আজ অর্থাৎ বুধবার সন্দেশখালির ঘটনার ১৯ দিন পর এখনও 'নিখোঁজ' শেখ শাহজাহান। গত ৫ জানুয়ারির ঘটনার পর আজ সকাল সকাল ফের শেখ শাহজাহানের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে ইডি। রেশন বণ্টন দুর্নীতিকাণ্ডে ফের সুপার অ্যাকশন মোডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জানা গিয়েছে, শাহজাহানের বাড়ির তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইডি। তবে এ দিনের দৃশ্যটা ৫ জানুয়ারির থেকে একেবারেই আলাদা। এদিন সরবেড়িয়া গ্রাম যেন পরিণত হয়েছে রণক্ষেত্রে। এলাকাজুড়ে রয়েছে রাজ্য পুলিস এবং সিআরপিএফ। আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা পুরোপুরি তৈরি হয়ে এসেছে, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে এসেছেন ইডি আধিকারিকরা। ৫ জানুয়ারি যে তল্লাশি করতে তাঁরা এসেছিলেন, সেই কাজই করতে না পারায় এদিন ফের শেখ শাহজাহানের ডেরায় হানা দিয়েছে ইডি। জানা গিয়েছে, বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ৮ জন ইডি আধিকারিক আসেন। ইডির তরফ থেকে পুরো তল্লাশি ভিডিওগ্রাফি করা হচ্ছে। আলাদা করে ভিডিওগ্রাফার নিয়ে আসা হয়েছে। মোতায়ন রয়েছে ন্যাজাট থানার পুলিস আধিকারিকরা এবং বসিরহাট থানার পুলিস আধিকারিকরা। তেরো জনকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে তল্লাশির স্বার্থে। যেখানে আটজন ইডি আধিকারিক সহ দুজন লোকাল উইটনেস এবং প্রশাসনিক কর্তারা রয়েছেন। প্রশাসনিক কর্তাদের বডিক্যাম রয়েছে। মূল বাড়িতে যেরকম তল্লাশি চলছে পাশাপাশি অন্যান্য আত্মীয়দের বাড়িতেও চাবির খোঁজে যান তদন্তকারী আধিকারিকরা। চাবি খুঁজে না পাওয়ায় দিয়ে লোক দিয়ে তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে তল্লাশি চলছে। জানা গিয়েছে, ইডির তরফে শেখ শাহজাহানের বাড়ির তালা ভাঙতে ২ জনকে আনা হয়েছে।
অনুমান করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে রয়েছে শাহজাহানের গুপ্তধন। দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা রয়েছে তার কাছে। আর সেই সূত্র ধরেই ফের সন্দেশখালিতে ইডির এই তল্লাশি অভিযান। এখনও অবধি হদিস নেই বিপুল সম্পদ এর। কোথায় গেলো শাহজাহান বিপুল বেআইনি অর্থ? সূত্র অনুযায়ী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতার একাধিক স্থানে গোপনে টাকা সরানো হয়েছে। সরানো হয়েছে অস্ত্র ও। ইডির হাতে একাধিক নেতা, বিধায়ক এর নাম উঠে এসেছে এই সূত্রে। ফলে এদিন ইডির তল্লাশি অভিযানের পর কী কী তথ্য হাতে উঠে আসে, তাই এখন দেখার।
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও জেলে। তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক নাম। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। তার মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পশ্চিমাঞ্চলের চেয়ারম্যান শেখ সিরাজউদ্দিনকে এসএসসি-র পদ থেকে স্মঅরীয়ে দিল রাজ্য সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। যার ভিত্তিতে সোমবারই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রাজ্যকে নির্দেশ দেন, যত দ্রুত সম্ভব সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার।
জানা গিয়েছে, শেখ সিরাজউদ্দিনের স্ত্রী জাসমিন খাতুন ২০১৯-এর মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে চাকরি পেয়েছিলেন। যেখানে থেকে ২০১১ সালে পরীক্ষা দেন। আর ২০১৫ সালে সেই প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। অভিযোগ, নিজের স্ত্রীকে চাকরি পাইয়ে দেন খোদ শেখ সিরাজউদ্দিন। ঘটনা সামনে আসতেই উঠে আসে একাধিক প্রশ্ন।
তবে বিকাশভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত কর্তাকে আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল পদ থেকে। তবে সোমবার হাইকোর্টে এই বিষয়ে কিছু জানাননি রাজ্যের আইনজীবী। আচার্য সদন থেকে জানানো হয়েছে, চিঠি পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
রেশন বন্টন দুর্নীতিতে ইডির জালে ধরা পড়েছিলেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। তারপর থেকেই ইডির তদন্তে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে শঙ্করের বিরুদ্ধে। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠমহলের তালিকাতেও মেলে শঙ্কর আঢ্যের নাম। শঙ্করের নেপথ্য কাহিনী জানার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তদন্ত শুরু হয় ইডির। ১৪ দিনের হেফাজত শেষে শনিবার সেই শঙ্কর আঢ্যকে ফের আদালতে পেশের সিদ্ধান্ত ইডি আধিকারিকদের। এমনকি রহস্যের তল পেতে শঙ্করের পরিবারের সদস্যদেরও জেরার ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দামহল।
কিন্তু এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে বিস্ফোরক মন্তব্য বালু ঘনিষ্ঠ শঙ্করের। গত সোমবার মারকুইস স্ট্রিটের ফরেক্স কোম্পানিতে ইডির তল্লাশি অভিযানে উদ্ধার হওয়া প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা 'নিজের' বলে দাবি অভিযুক্তের। শঙ্করের সাফ জবাব, ওই টাকা আমার কারেন্সি। তবে তদন্তের স্বার্থে পরিবারকে ইডির জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গ সুকৌশলে এড়ালেন শঙ্কর। ইডি তদন্তের স্বার্থে যাকে খুশি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলে জানান তিনি।
এমনকি সম্প্রতি ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জেল থেকে লেখা চিঠিতে তাঁর নাম উল্লেখ থাকা নিয়েও মুখ খুললেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান। মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে পাল্টা প্রশ্ন শঙ্করের, জেল হেফাজতে কাগজ-পেন পেলেন কীভাবে জ্যোতিপ্রিয় বাবু? আগে সেই বিষয়টার তদন্ত হোক। নিজেকে মূলত গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন ধৃত শঙ্কর আঢ্য।
প্রসঙ্গত, ১৪ দিনের ইডি হেফাজতে থাকার সময়ে শঙ্কর আঢ্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছে ইডি। পাশাপাশি, শংকর আঢ্যের একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির বাড়ি ও অফিসেও হয়েছে তল্লাশি অভিযান। জানা গিয়েছে, শঙ্কর আঢ্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ৬টি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থাও রয়েছে, যে সংস্থা গুলি থেকে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা সহ একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।মূলত, ওই বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থা মারফত রেশন দুর্নীতির কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করার কারবার চালাত শঙ্কর, দাবি ইডির।বাজেয়াপ্ত যাবতীয় সেই নথি ও তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করার পরবর্তী সময়ে রেশন বন্টন দুর্নীতির রহস্য কোন দিকে মোড় নেয়, জবাব দেবে সময়।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির জাল গোটাতে সক্রিয় ইডি। এই আবহে এবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী রাজীব দে-কে তলব করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পাশাপাশি, পার্থ ঘনিষ্ঠ কলকাতা পুরসভার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থ সরকারকে-ও তলব করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁদের আসতে বলা হয়েছে বলে খবর।
ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ সরকারের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে সিবিআই। তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল পরিমাণ কালো টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়। এর মধ্যে প্রোমোটিং ব্যবসাও রয়েছে। সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই পার্থ ঘনিষ্ঠ এই দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি।
এর আগে রাজীব দে-র বাড়ি ও বীরভূমের গেস্ট হাউসে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। আর এবার ইডির স্ক্যানারে পার্থ ঘনিষ্ঠ রাজীব দে। নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল পরিমাণ কালো টাকা কোথায় রয়েছে এবং কোন কোন ব্যবসায় সেই টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছেন ইডির আধিকারিকরা।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পরতে পরতে রহস্য। সেই রহস্যের পর্দাফাঁস করতেই তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডির এই তৎপরতায় কি উঠে আসবে নিয়োগ দুর্নীতির মাথাদের নাম? সামনে আসবে কি এই দুর্নীতির কোনও নতুন যোগসূত্র?
রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ধৃত বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শংকর আঢ্যর কলকাতার বাড়ি, অফিসে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হল প্রচুর বাংলাদেশি মুদ্রা। ইডি সূত্রে খবর এমনই। মঙ্গলবার সকালে ইডি দফতরে যান শংকর আঢ্যর মেয়ে ঋতুপর্ণা আঢ্য। শংকরের নামে একাধিক এফএফএমসি কোম্পানির হদিশ পেয়েছে ইডি। এমনকি তাঁর পরিবারের অন্যান্যদের নামেও এফএফএমসি কোম্পানির হদিশ পেয়েছে ইডি। ইতিমধ্যেই শংকর আঢ্যর ভ্রাতৃবধূকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ইডি আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, এ বিষয়েই হয়তো শংকর আঢ্যর মেয়েকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ইডি।
উল্লেখ্য, শংকর আঢ্যর আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য পেতে সোমবার কলকাতা ও সল্টলেকের ৪ জায়গায় তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজরে ছিল ধর্মতলার কাছে মারকুইজ স্ট্রিটে তাঁর ফ্ল্যাট ও অফিসে। সেখানে একটি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র চলত শংকর আঢ্যর নামে। সূত্রের খবর, সেই অফিস থেকেই প্রচুর বাংলাদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। ভারতীয় টাকায় যা প্রায় ৮ লক্ষের কাছাকাছি। ইডি কর্তাদের প্রশ্ন, এত বাংলাদেশি মুদ্রা কেন অফিসে? এর সঙ্গে কোনও বেআইনি বিষয় যুক্ত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। এই দুর্নীতির তদন্তে নেমে বাকিবুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। মূলত বাকিবুর রহমানকে জেরা করেই সামনে আসে রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম। জানা গিয়েছে, রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে বাকিবুর রহমানের যোগ সামনে আসার পর একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। এর মধ্যে অঙ্কিত ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি সংস্থাও রয়েছে। এবার সেই সংস্থারই অন্যতম ডিরেক্টর হিতেশ চন্দককে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন ইডির আধিকারিকরা। সেখানেই এই মেরুন ডাইরি নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে হিতেশ জানান, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক টাকা নিয়েছেন। আর অর্থের লেনদেনের যাবতীয় হিসেব রয়েছে মেরুন ডাইরিতে।
অন্যদিকে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক অভিজিৎ দাসও জেরায় স্বীকার করেছেন যে, রাজ্যের তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী অর্থের আদান প্রদানের হিসেব নিকেশের যাবতীয় দায়িত্ব তাঁকে দিয়েছিলেন। তাই তিনি বাধ্য হয়ে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির পর্দাফাঁস করতে জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছেন ইডির আধিকারিকরা। তদন্তে কি উঠে আসবে এই দুর্নীতির কোনও নতুন যোগসূত্র? সামনে কি আসবে এই দুর্নীতির মাথাদের নাম?
পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে ইডি। শুক্রবার সকাল থেকেই ছিল টান টান উত্তেজনা। কারণ শুক্রবার সাতসকালেই শাসকদলের তিন হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকরা। রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় ও উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সুজিত বসুর বাড়িতে প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা ও তাপস রায়ের বাড়িতে প্রায় ১২ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশির পর একাধিক নথি ও তাঁদের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর সেসব নথি ও ফোন থেকেই দুর্নীতির পর্দাফাঁস হতে পারে বলে আশাবাদী ইডি।
গতকাল মন্ত্রী ও বিধায়কের বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়ে একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। ইডির দাবি, এই সব নথি পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসাবে কাজে আসবে। গতকাল বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে ১০ ঘণ্টারও বেশি ম্যারাথন তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁর মোবাইল ফোন ও বরানগর পুরসভা সংক্রান্ত একাধিক রিকোয়েস্ট লেটার উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কিছু বায়োডাটাও উদ্ধার করেছে ইডি। পাশাপাশি ইডির ডিজিটাল এক্সপার্টদের মাধ্যমে মোবাইল ফোন এক্সট্রাক্টর কাম হার্ডড্রাইভ ডিকোর্ডিং যন্ত্রের সাহায্যে তাপস রায়ের মোবাইল থেকে সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখবে ইডি।
এছাড়াও জানা গিয়েছে, আজ অর্থাৎ শনিবার ইডির তরফ থেকে সেই সমস্ত বায়োডেটার ক্যান্ডিডেটদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। কী কারণে বায়োডাটা জমা দিয়েছিলেন তাপস রায়ের কাছে, সেই বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে ইডির তরফ থেকে। বরানগর পুরসভার কোন কাজের জন্য রিকোয়েস্ট লেটার দেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়েই খতিয়ে দেখবে ইডি, এমনটাই সূত্রের খবর। মন্ত্রী সুজিত বসুর বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোন পরীক্ষা করেও গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হবে বলে আশাবাদী ইডি।
শুক্রবার সাতসকালে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে তল্লাশি চালানো শুরু হয়েছে তাঁদের বাড়িতে। পাশাপাশি উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তী বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা। দীর্ঘ ১২ ঘন্টার তল্লাশি শেষে বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়ি থেকে বের হল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দীর্ঘ তল্লাশিতে একাধিক নথি এবং বিধায়কের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে ১০ ঘণ্টা তল্লাশি শেষে সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে বেরোলেন ইডি আধিকারিকরা। এককথায় বলা যায়, পুর নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে আজ, শুক্রবার সকাল থেকে তুঙ্গে ইডি তৎপরতা। সকালের আলো ফুটতেই বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস এবং রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। গোটা এলাকাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। এমনকি ঘিরে রাখা হয় তাপস রায়ের বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাড়িটিও। সকাল থেকে প্রায় দীর্ঘ ১২ ঘন্টা ধরে চলে এই তল্লাশি অভিযান। আর এই দীর্ঘ তল্লাশিতে কিছুই তেমন পাওয়া যায়নি বলেই দাবি তৃণমূল বিধায়কের।
তাপস রায় কথায়, 'কিছু নেই তো পাবে কি!' ইডি বাড়ি ছাড়তেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাপস রায় জানিয়েছেন, 'আমি নিজেও খুবই আশ্চর্য হয়েছি। বরাহনগর পুরসভার কোনও নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত নই। এমনকি রাজনৈতিক জীবনে কোনও দুর্নীতির সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না এবং জড়িত নই'। আগামীদিনে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। আগামীদিনে তাঁকে তলব করা নিয়ে কিছু ইডি আধিকারিকরা জানাননি বলেই দাবি তৃণমূল নেতার।
অয়ন শীলের ডায়েরি থেকেই খোঁজ পাওয়া গিয়েছে সুজিত বসুর নাম! এমনটাই ইডি সূত্রে খবর। শুক্রবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই সুপার অ্যাকশন মোডে ইডি। সন্দেশখালির ঘটনার পর এবারে পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রায় ১২ ঘণ্টা পরও এখনও চলছে তল্লাশি। এদিন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস রায় ও উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। জানা গিয়েছে, পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অয়ন শীলের ডায়েরির সাঙ্কেতিক কোড থেকেই জানা যায় সুজিত বসুর নাম।
জানা গিয়েছে, সকাল থেকে সুজিত বসুর পুরনো বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর ইতিমধ্যেই সেখান থেকে বেরিয়ে যায় ইডি। এর পর সুজিত বসুর ছেলে সমুদ্র বসুকে নিয়ে পাশের একটি অফিস ও বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানেও চলেছে তল্লাশি। এই দফতরের বাইরে রয়েছে বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী, বিধান নগর পুলিসের বাহিনীও। ইতিমধ্যেই সেখান থেকে চারজন ইডি আধিকারিক বেরিয়ে গেলেও কয়েকজন আধিকারিক এখনও চালাচ্ছেন তল্লাশি। অন্যদিকে ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলের ডায়েরির সাঙ্কেতিক চিহ্ন থেকেই পাওয়া যায় মন্ত্রী সুজিত বসুর নাম। এছাড়াও ইডি দফতরে একাধিকবার বিভিন্ন এলাকার চেয়ারপার্সন, প্রাক্তন চেয়ারপার্সনকে তলব করে উঠে আসে মন্ত্রীর নাম। ফলে সুজিত বসুর বাড়ি-অফিসে হানা দিয়ে কী কী তথ্য পাওয়া যায়, সেদিকে তাকিয়েই বাংলা।
এবার ইডির নজরে শঙ্কর আঢ্যর পরিবার। মা, ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী, এমনকি ভাইয়ের নামেও নাকি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থা খুলে রেশনম বণ্টন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করছিলেন বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য, দাবি ইডির। তার পরিপ্রেক্ষিতেই যে কোনও মুহূর্তে এবারে এই নেতার পরিবারের সদস্যদের তলব করা হতে পারে বলেই সূত্র মারফত খবর।
রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে গ্রেফতার বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের দাপুটে নেতা শঙ্কর আঢ্য। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে এই দুর্নীতির তদন্তে। এবারে শঙ্কর আঢ্যর একাধিক সংস্থার হদিশ পাওয়া গিয়েছে, আর সেগুলো তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে খোলা হলেও তিনিই চালাতেন বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়স ইডির অনুমান, এই সংস্থাগুলোর মাধ্যমে রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হত। তাই এবারে তাঁর পরিবারের সদস্যদের তলব করা হতে পারে বলে খবর।
শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি পূর্ত দফতরের জমিতে জলাভূমি বুঝিয়ে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগও উঠছে বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৫ সাল নাগাদ পূর্ত দফতরের কাছ থেকে বনগাঁ পুরসভা কিছু উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ওই দীঘির এক পাশের অংশ অধিগ্রহণ করে। এরপর সেই জমির পাশের অংশে ২০১৬ সাল নাগাদ বেআইনি নির্মাণ শুরু হয়। অবৈধ ভাবে ইচ্ছামতী নদীর বালি তুলে চলতে থাকে নির্মাণ কাজ। এমনকি পিডব্লিউডি কর্মীরা জমি মাপতে আসলে তাঁদের শারীরিকভাবে নিগ্রহ অবধি করে তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যের অনুগামীরা। অভিযোগ উঠছে, চেয়ারম্যান থাকাকালীন বনগাঁ থানার বিপরীতে পুরসভার নামে বেআইনি হোটেল নির্মাণ করে ৯৯৯ বছরের লিজ নেন শঙ্কর আঢ্য। তবে নিজের নাম নয়, পরিবারের নামে, জানালেন স্থানীয়রা।
পুরসভার প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা দিয়ে এই নির্মাণ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর৷ অথচ বছরে এই হোটেলের নামমাত্র ভাড়া শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে। মাত্র ৫ হাজার টাকা ভাড়া দিতেন শঙ্কর আঢ্য। আর তাই শঙ্কর আঢ্য গ্রেফতার হতেই জলাভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে দাবিতে সোচ্চার বনগাঁর বাসিন্দারা। প্রশ্ন উঠছে ৯৯৯ বছরের লিজ নিয়েও।
রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে তদন্তে, ইডির হাতে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কাদের ছত্রছায়ায় এতো বাড়-বাড়ন্ত শঙ্কর আঢ্যের মতো নেতাদের? কোন প্রভাবশালীর প্রভাবে, এই একাধিক দুর্নীতিতে হাত পাকিয়েছিলেন শঙ্কর? শাসক সুপ্রিমোর মুখে কুলুপই বা কেন? উঠছে প্রশ্ন।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালিতে তদন্ত করতে গিয়ে ইডি অফিসারদের হামলার শিকার হতে হয়। বনগাঁতে ইডি আধিকারিকরা জখম না হলেও সেখানে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে। আর রাজ্যে এসব ঘটনার পরই সোমবার মধ্যরাতে কলকাতায় আসেন ইডির ডিরেক্টর রাহুল নবীন। মঙ্গলবার ইডি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে তাঁর। আর সেই বৈঠকের পরই এবার রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও রাজ্য পুলিসের ডিজিকে ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল বোস। সূত্র মারফত এমনটাই জানা যাচ্ছে। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যের কাছ থেকে রেশন দুর্নীতি মামলার বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও ডিজিকে আসতে বলেছেন রাজ্যপাল। এছাড়াও পরবর্তীতে অভিযানে গেলে কী কী করতে হবে, তা আধিকারিকদের বুঝিয়ে দিয়েছেন ইডি-র ডিরেক্টর রাহুল নবীন।
সন্দেশখালি ঘটনার থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও সতর্কতার সঙ্গে তৎপর হওয়ার নির্দেশ ইডি ডিরেক্টরের। সমস্ত দুর্নীতির তদন্ত গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন তিনি। গতকাল সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন ডিরেক্টর রাহুল নবীন। ইডি অফিসার ছাড়াও, মঙ্গলবার সিআরপিএফ, সিআইএসএফ আধিকারিকদের কাছে এই হামলা প্রসঙ্গে কী খবর রয়েছে, তাও জানতে চান ইডি ডিরেক্টর। এই ধরনের ঘটনার মোকাবিলা করার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, সেই বিষয়ে এনআইএ আধিকারিক ইনকাম ট্যাক্স আধিকারিকদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন ইডি ডিরেক্টর।
সন্দেশকালীর ঘটনায় শাহজাহানকে নিয়ে রাজ্য পুলিসের ভূমিকা অসন্তোষ প্রকাশ ইডি-এর। রাজ্য পুলিসের ডিজির কড়া বার্তার পরও যে ধারায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করেছে রাজ্য পুলিস, তাতে শাহজাহানকে আটকে রাখা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইডি অভ্যন্তরে। এত বড় ঘটনার পরে ও শাহজাহানের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করায় পুলিসের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। এই অবস্থায় গত শুক্রবারের ঘটনায় শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে পুলিস কঠোরও কোন ব্যবস্থা নিতে চাইছে না বলেই মনে করছে ইডি। তাই এই বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা।
এছাড়াও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ইডি কর্তার সঙ্গে বৈঠকের পর ফের ডিজি ও মুখ্য সচিব, ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব করেছেন। রাজভবন সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে সন্দেশখালি কাণ্ডের দিনই ডিজি, মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব করেন রাজ্যপাল। সে সঙ্গেই গোটা ঘটনায় একটি রিপোর্টও চেয়ে পাঠান। এবার ইডির ডিরেক্টর রাহুল নবীনের সঙ্গে বৈঠকের পর কার্যত অ্যাকশন রাজ্যপালের। রাজভবনে সূত্রের খবর, দ্রুত তাঁদেরকে দেখা করতে বলা হয়েছে রাজ ভবনের তরফে। অন্যদিকে মঙ্গলবারই রাজ্যের কাছে সন্দেশখালি ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতায় ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফে। এই বিষয়ে আজ নবান্ন কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার।
শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চার্জশিটে রয়েছে রাজ্যের আরও এক বিধায়ক পরেশ অধিকারীর নাম। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর এবার প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর নামে চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। একাদশ ও দ্বাদশ বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সরাসরি জড়িত প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। চার্জশিটে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে সিবিআই-এর তরফে।
শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শেষে সিবিআই-এর পেশ করা চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। জানা গিয়েছে, চারটি মামলাতেই তাঁর নাম রয়েছে। মূল অভিযুক্ত হিসেবে তাঁকেই চিহ্নিতকরণ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। আর এরই মাঝে রাজ্যের আরও এক বিধায়কের নাম এল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির চার্জশিটে। জানা গিয়েছে, একাদশ-দ্বাদশে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পরেশ অধিকারীর নামেও চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। তবে পরেশ অধিকারী ছাড়াও চার্জশিটে ১২ জনের নাম রয়েছে। চার্জশিটে নাম রয়েছে এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। নাম রয়েছে এসপি সিনহা ও তাঁর স্ত্রীর।চার্জশিটে নাম রয়েছে ওএমআর প্রস্তুতকারী সংস্থা নাইসার ৩ আধিকারিকের।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় মামলাকারী রাকেশ মণ্ডলের করা মামলার ভিত্তিতে বড় নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে সিবিআই মঙ্গলবার জানায়, নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষ ও তাপস মণ্ডলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এরপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন ছয় মাসের মধ্যে মামলার ট্রায়াল শেষ করতে হবে। তিনি জানতে চান নিম্ন আদালত কবে থেকে কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষ ও তাপস মণ্ডলের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করবে?
বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে সিবিআই জানায়, বুধবার থেকে চার্জ ফ্রেম করা হবে। এই তিনজন অভিযুক্তের পক্ষ থেকে আদালতে তাদের বক্তব্য জানালেও তার কাগজ আদালতে জমা পরেনি। ফলে এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন নতুন করে এই তিনজন আর কোনও বক্তব্য জানাতে পারবে না। তিনি সিবিআইকে নির্দেশ দেন আগে এই সংক্রান্ত যে আবেদনগুলি জমা পড়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতকে সেগুলির তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি করতে হবে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে এই তিনজনের বিরুদ্ধে। পার্থ সেন ও কৌশিক মাঝিকে চার্জশিট জমা দিয়ে চার্জ ফ্রেম করে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে মামলাগুলির নিষ্পত্তি করতে হবে বলে সিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টে মামলা করেন চাকরিপ্রার্থী রাকেশ মণ্ডল। ২০১৪ সালের টেটের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৬ সালে। মামলাকারীর আইনজীবী দিবেন্দু চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন কোনও অতিরিক্ত মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।নিয়োগ মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। ২১শে ডিসেম্বর সিবিআই রিপোর্ট জমা দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। মুখ বন্ধ খামে জমা দেওয়া রিপোর্ট খতিয়ে দেখলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।সিবিআইয়ের পক্ষে জহিরউদ্দিন শেখ, টাইগার হোসেন, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় , তাপস কুমার মণ্ডল, নীলাদ্রি ঘোষ ও কুন্তল ঘোষের নামে নিম্ন আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে ১৪ই ডিসেম্বর। তবে এখনও পর্যন্ত চার্জ ফ্রেম করা হয়নি নিম্ন আদালতে বলেই এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে জানায় সিবিআই। বিচারপতিকে সিবিআই এও জানায় যে মেধা তালিকা প্রকাশ হয়েছিল তাতে প্রভাব খাটিয়েছিল তাপস কুমার মণ্ডল। এস বসু রায় কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজোশ করে এই দুর্নীতি করা হয়েছিল বলেই অভিযোগ করেছে সিবিআই।
এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে ঠিক কি জানিয়েছিল? সমস্ত কিছু শোনার পর নিম্ন আদালতকে এই মামলা দ্রুত শেষ করার জন্য কড়া নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে ইডির হাতে গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে, বালু গরিব কৃষকদের থেকে ধান কেনাবেচার চুক্তি করতেন। এবারে তাঁর বিরুদ্ধে আরও এক বিস্ফোরক দাবি করল ইডি। ইডি সূত্রে খবর, ধান কেনাবেচার সময় কমিশনও নিতেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। এই কমিশন রাইস মিলারের মালিকদের থেকে নিতেন তিনি। কত পরিমাণে কাটমানি নিতেন মন্ত্রী, সে বিষয়েও জানিয়েছে ইডি।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। এই দুর্নীতির তদন্তে প্রায় নিত্যদিনই প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অরণ্য ভবনে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছিল। জানা গিয়েছে, বন দফতরে বসে কৃষকদের সঙ্গে ধান কেনার চুক্তি করেছিলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কৃষকদের থেকে সরাসরি ধান কেনার প্রায় ১০০টি চুক্তিপত্রও পাওয়া গিয়েছিল। আর এবারে জানা গেল, ধান কেনাবেচায় মন্ত্রী বালু নিজে কমিশন নিতেন। প্রতি কুইন্টালে ২০ টাকা কমিশন নিতেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সমস্ত রাইস মিল মালিকদের এই কমিশন দিতে হত। এমনই বিস্ফোরক দাবি ইডির।
নিয়োগ দুর্নীতির চারটি মামলার তদন্ত শেষে চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। সোমবার নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি'র মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করা হয়েছে আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে। আর এই চারটি মামলাতেই নাম জড়াল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তবে চার্জশিট জমা পড়লেও এখনও সেই চার্জশিট নিয়ে শুনানি বা কোনও নির্দেশ হয়নি আদালতে। ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিপোর্ট দেওয়ার আগে এই চারটি মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই।
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, জানুয়ারির নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষ করে সোমবার চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে এক সঙ্গে চারটি মামলায় চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। আগামী সপ্তাহে প্রাথমিক মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ হতে পারে বলেই খবর। সোমবার নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডিতে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে চার্জশিট পেশ করছে সিবিআই। নবম-দশম মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ৭ জনের নাম রয়েছে বলে খবর। গ্রুপ-সি মামলার চার্জশিটে রয়েছে শিক্ষাদফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নাম। এছাড়াও চার্জশিটে রয়েছে একাধিক এজেন্টের নাম। রয়েছে একাধিক ব্যক্তির বয়ানও।