
প্রসূন গুপ্ত: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখনই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন তখনই তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এই তরজা বেশিরভাগ সময়ে স্বাস্থ্যকর থাকেনি। এমনটিও দেখা গিয়েছে, শুভেন্দু মমতা বা অভিষেককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মিডিয়ার সামনে মুখ খুলেছেন, তার ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই কুণাল আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দুকে। এ কি এক অলিখিত নিয়ম? বোধহয় না, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতি আস্থাভাজন কুণাল ঘোষ। এমনটিও দেখা গিয়েছে, শুভেন্দু কোথাও সভা করেছেন তো তার কিছুদিনের মধ্যে সেই স্থানে সভা করতে গিয়েছেন কুণাল।
কুণালের অনেক দায়িত্ব। একদিকে সারা বাংলার বিভিন্ন জেলায় তিনি যান। মূলত প্রচারের কাজটি সারেন। এছাড়া দলীয় মুখপাত্রর দায়িত্বে যেই থাকুন না কেন আসলে সম্পাদকীয়র কাজটি কুণালই করে থাকেন। এছাড়া পৌর বা পুরসভার ভোটেও তাঁকেই বিভিন্ন জেলায় যেতে দেখা গিয়েছে। এবারে দায়িত্ব পূর্ব মেদিনীপুরের। কোনও লিখিত পদ নয় কিন্তু দল (পড়ুন অভিষেক) তাঁকেই পঞ্চায়েতের সংগঠন ও প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছে।
কুণালের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়েছিল কালীপুজোর রাতে। তিনি জানিয়েছিলেন পয়লা ও দোসরা নভেম্ববর তিনি বিশেষ জেলার কাজে যাচ্ছেন। ফিরবেন হয়তো ৩ নভেম্বর। কিন্তু ফিরেই আবার জেলা সফর। শেষ পর্যন্ত জানা গেল সাম্প্রতিক ভোটের আগে ও পরে তিনি নিয়মিত গিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরে। সম্প্রতি নন্দীগ্রামে অভিমান করে থাকা দলের নেতা শেখ সুফিয়ানকে ডেকে এনে সভা করেছেন তিনি। ওই সভায় চোখে লাগার মতো ভিড় দেখা গিয়েছে।
অন্যদিকে কোনও সময়েই শুভেন্দু অধিকারী আমল দেন না কুণালকে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিরোধী নেতা সটান বলে দেন, 'ওই লোকের কথার উত্তর দিতে তাঁর রুচিতে বাঁধে।' কিন্তু বাস্তবে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন কিন্তু আরও একবার বিজেপির কাছে লোকসভার আগে সেমিফাইনাল। দিল্লি থেকে কড়া নির্দেশ, পঞ্চায়েতে ভালো ফল করতে হবে। ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের লড়াই এখন শুভেন্দু বনাম কুণাল। কুণাল দায়িত্ব নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন হলদিয়ার অফিসে, যা একসময়ে শুভেন্দুর চারণ ভূমি ছিল।
আমেরিকায় চোখের অস্ত্রোপচার সেরে কলকাতায় ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এই মাসের মাঝামাঝিই তাঁর চোখের অস্ত্রোপচারের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাই নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষও করেন। অবশেষে কালীপুজোর (Kali Puja 2022) দিন চিকিৎসা করিয়ে নিজের শহরে ফিরলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক। বিমানবন্দরে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা না বললেও, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ২০১৬ সালে বহরমপুর থেকে কলকাতা ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি। তখনই চোখে গুরুতর আঘাত পান তিনি।
সেই সময় বাঁ চোখের নিচে গালের অরবিট বোনে গুরুতর আঘাত পান অভিষেক। প্রথমে অরবিট ফ্লোর রিপেয়ারিং হয়। তার জন্য তখন চিকিত্সক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৈরি করা হয় ১২ জনের একটি বিশেষজ্ঞ দল। অরবিট বোনের অপারেশনের পরবর্তী অপারেশন হয় ও তারপর হয় প্লাস্টিক সার্জারি। তারপর কেটে গিয়েছে ৬টি বছর। ২০২২-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ অস্ত্রোপচার করতে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
গত শনিবার ট্যুইটারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখের ছবি, সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। ট্যুইটার ও ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লেখেন, 'যাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুৎসায় অভ্যস্ত, এমনকি তাঁর চোখের চিকিৎসা নিয়েও নানা কথা রটান,তাঁরা ভাল করে ছবিটা দেখুন। ওর চোখের আজকের অবস্থা।'
প্রসূন গুপ্ত: প্রতি বছর দুর্গাপুজোর শেষে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে বিজয়ার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এবার কিন্তু পুজোর বেশকিছু দিন আগে থেকেই অভিষেকের কোনও সংবাদ নেই। শোনা গিয়েছে তিনি বিদেশ গিয়েছেন কারণ তাঁর চোখের সমস্যা। ২০১৬-তে মুর্শিদাবাদে একটি কর্মিসভা থেকে ফেরার পথে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে তাঁর গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। একটি দুধের গাড়ির সঙ্গে অভিষেকের গাড়ির সংঘর্ষ হয়। তাতে করে অভিষেকের গাড়ি দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার এক পাশে গিয়ে পড়েছিল। দুর্ঘটনায় অভিষেককে রক্তাক্ত এবং অচৈতন্য অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেখা যায় তাঁর বাঁ দিকের চোখের নিচের হাড় ভেঙে গিয়েছে এবং বাঁ চোখ খুব খারাপ ভাবে জখম। অপারেশনের পর অভিষেক দুবাই এবং সিঙ্গাপুরে যান আরও চিকিৎস্যর জন্য। পরে বেশ কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। উদ্বিগ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নবান্নে এই খবর জানান এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অভিষেকের খবর নিয়েছিলেন।
এরপর ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হন অভিষেক। জিতেও আসেন ২০১৯-র লোকসভা ভোট। ২০২১-এর বিধানসভার ভোটে তিনিই ছিলেন তৃণমূলের অন্যতম প্রচারক। একুশের ভোটে জেতার পর অভিষেক জানান তাঁর চোখের সমস্যা রয়েই গিয়েছে। তিনি চশমা ছেড়ে কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করছিলেন। অনেকক্ষণ বেশি কিছু পড়তে ও দেখতে পান না। চোখ দিয়ে জল গড়ায়, নয়তো প্রচণ্ড মাথাব্যথা।
বিদেশি চিকৎস্যকরা জানান ওই লেন্স ব্যবহার করা যাবে না বরং চশমা পড়তে হবে। না হলে চোখ লাল হবে দৃষ্টিশক্তি ক্রমেই ক্ষীণ হবে। অবশ্য এরই মধ্যে একাধিক দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূলের কয়েকজন নেতা এবং অভিষেকের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কেন্দ্রীয় সংস্থার তলবে হাজিরা দিতে কখনও দিল্লি, কখনও বা কলকাতার অফিসে ঢুঁ মেরেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে, আদালত জানিয়েছে বিদেশ যাত্রায় বাধা দেওয়া যাবে না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পুজোর সময়ে তিনি বিদেশে যান। এ নিয়ে সিপিএম-বিজেপি-র মনে অনেক প্রশ্ন এবং কটাক্ষ। এমনটাই অভিযোগ তৃণমূলের।
তবে শনিবার দলের মুখপাত্র এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক একটি টুইটের মাধ্যমে অভিষেকের ছবি দিয়ে সেই কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন। তাঁর এই টুইট নিয়েও তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে সোশ্যাল নেটের লড়াই। কুণাল ঘোষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বা চোখের ছবি পোস্ট করে লেখেন, 'যাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুৎসায় অভ্যস্থ, এমনকি তাঁর চোখের চিকিৎসা নিয়েও নানা কথা রটান, তাঁরা ভালো করে ছবিটি দেখুন। ওর চোখের আজকের অবস্থা। একটি মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম ছিলেন অভিষেক। চোখে ভয়ঙ্কর চোট। কলকাতায়, ভারতের অন্যত্র চিকিৎসা করিয়েছে। সমস্যা কাটেনি। বেশিক্ষণ পড়লে চোখে ব্যথা হয়, মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়, কখনও কখনও ঘুমোতে পারেন না। এত জটিল অবস্থা যে একাধিক জায়গায় চিকিৎসা করেও স্বাভাবিক অবস্থা ফেরেনি। তাই এখন আরেকবার চেষ্টা। আমেরিকায় অস্ত্রোপচার। চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। অভিষেক দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। চোখ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরুক।'
Those inhuman elements, who criticize @abhishekaitc even on his eye treatment and operation, must see today's condition of his eye, which was deeply damaged in an accident.
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) October 15, 2022
He had an operation, now under observation. We all pray for his speedy recovery and normalcy of eyes. pic.twitter.com/EoqiBfNdg0
রাজ্য বনাম রাজভবন সংঘাত এখন অতীত। বরং এই মুহূর্তে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর (Jagdeep Dhankhar) বনাম রাজ্য তরজা আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বাংলার (Bengal) আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যপাল থাকার সময় একাধিকবার উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন জগদীপ ধনকর, আর এখন উপরাষ্ট্রপতি হয়েও যে সেই অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি তার প্রমাণ তিনি নিজেই দিলেন। 'বাংলার আইন-শৃঙ্খলা (Law And Order) তলানিতে ঠেকেছে। বাংলায় আইন নয়, শাসক দলের আইন চলে' বলে সরাসরি তোপ দাগলেন তিনি।
রাজধানী নয়াদিল্লিতে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে ওঠেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর। আর সেখানেই পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আইন-শৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগে রাজ্য সরকারকেই দুষলেন তিনি। বাংলার রাজ্যপালের পদ থেকে এখন দেশের উপরাষ্ট্রপতির আসনে বসেছেন জগদীপ ধনকর, কিন্তু বাংলার দিকে যে তাঁর কড়া নজর সর্বদাই বজায় রয়েছে, তা কার্যত এদিন স্পষ্ট করেন তিনি।
অবশ্য উপরাষ্ট্রপতির করা মন্তব্যের পাল্টা জবাব পাওয়া গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকেও। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, "এই ধরণের কথা বলে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন তিনি। ওঁর প্রমোশন হয়েছে বাংলার নামে কুৎসা এবং তৃণমূলের বিরোধিতা করে। তাই তিনি অভ্যাসবশত বলে ফেলেছেন। ওঁকে পরিষ্কার বলতে চাই, রাজ্যপাল পদটিকে উনি কলুষিত করেছেন, দয়া করে উপরাষ্ট্রপতি পদকে আর কলুষিত করবেন না, এটি একটি সাংবিধানিক পদ। আর যদি উনি তা আরম্ভ করেন তাহলে নিশ্চই তাঁকে রসগোল্লা খাওয়াব না।"
প্রসঙ্গত, উপরাষ্ট্রপতি পদে বসার পর এই প্রথমবার সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে মন্তব্য করলেন জগদীপ ধনকর। কিন্তু সেটিও তীব্র সমালোচনাসূচক হওয়াতে তা নিয়ে স্বভাবতই বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেছে রাজ্যের শাসকদল শিবির।
পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapur) ভগবানপুরে তৃণমূলের (TMC) বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর সামনেই বিক্ষোভে সামিল ছিলেন কর্মী-সমর্থকরা। জেলাস্তরে সাম্প্রতিক সাংগঠনিক রদবদলের প্রতিবাদ করেন তাঁরা। পাশাপাশি কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণ মাইতির নাম কেন আমন্ত্রণের নিচে? সেই প্রশ্নের জবাব চেয়ে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকদের মুখে অভিজিৎ দাস নামে এক তৃণমূল নেতার নাম উঠে এসেছে।
এই অভিজিৎ দাস দলে সাংগঠনিক ভাবে সক্রিয় না হয়েও কেন এত গুরুত্ব পাচ্ছে? প্রশ্ন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। অভিজিৎ দাস নাকি চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীকে একুশের ভোটে হারানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন। এই অভিযোগ করেছেন তরুণ মাইতির অনুগামী তৃণমূলে কর্মীরা। বিক্ষোভ থামাতে মঞ্চ থেকে নেমে আসেন কুণাল ঘোষ এবং সোহম চক্রবর্তী। কথা বলেন বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে।
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'আমি আর সোহম ওদের দাবি-দাওয়া শুনেছি। নতুন কোনও কমিটি গঠন হলে একটু ক্ষোভ-বিক্ষোভ জন্মায়। সঠিক সময়ে ওদের বক্তব্য শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব। এটাও একটা তৃণমূল, যারা কর্মীদের দাবি-দাওয়া শুনে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে।'
তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী বলেন, 'বিষয়টি অনভিপ্রেত। এই অনুষ্ঠানে জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। আমরা ওদের বলেছি এই মঞ্চ এভাবে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখানোর জায়গা নয়। ওরা পরে বুঝে অনুষ্ঠানে অংশও নিয়েছে।'
দুর্গাপুজোর দিন সাতেক আগে বিজেপির (BJP) সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। শনিবার তিনি বিজেপির হেস্টিংস অফিসে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এরপর বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumder) পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন টলিউডের মহাগুরু। তিনি দাবি করেন, 'আগেও বলেছি এখনও বলছি অন্তত ২১ জন তৃণমূল বিধায়ক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সংখ্যাটা ২১-র কম নয় এটা বলতে পারি।'
এদিন তিনি দুর্নীতিবিদ্ধ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন। সম্প্রতি এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি-সিবিআইয়ের অতি সক্রিয়তায় প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন নেই। শনিবার হেস্টিংস অফিসে বসে মিঠুন জানান, মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর হাত নেই কারণ কোর্ট নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে। বঙ্গ বিজেপির হাত নেই কারণ কোর্টকে গিয়ে ওরা বলেনি তদন্তের কথা। যদিও আপনার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য-প্রমাণ না থাকে, তাহলে আপিনি নিশ্চিন্তে ঠাণ্ডা ঘরে ঘুমোন। এদিন এই বার্তাই তৃণমূলের নেতাদের দিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী।
যদিও মিঠুনের এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'উনি দক্ষ অভিনেতা। বিজেপির স্ক্রিপ্ট পড়ে বলছেন। উনি ঘুম থেকে উঠে আয়নায় নিজের মুখ দেখেন। তাই সবাইকে দলবদলু মনে হয়, পৃথিবীকে সুবিধাবাদী মনে হয়। উনি আসলে জলঢোরা।' তাঁর কটাক্ষ, 'মিঠুন চক্রবর্তী বারবার রাজনীতিতে ভেসে থাকার চেষ্টা করছেন। উনি সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ, বিশ্বাসঘাতক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওকে ডেকে সাংসদ করছেন। তখন বলছেন মমতা দিদি আমার বোন আর এখন পিঠে ছুড়ি মারছেন। এটা বাংলার কোনও ভাই, কোনও বোন বরদাস্ত করবে না।'
আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সঙ্গে যোগ রয়েছে সন্দেশখালির দুই তৃণমূল নেতার। জড়িত থাকতে পারেন রাজ্যের এক মন্ত্রীও। বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ তুলেছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের এই অভিযোগকে ভোঁতা করতে আসরে তৃণমূল। কাঁচের ঘরে বসে বাইরে ঢিল ছুড়বেন না সুকান্তবাবু। এভাবেই কটাক্ষের সুরে বিঁধেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
তিনি বলেন, 'আজগুবি কথা বললে হবে না। আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। আর সুকান্ত মজুমদারকে বলতে চাই, আপনার দলের এক নেতা গোল্ড লোনের ব্যবসা করেন। সোনার বিনিময়ে ঋণ প্রদানের ব্যবসা। ইতিমধ্যে হাফ ডজনের বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি খুলে ফেলেছেন সেই নেতা। সিবিআই-ইডি একবার খতিয়ে দেখুক সেই ব্যবসায় ওই নেতার নগদের লেনদেন হচ্ছে না তো? কাঁচের ঘরে বসে বাইরে ঢিল ছুড়বেন না।'
এই প্রসঙ্গে অপর এক তৃণমূল নেতা জয় প্রকাশ মজুমদারের খোঁচা, 'বিজেপির রাজ্য অফিস এখন তদন্তকারী সংস্থার অফিস হয়ে গিয়েছে জানি না। হয় ওটা তদন্ত সংস্থা নয়, তদন্তকারী সংস্থা ওদের সঙ্গে আলোচনা করে তদন্ত করছে।'
তাঁর প্রশ্ন, 'একটা রাজনৈতিক দলের এহেন অভিযোগ তোলার সূত্র কী? রাজনৈতিক দল তো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে। সেই কর্মকাণ্ড কেমন ছিল আমরা নবান্ন অভিযানের দিন দেখেছি। বিজেপি আসলে চাইছে একদলীয় শাসনব্যবস্থা, গণতন্ত্র বিলোপ করে দেওয়া। রাজ্য বিজেপির কাছে এই অভিযোগ সংক্রান্ত যে নথি আছে, সেটা তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দিক।'
বিজেপির (BJP) নবান্ন অভিযান (Nabanna Abhijan) হাস্যকর এবং পুরো ফ্লপ। এঁদের গণ্ডগোল বাঁধানোর পরিকল্পনা পুলিস সফল ভাবে আটকে দিয়েছে। সিনেমা শুরুর আগেই দি এন্ড। এদিকে মানুষ দেখছে ট্রেলার, তারপরেই দি এন্ড। মঙ্গলবার দিনের শেষে এই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এদিন তিনি শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষ; বঙ্গ বিজেপির তিন মুখকেই আক্রমণের নিশানা বানিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, 'শুভেন্দু অধিকারী কার দ্বারা হেনস্থা হয়েছেন, মহিলা না পুরুষ পুলিস? আমি তো দেখলাম সারাক্ষণ ধরে বললেন ডোন্ট টাচ মাই বডি। কে ওকে হেনস্থা করেছে? একজন আলুভাতে, হেনস্থার শুভেন্দু অধিকারী কী বোঝেন? নিজেই তো হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলেন।'
রাজ্যের একদা বিরোধী দলনেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল নেতা বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো ছবিগুলো দেখুক। কীভাবে সিপিএম-র পুলিস চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে বের করতো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাতে গেলে পুলিসকে যুদ্ধ করতে হতো। ভারতবর্ষের ইতিহাসে এমন বিরোধী দলনেতা হয়নি, যে হাঁটতে হাঁটতে পুলিসের জিপে উঠছে।' রসিকতার সুরে কুণালে মন্তব্য, 'শুভেন্দু অধিকারী নাকি বিরোধী দলনেতা। পুলিসের সামনে দাঁড়ানোর হিম্মত নেই। একজন আলুভাতে, সখী, অপদার্থ বিরোধী দলনেতা। লজ্জাবতী লতা, তুমি যুদ্ধ ঘোষণা করেছো, বাধা দেবে না, বসবে না? দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন পুলিস বাধা দিলে রাস্তায় বসে পড়বেন। শুভেন্দু অধিকারীর আত্মসমর্পণ আজকের নবান্ন অভিযান। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত একজন শুধু বাঁচতে বিজেপিতে গিয়েছে।'
মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের কলহ খুঁচিয়ে দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, 'দিলীপ ঘোষ বলছেন আমি নবান্ন অভিযান শেষ ঘোষণা করলাম। সুকান্ত মজুমদার বলছেন না শেষ নয় আমি আছি। যে বলছে সেটা আলাদা। আলাদা মানে, একটা দল একটা কর্মসূচি আর এঁদের কোনও সমন্বয় নেই। আমরা তো কবে থেকে বলছি দিলীপ ঘোষ বিজেপি, সুকান্ত বিজেপি, শুভেন্দু বিজেপি। সব টুকরে টুকরে গ্যাং।'
পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য সভাপতি এদিন পুলিসের গাড়িতে আগুন লাগানোর জন্য তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তোলেন। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, 'সবাই দেখছে কে আগুন লাগিয়েছে, কে পাথর মেরেছে, কে অশান্তি করেছে। আর ট্রেনি সভাপতি আর ট্যুইট মালব্য বলছে তৃণমূল করেছে। এঁরা কী পাগল? এঁদের কোনও কর্মসূচি নেই, এঁদের সঙ্গে মানুষ নেই। শুধু কর্মীদের উসকে দিয়েছে অশান্তি করার জন্য। দলের রাজ্য সভাপতি হেলমেট পরে ঘুরছে। কারণ জানেন পিছনে ওর দলের কর্মীরাই পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে, ছুড়লে ওর মাথায় এসে পড়বে।'
হিন্দু দেবদেবীকে 'অপমান'-এর খেসারত গুণতে হবে স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান কুণাল কামরাকে (Kunal Kamra)। দুই হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP) এবং বজরঙ দলের (Bajrang Dal) হুমকিতে বাতিল শিল্পীর গুরুগ্রামের (Gurugram) অনুষ্ঠান। যদিও প্রশাসনিকস্তরে এই পদক্ষেপ নয়। আয়োজকরা জানান, বজরঙ দল থেকে এসে তাঁদের সতর্ক করে দিয়ে গিয়েছে। তাই অশান্তির ভয়ে অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি একাধিক সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অনুষ্ঠানের প্রচারমূলক পোস্ট।
এ মাসের শেষের দিকে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের কথা ছিল। সেই মোতাবেক শুরু হয়ে গিয়েছিল টিকিট বিতরণও। এদিকে, এই কৌতুকশিল্পী হিন্দু দেবদেবীকে অপমান করেন। এই অভিযোগে শুক্রবার ডেপুটি কমিশনারকে চিঠি লিখে ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বরের অনুষ্ঠান বাতিলের দাবি জানায় বজরং দল-বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
এদিকে, বজরঙ দলের গুরুগ্রামের নেতা প্রবীণ সাইনি ইংরেজি এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, 'আমরা ওই পানশালায় গিয়ে বলি অনুষ্ঠান বাতিল করতে। এই হাস্যকৌতুক শিল্পী হিন্দু দেবদেবীকে অপমান করেছেন। আমরা কিছু ভিডিও ওদের দেখাই এবং বলি এই ধরনের শিল্পী, যাঁরা হিন্দু বিশ্বাসে আঘাত হানেন, তাঁদের গুরুগ্রামে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। হিন্দু দেবদেবীর কোনও অপমান আমরা বরদাস্ত করব না। আমরা ম্যাজিস্ট্রেটকেও একটি স্মারকলিপি দিয়েছি। কারণ অনুষ্ঠান হতে দিলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।'
সারদার এক (সাঁতরাগাছি) মামলায় তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিসের (police) আনা প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ খারিজ করল এমপিএমএলএ বিশেষ আদালত (court)। সোমবার এই ধারাগুলি সংক্রান্ত কুণালের কোনও অপরাধের প্রমাণ নেই বলে বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য (Manojyoti Bhattacharya) রায় দেন। তবে মামলার বাকি অংশের বিচার চলবে।
সূত্রের খবর, আপাতত কলকাতা হাইকোর্টের (Highcourt) একটি নির্দেশে এই মামলা আবার হাওড়া জেলা মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে, কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী বলেন,'কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত যা যা অভিযোগ রাজ্য পুলিসের সিট এনেছিল, আদালত তা খারিজ করেছে। মামলার সামগ্রিক বিষয় নিয়ে বিচার চলবে। আপাতত মামলা হাওড়া কোর্টে ফিরে যাচ্ছে।'
এদিকে, পুরনো এক মামলায় বিধাননগর এমপি-এমএলএ আদালতে (Bidhannagar MP MLA Court) তলব করেছিল অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal)। পয়লা সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তাঁকে হাজিরা দিতে হয় বিধাননগরের এই আদালতে। গোরু পাচার-কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন আসানসোল সংশোধনাগারে বন্দি বীরভূম তৃণমূলে সভাপতি। হাজিরার নির্দেশ অনুযায়ী দুর্গাপুর-আসানসোল কমিশনারেট সকাল ৬টা নাগাদ তাঁকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। ১২টার আগেই এজলাসে তোলা হয় অনুব্রতকে। ২০১০ মঙ্গলকোট বিস্ফোরণ মামলার চার্জশিটে নাম রয়েছে অনুব্রতর। সেই মামলায় হাজিরা দিতেই আসানসোল থেকে এদিন তৃণমূল নেতাকে আনা হয়েছিল বিধাননগরের ময়ূখ ভবনের এই আদালতে।
রাজ্যব্যাপী চিটফান্ড-কাণ্ডে (Chitfund Case) চলছে সিবিআই (CBI) অভিযান। রবিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা হানা দিয়েছে বীজপুরের বিধায়ক (Bijpur MLA) এবং কাঁচরাপাড়ার পুরপ্রধানের বাড়িতে। এই ঘটনা ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, 'মানুষ যে ১২ বছর ধরে প্রতারিত হয়েছে, তার সুবিচার চাইছে। সিবিআই-ইডি নিজেদের মতো করে চেষ্টা করছে বিচার দেওয়ার। দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে সময় লাগছে।' পাল্টা মন্তব্য করেছে তৃণমূলও।
দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'আমরা বিষয়টিতে নজর রেখেছি। যাদের বাড়িতে অভিযান হয়েছে, তাঁদের মন্তব্য আগে আসুক।' এদিকে, সন্মার্গ চিটফান্ড-কাণ্ডে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতে হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহানি। এবার এই মামলার তদন্ত আরও বড়সড় তথ্যসূত্র হাতে পেলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। রবিবার সকাল থেকেই বীজপুর বিধানসভা এবং কাঁচরাপাড়া পুরসভা এলাকার ৬ জায়গায় সিবিআই তল্লাশি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অভিযান বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে। পাশাপাশি সুবোধের ভাই তথা কাঁচরাপাড়ার পুরপ্রধান কমল অধিকারীর বাড়িতেও সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ছটি দলে ভাগ হয়ে এই অভিযানে নেমেছে।
রাজু সাহানির বাড়ি এবং রিসোর্টে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা নগদ এবং প্রচুর সম্পত্তি নথি উদ্ধার করেছে সিবিআই। সেই সূত্রে রাজুকে জেরা করে পাওয়া তথ্যসূত্র ধরেই সুবোধ এবং কমল অধিকারীর বাড়িতে সিবিআই অভিযান। সুবোধের পৈতৃক বাড়ি-সহ তাঁদের মঙ্গলদ্বীপ আবাসন ফ্ল্যাট এবং কমল অধিকারীর নিজস্ব ফ্ল্যাটেও চলছে অভিযান। পাশাপাশি হালিশহরের জেঠিয়ার সুবোধ এবং কমল অধিকারীর এক আত্মীয়ের বাড়ি-সহ কনস্ট্রাকশন ব্যবসায়ী গৌতম বিশ্বাসের বাড়িতেও সিবিআই দল।
গোরু পাচারকে কটাক্ষ করে মঙ্গলবার জোড়া ট্যুইট করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন আবার দুধের কন্টেনারে গোরু পাচার করতে গিয়ে শেষরক্ষা হয়নি। সেই কন্টেনার উলটে মৃত ৫ গোরু, উদ্ধার ২২টি গোরু। গোরু পাচারের এই অভিনব পদ্ধতিকেই খোঁচা দেন শুভেন্দু। তিনি একটি ট্যুইটে লেখেন, 'গোরু পাচারের অভিনব পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ গিয়েছে পাচারকারীদের থেকে। পুষ্পা ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এভাবে গোরু পাচার। পুরুলিয়ায় একটা আমূল দুধের কন্টেনারে ভরে পাচার হচ্ছিল গোরু। সেই পাচার পদ্ধতি ফাঁস হয়ে গিয়েছে কারণ সেই গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।'
একই ভাবে আরও একটি ট্যুইটে একটি ভিডিও পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা লেখেন, 'বাংলায় কোটি কোটি টাকার পাচার চক্র এখনও সক্রিয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে বিএসএফ নজরদারি বাড়ানোয় গোরু পাচারের পুরনো পদ্ধতি ব্যর্থ হয়েছে। তাই এভাবে গোরু পাচার এখন পাচারকারীদের কাছে আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে।'
The multi-crore cattle smuggling syndicate is still active in WB. @BSF_India has tightened the screws under Hon'ble Home Minister Shri @AmitShah Ji's able supervision. The tried & tested formulas have now failed. It has become extremely difficult to smuggle cattle using old ways: pic.twitter.com/K85NsjlaBT
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) August 23, 2022
যদিও শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগকে ঘুরিয়ে খোঁচা দিয়েছে তৃণমূল। এমনকি, পুরুলিয়ায় দুধের কন্টেনারে গোরু পাচার প্রসঙ্গকে গুরুত্বদিতে নারাজ শাসক দল। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'গোরু যে সব জায়গা থেকে আসে সেগুলো পাহারা দেয় বিএসএফ। যা অমিত শাহের মন্ত্রকের অধীনে। এতো গোরুর উৎস গো বলয়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ইত্যাদি ইত্যাদি। সেগুলো পশ্চিম সীমান্ত থেকে এসে পূর্ব সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। গোরুর তো আর পাখনা নেই উড়ে উড়ে বাংলাদেশ চলে যাবে। গরুগুলো যখন আনা হচ্ছে, তখন বিএসএফ-র নজরদারি নেই কেন? এখন তো সীমান্ত থেকে ৫০ কিমি পর্যন্ত বেড়েছে বিএসএফ-র এক্তিয়ার।'
ঠিক কী বললেন কুণাল ঘোষ?
নবান্ন অভিযানের (Nabanna Abhijan) দিন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ঝাণ্ডার সঙ্গে ডাণ্ডা বহনের আবেদন করেছেন দলের সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। যদিও তাঁর এই আবেদন ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির (BJP) সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের যুক্তি, 'নবান্ন অভিযানের দিন পুলিস জল কামান ছুঁড়বে সেই কামানের মাঝে আমাদের পতাকা সোজা করে ধরে রাখতে ডাণ্ডা দরকার।'
বারাসাতের এক রক্তদান শিবিরে থেকে বিজেপি সাংসদ বলেন, 'তৃণমূল নেতারা আমাদের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ চুরি করছে। তার বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযান হবে। সেখানে ঝাণ্ডা নেবেন, ঝাণ্ডার সাথে ডাণ্ডাও নেবেন।' এরই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সুকান্ত জানান, নবান্ন অভিযানে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়বে, জলকামান চালাবে। সেখানে আমাদের আমাদের পতাকা শক্ত করে ধরে থাকতে হবে এবং তার জন্য ডাণ্ডাই লাগবে।' হিংসার বদলে হিংসার রাজনীতি ভারতীয় জনতা পার্টি সমর্থন করে না। আমরা সংবিধানে বিশ্বাসী।
পাশাপাশি তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য, 'আমাদের কর্মীদের গায়ে হাত দিয়ে যদি ভাবেন বেঁচে যাবেন তবে ভুল। আজ না হয় কাল আপনাদের কীভাবে ট্রিটমেন্ট করতে হয় তার ব্যবস্থা করব।' এদিন বাইক র্যালির মাধ্যমে মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসাত ডাকবাংলো মোড় হয়ে সেই রক্তদান শিবিরে অংশ নিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি।
এদিকে, সুকান্ত মজুমদারের এই হুঁশিয়ারিকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'গণআন্দোলন কাকে বলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম জমানায় শান্তিপূর্ণ ভাবে করে দেখিয়ে দিয়েছেন। আর এই যে ঝাণ্ডার সঙ্গে ডাণ্ডার তুলনা টেনে হিংসা, সন্ত্রাসে প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে। এই মন্তব্য প্ররোচনামূলক।'
তৃণমূলে (TMC) সরষের মধ্যে ভূত রয়েছে। কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) যখন জেলে ছিলেন, তখন অন্যান্য তৃণমূল নেতারা আনন্দ উদযাপন করছিল। সেই সময় কুণাল ঘোষ ধর্মেন্দ্র প্রধানের (Dharmendra Pradhan) সাথে দেখা করেছিলেন। তখন তিনি ইডি, সিবিআই-এর (ED CBI) হাতে সমস্ত তথ্য তুলে দিয়েছেন। কার কাছে কত টাকা আছে, সে সব তথ্য যেখানে দেওয়ার, সেখানেই তিনি তুলে দিয়েছেন। তবে শুধু কুণাল ঘোষ নয়, তৃণমূলের ডান হাত, বাম হাত অনেকেই আছেন, যাঁরা নিয়মিত আমাদের তথ্য সরবরাহ করছেন।
আজ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের বৈলাপাড়ায় বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সৌমিত্র খাঁর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পালটা আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বলেন, সৌমিত্র খাঁ এখন তৃণমূলে নাম লেখানোর জন্য তৎপর হয়ে আছেন। সেজন্য তৃণমূলের বহু নেতার সাথে তিনি যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
অন্যদিকে, তৃণমূলের যাঁর বিরুদ্ধে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন তিনি, সেই কুণাল ঘোষ বলেন, সৌমিত্র খাঁয়ের কথার গুরুত্ব দেওয়া আর সার্কাসের জোকারকে সিরিয়াস নেওয়া একই। উনি হচ্ছেন নিপাট বিনোদন। রাজনীতির ক্লাসে যাঁরা ১,২ তে পড়েন, তাঁরা এইসব বলেন। ওনার স্ত্রী দক্ষ৷ যার জন্য উনি জিতলেন। যে লক্ষ্মী রাখতে পারে না ঘরে, সে লক্ষ্মীছাড়া। সন্দেহের বাতাবরণ করে লাভ নেই৷