এবার আমি ঢাকি শুদ্ধ বিসর্জন দিয়ে দেবো। ২০১৬-র প্রাথমিক নিয়োগে (Primary Recruitment) ফের দুর্নীতির গন্ধ পেয়ে হুঁশিয়ারি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly)। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কম নম্বর পাওয়া প্রশিক্ষিতরা চাকরি পেয়েছেন। এই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ ১৩৯ জন চাকরিপ্রার্থী। দাবি, 'যারা চাকরি করছেন, তাঁদের থেকে অপ্রশিক্ষিত মামলাকারীদের নম্বর বেশি।' এই অভিযোগ শুনেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, 'মামলাকারীদের তাঁদের দাবির প্রেক্ষিতে এক সপ্তাহের মধ্যে অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিতে হবে। জানাতে হবে তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কবে অংশ নিয়েছেন, টেটে তাঁরা কত নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা যেহেতু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়, সেজন্য আদালত এখন এ নিয়ে কোনও নির্দেশ দিচ্ছে না। ১৬ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।'
মঙ্গলবার আদালতে মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীরা দাবি করেন, 'এখনও পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি নন ট্রেইনড প্রাথমিকে ২০১৬-তে চাকরি পেয়েছেন। মোট ৪২ হাজার নিয়োগ হয়েছিল। ৮২৪ জনের এমন নথি আছে, যারা ১০ থেকে ৩০ পেয়ে চাকরি করছেন।' এই সওয়াল শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতির পর্ষদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি,'২০১৬-র গোটা নিয়োগ যদি বাতিল করে দি তখন বুঝতে পারবেন। মানিক ভট্টাচার্যের নির্দেশে এই বেনিয়ম হয়েছে।'
জানা গিয়েছে, ২০১৪-র পরীক্ষা আর ২০১৬-র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ তুলে ১৩৯ জন চাকরিপ্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ। পরবর্তী শুনানিতে প্রত্যেক পক্ষ তাঁদের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানাবে। তারপর অবস্থান স্পষ্ট করবে আদালত। এদিন জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বুধবার ইডি (ED) ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তাপস মণ্ডল। খানিকটা ইডির অভিযোগেই সিলমোহর দিয়েছে তাপস মণ্ডল। কেন্দ্রীয় সংস্থার সিজিও কমপ্লক্সের (CGO Complex) অফিসে এদিন সকাল ১১টা নাগাদ হাজিরা দেন মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল। অপসারিত পর্ষদ (Primary Board) সভাপতির মহিষবাথানের অফিস সংক্রান্ত একাধিক নথি নিয়ে তাপসবাবুকে হাজিরা দিতে বলেছিল ইডি। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মানিক গ্রেফতারির পর তিন বার তাপস মণ্ডলকে ডেকেছে ইডি। গত মাসের শেষে একবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন তাপস। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে লিঙ্কম্যান হিসেবে কাজ করতেন তাপস মণ্ডল। প্রাথমিক তদন্তের এমনটাই অনুমান ইডির।
সেই মোতাবেক এদিন সিজিও কমপ্লক্সে ঢোকার মুখে ইডির করা অভিযোগ প্রসঙ্গে মানিক ঘনিষ্ঠকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। আপনি কি অফলাইন লেনদেনের বিষয়ে কিছু জানেন? এই যে ইডি আদালতে দাবি করছে B.ED এবং D.EL.ED কলেজে ছাত্র ভর্তিতে অফলাইন লেনদেনের টাকা মানিক ভট্টাচার্যের কাছে যেত?
সেই প্রশ্নের জবাবে তাপস মণ্ডল বলেন, 'অফলাইনে ভর্তির টাকা এবং নথি নিতে মহিষবাথানের অফিসে লোক পাঠাতেন মানিক ভট্টাচার্য। আমরা স্টাফরা এমনটাই বলেছেন। উনি যখন লোক পাঠাতেন নিশ্চয় টাকা মানিক ভট্টাচার্যের কাছে যেত। ছাত্রপিছু ৫ হাজার টাকা পাঠানো হতো।' পাশাপাশি এদিন তিনি জানান, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত যে যে নথি তাঁর কাছে চাওয়া হয়েছিল, সেই সেই নথি তিনি নিয়ে এসেছেন। এর আগেও কিছু নথি তিনি কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছেন।
B.ED এবং D.EL.ED কলেজে ভর্তির 'বেনিয়ম'-এর ইঙ্গিত খানিকটা তাপস মণ্ডলের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বেড়িয়ে আসল। এমনটাই অনুমান একাংশের।
এবার আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের (Partha-Manik) আঁতাতের বিষয়টা ইডি (ED) লিখিত আকারে প্রকাশ করল। ইডির তরফে জানানো হয়েছে, মানিক ভট্টাচার্য এবং তাঁর ছেলে দু'জনে মিলে যে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছিল, সেই সম্বন্ধে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানতেন। এই বিষয় সম্পর্কিত বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, সেগুলো পার্থ এবং মানিক দুজনের মোবাইল থেকেই ইডির আধিকারিকরা উদ্ধার করেছেন। সেই সব খতিয়ে দেখে ইডির দাবি মানিক ভট্টাচার্যের দুর্নীতির কথা জেনেও চোখ বন্ধ করেছিলেন। এই দাবি আদালতে করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা (CBI-ED)।
মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ, পাল্টা মানিক ভট্টাচার্যকে পাঠিয়ে দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালতে জানিয়েছে ইডি। এদিকে, প্রেসিডেন্সি জেলে একই ওয়ার্ডে আছেন মানিক ভট্টাচার্য ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে এখনও মুখোমুখি হয়নি দু'জন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে মানিক ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থা ভালোই। আগামী সোমবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাজিরা নির্দেশ আছে।
অপরদিকে, জেলে গিয়ে মানিককে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি সিবিআইয়ের। শুক্রবার ইডি-সিবিআই স্পেশাল আদালতে সিবিআইয়ের আবেদনে সাড়া দিয়েছে। পাশাপাশি আরও ১৪ দিন মানিকের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency Jail) পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে ওয়ার্ডে রয়েছে, সেই ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে মানিক ভট্টাচার্যকেও (Manik Bhattacharya)। দু'জনের সেলও আলাদা। সূত্রের খবর, মানিক ভট্টাচার্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সঙ্গে কথা বলতে গেলে এড়িয়ে যান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁদের দু'জনের মধ্যে এযাবৎকাল কোনও কথা হয়নি। এমনটাই জেল সূত্রে খবর। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয়েছে মানিক ভট্টাচার্যকে। আদালতের নির্দেশে অপসারিত পর্ষদ কর্তাকে তাঁর সেলে ঢোকানোর সময় মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। কিন্তু তাঁর থেকে কোনও পাল্টা সাড়া পায়নি মানিক ভট্টাচার্য।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে আর্থিক তছরূপের দায়ে ইডির হাতে ধৃত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। ১৪ দিনের ইডি হেফাজত শেষে আপাতত তিনি কোর্ট নির্দেশে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত প্রেসিডেন্সি জেলেই বন্দি। এদিকে, এই ইডি ২৩ জুলাই গ্রেফতার করেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। প্রাক্তন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ অপ্রিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ, সঙ্গে গয়না এবং বিদেশি মুদ্রা। সেই অর্পিতা আবার আলিপুর মহিলা জেলে বন্দি।
প্রায় ১০০ দিন পেরোলেও এখনও পর্যন্ত জামিন পাননি পার্থ বা অর্পিতা কেউই। পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে এযাবৎকাল তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর হাতে এসেছে। ইতিমধ্যে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার পরামর্শদাতা কমিটির চেয়ারম্যান এসপি সিনহা, শিক্ষা কর্তা অশোক সাহা এবং এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য।
দিন দুয়েক আগে মানিকের (Manik Bhattacharya) বিরুদ্ধে থাকা কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই শীর্ষ আদালতেই বড়সড় ধাক্কা খেলেন প্রাথমিক বোর্ডের (Primary Board) অপসারিত সভাপতি। ইডি (ED) গ্রেফতারির বিরুদ্ধে করা তাঁর আবেদন এদিন খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মানিকের দাবি ছিল, যে মামলায় সিবিআই গ্রেফতারিতে তাঁর উপর রক্ষাকবচ রয়েছে, একই মামলায় ইডির গ্রেফতারি বেআইনি। কিন্তু শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
ফলে আপাতত জেলেই থাকতে হবে মানিক ভট্টাচার্যকে। এদিন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে আর্থিক তছরুপ মামলায় মানিক ভট্টাচার্যকে ইডির গ্রেফতারি বেআইনি নয়। এদিকে, বারাসতে মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের বাড়িতে ইডির ম্যারাথন তল্লাশির পর বৃহস্পতিবার তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। কিনতি ইডির কাছে হাজিরার জন্য সময় চেয়েছিলেন তাপস। অন্তত ৭ দিন তাঁকে সময় দেওয়া হোক। আইনজীবী মারফৎ কেন্দ্রীয় সংস্থাকে এই বার্তা পাঠিয়েছেন মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল।
যদিও, মঙ্গলবার থেকে তিনি নিজের বাড়িতে আছেন। একেবারের জন্য বাইরে দেখা যায়নি তাপসকে। সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানান স্থানীয়রা। তবে তাপস মণ্ডলকে কোনও সময়ই দিল না ইডি। এদিনই তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে হবে। এমনটাই স্পষ্ট করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক তছরুপ মামলায় ধৃত মানিক ভট্টাচার্যের মুখোমুখি বসিয়ে তাঁকে জেরা করার সম্ভাবনা।
সুপ্রিম কোর্টে বহাল মানিক ভট্টাচার্যর (Manik Bhattacharya) অন্তর্বর্তীকালীন স্বস্তি। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই (CBI) তদন্ত করতে পারবে। কিন্তু এখনই প্রাথমিক বোর্ডের অপসারিত সভাপতির বিরুদ্ধে কোনও কড়া ব্যবস্থা নিতে পারবে না সিবিআই। মঙ্গলবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত (Supreme Court)।
এদিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১) সিবিআই তদন্ত চালিয়ে যাবে
২) চার সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দেবে সিবিআই
৩) মানিকের উপর থাকা রক্ষাকবচ বহাল
৪) প্রাথমিকে চাকরি থেকে যে ২৬৯ বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট, তাঁদের মামলায় যুক্ত করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। সেই মামলার শুনানিতে আজকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ। এদিকে, ইতিমধ্যে তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইডি। আপাতত রয়েছেন ইডি হেফাজতে। যদিও হেফাজতে থাকাকালীন ইডি জেরার মুখে পড়ে একাধিকবার অসুস্থ বোধ করেন মানিক ভট্টাচার্য। তাঁর এবং ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা কোটি টাকার উৎস নিয়ে মুখে কুলুপ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অপসারিত সভাপতির।
মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) গ্রেফতারির দিন কয়েকের মাথায় কলকাতা এবং শহরতলির একাধিক জায়গায় ইডির (ED Raid) ধারাবাহিক অভিযান। শনিবার সকাল থেকেই মহিষবাথান, কলেজ স্কোয়ার, রাজাবাজার, মুচিপাড়া, বারাসাত,কৈখালিতে একযোগে ইডির তল্লাশি। মহিষবাথানে মিনার্ভা এডুকেশন এন্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটির অফিসে তালা ভেঙে ইডির তল্লাশি। জানা গিয়েছে, প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল ও চন্দন মাইতি এই ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চালাতেন। মাঝে মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (primary Board) অপসারিত সভাপতিকে দেখা গিয়েছে আসতে। স্থানীয় সূত্রে এমনটাই খবর।
মহিষবাথানের ওই অফিসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে চাবি না মেলায় তালা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই মোতাবেক চাবিওয়ালা ডেকে হাতুড়ি দিয়ে ভাঙা হয় তালা। সূত্রের খবর, এই অফিস থেকে প্রাইমারি বোর্ডের একাধিক কাজ করা হতো। এখন প্রশ্ন উঠছে, একটি বেসরকারি সংস্থার অফিসে কীভাবে সরকারি কাজ চালানো হতো? এমনকি একাধিক কোর্সের সার্টিফিকেট দেওয়া হতো এই অফিস থেকেই। প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছে ইডি।
স্থানীয়দের দাবি, একাধিক ব্যক্তির আনাগোনা ছিল এই অফিসে। প্রায় ২ মাস ধরে বন্ধ এই অফিস। তবে যে বাড়ির নিচে এই ইনস্টিটিউট সেই বাড়ির মালিককেও জিজ্ঞসাবাদ করেছে ইডি। অফিসে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে কারা কারা আসতেন এবং ঠিক কী কাজ হতো বোঝার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
এই অফিসের একাধিক আলমারি, লকার কম্পিউটার খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় নথি বাজেয়াপ্ত করছে ইডি। এদিকে, রাজাবাজার এলাকায় ৩০২ নম্বর এপিসি রোডের আইডিয়াল হাইটস নামে এক আবাসনে সকালেই হানা দিয়েছিল ইডি। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই কমপ্লেক্সে একটি ফ্ল্যাটের সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের যোগ পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই যোগসূত্রেই এদিন ইডি অধিকারিকরা ওই কমপ্লেক্সে আসেন। প্রায় দু'ঘন্টা নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালান তাঁরা। সেখান থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং কলেজ অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংস্থা ৩০২ এপিসি রোডের আইডিয়াল হাইটস ব্লক বি-তে নথিভুক্ত। যার সিটি অফিস ১৮ নম্বর কার্তিক বোস ট্রিটে।
পাশাপাশি কলেজ স্কোয়ার এলাকার ১৮ নম্বর কার্তিক বোস ট্রিটের বিভাস অধিকারীর নামে কেনা সেই ফ্ল্যাটেও ইডি হানা। স্থানীয়রা বলছেন ছয় থেকে সাত বছর আগে এই ফ্ল্যাট কেনেন বিভাসবাবু। কিন্তু গত তিন মাস এই ফ্ল্যাটে আসছেন না তিনি। কিন্তু যখন তিনি এই ফ্ল্যাটে আসতেন, তাঁর পরিবারকে সঙ্গে দেখা যেত না। তবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একাধিক বয়সী ব্যক্তিদের আনাগোনা ছিল এই ফ্ল্যাটে। স্থানীয়দের আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, সম্ভবত এই ফ্ল্যাটেই বিভাস চৌধুরী বেআইনি কার্যকলাপ করতেন। ফ্ল্যাটের বাইরে একটি নেমপ্লেট টাঙানো থাকলেও আগে বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশনের একটি নেমপ্লেট লাগানো ছিল। পরে সেই নেমপ্লেট বিভাসবাবু খোলেন।
স্থানীয়দের দাবি, 'ফ্ল্যাটের ভেতরে সন্দেহজনক গতিবিধি ছিল। স্থানীয় থানাকে ছয় বছর আগে অভিযোগও জানিয়েছিলেন ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা কিন্তু অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। এখানেই শেষ নয়, বিভাসবাবু নাকি নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতেন সঙ্গে থাকতো বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষী।'
পাশাপাশি মুচিপাড়া থানার গোপালমল্লিক লেনে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ এক চিকিৎসকের বাড়িতে ইডি হানা। কেন্দ্রীয় সংস্থার ৪-৬ সদস্যের এক দল ওই বাড়িতে গিয়ে এক ছাপাখানায় অভিযান চালায়। জানা গিয়েছে, চিকিৎসকের বাড়ির নিচে সেই ছাপাখানা খুলে প্রিন্টিংয়ের কাজ চলতো। শুধু শহর কলকাতা নয় শহরতলির কৈখালী মন্ডলগাঁথি মসজিদ গলিতে ইডি রেড করেছে। এখানেও প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিক যোগ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
অপরদিকে, মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ জনৈক তাপস মণ্ডলের বারাসাতের বাড়িতে ইডি হানা। রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিএড কলেজ চালাতেন তাপস মণ্ডল। সূত্রের খবর এই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তাপস মণ্ডলের যোগাযোগ রয়েছে। মানিক ভট্টাচার্যের মহিষবাথানের টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটও বকলমে চালাতেন এই তাপস মণ্ডল।
এই মুহূর্তে ইডি হেফাজতেই (ED) থাকতে হবে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) ধৃত মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya)। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট (supreme Court) তাঁর আবেদনে কোনও সাড়া দেয়নি। তাই আপাতত এই সপ্তাহ পর্যন্ত রেহাই নেই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অপসারিত সভাপতির। আগামী সোমবার মানিকের আবেদন শুনবে শীর্ষ আদালত। এমনটাই জানিয়েছে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চ। মূলত রক্ষাকবচ থাকা সত্বেও কেন তাঁকে গ্রেফতার? এই আবেদন করে শীর্ষ আদালতে দরবার করেন তৃণমূলের পলাশিপাড়ার বিধায়ক।
এদিকে, সোমবার মধ্যরাতে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতার প্রাথমিক বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে একাধিকবার সিবিআই হাজিরা এড়িয়েছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট থেকে নিয়ে এসেছেন রক্ষাকবচ। তারপরেও ইডির হাতে তাঁর গ্রেফতারি। ইতিমধ্যে মানিকের ফোন ঘেঁটে একাধিক সূত্র পেয়েছে ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি, তাতেও নাম রয়েছে মানিকের। তাই বেশ কিছুদিন ধরেই কেন্দ্রীয় এই সংস্থার নজরে ছিলেন মানিক।
অপরদিকে, ১৪ দিনের ইডি হেফাজতে মানিক। তাই প্রথম দিন থেকেই তাঁকে জেরা করতে চায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। যদিও বুধবারও ইডিকে তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অপসারিত সভাপতি। বেশিরভাগ প্রশ্নের জবাবে চুপ থেকেছেন তিনি। এমনটাই ইডি সূত্রে খবর। এযাবৎকাল তদন্তে ইডি জানতে পেরেছে, দশ বছর বেশি সময় মানিক ভট্টাচার্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন। তাঁর আমলে টাকার বিনিময় প্রচুর চাকরি হয়েছে। ৫৮ হাজারেরও বেশি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অর্থ তছরূপের কিংপিন হিসেবে মানিক ভট্টাচার্যকে মনে করছেন ইডি আধিকারিকরা।
মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) ১৪ দিনের হেফাজত চেয়ে আদালতে আবেদন ইডির (ED)। যদিও এই আবেদনের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ প্রসঙ্গ উল্লেখ মানিকের আইনজীবীর। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের (Primary Board) অপসারিত সভাপতিকে সোমবার গভীর রাতে গ্রেফতার করে ইডি। মঙ্গলবার সকালে ইএসআই জোকা হাসপাতালে তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। এরপর তোলা হয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। তারপরই হেফাজত ইস্যুতে ইডি এবং মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবীর মধ্যে চলে বাগযুদ্ধ। এদিন শুনানি শেষে সন্ধ্যার পর মানিক ভট্টাচার্যকে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
১৪ দিনের কাস্টডি চেয়ে ইডির আইনজীবী বলেন,'মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে ৫৫ জন প্রার্থীর নাম পাওয়া গিয়েছে। যারা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। ৪৪ জন চাকরিপ্রার্থী ৭ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। ৫১৪টি ইনস্টিটিউট থেকে মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের সংস্থায় অর্থ লেনদেন হয়েছে। কিন্তু বিনিময়ে কোনও পরিষেবা দেওয়া হয়নি। পুরোটাই ভুয়ো লেনদেন। ৫০ হাজার টাকা প্রতি ইনস্টিটিউট দিয়েছে।'
ইডির আইনজীবী জানান, টাকার বিনিময়ে চাকরি বিলির অভিযোগ সংক্রান্ত মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠি উদ্ধার হয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের থেকে। এই বিষয়ে অভিযুক্ত কোনও সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের মতো মানিক ভট্টাচার্যকেও 'চোর' শুনতে হয়েছে। এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলার সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে জুতো দেখানো হয় এবং চোর রব ওঠে। এই প্রসঙ্গে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেছেন, 'ওকে জুতো মারতে এসেছিলাম কিন্তু নিরাপত্তা বেশি থাকায় পেরে উঠিনি।'
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এই নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতারের পর একাধিকবার 'চোর' শুনতে হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সিবিআই হেফাজতে থাকা অনুব্রতকে বোলপুর থেকে আসানসোল নিয়ে যাওয়ার পথে গরু চোর শুনতে হয়েছে। একই পরিস্থিতির মুখে তৃণমূলের পলাশীপাড়ার বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের।
অপরদিকে, ২০১৪ প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা অভিনব কায়দার প্রতিবাদ করলেন মাতঙ্গিনী মূর্তির পাদদেশে। এদিন তাঁরা মানিক-অসুর বধ করেন। একজন চাকরিপ্রার্থী সাজেন অসুর এবং আরও একজন চাকরিপ্রার্থী দুর্গা সেজে তাঁকে বধ করেন।
নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। সোমবার দুপুর থেকে ১০ ঘণ্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর মধ্যরাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতিকে মঙ্গলবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপরেই তোলা হবে আদালতে। জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ১১টার কিছু পর মানিক ভট্টাচার্যকে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে অসহযোগিতার জেরে এই গ্রেফতারি।
সোমবার থেকে চলা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদে একাধিক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষাকর্তা। এমনটাই গ্রেফতারি প্রসঙ্গে ইডি সূত্র জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মানিক ভট্টাচার্য প্রাইমারি শিক্ষা সংসদের সভাপতি থাকাকালীন ৩ বার নিয়োগ হয়েছিল।
১) ২০১৩-য় পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ শেষ হয়েছে ২০১৪-তে। তখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ব্রাত্য বসু
২) ২০১৪-তে নোটিফিকেশন করে ২০১৫-য় পরীক্ষা নিয়ে ২০১৬-তে ফল প্রকাশের পর ২০১৭-তে নিয়োগ শুরু পর ২০১৮ পর্যন্ত চলেছে। সে মুহূর্তে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়
৩) ২০২১ সালে নোটিফিকেশন করে ২০২১ সালের মার্চে প্রথম দিকে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে জুন থেকে সেপ্টেম্বর আবার নিয়োগ। তখন থেকে শিক্ষামন্ত্রী রয়েছেন ব্রাত্য বসু
৪) এই পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সুতরাং তার দায় কি বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী এড়াতে পারেন? এই প্রশ্নগুলো ওঠা শুরু হয়েছে।
এদিকে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের পর যে চার্জশিট জমা করা হয়েছিল, তাতে স্পষ্ট করে লেখা ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্যের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একাধিকবার কথোপকথন হয়েছে। একাধিক তথ্য-প্রমাণ সামনে রেখে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মানিক ভট্টাচার্যকে। নিয়োগ দুর্নীতিতে সরাসরি যোগাযোগ মানিক ভট্টাচার্য বলে মনে করছে এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের (Recruitment Scam) তদন্তে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) বড়সড় স্বস্তি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (Primary Board) অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya)। লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না সিবিআই (CBI)। মানিক ভট্টাচার্যের অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ বাড়িয়ে জানিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ ১২ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি, ততদিন পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারবে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে তদন্তে সহযোগিতা করবেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি। শুক্রবার এই নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চ।
যদিও এদিন মানিক ভট্টাচার্যকে এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম কিংপিন হিসেবে তুলে ধরেছি সিবিআই। কিন্তু সেই দাবি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল সেদিন রাত ৮টার মধ্যে মানিক ভট্টাচার্যকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে। সেদিনেই সুপ্রিম কোর্টে দরবার করে একদিনের রক্ষাকবচ আদায় করে আনেন এই প্রাক্তন শিক্ষাকর্তা। যদিও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তিনি কোথায় ছিলেন, জানতেন না হাইকোর্ট নিযুক্ত এসিপি। তাই যাদবপুর থানায় গিয়ে মানিকের নামে জিডি করেন তিনি।
পরে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিবিআইকে পত্রপাঠ গরহাজির বিষয়টি জানিয়ে দেন মানিক ভট্টাচার্য। আইনজীবীর হাত দিয়ে সিবিআইকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ ছিল সুপ্রিম রক্ষাকবচের বিষয়। বুধবার বঙ্গভবনে খোঁজ মেলে মানিক ভট্টাচার্যের। সেদিনই আবার সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী রক্ষা কবচের মেয়াদ বাড়িয়ে শুক্রবার অবধি করে।
তারপরেই এদিনের শুনানিতে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয় মানিক ভট্টাচার্যের অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচের মেয়াদ।
হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দেওয়া ডেডলাইনের ১২ ঘণ্টা পেরোলেও এখনও সিবিআই (CBI) দফতরে হাজিরা দেননি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। যদিও বুধবার পর্যন্ত তাঁর কাছে রয়েছে সুপ্রিম রক্ষাকবচ। জানা গিয়েছে, দিল্লির বঙ্গভবনের ৫১২ নম্বর ঘরে এই মুহূর্তে রয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি। তিনি নাকি মঙ্গলবার রাতে সিবিআই সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আইনজীবী মারফৎ পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন দিল্লিতে থাকায় হাজিরা দিতে পারেননি। এমনকি সুপ্রিম কোর্টে করা তাঁর মামলার প্রসঙ্গও সিবিআইকে জানান মানিক ভট্টাচার্য।
এদিকে, হাইকোর্টের ডেডলাইন অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে মানিক ভট্টাচার্যকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা অবধি তাঁর কোনও খোঁজ না পেয়ে যাদবপুর থানায় জেনারেল ডায়রি করেন কোর্ট নিযুক্ত এসিপি। তাঁর যাদবপুরের বাড়িতে কোর্ট নিযুক্ত এসিপি এবং কলকাতা পুলিসের একটি দল গিয়ে খোঁজ করলেও পাওয়া যায়নি তাঁকে। তারপরেই কোর্টের স্থির করে ডেওয়া ডেডলাইন শেষের আগেই যাদবপুর থানায় 'নিখোঁজ' মানিক ভট্টাচার্যের নামে জেনারেল ডায়রি করা হয়েছিল। যদিও সেদিন রাত সওয়া ৮টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে গিয়ে মানিক ভট্টাচার্যের গরহাজির থাকার কারণ সিবিআইকে পত্রপাঠ জানিয়েছে এসেছেন আইনজীবী।
এদিকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলে তাঁকে কী কী প্রশ্ন করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সম্ভাব্য সেই প্রশ্নমালা-- ১) OMR শিট নষ্টের মূল উদ্দেশ্য কী?
২) কেন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নষ্ট করা হলো OMR শিট?
৩) OMR শিট নষ্ট করার জন্য কার নির্দেশ ছিল?
৪) প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে এই বিষয়ে আপনার কি কথা হয়েছিল?
৫) OMR শিট নষ্ট করার পেছনে পার্থবাবুর কোনও নির্দেশ ছিল?
এমন একাধিক প্রশ্ন মানিককে বিঁধতে তৈরি করে রাখছে সিবিআই।
হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডেডলাইন রাত ৮টার মধ্যে মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) সিবিআই (CBI) দফতরে হাজিরা দিতে হবে। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা অবধি তাঁর কোনও খোঁজ না পেয়ে যাদবপুর থানায় জেনারেল ডায়রি কোর্ট নিযুক্ত এসিপির। তাঁর যাদবপুরের বাড়িতে কোর্ট নিযুক্ত এসিপি এবং কলকাতা পুলিসের একটি দল গিয়ে খোঁজ করলেও পাওয়া যায়নি তাঁকে। তারপরেই কোর্টের স্থির করে ডেওয়া ডেডলাইন শেষের আগেই যাদবপুর থানায় 'নিখোঁজ' মানিক ভট্টাচার্যের নামে জেনারেল ডায়রি (GD)।
যদিও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতিকে একদিনের রক্ষাকবচ দিয়েছে। বুধবার পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই। তারপরেও যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও পাওয়া যায়নি মানিক ভট্টাচার্যকে। এমনটাই সিবিআই সূত্রে খবর। খুব সম্ভবত তিনি দিল্লিতে আছেন, এমনটাই অনুমান তদন্তকারীদের।
এদিকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলে তাঁকে কী কী প্রশ্ন করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সম্ভাব্য সেই প্রশ্নমালা-- ১) OMR শিট নষ্টের মূল উদ্দেশ্য কী?
২) কেন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নষ্ট করা হলো OMR শিট?
৩) OMR শিট নষ্ট করার জন্য কার নির্দেশ ছিল?
৪) প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে এই বিষয়ে আপনার কি কথা হয়েছিল?
৫) OMR শিট নষ্ট করার পেছনে পার্থবাবুর কোনও নির্দেশ ছিল?
এমন একাধিক প্রশ্ন মানিককে বিঁধতে তৈরি করে রাখছে সিবিআই।
২০১৪-র টেটের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট (TET OMR Sheet) নষ্টের মামলায় সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। এই তদন্তে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ। প্রয়োজনে তাঁকে গ্রেফতার করে জেরা করতে পারবে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এদিন স্পষ্ট করে দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এমনকি, যে এজেন্সির হাত ধরে ওএমআর শিট তৈরি, সেই এজেন্সি নির্বাচন কীভাবে হচ্ছে? খতিয়ে দেখবে সিবিআই। কার নির্দেশে ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে? নিয়ম মেনে নষ্ট হয়েছে কিনা? এসব খতিয়ে দেখে আগামি একমাসের মধ্যে আদালতকে রিপোর্ট দেবে সিবিআই। পয়লা নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
২০১৪-র টেট পরীক্ষার পর লক্ষাধিক ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত এক অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। সেই অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ। এই ঘটনার সময় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তাই তাঁকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিকে, প্রাথমিকে ২০২০ সালের নিয়োগের পর এখনও ৩৯২৯টি শূন্যপদ রয়েছে। সেই পদে অবিলম্বে নিয়োগ করতে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। প্রাথমিক ধাপে ২৫২ জনকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই আড়াইশো জন সেই শূন্যপদে নিয়োগ চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যোগ্য প্রার্থীদের সব নথি খতিয়ে দেখে নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামি নভেম্বরে। সেদিন কোর্টকে জানাতে হবে আদালতের এই নির্দেশের পর কতজন চাকরি পেলেন।
এদিকে, অন্য একটি মামলায় ৬৫ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ছয়টি প্রশ্ন ভুল মামলায় এই ৬৫ জনকে চাকরির নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২৩ সেপ্টেম্বর এই মর্মেই বেশ কয়েকজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। এবার ওই মর্মে আরো ৬৫ জনকে চাকরি দিতে নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আদালতকে জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ১৮৫ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য (TMC MLA)। শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেন তিনি (Manik Bhattacharya)। ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রায়ের বিরোধিতা করেই এই বিশেষ লিভ পিটিশন (SLP)। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ (Primary Recruitment) দুর্নীতির মামলায় প্রথম বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তৎকালীন বোর্ড চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলেন। সেই রায় বহাল রেখেছিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ।
সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। জানা গিয়েছে, আগামী ২৭শে সেপ্টেম্বর বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে। পাশাপাশি মামলায় সবপক্ষকে নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।
ইতিমধ্যে স্কুলশিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে মানিকের। তাঁকে জেরা করেছে ইডি। তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয়েছিল লুকআউট নোটিস। তাঁর পরিবারের সম্পত্তি সংক্রান্ত হলফনামাও চেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তাঁকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।