙ্গে চাপানউতোর। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ৩১% মহার্ঘ ভাতার দাবিতে ৩০ অগাস্ট কর্মবিরতি পালন করবে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত পালিত হবে কর্মবিরতি। রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের এই সংগঠন।
সংগঠনের তরফে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে শুক্রবার অভিযোগ তোলা হয়েছে, ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা চাইতে গেলে সরকারি কর্মীদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরা প্রত্যক্ষ সংগ্রামে নামবো। ৩০ তারিখের কর্মসূচির পর বৃহৎ আন্দোলনের পথে হাঁটবো।
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির দাবি, 'কেন্দ্রের ডিএ এবং বাজার দরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব রাজ্যেই তাদের বকেয়া ডিএ দিচ্ছে। কিছু রাজ্য এখনও কিস্তিতে পিছিয়ে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩১% ডিএ বকেয়া। তারপরেও সরকারের ভূমিকা এবং বঞ্চনার প্রতিবাদে আমাদের কর্মসূচি। মূলত তিন দফা দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি পালন হবে।'
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya), তিনি কি সত্যিই নিখোঁজ? এই প্রশ্নেই বর্তমানে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি৷ যদিও সংবাদমাধ্যমে তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনি কলকাতার যাদবপুরের (Jadavpur) বাড়িতে আছেন৷ ইতিমধ্যে তাঁকে খুঁজে না পেয়ে লুকআউট নোটিস (LookOut Notice) জারি করেছে সিবিআই (CBI)। রাজ্য পুলিসও তুলে নিয়েছে তাঁর নিরাপত্তা। এই অবস্থায় শনিবার সকালে নিজের ফ্ল্যাটের বারান্দায় দেখা দিলেন মানিক ভট্টাচার্য। যদিও গত কয়েকদিনে তাঁকে বিস্তর খোঁজাখুজির পর সংবাদমাধ্যমকে ফোনে তিনি জানিয়েছিলেন, কলকাতায় আছেন তিনি। যাদবপুরে নিজের বাড়িতে আছেন। এরপর সাক্ষাৎ মানিক দর্শন।
বাড়ির একতলার বারান্দা থেকে সকাল ৯টা ২০ মিনিট নাগাদ দরজা খুলে বারান্দার সামনে এসে দাঁড়ালেন মানিকবাবু। এদিন মানিকবাবু বললেন, "আমি বাড়িতেই আছি। ছবিতে দেখে নিয়েছেন এবার নিশ্চিত হলেন তো? কোর্টের বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য আমি করব না। কিন্তু দয়া করে আমাদের সাধারণ জীবনযাপন করতে দিন। তদন্তে অসহযোগিতা আগেও ছিল না এখনও নেই। "
মমতার নয়া মন্ত্রিসভায় পরিবহন মন্ত্রী (Minister of Transport of West Bengal) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন স্নেহাশিস চক্রবর্তী (Snehasis Chakraborty)। তাঁর মাথায় এখন বড় দায়িত্ব। এতদিন এই দফতরের দায়িত্বে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। এদিন পরিবহন মন্ত্রী একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। বৈঠক থেকে তিনি জানান, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারের সময় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আরও স্বচ্ছ পরিবহন ব্যবস্থা আগামীদিনে দিতে চলেছি। ই-ভেহিকেলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যেই অনেক ব্যাটারি বাস চালু করেছি।"
তিনি আরও জানান, এবার অনলাইনে পরিষেবা পাবে সাধারণ মানুষ। আসছে স্মার্ট পরিবহণ ব্যবস্থা। অনলাইনের মাধ্যমে পরিবহণের সব কাগজ অনুমোদন পাবে সাধারণ মানুষ। কী কী পরিষেবা পেতে চলেছে সাধারণ মানুষ, দেখে নিন এক নজরে-
১.গাড়ির মালিকানার নাম পরিবর্তন
২.ট্রেড লাইসেন্সের নবীকরণ
৩. এরপর গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের আবেদন জমা করার পর সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে অনলাইনেই
৪.গাড়ির নম্বর পরিবর্তনও পাওয়া যাবে অনলাইন
৫.গাড়ির বিশেষ অনুমোদনটাও হবে অনলাইন
৬. লোন পরিশোধের সমাপ্তিকরণ হবে অনলাইন
৭.ডুপ্লিকেট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট
৮.নথিভুক্ত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন
৯. গ্যারেজ অনুমোদন
১০.লার্নার লাইসেন্স
এই সমস্ত পাওয়া যাবে অনলাইনেই। যারা অনলাইনে আবেদন করতে পারবে না, তাদের জন্য ফিজিক্যাল ব্যবস্থাও থাকছে। তিনি আরও জানান, "গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ আছে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি তুলে দেবার। আমরা সময় নিচ্ছি, আমরা ই-ভেইকেল আনছি। বাসগুলিতে এখনও ভাড়া বাড়ানোর কোনও কথা নেই, তবে বাসগুলির সঙ্গে কথা বলে ভাড়া আয়ত্তে রাখতে হবে। পাশাপাশি সিএনজি-র দামও বাড়ছে।এটা আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আগামী কয়েক মাসের শহরে আসছে ই-ক্যাব। চার্জিং পয়েন্ট রাস্তায় করার কথা ভাবছে পরিবহন দফতর।"
এরই সঙ্গে তিনি জানান, "কেন্দ্রের থেকে টাকা পাচ্ছিনা, তবুও রাজ্য সরকার পাশে আছে।"
অধ্যাপনা থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। অধ্যাপক হিসেবে অনেকদিনই যুক্ত ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে আর সময় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই প্রায় দুই যুগের অবসান ঘটালেন তিনি, দীর্ঘ ২৫ বছরের সম্পর্কে ইতি টানলেন ব্রাত্য। সিটি কলেজেই তিনি বাংলা বিভাগে (bengali dept.) অধ্যাপনা করতেন। বুধবার কলেজে (college) গিয়ে শেষবারের মত স্বেচ্ছা অবসরের আবেদন জমা দিয়ে এসেছেন। বুধবার সেই কলেজে গিয়েই সহকর্মীদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে এলেন ব্রাত্য বসু।
এই সিটি কলেজের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক তাঁর। অধ্যাপনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের সঙ্গে নিদারুণ ভাব। কিন্তু তাদেরকে সময় দিতে পারছিলেন না বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী। তাই এবার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললেন তিনি। এখন থেকে অধ্যাপনা আর করবেন না। বরং রাজনীতির ময়দান আর নাট্য-সিনেদুনিয়ায় বেশিরভাগ সময় থাকবেন।
তিনি জানিয়েছেন, এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। বহুদিন বিভিন্ন কাজে কলেজে অধ্যাপনার কাজে আসতে পারিনি। পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছিল, তাই তাদের কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত।
বুধবার সিটি কলেজে তাঁর অবসর গ্রহণ উপলক্ষে ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানেই অতীতের নানা স্মৃতি উল্লেখ করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে অধ্যাপক হিসেবে শুরু, আর ২০২২এ শিক্ষামন্ত্রী হয়েও অধ্যাপনা থেকে বিদায় নিলেন সিটি কলেজের বাংলার অধ্যাপক।
এদিকে সূত্রের খবর, স্কুলের পর এবার সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত কলেজগুলিতে অধ্যাপক বদলিতে আসছে নয়া নিয়ম। অনলাইনে আবেদন করতে হবে অধ্যাপকদের। তার জন্য একটি বিধি আনছে রাজ্য। কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন পোর্টাল চালু করবে শিক্ষা দফতর। জানা যায়, দুর্নীতি বা বেনিয়ম রুখতে এই সিদ্ধান্ত। উপকৃত হবেন প্রায় ১৩ হাজার অধ্যাপক। ঘরে বসেই বদলির আবেদন করতে পারবেন তাঁরা।
সামনেই দুর্গা পুজো (durga puja), আর তার আগেই রাস্তা (road) সারাইয়ের কাজে গতি আনতে চাইছে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ (Kolkata Municipal Authority)। রাস্তার খানাখন্দ খুঁজতে রাতে শহরে ঘুরবেন মেয়র পারিষদও।
জানা যায়, পুজোর আগেই রাস্তার সমস্ত খানাখন্দ ভরাট করা হবে। বুধবার থেকে সড়ক বিভাগের ডিজি রাস্তায় নেমেছেন। এদিন মেয়র পারিষদ (সড়ক) অভিজিৎ মুখোপাধযায় আশ্বাস দেন। তিনি জানান, পুজোর আগে সমস্ত রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ করে ফেলা হবে। তিনি আরও জানান, বোরো ভিত্তিক রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলছে। পুজোর আগে শহরে সমস্ত খানাখন্দ মেরামতি হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে শহরে বেশ কয়েকটি রাস্তা চিহ্নিত করা হয়েছে। এদিকে পুজোর আগে সিআর এভিনিউ এবং রবীন্দ্র সরণী রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু করতে চলেছে পুরসভা। জোকা ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে চড়িয়ালখাল এমজি রোড থেকে জেমস লং সরণী রাস্তাও চওড়া করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ অগাস্ট মেয়র পারিষদ বৈঠকে এই প্রস্তাব পাশ হয়েছে। তবে পুজোর আগে যেখানে সামান্য রাস্তা খারাপ, সেই রাস্তায় প্যাচ ওয়ার্ক করা হবে। আর যেসব রাস্তা খুবই খারাপ অবস্থায় আছে সেটা পুরোপুরিভাবে সংস্কার করা হবে বলে জানালেন মেয়র পারিষদ সড়ক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
বাঙালির প্রাণের উত্সব দুর্গাপুজো(Durgapuja)। ইউনেস্কোর(UNESCO) সম্মানে ১ সেপ্টেম্বর রঙিন মিছিল করার ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিছিল শুরু হবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে। মিছিল রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ ধরে ধর্মতলায় শেষ হবে। আর এই বিশাল মিছিলকে ঘিরে প্রস্তুতি শুরু করে দিল কলকাতা পৌর সংস্থার(Kolkata corporation) আলো ও বিদ্যুৎ বিভাগ। শুক্রবার মেয়র পারিষদ আলো ও বিদ্যুৎ বিভাগের সন্দীপ রঞ্জন বকশি জানিয়েছেন যে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত যে সব রুটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেঁটে মিছিল করবেন, সেই সমস্ত অঞ্চলের রাস্তার বিদ্যুৎবাহী বা কেবলের তার ঝুলে থাকলে সেটা খুলে ফেলা হবে। তিনি জানান যে ইতিমধ্যে সমস্ত কেবল সার্ভিস প্রোভাইডারদের ৩০ আগস্টের মধ্যে এই রাস্তাগুলি পরিষ্কার করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
শুধু তাই নয় আগামী ৩০ তারিখ মেয়র পরিষদ আলো ও বিদ্যুৎ বিভাগ সন্দীপ রঞ্জন বকশি নিজেই দোতলা বাস নিয়ে এই সমস্ত রুটে ঘুরে পরিদর্শন করবেন। সেসময় যদি কোথাও কোনও জায়গায় তার পাওয়া যায় সেটা সঙ্গে সঙ্গে কেটে ফেলা হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া এখন থেকেই দুর্গা পুজোকে ঘিরে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কলকাতা পৌর সংস্থা। মেয়র পরিষদ আলো ও বিদ্যুৎ বিভাগ সন্দীপ রঞ্জন বকশি আরও জানিয়েছেন যে, সমস্ত ঘাটে এখন থেকে আলো লাগানোর ব্যাবস্থা শুরু করে দেওয়া হয়েছে । দহিঘাট থেকে প্রিন্সেপ ঘাট, বাজে কদমতলা ঘাট থেকে সর্বমঙ্গলা ঘাট। সব ঘাটেই আলোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি জানিয়েছেন যে বিসর্জনের সময় যাতে কোনও রকমের অসুবিধা না হয় তার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কলকাতা পৌর সংস্থার আলো ও বিদ্যুৎ বিভাগ ।
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার বচসায় জড়িয়েছেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ (Arunava Ghosh) এবং হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। সেই বাগযুদ্ধ সর্বজনবিদিত। এবার অরুণাভ ঘোষ সম্পর্কে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, 'উনি কেন এমন করছেন জানি না। দেখি কী করা যায়!'কয়েকদিন আগে অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের আদালতে (High Court) হাজিরা নিয়ে সরগরম ছিল রাজ্য রাজ্যনীতি। সেই সময়েও বেশকিছু বিষয়ে এজলাসেই তরজায় জড়িয়েছিলেন বিচারপতি এবং আইনজীবী ঘোষ। সেই তরজার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সিএন ডিজিটাল।
সেই প্রসঙ্গে এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'অনেকেই বলেন, আমি আইনের এ,বি,সি জানি না। আমি কেন সেকশন ১৬৫-এর কথা বলি? এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সব থেকে মজার বিষয়, আমি পোর্টব্লেয়ারের এক কন্ট্রাক্টচুয়াল কর্মীকে চাকরি ফেরত পাইয়ে দেওয়ার জন্য একটা অর্ডার দিয়েছিলাম। সেই অর্ডার উনি (পড়ুন অরুনাভ ঘোষ) একটি মামলার জন্য রেফারেন্স হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন। আমার এজলাসেই সেই রেফারেন্স টেনেছিলেন। সেই সময় যখন আমি লেবার কোর্টের মামলা নিতাম।'
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, অরুনাভ দার সঙ্গে আমার কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তাও কেন উনি আমার সাথে এমন করছেন আমি জানি না। লোকজনও নিয়ে আসছেন।
দেখি কী করা যায় ভাবছি!
শুক্রবারও একটি মামলার শুনানিতে সেকশন ১৬৫ এর বিষয়টি উঠে আসে। তারপরেই আদালতে এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য সেকশন ১৬৫-তে উল্লেখ আদালত প্রয়োজনে সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পারে।
মাদ্রাসার সার্ভিস কমিশনে (Madrasa Service Commission) শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ। উত্তরপত্র (OMR Sheet) কেলেঙ্কারির অভিযোগে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের চাকরিপ্রার্থীর। তাঁর জমা দেওয়া ওএমআর শিটে তৃতীয় ব্যক্তি কলম চালিয়েছে। ফলে বদলে গিয়েছে উত্তর। এই অভিযোগ তুলে সেই ওএমআর শিট বাতিলের দাবিতে আদালতে দরবার সেই চাকরিপ্রার্থীর। আবেদনের গুরুত্ব বিচার করে সেই ওএমআর শিটকে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবে পাঠালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি CFSL-কে এই মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
অভিযোগ, মাদ্রাসা নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নের ভিত্তিতে যে উত্তরপত্র দেওয়া হয়, তাতে অপশন থাকে। এক পরীক্ষার্থী কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন উত্তরপত্রের "A", "B", "C" বিকল্পগুলোর মধ্যে A এবং B সঠিক উত্তর এর জন্য। কিন্তু তাঁর উত্তরপত্রে C বিকল্প মার্কিং করা। আদৌ তিনি সেই উত্তর দেননি। পরে মেধাতালিকায় তাঁর নাম না থাকায় সন্দেহ হওয়ায় তিনি তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেন। সেই চাকরিপ্রার্থী জানতে পারেন তিনি নাকি C বিকল্প বেছেছিলেন। তিনি উত্তীর্ণ হলেও আদতে তাঁকে চাকরি না দেওয়ার জন্য এই বেনিয়ম করেছে পর্ষদ।
এরপরেই আদালতের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওই উত্তরপত্র চেয়ে পাঠান। শুক্রবার মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ সেই উত্তরপত্র জমা করলে, হায়দরাবাদে সিএফএসএল-এ যায় সেই খাতা। পাশাপাশি এদিন হাইকোর্টের নির্দেশ, CFSL ওএমআর সিট খতিয়ে দেখবে। পরীক্ষার্থীর কলমের কালির সঙ্গে অন্য কলমের কালি বিবেচনা করা হবে। এছাড়া দেখতে হবে, উত্তরপত্র একই চাপ প্রয়োগ করে লেখা হয়েছে কিনা। আদালতের নির্দেশ মতো আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থী যে কালিতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কলম-সহ সেই কালিও জমা দেন আদালতে। জানা গিয়েছে, ৩১ অগস্টের মধ্যে CFSL-কে পাঠাতে হবে। সায়েন্স ল্যাবরেটরির অধিকর্তাকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করতে হবে।
এদিনে শুনানিতে বিচারপতির মন্তব্য, রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি এখন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবারই পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের সচিবকে ওএমআর সিট এবং কলম (বল পেন) হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে হবে। জানা গিয়েছে, ১৭ জানুয়ারি ২০২১ পরীক্ষা হয়। ওই বছর ১১ অগস্ট ফল প্রকাশ হয়।
এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান((SSC EX Chairman) সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরের ফ্ল্যাটে প্রায় ৮ ঘণ্টা তল্লাশি(seaech) চালায় সিবিআই। গতকাল বিকেলে সিবিআইয়ের ৫ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল ফ্ল্যাটে যান। প্রায় রাত দেড়টা পর্যন্ত তল্লাশি চালান তাঁরা। সিবিআই আধিকারিকরা বেরোনোর সময় স্বভাবতই মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। তবে বেশ কিছু জিনিস, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি(document) বাজেয়াপ্ত করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বেশ কিছু প্রশ্ন করেন তাঁকে সিবিআই আধিকারিকরা। প্রশ্নবাণে ছিল,
১. আপনি বলছেন সব আইন মেনে হয়েছে, বাগ কমিটির রিপোর্টে অন্য কথা রয়েছে। কী করে সম্ভব?
২. অটো জেনারেটেড সই দিয়ে চাকরি হল কীভাবে?
৩. আপনার আমলেই সব দুর্নীতির পরীক্ষা আপনি দায় এড়াতে পারেন না।
সূত্রের খবর, তবে উত্তরে তিনি বলেন, সব আইন মেনেই করেছেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালের উড়ানে শহরে আসেন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য(chancellor) সুবীরেশ ভট্টাচার্য। কলকাতা বিমান বন্দরে তিনি বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। এরপর তাঁর পরের গন্তব্য ছিল নিজাম প্যালেস নয়, বালিগঞ্জ প্লেস। সূত্রের খবর, বালিগঞ্জ প্লেসে এক আত্মীয়ের বাড়ি খাওয়া দাওয়ার পর সুবীরেশ বাবুর পৌঁছন বাঁশদ্রোণীতে তাঁর সিল বন্ধ ফ্ল্যাট।
তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ভুল থাকতে পারে। সিবিআই ঠিক পথেই এগোচ্ছে। তবে পরবর্তী কালে তাঁর অজান্তে স্ক্যান সিগনেচার ব্যবহার করা হতে পারে বলে গতকাল জানান তিনি। তবে যা বলার সিবিআই বলবে, কোর্ট বলবে বলে জানান তিনি। সিবিআইয়ের উপর ১০০ শতাংশ বিশ্বাস রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
আদালত গণতন্ত্রের পিলার, সাধারণ মানুষের পিলার। আম জনতা বিচার পেতে আদালতে আসেন। ন্যায়বিচার কখনও একপক্ষ হয় না, ন্যায়বিচার নিরপেক্ষ হয়। মানুষ যখন সব জায়গা থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, তখন আদালতে বিচার চাইতে আসে। আদালত, সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্রের স্তম্ভ। কখনই যাতে এদের ভাবমূর্তি নষ্ট না হয়। বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের ভবন সম্প্রসারণের একটি অনুষ্ঠান এদিন আয়োজিত হয়েছে নব মহাকরণে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ অন্য বিচারপতিরা। ছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং মুখ্যসচিব এইচকে দ্বিবেদী।
সেই অনুষ্ঠানেই এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আমি নিজে আইনজীবী। যে কোনও মামলায় আদালতে চলে যেতে পারি। মানবাধিকার সংক্রান্ত একাধিক মামলায় আমি সওয়াল-জবাবও করেছি। বার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র মেম্বারশিপ কার্ডও আছে আমার কাছে।
প্রধান বিচারপতির প্রতি তাঁর অনুরোধ, 'প্রায় তিন-চার বছর প্রচুর মামলা ঝুলে রয়েছে। সেগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পদক্ষেপ নিক হাইকোর্ট। পাশাপাশি বাড়ানো হোক মহিলা বিচারপতির সংখ্যা।' এমনকি, মামলার শুনানিতে মিডিয়া ট্রায়ালে যাতে কান না দেন মহামান্য বিচারপতিরা। এই অনুরোধও করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমকেও মিডিয়া ট্রায়াল না করার আবেদন করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের মূল ভবনের স্থান সংকুলানের জন্য নব মহাকরণের প্রথম থেকে নবমতল ভবন সম্প্রসারণের স্বার্থে হাইকোর্টকে তুলে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আইন দফতর, পূর্ত দফতর এবং হাইকোর্ট সচিবালয়ের সমন্বয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে জানান মুখ্যমন্ত্রী। সবপক্ষকেই ধন্যবাদ জানান তিনি।