অবাধ, শান্তিপূর্ন এবং সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Vote) দাবিতে জনস্বার্থ মামলা। এই জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (LOP Suvendu Adhikary)। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির পর্যবেক্ষণে পঞ্চায়েত নির্বাচন আয়োজনের আবেদন বিরোধী দলনেতার। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট আয়োজনের জন্য দরবার করেছেন তিনি। এই মামলায় বিরোধী দলনেতার আবেদন, 'সব বিরোধী প্রার্থীরা যাতে মনোনয়নপত্র পেশ করতে পারে তা নিশ্চিত করুক কমিশন।' পাশাপাশি গত ২৯ শে জুলাই তফশিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের গণনার যে বিজ্ঞপ্তি রাজ্য নির্বাচন কমিশন দিয়েছে তা খারিজের আবেদন জানানো হয়েছে এই মামলায়। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, '২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। সেই নির্বাচন শান্তিপূর্নভাবে হয়েছিল।'
বিরোধী দলনেতার দাবি, '২০১৮ সালে রাজ্যে পুলিসের নিয়ন্ত্রণে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। ব্যাপক সন্ত্রাসের সাক্ষী ছিল রাজ্য। বিরোধীরা মনোনয়ন পর্যন্ত পেশ করতে পারেনি। ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনের পরেও ব্যাপক হিংসার সাক্ষী থেকেছে বাংলা।'
শুভেন্দু অধিকারীর আরও দাবি, '২০২২ সালেও কলকাতা পুরসভা এবং কাঁথির নির্বাচনেও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করা হোক! রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন।' মূলত অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর উপর থাকা হাইকোর্টের রক্ষাকবচকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে জনৈক আইনজীবী আবু সোহেল। সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আইনজীবী আবু সোহেল। সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে রক্ষাকবচ দিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, 'শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব এফআইআর-র উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ থাকবে। পাশাপাশি আদালতের অনুমতি ছাড়া নতুন এফআইআর দায়ের করা যাবে না।'
এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলাকারীর মন্তব্য, 'পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় আমি অন্যতম পক্ষ। আমার বক্তব্য না শুনেই রায় দিয়েছে সিঙ্গেল বেঞ্চ।'
এখানকার সাংসদ (MP Abhishek Banerjee) সর্বভুক, কয়লা খান, বালি খান, গরু খান, মদের বোতল খান। স্কুলের ইউনিফর্মের টাকাও খান। চাকরি বেচেছেন এখানকার সাংসদ। ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) সভা থেকেই এভাবেই নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, 'যারা বলছেন কেন কিছু হচ্ছে না তাঁরা অপেক্ষা করুন। মধু কোড়া দুর্নীতি করে পার পায়নি। মোদীজির একটা স্লোগান আছে না, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা।'
এদিন তাঁর বক্তৃতায় পার্থ-অর্পিতার প্রসঙ্গ এসেছে। তিনি প্রসঙ্গের সরাসরি উল্লেখ করে বলেন, '১৫ অগাস্ট লালকেল্লার ভাষণ থেকে মোদীজি কী বলেছেন? গরিব খুঁজছে ছাদ, আমাদের দেশের নেতা কিনছে ফ্ল্যাট। মানে অপা সিন্ডিকেট, কলকাতা, দরজা খুললেই লাল বান্ডিল।' রাজ্যের কয়েকজন পুলিস কর্তাদের উদ্দেশেও এদিন সরব ছিলেন বিরোধী দলনেতা। তিনি দুই আইপিএসের নাম উল্লেখ করে বলেন, 'আপনাদের বিরুদ্ধে অবমাননার মামলা হাইকোর্টে দায়ের করব। ছাড়ার কোনও জায়গা নেই। ডিজির বিরুদ্ধেও অবমাননার মামলা দায়ের হবে। যত গাড়ির কাচ ভেঙেছে সরকারের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করব। কী করে করতে হয় আমি জানি।'
এদিন ছিল সুপার শনিবার। হাইভোল্টেজ রাজনৈতিক ময়দানে ম্যাচ ছিল শুভেন্দু অধিকারী বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সাংসদ এদিন সভা করেন কাঁথিতে আর শুভেন্দু অধিকারী সভা করেন ডায়মন্ড হারবারে। আর যুযুধান এই দুই নেতার বাকযুদ্ধের দিকে নজর ছিল বাংলার রাজনীতি।
১৫ দিনের মধ্যে যদি উল্লঙ্গ করতে না পারি তাহলে আমি রাজনীতির ময়দানে আসা ছেড়ে দেব। কাঁথির কলেজ মাঠের (Contai College Ground) জনসভা থেকে এভাবেই নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তিনি বলেন, 'আমাকে তোলাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত বলে, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। আজ তিন তারিখ, ৫-৮ আমি কলকাতায় থাকবো না দিল্লি যাবো। আমি ১৫ দিন সময় দিয়ে গেলাম এই কলেজের মাঠে আবার সভা হবে। তুমি তোমার খাতা নিয়ে আসবে, আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। মানুষের সামনে উলঙ্গ যদি না করতে পারি, আমি রাজনীতির ময়দানে পা রাখবো না।'
ডিসেম্বর মাসেই আরও একজন বিশ্বাসঘাতক দু'বছর আগে এই ডিসেম্বর মাসেই অমিত শাহের পদলেহন করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল। বিশ্বাসঘাতক বললে মানুষ যখন কথায় কথায় মীরজাফরের প্রসঙ্গ টানে, এই মেদিনীপুরের বিশ্বাসঘাতককে মানুষ আগামি ৫০০ বছর গদ্দার বলে মনে রাখবে। এভাবেও রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে পরোক্ষে আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ।
কাঁথির কলেজ মাঠে দাঁড়িয়ে তাঁর অভিযোগ, '২০১১-২০২০ কী কাজটা এই এলাকার জন্য করেছে আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই। একটা ঠিকাদার এবং একটা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে নেক্সাস চালিয়েছে বছরের পর বছর।' পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, 'আমি মা-মাটি-মানুষের ঘরে এসেছি, পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষের গড়ে এসেছি। আমি ভেবেছিলাম বুক চিতিয়ে লড়াই হবে। আমার কথা শুনবে, সে এখানেই থাকবে কিন্তু সে তো লেজ গুটিয়ে ডায়মন্ডহারবার পালিয়েছে।'
শনিবারের বারবেলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারী (Abhsihek-Suvendu। না খেলার ময়দানে নয়, রাজনীতির ময়দানে। ৩ ডিসেম্বর অর্থাৎ শনিবার রাজ্যের শাসক এবং বিরোধী দলের (TMC-BJP) দুই নেতার জনসভায় তপ্ত হবে বাংলা রাজনীতি (Bengal Politics)। ইতিমধ্যে কাঁথিতে শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির সামনে সভা করার অনুমতি তৃণমূলকে দিয়েছে হাইকোর্ট। একইভাবে ডায়মন্ডহারবার (Diamond Harbour) অর্থাৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ে সংসদক্ষেত্রে শনিবার শুভেন্দু অধিকারীর সভার অনুমতিও আদালত দিল বিজেপিকে।
শান্তিপূর্ণভাবে, শব্দবিধি মেনে ডায়মন্ড হারবার লাইট হাউসের মাঠে শুভেন্দু অধিকারীর সভার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শনিবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন শান্তিকুঞ্জ অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির সামনে কলেজ মাঠে সভা করবেন, তখন তাঁরই লোকসভা এলাকাযর লাইট হাউসের মাঠে সভা করবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এদিকে, ফলতায় শুভেন্দু অধিকারীর সভার অনুমতি নিয়ে আপত্তি তোলে পুলিস। তখন ডায়মন্ড হারবারে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ লাইট হাউস মাঠের আগাম অনুমতি নিয়ে নেয় বিজেপি।
বৃহস্পতিবার সেই মামলা শুনানির জন্য উঠলে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা পুলিসের অনুমতি না দেওয়ার কারণ জানতে চান। রাজ্য জানিয়ে দেয় শুক্রবারই সকলেই অনুমতি দেওয়া হবে। এদিন সেই অনুমতি দেওয়ার কথা আদালতে জানায় সব পক্ষ।
৩ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) বাড়ির সামনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিটিং, মাইক বাজিয়ে অধিকারী পরিবারকে হেনস্থার পরিকল্পনা। এই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা (LOP)। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজ্যের শাসক দলকে শর্তসাপেক্ষে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটিংয়ের অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থার নির্দেশ, 'বিরোধী দলনেতার বাড়ির সামনে শাসক দলের কোন কর্মী জমায়েত করতে পারবে না। কাঁথি থানা ও জেলার পুলিস সুপার নিশ্চিত করবেন, সভায় জমায়েত ছাড়া শুভেন্দুর বাড়ি যাতে কেউ না ঢোকেন। মাইক বাজানো শব্দবিধি মেনে করতে হবে।' পাশাপাশি আগামি সোমবার এই নির্দেশ কার্যকরের রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে। এদিন জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিন শুভেন্দুর তরফে আইনজীবী সৌম্য মজুমদার জানান, আদালত আগে বিরোধী দলনেতার বাড়ির সামনে জমায়েত ও লাউড স্পিকার বাজানো নিয়ে নির্দেশ দিয়েছিল। এসপি-কে নির্দেশ দিয়েছিল পরবর্তীকালে যাতে শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির সামনে এমন কোন ঘটনা না ঘটে।
পাল্টা রাজ্যর অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, বাড়ির সামনে কোন জমায়েত হবে না। পুলিস ওখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। "জেড ক্যাটাগরি" নিরাপত্তা পাওয়া ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দিতে বাধ্য পুলিস। এরপরেই বিরোধী দলনেতার আইনজীবী সৌম্য মজুমদার বলেন, '৩ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি থেকে ১৭০ মিটার দূরে মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। অভিষেক ব্যানার্জি আসবেন, জনসমাগম হবে। বাড়ি থেকে ১ মিনিট দূরে কলেজের মাঠ সেখানেই এই জনসভা।
জানা গিয়েছে বিরোধী দলনেতার পরিবারকে মাইক বাজিয়ে হেনস্থার পরিকল্পনা। আর এই অভিযোগ জানিয়ে এদিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিধানসভায় একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব শুভেন্দু অধিকারী (Suvednu Adhikary)। তিনিও বলেন, 'সংবিধানের ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, অফ দ্য পিপল মানা হচ্ছে না। ফর দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি করছে।' সংবিধান দিবস (Constitution Day) নিয়ে বিবৃতি দিতে গিয়ে রাজ্য সরকারের (Bengal Government) উদ্দেশে একথা বলেন বিরোধী দলনেতা। সংবিধান দিবস উপলক্ষে বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য। তিনি জানান, 'প্রশাসনিক সভাতে বিরোধী দলের বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। আশা করি যথাসময়ে পুরসভা নির্বাচন হবে। দিনের পর দিন বিভিন্ন ইনস্টিটিউশনে নির্বাচন হয় না। আমরা-ওরার প্রাচীর ভেঙে দেওয়া উচিত। নিয়োগ, বদলি স্বচ্ছতা রাখা উচিত। বিচারব্যবস্থায় সরকারি হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়। সংবিধানের চতুর্থ স্তম্ভ ভোটের সময় মিডিয়া আক্রান্ত হয়।'
এখানেই থামেননি বিরোধী দলনেতা, শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'বামফ্রন্টের সময় রাজনীতির বাইরে একটা রেশন কার্ড দেওয়া হতো না। আজকের পর থেকে এটা হবে না আশা করি। সরকারি অনুষ্ঠানে বিধায়কদের দলগতভাবে মর্যাদা দেওয়া হয়। প্রয়াত দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের ভোটও কেউ দিয়ে গেলেন, এগুলো বন্ধ হোক।'
যদিও বিরোধী দলনেতাকে 'ভাই' সম্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'আমার ছোট ভাইয়ের মতো। যাকে স্নেহ করতাম, সে বলল বাই দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টি। আমি তো কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বলতে পারি, বাই দ্য এজেন্সি, ফর দ্য এজেন্সি, অফ দ্য এজেন্সি।' তাঁর মন্তব্য, 'বেঙ্গল বিজনেস সামিটে আপনারা যাননি। রাজ্যপালের শপথ অনুষ্ঠানে যাননি। আপনারা ডাকলেও যান না। চলচ্চিত্র উৎসবে আপনাদের সবার আমন্ত্রণ থাকল।' শুভেন্দুর করা 'সঠিক সময়ে নির্বাচন হয় না' মন্তব্য প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'রোজ রোজ নির্বাচন করলে উন্নয়ন ব্যাহত হয়। ত্রিপুরাতে ৫০ শতাংশ আসনে ভোট হয়নি। উত্তর প্রদেশেও তাই হয়েছে।'
বুধবার রাজ ভবনে নবনিযুক্ত রাজ্যপাল (Bengal Governor) সিভি আনন্দ বোসের শপথ অনুষ্ঠান (Oath Taking Ceremony) বয়কট করেন শুভেন্দু আধিকারী। কেন এই সিদ্ধান্ত, প্রথমে ট্যুইট করে জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। পাশাপাশি বিধানসভাতেও সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। এদিন ট্যুইটে বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, 'রাজ্যপালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার আসন বরাদ্দ করা হয়েছে কৃষ্ণ কল্যাণী এবং বিশ্বজিৎ দাসের পাশে। যারা বিজেপির টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে দল বদলে এখন তৃণমূল (TMC) করছেন। দলত্যাগ আইনে এঁদের বিধায়ক পদ খারিজের শুনানি চলছে।'
Heartiest Congratulations to Dr CV Ananda Bose as he takes oath as the Governor of West Bengal.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) November 23, 2022
The Information & Cultural Affairs Dept; WB Govt has made the arrangements for the oath taking ceremony.
Seating arrangements as per the Minister in Charge @MamataOfficial's whim: pic.twitter.com/ovbTMqGsif
পাশাপাশি তিনি নবনিযুক্ত রাজ্যপালকে শপথ গ্রহণের শুভেচ্ছা জানিয়ে এই আসন বিতর্কের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য এবং সম্প্রচার দফতরকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এই দফতরের দায়িত্বে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার এই প্রসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানান, 'শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে আমি এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি কার্যত রাজ ভবনের গেট থেকে ফিরে এসেছি। আমরা সাড়ে ১০টার মধ্যে কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম। কেন এই সিদ্ধান্ত, তার জন্য একটি ট্যুইট করেছি। যাতে কোনওভাবে ভুল বার্তা না ছড়ায় এবং সত্য উদ্ঘাটিত হয়।'
তাঁর খোঁচা, 'আমন্ত্রিতদের তালিকা তৈরি থেকে, বসার ব্যবস্থাপনা, এসব কিছু কোম্পানির মালিক করেছেন। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক অনুষ্ঠান। কোনও রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতি নেই। এই অনুষ্ঠানে বিধানসভার অধ্যক্ষ, তিন-চার জন মন্ত্রী আমন্ত্রিত ছিলেন। তার বাইরে দু'জন বিধায়ককে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। এঁরা কারা, নাম বলতে চাই না। বিজেপির টিকিটে ভোটে জিতে বিধানসভায় বিজেপি এবং বিধানসভার বাইরে তৃণমূল। তাঁদের মধ্যে একজন লজ্জা ছেড়ে আবার বনগাঁ তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। এঁদের কোন প্রোটোকলে ডাকা হয়েছে? যদি ধরে নিতাম ২৯৪ জন বিধায়ক আমন্ত্রিত তাহলে এই প্রশ্ন করতাম না। এই নিকৃষ্ট রাজনীতির সাক্ষী থাকল বাংলা।'
এই সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের আসন বরাদ্দ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, 'এই অনুষ্ঠানে কলকাতার লোকসভা এবং রাজ্যসভার একাধিক সাংসদকে সামনের সারিতে বসানো হয়েছে। সেখানে বালুরঘাটের সাংসদ মাননীয় ডক্টর সুকান্ত মজুমদারকে পিছনের সারিতে বসতে দেওয়া হয়েছে। পিছনের সারিতে বসেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও। যদি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ হন, মালা রায় সাংসদ হন, ডেরেক ও ব্রায়েন সাংসদ হন, তাহলে ডক্টর সুকান্ত মজুমদারও সাংসদ।'
মিথ্যে মামলায় জড়ানো হচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikary)। আদালতের রক্ষাকবচ থাকা সত্বেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজ করছে শাসক দল (TMC)। এই অভিযোগে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধ সম্প্রতি দায়ের হয়েছে এক ডজন এফআইআর। সেই এফআইআরের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ শুভেন্দু অধিকারী। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্বেও বারবার বিভিন্ন জায়গায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতের রক্ষাকবচ রয়েছে। তারপরেও মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। তাই আদালতের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
এদিকে, কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি বিরোধী দলনেতার কাঁথির বাড়ির সামনে জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। কোনও রাজনৈতিক জমায়েত যাতে না হয়, নিশ্চিত করতে হবে কাঁথি থানাকে, এই মর্মেই নির্দেশ আদালতের। এই নির্দেশ কার্যকর করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিস সুপারকে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) বাড়ির সামনে জমায়েত নিষিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বুধবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। সম্প্রতি বিরোধী দলনেতার কাঁথির (contai House) বাড়ি শান্তিকুঞ্জের সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP Gatherings) জমায়েত ঘিরে উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়। শুভেন্দু অধিকারির 'সুস্থতা' কামনা করে হাতে গ্রিটিংস কার্ড এবং গোলাপ ফুল নিয়ে বিরোধী দলনেতার বাড়ির সামনে জমায়েত করেন ছাত্র নেতারা। শান্তিকুঞ্জে গিয়ে সেই কার্ড এবং গোলাপ ফুল দেওয়ার চেষ্টা করলেই পুলিসি বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এই কর্মসূচির বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
সেই মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ বিচারপতি মান্থার। এদিন শুভেন্দুর আইনজীবী আদালতকে জানায়, 'গেট ওয়েল সুন' অনুষ্ঠানের নাম জমায়েত হয়েছে। এই দাবির প্রেক্ষিতে ভিডিও ফুটেজ আছে। খোদ আইসি রয়েছেন এই জমায়েতের সামনে।' এরপরেই বিচারপতি বলেন, 'হয়তো আপনার মক্কেলকে তাঁরা ভালবাসতে পারেন।' শুভেন্দুর আইনজীবীর পাল্টা, 'ক্রমাগত অশ্লীল ভাষা ব্যবহার হয়েছে।' এরপরেই বিচারপতির মন্তব্য, 'বেশি ভালবাসবেন না। মধুমেহ হয়ে যেতে পারে।'
পাশাপাশি হাইকোর্টের এই নির্দেশ কার্যকর করতে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিস সুপারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাঁথি থানা নিশ্চিত করবে কোনও রকম জমায়েত যাতে না হয়। যদিও রাজ্য জানিয়েছে, তারা হলফনামা দিয়ে জানাবে ক্রমাগত শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির সামনে জমায়েত করা হয় না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি শুক্রবার।
২০১৪-র টেট পরীক্ষা (TET 2014) দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) এবং শুভেন্দু অধিকারী! শুনতে বিস্ময়কর হলেও এটাই সত্যি। ১১ নভেম্বর ২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (Primary Board)। পাশ প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন "দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারীর" নাম। জেনারেলে ক্যাটাগরিতে নাম আছে শুভেন্দু অধিকারী, সুজন চক্রবর্তীর আর ওবিসি ক্যাটাগরিতে নাম দিলীপ ঘোষ।
সফল প্রার্থীতালিকার সঙ্গে রাজ্যের রাজনীতিবিদদের নাম এভাবে মিলে যাওয়া কি কাকতালীয়? এই নামে অন্য প্রার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁরাই কি ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলার রাজনীতিতে। যদিও এবিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন একদল আইনজীবী।
তবে আইনজীবী তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারির মত, 'পুরোটাই অনুপ্রেরণা এবং জালিয়াতি। মানুষ যখন নকল বা জালিয়াতি করে তখন এভাবেই ভুল করে। কতটা জালিয়াতি আবার প্রমাণিত।' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, 'আমার নামে আর কারও নাম থাকতেই পারে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, এঁরা সবাই নাকি ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের নামটা বাদ গেল কেন। উদোর পিন্ডির ভুঁদোর ঘাড়ে দেওয়া, দুর্নীতিকে স্পষ্ট করা। পথে বসে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ঠিক। এই তালিকার কোনও মূল্য নেই।'
রাজ্যর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) কনভয় অনুসরণ করার অভিযোগে কাঁথিতে (Contai) আটক ২ যুবক। শান্তিকুঞ্জের সামনে সন্দেহজজনক ওই দু'জনকে আটকায় সিআরপিএফ (CRPF)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কনো সদুত্তর দিতে না পাড়ায় খবর দেওয়া হয় কাঁথি থানায়। পুলিস এসে ওই দু'জনকে আটক করে। পাশাপাশি ওই দুই যুবকের সঙ্গে থাকা একটি চার চাকার গাড়ি এবং মোটর বাইক আটক করে পুলিস।
এখনও পর্যন্ত আটক ওই দুই যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জানা গিয়েছে, মধ্যরাতে প্রায় ২০-২৫ কিমি বিরোধী দলনেতার কনভয় অনুসরণ করে আসার পর শান্তিকুঞ্জ থেকে কিছু দূরে এসে ওই দুই যুবক এসে দাঁড়ায়। এরপরেই তাঁদের এসে আটক করে সিআরপিএফ জওয়ানেরা। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবে কাঁথি শহরে চাঞ্চল্য। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হাই সিকিওরিটি প্রাপ্ত এবং একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সমগোত্রীয় পদ। তাঁর কনভয় এভাবে অনুসরণ করে প্রায় শান্তিকুঞ্জ পর্যন্ত চলে আসা ঘিরে স্পষ্টতই রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে।
ইতিমধ্যে ৯ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের সভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেছিলেন, শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি ও তাঁর কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নন্দীগ্রামে অস্ত্র ও টাকা ঢুকছে পঞ্চায়েত ভোটের আগে। এমনকী নদীয়া সভা থেকে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় নাকা চেকিং জোরদার করতে তৎপর হয়েছিলেন। তার ১২ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই শুভেন্দুর গাড়িকে অনুসরণ করার খবর সামনে চলে এলো!
শুক্রবার মধ্যরাতে করুণাময়ীতে পুলিসি ধরপাকড়ের তীব্র নিন্দা পরিচালক-অভিনেত্রী অপর্ণা সেনের। তিনি ট্যুইটে লেখেন, 'অনশনকারীদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত করেছে তৃণমূল সরকার। অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৪৪ ধারা কার্যকর কেন? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই অনৈতিক কাজের তীব্র নিন্দা জানাই।' শুধু অপর্ণা সেন নয় কালকের ঘটনায় সরব টলিউডের একাধিক পরিচিত মুখ। শুক্রবার রাতেই অভিনেত্রী সোহিনী সরকারের ফেসবুক পোস্ট, 'এঁরা যত বেশি পড়ে, তত বেশি জানে, তত কম মানে।'
অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র আবার একধাপ এগিয়ে। তিনি নিজের ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে তৃণমূল সমর্থকদের সরে যেতে বার্তা পাঠান। জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী ঋদ্ধি সেন লেখেন, 'ধিক্কার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুলিশকে এক শান্তিপূর্ণ ,যোগ্য আন্দোলনের গায়ে এমন বীভৎস আঘাত করার জন্য। এই জঘন্য কাজের মাশুল গুনতে হবে রাষ্ট্রকে।'
তবে শুধু তারকা জগৎ রাজনৈতিক মঞ্চ থেকেও এই পুলিসি 'অতিসক্রিয়তার' সমালোচনা করা হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, 'বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। মমতার পুলিস টেট ২০১৪-র চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ দমাতে পুলিসি বর্বরতার আশ্রয় নিচ্ছে। এটা পশ্চিম বাংলা না হিটলারের জার্মানি।'
যদিও শুভেন্দুর ট্যুইটকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছে তৃণমূল। দলের সাংসদ শান্তনু সেন জানান, ১৩ সেপ্টেম্বর যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বাইরে থেকে লোক ভাড়া করে পুলিসের উপর হামলা করে। যাঁদের নেতা পুলিসের উদ্দেশ্যে কুকথা বলেন, তাঁদের মুখে এসব কথা মানায় না। বারবার চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে ঘোষণা করার পর পুলিস আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যথাযথ কাজ করছে। বাংলার পুলিস দক্ষ এবং সংবেদনশীল। বিরোধীরা ঘোলা জলে মাছ ধরার জন্য আন্দোলনকারীদের প্ররোচনা দিয়েছে।
প্রসূন গুপ্ত: বৃহস্পতিবার একই দিনে এবং একই সময়ে আলাদা ভাবে বিজয়া সম্মেলন আয়োজন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর অর্থাৎ তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজয়া সম্মেলন ডেকেছেন। অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার নৌশার আলি কক্ষে বিজয়া সম্মিলনী করবেন। দুই অনুষ্ঠানের সময়ও এক অর্থাৎ বিকাল ৩টে। মমতা ভবানীপুরের উত্তীর্ণ মুক্তমঞ্চে বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত থাকবেন। সম্প্রতি এমনটাই জানান তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে ভবানীপুরের সাধারণ মানুষ এবং বিধানসভার শাসক দলের সদস্যরা। থাকবেন কিছু বিশিষ্ট অতিথি।
অন্যদিকে বিধানসভায় শুভেন্দুর ডাকা বিজয়া সম্মেলনে দলের সব বিধায়ককে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। বিজেপির এই মুহূর্তে বেসরকারি ভাবে ৬৯ জন বিধায়ক, এঁরা প্রত্যেকেই উপস্থিত থাকবেন বলে। দূর-দূরান্তের অনেক বিজেপি বিধায়ক বুধবারই কলকাতায় চলে এসেছেন। বাঙালি প্রথা মেনে বিজয়া সম্মেলন মানেই মিষ্টিমুখ এবং শুভেচ্ছা বিনিময়। এর বেশি আর কী হতে পারে? কিন্তু বৃহস্পতিবার দু'টি অনুষ্ঠানেই প্রবল ভাবে রাজনৈতিক আলোচনা থাকবে বলেই সংবাদ। এখন দেখার বিষয় কী আলোচনা হতে পারে ভবানীপুর উত্তীর্ণ মুক্তমঞ্চ এবং বিধানসভার নৌশার আলি কক্ষে। যা জানা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারী দলের অবস্থান পরিষ্কার করবেন। রাজ্যের সাম্প্রতিক নানা ঘটনা নিয়ে সরকারের চরম সমালোচনা করবেন। অবশ্য সরকারের সমালোচনাতে নতুন ঘটনা কিছু নেই। কিন্তু এমন কিছু বার্তা আসতে পারে, যা বিরোধী দলের বিধায়কদের উৎসাহ দিতে পারে। তাই কি এই কারণেই সব বিধায়কদের উপস্থিত থাকতে বলেছে বিজেপি?
পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর বিজয়া সম্মিলনী খাতায় কলমে ভবানীপুরের মানুষদের মিলনমঞ্চ। কিন্তু এই মঞ্চ থেকে মমতা কেন্দ্রের সমালোচনায় মুখর হতে পারেন বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। আদৌ কোনও চমক থাকবে কি? না পুরোটাই জল্পনা, তা বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ আসতে পারেন। তবে বড় জল্পনা মঙ্গলবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিদায়ী সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে ভবানীপুরের অনুষ্ঠানে দেখা যেতে পারে। যদিও তৃণমূলের তরফে এবিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।
ফের মমতা সরকারের (Mamata Government) বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে সরব শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা (Opposition Leader) চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী (Finance Minister) নির্মলা সীতারমণকে এই অভিযোগ করেন। পাশাপাশি তাঁর অনুরোধ এই অভিযোগের প্রকৃত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক অর্থ মন্ত্রক। কেউ যাতে দুর্নীতি এবং কেন্দ্রের ভাবমূর্তি কলুষিত না করতে পারে। সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করুক অর্থ মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার তাঁর পাঠানো ওই চিঠি শুক্রবার টুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা।
West Bengal LoP and BJP leader Suvendu Adhikari has written to Union Finance Minister Nirmala Sitharaman alleging West Bengal govt illegally diverting funds provided by the Central government pic.twitter.com/rR1nyqzPJg
— ANI (@ANI) September 30, 2022
সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে রয়েছে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ সঠিক খাতে ব্যয় না করার অভিযোগ। তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রের নির্দিষ্ট খাতে বরাদ্দ টাকা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প-সহ রাজ্যের অন্য প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি জানান, কয়েক মাস আগে দিনের আলো দেখেছে পাবলিক ফিনান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এই প্রকল্প চালু করেছেন। সেই ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে বরাদ্দ টাকা খরচের রাজ্য এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে নোডাল অ্যাকাউন্ট খুলেছে। সেই ব্যাঙ্কেই সরকারের জরুরি ত্রাণ তহবিল রয়েছে। পাবলিক ফিনান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বরাদ্দ অর্থের বেশিরভাগ অংশ সেই তহবিলে নিয়ে সুদ-সহ অন্য খাতে ব্যবহার করছে মমতা সরকার।
তাঁর দাবি, 'এই অভিযোগ গুরুতর ভাবে খতিয়ে দেখলে অনিয়ম ধরা পড়বে। আর রাজ্য সরকার যে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় টাকা আটকে রাখা হয়েছে। সেই অভিযোগও মিথ্যা প্রমাণিত হবে।'
প্রসূন গুপ্ত: দল বিরোধী কাজের জন্য বারবার তৃণমূল কংগ্রেস, কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ জমা করছে। তাদের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বিড়লার কাছে দাবি করেছেন, দলবিরোধী কাজের জন্য শিশিরবাবুর সাংসদপদ খারিজ করা হোক। প্রসঙ্গত গত বিধানসভা ভোটের আগে ২০২০-তে শিশিরপুত্র শুভেন্দু অধিকারী আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। একুশের ভোটে বিজেপির নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়েছেন শুভেন্দু। হেভিওয়েট এই আসনের লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেন রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা।
এরপর শুভেন্দুকে বিরোধী দলনেতা করা হয়। গত প্রায় দেড় বছর ধরে তৃণমূলের আক্রমণের লক্ষ্য কমবেশি শুভেন্দু অধিকারী। ২০২১-র ভোটে শিশিরবাবুকে তৃণমূলের কোনও প্রচারে পাওয়া যায়নি। বরং অমিত শাহের একটি সভায় শিশিরবাবু বিজেপির মঞ্চে ছিলেন এবং তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। তবে শিশির অধিকারীর তৃণমূল ত্যাগ এবং বিজেপিতে যোগ সংক্রান্ত কোনও সরকারি ঘোষণা নেই।
কিন্তু শিশির অধিকারীর সাংসদপদ খারিজের দরবার গত এক বছর ধরেই করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই দরবারকে প্রাধান্য দিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা শিশিরবাবুকে কয়েকবার ডেকে পাঠান। যদিও শারীরিক কারণ দেখিয়ে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। যদিও উপরাষ্ট্রপতি ভোটে তৃণমূলের হুইপ অমান্য করে তিনি দিল্লি গিয়ে ভোট দেন। এরপর ফের আবার ওম বিড়লা তাঁকে ডেকে পাঠান। আগামী ১২ অক্টোবর তাঁকে দিল্লি আসতে বলেছে সংসদের এথিক্স কমিটি। যদিও শিশিরবাবু জানিয়েছেন যে তিনি অসুস্থ, কাজেই ডাক্তার অনুমতি দিলে তিনি দিল্লি যাবেন।
অন্যদিকে গুঞ্জন, শিশিরবাবু যেমন বেসুরো হয়েছেন তেমনই বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংও বিজেপি ছেড়ে সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। অর্জুন কিন্তু সরকারিভাবে বিজেপির সাংসদ, অর্জুনের এই দলবদল নিয়ে ছেড়ে কথা বলবে না গেরুয়া শিবির। তারা নিশ্চই দাবি তুলছে যে অর্জুনেরও লোকসভার সাংসদ পদ খারিজ করা হোক। শিশির অধিকারীর বিষয়ে লোকসভার এথিক্স কমিটির আগামি সিদ্ধান্তে ঝুলে অর্জুনের ভবিষ্যৎ। শিশিরবাবুকে বহিষ্কার না করলে, আইনত অর্জুনকেও বহিষ্কার করা যাবে না। এমনটাই মনে করছে তৃণমূল শিবির।