আর্থিক দারিদ্রতার কারণে মেয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়ালেন বাবা। মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে দেবে না বলে মেয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষার অ্য়াডমিড ও রেজিস্ট্রেশন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন বাবা। বাবার কথা অমান্য় করে অ্যাডমিট ও রেজিস্ট্রেশনের জেরক্স কপি নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে গেলে আত্মঘাতী হন বাবা। ঘটনাটি রানাঘাট থানার হবিবপুর গ্রামের।
জানা গিয়েছে, ওই মাধ্য়মিক পরীক্ষার্থীর নাম মনিকা মণ্ডল (১৬)। বাবা রামপ্রসাদ মণ্ডল, পেশায় লরি চালক। হবিবপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মনিকার চিরকাল উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিতে গিয়ে তার জীবনে নেমে এল অন্ধকার। ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করার। কিন্তু পড়াশোনার অদ্য়ম ইচ্ছাটা হেরে গেল আর্থিক দারিদ্রতার কাছে।
সূত্রের খবর, আর্থিক দারিদ্রতার কারণেই বাবা তার মেয়েকে বাধা দিয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে। বাবার সেই বাধা অমান্য করে সে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। মেয়ের জোরপূর্বক পরীক্ষায় বসাটা মেনে নিতে পারল না তার বাবা। মাধ্যমিকের ইংরাজি পরীক্ষার দিন বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন বাবা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মনিকার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। অভাবে সংসারে দু'মুঠো ভাত জোগানোটাই মুশকিল। সেখানে পড়াশোনার ব্য়াপারটা একেবারে ধরা ছোঁয়ার বাইরে বলতে গেলে। বর্তমানে তাঁদের সম্বল বলতে রয়েছে ছোট্ট একটি বাড়ি। পরিবারে রোজগেরে বলে আর কেউ নেই। মনিকার মা অসুস্থ শরীর নিয়ে কী কাজই করবে, আর কীভাবেই ছোট ছোট সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেবে সেই ভেবেই দুচোখ জলে ভরে যাচ্ছে।
মনিকার মায়েরও ইচ্ছা সন্তানরা শিক্ষার আলোয় শিক্ষিত হোক। কিন্তু এখনও দারিদ্রতার গভীর অন্ধকারে দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা পরিবার। তাই সন্তানদের লেখাপড়া করার জন্য দুমুঠো অন্নের জন্য সরকারি সহযোগিতার দাবি করছে পরিবার। সরকারি সহযোগিতা পেলেই সন্তানদের শিক্ষিত করতে পারবে, সন্তানদের দু'মুঠো অন্ন জোগাতে পারবে। এখন দেখার সরকারিভাবে প্রশাসন কতটা সহযোগিতা করে।
চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল যুবকের। রেল লাইনের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ক্ষতবিক্ষত দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার নদীয়ার ফুলিয়ার প্রফুল্ল নগরের রেলগেটের কাছে। জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম সুজয় বিশ্বাস। বয়স আনুমানিক ২৬ বছর। বাড়ি নদীয়ার আরংঘাটার রাধাকান্তপুরে।
সূত্রের খবর, দু'দিন আগে ওই যুবক তাঁর মা ও বাবার সঙ্গে একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে ফুলিয়ার প্রফুল্ল নগরের মেসোর বাড়িতে যান। একদম রেললাইনের পাশেই তাঁর মেসোর বাড়ি। সোমবার এগারোটা নাগাদ ওই রেল লাইনের উপর দিয়ে যাচ্ছিল আপ ট্রেন। পরিবারের দাবি, চোখের নিমিষেই ওই যুবক বাড়ি থেকে বেরিয়ে রেললাইনের উপরে চলে যায়, এরপর ট্রেনের ধাক্কায় ওই যুবকের দেহ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পরিবারের আরও দাবি, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। কিন্তু অনুষ্ঠানে এসে ছেলের এইভাবে মৃত্যুর ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়ে যুবক সুজয় বিশ্বাস-এর মা ও বাবা। এছাড়াও কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। যদিও মৃতদেহটি উদ্ধার করার জন্য তৎপর হয় রেলের জিআরপি। এছাড়াও কি কারণে ওই যুবক ট্রেনের সামনে চলে গিয়েছে, তার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিস।
নদিয়ার হাঁসখালি থানার গাড়াপোতা এলাকার নির্যাতিতার পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত আটটা নাগাদ নির্যাতিতার কাকাকে বাড়ি থেকে বের অভিযুক্তরা মারধর চালায় বলে অভিযোগ। বর্তমানে তিনি আহত অবস্থায় বগুলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নদিয়ার হাঁসখালিতে গণ যৌন নিগ্রহের পর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নির্যাতিতার বাড়িতে রাজ্য পুলিসের নিরাপত্তার সুনিশ্চিত করা হয়। অভিযোগ, নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্তের ঘনিষ্ঠ দুষ্কৃতিরা গণধর্ষনকাণ্ডের মৃতা নির্যাতিতার একমাত্র সাক্ষী তাঁর এক আত্মীয়কে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর ও খুনের হুমকি দেয়। এমনকি রানাঘাট কোর্টে গিয়ে মিথ্যা সাক্ষী দিতে বলে হুমকি দেয় অভিযুক্তের ঘনিষ্ঠরা।
রাজ্য পুলিসের নিরাপত্তা দেওয়ার পরেও কী করে এই ধরনের ঘটনা সম্ভব ? তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে রয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। যদিও নিরাপত্তার তাগিদে কেন্দ্রীয় পুলিস দেওয়া দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিতার পরিবার। অন্য়দিকে সি এন এর খবর হওয়ার পরেই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। হাঁসখালি থানার বিশাল পুলিস বাহিনী এসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন।
বাড়ির জল রাস্তায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদ। তার জেরে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পেটে লাথি মারার অভিযোগ প্রতিবেশী পরিবারের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ার শান্তিপুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ পল্লীতে। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূ।
অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলার স্বামীর অভিযোগ, এদিন সকালে তিনি কাজে বেরোনোর পর ফোনে খবর পেতেই বাড়িতে ফিরে দেখে তাঁর স্ত্রী যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। জিজ্ঞাসা করতেই তাঁর স্ত্রী বলেন বাড়ির জল যাওয়া নিয়ে প্রতিবেশী উত্তম অধিকারীর পরিবারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আচমকায় উত্তম অধিকারীর পরিবার বাড়িতে ঢুকে চড়াও হয় তাঁর উপর। এবং বেধড়ক মারধর করে। অভিযোগ এরপর ওই গৃহবধূর পেটে লাথি মারে। ঘটনাস্থলেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ।
যদিও তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই গৃহবধূর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য আবার অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গৃহবধূর স্বামী শান্তিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত পরিবারও শান্তিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে দাবি করে তাদেরকেও বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। দুই পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিস।
টোটোর ধাক্কায় প্রাণ গেল খুদের। শরীরের ওপর দিয়ে চলে যায় টোটো। গুরুতর চোট লাগে মাথায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে টোটো চালককে আটক করেছে পুলিস। বুধবার দুর্ঘটনাটি ঘটে নদিয়ার জলকর মথুরাপুর ঘোষপাড়ায়। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতোই ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল বছর ছয়ের রনি ঘোষ। প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া সে। কিন্তু কে জানত, খুদের জন্য অপেক্ষা করছে মৃত্যু। রাস্তার পাশে বসে থাকাটাই যেন কাল হল তার। নদিয়ার জলকর মথুরাপুর ঘোষপাড়ায় দ্রুতগতির টোটোর ধাক্কায় অকালে প্রাণ যায় ওই খুদের। শিশুটির শরীরের ওপর দিয়ে চলে যায় টোটোটি এবং উল্টে যায় ঘটনাস্থলে। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রনি।
এরপর গুরুতর জখম অবস্থায় রনিকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, ঘটনাস্থলে গিয়ে টোটো চালককে আটক করে ভীমপুর থানার পুলিস। প্রসঙ্গত, গত বছরই বেহালা চৌরাস্তার পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় বড়িষা হাই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সৌরনীল সরকার। আর কত মৃত্যু হলে গতি কমবে? আর কত প্রাণ ঝরলে সচেতন হবে চালকেরা? উঠছে একাধিক প্রশ্ন
ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। যদিও ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত স্বামী। শুক্রবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে নদীয়ার শান্তিপুর কের গয়েশপুর পঞ্চায়েতের ধারা পাড়া গ্রামে। জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম বন্দনা মুদী এবং অভিযুক্ত স্বামীর নাম মুক্তি মুদী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় শান্তিপুর থানার বিশাল পুলিস বাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকালে চাষের জমির পাশে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় ওই মহিলার মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। অভিযুক্ত মুক্তি মুদির ভাই বিদু মুদির দাবি, তার দাদা ও বৌদির সাংসারিক অশান্তির কারণে কোনও সম্পর্ক ছিলনা তাদের। কিন্তু একই বাড়িতেই তারা বসবাস করতেন।
মৃতার দাদার অভিযোগ, অভিযুক্ত মুক্তি মুদী কোনওরকম কাজকর্ম না করায় অহেতুক তার স্ত্রীর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। সেই কারণে মাঝেমধ্যেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে গিয়ে থাকত বন্দনা মুদী। অভিযোগ, এর আগেও অভিযুক্ত মুক্তি তার স্ত্রী বন্দনাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছে। এই খুনের পিছনে অভিযুক্ত মুক্তি মুদির হাত রয়েছে বলে দাবি মৃতার পরিবার পরিজনদের। ঘটনায় রীতিমত আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা গ্রাম জুড়ে। যদিও পুরো ঘটনার তদন্তে রানাঘাট পুলিস জেলার উচ্চ পুলিস আধিকারিকরা।
মাথা উঁচু করলেই দেখা যায় খোলা আকাশ। ছাদ তো দুরস্থ চারিদিকে দেওয়াল অবধি নেই। সেখানেই চলছে শিশুদের জন্য রান্না। চুলোয় স্বাস্থ্যবিধি। শিকেয় উঠেছে নদিয়া তেহট্টের নাটনা মাঠপাড়া পূর্ব অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের পঠনপাঠনও। শিশুদের হাতে খড়ি এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকেই। কোনও নির্দিষ্ট ঘর না থাকায় পড়ুয়ারা যেমন আসতে চায় না, অপরদিকে খোলা পরিবেশে পাঠাতে চাই না অভিভাবকরা। এভাবে চলতে থাকলে শিশুদের মধ্যে কিভাবে শিক্ষার আলো পৌঁছবে প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকরা।
গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে নেই নিজস্ব কোনও ঘর। এদিকে, গর্ভবতী মায়েদের এবং শিশুদের পুষ্টির জন্য খিচুড়ি ও ডিম দেওয়া হয়। কিন্তু এভাবে খোলা আকাশের নিচে রান্না করা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত হবে ,সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ঘর দেওয়া হয়নি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও সুরাহা মেলেনি।
বস্তুত, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের চিত্রটি প্রায় সর্বত্র এক। কেন এখনও বদলাচ্ছে না ছবিটা? হাল ফেরানোর উদ্যোগ কত দিনে কার্যকর হয়, সেদিকে তাকিয়ে অনেক অভিভাবক।
পুলিস কর্মীর বাড়ির সামনের রাস্তা আটকে প্রাচীর তুলে দেওয়ার অভিযোগ প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। যার ফলে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন ওই পুলিসকর্মীর পরিবার। অভিযোগ, দীর্ঘ তিন মাস ধরে গৃহবন্দী হয়ে রয়েছে ওই পরিবারটি। জানা গিয়েছে, বেঙ্গল পুলিসে কর্মরত কৃষাণু বিশ্বাস তিনি যাতায়াতের রাস্তার জন্য একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এমনকি রানাঘাট মহাকুমা আদালত থেকে ১৪৭ ধারা জারি করা হয়েছিল ওই রাস্তার উপর।
অভিযোগ, আদালতের নির্দেশিকা ছাড়াই রাস্তার উপরেই প্রাচীর তুলে দেন প্রতিবেশীরা। ওই পুলিস কর্মীর অভিযোগ, শাসকদলের মদতেই এই কাজ করেছেন প্রতিবেশীরা। তারপর প্রশাসন থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসনের কাছে গেলেও মেলেনি সুরাহা। অবশেষে নিজের পরিবারকে বাঁচাতে এবং গৃহবন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে শুক্রবার বাদকুল্লা দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে ইউনিফর্ম পড়ে প্লাকার্ড হাতে ধরনায় বসেন ওই পুলিসকর্মী।
এরপর ধরনায় বসার খবর চাউর হতেই ঘটনাস্থলে যায় বাদকুল্লা ফাঁড়ির পুলিস। এখন প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ও প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে। কারণ একজন পুলিসকর্মী হয়েও পাচ্ছেন না নিরাপত্তা, পাচ্ছেন না প্রশাসনের সহযোগিতা। তাহলে সাধারণ মানুষ কিভাবে সেই নিরাপত্তা পাবে এটা নিয়ে বারংবার উঠছে প্রশ্ন। লিখিতভাবে প্রশাসনকে জানিও কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো না?
ফের রাজ্যে শুটআউট। অতর্কিতে হামলা চলল ব্যবসায়ীর উপর। পর পর গুলি চলায় গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেল ব্যবসায়ী। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার তাহেরপুরে। জানা গিয়েছে, নিহত ব্যবসায়ীর নাম রাজা ভৌমিক। বাদকুল্লার ভাদুড়ি এলাকার বাসিন্দা।
পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতেই বসেছিলেন রাজা ভৌমিক ও তাঁর স্ত্রী। এরপর হঠাৎ দরজায় কেউ ধাক্কা মারতে থাকে। দরজা খুলতেই বাড়িতে ঢুকে পড়ে কয়েকজন দুষ্কৃতী। তারপর ব্যবসায়ীর স্ত্রীর মুখ চেপে ধরে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরা হয়। এরপর দুষ্কৃতীরা ব্যবসায়ী রাজা ভৌমিকের দোতলার ঘরে ঢুকে ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে পরপর তিন রাউন্ড গুলি চালায়। ঘটনার পর ওই গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ীকে তাঁর পরিবারের পরিজনরা তড়িঘড়ি নিয়ে বাদকুল্লা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে কি কারণে এই ঘটনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ব্যবসায়ীর আত্মীয়রা জানান, তিনি একাধিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন প্রোডাক্ট মার্কেটিং ও মানি মার্কেটিং ব্যবসাও করতেন বলেও জানাচ্ছেন তাঁর আত্মীয়রা। এমনকি তিনি একটি সংস্থার শেয়ারও কিনে রেখেছিলেন। এছাড়াও তিনি রাখিমাল বা ভুসি মালের ব্যবসা করতেন। কোন মানুষ বিপদে পড়লে তাঁকে আর্থিক সহযোগিতাও করতেন বলেই জানা যাচ্ছে। তবে আচমকা এই ঘটনার পর থেকেই শোকাহত গোটা পরিবার। রাজ্যে একের পর এক গুলির ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
আদিবাসী ব্যক্তির পর এবার মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে নির্বীজকরণের অভিযোগ। নির্বীজকরণের অভিযোগ বারংবার উঠে আসছে নদিয়ার ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, নির্বীজকরণ নিয়ে প্রথমে শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক মাধব রায়। অভিযোগ, আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওই মাধব রায়কে প্রথমে করোনা ভ্যাকসিনের নাম করে হাসপাতালে নিয়ে এসে নির্বীজকরণ করানো হয়।পরবর্তীতে আবারও সেই নির্বীজকরণ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয় শান্তিপুর থানায়।
অভিযোগ, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি খোকন দেবনাথকে (৬২) নির্বীজকরণ করে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, খোকন দেবনাথ বিবাহিত হলেও তাঁর কোনও সন্তান হয়নি এখনও। তা সত্ত্বেও তাঁকে ভুল বুঝিয়ে নির্বীজকরণ বা এনএসভি করানো হয় বলে অভিযোগ। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে এলাকার সমস্ত পুরুষ।
তবে নির্বীজকরণ বা এনএসভি-এর ক্ষেত্রে সরকারি একটি অনুদান হিসেবে তিন ধাপে টাকা পাওয়া যায়। প্রথমত, নির্বীজকরণের ক্ষেত্রে যে আশাকর্মী রোগীকে নিয়ে আসবে সেই আশা কর্মী একটি টাকা পাবে। দ্বিতীয়ত, যিনি এনএসভি করবেন বা যাকে করানো হবে সেও একটি টাকা পাবে। অন্যদিকে, যে চিকিৎসক এই অপারেশন করবেন তিনিও টাকা পাবেন। সেক্ষেত্রে ফুলিয়া হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাদেরকে এনএসভি বা নির্বীজকরণ করানো হয়েছে তাঁরা কেউই টাকা পায়নি। যার কারণে অনুমান করা যাচ্ছে হাসাপাতালের ভিতরেও চলছে দুর্নীতি।
সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। কখনো দরিদ্র আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ আবার কখনো বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের নিয়ে গিয়ে ভুল বুঝিয়ে কিংবা বোকা বানিয়ে করানো হচ্ছে নির্বীজকরণ বা এনএসভি। বারংবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনও উদাসীন প্রশাসন। নির্বীজকরণের অভিযোগ ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালের সামনে সামিল হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ।
ফের আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার তিন দুষ্কৃতী। সোমবার রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ওই তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে কল্যাণী থানার পুলিস। তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তদের কাছ থেকে দেশি রিভলবার, কার্তুজ ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার, ধৃতদের কল্যাণী মহকুমা আদালতে তোলা হয়। যদিও ধৃত ওই তিনজনের নাম জানা যায়নি।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযানে নামে কল্যাণী থানার পুলিস। এরপর ওই তিন অভিযুক্তকে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আটক করে গ্রেফতার করা হয়। এরপর মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডিএসপি জাবেদ হোসেন জানান, ধৃতদের বাড়ি রানাঘাট এলাকায়। ওই তিন অভিযুক্তের কথাবার্তা শুনে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিসের জেরায় তাদের কাছ থেকে দেশি রিভলবার, কার্তুজ ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, পুজোর আগে থেকে লাগাতার অস্ত্র উদ্ধার হয়ে চলেছে বিধানচন্দ্র রায়ে শহর কল্যাণী থেকে। তবু এখনও পর্যন্ত অপরাধমূলক কাজ খামতি নেই কল্যাণী নগরে।
পাড়ার মধ্য়ে অবস্থিত মদের কাউন্টার। আর সেই মদ খেয়ে এক ব্য়ক্তির মৃত্য়ুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার সকালে এই খবর চাউর হতেই এলাকাবাসী এবং মহিলারা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে মদের কাউন্টারের সামনে। ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত দেপাড়ায়। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিস গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য় কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এই মদের কাউন্টারের জন্য এলাকায় দুষ্কৃতীমূলক কার্যকলাপ বেড়ে চলেছে। এবং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। অভিযোগ, এর আগেও এই এলাকায় ওই মদের কাউন্টারের মদ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের।
পাশাপাশি এলাকার মহিলারা মদের কাউন্টার বন্ধ করার দাবি জানিয়ে মদের কাউন্টারের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। এরপর ঘটনাস্থলে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার পুলিস গিয়ে অবরোধ তোলে এবং ঘটনার সামাল দেয়। মদ খেয়ে মৃত্য়ু নাকি অন্য় কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।
বিজেপি কর্মীকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে কল্যাণীর চাঁদমারি এলাকায়। জানা গিয়েছে, আহত ব্যক্তির নাম মিহির বিশ্বাস। বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। অভিযোগ বিজেপি কর্মীকে মাটিতে ফেলে কোপানো হয়। অভিযুক্ত আরমান তরফদার ও তাঁর ভাইকে স্থানীয়রা পাকড়াও করে গণধোলাই দেয়। ঘটনাস্থলে যায় কল্যাণী থানার বিশাল পুলিসবাহিনী। পুলিস জনরোষের হাত থেকে অভিযুক্তদের উদ্ধার করে কল্যাণীর জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মিহির বিশ্বাস মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আক্রমণের জেরে ঘটনাস্থলেই আক্রান্তের হাতের একটি আঙুল কেটে গিয়েছে। এমনকি ঘাড়ের পিছনেও হাঁসুয়ার কোপ মেরেছে। জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো ঘটনার দিন সকালে সেলুন খোলেন মিহির বিশ্বাস। হঠাৎই পিছন থেকে এসে আরমান তাঁকে হাঁসুয়ার কোপ মারেন। সে ঘুরে দাঁড়াতে হাতেও কোপ মারেন বলে অভিযোগ। যার দরুন মিহিরের একটি আঙুল কেটে যায়।
উত্তেজিত স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন। চলে গণপ্রহার। আরমানকে বাঁচাতে এসে আহত হয় তাঁর ভাইও। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কল্যাণী থানার পুলিস। তবে কী কারণে এই খুনের চেষ্টা তা জানা যায়নি। অন্যদিকে আহত আরমান ও তাঁর ভাইও চিকিৎসাধীন কল্যাণী জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিস বাহিনী।
করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার নামে নির্বীজকরণ বা এনএসভি করানোর অভিযোগ স্থানীয় দু'জন আশা কর্মী ও ফুলিয়া প্রাথমিক হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুর থানার চাঁদরা রায়পাড়া এলাকায়। ইতিমধ্যে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
জানা গিয়েছে, গত সোমবার ২৭ নভেম্বর মাধব রায়কে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে ফুলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এনএসভি করানো হয়। পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেই তাঁকে বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সারাদিন পেরিয়ে গেলেও ঠিক সন্ধের আগে পরিবারের লোকজন খবর পান রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছেন মাধব রায়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি পরিবারের লোকেরা ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। এরপর কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরিবারের সদস্যদের কাছে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয় মাধব রায়ের এনএসভি অপারেশন করা হয়েছে। তবে এই বিষয়ে পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে এই অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এলাকারই দু'জন আশা কর্মী এবং ফুলিয়া হাসপাতালে চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, পরিবারের তরফ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মাধব রায়ের রোগের কর্ম ক্ষমতা হারানোর। চিন্তায় ভেঙে পড়ছেন মাধব রায়ের স্ত্রী মেনকা রায়। পরিবারের তরফ থেকে দোষীদের বিরুদ্ধে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিস।
জয়নগর, আমডাঙ্গার পর এবার চাপড়ায় ঘটল খুনের ঘটনা। ধানের জমিতে এক ব্য়ক্তিকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ। বুধবার সকালে চাপড়া থানার সীমানগর ফরেস্টের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ওই ব্য়ক্তির রক্তাক্ত মৃতদেহ। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চাপড়া থানার পুলিস গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য় পাঠায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্য়ক্তির নাম সাধন বিশ্বাস (৫৮)।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে বুনো শুয়োরের উপদ্রবের কারণে মাঠে ধানের জমি পাহারা দিতে গিয়েছিলেন সাধন বিশ্বাস। এরপর এদিন সকালে ধানের জমি থেকে উদ্ধার হয় ওই ব্য়ক্তির মৃতদেহ। পাশের জমির মালিকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিবাদ ছিল। তার জেরেই এই খুন করা হয় বলে দাবি পরিবারের পক্ষ থেকে। এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তের নাগাল পাওয়া যায়নি। তবে কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।