গার্ডেনরিচের বহুতল বিপর্যয়ের পর থেকে একের পর এক বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠে আসছে প্রকাশ্যে। প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের নাকের ডগায় এতো অবৈধ নির্মাণ কীভাবে সম্ভব? তাহলে কি এতদিন ঘুমিয়ে ছিল বাংলার প্রশাসন? এই আবহেই সল্টলেক এফডি ব্লকে দেখা গেল প্রশাসনের অতিসক্রিয়তা।
জানা গিয়েছে, সল্টলেকের এফডি ব্লকের ১৮০ নম্বর বাড়ি, নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। সাত দিন আগে এই বাড়িটি অস্থায়ী রূপে বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ের জন্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। তারপরেই সোমবার বিকেলে বেআইনি নির্মাণ ঘোষণা করে নোটিশ বিধাননগর পুরনিগমের। ৭ বছর আগে নির্মাণ হওয়া বাড়ির অবৈধতা নিয়ে প্রশ্ন এতদিন পরে কেন? তাহলে কি বিজেপিকে ভাড়া দেওয়াতেই এই আক্রোশ প্রশাসনের? বাড়ির মালিক জানালেন সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই বাংলায়।
তবে এলাকার কাউন্সিলর বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, অবৈধ নির্মাণ বলেই নোটিশ গেছে। বাড়ির মালিক প্রমাণ করুক বাড়ি বৈধ কিনা।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি বিরোধীদের প্রতি স্বাভাবিক প্রতিহিংসার কারণেই প্রশাসনের এই পদক্ষেপ? না হলে এতদিন কেন ফেরেনি হুঁশ? বিরোধীরা বারংবার দাবি করেন, শাসকদলের কারণেই বাংলায় সুষ্ঠ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। বিরোধী দলের নির্বাচনী কার্যালয় হওয়ার ৭ দিনের মাথাতে প্রশাসনের অবৈধ নোটিশ যে সেই দাবিতেই শিলমোহর, তা বলাই বাহুল্য।
গার্ডেনরিচকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে তৎপর কলকাতা পুর সংস্থা। সংস্থার সব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণ শুরু করতে চলেছে পুর কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, বেআইনি নির্মাণ আটকাতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, আইনি নোটিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার পদ্ধতি নিয়ে দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ।
ইতিমধ্যে গার্ডেনরিচে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা নিয়ে শুরু হয়েছে পুরসভা ও আবাসিকদের মধ্যে টানাপোড়েন। ইতিমধ্যে আবাসিকরা দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। আগামী সোমবার রয়েছে এই মামলার শুনানি। কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিসের তরফে তৈরি করা হয়েছে, গার্ডেনরিচে গজিয়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণের তালিকা। সেই তালিকা ধরেই কলকাতা পুরসভা আগামীদিনে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করবে। একই সঙ্গে পুনর্বাসন নিয়েও ভাবনা রয়েছে কলকাতা পুরসভার।
অন্য়দিকে গার্ডেনরিচকাণ্ডের পর বেআইনি নির্মাণ ভাঙার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল প্রশাসন। এবার গার্ডেনরিচের একটি বেআইনি বহুতল ভাঙার কাজে হাত দিল প্রশাসন। যদিও কোনওরকম নোটিশ ছাড়া বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায় গার্ডেনরিচে। যা নিয়ে বেআইনি বহুতলের আবাসিকরা বিক্ষোভও দেখান।
গার্ডেনরিচের বহুতল বিপর্যয়ে অকালে বলি হয়েছে বহু প্রাণ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় গঠন হয়েছে কলকাতা পুরসংস্থার তদন্ত কমিটি। শুরু হয়েছে তদন্ত।
মঙ্গলবার পুরসভার যুগ্ম কমিশনার জয়ন্ত তাঁতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি আজহার মোল্লা বাগানে সাইট পরিদর্শন করে। তদন্তে ছিলেন, ডিসি পোর্ট, ওসি গার্ডেন রিচ সহ ডিজি সিভিল, সিএমই এসডব্লিউএম, ডিজি রোডস, ডিজি বিল্ডিং, স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার, মৃৎ ও স্থাপত্য বিভাগের ৩ জন বিশেষজ্ঞও।
বিশেষজ্ঞরা বিপর্যয়স্থলের লোহা, কংক্রিটের কয়েকটি নমুনা সংগ্রহ সহ, ধ্বংসের পিছনে ঠিক কী কারণ, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখেন। চিহ্নিত করা হয়েছে মাটি পরীক্ষার বোরিং স্পটও। নিরাপত্তা পয়েন্টে কিছু সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিয়ে, সেখানে ধ্বংসের কাজ পর্যবেক্ষণ করা হয়। নিরাপত্তার কারণেই ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের ঘটনাস্থলে বা ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে না যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এছাড়াও প্রোমোটারদের দ্বারা, কোন ধরনের পরিকল্পনা ব্যবহার করা হয়েছিল বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে, তাও অনুসন্ধান করছে পুলিস কর্তৃপক্ষ। পার্শ্ববর্তী কাঁচা বাড়ি এবং সম্পত্তির ক্ষতির মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছে তদন্ত কমিটি। যদিও একারণে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার ফের জমির বিবরণ যাচাই তদন্ত কমিটির। এছাড়াও ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষজ্ঞরা সাইট থেকে কংক্রিটের নমুনা সংগ্রহ করেন বলে সূত্রের খবর। তবে, বিশেষজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী ২দিনের মধ্যে দুর্ঘটনাস্থল ফের পরিদর্শন করা হতে পারে বলে কলকাতা পুরসংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে।
এখন দেখার বিষয় একটাই যে, এই তদন্ত কমিটির হাতে ঠিক কী কী তথ্য উঠে আসে? প্রশাসনিক গাফিলতির জেরে ফের অকালে বলি হবেন না তো বাংলার মানুষ? রাজ্যবাসীর নিরাপত্তার দায়ভার নিয়ে ছেলেখেলা চলবে না তো? যদিও প্রশ্নগুলো জানা থাকলেও বরাবরের মতোই অজানা এর উত্তর।
গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। সরব রাজ্যবাসী। আর এভাবেই বারংবার একাধিক প্রাণের বিনিময়ে হুঁশ ফিরছে প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পর কলকাতা পুরসংস্থায় জমছে অভিযোগের পাহাড়। একাধিক বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ। তাও আবার জমা পড়ছে সরাসরি ডিজি বিল্ডিংয়ে। সূত্রের খবর, সেই সমস্ত অভিযোগ বোরো এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে কলকাতা পুরসংস্থার বিল্ডিং বিভাগ।
ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ জানালেন, সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে লুঠপাটের রাজ চলছে। পরিণাম, অসংখ্য প্রাণহানি। প্রশাসন জানে সবই শুধু দায় কেউ নিচ্ছেন না।
একদিকে যখন প্রশ্ন উঠছে, গার্ডেনরিচের মতো এমন জনবহুল, ঘিঞ্জি এলাকায় এমন অবৈধ নির্মাণের বহুতল গড়ে উঠল কীভাবে? অন্যদিকে এই ঘটনায় প্রকাশ্যে আসছে বেআইনি নির্মাণের এক নয়, একাধিক অভিযোগ। আর এখানেই প্রশাসনের গাফিলতি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে শহরবাসীর নিরাপত্তা নিয়েও। এতদিন কি ঘুমিয়ে ছিলেন প্রশাসন? আর কত লাশের পাহাড় জমা হলে এই সমস্যার সুরাহা মিলবে? জবাব চাইছে বাংলার মানুষ।
পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সক্রিয় সিবিআই। এই মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে অয়ন শীলকে। পাশাপাশি, অয়ন শীলের সংস্থার একাধিক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বিভিন্ন পুরসভার কর্মীদের-ও। জানা গিয়েছে, বরানগর পুরসভার ক্লার্ক, পিয়ন সহ একাধিক পদে নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসে ২০টি সেন্টারে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, এই নিয়োগের পরীক্ষা দিয়েছিল মূলত ভুয়ো পরীক্ষার্থীরাই। এমনকি প্রার্থী সংখ্যাতেও কারচুপি করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই সাদা খাতা জমা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই সেই সময় কারা পরিদর্শক ছিলেন, তা জানতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই মতো বরানগর পুরসভার কর্মীদের ডেকে পাঠানো হয়। বুধবার এই মামলায় নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন বরানগর পুরসভার ২ কর্মী।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে, এক প্রাক্তনসরকারি কর্মী জানান, তিনি তিনবছর আগে একটি স্কুল থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। তবে বাকি কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি তিনি।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে যে, রাজ্যের শাসকদলের প্রচ্ছন্ন মদত ছাড়া এত বড় দুর্নীতি কি আদৌ সম্ভব? সিবিআইয়ের তদন্তে কি সামনে আসবে এই দুর্নীতির মাথাদের নাম?
সম্প্রতি রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির খবর সামনে এসেছে। এর মধ্যে পুর নিয়োগ দুর্নীতি অন্যতম। মূলত, অয়ন শীলের সূত্র ধরে এই দুর্নীতির খবর সামনে আসে। অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজোন-এ তল্লাশি চালিয়ে এই দুর্নীতির হদিশ পান তদন্তকারীরা। আর এবার সিবিআই-এর স্ক্যানারে বরানগর পুরসভার নিয়োগ পরীক্ষার কারচুপি।
জানা গিয়েছে, বরানগর পুরসভায় নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসে ২০টি সেন্টারে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। সেই পরীক্ষা কেন্দ্রে যারা পরিদর্শক ছিলেন এবার তাদেরকেই তলব করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আগামী বুধবার ওই পরিদর্শকদের নিজাম প্যালেসে আসতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বরানগর পুরসভার ক্লার্ক, পিয়ন, অ্যাম্বুল্যান্স অপারেটর সহ একাধিক পদে নিয়োগ হয়েছিল। এই নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, এই নিয়োগের পরীক্ষা দিয়েছিল মূলত ভুয়ো পরীক্ষার্থীরাই। এমনকি প্রার্থী সংখ্যাতেও কারচুপি করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই সাদা খাতা জমা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিদর্শকদের তলব করা হল সিবিআইয়ের তরফে।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে যে, রাজ্যের শাসকদলের প্রচ্ছন্ন মদত ছাড়া এত বড় দুর্নীতি কি আদৌ সম্ভব? তদন্তে কি সামনে আসবে এই দুর্নীতির মাথাদের নাম?
পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে ইডি। শুক্রবার সকাল থেকেই ছিল টান টান উত্তেজনা। কারণ শুক্রবার সাতসকালেই শাসকদলের তিন হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকরা। রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় ও উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সুজিত বসুর বাড়িতে প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা ও তাপস রায়ের বাড়িতে প্রায় ১২ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশির পর একাধিক নথি ও তাঁদের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর সেসব নথি ও ফোন থেকেই দুর্নীতির পর্দাফাঁস হতে পারে বলে আশাবাদী ইডি।
গতকাল মন্ত্রী ও বিধায়কের বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়ে একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। ইডির দাবি, এই সব নথি পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসাবে কাজে আসবে। গতকাল বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে ১০ ঘণ্টারও বেশি ম্যারাথন তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁর মোবাইল ফোন ও বরানগর পুরসভা সংক্রান্ত একাধিক রিকোয়েস্ট লেটার উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কিছু বায়োডাটাও উদ্ধার করেছে ইডি। পাশাপাশি ইডির ডিজিটাল এক্সপার্টদের মাধ্যমে মোবাইল ফোন এক্সট্রাক্টর কাম হার্ডড্রাইভ ডিকোর্ডিং যন্ত্রের সাহায্যে তাপস রায়ের মোবাইল থেকে সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখবে ইডি।
এছাড়াও জানা গিয়েছে, আজ অর্থাৎ শনিবার ইডির তরফ থেকে সেই সমস্ত বায়োডেটার ক্যান্ডিডেটদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। কী কারণে বায়োডাটা জমা দিয়েছিলেন তাপস রায়ের কাছে, সেই বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে ইডির তরফ থেকে। বরানগর পুরসভার কোন কাজের জন্য রিকোয়েস্ট লেটার দেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়েই খতিয়ে দেখবে ইডি, এমনটাই সূত্রের খবর। মন্ত্রী সুজিত বসুর বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোন পরীক্ষা করেও গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হবে বলে আশাবাদী ইডি।
শুক্রবার সাতসকালে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে তল্লাশি চালানো শুরু হয়েছে তাঁদের বাড়িতে। পাশাপাশি উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তী বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা। দীর্ঘ ১২ ঘন্টার তল্লাশি শেষে বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়ি থেকে বের হল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দীর্ঘ তল্লাশিতে একাধিক নথি এবং বিধায়কের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে ১০ ঘণ্টা তল্লাশি শেষে সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে বেরোলেন ইডি আধিকারিকরা। এককথায় বলা যায়, পুর নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে আজ, শুক্রবার সকাল থেকে তুঙ্গে ইডি তৎপরতা। সকালের আলো ফুটতেই বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস এবং রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। গোটা এলাকাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। এমনকি ঘিরে রাখা হয় তাপস রায়ের বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাড়িটিও। সকাল থেকে প্রায় দীর্ঘ ১২ ঘন্টা ধরে চলে এই তল্লাশি অভিযান। আর এই দীর্ঘ তল্লাশিতে কিছুই তেমন পাওয়া যায়নি বলেই দাবি তৃণমূল বিধায়কের।
তাপস রায় কথায়, 'কিছু নেই তো পাবে কি!' ইডি বাড়ি ছাড়তেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাপস রায় জানিয়েছেন, 'আমি নিজেও খুবই আশ্চর্য হয়েছি। বরাহনগর পুরসভার কোনও নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত নই। এমনকি রাজনৈতিক জীবনে কোনও দুর্নীতির সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না এবং জড়িত নই'। আগামীদিনে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। আগামীদিনে তাঁকে তলব করা নিয়ে কিছু ইডি আধিকারিকরা জানাননি বলেই দাবি তৃণমূল নেতার।
অয়ন শীলের ডায়েরি থেকেই খোঁজ পাওয়া গিয়েছে সুজিত বসুর নাম! এমনটাই ইডি সূত্রে খবর। শুক্রবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই সুপার অ্যাকশন মোডে ইডি। সন্দেশখালির ঘটনার পর এবারে পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রায় ১২ ঘণ্টা পরও এখনও চলছে তল্লাশি। এদিন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস রায় ও উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। জানা গিয়েছে, পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অয়ন শীলের ডায়েরির সাঙ্কেতিক কোড থেকেই জানা যায় সুজিত বসুর নাম।
জানা গিয়েছে, সকাল থেকে সুজিত বসুর পুরনো বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর ইতিমধ্যেই সেখান থেকে বেরিয়ে যায় ইডি। এর পর সুজিত বসুর ছেলে সমুদ্র বসুকে নিয়ে পাশের একটি অফিস ও বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানেও চলেছে তল্লাশি। এই দফতরের বাইরে রয়েছে বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী, বিধান নগর পুলিসের বাহিনীও। ইতিমধ্যেই সেখান থেকে চারজন ইডি আধিকারিক বেরিয়ে গেলেও কয়েকজন আধিকারিক এখনও চালাচ্ছেন তল্লাশি। অন্যদিকে ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলের ডায়েরির সাঙ্কেতিক চিহ্ন থেকেই পাওয়া যায় মন্ত্রী সুজিত বসুর নাম। এছাড়াও ইডি দফতরে একাধিকবার বিভিন্ন এলাকার চেয়ারপার্সন, প্রাক্তন চেয়ারপার্সনকে তলব করে উঠে আসে মন্ত্রীর নাম। ফলে সুজিত বসুর বাড়ি-অফিসে হানা দিয়ে কী কী তথ্য পাওয়া যায়, সেদিকে তাকিয়েই বাংলা।
ধৃত অয়ন শীলের নাম ফের উঠে এল পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়েই চাঞ্চল্যকর তথ্য এল ইডির হাতে। নিয়োগ দুর্নীতিতে একাধিক মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। আর এই ফোনেই হদিশ পাওয়া গিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের। যেখানে 'অ্যাডমিন' অয়ন শীল ও সেখানেই পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা সুপারিশ দিতেন নিয়োগের জন্য। ইতিমধ্যেই ১৪ টি পুরসভার নাম উঠে এসেছে এই দুর্নীতি মামলায়।
এর আগেও ইডির হাতে গ্রেফতার প্রোমোটার অয়ন শীলের সম্পর্কে একাধিক চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছিল। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলেই দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এবারে ইডির দাবি, এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমেই পাঠানো হত চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা। জানা গিয়েছে, সেই গ্রুপেই চাকরিপ্রার্থীদের নাম সুপারিশ করতেন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা। এরপর সেই নির্দেশ মতই অয়ন শীল চাকরিপ্রার্থীদের কাছে চাকরি 'বিক্রি' করতেন। অর্থাৎ টাকার অঙ্ক থেকে শুরু করে ওএমআর শিটে বিকল্প তৈরি করা, নম্বর বাড়িয়ে প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে তা নিজের সংস্থার কর্মীদের বলে দিতেন অয়ন শীল। পুরসভার চেয়ারম্যানদের সুপারিশ মতই নিয়োগ দেওয়াতে তৎপর হতেন অয়ন শীল। ফলে ইডির এই দাবির পরই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমেই অযোগ্য প্রার্থীদের পুরসভায় নিয়োগ দেওয়া হত? এই তথ্য উঠে আসার পর ইডির পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেটাই এখন দেখার।
ঝালদা পুরসভা নিয়ে ফের আইনি জট। আগামী ৮ ডিসেম্বর হচ্ছে না আস্থা ভোট। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ খারিজ ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, চেয়ারম্যানকে অপসারণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। সেই পদ্ধতিই অনুসরণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ঝালদা পুরসভার চেয়ারপারসনের অপসারণ চেয়ে জোড়া মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। চেয়ারপারসন শীলা চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে ৫ তৃণমূল কাউন্সিলর ও ২ কংগ্রেস কাউন্সিলরের দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। পুরবোর্ড দখলের লড়াইয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই সরগরম পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভা। যে ঘটনায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব । উল্লেখ্য, ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভায় বর্তমানে সমীকরণ রয়েছে তৃণমূল ১০ এবং কংগ্রেস ২। পুরপ্রধান পদে রয়েছেন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগদানকারী শীলা চট্টোপাধ্যায়। এমত অবস্থায় গত ২৩ নভেম্বর পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে পৃথক পৃথক ভাবে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ঝালদা পুরসভার ২ কংগ্রেস কাউন্সিলর এবং তৃণমূলের ৫ কাউন্সিলর।
সেই মামলাতেই ৩০ নভেম্বর বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আস্থা ভোট করাতে হবে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে সমস্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তার মাঝে পুরসভা যেমন চলছে, তেমনই চলবে। বুধবার এই নির্দেশ খারিজ করে দেয় বিচারপতি অরিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৮ ডিসেম্বর আস্থাভোট হচ্ছে না বলেই জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, বিগত পুর নির্বাচনে ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পৌরসভায় কংগ্রেস ৫, তৃণমূল ৫ এবং নির্দল ২টি ওয়ার্ডে জয়লাভ করে। বোর্ড গঠনের ঠিক আগে ২০২২ সালের ১৩ মার্চ দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন ২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর। তারপর থেকেই শুরু দীর্ঘসূত্রিতার আইনি জট।
ঝালদা পুরসভার কুরশি কার! কখনও তৃণমূলের, কখনও বা কংগ্রেসের। কিন্তু শেষমেশ এই কুর্শিতে কে বসবে সেটা ঠিক করতে হবে ৮ই ডিসেম্বরের মধ্যে, এমনটাই নির্দেশ হাইকোর্টের। বৃহস্পতিবার ঝালদা পুরসভার দুটি পৃথক মামলার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এদিন জাস্টিস সিনহা নির্দেশ দেন, ৮ই ডিসেম্বরে মধ্যে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে ঝালদা পুরসভার আস্থা ভোট করতে হবে। এমনকি যাতে সাধারন মানুষের কোনও বিঘ্ন না ঘটে সেই জন্য বিচারপতি সিনহার পর্যবেক্ষণ, এই আস্থা ভোট শেষ হবার আগে পুরসভা যেমন চলছে, তেমনই চলবে। এছাড়া তিনি আরও নির্দেশ দেন, এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে অর্থাৎ ১২ই ডিসেম্বর আস্থা ভোট সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে জেলা শাসককে।
২০২২ সালে পুরভোট শেষ হলেও, ঝালদা রাজ্যের একমাত্র পুরসভা যেখানে কুর্শির দখল নিয়ে লড়াই এখনও চলছে। কখনও মন, কখনও মতি, ঠিক সেরকম ভাবেই দল বদলান ঝালদার কাউন্সিলরদের কেউ কেউ। ফলে পুরসভার নিয়ন্ত্রক শক্তিও বদলে যায় যখন তখন। মোট ১২টি আসন এই ঝালদা পুরসভায়। গত পুরভোটে তৃণমূল ও কংগ্রেস এখানে যথাক্রমে ৫টি করে আসনে জেতে। নির্দল পায় বাকি ২টো। এই নির্দলই বারবার খেলা ঘুরিয়েছে ঝালদার। বিশেষ করে শীলা চট্টোপাধ্যায় কখনও কংগ্রেসে সমর্থন দিয়েছেন, কখনও তৃণমূলে। হাইকোর্টের নির্দেশে গতবার আস্থা ভোটে এই শিলা চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে ৭-০তে জয় লাভ করে কংগ্রেস বোর্ড গঠন করে। কিন্তু শিলা ফের তৃণমূলে যোগদান করলে কংগ্রেস অনাস্থা আনে।
শীলা চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু ও বিপ্লব কয়াল। এদিন কংগ্রেস কাউন্সিলরদের পক্ষে আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী বলেন, 'ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সনের অপসারণ চেয়ে পাঁচজন তৃণমূল কাউন্সিলর ও দুই কংগ্রেস কাউন্সিলরের দু’টি পৃথক মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলাতেই এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আজ, শুক্রবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দফতরে আবারও হাজিরা দিলেন বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক। এই নিয়ে তৃতীয়বার তলব করা হল অপর্ণা মৌলিককে। ইডির তরফে অপর্ণা মৌলিকের বাড়িতে ৫ই অক্টোবর দীর্ঘ ১০ ঘন্টা তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। এই তল্লাশি অভিযানে একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করেন ইডির আধিকারিকরা।
পাশাপাশি এদিন পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় টিটাগড় পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরীকেও তলব করা হয়। তিনিও ইডির দফতরে হাজিরা দেন। এলেন ইডি দপ্তরে। এই নিয়ে চতুর্থ বারের জন্য ইডি আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলেন প্রশান্ত চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডি ও সিবিআই। বিগত কয়েকদিনে লাগাতার রাজ্যের বেশকিছু জায়গায় হানা দিয়েছে ইডি ও সিবিআই-এর দল। অয়ন শীলের সূত্র ধরেই প্রথম প্রকাশ্যে আসে পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি। এরপর তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় এই দুই এজেন্সি। তদন্তে নেমে সম্প্রতি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতেও হানা দেন সিবিআই কর্তারা। দীর্ঘ বেশ কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ চালায় সিবিআই। পাশাপাশি মদন মিত্র-সহ তৃণমূলের আরও বেশকিছু প্রথম সারির নেতার বাড়িতেও তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আবার নাটকে ব্যারিকেড! এবার নবদ্বীপ পুরসভা বন্ধ করল উৎপল দত্ত রচিত দেবেশ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত চাকদহ নাট্যজন প্রযোজিত ‘ব্যারিকেড’-এর অভিনয়। আগামী বছরের ২৩ জানুয়ারি নবদ্বীপ রবীন্দ্র সাংস্কৃতিক মঞ্চে এই নাটক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। অভিযোগ, মৌখিকভাবে ওই নাট্য সংস্থাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই নাটক করা যাবে না। ফলে প্রশ্ন উঠছে, সংস্কৃতির মঞ্চে তবে কি রাজনীতি? ফের কি তবে শাসকের রোষের মুখে সংস্কৃতি?
চাকদহ নাট্যজনের সম্পাদক সুমন পালের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে, নবদ্বীপ রবীন্দ্র সাংস্কৃতিক মঞ্চে 'ব্যারিকেড' নাটকটি করা যাবে না। এও জানানো হয়, অন্য নাটক হতে পারে কিন্তু ব্যারিকেড করা যাবে না। তাই তাঁদের প্রশ্ন, 'উৎপল দত্তের আরও বেশ কয়েকটি নাটক এই বঙ্গে নিয়মিত অভিনয় হচ্ছে। তাহলে ব্যারিকেড বন্ধ করার কারণ কি রাজনৈতিক না অন্য কিছু?'
তাঁরা বলেছেন,'আমাদের মতন একটি দলের কাছে এই আঘাত আমাদের চলার পথে এক ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে নিয়ে আসছে। কিন্তু আমরা কোনভাবেই "ব্যারিকেড"এর মতন নাটক বন্ধ করতে রাজি নই। আমাদের অন্যান্য প্রযোজনার পাশাপাশি ব্যারিকেড নাটকটির অভিনয় করে যেতে চাই। চাকদহ নাট্যজনের পক্ষ থেকে আপামর মানুষের কাছে আমাদের এই প্রশ্ন। আশা করি আপনারা আমাদের সঠিক পথ দেখিয়ে দেবেন।'
আগেই পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের একধিক পুরসভার। এবার ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠল তারকেশ্বর পুরসভার বিরুদ্ধে। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই রেজিস্ট্রি করানো হয়েছিল ফ্ল্যাট। অভিযোগ,পূর্বনির্ধারিত সুযোগ-সুবিধা না দিয়েই ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় চাবি। যার ফলে সমস্যায় পড়েন ৩০-৪০ জন ক্রেতা। অভিযোগ তাঁদের সঙ্গে যৌথভাবে প্ৰতারণা করেছে তারকেশ্বর পুরসভা এবং সানফ্লাওয়ার গ্রীন প্রজেক্ট লিমিটেড সংস্থা। ওই গ্রাহকদের অভিযোগ, জেলা থেকে রাজ্য স্তরে অভিযোগ জানিয়েও মেলেনি সুরাহা।
জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে পুর বোর্ড দখল করে তৃণমূল। এরপরই তারকেশ্বর পুরসভার অধীনস্থ বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় একটি বহুতল নির্মাণের পরিকল্পনা হয়। পুরসভার আয় বাড়াতে ২০১৩ সালে সানফ্লাওয়ার গ্রীন প্রজেক্ট লিমিটেড নামে ওই বহুতল নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয় তারকেশ্বর পুরসভার। ৭২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ১০ তলা বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তৎকালীন পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন স্বপন সামন্ত এবং ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন উত্তম কুন্ডু। আরও অভিযোগ, সানফ্লাওয়ার গ্রীন প্রজেক্ট লিমিটেড সংস্থার বোর্ডের ডিরেক্টর ছিলেন তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম কুন্ডুর স্ত্রী। অভিযোগ, এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত প্রাক্তন ও বর্তমান চেয়ারম্যান। যদিও একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন প্রাক্তন ও বর্তমান চেয়ারম্যান। অভিযোগ অস্বীকার বহুতল নির্মাণকারী সংস্থার মালিক রাজেশ আগারওয়ালের। এ অবস্থায় রীতিমত দিশেহারা ওই ফ্ল্যাট গ্রাহকরা।
এ ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে কেন এই ফ্ল্যাট গুলি সমস্ত সুযোগ সুবিধা না দিয়েই হস্তান্তর করা হয়। ওই গ্রাহকদের তরফ থেকেই অভিযোগ ওই ফ্ল্যাট গুলিতে এখনও বেশ কিছু নির্মাণ কাজ বাকি। বাকি জলের কাজ ও রঙের কাজও। এখন ওই পূর্বনির্ধারিত পরিষেবা পেতে কি করবে গ্রাহকরা! এই প্রশ্নই উঠছে। যদিও এ বিষয়ে প্রাক্তন পুরপ্রধানের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।