ডাক্তারি পরীক্ষায় রিজার্ভ পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ভুয়ো শংসাপত্র। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন দুর্নীতির আবহেই ডাক্তারি পরীক্ষায় এমবিবিএস-এর রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র জমা দিয়ে নিয়োগের অভিযোগে আদালতে মামলা রুজু হয়েছিল। এই ঘটনাতেই এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
প্রসঙ্গত, এর আগেও ১৪ জন চিকিৎসকের নিয়োগ বাতিল করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরে আবারও মিলেছে জাতিগত ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়ে নিয়োগের তথ্য প্রমাণ। আর তারপরেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।
এদিন এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতির মন্তব্য, রাজ্য বিষয়গুলিকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। শেখ শাহজাহানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বিচারপতির মন্তব্য, আপনারা শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পেরেছেন কি? আর তাই এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আমার রাজ্যের ওপর ভরসা নেই বলেই জানান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আর এরপরেই, কারা এই ভুয়ো শংসাপত্র ইস্যু করেছে, এর নেপথ্যে কোনও আর্থিক লেনদেন আছে কি না, তা অবিলম্বে সিবিআইকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এরই সঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এর উদ্দেশ্যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, সব তথ্য সিবিআই কে হস্তান্তর করতে হবে। এমনকি শেখ শাহজাহানকে পুলিসের গ্রেফতার করতে না পারা। কেন্দ্রীয় সংস্থার গায়ে হাত তোলার ঘটনা নিয়ে রাজ্যের ওপর যে তাঁর কোনও ভরসা নেই, তা বলেও ভর্ৎসনা জানান রাজ্যের প্রতি। সঙ্গে জানান, আর্থিক দুর্নীতি হলে সেটাও সামনে আসা প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, এর আগেও মেডিক্যাল নিট-এ ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে নিয়োগের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এডুকেশন বোর্ডের ডিরেক্টরকে ডেকে পাঠিয়ে বিচারপতির প্রশ্ন করেছিলেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন হতেই পারে, কিন্তু সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কেন তদন্ত করেনি বোর্ড? সেদিনই সব পক্ষের বর্ণনা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, আদালত মনে করলে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেবে। তাঁর সেই ইঙ্গিতেই বুধবার সিলমোহর দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এবার মেডিক্যাল নিট-এ ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে নিয়োগের ঘটনার তদন্তের দায়ভার উঠল সিবিআইয়ের হাতে।
যদিও সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশে এবার স্থগিতাদেশ দিলেন বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়ে সিবিআই আধিকারিককে এজলাসে ডেকে পাঠানোর পর, সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এদিনই বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। তাঁর অভিযোগ, সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁর কোনও কথাই শোনেনি। তারপরেই, সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও, যেহেতু রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশের কোনও অর্ডার কপি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে পেশ করতে পারেনি, তাই পূর্ব রায়মাফিক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইয়ের হাতে যাবতীয় নথি তুলে দিলেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায়। এরপর আদালতের রায় মামলা কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটাই দেখার।
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও জেলে। তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক নাম। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। তার মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পশ্চিমাঞ্চলের চেয়ারম্যান শেখ সিরাজউদ্দিনকে এসএসসি-র পদ থেকে স্মঅরীয়ে দিল রাজ্য সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। যার ভিত্তিতে সোমবারই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রাজ্যকে নির্দেশ দেন, যত দ্রুত সম্ভব সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার।
জানা গিয়েছে, শেখ সিরাজউদ্দিনের স্ত্রী জাসমিন খাতুন ২০১৯-এর মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে চাকরি পেয়েছিলেন। যেখানে থেকে ২০১১ সালে পরীক্ষা দেন। আর ২০১৫ সালে সেই প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। অভিযোগ, নিজের স্ত্রীকে চাকরি পাইয়ে দেন খোদ শেখ সিরাজউদ্দিন। ঘটনা সামনে আসতেই উঠে আসে একাধিক প্রশ্ন।
তবে বিকাশভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত কর্তাকে আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল পদ থেকে। তবে সোমবার হাইকোর্টে এই বিষয়ে কিছু জানাননি রাজ্যের আইনজীবী। আচার্য সদন থেকে জানানো হয়েছে, চিঠি পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির জাল গোটাতে সক্রিয় ইডি। এই আবহে এবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী রাজীব দে-কে তলব করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পাশাপাশি, পার্থ ঘনিষ্ঠ কলকাতা পুরসভার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থ সরকারকে-ও তলব করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁদের আসতে বলা হয়েছে বলে খবর।
ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ সরকারের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে সিবিআই। তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল পরিমাণ কালো টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়। এর মধ্যে প্রোমোটিং ব্যবসাও রয়েছে। সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই পার্থ ঘনিষ্ঠ এই দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি।
এর আগে রাজীব দে-র বাড়ি ও বীরভূমের গেস্ট হাউসে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। আর এবার ইডির স্ক্যানারে পার্থ ঘনিষ্ঠ রাজীব দে। নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল পরিমাণ কালো টাকা কোথায় রয়েছে এবং কোন কোন ব্যবসায় সেই টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছেন ইডির আধিকারিকরা।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পরতে পরতে রহস্য। সেই রহস্যের পর্দাফাঁস করতেই তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডির এই তৎপরতায় কি উঠে আসবে নিয়োগ দুর্নীতির মাথাদের নাম? সামনে আসবে কি এই দুর্নীতির কোনও নতুন যোগসূত্র?
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার ইডির স্ক্যানারে পার্থ ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন রায়। বৃহস্পতিবার প্রসন্ন রায়ের অফিস সহ ৭ জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালান ইডির আধিকারিকরা। এই অভিযানে বিপুল পরিমাণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি, বেশকিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইস-ও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রসন্ন রায়ের ৪৫০টিরও বেশি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে খবর।
জানা গিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর তাঁর একাধিক সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন প্রসন্ন রায়। এই আবহেই গতকাল একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। পাশাপাশি, প্রসন্ন রায়ের এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উৎস কী? কোন কোন ব্যবসায় তিনি বিনিয়োগ করেছেন? গোটা বিষয়টিই খতিয়ে দেখছেন ইডির আধিকারিকরা।
তবে শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় নন, এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদ সিনহার-ও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন প্রসন্ন রায়। সিবিআইয়ের দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শান্তিপ্রসাদ সিনহা এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে চাকরি পাইয়ে দিতেন প্রসন্ন রায়।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মিডলম্যানের ভূমিকা ছাড়াও আর কোন কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রসন্ন রায়? আগামী দিনে কি সামনে আসবে এই দুর্নীতির মাথাদের নাম? এরকম একাধিক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্যবাসীর মনে।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে পরিবহন ব্যবসায়ী প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ২০২৩-এর নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পান প্রসন্ন। জামিনের ৩ মাস পরেই ফের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির স্ক্যানারে এই প্রসন্ন রায়। বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে প্রসন্নর একাধিক ফ্ল্যাট ছাড়াও নিউটাউনের অফিস সহ মোট ৭ জায়গায় তল্লাশি অভিযানে তৎপর হয়েছেন ইডি আধিকারিকরা।
আসলে কে এই প্রসন্ন রায়? এই প্রসন্ন রায়ের উত্থানের গল্প সিনেমার চিত্রনাট্য থেকে কোনও অংশে কম নয়। রংমিস্ত্রি থেকে পরিবহন ব্যবসায়ী হওয়ার গল্প শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। জানা যায়, প্রথম জীবনে প্রসন্ন রায় ছিলেন একজন সাধারণ রং মিস্ত্রি। তারপর ঠিকাদার রং মিস্ত্রি হিসেবেও কাজ করতেন প্রসন্ন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে গাড়ির ব্যবসায় হাত লাগান তিনি। বিভিন্ন সরকারি অফিসে গাড়ি ভাড়া দিতেন। প্রসন্নর গাড়ি ভাড়া যেত এসএসসি দফতরেও। জানা গিয়েছে, এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তি প্রসাদ সিনহার কাছেও যেত প্রসন্নর গাড়ি। সেই সূত্র ধরেই শান্তি প্রসাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে প্রসন্নর। অন্যদিকে আবার এই প্রসন্ন রায়ের স্ত্রী, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-এর আত্মীয়। এই ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়েই চাকরি বিক্রির মিডলম্যান হিসেবে শান্তিপ্রসাদ সিনহার সঙ্গে কাজ শুরু করেন প্রসন্ন। এরপর থেকেই উত্থান শুরু হয় রং মিস্ত্রি প্রসন্ন রায়ের। সম্পত্তিও বৃদ্ধি পায় কয়েক গুণ। ইতিমধ্যেই তদন্তে প্রসন্ন রায়ের কয়েকশো কোটি টাকার সম্পত্তি সামনে এসেছে। এছাড়াও রয়েছে একশোর বেশি কোম্পানি। পাশাপাশি একাধিক ফ্ল্যাট, নিউ টাউন এলাকায় প্রচুর জমিও রয়েছে প্রসন্ন রায়ের। কেন্দ্রীয় তদন্তে দাবি, প্রসন্নর এই বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে চাকরির বিক্রির বিপুল পরিমাণ কালো টাকা হয়ে যেত সাদা।
অতি সাধারণ নিম্নমধ্যবিত্ত সংসার থেকে ঠিক এভাবেই রকেটগতিতে উত্থান হয় নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম মিডলম্যান প্রসন্নের। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ২টি মামলার তদন্তে নেমে প্রসন্নের নাম পেয়েছিল সিবিআই। গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলা এবং নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ মামলা। পরবর্তীতে শর্তসাপেক্ষ জামিনে মুক্তি পেয়েছেন প্রসন্ন রায়। ইতিমধ্যেই ইডির স্ক্যানারে রয়েছেন প্রসন্ন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। এরপর ইডির তদন্তে নিয়োগ দুর্নীতিতে মিডলম্যানের ভূমিকা ছাড়াও আর কোন কোন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এই প্রসন্ন রায়? কার বদান্যতায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে এই প্রসন্ন রায়ের? এসব প্রশ্নের উত্তর ইডির তদন্তে শীঘ্রই পাওয়া যাবে বলে মনে করছে বঙ্গের ওয়াকিবহাল মহল।
জনগণের পরিষেবার কাজে অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ উঠলে সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতিতে জড়ালেও রেহাই পাবেন না সরকারি আধিকারিকরা, এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই নয়া লিখিত নির্দেশিকা দিল নবান্ন। মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিক জানিয়েছেন, ২২ জানুয়ারির মধ্যে ই-মেইল করে রাজ্য সরকারের সর্বত্র নিয়োগের সবিস্তার তথ্য দিতে হবে বিভাগীয় প্রধানদের।
জানা গিয়েছে, তৃণমূল জমানায় নিয়োগ কত হয়েছে, তার তথ্য ভান্ডার তৈরি করার উদ্যোগেই এই সিদ্ধান্ত। সেকারণে ২০১১ সালের মে মাস থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য চাইল নবান্ন। জানাতে হবে গ্রুপ-এ, বি, সি এবং ডি-তে নিয়োগের সংখ্যা। চুক্তিভিত্তিক এবং অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ-তথ্যের পাশাপাশি, অধ্যাপক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং অন্যান্য পদে কোথায় কত নিয়োগ হয়েছে, দিতে হবে তার ব্যাখ্যাও।
ইতিমধ্যেই সব দফতরের সচিব ও জেলা শাসকদের কাছ থেকে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব। ২২ জানুয়ারির মধ্যে ই-মেইল করে নির্দিষ্ট প্রোফর্মায় চাকরি প্রাপকদের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তৎপর ইডি। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার একাধিক জায়গায় ম্যারাথন তল্লাশি ইডির। এবার ইডি স্ক্য়ানারে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মিডলম্যান প্রসন্নকুমার রায়। সাম্প্রতিককালে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন তিনি। এদিন সকাল ছ'টা নাগাদ তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট ও নিউটাউনের অফিস সহ মোট সাত জায়গায় অভিযান চালান ইডি আধিকারিকরা।
সন্দেশখালির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সর্তক কেন্দ্রীয় বাহিনী। দেখা গিয়েছে মাথায় হেলমেট, ঢাল সঙ্গে কাঁদানে গ্যাসের সেল নিয়ে হাজির কেন্দ্রীয় বাহিনী। অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছিলেন এই প্রসন্ন রায়। তারপর এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সংযোগ রেখে চাকরি দেওয়ার নাম করে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলার কাজ করতেন প্রসন্ন। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই প্রসন্ন রায়।কোটি কোটি টাকা থেকে একাধিক সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গেছে প্রসন্ন রায়ের নামে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে।
সূত্রের খবর, একশোর বেশি কোম্পানি রয়েছে প্রসন্ন রায়ের। একাধিক ফ্ল্যাট, নিউটাউন এলাকায় প্রচুর জমি, বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা এই সবই হয়েছে তাঁর চাকরির বিক্রির টাকা থেকে। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রসন্ন রায়।
এদিন প্রসন্ন রায় ছাড়ও তাঁর ঘনিষ্ঠ নয়াবাদ এলাকায় রোহিত ঝাঁ নামে এক পরিবহন ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটেও হানা দেয় ইডি। অন্যদিকে প্রসন্ন রায় তিনিও পরিবহন ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরই ঘনিষ্ঠ রোহিত। অনেক দুর্নীতির ক্ষেত্রে তাঁর এই ফ্ল্যাট থেকে নথি উদ্ধার হতে পারে তারই সূত্র ধরে ইডি আধিকারিকরা এসে পৌঁছন।
পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে ইডি। শুক্রবার সকাল থেকেই ছিল টান টান উত্তেজনা। কারণ শুক্রবার সাতসকালেই শাসকদলের তিন হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকরা। রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় ও উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সুজিত বসুর বাড়িতে প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা ও তাপস রায়ের বাড়িতে প্রায় ১২ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশির পর একাধিক নথি ও তাঁদের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর সেসব নথি ও ফোন থেকেই দুর্নীতির পর্দাফাঁস হতে পারে বলে আশাবাদী ইডি।
গতকাল মন্ত্রী ও বিধায়কের বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়ে একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। ইডির দাবি, এই সব নথি পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসাবে কাজে আসবে। গতকাল বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে ১০ ঘণ্টারও বেশি ম্যারাথন তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁর মোবাইল ফোন ও বরানগর পুরসভা সংক্রান্ত একাধিক রিকোয়েস্ট লেটার উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কিছু বায়োডাটাও উদ্ধার করেছে ইডি। পাশাপাশি ইডির ডিজিটাল এক্সপার্টদের মাধ্যমে মোবাইল ফোন এক্সট্রাক্টর কাম হার্ডড্রাইভ ডিকোর্ডিং যন্ত্রের সাহায্যে তাপস রায়ের মোবাইল থেকে সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখবে ইডি।
এছাড়াও জানা গিয়েছে, আজ অর্থাৎ শনিবার ইডির তরফ থেকে সেই সমস্ত বায়োডেটার ক্যান্ডিডেটদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। কী কারণে বায়োডাটা জমা দিয়েছিলেন তাপস রায়ের কাছে, সেই বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে ইডির তরফ থেকে। বরানগর পুরসভার কোন কাজের জন্য রিকোয়েস্ট লেটার দেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়েই খতিয়ে দেখবে ইডি, এমনটাই সূত্রের খবর। মন্ত্রী সুজিত বসুর বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোন পরীক্ষা করেও গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হবে বলে আশাবাদী ইডি।
শুক্রবার সাতসকালে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে তল্লাশি চালানো শুরু হয়েছে তাঁদের বাড়িতে। পাশাপাশি উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তী বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা। দীর্ঘ ১২ ঘন্টার তল্লাশি শেষে বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়ি থেকে বের হল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দীর্ঘ তল্লাশিতে একাধিক নথি এবং বিধায়কের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে ১০ ঘণ্টা তল্লাশি শেষে সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে বেরোলেন ইডি আধিকারিকরা। এককথায় বলা যায়, পুর নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে আজ, শুক্রবার সকাল থেকে তুঙ্গে ইডি তৎপরতা। সকালের আলো ফুটতেই বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস এবং রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। গোটা এলাকাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। এমনকি ঘিরে রাখা হয় তাপস রায়ের বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাড়িটিও। সকাল থেকে প্রায় দীর্ঘ ১২ ঘন্টা ধরে চলে এই তল্লাশি অভিযান। আর এই দীর্ঘ তল্লাশিতে কিছুই তেমন পাওয়া যায়নি বলেই দাবি তৃণমূল বিধায়কের।
তাপস রায় কথায়, 'কিছু নেই তো পাবে কি!' ইডি বাড়ি ছাড়তেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাপস রায় জানিয়েছেন, 'আমি নিজেও খুবই আশ্চর্য হয়েছি। বরাহনগর পুরসভার কোনও নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত নই। এমনকি রাজনৈতিক জীবনে কোনও দুর্নীতির সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না এবং জড়িত নই'। আগামীদিনে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। আগামীদিনে তাঁকে তলব করা নিয়ে কিছু ইডি আধিকারিকরা জানাননি বলেই দাবি তৃণমূল নেতার।
অয়ন শীলের ডায়েরি থেকেই খোঁজ পাওয়া গিয়েছে সুজিত বসুর নাম! এমনটাই ইডি সূত্রে খবর। শুক্রবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই সুপার অ্যাকশন মোডে ইডি। সন্দেশখালির ঘটনার পর এবারে পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রায় ১২ ঘণ্টা পরও এখনও চলছে তল্লাশি। এদিন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস রায় ও উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। জানা গিয়েছে, পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অয়ন শীলের ডায়েরির সাঙ্কেতিক কোড থেকেই জানা যায় সুজিত বসুর নাম।
জানা গিয়েছে, সকাল থেকে সুজিত বসুর পুরনো বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর ইতিমধ্যেই সেখান থেকে বেরিয়ে যায় ইডি। এর পর সুজিত বসুর ছেলে সমুদ্র বসুকে নিয়ে পাশের একটি অফিস ও বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানেও চলেছে তল্লাশি। এই দফতরের বাইরে রয়েছে বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী, বিধান নগর পুলিসের বাহিনীও। ইতিমধ্যেই সেখান থেকে চারজন ইডি আধিকারিক বেরিয়ে গেলেও কয়েকজন আধিকারিক এখনও চালাচ্ছেন তল্লাশি। অন্যদিকে ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলের ডায়েরির সাঙ্কেতিক চিহ্ন থেকেই পাওয়া যায় মন্ত্রী সুজিত বসুর নাম। এছাড়াও ইডি দফতরে একাধিকবার বিভিন্ন এলাকার চেয়ারপার্সন, প্রাক্তন চেয়ারপার্সনকে তলব করে উঠে আসে মন্ত্রীর নাম। ফলে সুজিত বসুর বাড়ি-অফিসে হানা দিয়ে কী কী তথ্য পাওয়া যায়, সেদিকে তাকিয়েই বাংলা।
বেআইনি শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিআইডির হাতে গ্রেফতার প্রাক্তন ডিআই এবং খামারচক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার হাটুয়া। বুধবার সিআইডি তমলুকের খামারচক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার হাটুয়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের প্রাক্তন ডিআই (মাধ্যমিক) চাপেশ্বর সর্দারকে গ্রেফতার করে। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁদের তমলুক জেলা আদালতে তোলা হয়।
জানা গিয়েছে,কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বর্তমান ডিআই শুভাশিস মিত্র তমলুক থানায় এফআইআর করেছিলেন। সেই এফআইআর-এ তৎকালীন ডিআই স্কুলের প্রশাসক এবং প্রধান শিক্ষকের নাম ছিল। প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার হাটুয়া তাঁর ভাইপো শুভেন্দু হাটুয়াকে নিজের স্কুলের নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২০১৭ সালে নিয়োগ করে। সেই ঘটনায় সিআইডি এই দিন প্রধান শিক্ষক ও তৎকালীন ডিআইকে গ্রেফতার করে। দুজনকে বৃহস্পতিবার তমলুক জেলা আদালতে তোলা হয়। সিআইডি-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে জেলা আদালতে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অশোক কুমার হাটুয়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মাধ্যমিক শিক্ষার ডিআই বা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর অবসর গ্রহণ করেন। তার আগে তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ডিআই (সেকেন্ডারি/মাধ্যমিক) ছিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে বদলি হওয়ার আগে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি নিজের 'হোম ডিস্ট্রিক্ট' পূর্ব মেদিনীপুরের ডিআই ছিলেন বলে সূত্রের খবর। আর, ওই জেলাতেই বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় বুধবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চার্জশিটে রয়েছে রাজ্যের আরও এক বিধায়ক পরেশ অধিকারীর নাম। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর এবার প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর নামে চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। একাদশ ও দ্বাদশ বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সরাসরি জড়িত প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। চার্জশিটে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে সিবিআই-এর তরফে।
শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শেষে সিবিআই-এর পেশ করা চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। জানা গিয়েছে, চারটি মামলাতেই তাঁর নাম রয়েছে। মূল অভিযুক্ত হিসেবে তাঁকেই চিহ্নিতকরণ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। আর এরই মাঝে রাজ্যের আরও এক বিধায়কের নাম এল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির চার্জশিটে। জানা গিয়েছে, একাদশ-দ্বাদশে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পরেশ অধিকারীর নামেও চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। তবে পরেশ অধিকারী ছাড়াও চার্জশিটে ১২ জনের নাম রয়েছে। চার্জশিটে নাম রয়েছে এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। নাম রয়েছে এসপি সিনহা ও তাঁর স্ত্রীর।চার্জশিটে নাম রয়েছে ওএমআর প্রস্তুতকারী সংস্থা নাইসার ৩ আধিকারিকের।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় মামলাকারী রাকেশ মণ্ডলের করা মামলার ভিত্তিতে বড় নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে সিবিআই মঙ্গলবার জানায়, নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষ ও তাপস মণ্ডলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এরপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন ছয় মাসের মধ্যে মামলার ট্রায়াল শেষ করতে হবে। তিনি জানতে চান নিম্ন আদালত কবে থেকে কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষ ও তাপস মণ্ডলের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করবে?
বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে সিবিআই জানায়, বুধবার থেকে চার্জ ফ্রেম করা হবে। এই তিনজন অভিযুক্তের পক্ষ থেকে আদালতে তাদের বক্তব্য জানালেও তার কাগজ আদালতে জমা পরেনি। ফলে এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন নতুন করে এই তিনজন আর কোনও বক্তব্য জানাতে পারবে না। তিনি সিবিআইকে নির্দেশ দেন আগে এই সংক্রান্ত যে আবেদনগুলি জমা পড়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতকে সেগুলির তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি করতে হবে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে এই তিনজনের বিরুদ্ধে। পার্থ সেন ও কৌশিক মাঝিকে চার্জশিট জমা দিয়ে চার্জ ফ্রেম করে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে মামলাগুলির নিষ্পত্তি করতে হবে বলে সিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টে মামলা করেন চাকরিপ্রার্থী রাকেশ মণ্ডল। ২০১৪ সালের টেটের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৬ সালে। মামলাকারীর আইনজীবী দিবেন্দু চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন কোনও অতিরিক্ত মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।নিয়োগ মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। ২১শে ডিসেম্বর সিবিআই রিপোর্ট জমা দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। মুখ বন্ধ খামে জমা দেওয়া রিপোর্ট খতিয়ে দেখলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।সিবিআইয়ের পক্ষে জহিরউদ্দিন শেখ, টাইগার হোসেন, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় , তাপস কুমার মণ্ডল, নীলাদ্রি ঘোষ ও কুন্তল ঘোষের নামে নিম্ন আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে ১৪ই ডিসেম্বর। তবে এখনও পর্যন্ত চার্জ ফ্রেম করা হয়নি নিম্ন আদালতে বলেই এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে জানায় সিবিআই। বিচারপতিকে সিবিআই এও জানায় যে মেধা তালিকা প্রকাশ হয়েছিল তাতে প্রভাব খাটিয়েছিল তাপস কুমার মণ্ডল। এস বসু রায় কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজোশ করে এই দুর্নীতি করা হয়েছিল বলেই অভিযোগ করেছে সিবিআই।
এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে ঠিক কি জানিয়েছিল? সমস্ত কিছু শোনার পর নিম্ন আদালতকে এই মামলা দ্রুত শেষ করার জন্য কড়া নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
রাজ্যের শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। সোমবার আদালতে শিক্ষা দুর্নীতির চারটি মামলার তদন্ত শেষ করে চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিট চার্জশিটেই নাম রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এছাড়াও পার্থর প্রাক্তন সচিব সুকান্ত আচার্য (ডব্লুবিসিএস), এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন শর্মিলা মিত্র'র নাম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সিবিআই সূত্র জানা গিয়েছে, নবম-দশম, একাদশ - দ্বাদশ, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। এসএসসির একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এদিন পেশ করা চার্জশিটে অভিযুক্তরা হচ্ছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এসএসসি-র প্রাক্তন কর্তা সুবীরেশ ভট্টাচার্য, ওএমআর শিট প্রস্তুতকারক সংস্থা নাইসার কর্তা পুনীত কুমার, পঙ্কজ বনশাল, এজেন্ট প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিং, প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী, অরুণ মাইতি, অশোক মাইতি।
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় পেশ করা চূড়ান্ত চার্জশিটে নতুন অভিযুক্তর তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এসএসসি-র প্রাক্তন আধিকারিক সৌমিত্র ঘোষ, নাইসা, পুনীত কুমার, পঙ্কজ বনশাল। এমনকি অভিযুক্ত হিসেবে কয়েকজন শিক্ষকের নামও রয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, সৌমিত্র ঘোষ, সুবীর ঘোষ, দিলীপ ভৌমিক-এর নাম আছে। এসএসসির গ্রুপ ‘সি’ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মোট ২৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। এই মামলায় আগেই দু’দফায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সিবিআই সূত্রে আরও খবর, চার্জশিটে নাম রয়েছে এসএসসির প্রাক্তন আধিকারিক পর্ণা বসু-রও।
নিয়োগ দুর্নীতির চারটি মামলার তদন্ত শেষে চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। সোমবার নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি'র মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করা হয়েছে আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে। আর এই চারটি মামলাতেই নাম জড়াল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তবে চার্জশিট জমা পড়লেও এখনও সেই চার্জশিট নিয়ে শুনানি বা কোনও নির্দেশ হয়নি আদালতে। ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিপোর্ট দেওয়ার আগে এই চারটি মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই।
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, জানুয়ারির নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষ করে সোমবার চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে এক সঙ্গে চারটি মামলায় চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। আগামী সপ্তাহে প্রাথমিক মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ হতে পারে বলেই খবর। সোমবার নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডিতে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে চার্জশিট পেশ করছে সিবিআই। নবম-দশম মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ৭ জনের নাম রয়েছে বলে খবর। গ্রুপ-সি মামলার চার্জশিটে রয়েছে শিক্ষাদফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নাম। এছাড়াও চার্জশিটে রয়েছে একাধিক এজেন্টের নাম। রয়েছে একাধিক ব্যক্তির বয়ানও।