শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: এই লেখার শিরোনাম দেখে চিংড়িপ্রেমীরা খানিকটা হতাশ হতেই পারেন এই ভেবে যে, তাঁদের প্রিয় সোনালি রঙের মুচমুচে ভাজা চিংড়ির স্বর্গীয় স্বাদ গ্রহণ করতে হলে তবে কি সুদূর চিন দেশের বেজিং শহরে যেতে হবে?
আরে না না, বেজিং যেতে হবে না। কলকাতার চায়না টাউন-এর বিখ্যাত বেজিং রেস্তোরাঁতে কলকাতার সবচেয়ে সেরা গোল্ডেন ফ্রায়েড প্রন পরিবেশিত হয়। বেজিং রেস্তোরাঁর চাইনিজ খাবারের খ্যাতি দেশজোড়া। শুধু দেশীয় খাদ্য রসিকরাই নয়, বিদেশি খাদ্য রসিকরাও কলকাতায় এলে বেজিং-এর চিনে খাবারের স্বাদ উপভোগ করেন। বেজিং-এর চাইনিজ খাবারের স্বাদে রয়েছে স্বতন্ত্রতার ছোঁয়া। এখানকার প্রতিটি খাবারই স্বাদেগন্ধে অতুলনীয়। তার অন্যতম কারণ হল বেজিং-এর কর্ণধার কাম শেফ মণিকা লিউ। মণিকার হাতের জাদু ও ভালোবাসা মিশিয়ে তৈরি চিনের পদগুলি অন্য মাত্রা পেয়ে যায়।
বেজিং রেস্তোরাঁর খাবারে যেরকম মণিকার ভালোবাসা মেশানো থাকে, সেরকম বেজিং রেস্তোরাঁতে আসা ক্রেতাদের সুবিধা-অসুবিধার প্রতিও তাঁর সজাগ দৃষ্টি থাকে। মাঝে মধ্যেই রেস্তোরাঁর মধ্যে ঘুরে ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে তাঁকে কথা বলতে দেখা যায়। তাই এখানকার সুস্বাদু চিনে খাবারের আকর্ষণ ও মণিকা লিউয়ের আন্তরিকতা ও ভালোবাসার টানে এখানে খাদ্যরসিকদের ভিড় উপচে পড়ে।
বেজিং-এর খাদ্য তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। তবে তার মধ্যে থেকে এখানকার বিখ্যাত কয়েকটি চাইনিজ খাবারের কথা উল্লেখ করছি, যেগুলি এখানে এসে অবশ্যই চেখে দেখবেন। শুরু করা যাক স্যুপ দিয়ে। দুটি স্যুপের কথা বলব ১) কাঁকড়া ও চিংড়ি সহযোগে তৈরি সুস্বাদু থাই স্যুপ, দাম হাফ-৩০০ টাকা, ফুল-৪১৫ টাকা। ২) চিকেন বা চিংড়ি সহযোগে তৈরি সুস্বাদু হট অ্যান্ড সাওয়ার স্যুপ, দাম-হাফ-৩০০ টাকা, ফুল-৪১৫ টাকা। দুটি স্যুপই স্বাদেগন্ধে অতুলনীয়। ফুল স্যুপ চারজনে ও হাফ স্যুপ দুজনে ভালোমতো ভাগ করে খাওয়া যায়। স্টার্টারে ক্যালকাটা ভেটকির ক্রিস্পি ফিশ ফ্রাই অনবদ্য। হানি চিলি সস ও গ্রিন চিলি সস সহযোগে মুচমুচে এই ফ্রাইতে কামড় দিলেই সুস্বাদু ভেটকি মাছের স্বাদ মন ভরিয়ে দেবে। এছাড়া ভেটকি মাছের আর একটি অনবদ্য স্টার্টার "সল্ট অ্যান্ড পিপার ফিশ খেতে খুব ভালো। ভেটকি মাছের দুটি স্টার্টারের দাম হাফ-৪১০ টাকা, ফুল-৭২০ টাকা। হাফ দুজনে ও ফুল চারজনে ভাগ করে খেতে পারেন।
চিকেনের চিলি গারলিক পিপার চিকেন দুর্দান্ত। দাম হাফ-৩২৫ টাকা, ফুল-৪৩৫ টাকা। তবে এখানকার সবচেয়ে সেরা স্টার্টার হল মণিকা লিউয়ের হাতের তৈরি গোল্ডেন ফ্রায়েড প্রন। মুচমুচে সুস্বাদু ভাজা চিংড়ির এই পদটির স্বর্গীয় স্বাদ মন ভরিয়ে দেবে। দাম হাফ - ৫৩৫ টাকা, ফুল-৯৯৫ টাকা।
মেইন কোর্সে যাঁরা তেলমশলা পছন্দ করেন না, তাঁরা এখানকার চিকেন উইথ বেবিকর্ন অ্যান্ড বাটন মাশরুম খেতে পারেন, দুর্দান্ত স্বাদ। দাম হাফ-৩১০ টাকা, ফুল-৪৩৫ টাকা। যাঁরা ঝাল পছন্দ করেন, তাঁরা চিকেন উইথ গ্রিন পিপার বা সেজোয়ান চিকেন খেতে পারেন। দুটি পদই খুব সুস্বাদু। দাম হাফ-৩১০ টাকা, ফুল-৪৩৫ টাকা। এছাড়া চিংড়ি, ডিম ও চিংড়ি সহযোগে তৈরি বেজিং স্পেশাল ফ্রায়েড রাইস দাম ২২৫ টাকা বা বেজিং স্পেশাল চাওমিন দাম ২৪৫ টাকা খেতে পারেন।
বেজিং-এ দুজনের ন্যূনতম খাওয়ার খরচ ১০০০ টাকা।
বুকারজয়ী ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সলমন রুশদির (Salman Rushdie) উপর গতকাল আচমকাই হামলা(attack) হয়েছিল একটি অনুষ্ঠান মঞ্চে। সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, ভেন্টিলেশনে(ventilation) রয়েছেন তিনি। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে তাঁর অস্ত্রোপচার(operation)। তাঁর একটি চোখ(eye) নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। প্রসঙ্গত, বিতর্কিত উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার পর রুশদিকে খুনের ফতোয়া জারি করেছিলেন ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খোমেইনি।
নিউইয়র্ক পুলিস(police) সূত্রে জানা গেছে, রুশদির ওপর হামলা চালানো ব্যক্তির নাম হাদি মাতার। ২৪ বছর বয়সী ওই যুবক নিউ জার্সির(Newjersy) বাসিন্দা। আচমকা হামলার পর আক্রমণকারীকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার(arrest) করে পুলিস।
কিন্তু ঠিক কী হয়েছিল? সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গেছে, নিউইয়র্কে ভাষণ দিতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন বুকারজয়ী সাহিত্যিক সলমন রুশদি। 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস'-এর লেখক ১৯৮৮ সালে সেই বিতর্কিত বইটি লেখেন। জানা গেছে, এই বই লেখার অপরাধে শুক্রবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখকের উপর ছুরি নিয়ে প্রাণঘাতী হামলা চালায় নিউ জার্সির যুবক হাদি মাতার। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বার এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে বুকারজয়ী লেখককে। ছুরির কোপ বসানো হয় লেখকের ঘাড়ে-বুকে-পেটে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপর ঘটনাস্থলে এসে পুলিস রুশদিকে হেলিকপ্টারে করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। গ্রেফতার করা হয় হামলাকারী হাদিকে। এখন পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন তিনি। লেখকের বইয়ের এজেন্ট অ্যান্ড্রু উইলি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এক চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে রুশদির। তাঁর হাতের স্নায়ুও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। উইলি আরও জানান, বুকে-পেটে ছুরি চালানোর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় লেখকের যকৃৎ।
কিন্তু কে এই হাদি মাতার? হামলা চালানোর পিছনে কী কারণ?
প্রাথমিক তদন্তে নিউইয়র্ক পুলিস সূত্র অনুযায়ী, ইসলাম ধর্মাবলম্বী হাদি শিয়া সম্প্রদায়ের। হাদির জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ায় হলেও আসলে সে ইরানি বংশোদ্ভূত। সে শিয়া কট্টরপন্থায় বিশ্বাসী। ইরানের ইসলামিক রেভিলিউশনারি গার্ড তথা IRG -র সমর্থক সে। তবে তিনি সরাসরি কোনও কট্টরপন্থী সংগঠনের সদস্য কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। উল্লেখ্য, কিন্তু তার ফোনের মেসেজিং অ্যাপে ইরানের কমান্ডার কাসিম সুলেমানির ছবি পাওয়া গিয়েছে। ২০২০ সালে খুন হয়েছিলেন সুলেমানি।
তার কোনও ক্রিমিনাল রেকর্ড ছিল কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিস। পুলিস খোঁজার চেষ্টা করছে কাদের হয়ে এই হামলা চালাল মাতার? পুলিসের ধারণা, সে একাই এই কাজ করছিল। মঞ্চে একটি ব্যাকপ্যাক পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে ইলেকট্রনিক সরঞ্জামও। রুশদির অনুষ্ঠানের প্রবেশপত্র সে কীভাবে জোগাড় করল তা জানার চেষ্টায় পুলিস। জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া প্রবেশপত্রটি ছিল ফেয়ারভিউর একটি ঠিকানার। ম্যানহাটন থেকে হাডসন নদী পেরিয়ে ওই ছোট শহরের হাদির সর্বশেষ ঠিকানা ছিল বলে পুলিসের দাবি।
শুক্রবার রাতে হাদির ঠিকানায় তল্লাশিতে গিয়েছিল আমেরিকার গোয়েন্দাসংস্থা এফবিআই। সেখানে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে দাবি গোয়েন্দা সংস্থার। হাদি ভুয়ো নথিপত্রের সাহায্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছিলেন বলেও প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তবে যে মঞ্চে রুশদির ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না বলেই আন্তর্জাতিক মহলের দাবি। প্রতক্ষ্যদর্শীদের দাবি, হাদি কালো শার্ট এবং কালো মুখোশ পরে ছিল।
বসিরহাটে (Basirhat) গ্যাস লিক কাণ্ডে গ্রেফতার (arrest) এক। উল্লেখ্য, বসিরহাটের মাটিয়া থানার খোলাপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর মাংসের প্রসেসিং কারখানায় অ্যামোনিয়া গ্যাস লিক হয়। শুক্রবারই এই ঘটনায় উঠে আসে বেআইনিভাবে অ্যামোনিয়া গ্যাস (Ammonia gas) রাখার অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই মাটিয়া থানার পুলিস (police) তদন্তে নেমে ওই কারখানার ম্যানেজার ফারুক হাসানকে গ্রেফতার করে। পুলিস অভিযুক্তকে শনিবারই বসিরহাট মহকুমা আদালতে (court) তোলে।
প্রসঙ্গত, গোপালপুর মোড়ে মাংসের ফুড প্রসেসিং কারখানা থেকে হঠাৎই শুক্রবার সকাল দশটা নাগাদ অ্যামোনিয়া গ্যাস লিক হয়ে বের হয়। দীর্ঘক্ষণ পরও তা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের এই গ্যাস নাকে আসলে বেশ কয়েকজন অসুস্থও হয় বলে জানা যায়। ঘটনার খবর জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা মাটিয়া থানায় খবর দেয়। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন বাদুড়িয়ার এসডিপিও অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র ও বিশাল পুলিসবাহিনী। তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে খতিয়ে দেখেন বিষয়টি। প্রত্যেক পুলিস কর্মী মুখে গামছা-রুমাল পরে তারপরই যান। ঘটনাস্থলে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয় দমকলের দুটি ইঞ্জিন। ওই কারখানার অ্যামোনিয়া গ্যাস যেখান থেকে লিক হয়, সেখানে জল দিতে শুরু করেন তাঁরা। এরপরই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীরা। আহতদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনও এলাকায় রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে।
বীরভূমের (Birbhum) দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি (Anubrata Mandal) ঘিরে এখনও সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। একদিকে, দলীয় নির্দেশ মেনে রাস্তায় নামল তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন। অন্যদিকে পথে নেমে সুর চড়াল বিরোধীরা।
এরই মধ্যে ফের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারি (Chandranath Adhikari)। তিনি জানান, "বৃহস্পতিবার সকালবেলা সিবিআই-এর তিনজন অধিকর্তা এসেছিলেন আমার বাড়ি। এসে একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন। শুরু থেকে শেষ অবধি একই বয়ান আমি দিয়েছি। আমার বয়ান একটি সাদা কাগজে লিখে নেন তাঁরা। তারপর আমাকে ভয়েস রেকোর্ডিং-য়ের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়। আমি সংবাদমাধ্যমকে যা যা রেকোর্ডিং দিয়েছি, সেসব তাঁদেরও দিয়েছি। এরপর খুব বেশি সময় নয়, আধ ঘণ্টার মত কথা বলে আমার সঙ্গে তাঁরা চলে যান।" তবে এদিন তিনি আরও জানান, রাজনীতি নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও মন্তব্য নেই। কারণ, তিনি একজন চিকিত্সক, সরকারি কর্মী। তবে এই সমস্ত ঘটনার পর সুপার কোনও যোগাযোগ করেননি তাঁর সঙ্গে, জানান চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নিজের বাড়ি থেকেই গ্রেফতার হন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। শুক্রবার আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে তাঁকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে ফিরে সিজিও কমপ্লেক্সে চা খেয়েছেন তিনি। এদিন সকালে একবার অনুব্রত মণ্ডলের শ্বাসকষ্ট হয়েছিল। দু'বার নেবুলাইজার নিয়ে আপাতত স্বাভাবিক তিনি। শুক্রবার বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এক সিবিআই কর্তার উপস্থিতিতে স্পিকার অন করেই মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন অনুব্রত। আধ ঘণ্টার জন্য তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে গিয়েছেন আইনজীবী।
জানা গিয়েছে, রাতে সিপিডব্লিউডি ক্যান্টিন থেকে আনা খাবার খেয়েছেন তিনি। সকালে খাচ্ছেন ভাত, রাতে রুটি-সবজি। শুক্রবার রাতে তাঁকে গেস্ট রুমে রাখা হবে। দেওয়া হবে তক্তার বিছানা। টিভি দেখার ইচ্ছা হলে তাঁর ঘরে লাগতে পারে টিভিও। সম্ভবত শনিবার থেকে পুরোদমে তাঁকে জেরা শুরু করবে সিবিআই।
সূত্রের খবর, তাঁর গ্রেফতারিতে দলের প্রতিক্রিয়া এবং মানুষের প্রতিক্রিয়া কী? এক সঙ্গীর থেকে খোঁজখবর নিয়েছেন অনুব্রত। তাঁর সঙ্গে ২৪ ঘণ্টাই একজন সঙ্গী থাকছেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। বীরভূম থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা তাঁর জন্য মুড়ি ও জামাকাপড় পাঠিয়েছেন। এসএসকেএম হাসপাতালের লিখে দেওয়া ওষুধেই এদিন সায় দিয়েছে কমান্ড হাসপাতাল।
এদিকে, তাঁর গেস্ট রুমের নজরদারিতে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি একা থাকতে পারতেন না। তাই তাঁর ঘরে একজন করে সঙ্গী থাকতে অনুমতি দিয়েছে সিবিআই।
যাঁর নামে বাঘে গরুতে একঘাটে জল খেত, আজ কিনা তাঁর চোখে জল!ভোট আসলেই বীরভূমের (Birbhum) বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) সামলাতে কাল ঘাম ছুটত পুলিস থেকে শুরু করে কমিশনের কর্তাদের। কখনও প্রকাশ্যে পুলিসকে বোমা মারার হুমকি দিয়েছেন তো, আবার কখনও গাঁজা কেসে জেলে ঢোকানোর। আজ সেই দাপুটে নেতা একেবারে নির্বাক। কার্যত ভেঙে পড়লেন বীরভূম জেলা তৃণমূল (TMC) সভাপতি। বৃহস্পতিবার রাতে নিজাম (Nizam) প্যালেসে নিয়ে আসার পথে দৌর্দণ্ড্যপ্রতাপ নেতার এহেন অবস্থা লেন্সবন্দি হল। যা দেখে কিছুটা হলেও অবাক হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অনেকেই।
গরু পাচার মামলায় বৃহস্পতিবার বীরভূমের বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। আগামী ১০ দিন তাঁকে সিবিআই হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ আদালত। ২০ অগাস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে পেয়েছে তাঁকে। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুব্রতকে সিবিআইয়ের গাড়িতে করে কলকাতার নিজাম প্যালেসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তবে ধনেখালিতে যানজটে আটকে যায় গাড়ি। একদা বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল বাড়ি থেকে বেরোলেই অনায়াসে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যেত। কোনও বাধা বিপত্তি ছাড়াই তিনি পৌঁছে যেতেন গন্তব্যে। একাধিকবার কলকাতায় এসেছেন বাধা-বিপত্তি ছাড়াই। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পরে কলকাতায় ফিরতে গিয়ে বেগ পেতে হল অনুব্রত মণ্ডলকে। গোটা জাতীয় সড়কে কার্যত গাড়ি বন্দী হয়ে থাকতে হল দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল সভাপতিকে। জাতীয় সড়কে প্রায় এক ঘন্টা আটকে ছিলেন তিনি। এরপর স্থানীয় পুলিসের সহযোগিতায় কনভয় ফের কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
আর ফেরার পথে কিছুক্ষণের জন্যে পালসিটের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পে দাঁড়ায় সিবিআইয়ের গাড়ি। সঙ্গে সঙ্গে অনুব্রত মন্ডলের দিকে ছুটে যান সাংবাদিকরা। একাধিক প্রশ্ন করা হলেও একেবারে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন তিনি। কেবল ক্যামেরায় ধরা পড়ল অনুব্রতের চোখের জল। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। সাড়ে সাত ঘণ্টা পর অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে মধ্যরাত ২ টো ৪৫ মিনিট নাগাদ নিজাম প্যালেসে প্রবেশ করেন সিবিআই আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তারপর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে টানটান উত্তেজনার শেষে গ্রেফতার হন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই আধিকারিকেরা একেবারে বাড়ির ভিতরে দোতলায় অনুব্রতর ঘরে গিয়ে তাঁকে গ্রেফতারি পরোয়ানাতে স্বাক্ষর করিয়ে গ্রেফতার করেন।
সূত্রের খবর, সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন অনুব্রতর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়া তাঁর জন্য একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনে একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এমনকি অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী সায়গলের বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। তাঁর ফোন রেকর্ড থেকেও উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক তথ্য। যা এখন সিবিআইয়ের হাতে। জানা গিয়েছে, গরু পাচার মামলার একাধিক তথ্য এখন সিবিআইয়ের কাছে। সেই সব বিষয়কে সামনে রেখেই আজ থেকে আগামী কয়েকদিন লাগাতার জেরা করবেন সিবিআই আধিকারিকরা বলে মনে করা হচ্ছে।
লেক গার্ডেন্স (Lake Gardens) ফ্লাইওভার (Flyover) থেকে মঙ্গলবার রাত ৮ টা নাগাদ ঝাঁপ দিলেন বছর ৪৫ এর এক মহিলা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা ফুটব্রিজের ওপরে দাঁড়ান এবং সেখান থেকে রেলিং টপকে ঝাঁপ (Jump) দিয়ে নিচে পড়েন। লেক গার্ডেন্স স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের যে ছাউনি রয়েছে, তাতেই ঝুলন্ত অবস্থায় ওই মহিলাকে দেখতে পান আশপাশের মানুষজন। স্টেশনের কর্মী এবং নিত্যযাত্রীরা এই মর্মান্তির দৃশ্য দেখে পুলিসে খবর দেন। গুরুতর আহত অবস্থায় (Critical) তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে তাঁর চিকিত্সা চলছে বলে জানা গিয়েছে।
ঠিক কী কারণে এই আত্মহত্যার চেষ্টা, তা তদন্ত করে দেখছেন পুলিস আধিকারিকরা।
অন্যদিকে, পুলিস ইতিমধ্যেই তাঁর পরিচয় জেনে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। বাড়িতে কোনও অশান্তি হয়েছিল কি না, হলে কার সঙ্গে, এসবই আপাতত তদন্তের আওতায় রয়েছে বলে পুলিস জানিয়েছে। পাশাপাশি পুলিস কোনও প্রত্যত্ক্ষদর্শীরও সন্ধান চালাচ্ছে। অর্থাত্, ঝাঁপ দেওয়ার মুহূর্তে ফ্লাইওভারের ওপর কেউ ছিলেন কি না, থাকলে তিনি কী অবস্থায় ওই মহিলাকে দেখেছিলেন, এসবই পুলিস জানার চেষ্টা করছে।
বিশেষ বন্ধু সিদ্ধার্থ শুক্লাকে হারিয়ে একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন বিগ বস খ্যাত 'পঞ্জাবের ক্যাটরিনা কাইফ' শেহনাজ গিল (Shehnaaz Gill)। ধীরে ধীরে শোক কাটিয়ে ফিরেছেন স্বমহিমায়। ওজন কমিয়ে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সকলকে। সম্প্রতি ইদের (EID) সময় থেকে শোনা যাচ্ছিল শেহনাজ এবং সলমান খানের (Salman Khan) মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এমনকি একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল(Viral) হয়েছে। যেখানে তাঁদের খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গিয়েছে। তবে এবার শোনা যাচ্ছে দূরত্ব তৈরি হয়েছে ভাইজান এবং শেহনাজের মধ্যে।
শোনা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় সলমন খানকে আনফলোও করেছেন শেহনাজ। এই নিয়েই উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। এমনকি সলমনের ‘কভি ইদ কভি দিওয়ালি’-র সেট ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন শেহনাজ। বলিউডে এই ছবির মাধ্যমেই প্রথম প্রবেশ শেহনাজের। সেখানে কী এমন হল যে অভিনেত্রী এমন সিদ্ধান্ত নিলেন?
এর আগে এই ছবি থেকে বিদায় নিয়েছিলেন সলমনের ভগ্নিপতি আয়ুশ শর্মা। চিত্রনাট্য পছন্দ না হওয়ার কারণে এই ছবি থেকে পিছিয়ে আসেন বলে খবর। প্রথম থেকেই খবরের শিরোনামে এই ছবি। এবার নয়া সংযোজন শেহনাজ।
তবে কি বলিউডে ডেবিউ করার আগেই স্বপ্নভঙ্গ হল শেহনাজের? আসলে এমন কিছুই ঘটেনি, সবটাই গুজব। আর সেই গুজবেই মনখারাপ শেহনাজের ফ্যানেদের। তবে ভক্তদের নিজেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন অভিনেত্রী।
কী লিখেছেন শেহনাজ? শেহনাজের ইনস্টা স্টোরিতে লিখেছেন, “জোরে জোরে হাসছি। এই সব গুজব আমার প্রত্যেকদিনের হাসির খোরাক। আমি অপেক্ষায় রয়েছি কবে দর্শক এসে ছবিটি দেখবে ও ছবিতে আমাকেও দেখবে।” শেহনাজ জানিয়ে দিয়েছেন সলমনের ছবি থেকে সরে আসার যে খবর রটেছে তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। তিনি ছবিটিতে রয়েছেন। অভিনয়ও করছেন।
নয়ডা আবাসনে মহিলা নিগ্রহে (Woman harrasment) অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করল উত্তর প্রদেশ পুলিস (Uttar Pradesh Police) । মেরঠ থেকে পুলিসের খাতায় 'পলাতক' এই নেতা শ্রীকান্ত ত্যাগীকে (BJP Leader) গ্রেফতার করেছে পুলিস। শনিবারই তাঁর বিরুদ্ধে নারী নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তারপর থেকেই নাকি পলাতক ছিলেন শ্রীকান্ত। তাঁর খোঁজে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। এমনকি, শ্রীকান্তের বাড়ির সামনে থাকা কিছু অবৈধ নির্মাণ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় যোগী প্রশাসন (Yogi Government)।
জানা গিয়েছে, বিজেপির কিষাণ মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য শ্রীকান্ত। তিনি নাকি নিজেই এই দাবি করে থাকেন। দিন কয়েক আগে নয়ডার এক আবাসনে গাছ লাগানোকে কেন্দ্র করে এক মহিলার সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান শ্রীকান্ত ত্যাগী। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মহিলাকে নিগ্রহ করছেন অভিযুক্ত। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি সিএন ডিজিটাল।
Longer version of the video where BJP leader Shrikant Tyagi is seen abusing a woman.
— Mohammed Zubair (@zoo_bear) August 5, 2022
Warning : **Abusive language** pic.twitter.com/1ahGdEjIUq
এরপরে শনিবার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। তারপর থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি। পাশাপাশি শ্রীকান্তর খোঁজ পেতে পুলিশ তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মঙ্গলবার সকালে তাঁর স্ত্রীকেও আটক করা হয়। তবে শ্রীকান্তর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের নিয়েও সেই মহিলার খোঁজ শুরু করেন শ্রীকান্ত অনুগামীরা।
কয়েক জন অনুগামী রবিবার ওই আবাসনে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। শ্রীকান্ত যে মহিলাকে নিগ্রহ করেছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁর ফ্ল্যাট কোথায় তা-ও জানতে চান বিজেপি নেতার অনুগামীরা। এই অভিযোগে পুলিস আবার বিজেপি নেতার ছয় অনুগামীকেও গ্রেফতার করেছে।