কোথাও প্রবল বৃষ্টি (Heavy Rain), কোথাও আবার জলের স্রোতে ভেসে গেল ব্রিজ। প্রবল বৃষ্টিতে কার্যত বানভাসি (Flood) দশা হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh), ঝাড়খণ্ড (Jharkhand), ওড়িশা (Odisha), উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) বিস্তীর্ণ এলাকায়। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে কার্যত ধস, প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার জেরে মৃত্যু (Death) হয়েছে মোট ৩১ জনের। আহত বেশ কয়েকজন, নিখোঁজ আরও অনেকে।
হিমাচল ছাড়াও উত্তরাখণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) আগামী দিনে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে।
শুক্রবার থেকে ভারী বর্ষণের জেরে হিমাচল প্রদেশে কমপক্ষে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে একটি পরিবারের আট জন। জখম হয়েছেন আরও ১০ জন। মান্ডি জেলায় ছ’জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরাখণ্ডে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ হয়েছেন আরও ১০ জন। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নদীর জল। একাধিক গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরানো হয়েছে। ওড়িশায় বৃষ্টি বিপর্যয়ে চার জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে।
#WATCH | J&K: Flash-flood-like situation as Darhali river in Rajouri district overflows due to torrential rainfall in upper reaches of Pir Panjal mountain range (20.08) pic.twitter.com/oqANiF1pks
— ANI (@ANI) August 21, 2022
দুর্যোগ ঝাড়খণ্ডেও। প্রবল বর্ষণে ভেঙে পড়েছে একাধিক গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। একাধিক জেলার নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পশ্চিম সিংভূমে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ ও পূর্ব রাজস্থানে রবিবার অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
প্রবল বর্ষণ (Heavy Rain) এবং হড়পা বানে (Flash Flood) ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত জম্মু-কাশ্মীরের কাটরা, যার জেরে বন্ধ করে দিতে হয়েছে বৈষ্ণোদেবী যাত্রা। এবার ভয়াবহ বিপর্যয়ের খবর মিলল হিমাচল প্রদেশে (Himachal Pradesh)। সেখানে একইসঙ্গে বৃষ্টি, হড়পা বান এবং ধসের জেরে ৬ জনের মৃত্যু (Death) হয়েছে। আরও ১৩ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। হরিমপুর জেলায় হড়পা বানে ২২ জন আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের অবশ্য উদ্ধার (Rescue) করা সম্ভব হয়েছে।
মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর। তিনি জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে জোরকদমে উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে তিনজন চম্বা জেলার। সেখানে হঠাত্ করে ধস (Landslide) নামায় বেশ কিছু বাড়ি মাটিতে মিশে যায়। তারই একটি বাড়ি চাপা পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। ধসের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হতে থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোর সাড়ে ৪ টে নাগাদ। অনেকেই তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তার মাঝেই এই বিপর্যয়। ফলে কেউই নিজেদের জীবন রক্ষা করার সুযোগটুকু পাননি। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে মান্ডিতে। সেখানে ভূমিধস, হড়পা বান এবং প্রবল বৃষ্টিতে একটি মেয়ের মৃত্যু হয়। কিন্তু আরও ১৩ জনের হদিশ নেই। তাদের মৃত্যু হয়েছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে অন্তত আধ কিলোমিটার দূরে ওই মেয়েটির দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু তারই পরিবারের আরও পাঁচজনের কোনও খোঁজ নেই। তাদের সম্ভবত ভাসিয়ে বহু দূরে কোথাও নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়েছে। আতঙ্কে বহু মানুষ নিজেদের বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
গোহার ব্লকের কাষান গ্রামে ধসের জেরে চাপা পড়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা। মাটি সরানোর পরই প্রকৃত পরিস্থিতি বোঝা যাবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
একের পর এক ধস এবং হড়পা বানের ফলে একাধিক রাস্তা যান চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। অজস্র গাড়িও ধসে ক্ষতিগ্রস্ত। বহু মানুষ কার্যত গৃহবন্দি। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলিতেও।