নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ((SSC recruitment scam) ধৃত সুবীরেশ ভট্টাচার্যর ১০ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজত (Jail Custody)। তাঁর সিবিআই (CBI) হেফাজতের আর্জি খারিজ করেছে আদালত। উলটে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সোমবার আদালতের (COurt Order) ভর্ৎসনা মুখে পড়তে হয়েছে। এদিন বিচারক সিবিআইয়ের আইওকে প্রশ্ন করেন, 'সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে আদালতে আনতে এত দেরি কেন? নিজাম প্যালেস থেকে হেঁটে আসলেও এরকম হয় না।' সিবিআইয়ের আইনজীবীর জবাব, 'রাস্তায় ট্র্যাফিক জ্যাম ছিল।'
তিনি জানান,এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তদন্তে কোনও সহযোগিতা করেনি। তাঁকে জেরায় অদ্ভুত উত্তর মিলছে। দুর্নীতিকাণ্ডে কে কে জড়িত,কে নিয়োগের নির্দেশ দিত? এ বিষয়ে কিছুই বলছেন না তিনি। সেই কারণে আরও একবার সিবিআই হেফাজতের দাবি করছি। এই সওয়ালের পাল্টা আদালতের প্রশ্ন, '৬ দিন পেয়েছিলেন, কী করলেন এতদিন? এই মামলায় এখনও পর্যন্ত কতজন গ্রেফতার?
সিবিআইয়ের জবাব, ৪ জন গ্রেফতার, তাঁদের মধ্যে এক পুলিস হেফাজতে রয়েছেন। বাকিরা রয়েছেন জেল হেফাজতে। এরপরেই সিবিআই হেফাজতের আবেদন খারিজ করে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত।
এদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে একসপ্তাহ আগে গ্রেফতার স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশবাবুকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এই নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মোট ছ'জনকে গ্রেফতার করলো এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইতিমধ্যে শান্তিপ্রসাদ সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রসন্ন সাহা-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডির হাত ঘুরে সম্প্রতি সিবিআই হেফাজতে এসেছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এবার গ্রেফতার হলেন আরও এক শিক্ষাকর্তা তথা এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এই প্রথম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে গ্রেফতার করল সিবিআই। সূত্রের খবর, তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না তিনি। তথ্য গোপন করছিলেন এবং ভুল তথ্য দিয়ে তদন্তকে অন্যদিকে পরিচালনার চেষ্টা করেছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যে গত মাসে তাঁর বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাট সিল করে দিয়ে যায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। সস্ত্রীক উত্তরবঙ্গ থেকে এসে ফ্ল্যাটের ছাদে কাটাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেখান থেকেই সাংবাদিক বৈঠক করেন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান।
আবার ববিতা সরকার মামলার ছায়া হাইকোর্টে (Calcuctta High Court)। মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Minister Paresh Adhikary) মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় (Teachers Recruitment) অযোগ্য হয়েও চাকরি পেয়েছিলেন। ফলে হতাশ হয়ে হয়েছিল যোগ্য ববিতা সরকারকে। সেই চাকরির ভাগ্য কী হয়েছে, এখন গোটা বাংলা এবার ববিতার মতোই আদালতে প্রিয়াঙ্কা সাউ। তাঁর থেকে কম নাম্বার পাওয়াকে চাকরি দিয়েছে এসএসসি (SSC)। মামলা দায়ের করে এই অভিযোগ এনেছেন তিনি।
এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন,'অনেকদিন অপেক্ষা করেছেন এবার পুজোর আগে প্রিয়াঙ্কাকে চাকরি দিন।'
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, 'শুক্রবার বিকেল ৫টায় প্রিয়ঙ্কা ও তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক করতে হবে এসএসসিকে। চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল বা চাকরি দেওয়া হল কিনা, তা আগামী বৃহস্পতিবার আদালতকে জানাতে হবে।' এজলাসে এসএসসির তরফে বলা হয়, ওই প্রার্থীকে মহিলা বিভাগে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল। সেই পর্বে বাদ যান প্রিয়ঙ্কা। যোগ্য ও বেশি নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও কেন চাকরি হয়নি? এই অভিযোগ জানিয়ে সরব হয়েছেন একাধিক চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের অভিযোগও শোনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে আদালত।
আদালতের নির্দেশে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসছে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি। বুধবার হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল অযোগ্যদের চিহ্নিত করে চাকরি বাতিল করতে হবে। সেই শূন্যপদে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত (Calcutta high Court)। এক সপ্তাহের মধ্যে তিন পক্ষ বৈঠক করে রিপোর্ট জমা করবে আদালতে। সেই নির্দেশের পরই এদিন ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, এসএসসি (SSC) ও মামলাকারীদের আইনজীবীদের বৈঠক।
এদিকে, ২০১৬ SLST-র মাধ্যমে নবম-দশমে কতজন ভুয়ো নিয়োগ হয়েছেন? স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং সিবিআইয়ের থেকে বুধবার জানতে চাইলো হাইকোর্ট। অবিলম্বে সেই ভুয়ো নিয়োগ খুঁজে বের করে অযোগ্যদের চাকরি থেকে থেকে বরখাস্ত করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পৃথক ভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি এবং সিবিআই আদালতে রিপোর্ট জমা করবে। ২৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। বুধবার হাইকোর্ট জানিয়েছে। বেআইনি নিয়োগের বিষয়ে এসএসসি আলাদা ভাবে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে। যারা বেআইনি ভাবে নিয়োগ পেয়েছে তাঁদের চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হবে। মেধা তালিকার ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের সেই চাকরি দেওয়া হবে।
খুব দ্রুত এই বিষয়ে নিষ্পত্তি চেয়ে এসএসসি এবং সিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তবে শুধু এসএসএসি নয় কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে বেআইনি নিয়োগ নিয়ে পৃথক রিপোর্ট দেবে সিবিআইও। যদিও এসএসসি-র আইনজীবীর সওয়াল, 'এটা সংখ্যা স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষে খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন। সার্ভিস কমিশন কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না। কাদের নিয়োগ আইনি আর কাদের নিয়োগ বেআইনি? জিজ্ঞাসাবাদ না করলে বোঝাও সম্ভব নয়। কিন্তু সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে বের করতে পারবে। স্কুল সার্ভিস কমিশন কীভাবে সেটা করবে?'
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) এবার ১৪ দিনের জেল হেফাজতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। অর্থাৎ পুজোয় জেলেই কাটাতে হবে তৃণমূলের একদা সেকেন্ড ইন কমান্ডকে। তবে শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় নয়, ৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে অশোক সাহা, এসপি সিনহা এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি নিয়োগ মামলায় এই চার জনের পুজো কাটবে গারদের পিছনে। বুধবার আলিপুর আদালতে (Alipur Court) তুলে পার্থ- কল্যাণময়ের আর হেফাজত দাবি করেনি সিবিআই (CBI)। তবে জেলে যাতে তাঁদের জেরা করা যায়, কোর্টকে আবেদন করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই আবেদন গ্রাহ্য করে এবং পার্থ-সহ অন্যদের জামিনের আবেদন খারিজ করেছে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত।
যদিও এদিন জামিনের আবেদন করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, দেশ ছেড়ে যাবেন না আমার মক্কেল। অসুস্থতার জন্য চিকিৎসার দরকার এবং অনেক পারিপার্শ্বিক বিষয় কাজ করছে। তাই জামিন দেওয়া হোক। পাশাপাশি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আইনজীবীর সওয়াল, 'মন্ত্রী মানে দফতরের সব কিছুর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ থাকবে? রেল লাইনে গণ্ডগোল হলে কি রেলমন্ত্রী যুক্ত হয়? রাস্তায় দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কি পরিবহনমন্ত্রী যুক্ত? সিবিআইয়ের আবেদন শিশুসুলভ।
এদিকে, সিবিআই আইনজীবী বলেন, কারও জামিনের আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। ২০১৯ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রী ছিলেন। অযথা আদালতকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও অশোক কুমার সাহা মামলায় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছেন। সব পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে এদিন কিছুক্ষণ নির্দেশ স্থগিত রাখে আদালত। অবশেষে বিকেলের দিকে এই চার জনকেই ৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
পুজোর আগে এসএসসি (SSC Recruitment) গ্রুপ সি এবং ডি নিয়োগে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বড় সুখবর। গ্রুপ সি (Group C) পদে পুজোর আগেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly)। কাউন্সেলিংয়ের দিনেই নিয়োগপত্র তুলে দিতে হবে। এমন নির্দেশ দিয়েছে আদালত (High Court)। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ৯-ই ফেব্রুয়ারি এসএসসি-কে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল গ্রুপ সি-র শূন্যপদে বেআইনিভাবে নিযুক্তদের বরখাস্তের পাশাপাশি বেতন বন্ধ করতে হবে।
হাইকোর্ট গঠিত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বাগ কমিটির রিপোর্ট উল্লেখ ছিল, মোট ৫৪৫ জনকে গ্রুপ সি-র শূন্যপদে অবৈধভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। ৯-ই ফেব্রুয়ারিতে ৫৪৫ জনের বেতন বন্ধ-সহ চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, এসএসসি গ্রুপ-সি-র জন্য জেলাভিত্তিক ৫৭৩টি শূন্যপদ রয়েছে। বিচারপতির নির্দেশে সেগুলো বাতিল করা হয়েছিল। বুধবার সেই শূন্যপদ মেধার ভিত্তিতে অবিলম্বে পূরণ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২৮-শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেই শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে।
এই নির্দেশের পর এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্র জানান, এত অল্প সময়ের মধ্যে এতো নিয়োগ সম্ভব হবে না। যুক্তি গ্রাহ্য করে বিচারপতি জানান, ১০০ জন করে ধাপে ধাপে নিয়োগ করুন। একই ভাবে এসএসসি গ্রুপ ডি মামলায় ৫৭০ জনকে চাকরি দিতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। গ্রুপ-ডি নিয়োগে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২-এ হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ৫৭৩ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। বরখাস্তের পর সেই পদ এখন শূন্য। সেখানে মেধাতালিকার ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের অবিলম্বে চাকরিতে নিযুক্ত করার নির্দেশ হাইকোর্টের। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিয়েছেন। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২-এর মধ্যে কাউনসেলিং শুরু করার নির্দেশ।
উল্লেখ্য হাইকোর্টের চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার নির্দেশের পর ৫৭৩ জনের একজনও হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেননি। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্রাচার্যর বক্তব্য, ৫৭৩ জনের বেশিরভাগ নিয়োগ ভৌতিক। ফলে স্কুল সার্ভিস কমিশন যথাযথ শূন্যপদের পরিপ্রেক্ষিতে রেশিও মেনটেন করে যেন নিয়োগপত্র দেয়।
২০১৬ SLST-র মাধ্যমে নবম-দশমে কতজন ভুয়ো নিয়োগ হয়েছেন? স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) এবং সিবিআইয়ের থেকে জানতে চাইলো হাইকোর্ট (Calcutta high Court)। অবিলম্বে সেই ভুয়ো নিয়োগ খুঁজে বের করে অযোগ্যদের চাকরি থেকে থেকে বরখাস্ত করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পৃথক ভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি এবং সিবিআই (CBI) আদালতে রিপোর্ট জমা করবে। ২৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। বুধবার হাইকোর্ট জানিয়েছে। বেআইনি নিয়োগের বিষয়ে এসএসসি আলাদা ভাবে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে। যারা বেআইনি ভাবে নিয়োগ পেয়েছে তাঁদের চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হবে। মেধা তালিকার ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের সেই চাকরি দেওয়া হবে।
খুব দ্রুত এই বিষয়ে নিষ্পত্তি চেয়ে এসএসসি এবং সিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তবে শুধু এসএসএসি নয় কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে বেআইনি নিয়োগ নিয়ে পৃথক রিপোর্ট দেবে সিবিআইও। যদিও এসএসসি-র আইনজীবীর সওয়াল, 'এটা সংখ্যা স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষে খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন। সার্ভিস কমিশন কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না। কাদের নিয়োগ আইনি আর কাদের নিয়োগ বেআইনি? জিজ্ঞাসাবাদ না করলে বোঝাও সম্ভব নয়। কিন্তু সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে বের করতে পারবে। স্কুল সার্ভিস কমিশন কীভাবে সেটা করবে?'
যদিও স্কুল সার্ভিস কমিশনের উল্লেখ, তাদের তথ্য অনুযায়ী মোটামুটি ১৬-১৭ জনকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। এরপরেই আদালতের নির্দেশ, 'স্কুল সার্ভিস কমিশন মামলাকারীদের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। কতজনকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ? চিহ্নিত করা গেল সেটা আদালতকে জানাতে হবে। পাশাপাশি একইসঙ্গে সিবিআইকেও রিপোর্ট দিয়ে জানাবে। তারা তদন্তের প্রেক্ষিতে বের করবে কতজনকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। অযোগ্যদের অবিলম্বে চাকরি থেকে অপসারন করে, যারা ওয়েটিং লিস্টে রয়েছে তাদের চাকরিতে নিযুক্ত করা হবে।'
পাশাপাশি মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে একটা রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে, নবম-দশমে তারা কতজনকে নিয়োগপত্র দিয়েছে? ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব নথি মামলাকারীদের আইনজীবীদের হাতে দিতে বলেছে আদালত।
এসএসসি নিয়োগ (SSC) দুর্নীতি-কাণ্ডে অন্যতম চক্রী সুবীরেশ ভট্টাচার্য, আদালতে দাবি সিবিআইয়ের (CBI)। তাঁর দশ দিনের হেফাজত চেয়ে কোর্টে সওয়াল সিবিআইয়ের আইনজীবীর। কেন্দ্রীয় সংস্থা দাবি করেছে, এসএসসি-কাণ্ডে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন সুবীরেশ। এই মামলার তদন্তে অন্য ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের নাম পেয়েছে সিবিআই। তদন্তের গতি ঘোরানোর চেষ্টা করছেন অভিযুক্ত। তিনি আর্থিক দুর্নীতির মামলাতেও অভিযুক্ত। সুবীরেশ ভট্টাচার্যের (Subiresh Bhattacharya) ১০ দিনের পুলিস হেফাজত চাইছি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ৩০০-র বেশী নিয়োগ করিয়েছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। পাল্টা এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যানের আইনজীবী জানান, জামিনের আবেদন করছি কারণ সুবীরেশ ভট্টাচার্য যখন চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তিনি ডায়মন্ড হারবার কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন ২০১৩ সালে। তারপর উপাচার্য উত্তরবঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রুপ-c ও গ্রুপ-d নিয়োগে দুর্নীতি।
সিবিআইয়ের মামলায় নির্দিষ্ট দিন বলা নেই। বছর ধরে বলা আছে, এসএসসি সুবীরেশবাবুকে এককভাবে কাজের নির্দেশ দেয় না। যদি এটা করতাম, তাহলে আমার মক্কেলকে কারও থেকে অনুমোদন নিতে হতো। তিনি এই দুর্নীতি করেননি। কোনও অভিযোগপত্রে আমার নাম নেই। সুবীরেশের বাড়ি এবং অফিস থেকে কিছু পাওয়া যায়নি। তাও গ্রেপ্তার হয়েছে। তিনি সৎ ব্যক্তি, যা সম্পত্তি আছে তার বেশিরভাগ স্ত্রীয়ের নামে।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) এবার গ্রেফতার কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের (Madhymaik Board) প্রাক্তন সভাপতিকে বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছিল। একাধিক নথি খতিয়ে দেখতে তাঁকে তলব করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা (CBI)। সেই মোতাবেক এদিন নিজাম প্যালেসে হাজির হতেই ছয় ঘণ্টার ম্যারাথন জেরার পর সন্ধ্যা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন এই শিক্ষাকর্তাকে (Kalyanmay Ganguly)।
গ্রেফতারির পর তাঁকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এই নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ইতিমধ্যে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ ছত্তয়াপধায় এবং তাঁর চর্চিত বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। পাশাপাশি সিবিআই গ্রেফতার করেছে এসপি সিনহা, অশোক সাহা-সহ উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের। সিবিআই সূত্রে খবর, উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের জেরা করেই নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে কল্যাণময়ের জড়িত থাকার সূত্র পেয়েছেন গোয়েন্দারা। ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে অবগত ছিলেন কিনা কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সেটা জানতেই এই গ্রেফতারি। পাশাপাশি বাগ কমিটির রিপোর্টে নাম রয়েছে কল্যাণের।
এদিন গ্রেফতারির পর সংবাদ মাধ্যমের সামনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি খানিকটা উত্তেজিত হয়েই বলেন, 'যেটা বলেছি সেটাই সত্যি।' যদিও কী বলেছেন? সংবাদ মাধ্যমের এই প্রশ্নের জবাব তিনি দেননি।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর (CISF) তত্ত্বাবধান থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) ডেটা রুমের দায়িত্ব হাতে পেয়ে নিয়োগের তৎপরতা শুরু। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের (Job Aspirants) তালিকা তৈরি করছে এসএসসি। চলতি সপ্তাহেই তা তুলে দেওয়া হবে শিক্ষা দফতরের (Education Department) হাতে। ইতিমধ্যেই পুরনো প্যানেলের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। ৬৮৬১টি শূন্যপদেরও অনুমোদন মিলেছে। এবার ডেটা রুম হাতে পাওয়ার পর নবম,দশম, একাদশ, দ্বাদশ, গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি-সহ একাধিক যে নিয়োগ আটকে, তাতে গতি আনতে চায় কমিশন।
স্কুলশিক্ষা দপ্তরে তালিকা পাঠানোর পর কোন স্কুলে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে তা ঠিক করা হবে। এদিকে, পুজোর আগে উচ্চ প্রাথমিক বা আপার প্রাইমারির বাকি আসনে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরুর জন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। ২০১৬ সালে ১৪,৩৩৯ জন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে এখন ১৬০০ জনের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া বাকি।
এই প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে চায় কমিশন। আদালতের অনুমতি পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ইন্টারভিউয়ের আয়োজন করবে কমিশন।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (SSC Scam) দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ফের খারিজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন। ১৪ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ আরও ১৪ দিন জেলেই থাকতে হবে পার্থ অর্পিতাকে। যদিও এদিন অর্পিতার তরফে জামিনের আবেদন করা হয়নি। বুধবার দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পরে ঘণ্টাখানেক স্থগিত রাখা হয়েছিল রায়দান বেলা ৪টের কিছু পর আদালতে জানায়, খারিজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন (Bail Plea)। আগামি ১৪ দিন অর্থাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতেই থাকবেন পার্থ-অর্পিতা।
এদিকে, এসএসসি নিয়োগ জামিনের আবেদন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। যেকোনও শর্তে জামিন চেয়ে আবেদন প্রাক্তন মন্ত্রীর আইনজীবীর। প্রয়োজন বাড়িতেই নজরবন্দি বা গৃহবন্দি থাকতে চান তিনি। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে এই আশঙ্কা করে জামিন চাইলেন তিনি। তবে বুধবার জামিনের আবেদন করেনি পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
এদিন জামিনের শুনানিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, ইডি বলছে বেশ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেশ কয়েকটি জীবনবিমায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম নমিনি হিসাবে আছে। এতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোন ভূমিকা নেই। অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি আমার মক্কেলের নাম ব্যবহার করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে।
আইনজীবীর দাবি,পার্থ চট্টোপাধ্যায় অসুস্থ। অর্থোপ্যাডিকেল ও নেফ্রোলজিকাল সমস্যা রয়েছে। এভাবে থাকলে পার্থবাবুর মৃত্যু হতে পারে। জেলে শৌচাগারের সমস্যা রয়েছে। তাঁর মাটিতে বসে কাজে বারণ রয়েছে। কিন্তু জেলে মাটিতে শুতে হচ্ছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ডায়লিসিসের প্রয়োজন রয়েছে।
এই আবেদনের বিরোধিতা করেছেন ইডির আইনজীবী। তিনি জানান, ১০০০ কোটি দিয়ে সিম্বায়োসিস মার্চেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি বিক্রি হয়েছে। এই কোম্পানি থেকে ২.৭০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে পার্থ ও অর্পিতার নামে। পাশাপাশি সোনারপুর-রাজপুর পুরসভা এলাকার বিভিন্ন কোম্পানিতে সেই অর্থ ঢুকেছে। এই সংস্থার শেয়ার হোল্ডার পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। কালো টাকা সাদা করতে এই কোম্পানি তৈরি হয়েছে। আগামী দিনে আরও তথ্য পাওয়া যাবে অভিযুক্তদের থেকে। আমরা দু'জনকেই জেল হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই ।
তিনি বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মোবাইলে আসা এসএমএস প্রমাণ করছে জীবনবিমাগুলোর প্রিমিয়াম দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কাকা। দু'জনের সোনারপুর এলাকায় প্রচুর সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। গোটা এই বিষয়ের মাস্টারমাইন্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে আমরা জেল হেফাজত রাখতে চাই।
এই দীর্ঘ শুনানির পরেও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর করা আবেদনের বিরুদ্ধেই রায় দেয় আদালত।
সোশাল মিডিয়ায় আকর্ষণীয় প্রোফাইল। নির্দিষ্ট একটি সংগঠনের হয়ে কখনও দুবাইয়ে কখনও বা তিনি ইজরায়েলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি নিজেকে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি হিসেবেও তুলে ধরেছিলেন। শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সেই মিডলম্যান মধ্যমনি পার্থ ঘনিষ্ঠ এই প্রসন্ন রায়কে ৭ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মিলছে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের একাধিক সম্পত্তির হদিস।
নিউটাউনের রবিরশ্মি ভিলার ১২ নম্বরে মাঝে মাঝেই আসতেন প্রসন্ন রায়। তবে এখানকার মানুষরা তাকে চিনতেন রাকেশ নামে। প্রশ্ন একটাই এই রাকেশ আর প্রসন্ন দুজনেই কি এক ব্যক্তি? তাই যদি হয়, তাহলে এই ভিলার মালিকানা কি ছিল প্রসন্ন রায়ের নামে? নাকি এখানেও রয়েছে অন্য সমীকরণ? উত্তরের খোঁজে সিবিআই। পার্থ ঘনিষ্ঠের কুবের সম্পত্তি চমকিয়েছে বাংলাকে। গাদিয়াড়ার পর এবার বাগনান। টাইলস কারখানার হদিস প্রসন্ন রায়ের। সূত্র বলছে ২০১৫ সালে ৩০ বিঘা জমির ওপর এই টাইলস কারখানাটি প্রসন্ন রায় কিনেছিলেন ১২ কোটি টাকায়। কেনার পরে কোম্পানিটির নাম দেয় সালেসার টাইলস প্রাইভেট লিমিটেড। নিউটাউন প্রাইড হোটেলে রয়েছে পার্থ ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন কুমার রায়ের সালেসার টাইলস প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস।
প্রাইড প্লাজার প্রসন্ন রায়ের অফিসে পৌঁছেছিল আমাদের প্রতিনিধি। চোখ ধাঁধানো ইন্টেরিয়ার ডেকরেশন। এই অফিস থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই হোটেলের ৫ তলায় রয়েছে পার্থ ঘনিষ্ঠ প্রসন্নর পন্টিয়াক মার্চেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস। সেখান থেকে একাধিক ব্যবসা চালাতেন প্রসন্নবাবু। এছাডা়রাও এই হোটেলে রয়েছে একাধিক অফিস, যেখানে প্রসন্নবাবু নিয়মিত যাতায়াত করতেন। এই হোটেলের ৪ তলায় ৪১৫ নম্বরে রয়েছে সালসার টাইলস প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস।
১৮০/১ বাঙুর এ্যাভেনিউ। এই ঠিকানাটিকে দেখানো হয়েছে দৃষ্টিকোন ইনফাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস হিসেবে, যার ডিরেক্টর ছিলেন প্রসন্ন রায়। প্রাথমিক খোঁজের পর দেখা গেল এই ঠিকানায় বসবাস করেন মহেন্দ্র আগরওয়াল নামে এক ব্যক্তি। এই মহেন্দ্রবাবুর কাছ থেকে রাজারহাট নিউটাউনে প্রায় ২০০ কাঠার বেশি জমি কেনেন প্রসন্ন। এবং এরপর দৃষ্টিকোন ইনফাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে রিয়েল এস্টেটের একটি ব্যবসা খোলেন। যার অফিসের ঠিকানা দেখানো হয়েছে মহেন্দ্র আগরওয়ালের ঠিকানাতে। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে মহেন্দ্রবাবুকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে। মহেন্দ্রবাবুর থেকে জমি কিনে তারই ঠিকানাটিকে কেন প্রসন্ন কুমার রায় নিজের ব্যবসার ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করছিলেন? উঠছে প্রশ্ন।
আমরা কথা বলেছিলাম মহেন্দ্রবাবুর সঙ্গে। তিনি জানান এক দালাল মারফত আলাপ হয় প্রসন্ন রায়ের সঙ্গে। এরপর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের পর তার ঠিকানাটিকে প্রসন্ন বাবু নিজের অফিসের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এখানেই শেষ নয়। মহেন্দ্রবাবুর আরও অভিযোগ তার ২০৬ লেকটাউনের ঠিকানাটিতেও তার অনুমতি ছাড়া প্রসন্ন রায় একটি অফিস খুলেছেন। যদিও সেই অফিসটি আপাতত বন্ধ রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, খোঁজ মিলেছে মধ্য হাটগাছায় প্রসন্ন রায়ের দুটি ভেরির। ১৬ বিঘা জমির ওপর এই ভেরি দুটির দেখাশোনা করতেন কনক মণ্ডল। আমাদের ক্যামেরার সামনে কণকবাবু জানান তিনি বলাকা আবাসনে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় প্রসন্নর। কণকবাবু আরও জানান, এই দুটি ভেরি প্রসন্ন দান হিসেবে পেয়েছেন। কীসের দান? প্রসন্ন বাবুকে এই দুটি ভেরি দান করেছিলেন কে? খোঁজ চলছে।
বলাকা আবাসনের বাসিন্দা হিসেবে দুর্গাপুজোয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেন প্রসন্ন বাবু। তিনি সিবিআই হেফাজতে। তবে পুজোয় তার কোনও প্রভাব পড়বে না। জানালেন পুজো কমিটির সভাপতি। ট্রাভেলিংয়ের ব্যবসা ছিল। বন্ধু হিসেবেই দেখত এলাকার মানুষ। তার এত ব্যবসার কথা বিন্দুবিসর্গ জানতেন না তারা। আপাতত সিবিআই হেফাজতে প্রসন্ন রায়। তার কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। কী হতে চলেছে তদন্তের ভবিষ্যত্ উত্তর দেবে সময়।
চলতি সপ্তাহে বুধবারই সিবিআই(CBI) জেরার মুখে পড়েছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য(Vice Chancellor) তথা এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান(ex Chairman) সুবীরেশ ভট্টাচার্য(Subiresh Bhattacharya)। এরপর এদিন সকালে সোজা রওনা হলেন কলকাতার(Kolkata) উদ্দেশে। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁকে সমন পাঠিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা ৷ মনে করা হচ্ছে সিবিআই তলবে দফতরে হাজিরা দিতে গেলেন তিনি । সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা যাচ্ছেন। তবে কেন যাচ্ছেন তিনি তা স্পষ্ট করেননি।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বাংলোয় রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। সকাল থেকেই মোতায়েন রয়েছে একাধিক নিরাপত্তারক্ষী। এরই মাঝে এদিন সকাল প্রায় ৮ টা বেজে ১৪ মিনিটে একটি লাল রঙের গাড়ি প্রবেশ করে উপাচার্যের বাংলোয়। তার কিছু সময় বাদেই প্রবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব একটি গাড়ি সহ সাদা রঙের আরও একটি গাড়ি। প্রতিটি গাড়িই অবশ্য ফাঁকা ছিল বলে জানা গেছে।
গতকাল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হানা দিয়েছিল সিবিআই । সূত্রের খবর, প্রায় ১০ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় উপাচার্যকে। উল্লেখ্য, সিবিআইয়ের ১১ জনের একটি দল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে থাকা বাংলো এবং প্রশাসনিক ভবনের কার্যালয়ে হানা দেয়। পাশাপাশি উপাচার্যের বাঁশদ্রোনীর বাড়িটিও সিল করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ।
গতকালের পর আজও ফের সিবি আই হানার খবর রয়েছে। সূত্রের খবর, এদিন ফের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যেতে পারেন সিবিআই আধিকারিকরা।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) বুধবার সন্ধ্যায় প্রদীপ সিং নামে একজনকে গ্রেফতার (Arrested) করেছে সিবিআই (CBI)। সূত্রের খবর, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রদীপ 'মিডলম্যান' (Middleman) হিসেবে কাজ করতেন। আজ, বৃহস্পতিবার মেডিকেল চেক আপ করার পর তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
একাধিক তথ্য ও নথি এবং ধৃতদের বয়ানের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যায় প্রদীপ সিংকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সিবিআই আধিকারিকরা প্রদীপকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য জানতে চাইছেন। সে কারণে আদালতে সিবিআই হেফাজতের আবেদন জানাবে বলে জানা গিয়েছে।
এককথায়, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে আরও একধাপ এগোল সিবিআই। উল্লেখ্য, এই মামলায় এটি সিবিআই-এর হাতে তৃতীয় গ্রেফতারি। এর আগে এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক সাহা এবং উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে গ্রেফতার করেছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁদের ইতিমধ্যে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে কোমর বেঁধে নেমেছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরাও। এই মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আগেই গ্রেফতার করেছে ইডি।
এসএসসি(SSC) নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে এবার সিবিআই(CBI) ব়্যাডারে এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, বুধবার সকাল দশটা নাগাদ কেন্দ্রীয় দল এসে পৌঁছয় শিলিগুড়িতে। পৃথক দুটি গাড়িতে ৮ থেকে ৯ জনের দল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পৌঁছন বলেই খবর। তাঁরা দু'টি ভাগে ভাগ হয়ে যান। একটি দল আসে উপাচার্যের দফতরে। অপর দলটি যায় শিলিগুড়িতে ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের(university campus) ভিতরে উপাচার্যের সরকারি বাসভবনে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি এসএসসি-র চেয়ারম্যান(Chairman)) ছিলেন। জানা গিয়েছে, তদন্ত চলাকালীন উপাচার্যর দফতরের বাইরে যে সকল কর্মীরা ছিলেন তারা যাতে বাইরে যোগাযোগ করতে না পারেন, তার জন্য তাদের মোবাইল(mobile) জমা নিয়ে নেওয়া হয়। যাতে কেউ উপাচার্যের দফতরে যেতে না পারে তার জন্য ছিল কড়া পুলিসি(police) প্রহরা। সূত্রের খবর, দফতরে গিয়ে তাঁরা উপাচার্য সুবীরেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
অন্যদিকে, সিবিআইয়ের অন্য একটি দল দক্ষিণ কলকাতায় তাঁর ফ্ল্যাটে পৌঁছয়। বাঁশদ্রোণীতে ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ ছিল। ফলে অফিসাররা দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর পক্ষ থেকে কাউকে পাওয়া যায়নি বলে সূত্রের খবর। তাই আধিকারিকরা ফ্ল্যাটের ভিতরে অভিযান চালাতে পারেনি। কলকাতার বাঁশদ্রোণী এলাকায় সুবীরেশের ফ্ল্যাট সিল করে দেয় সিবিআই।
প্রসঙ্গত, তিনি ৪ বছরের বেশি স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে প্রাক্তন বিচারপতি আর কে বাগের কমিটির দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়, ৩৮১টি ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে। তার মধ্যে ২২২ জন পরীক্ষাই দেননি বলে অভিযোগ। বাগ কমিটির সেই রিপোর্টেও উল্লেখ ছিল সুবীরেশের নাম।
যদিও বিষয়টি নিয়ে এর আগেই সুবীরেশ ভট্টাচার্য জানান, ‘চেয়ারম্যান থাকাকালে কোনও আপস করিনি। ২০১৮ সালের জুলাই পর্যন্ত আমি চেয়ারম্যান ছিলাম। তখন দুর্নীতি হয়নি।’