নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ফের সরব কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Ganguly)। এই দুর্নীতি কাণ্ডে (Recruitment Scam) ইডির হাতে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলকে (TMC Leader) আড়াল করছে কিছু দালাল। সোমবার এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে (ED) ১৮৯ জনের নাম আদালতে জমা করতে নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কুন্তলের বাড়িতে ১৮৯ জন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছে। এই বিষয়ে পর্ষদ এদিন আদালতকে জানায়, তৃতীয় ব্যক্তির কাছে ওএমআর শিট পাওয়া গেলে পর্ষদ কী করবে? পরীক্ষার্থী দ্বিতীয় কপি নিয়ে চলে গিয়েছে কারও বাড়িতে। এখানে পর্ষদ কী করবে? ১৮৯ প্রার্থীর নাম পাওয়া গিয়েছে।
পর্ষদের আইনজীবী জানান, 'তারা নিরুপায়, বিস্মিত, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এত চেষ্টা করার পরেও এই ধরনের জঘন্য ঘটনা ঘটেছে।' এরপরেই বিচারপতির মন্তব্য, 'কিছু দালাল এখনও চাকরি বিক্রির চেষ্টা করছে। আর কিছু দালাল তাদের আড়াল করছে।'
মৌখিকভাবে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, 'আমি ওই ১৮৯ জনের নাম আর রোল নম্বর জানতে চাই। ইডির কাছে এই তথ্য আমি চাই।'এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২০২২-র টেট পরীক্ষার ১৮৯ জনের ওএমআর শিট কীভাবে কুন্তলের বাড়িতে গেল, জানাতে ইডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের এডমিট কার্ডের বিস্তারিত দিতে হবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। দুর্নীতি প্রমাণিত হলে সেই ১৮৯ জনের সব সরকারি চাকরি থেকে আবেদন বন্ধ করবে আদালত। এমনটাই সূত্রের খবর।
এমনকি পোর্ট ব্লেয়ারে নির্বাসন দেওয়া হবে, আলাদা জমি দেব চাষ করে খাবে। এত সাহস কী করে হয়, প্রত্যেককে জেলে পাঠানো হবে। এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
শুক্রবার মেডিক্যাল টেস্টের পর সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার মুখে বিস্ফোরক যুব তৃণমূল (TMC Leader) নেতা শান্তনু ঘোষ। তাঁর দাবি, 'নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে গোপাল দলপতি সবচেয়ে বেশি টাকা নিয়েছেন। তিনি এই দুর্নীতি-কাণ্ডের (Recruitment Scam) সবটা জানেন। তাপস কুমার মণ্ডল এবং নীলাদ্রি ঘোষও কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন।' ইডি (ED) সূত্রে খবর, এই তিন জন নিয়োগ-কাণ্ডে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এদিকে, শুক্রবার হুগলি বলাগড়ের যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। এই যুব তৃণমূল নেতাকে একদফায় জেরার পর চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে ইডি। এমনকি, শান্তনুর বাড়িতে কেন্দ্রীয় সংস্থা অভিযান চালালে ৩০০ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা উদ্ধার হয়েছে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি তাপস কুমার মণ্ডল কেন কুন্তল ঘোষকে ১৯ কোটি টাকা দিয়েছিল, প্রশ্ন করেন ইডি কর্তারা। তখন তাপসবাবু জানান, 'আমি দিতে চাইনি। কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্যারান্টার হিসেবে নিয়ে এসে বলেন একে বিশ্বাস করে টাকা দিন। এই ব্যক্তি তৃণমূলের যুবনেতা। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছিলেন আপনি টাকা দিন আমি চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।'
জানা গিয়েছে, তারপরেই নামের তালিকা-সহ টাকা চলে যায় কুন্তল ঘোষের কাছে। সেই নামের তালিকা ইতিমধ্যে ইডির হাতে এসে পৌঁছেছে। এমনকি কুন্তল ঘোষের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করতেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই তদন্তে জানতে পেরেছে ইডি। শান্তনুর একাধিক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাই শুক্রবার তাঁকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি-সহ ইডি দফতরের হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ইডির (ED) তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃত যুব তৃণমূল নেতা (TMC Leader) কুন্তল ঘোষের ডায়রিতে একাধিক সাংকেতিক ওয়ার্ড লেখা। ডায়রি কারও হাতে পড়লেও কোন তথ্য যাতে ফাঁস না হয়, তার জন্য সাংকেতিক ভাষায় লেখা। এমনটাই মনে করছেন ইডি গোয়েন্দারা। এই সাংকেতিক ভাষায় লেখা, মোট কত টাকা তোলা হয়েছে, এমনটাই প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করছে ইডি। এদিকে, হেফাজতে থাকা কুন্তলকে (Kuntal Ghosh) সোমবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে ইডি দফতরে আনা হয়েছে, চলছে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ।
পাশাপাশি সোমবারও তাঁর গ্রেফতারিতে তাপস মণ্ডলের চক্রান্ত দেখছেন কুন্তল ঘোষ। মেডিক্যাল টেস্টের জন্য যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যুব তৃণমূল নেতা বলেন, 'আগেও বলেছি, এখনও বলছি তাপস মণ্ডলের চক্রান্ত।' এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ইডি সূত্রে খবর যেদিন গ্রেফতার হয়েছেন কুন্তল ঘোষ, সেদিনই তাঁকে ডায়রি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। তাই গ্রেফতারের পর হেফাজতে নিয়ে ফের তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। কিন্তু এখনও ডায়রি প্রশ্নে কোনও সদুত্তর পায়নি কেন্দ্রীয় সংস্থা।
অপরদিকে, সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুর পর সতর্ক ইডি। কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে কুন্তলকে। জেরার সময় হচ্ছে ভিডিওগ্রাফি। তাঁর গতিবিধি রাখা হয়েছে সিসিটিভি নজরদারিতে। এমনকি শৌচাগারে গেলেও, চলছে বাইরে থেকে নজরদারি।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে এবার ইডির হাতে গ্রেফতার যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ (TMC Leader Kuntal Ghosh)। গত ২৪ ঘণ্টা তাঁর নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (ED)। এরপর তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এমনটাই ইডি সূত্রে খবর। তল্লাশিতে বিএড কলেজের (B.ED College) বেশ কিছু নথি, জমির দলিল, আয়-ব্যায়ের হিসেব সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে।
পাশাপাশি শিক্ষা দফতরের বেশ কিছু নথিও উদ্ধার হয়েছে। যদিও এদিন গ্রেফতারির পর কুন্তল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, 'এটা তাপস মণ্ডলের ষড়যন্ত্র। আমার থেকে ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল, আমি দিইনি। ঘুষ দিইনি বলে আমার এই হাল।'
জানা গিয়েছে, কুন্তল চাকরি দেওয়ার জন্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নিয়ে রিসিভ দিতেন। হাতে লেখা রিসিভ, সেই রিসিভ দেখিয়ে ইডি আধিকারিকরা কুন্তলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু সদুত্তর দিতে না পারায় তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কুন্তল ঘোষকে মেডিক্যাল পরীক্ষার পর ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হতে পারে। ইডি সূত্রে খবর এযাবৎকাল তদন্তে জানা গিয়েছে, কুন্তলের হয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলার জন্য একটা টিম কাজ করতো। যারা কুন্তলের সহযোগী। রাজ্যজুড়েই সেই র্যাকেট টাকা তোলার কাজ করেছে। এমনকি অ্যাকাউন্টে টাকা নেওয়া হয়েছে। যারা চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তুলে দিতেন তাদের কমিশন দিতেন কুন্তল।
বিধান নগর মেডিক্যাল কলেজে কুন্তলকে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তৃণমূলের এই যুব নেতাকে আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি তৃণমূল যুবনেতা।
বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সংজ্ঞা কী? সোমবার কোর্টে সিবিআইয়ের (CBI) উদ্দেশে প্রশ্ন করেন নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (SSC SCam) জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। এদিন প্রাক্তন মন্ত্রীর আইনজীবী জানান, 'সিবিআই শুধু দুটি কথা জানে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র আর প্রভাবশালী ব্যক্তি। এই দুটো তথ্যের বাইরে নতুন কিছু কোর্টকে দিতে পারবে কেন্দ্রীয় সংস্থা? বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সংজ্ঞা কী, কীভাবে কার সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছেন আমার মক্কেল, সেটা জানাক সিবিআই।' দাবি করা আর কেস ডায়রিতে দুটো কথা লিখে একজনকে জেলবন্দি করে রাখার জন্য পর্যাপ্ত নয়। এদিন সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। এদিকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলেই (Jail Custody) থাকতে হবে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিন জামিন মামলার শুনানিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীর সওয়াল, 'দিনের পর দিন একই কথা সিবিআই বলে চলেছে। শুধু হেফাজতে রাখতে হবে, তাই ওরা হেফাজত চাইছে। পার্থবাবুও প্রশ্ন করেন বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে আমার অবস্থান কোথায়? প্রতিদিন একই কথা শুনছি। আমি তো জেলে আছি।' এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় সংস্থা। এদিন সংবাদ মাধ্যমের সামনে দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী।
মন্ত্রীর আইনজীবীর দাবি, 'এদিন সিবিআইয়ের কাছে মাননীয় বিচারক প্রশ্ন করেছেন, যারা ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন তাঁদের গ্রেফতার কেন করছেন না? বৃত্তটা কীভাবে সম্পূর্ণ করবেন? যদিও এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় সংস্থা।' জানা গিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত ৭ জনকেই ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে সোমবার ফের পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) আদালতে হাজির করা হয়েছে। এদিন পুলিসের গাড়ি থেকে নেমে কোর্টে (Court) ঢোকার মুখে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের প্রতি আত্মবিশ্বাস প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গলায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ডিসেম্বর হুমকি নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, তৃণমূলের (TMC) কেউ কোনওদিন ক্ষতি করতে পারবে না।' সপাট এই মন্তব্য করেই আদালতে ঢুকে যান রাজ্যের শাসক দলের একদা সেকেন্ড ইন কমান্ড। জানা গিয়েছে, সোমবার ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষ পার্থ-সহ মোট সাতজনকে নিয়োগ-দুর্নীতি কাণ্ডে পেশ করা হয় আলিপুর আদালতে। এই সাতজনের মধ্যে রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (SSC Case) গ্রেফতার হওয়া দুই মিডলম্যানও।
এদিকে, সপ্তাহ দুয়েক আগে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি আদালতে দাবি করেছে 'বিভিন্ন প্রাইভেট ল’ কলেজ ও বি-ফার্ম কলেজ খোলার ক্ষেত্রে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট অর্থের বিনিময়ে প্রদান করা হয়েছে। আর্থিক দিক থেকে লাভবান হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।'
এবার আমি ঢাকি শুদ্ধ বিসর্জন দিয়ে দেবো। ২০১৬-র প্রাথমিক নিয়োগে (Primary Recruitment) ফের দুর্নীতির গন্ধ পেয়ে হুঁশিয়ারি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly)। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কম নম্বর পাওয়া প্রশিক্ষিতরা চাকরি পেয়েছেন। এই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ ১৩৯ জন চাকরিপ্রার্থী। দাবি, 'যারা চাকরি করছেন, তাঁদের থেকে অপ্রশিক্ষিত মামলাকারীদের নম্বর বেশি।' এই অভিযোগ শুনেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, 'মামলাকারীদের তাঁদের দাবির প্রেক্ষিতে এক সপ্তাহের মধ্যে অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিতে হবে। জানাতে হবে তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কবে অংশ নিয়েছেন, টেটে তাঁরা কত নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা যেহেতু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়, সেজন্য আদালত এখন এ নিয়ে কোনও নির্দেশ দিচ্ছে না। ১৬ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।'
মঙ্গলবার আদালতে মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীরা দাবি করেন, 'এখনও পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি নন ট্রেইনড প্রাথমিকে ২০১৬-তে চাকরি পেয়েছেন। মোট ৪২ হাজার নিয়োগ হয়েছিল। ৮২৪ জনের এমন নথি আছে, যারা ১০ থেকে ৩০ পেয়ে চাকরি করছেন।' এই সওয়াল শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতির পর্ষদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি,'২০১৬-র গোটা নিয়োগ যদি বাতিল করে দি তখন বুঝতে পারবেন। মানিক ভট্টাচার্যের নির্দেশে এই বেনিয়ম হয়েছে।'
জানা গিয়েছে, ২০১৪-র পরীক্ষা আর ২০১৬-র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ তুলে ১৩৯ জন চাকরিপ্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ। পরবর্তী শুনানিতে প্রত্যেক পক্ষ তাঁদের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানাবে। তারপর অবস্থান স্পষ্ট করবে আদালত। এদিন জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
গ্রুপ ডি নিয়োগে (Group D) ফের প্রকাশ্যে বড়সড় দুর্নীতি (Recruitment Corruption)। সাদা ওএমআর শিট (OMR Sheet) জমা দিয়েও নম্বর বেড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর তালিকাভুক্ত একজনের নম্বর ৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩, অপর একজনের নম্বর ২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৩। একজনের নম্বর আবার শূন্য থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৩। ২৮২৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০০ জনের ওএমআর শিট নিয়ে বসতে হবে বৈঠকে। মঙ্গলবার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Ganguly)।
গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় লক্ষী টুঙ্গার করা মামলায় আগামী ১৪ই ডিসেম্বর স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে বৈঠক করবেন সিবিআই, মামলাকারীর আইনজীবী এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রতিনিধি।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের বাজেয়াপ্ত করা হার্ডডিস্ক এবং ওএমআর শিট খতিয়ে দেখা হবে। তারপরে আগামী ২১ ডিসেম্বর প্রাথমিক রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দেবে। এমনটাই সিবিআইকে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
এদিকে, নবম-দশম অবৈধ নিয়োগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪০ জনের ওএমআর শিট আপলোড করার নির্দেশ হাইকোর্টের। যাদের নম্বর ০ থেকে ৫২ বা তার বেশি করা হয়েছে, সেই বিকৃত ওএমআর শিটগুলোই আপলোড করা নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিনই ওএমআর শিট সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে রিপোর্ট পেশ সিবিআইয়ের।
হাইকোর্টের নির্দেশ, '৪০ জনের ওএমআর শিট আপলোড করা হবে এবং তাঁরা মামলায় অন্তর্ভুক্ত হতে চাইলে অবশ্যই হতে পারবেন ১৬-ই ডিসেম্বরের মধ্যে।' জানা গিয়েছে, ১৮৩ জনের পর নবম-দশমে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া আরও ৪০ জনের হদিশ মিলেছে। সূত্রের খবর, ওএমআর শিট কারচুপি করেই ৪০ জনকে চাকরির সুপারিশ করেছিল এসএসসি।
নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় আদালতে হাজিরা দিলেন সিবিআই (CBI) সিটের নবনিযুক্ত প্রধান অশ্বিন শেনভি। গ্রুপ-ডি-র (Group D) দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় তাঁকে উপস্থিত থাকতে বলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এদিন সিট (CBI SIT) প্রধান উপস্থিত হলে, বিচারপতি তাঁকে বলেন, 'যা সাহায্য লাগবে আদালতে (Calcutta High Court) এসে জানাবেন, আদালত সবরকম সাহায্য করবে। এই দুর্নীতির শেষ দেখা দরকার। যারা এই দুর্নীতিতে যুক্ত তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।' পাল্টা সিবিআই কর্তা জানান, এখনও পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার পদে দুর্নীতি হয়েছে। তার মধ্যে ৯ হাজার ওএমআর শিট বিকৃত হয়েছে।
তিনি আদালতকে জানান, 'মূল প্যানেল থেকে ওয়েটিং লিস্ট, সর্বত্র দুর্নীতি হয়েছে।' বিচারপতি বলেন, 'যে যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে তারা শুধু ফলাফলের আশায় বসে আছেন। তারা জানতে চায় না সিবিআই কী করল, স্কুল সার্ভিস কমিশন কী করল? তারা চায় নিয়োগপত্র। এই দুর্নীতির তদন্ত, বিচার অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। এবার তদন্ত- বিচার তার লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।'
'জল থেকে কাদা সরিয়ে জলটাকে স্বচ্ছ করুন,' কমিশনকে উদ্দেশ করে মন্তব্য বিচারপতির।
অরণ্যদেব গাঙ্গুলি বলবেন আমার দল তুলে দিতে হবে, তাহলে আমি ওকে রসগোল্লা খাওয়াবো, দুটো হয় নাকি কখনও। শুক্রবার নাম না করে এভাবেই কি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Justice Abhijit Ganguly) বেনজির আক্রমণ করলেন তৃণমূল (TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ? এদিন তৃণমূলের মুখপাত্র (Kunal Ghosh) বলেন, 'আমি দলের একজন সামান্য মুখপাত্র। যদি আমার দল তুলে কেউ বলে, জানি না কে বলেছে। সবাই বলছে কেউ বলেছে, কেউ বলেছে, কেউ বলেছে। জানি না কে বলেছে, কেউ আর নাম বলে না। আমি ধরে নিচ্ছি অরণ্যদেব গাঙ্গুলি। অরণ্যদেব গাঙ্গুলি বলবেন আমার দল তুলে দিতে হবে, তাহলে আমি ওকে রসগোল্লা খাওয়াবো, দুটো হয় নাকি কখনও। কোর্টের উপর, সব বিচারকের উপর আস্থা আছে। কোর্ট আমাদের ভরসা, এরম নয় শুধু কেউ একজন পর্যবেক্ষণ মিডিয়ায় ভাসিয়ে দিয়ে হিরো সাজার চেষ্টা করছেন। কাউকে আমি ব্যক্তিগত আক্রমণ করছি না।'
এখানেই থামেননি কুণাল ঘোষ, তিনি আরও একধাপ এগিয়ে জানান, কেউ কেউ নাকি আকারে ইঙ্গিতে মুখপাত্র মুখপাত্র বলেন। তাহলে আমরাও বলছি বিচারব্যবস্থাকে সম্মান করি, কিন্তু অরণ্যদেব গাঙ্গুলি বলে কেউ যদি আমাদের দল তুলে কথা বলে, তাঁকে রসগোল্লা খাওয়াবো না। যা পারে করে নিক।
কারও নাম না করেই পরোক্ষে কুণাল ঘোষ আরও বলেন, 'যদি কেউ ব্যক্তিগত উইশলিস্ট চরিতার্থ করতে গিয়ে তাঁর চেয়ারের অপব্যবহার করে, তাহলে সেটা চূড়ান্ত দুর্ভাগ্যজনক। একা কেউ করছেন না, গোটা বিচারব্যবস্থা, সব বিচারক, তাঁরা দিনরাত মানুষকে ন্যায়-বিচার দিচ্ছেন। কিন্তু যদি কেউ দেখাতে চান, আর কেউ বিচার করছে না, আর কোনও কোর্ট নেই, তিনি মঙ্গলগ্রহ থেকে এসে অরণ্যদেব সাজছেন, এটা ঠিক হচ্ছে না। এটা কী ভাষা! আমি দল তুলে দিতে বলবো, মামারবাড়ি নাকি এটা?'
তাঁর দাবি, 'এই ভাষাগুলো শুনলে বোঝা যাবে যিনি বলছেন, তাঁর ভিতরটা কোন রাজনৈতিক রঙে রাঙানো। আমরা আদালতকে সম্মান করি, প্রত্যেক বিচারক-বিচারপতির প্রতি পূর্ণ সম্মান রয়েছে। কিন্তু আদালত যেটা ঠিক সেটার বিচার করবে, যেটা ভুল, সেই ভুল বলে দেবেন, অর্ডার দেবেন। তাঁরা তাঁদের নির্দেশ জানিয়ে দেবেন। তার বদলে যদি কোথাও কোথাও দেখা যায় যে কেউ কেউ উইশ লিস্ট পর্যবেক্ষণ-সংলাপের আকারে সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে ছড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাহলে সেটা চরম দুর্ভাগ্যজনক। কোনও ব্যতিক্রম একজন যদি দেখাতে চান তিনি অরণ্যদেব হতে চাইছেন, তাহলে সেটা বিচারব্যবস্থার প্রতি চূড়ান্ত দুর্ভাগ্যজনক।'
এখন প্রশ্ন উঠছে কুণালে মন্তব্যে উঠে আসা 'বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা' এবং 'অরণ্যদেব গাঙ্গুলি' কি হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যদি কোনও নির্দিষ্ট কোর্ট বা বিচারপতির নাম এদিন একবারের জন্যও উল্লেখ করেননি তৃণমূল মুখপাত্র। কিন্তু শুক্রবার বেনামী আবেদনপত্র মামলার শুনানিতে শিক্ষা সচিবের এজলাসে উপস্থিতির মধ্যেই হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, 'বিধানসভার দলনেতা হন মুখ্যমন্ত্রী, আর লোকসভায় দলনেতা প্রধানমন্ত্রী। আমি ইলেকশন কমিশনকে বলব তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য, দল হিসাবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায় না।'
তারপরেই নাম না করে তৃণমূলের মুখপাত্রর মুখে 'অরণ্যদেব গাঙ্গুলি বলবেন আমার দল তুলে দিতে হবে, তাহলে আমি ওকে রসগোল্লা খাওয়াবো, দুটো হয় নাকি কখনও' মন্তব্য ঘিরে চর্চা রাজ্য রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠছে কে এই অরণ্যদেব গাঙ্গুলি? কুণাল ঘোষ কি ঘুরিয়ে পরোক্ষে বেনজির আক্রমণ করে বসলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারব্যবস্থাকে?
তবে কুণাল ঘোষের এই মন্তব্যকে সমালোচনার সুরে বিঁধেছেন আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি বলেছেন, 'মানুষ কাদের বলে, যার মান আর হুঁশ দুটি আছে। কুণাল ঘোষের কোনওটাই নেই। একটা মানুষের পরিচয় হয় শিক্ষা এবং সংস্কৃতি দিয়ে। শিক্ষার প্রসঙ্গে এলে কুণালবাবু বোধহয় মাধ্যমিক পাশ। তবে পাশ না ফেল জানি না, ক্লাস টেন লেখা এফিডেভিটে। উনার সংস্কৃতি নিয়ে বললে সারদায় জেল খাটা আসামি, বাংলার পুলিস তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এই ধরনের মানুষের থেকে কী মন্তব্য আশা করেন? কুণালবাবুর বোঝা উচিৎ কোথায় থামতে হবে। আমার মনে হয় কোর্ট এই বিষয়গুলো নোটিশে নিয়ে আদালত অবমাননার জন্য উনি জেলে যাবেন।'
আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানান, 'কুণাল ঘোষকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিৎ এবং আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে কোর্টে তোলা উচিৎ। কোন সাহসে উনি এ কথা বলছেন! কুণাল ঘোষ বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করতে বিচারপতিকে হুমকি দিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই কাজ করেছেন।' অপর এক আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী জানান, এই বিচার প্রক্রিয়ার জন্য কুণাল ঘোষ বাইরে আছেন। উনি যে দল করেন সেই দল, সারাজীবন ওকে জেলে রাখতে চেয়েছিল।'
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'আশা করবো এসব মুখপাত্রদের বিরুদ্ধে আইনের মধ্যে থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নেবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যাতে অন্য কেউ সরকারি কাজে বা নিয়োগে হস্তক্ষেপ করার আগে পাঁচবার ভাববেন।' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, 'বিচারপতির পর্যবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনও দল সরকারের নামে সংবিধান-বিরোধী কাজ করে, তাহলে সেই দলের সাংবিধানিক ভিত্তি, এমনকি প্রতীক প্রশ্নের মুখে পড়ে।'
সুপার নিউমারিক পোস্ট তৈরি করে শূন্যপদে নিয়োগ (SSC Recruitment) সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টে (Calcutta high Court) অস্বস্তিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি। কমিশনের (SSC) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। রাজ্যকে স্কুল সার্ভিস কমিশন ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দেন বিচারপতি (justice Basu)। এদিন শুনানিতে বিচারপতির মন্তব্য, বেআইনি ভাবে নিযুক্তদের বরদাস্ত নয়। এঁদের অন্য কোনও চাকরি দিন কিন্তু এরা শিক্ষক হলে ছাত্রদের ক্ষতি হবে। এরা শিক্ষক হতে পারেন না। রাজ্যের ক্ষতি নয় ছাত্রদের জীবনের ক্ষতি হবে যদি এরা শিক্ষক হন।'
বৃহস্পতিবার শুনানির সময় সুপার নিউমেরিক পদ তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্যের উলটো অবস্থান ছিল কমিশনের। তখনই বিচারপতির মন্তব্য, 'কমিশনকে নিয়ন্ত্রন না করতে পারলে ভেঙে দিন।' শিক্ষক নিয়োগ-কাণ্ডে গ্রুপ সি এবং ডি, নবম-দ্বাদশ যাদের চাকরি চলে গিয়েছে, তাঁদের পুনর্বহাল চেয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় স্কুল সার্ভিস কমিশন।
আবেদনে এসএসসি জানায়, যাদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের পুনর্বহাল করেও নতুন নিয়োগ করবে। সুপার নিউমারিক পোস্টে শূন্য পদ তার জন্য তৈরি করা হচ্ছে। রাজ্যের কাছে সেই আবেদন পত্র পাঠায় স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু এই সুপার নিউমেরিক পদ তৈরির সিদ্ধান্ত রাজ্যের নয়। আদালতকে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। রাজ্য জানায় আদালতের নির্দেশ হলে চাকরি হবে।
এতেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি বসু জানান, 'কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের ভিন্ন সুর। তবে কমিশন ভেঙে দিতে পারে রাজ্য। কমিশনকে কি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে রাজ্যে?'
এসএসসি জানায় এই আবেদনের কারণ, যারা কাজ করছেন, তাঁদের তিন বছর হয়ে গিয়েছে, পরিবার রয়েছে। সে কথা ভেবেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি। বুধবার কমিশনের সঙ্গে মৌখিক কথা হয়েছে, চেয়ারম্যান জানিয়েছেন এই আবেদনের এই অংশ প্রত্যাহারের কথা ভাবা হচ্ছে।
পাশাপাশি রাজ্য জানায়, কমিশন স্বতন্ত্র সংস্থা, তাই তাদের নিয়োগের সঙ্গে রাজ্য সরকারের অন্য চাকরির সঙ্গে পরিবর্তন করা যায় না। ইন্টারভিউয়ের অন্তত ১৫ দিন আগে শূন্যপদের সংখ্যা জানাতে হয়।
নিয়োগ-কাণ্ডে (Recruitment Scam) ২৬৯ শূন্যপদে নিয়োগ সংক্রান্ত দায়ের মামলা কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ফেরাল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly) এজলাসেই হবে এই মামলার শুনানি। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সকাল সাড়ে ১১টা শুনবেন এই মামলা। ইতিমধ্যে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, প্রয়োজনে শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগ করতে হবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) গিয়েছিল রাজ্য। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই নির্দেশ যেহেতু কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে, তাই এই মামলার নিষ্পত্তি কলকাতা হাইকোর্ট করবে। এভাবেই ২৬৯ শূন্যপদে নিয়োগ মামলা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে ফেরায় সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার সকাল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাকারীর আইনজীবী জানান, সুপিরম কোর্ট থেকে কলকাতা হাইকোর্টের এজলাসে পাঠানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হোক শুনানির জন্য। এরপরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, 'পর্ষদ বন্ধুর মতো আচরণ করছে না। আমি বলেছিলাম নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মাথা ঘামাবো না। কিন্তু আমি আমার নির্দেশের পরিবর্তন করে বলছি আইন অনুযায়ী নিয়োগ না হলে, আমি এবার নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেবো।'
কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ফের পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাই তিনি কার্যত বাধ্য হয়েই তিনি নিজের অবস্থান বদলাতে পারেন। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হাইকোর্টের এই বিচারপতি। এখন অপেক্ষা বৃহস্পতিবার সকালে এই মামলা শুনানির জন্য উঠলে কী অবস্থান নেয় প্রাইমারি বোর্ড।
এসএসসি নিয়োগ (SSC Scam) দুর্নীতিতে সিবিআই (CBI) চার্জশিটে নাম নেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। তবে এই দুর্নীতি-কাণ্ডের তদন্তে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কেন্দ্রীয় সংস্থা এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে তুলে ধরেছে। এমনটাই সিবিআইয়ের একটি সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, এই চার্জশিটে নাম রয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের মিডলম্যান প্রসন্ন রায় ও প্রদীপ সিংয়ের নামও রয়েছে।
এই চার্জশিটে নাম রয়েছে মোট ১২ জনের। নাম রয়েছে এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটির শান্তিপ্রসাদ সিনহা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়েরও। এমনটাই সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। চার্জশিটে সিবিআই উল্লেখ করেছে, করোনাকালে লকডাউন চলাকালীন এসএসসি অফিস ফাঁকা ছিল। সেই সুযোগে বেলাগাম দুর্নীতি ও বেনিয়াম করেছেন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। এমন নিজের অপরাধ ঢাকতে একাধিক পন্থাও অবলম্বন করেছেন তিনি।
ইতিমধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গত ২৩ জুলাই তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তারপর একাধিকবার জামিনের আবেদন করলেও নাকচ হয়েছে সেই আবেদন। অন্যদিকে গ্রেফতারির আগে সুবীরেশ ভট্টাচার্য সংবাদ মাধ্যমের সামনে দাবি করেছিলেন, তাঁর আমলে কোনও দুর্নীতি হয়নি। কিন্তু সিবিআই চার্জশিটে তাঁর নাম থাকায় আগামি দিনে আরও বিপাকে পড়তে পারেন জেলবন্দি এই শিক্ষাকর্তা। এমনটাই মনে করছেন শিক্ষাবিদরা।
বাড়িতেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী (suicide) কোলাঘাটের এক শিক্ষক। চোর অপবাদ, না চাকরি (job) চলে যাওয়ার আতঙ্কে এই এই পথ বেছে নেওয়া? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে পরিবারে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে পুলিস (police)। কোলাঘাট (Kolaghat) থানার দেঁড়িয়াচ গ্রামে এই ঘটনায় শোকের ছায়া।
জানা গিয়েছে, মৃত শিক্ষকের নাম বাপ্পা বর্মণ। তিনি কাঁথির ভবানীচক অঘরচাঁদ হাইস্কুলের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক ছিলেন। মঙ্গলবার সাতসকালই বাড়িতে কেউ না থাকায় পাশের টালির চালের ঘরে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।প্রাথমিক তদন্তে এমনটা জানতে পেরেছে পুলিস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চোর অপবাদ থেকে বাঁচতে কিংবা চাকরি যাওয়ার ভয়, যেকোনও একটি বিষয়ে এই আত্মহত্যা হতে পারে।
কিন্তু কেন এই প্রসঙ্গ। জানা গিয়েছে, তাঁর ফোনে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা তিনি ভুয়ো-শিক্ষক। তাঁর তিন বছরের শিক্ষকতার চাকরি চলে যাওয়ার ভয়েই হয়তো এই আত্মহত্যা। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন রকম মানুষ তাঁকে চোর অপবাদ দিয়েছে। এর জেরেও এই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হতে পারেন তিনি। তবে আদতে কী বিষয়ের উপর তাঁর এই সিদ্ধান্ত, তার উত্তর মিলবে না। মৃতের স্ত্রীয়ের দাবি, তাঁর স্বামীর ফোন কেউ বা কারা হ্যাক করে এই ম্যাসেজ ছড়িয়েছে। ওই একই ম্যাসেজ শিক্ষক বাপ্পা বর্মণ-সহ তাঁর গ্রামে একাধিক লোকের কাছে পৌঁছয়। এমনকি তাঁদের অত্মীয় পরিজনদের হোয়াটসঅ্যাপেও এই ম্যাসেজ ছড়িয়ে পড়ে।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) সিবিআইয়ের পর এবার প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikary) ভূমিকা খতিয়ে দেখছে ইডি। তাঁকে তলব করে নোটিশ পাঠায় ইডি (ED), সেই মোতাবেক সোমবার সকাল দশটা নাগাদ তিনি কেন্দ্রীয় সংস্থার কলকাতা অফিসে (CGO Complex) আসেন। এর আগে তিনবার সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সিবিআইয়ের পর এবার ইডির জিজ্ঞাসাবাদ প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে বিদ্ধ প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারির বিরুদ্ধে।
এই নিয়োগ-কাণ্ডে প্রাক্তন মন্ত্রীর ভূমিকা খতিয়ে দেখেছে সিবিআই। কোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে অঙ্কিতার। তাঁর শূন্যপদে চাকরি পেয়েছেন যোগ্য প্রার্থী ববিতা সরকার। মূলত ববিতার করা মামলার প্রেক্ষিতেই নিয়োগ-কাণ্ডে পরেশ অধিকারী এবং তাঁর মেয়ের ভূমিকা নজরে আসে। তবে শুধু চাকরি খোয়ানো নয়, এযাবৎকাল পাওয়া বেতন দুই কিস্তিতে ফেরত দিয়েছেন অঙ্কিতা।
পাশাপাশি নিয়োগ-কাণ্ডে তদন্তকারীদের জালে ছয় জন। যাদের মধ্যে এসএসসি প্রাক্তন চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা কমিটির সদস্য-সহ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রয়েছেন। সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে।