গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার-কাণ্ডে ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand MLA) তিন কংগ্রেস বিধায়ককে গ্রেপ্তার করেছে হাওড়া গ্রামীণ পুলিস (Howrah Rural Police)। ধৃতদের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলা থেকে সরলেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এই মামলার টেকনিক্যাল পয়েন্ট দেখিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন সিঙ্গল বেঞ্চের (Single Bench)। সেই মামলা ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে শুনানির জন্য।
শুক্রবার শুনানিতে আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার হাওড়া বিশেষ আদালতে তোলা হয়েছে অভিযুক্তদের। সেই আদালত তিন দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও গ্রেপ্তারটাই বেআইনি। এই শুনানিতে পুলিসের পক্ষ থেকে শ্বাশত গোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, গত রাতে অভিযুক্তদের বিশেষ আদালতে তুলে তিন দিনের পুলিস হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আমরা ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চাই, এই টাকার উৎস কী?
পাল্টা অভিযুক্তদের আইনজীবীর সওয়াল,'সিজেএম কোর্টে বিধায়কদের একাধিকবার তোলা। পাশাপাশি ৪৬৭ ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যখন আমার মক্কেলদের জামিনের আবেদন হাইকোর্টে চলছে।
পুলিসের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে এই মামলার কেস ডায়রি আদালতে জমা পড়েছে। এই সওয়াল-জবাবের পরেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ ৪৬৭ ধারায় যেহেতু ৭ বছর বেশি ১০ বছর সাজা হয়। তাই দুর্নীতি দমন আইনে এই জামিনের আবেদন সিঙ্গেল বেঞ্চ শুনতে পারে না। এই বলেই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন এনং জামিন সংক্রান্ত মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
'আমাদের বিধায়ক তো মাতাল, তার কথা ছেড়ে দেওয়াই ভালো'। নিজের দলের বিধায়ক সম্পর্কে এমনই মন্তব্য তৃণমুল পঞ্চায়েত প্রধানের। যা নিয়ে হাসিঠাট্টা যেমন শুরু হয়েছে, তেমনি অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে। মঙ্গলবার বিশ্ব আদিবাসী দিবস (World Tribal Day) উপলক্ষে স্থানীয় আদিবাসী সমাজের মানুষদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ফুটবল ময়দানে। অনুষ্ঠানে জমায়েত হয়েছিল ভালোই। আদিবাসী সমাজের সংস্কৃতি, কৃষ্টি তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন তৃণমুল নেতা এবং জনপ্রতিনিধি। তার মধ্যে একজন প্রধান হেমব্রম। তিনি জলপাইগুড়ির পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পাশাপাশি রায়পুর চা বাগানের শ্রমিক নেতাও। রায়পুর চা বাগান দীর্ঘদিন ধরে অচল। অনুষ্ঠান মঞ্চে সেই অচল বাগান নিয়ে কথা বলতে গিয়েই এলাকার বিধায়কের (MLA) সম্পর্কে ক্ষোভ উগরে দেন প্রধান (Panchayet Pradhan) হেমব্রম। তাঁর বক্তব্য, "আমাদের বিধায়ক তো মাতাল, তার কথা ছেড়ে দেওয়াই ভালো" তিনি নিজের ঘরই সামলাতে পারেন না, বাইরে কী সামলাবেন? তাঁর কাছ থেকে কিছু আশা করি না"।
নাম না করলেও স্পষ্ট যে, প্রধান হেমব্রমের তীর রাজগঞ্জ ব্লকের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের দিকে। তাঁর এই বক্তব্যের পর মঞ্চে উপস্থিত দলীয় নেতারা অস্বস্তিতে পড়ে যান। আবার অনেককে চুপিসারে হাসাহাসি করতেও দেখা যায়।
এদিকে দলীয় পঞ্চায়েত প্রধানের এহেন মন্তব্যে অস্বস্তি পড়েছে জেলা তৃণমুল। খগেশ্বর রায় চারবারের বিধায়ক। পাশাপাশি, তিনি জেলা তৃণমুলের চেয়ারম্যান। জেলার শীর্ষনেতার বিরুদ্ধে এই ধরনের মন্তব্য অস্বস্তি বাড়িয়েছে দলের। এই বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিধায়ক জানিয়েছেন, এই বিষয়ে উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, তাঁরাই ব্যবস্থা নেবেন। জলপাইগুড়ির তৃণমূল জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই, কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
এদিকে, ঘাসফুল শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তীব্র কটাক্ষ শানিয়েছেন বিজেপি নেতা শ্যাম প্রসাদ।
প্রসঙ্গত, বিধায়ক খগেশ্বর রায় মাঝেমধ্যেই শিরোনামে উঠে আসেন। কখনও বিতর্কিত মন্তব্য বা আচরণ করে, আবার কখনও পারিবারিক কারণে। যদিও বিধায়ক সবসময়ই দাবি করে এসেছেন, এসব তাঁকে বদনাম করার চক্রান্ত।
বিস্ফোরক মন্তব্য আমডাঙার (Amdanga) বিধায়ক রফিকুর রহমানের (Rafiqur Rahman)। সোমবার দারিয়াপুর হাট মালিকের ছেলেকে মারধরের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আমডাঙা থানার আইসি (IC) বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন আমডাঙার বিধায়ক। তবে এই ঘটনায় রাকিবুল হক (ডালিম) নামে এক হিরোইন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে আমডাঙা থানার পুলিস। কিন্তু আসল ঘটনা কী?
আমডাঙা থানার হাবরা (Habra) নৈহাটি রোডের উপর দারিয়াপুর এলাকার হাটের মালিকের ছেলেকে দুষ্কৃতীদের মারধরের ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কার্যত আমডাঙা থানার আইসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিধায়ক। তিনি বলেন, "এই পরিস্থিতি তৈরি করেছেন আমডাঙা থানার আইসি অঞ্জন দত্ত। যে গাঁজার ব্যবসায়ী পিস্তলের বাট দিয়েছে মেরেছেন, তার কাকাকে তিন চারদিন আগে আইসি সন্ধেবেলা ধরে এবং রফা করে রাতে ছেড়ে দেন। যেদিন এটা হয়েছে সেদিন আমি অ্যাডিশনাল এসপিকে মেসেজ করেছিলাম গোটা বিষয়টা জানিয়ে। এক্ষুণি অপসারণ চাই।"
প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছিল সাধারণ মানুষ, সেই প্রশ্নের উত্তরে বিধায়ক জানান, প্রশাসন নিষ্ক্রিয়তার পয়সা পায়। তিনি সাধারণ মানুষের জন্য দাবি করেন, এই আইসি যদি আমডাঙায় থাকে তাহলে আমডাঙায় শান্তি ফিরবে না। শুধু নেশাই নয়, তিনি আরও দাবি করেন, আমডাঙা থানার আইসি ইন্ধনে চলছে আমডাঙা কলেজের পাশে লোটোর ব্যবসা। স্বাভাবিকভাবে বিধায়কের এই বক্তব্যের পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা আমডাঙা জুড়ে। এখন দেখার বিধায়কের এই বক্তব্যের পরে কী ব্যবস্থা নেয় পুলিস-প্রশাসন।