সোমবার এসএসসির রায় বেরোনোর পর, মঙ্গলবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অভিযুক্তদের জামিন মামলার। শুনানিতে মুখ্য সচিবের ওপর চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। ২ বছর আগে তদন্তকারী সংস্থা মুখ্যসচিবের কাছ থেকে অনুমোদন পত্র চেয়েছে। কিন্তু তা জমা তো পড়েনি, এমনকি অনুমোদন পত্র দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্তও জানানো সম্ভব হয়নি মুখ্যসচিবের।
যদিও শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, নির্বাচনের জন্য কমিশনের নিয়মাবলীর মধ্যে বিষয়টি পড়ে যাওয়ায় মুখ্যসচিব অনুমোদন পত্র তৈরি করতে পারেননি। ক্ষুব্ধ বিচারপতি বাগচী জানান, দেড় মাসে মুখ্যসচিবের একটা অনুমোদন পত্র তৈরি করার সময় হচ্ছে না! নির্বাচন কমিশনের নিশ্চই নির্বাচনে নির্দিষ্ট ভূমিকা আছে। তবে আদালত তো নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যাপারে কিছু করতে বলছে না। তাহলে সমস্যা কোথায়? বিচারপতির আরও মন্তব্য, রাজ্যের একজন উচ্চপদস্থ অফিসার এভাবে যুক্তি দেখিয়ে নিজের দায় এড়াচ্ছেন? আজ বলছেন নির্বাচন কাল বলবেন অন্য কাজ আছে। ক্রিমিনাল কোর্টের এত সময় কোথায়? সিবিআইয়ের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদীও জানান, অনুমোদন পত্র পেলেই আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। নিয়মের বন্ধনে আমাদের হাত বাঁধা। ট্রায়ালও চলছে শ্লথ গতিতে।
দীর্ঘ শুনানির পর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, মুখ্যসচিব এর হলফনামায় খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট। মুখ্যসচিবকে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আদালত দশদিন সময় দিল। তারপরেও যদি মুখ্য সচিব অনুমোদন পত্র না জমা দেন, সেক্ষেত্রে রুল ইস্যুর হুঁশিয়ারিও দেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২ মে।
ভোটের আবহে বড় ধাক্কা রাজ্যে। প্রায় সাড়ে তিনমাস শুনানির পরে অবশেষে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। এসএসসির গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৬-র গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করল আদালত। ২৫,৭৫৩ শিক্ষকের চাকরি বাতিল করল আদালত। শুধুমাত্র সোমা দাসের চাকরি বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ায় 'মানবিক কারন'-এ তাঁর নিয়োগ বাতিল করা হয়নি। পাশাপাশি সমস্ত নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করবে সিবিআই,স্পষ্ট জানিয়ে দিল বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ।
মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে কোনও চাকরি বৈধ নয় বলে জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্ট জানিয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে টাকা ১২ শতাংশ সুদ-সহ ফেরত দিতে হবে। আর ছয় সপ্তাহের মধ্যে এব্যাপারে ডিআই ও জেলাশাসকদের রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
মামলা সুপ্রিম কোর্টে গেলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে বিশেষ বেঞ্চ তৈরি করে মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে ৬ মাসের মধ্যে। সেই মতো কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বর রশিদিকে নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হয়। এরপরই শুরু হয় মামলার শুনানি। সেই শুনানি চলে প্রায় সাড়ে তিনমাস। আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগে এই মুহূর্তে জেলে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিনহার মতো প্রাক্তন শিক্ষাকর্তারা।
জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, শুক্রবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি হরিশচন্দ্র টন্ডন ও মধুরেশ প্রসাদ-এর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় সিবিআই অনুসন্ধান হোক। অনুসন্ধানের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানান বিচারপতি।
পাহাড় নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন মেনে আবেদন করেছিল রাজ্য। রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আজ, শুক্রবার তারই রায়দান হল। রায় দান করতে গিয়ে বিচারপতি হরিশচন্দ্র টন্ডন ও মধুরেশ প্রসাদ জানান, রাজ্যের আবেদনের কোনও গুরুত্ব নেই। সিবিআই অনুসন্ধান রিপোর্ট দেওয়ার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। আপাতত সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
মণি ভট্টাচার্য: পাহাড়েও নিয়োগ দুর্নীতি, এই অভিযোগে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে সিবিআই অনুসন্ধানের প্রসঙ্গ। জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের বিরুদ্ধে এবার হাইকোর্টে আবেদন রাজ্যের। সূত্রের খবর, ৯-ই এপ্রিল হাইকোর্ট জিটিএ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। ২৫ তারিখ অর্থাৎ ১৫ দিনের মধ্যে একটি রিপোর্ট সিবিআইকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবার সিবিআই অনুসন্ধান বন্ধের দাবিতে প্রধান বিচারপতির কাছে মামলা করতে চেয়ে আবেদন রাজ্যের। মামলার অনুমতি প্রধান বিচারপতির, চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা।
জিটিএ নিয়োগে দুর্নীতিতে বিনয় তামাং, অনীত থাপার হাত ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ক্যান্ডিডেট লিস্ট, বিচারপতির কাছে একটি বেনামী চিঠি। স্বতঃপ্রনোদিত মামলা করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেই মামলায় গত সপ্তাহে সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের। তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নাম যুক্ত হয় মামলায় । জিটিএতে নিয়োগ দুর্নীতিতে ৭০০-১০০০ জন নিয়োগ হয়েছে। হাইকোর্ট সিবিআই অনুসন্ধান দিতেই জিটিএ-র নিয়োগ দুর্নীতিতে এফআইআর দায়ের রাজ্যের। এফআইআর-এ পার্থ সহ একাধিক তৃণমূল নেতার নাম। বিধাননগর উত্তর থানায় এফআইআর। এবার এই এফআইআর-এর দোহাই দিয়ে সিবিআই অনুসন্ধান বন্ধের আর্জি রাজ্যের। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এটাই প্রত্যাশিত। সিবিআই অনুসন্ধান যাতে সিবিআই তদন্তে রূপান্তরিত না হয়, তাই এফআইআর রাজ্যের। কারণ এই নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ঢুকে পড়লে কানের সঙ্গে মাথাদের ধরা পড়ার আশঙ্কায় কি থরহরিকম্প রাজ্য, উঠছে প্রশ্ন।
সমতলের ধাঁচে এবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ পাহাড়েও। সম্প্রতি জিটিএ তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআইকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। অভিযোগ ২০১৯ সালে আপার প্রাইমারিতে ৩১৩ জন ও প্রাইমারিতে ১২১ জন শিক্ষক নিয়োগ হয়। যেখানে ভলেন্টিয়ার শিক্ষককে স্থায়ীকরণ করা হয়। অভিযোগ, এই নিয়োগ কোনও নিয়ম না মেনেই হয়েছে। এমনকি বহু এমন ব্যক্তি চাকরি পেয়েছেন, যাঁরা কখনও ভলেন্টিয়ার শিক্ষকই ছিলেনই না। ইতিমধ্যেই ওই ৩১৩ জন শিক্ষকের তালিকা সিএন-এর হাতে ওই তালিকায় এরকম দুইজনের নাম উঠে আসছে।
ওই তালিকার ৮৩ নম্বর রয়েছে কেশব রাজ শর্মার নাম যিনি ওই ভলেন্টিয়ার শিক্ষক নিয়োগের ভেরিফিকেশন প্রসেসের সদস্য। অভিযোগ এই ব্যক্তি কখনও কোনও স্কুলে ভলেন্টিয়ার এর শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেননি। এমনকি পাহাড়ের ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা দল যে দলটি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ দল নামে পরিচিত ওই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের আত্মীয়।
ঘটনায় অপর একজনের নাম উঠে আসছে, যার নাম সঞ্চাবির সুব্বা। অভিযোগ এই ব্যক্তি কোন স্কুলে প্যারা টিচার হিসেবে কাজ করেনি, এমনকি তার বিএড ডিগ্রিও নেই। এছাড়া এই ব্যক্তি বর্তমানে জিটিএ শিক্ষা বিভাগের ডেপুটি চিফ এক্সজিউটিভ। ফলে সে কিভাবে জিটিএ ৩১৩ জন শিক্ষক নিয়োগ তালিকায় এল তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে উঠছে প্রশ্ন।
মণি ভট্টাচার্যঃ পাহাড়ে জিটিএ-র শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে শিক্ষা দফতর। উত্তর বিধাননগর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জিটিএ-র স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এবার সিএন-এর হাতে এল জিটিএ-তে নিয়োগ পাওয়া ৩১৩ জন অস্থায়ী শিক্ষককে স্থায়ীকরণের তালিকা। উল্লেখ্য, ৩১৩ জন অস্থায়ী শিক্ষককে আপার প্রাইমারি ও ১২১ জন শিক্ষককে প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এমনই অভিযোগ প্রকাশ্যে।
আরও ভয়ানক অভিযোগ, এই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির কথা জানত সিআইডি, স্টেট ভিজিল্যান্স কমিশন সবাই। ২০২২ সালে জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়ম নিয়ে সুমন গুরুং নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে শিক্ষা দফতর। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে ওই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। গোটা ঘটনার তদন্তের নামে একটি রিপোর্ট শিক্ষা দফতরকে জমা করে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম।
ওই কমিটি ২০২৩ সালে অক্টোবর মাসে একটি রিপোর্টের মাধ্যমে শিক্ষা দফতরকে জানায় জিটিএ-র স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকদের স্থায়ীকরণে বেনিয়ম হয়েছে। তাতে শিক্ষা দফতরের বেশ কিছু আধিকারিক সহ কিছু নেতৃত্বরা জড়িত বলে জানায় ওই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি।
এছাড়া চলতি বছর জানুয়ারি মাসে জিটিএতে ৩১৩ জন অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে একটি চিঠি পৌঁছয় শিক্ষা দফতরে। শিক্ষা দফতর সেই চিঠি ডিআইজি, সিআইডিকেও পাঠায়। এমনকি শিক্ষা দফতর এই চিঠি ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য ভিজিলেন্স কমিশনকেও পাঠায়। সবকিছু জেনেও চুপ ছিল রাজ্য সিআইডি এবং রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশন? কেন এই দুর্নীতির কথা জেনেও চুপ ছিল রাজ্য! উঠছে প্রশ্ন।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অবশেষে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার মোবাইল আনলক করতে সক্ষম হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আশা এই মোবাইলে থেকে মিলতে পারে জরুরি তথ্যপ্রমাণ। এবার তাই মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার চ্যাট হিস্ট্রিতে নজর তদন্তকারীদের।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। প্রায় ১৪ ঘণ্টার তল্লাশিতে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৪১ লক্ষ টাকা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল মন্ত্রীর ফোন। পরবর্তীতে, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে ইডির সদর দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফে। যদিও মন্ত্রীর পরিবার সূত্রে দাবি ছিল, তাঁকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র উদ্ধার হওয়া টাকা, মোবাইল ফোনের সমস্ত রকম ডিটেলস এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ইডির তরফে।
এছাড়াও ইডির নির্দেশ ছিল মন্ত্রীর বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোন আনলক করার। এরপরেই মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার একজন প্রতিনিধিকে সমস্ত নথি-সহ পাঠানো হয় সিজিও-তে। তিনিই তদন্তকারী আধিকারিকদের সামনে আনলক করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথের মোবাইল। ইডির দাবি, মন্ত্রীর মোবাইল থেকে খুলতে পারে, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের রহস্যের জট। আর তাই এবার ইডির আতস কাঁচের নিচে মন্ত্রীর বাজেয়াপ্ত মোবাইল।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে বলাগড়ের বহিঃস্কৃত এক যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের বাড়িতে তল্লাশির সূত্র ধরেই মন্ত্রী চন্দ্রনাথের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। এখন মন্ত্রীর মোবাইল থেকে, নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কে আর কী তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে, সেটাই দেখার। তবে যেভাবে রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতি কাণ্ডে, শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়াচ্ছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে বারংবার দুর্নীতিতে তৃণমূলই কেন? এই দুর্নীতির জাল শাসকদলের মধ্যে কতদূর অবধি বিস্তৃত? শাসকদলের দুর্নীতির কারণে কেন বারবার বঞ্চিত হতে হবে রাজ্যবাসীকে? জবাব চাইছে বাংলার ওয়াকিবহাল মহল।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তৎপর ইডি। শুক্রবার সকালে থেকে কলকাতায় চলছে ইডির ম্য়ারাথন তল্লাশি। লেকটাউন সহ ৫ জায়গায় চলছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তল্লাশি। জানা গিয়েছে, এদিন চেতলায় বিশ্বরূপ বসু নামক এক ব্য়বসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পরিবহন ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত তিনি। সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার 'মিডলম্য়ান' অর্থাৎ প্রসন্ন রায় ঘনিষ্ঠ এই বিশ্বরূপ বসু।
ইডি সূত্রে খবর, এদিন চেতলার ১৭৮ নম্বর পিয়ারী মোহন রায় রোডের বাড়িতে ছিলেন না বিশ্বরুপ বসু। সেখানে তাঁর দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্য়মে জানা যায়, কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন বিশ্বরূপ বসু। অন্যদিকে চেতলা লকগেটের কাছে বিশ্বরূপ বসুর আরেকটি ফ্ল্যাট পাওয়া গিয়েছে। যদিও সেই ফ্ল্যাটটি তালা বন্ধ অবস্থায় ছিল। সেখানেও তাঁর বেশ কয়েকজন আত্মীয়কে পাওয়া গিয়েছে। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকেরা। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর প্রসন্ন কুমার-এর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বরূপ বসুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন ইডি আধিকারিকরা।
এরপর প্রসন্ন কুমার রায়ের সূত্র ধরে এস কে ঝুনঝুনওয়ালা ওরফে সত্যেন্দ্র ঝুনঝুনওয়ালার সন্ধান পান ইডি আধিকারিকেরা। এদিন সকালে ইডি আধিকারিকেরা তাঁর লেকটাউন বিরাটি অঞ্চলের বাড়িতে পৌঁছে যায়। সেখানে তাঁকে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে নিয়ে তাঁর ভাই বীরেন্দ্র ঝুনঝুনওয়ালার বাড়ি এয়ারপোর্ট থানা এলাকার বিরাটি ৪ নম্বর মহাজাতি অঞ্চলের গৌরীপুর রোডের বাড়িতে যান ইডি আধিকারিকরা। সকাল ন'টা থেকে সেখানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইডি আধিকারিকেরা।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ফের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার মিডলম্যান প্রসন্ন রায়। ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত ইডি হেফাজতেই অভিযুক্ত। নিয়ম মোতাবেক শুক্রবারও বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর সিজিও নিয়ে আসা হল নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত প্রসন্ন রায়কে। মূলত প্রথমে শিক্ষক নিয়োগে কারচুপির ঘটনায় মিডলম্যান হিসেবে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রসন্ন রায়। কিন্তু গতবছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জামিনে ছাড়া পেয়ে যান তিনি। যদিও তার বিপুল অঙ্কের সম্পত্তি দেখে সন্দেহ থেকেই গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। এমনকি অভিযোগ উঠে আসে যে সিবিআই-এর গ্রেফতারির পরও জেল হেফাজতে থাকাকালীন সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতির এই মিডলম্যান। প্রসন্ন রায়ের এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উৎস কী? নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকাতেই বৈভব ফুলেফেঁপে উঠেছে প্রসন্ন রায়ের? টাকার যোগানটাই বা তাকে দিত কে? প্রসন্নকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তারই তথ্য সন্ধানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, ১৮ জানুয়ারি প্রসন্ন রায়ের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। প্রসন্ন রায়ের নিউটাউনের অফিস থেকে একাধিক নথি উদ্ধার করেছিল ইডি আধিকারিকরা। উদ্ধার হয় ৪০০-র বেশি দলিল, শতাধিক এটিএম ও ৭০টি প্যানকার্ড। তদন্তে দেখা গিয়েছে যে, দলিলগুলি উদ্ধার হয়েছে, তা ছিল প্রসন্ন রায়ের অফিসের বেতনভুক কর্মীদের নামে। মূলত ইডির হাতে উঠে আসে প্রসন্নর একাধিক সম্পত্তির নথি ও তথ্য প্রমাণ। প্রসন্ন রায়ের ১০০ কোটির বেশি সম্পত্তির হদিশ পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। এই সব নথির উপর ভিত্তি করেই দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রসন্ন। বুধবার সেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় প্রসন্নর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা।
কিন্তু আদালতে প্রসন্ন রায়ের জামিনের আবেদন করেননি আইনজীবী। বরং ইডির তরফে আদালতে প্রসন্ন রায়ের ২০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং ১০০টি কোম্পানির তথ্য প্রমাণ পেশ করতে দেখা যায় এদিন। পাশাপাশি ইডির আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মিডলম্যান প্রসন্নর ৯৭টি সম্পত্তির হদিশ এবং ৭০ কোটি টাকার হিসাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাদী-বিবাদী পক্ষের সওয়াল জবাবের ভিত্তিতে আপাতত ইডি হেফাজতেই প্রসন্ন। এখন ইডির প্রশ্নবাণে অভিযুক্ত প্রসন্ন রায়ের কাছ থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত আর কোন কোন তথ্যের সন্ধান মেলে সেটাই দেখার।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ফের গ্রেফতার ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়। সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়ে তাঁকে। এরপর আজ, বৃহস্পতিবার সকালে প্রসন্ন কুমার রায়কে মেডিক্যাল চেকআপ করাতে নিয়ে যান ইডি আধিকারিকেরা। মেডিক্যাল চেকআপ করানোর পর তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।
জানা গিয়েছে, এর আগে এই একই মামলায় সিবিআই প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান ‘নিয়োগ দুর্নীতির অন্য়তম মিডলম্যান’। এরপর চলতি সপ্তাহের সোমবার প্রসন্ন রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় ডাকা হয়েছিল ইডি দফতরে। সেখানে তাঁকে দিন-রাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি।
গত জানুয়ারি মাসে প্রসন্ন রায়ের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। প্রসন্ন রায়ের নিউটাউনের অফিস থেকে একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। সেই নথিপত্রের ভিত্তিতেই প্রসন্ন রায়কে ইডি দফতরে তলব করা হয়েছিল।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ফের গ্রেফতার ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়। সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়ে তাঁকে। এর আগে এই একই মামলায় সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান ‘নিয়োগ দুর্নীতির অন্য়তম মিডলম্যান’।
জানা গিয়েছে, সোমবার প্রসন্ন রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় ইডি দফতরে ডাকা হয়েছিল। সেখানে তাঁকে দিন-রাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, এই প্রসন্ন রায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গত জানুয়ারি মাসে প্রসন্ন রায়ের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। প্রসন্ন রায়ের নিউটাউনের অফিস থেকে একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। সেই নথিপত্রের ভিত্তিতে প্রসন্ন রায়কে ইডি দফতরে তলব করা হয়েছিল। সেই মত সোমবার ইডি দফতর যান তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে প্রসন্ন রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁকে ইডির স্পেশাল কোর্টে পেশ করা হবে বলে সূত্রের খবর।
শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ফের অ্যাকশনে নামল ইডি। শুক্রবার সকাল থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের পক্ষ থেকে শহরের পাঁচ জায়গায় শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ এই ব্য়বসায়ীর নাম রাজিব দে।
জানা গিয়েছে, নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির ঠিক উল্টোদিকেই পাঁচতলা বাড়ি রাজীব দে-র। সেখানে তল্লাশি অভিযান ইডি-র। পাশাপাশি, রাজীব দে-র শ্রীরাম কনস্ট্রাকশনের অফিসেও তল্লাশিতে নামেন ইডি আধিকারিকরা। তারপর রাজীব দের দাদা সঞ্জীব দে-কে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন ইডি আধিকারিকেরা। বাড়ির পাশেই রয়েছে আরও এক প্রপার্টি। সেখানে গিয়ে খতিয়ে দেখলেন ইডির আধিকারিকরা।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তলব করা হল কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ইডি দফতরে দফতরে আসেন বাপ্পাদিত্য। ইডি সূত্রে খবর, এই তৃণমূল কাউন্সিলরকে তাঁর ব্যাংকের পাসবুক, সমস্ত লেনদেন এবং আয়কর রিটার্নের সমস্ত কাগজপত্র সহ বেশ কয়েকটি নথি আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যা বৃহস্পতিবারই ইডি দফতরে জমা দেন বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। টানা ৬ ঘণ্টা ধরে চলছে জিজ্ঞাসাবাস।
প্রসঙ্গত, একসময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-এর সঙ্গে নিয়মিত ওঠাবসা ছিল বাপ্পাদিত্যের। সেই কারণে প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় পার্থের ভূমিকা সম্পর্কে বাপ্পাদিত্য অনেকটাই জানেন বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তবে পার্থর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই তাঁকে তলব, এমনটাই দাবি এদিন ইডির দফতরে হাজিরা দিতে আসা বাপ্পাদিত্যের। পাশাপাশি তাঁর সাফ দাবি প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।
তবে গত বছর প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের বাড়িতে উদ্ধার হয় প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত এবং এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি। প্রায় ১০০ পাতার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছিল বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এরপর বৃহস্পতিবার বাপ্পাদিত্যকে আবার তলব ইডির। এই বিষয়ে জল কতদূর গড়ায় এখন সেটাই দেখার।
নিয়োগের দাবিতে রাজপথেই দিন গুজরান চাকরিপ্রার্থীদের। যোগ্যতার প্রাপ্য মূল্য আদায় করতে একাধিকবার মিটিং মিছিল বিক্ষোভকে প্রতিবাদের হাতিয়ার বানিয়েছে তারা। এবার অবিলম্বে নূন্যতম ৫০ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ সহ ২০২২ টেটের ইন্টারভিউর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে করুণাময়ী সৌরভ গাঙ্গুলী ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পের সামনে ধরনামঞ্চে তাদের ৪ দিনের লাগাতার বিক্ষোভ। ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল এই ধরনা কর্মসূচি।রবিবার অন্তিমদিনেও মিলল না কোনও রফাসূত্র। মূলত তাদের অভিযোগ, সরকারের স্বদিচ্ছার অভাবেই আটকে রয়েছে তাঁদের নিয়োগ। আইন মেনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানেও সরকারের হুঁশ না ফিরলে অগামী দিনে তাই আইনের শিকল ভাঙার পথই বেছে নেবে তারা। কার্যত ধরনামঞ্চ থেকে আইন অমান্যের হুঁশিয়ারি ২০২২-এর টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে রেডরোডে মুখ্যমন্ত্রী ধরনায় ব্যস্ত। কিন্তু নিজের রাজ্যে ৭ বছর ধরে চাকরিপ্রার্থীদের যে নিয়োগ যন্ত্রনা সহ্য করতে হচ্ছে সেদিকে কেন হুঁশ নেই মাননীয়ার? তিনি কি চাকরিপ্রার্থীদের মুখ্যমন্ত্রী নন? তাদের নিয়োগ বঞ্চনা কি সত্যিই অর্থহীন? উত্তরের সন্ধানে ধরনামঞ্চ থেকে কালীঘাটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখার করার সিদ্ধান্ত চাকরিপ্রার্থীদের।
বিগত কয়েক বছর ধরেই শহরের নানা প্রান্তে যোগ্যতার প্রাপ্য মূল্য আদায়ের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন বিভাগের চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও অন্ধকারে তাঁদের নিয়োগের ভবিষ্যৎ। জীবনের অর্ধেকটা সময় তাদের কেটে গিয়েছে রাজপথেই। দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। ভোট কিনতে ব্যস্ত সরকার। কিন্তু যাদের ভোটের মসনদ মিলবে তাদের প্রতিই ভ্রুক্ষেপ নেই সরকারের। কবে মিলবে নিয়োগ? ওয়াকিবহালমহলে এই প্রশ্নকে সামনে রেখে একাধিক তর্ক-বিতর্কের উথ্থান ঘটলেও জবাব আজও অধরা।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের তল পেতে আবারও তৎপর সিবিআই। তদন্তের গতি বাড়াতেই এবার বিস্ফোরক তথ্য হাতে পেল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দামহল। ফের সিবিআই স্ক্যানারে উঠে আসে ওএমআর শিট কারচুপিতে নাম জড়ানো বিতর্কিত সংস্থা এস বসু রায় কোম্পানি। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ইতিমধ্যেই শ্রীঘরে ঠাঁই মিলেছে সংস্থার অন্যতম অংশীদার কৌশিক মাজির। এবার সেই সংস্থার দুষ্কর্মের হদিশ মিলল সিবিাইয়ের তদন্তে। যে 'দুষ্কর্ম'-এর অন্যতম সাগরেদ ছিলেন কৌশিক মাঝি, বিস্ফোরক দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। এমনকি ২০১৪ টেট পরীক্ষার দুর্নীতির যাবতীয় তথ্য লোপাটও এই সংস্থার কারসাজি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত বলছে, এস বসু রায় কোম্পানির সার্ভারে দুর্নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য স্ক্যান করে রাখা থাকত। যার কোনও বিকল্প রাখা হত না। তাই প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ নতুন তথ্য সার্ভার এ আপডেট হওয়ার ফলে বিগত দিনের তথ্য অনায়াসে প্রতিস্থাপিত হয়ে গিয়েছে।কার্যত এই ভাবেই নতুন তথ্য সার্ভারে রেখে পুরনো তথ্য লোপাট করত এস বসু রায় কোম্পানি।
কিন্তু এস বসু রায় কোম্পানির সার্ভার বদলে ফেলা হয় ২০১৭ সালেই। প্রসঙ্গত, এর আগেও সিবিআই এর লাগাতার তল্লাশি ও ওই সংস্থার আধিকারিকদের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদে সিবিআইয়ের হাতে উঠে এসেছিল একাধিক চাঞ্চল্যকর নথি, তথ্য প্রমাণ। SSC-র চাকরিপ্রার্থীদের OMR শিট মূল্যায়নের দায়িত্বে ছিল যেমন NYSA, ঠিক তেমনই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চাকরিপ্রার্থীদের OMR শিট মূল্যায়নের দায়িত্বে ছিল এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি, যার সঙ্গে ধৃত মানিক ভট্টাচার্যেরও প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল বলে উঠেছিল অভিযোগ। এই কোম্পানি থেকেই ওএমআর শিটে কারচুপি ও পরীক্ষার্থীদের নম্বর বিকৃত করা হত বলেও মিলেছিল তথ্য। এবার সেই সংস্থায় প্রমাণ গুম করার মূল কাণ্ডারী দাবি করছে সিবিআই। আগামী দিনে সিবিাআই এর তদন্তে এবার সংস্খার আর কোন কোন অপকর্ম প্রকাশ্যে আসে সেটাই দেখার।