প্রসূন গুপ্তঃ পঞ্চায়েত ভোটের আগে সমস্ত বাংলার দলগুলো নিজেদের অস্ত্রগুলো বের করবে তা আর নতুন কথা কী? তবে এই অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা বা শারীরিক নির্যাতন করা নয়, স্ট্রাটেজি দিয়ে বিরোধীদের ভোঁতা করাটাই লক্ষ্য। তবে বেদনার বিষয় ইদানিং এই স্ট্রাটেজি বড়ই অশালীন হয়ে যাচ্ছে। এটা বাস্তব যুদ্ধ ও প্রেমে কোনও বাঁধা থাকেনা কৃত্তিম অস্ত্র ব্যবহারে। ভোটটিও যুদ্ধই বটে।
সম্প্রতি সাগরদিঘি কেন্দ্রে তৃণমূলকে হারিয়ে জয়লাভ করেছে কংগ্রেস-বাম জোট। ভোট কমেছে বিজেপিরও। তবে ভোটের আগেই বিরোধী নেতার কণ্ঠে যে ভাষণ শোনা গিয়েছিলো, তাতে তৃণমূলকে হারিয়ে দেওয়ার বিশেষ পরিকল্পনার কথাও ছিল। ফলে তিন বিরোধী ভোট যে বায়রন বিশ্বাসের বাক্সে পড়েছে তা এখন পরিষ্কার। এরপরেই বিতর্ক বায়রনের ভাইরাল হওয়া এক অডিও থেকে।
ভোটে জিতে শপথ নেওয়ার আগেই বায়রন নাকি সঞ্জয় জৈন নামক এক তৃণমূল নেতাকে টেলিফোনে হুমকি দিয়েছেন। যদিও ওই অডিও সিএন পোর্টাল যাচাই করেনি। বায়রনের হুমকি অডিও যা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। তা অত্যন্ত কদর্য এবং অশ্লীল।একজন নতুন বিধায়ক, যাঁর এর আগে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সামান্য এবং মূলত বিড়ি ব্যবসায়ী। তিনি বিধায়ক হয়েই এতো কুৎসিত ভাষা ব্যবহার করলেন কেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
বুধবার বায়রন বিধানসভায় গিয়ে শপথ নেন। আগে ও পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে এই প্রশ্নই উড়ে আসে তাঁর দিকে। শান্তভাবে তিনি কিন্তু এমন কথা বলেননি, এমন কোনও যুক্তি দেননি। বরং বলেছেন যে কোর্টে দরকার হলে উত্তর দেবেন। জল্পনা এখানেই। তবে কি বায়রন নন আসলে এটি জোটের একটি খেলা যা বায়রনকে সামনে রাখা হয়েছে।
বায়রন কি শাঁখের করাত? তাই তো দাঁড়াচ্ছে। এটি নিয়ে তৃণমূল যদি বেশি কোর্ট কাছারি করে তবে ফের সংখ্যালঘু সেন্টিমেন্ট তাঁর দিকে হেলে পড়বে। যেমনটি হয়েছিল নওশাদ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে। আবার যদি প্রতিবাদ না করে তৃণমূল চুপ করে থাকে তবে মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সমর্থকরা ভেঙে পড়বে শক্তি বৃদ্ধি হবে কংগ্রেসের। কাজেই উভয় সংকট। এই কারণেই কি মুখপাত্র কুনাল ঘোষ একটা আইনের কথা বললেন? সময় কিন্তু অপেক্ষা করবে না।
বিশেষ সংবাদদাতা: আশিবার রহমান রবিবার তাদের টিসিসিএফ-এর বাৎসরিক অনুষ্ঠান পালন করলো। মজার বিষয় কে এই আশিবার অথবা টিসিসিএফ? এরা কারা? অনুষ্ঠানটি তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যানারে করা হয়েছে অথচ তৃণমূল নেতৃত্ব হয়তো এই গ্রুপ বা আশিবারকে চেনেই না, তবে এরা কারা? যেকোনও রাজনৈতিক দলের নিজস্ব আইটি বা সোশাল মিডিয়া সেল থাকে। এ ব্যাপারে ভারতে পয়লা নম্বরে রয়েছে বিজেপি এবং এরপরেই রয়েছে সিপিএম। বিজেপির আইটি সেল যথেষ্ট শক্তিশালী। সম্পূর্ণ টিমটি চালায় তাদের নিজস্ব আইটি সেল। ভালো-মন্দ সব বিষয় তারা ফেসবুকে পোস্ট করে। দ্রুত ভাইরাল হয় সেসব পোস্ট।
প্রধানমন্ত্রী নিজেও নিয়মিত সোশ্যাল নেটওয়ার্কে থাকেন। ভোটের সময়ে এই আইটি সেলের জোরালো প্রচারে ভর করে বিশেষ সুবিধা পায় গেরুয়া শিবির। এরপরেই সিপিএম, তাদেরও নিজস্ব টিম রয়েছে। মাঝেমধ্যে মজাদার পোস্ট কিংবা কার্টুন যেকোনও দর্শককে আকর্ষিত করে। তৃণমূলের অন্তত লক্ষাধিক ছেলেমেয়েরা দলের হয়ে পোস্ট করলেও কোথাও সংগঠনের অভাবে সেগুলি জনপ্রিয় হয় খুব কম।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই আইটি সেল নিয়ে নিয়মিত উৎসাহ প্রদান করলেও এখনও পর্যন্ত সংগঠিত হতে পারেনি এই সেল। কারণ অবশ্যই এই আইটি সেলা ছাড়াও বেসরকারি ভাবে অজস্র গ্রুপ আছে। অন্তত কয়েকশো অথচ তাদের একছাদের তলায় আনা যায়নি। এছাড়া ওই একদল নানা পোস্ট করে নিজেদের উদ্যোগে, নিজেদের পয়সায়।
এতগুলো গ্রুপের খবর দলের কাছেই কোনও বার্তা নেই। অথচ এই গ্রুপগুলির সদস্যদের অনেকেই ভোটের সময়ে পোস্টার মারে, ভোটার স্লিপ বিলি করে, বুথে বসে, বিনিময়ে কিছুই চায় না তারা। সরকারি চাকরির বিতর্কে এদের কারও নাম আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।
এরা পাগলের মতো দলকে ভালোবেসে কাজ করে এবং সোশ্যাল নেটে পোস্ট দেয়, এরকমই আলোচিত গ্রুপটি। নিজেরা পয়সা চাঁদা তুলে নানা অনুষ্ঠান করে। এদের অধিকাংশই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অথবা বেকার। রবিবার এরকমই এই অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়েছে এক সঙ্গে চলতে হবে, লড়তে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে খাটতে হবে ইত্যাদি, উপস্থিতি চোখে পড়ার মতোন। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, বিধায়ক ড.রানা চ্যাটার্জী এবং অবশ্যই তৃণমূলের মুখপাত্র এবং আইটি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেবাংশু ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখলেন। কিন্তু এক ছাতার তলায় আসার বিষয়টি আলোচিত হলেও, তা কবে বা কীভাবে পর্দার আড়ালেই রইলো।
সৌমেন সুর: ফিঙ্গারপ্রিন্টের প্রথম সূ্ত্রপাত ১৮৫৮ সালে একটু ভিন্ন আকারে দেখা গিয়েছিল। উইলিয়াম হার্শেল তখন হুগলির কালেকটর ডাকাবুকো আইসিএস। মাত্র ২০ টাকার চুক্তিপত্র করে ঘুটিং সরবরাহ করার জন্য রাজ্যধর কোনাইকে অর্ডার দিলেন। কিন্তু অনেক সময় সরবরাহকারীরা চুক্তিপত্র ও সই অস্বীকার করে বিপদে ফেলেন। তাই সতর্ক হার্শেল সাহেব ঠিক করলেন, রাজ্যধরকে একটা প্রস্তাব দেওয়া যাক যে, তাঁকে চুক্তিপত্রর উপর হাতের ছাপ দিতে হবে। অফিসে স্ট্যাম্প দেওয়ার জন্য ভুসো কালির ব্যবহার করা হতো। তাই হাতে কালি মাখিয়ে রাজ্যধরের হাতের ছাপটা চুক্তিপত্রের উপর নেওয়া হল। রাজ্যধরও মজা পেলো সাহেবের এই অদ্ভুত প্রস্তাবে। কিন্তু এই হাতের ছাপটা আজকের বিশ্ব শনাক্তকরনের চূড়ান্ত পন্থা হিসেবে আঙুলের ছাপ ব্যবহারের গোড়াপত্তন করলো। হার্শেল সাহেব আরও অনেকের হাত ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতেন। তবে সবাই এটাকে হার্শেল সাহেবের পাগলামি বলে ধরে নিয়েই হাতের ছাপ দিতেন।
বিষয়টি যে পাগলামি ছিল না, তার প্রমাণ হাতে হাতে পেয়ে গেলেন হার্শেল সাহেব। দু'বছর পর নদীয়া জেলার ডিস্ট্রিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তিনি সবে বদলি হয়েছেন। দেখলেন, মাসের প্রথম দিকে সিপাহি বিদ্রোহ যারা সরকারকে সাহায্য করেছিল, সেসব পেনশন প্রাপকের সংখ্যা বেশ ভালই। যদিও তারা সকলেই বেশ বয়স্ক, তবুও সংখ্যাটা কিছুতেই কমছে না। কিছুদিন পর তিনি বুঝতে পারলেন, মারা যাওয়া পেনশন প্রাপকের বদলি লোক প্রক্সি দিয়ে পেনশন তুলছে হাসিমুখে।
তথ্যঋণ: বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধায়
ট্র্যাফিক সিগন্যালে (traffic signal) বাইক আরোহীর ব্যাগ খুলে ৪০ লক্ষ টাকা লুটের ঘটনা। ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির (Delhi) লালকেল্লা এলাকায়। তদন্তে নেমে পুলিস রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। সিসিটিভি ফুটেজে (CCTV Footage) উমেশকে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁকে ঘিরে ধরেছিলেন তিন জন ব্যক্তি। পরে সকলের সামনে ব্যাগ খুলে টাকা নিয়ে চম্পট দেন তিন জন দুষ্কৃতী। সেই ফুটেজ দেখেই দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে পুলিস। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার (Arrest) করেছে পুলিস। ধৃতদের থেকে ৩৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত ১ মার্চ সন্ধ্যায় উমেশ নামে এক ব্যক্তি নগদ ৪০ লক্ষ টাকা ব্যাগে ভরে একটি সংস্থার কাজে নিয়ে যাচ্ছিলেন। লালকেল্লার কাছে একটি সিগন্যালে দাঁড়াতে হয় বাইকআরোহীকে। পিঠে ব্যাগ নিয়ে জেব্রা ক্রসিং থেকে হাতখানেক দূরে দাঁড়িয়ে সিগন্যাল সবুজ হওয়ার অপেক্ষা করছিল সে। তারপর গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা হয়ে যান তিনি। গন্তব্যস্থলে পৌঁছতেই পিঠে থাকা ব্যাগ খোলা দেখেই সন্দেহ হয় তাঁর। ব্যাগে হাত ঢোকাতেই দেখেন ৪০ লক্ষ টাকা উধাও। এরপরই তিনি পুলিসের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিস সূত্রে খবর, অভিযোগ ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিস। কোন কোন রাস্তা দিয়ে উমেশ এসেছিলেন তার একটা বিবরণও নেয় পুলিস। পরে সেই রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতেই দেখা যায় লালকেল্লার কাছে একটি সিগন্যালে উমেশ দাঁড়িয়ে আছে। তাঁকে ঘিরে ধরেছিলেন তিন জন। এমনকি ওই তিন জন সকলের সামনে উমেশের ব্যাগ খুলে টাকা নিয়ে চম্পট দেন। সেই ফুটেজ দেখেই দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে পুলিস। এমনকি দু’জনকে গ্রেফতারও করে তাঁদের থেকে ৩৮ লক্ষ টাকাও উদ্ধার করেছে পুলিস। পুলিস আরও জানিয়েছে, এই দলটি সিগন্যালে ভিড়ের সুযোগ নিয়ে লুট করছে।
মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata) উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্যর অভিযোগ। শনিবার সকালে নিজের বাড়ি থেকেই বড়তলা থানার হাতে গ্রেফতার কংগ্রেস নেতা (Congress) কৌস্তভ বাগচি (Kaustav Bagchi)। পেশায় আইনজীবী কৌস্তভের ব্যারাকপুরের বাড়িতে শনিবার ভোর ৩টে নাগাদ অভিযান চালায় পুলিসের ১৫ জনের একটি দল। অবশেষে সকাল ৭টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় কৌস্তভকে। জানা গিয়েছে, বড়তলা থানায় এক ব্যক্তির দায়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগের ভিত্তিতে এই গ্রেফতারি। যদিও অ্যারেস্ট মেমোতে গ্রেফতারির কারণ উল্লেখ নেই বলে সূত্রের খবর। শনিবার ভোররাতে গ্রেফতারির পরেই 'নৈতিক জয়', 'ভয় পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী' বলে সুর চড়ান কৌস্তভ।
পাশাপাশি কৌস্তভের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিস। কৌস্তভের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ধারার মধ্যে অন্যতম যৌন হেনস্থার ধারা। তাঁর বিরুদ্ধে ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র)-সহ দাঙ্গায় উস্কানির মতো ধারায় মামলা।
এদিন গ্রেফতারির পর কৌস্তভকে ব্যারাকপুরের বাড়ি থেকে বড়তলা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য আরজি কর হাসপাতাল, ফের থানা এবং বেলা বাড়লে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয় আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতাকে। এদিন গ্রেফতারির পর কৌস্তভ বলেন, 'এই গ্রেফতারির কোনও ভিত্তি নেই। মাতৃসম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছেন পুত্রসম কৌস্তভ বাগচীকে।' তিনি জানান, 'প্রদেশ কংগ্রেস সর্বত্র ভাবে আমার পাশে আছে। এই আশ্বাস দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী।'
এদিন গ্রেফতারির আগে নিজের বাড়িতে পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়ান কংগ্রেস নেতা। পুলিসি অভিযান প্রসঙ্গে এক কংগ্রেস নেতা জানান, শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস অফিসে দীপক ঘোষের লেখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কিত একটি বই প্রকাশ করেছি। দীপক ঘোষ তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক। সেই বই প্রকাশের জন্য হয়তো রোষানলে পড়েছে কৌস্তভ বাগচি।
ধৃত কংগ্রেস নেতার বাবা বলেন, 'রাত ৩টে নাগাদ টিটাগড় থানা, সাদা পোশাকের পুলিস এবং বড়তলা থানার পুলিস আসে গ্রেফতার করতে। এই সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ, স্বৈরতান্ত্রিক সরকার।' এদিকে এই গ্রেফতারির ঘটনায় এককাট্টা বিরোধী শিবির। কৌস্তভের হয়ে আদালতে সওয়াল করবেন বিকাশ ভট্টাচার্য। এদিন এমনটাই জানা গিয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান, 'এই ধরনের দমন-পীড়ন রাজনীতির বিরোধী বিজেপি। তবে ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রার্থী না দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাহায্য করেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। সেই প্রতিদান ফিরিয়ে দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'
কংগ্রেস মুখপাত্র এবং আইনজীবী কৌস্তভ বাগচির গ্রেফতারিকে ন্যক্কারজনক আখ্যা দিয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। যদিও এই গ্রেফতারির পর তৃণমূল নেতা বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় জানান, 'নিজেকে মাতব্বর মনে করছেন কৌস্তভ বাগচি। ওর মন্তব্যর কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না। ও কোন হরিদাস পাল।' অপরদিকে, এদিন প্রথমে বড়তলা থানার সামনে এবং পরে ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সামনে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা।
বৃহস্পতিবার ছিল মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষা (Madhyamik Exam)। বিষয়ের প্রশ্নপত্রে উল্লেখ ছিল, প্রয়োজনে গ্রাফ পেপার দেওয়া হবে। কিন্তু পর্ষদের তরফে গ্রাফ পেপার (Graph paper Row) পাঠানো হয়নি পরীক্ষাকেন্দ্রে। এই পরিস্থিতি ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হয় পরীক্ষার্থীদের মনে। যদিও পর্ষদের (WBBSE) দাবি, গত কয়েক বছরের মতো এ বছরেও গ্রাফ পেপার পাঠায়নি পর্ষদ। তাই বিভ্রান্তির প্রশ্নই নেই।
বরং বিভ্রান্তি দূর করতে পর্ষদের সাফাই, উত্তর পত্রে করতে হবে গ্রাফের কাজ। পরীক্ষার্থীরা সঠিক উত্তর দিলে অবশ্যই নম্বর পাবে। এ নিয়ে পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারির জানান, গত তিন বছর ধরেই আলাদা করে গ্রাফ পেপার দেওয়া হয় না মাধ্যমিক পরীক্ষায়। উল্লেখ্য, মাধ্যমিকের অঙ্ক প্রশ্নপত্রের ১৫-এর ২ নম্বর প্রশ্নে স্পষ্ট লেখা ছিল, সমীকরণের সমাধানের জন্য গ্রাফ পেপার দেওয়া হবে। যদিও তা দেওয়া হয়নি। এতে ভয় পেয়ে যায় পরীক্ষার্থীরা। তারপরেই পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ একটি চিঠি প্রকাশ করে। তাতে সই রয়েছে ডেপুটি সচিব (পরীক্ষা) মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
প্রসূন গুপ্ত: সোমবার নাগাল্যান্ড এবং মেঘালয়ের ভোট। আর কয়েক ঘণ্টা পর সমস্ত দলের প্রচার শেষ হবে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট। ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকেই শুরু হয়ে যাবে বিভিন্ন চ্যানেলের বুথ ফেরত সমীক্ষা। অবশ্য সারা ভারতের মিডিয়ার নজরে কিন্তু ত্রিপুরা। নাগাল্যান্ড বা মেঘালয়ে মিলিজুলি সরকারের রাজ্য ছিল এবং এই দুই রাজ্যে বিজেপি কিন্তু সহযোগী দল সরকারের। কিন্তু ত্রিপুরায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপি কাজেই দেখার বিষয় তারা তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে কিনা।
ত্রিপুরার অন্দরে কিন্তু সবকটি দল ইতিমধ্যে প্রচার মাধ্যমের কাছে দাবি করেছে যে তারা ক্ষমতায় আসছে, কিন্তু সেসব তো রাজনৈতিক কথা। আসল পরীক্ষা তো ২ মার্চে সকাল ৯টা থেকে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই।
বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জানিয়েছেন যে ভোট সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে এবং রাজ্যের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছে। ফলে বিজেপির ফের ক্ষমতায় আসাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা | মানিকবাবু মিষ্টিভাষী মানুষ, ধৈর্য্য ধরে মিডিয়ার নেতিবাচক প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেন। তাঁর একটাই কথা , আমার ফিরে আসছি।
ত্রিপুরার জনপ্রিয় নেতা তথা কংগ্রেসের সুদীপ রায় বর্মন সরাসারি সিএন পোর্টালকে জানালেন যে এবারের ভোট বিজেপির বিদায় আসন্ন। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ক্ষমতায় জোট নাকি জোটের সঙ্গে তিপরা মোথাও থাকবে? ইঙ্গিতপূর্ণ উত্তর দিলেন সুদীপ। জোট ক্ষমতায় আসবে কিন্তু ত্রিপুরার মহারাজ প্রদ্যোত দেববর্মার ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না।
শুক্রবার মিডিয়ার মুখোমুখি হলেন সিপিএম প্রার্থী তথা ত্রিপুরা সিপিএমের সম্পাদক জিতেন চৌধুরী। তিনি বললেন, ফলের আগে কোনও কথা বলাটা উচিত না হলেও জোটটির ক্ষমতায় আসাটা নিশ্চিত। তিনি বললেন, ভোট দিতে বাধা দেওয়া হলে সাধারণ মানুষ পথে নেমে প্রতিবাদ করে ভোট দিয়েছে। তাঁর ধারণা ৯০% বেশি মানুষের ভোট পড়েছে এটি নাকি সরকার বিরোধের লক্ষণ। তবে জিতেনবাবু কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন | এখন অপেক্ষা ২ মার্চ অবধি। (পরের পর্ব দেখুন)
প্রসূন গুপ্ত: না আমরা বুথ ফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট পোল নিয়ে কিছু লিখছি না। এই মুহূর্তে লিখবো না, কারণ এখনও অন্য রাজ্যের ভোট হতে বাকি। ভোটপর্ব মিটলে একটা ধারণা দেওয়াই যেতে পারে ২ মার্চের আগে। কিন্তু কী হলে, কী হতে পারে ত্রিপুরায়, তা নিয়ে একটা সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা যেতেই পারে। উল্লেখ্য, ত্রিপুরার ভোট রাজনীতির একটা ইতিহাস আছে, শাসক দলকে খুব সহজে গদিচ্যুত করে না সে রাজ্যের আম আদমি।
তবে ১৯৮৮-তে রাজীব গান্ধীর পৌরহিত্যে এবং সন্তোষমোহন দেবের হাতযশে কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছিল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। কিন্তু ৫ বছর বাদে ফিরেও যেতে হয়েছিল। যদিও এই ইতিহাসে ভর করে এই মুহূর্তে ত্রিপুরা নিয়ে কিছু বলা অসম্ভব। যদিও শাসক বিজেপি দাবি করেছে, এই ভোটে তাদের আসন বাড়বে। পাল্টা গদি উলটোবে, এই আশায় বুক বাঁধছে বিরোধী বাম-কংগ্রেস জোট।
অন্যদিকে আদিবাসী এলাকার ২০টি আসনের মধ্যে তিপরা মোথা যদি ফ্যাক্টর হয় তবে নিঃসন্দেহে ত্রিশঙ্কু অবস্থান হবে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ ক্ষেত্রে সরকার গড়বে কে, এটাই বড় প্রশ্নচিহ্ন!
ফল ঘোষণার পর তিপরা মোথা ফ্যাক্টর হলে, এই দল তাদের দর বাড়াবে। জোট বা বিজেপিকে সমর্থনে জন্য হয়তো বা তারা শর্ত দেবে যে মুখ্যমন্ত্রীর পদের।এক্ষেত্রে কী হতে পারে?
সম্ভাবনা উসকে বলা যেতে পারে, প্রথমত বিজেপি হয়তো বা রাজি হবে না। কারণ ২০২৪-র লোকসভা ভোটে ত্রিপুরার দুটি আসনে তাদের নজর আছে। বিজেপি জানে ৭০ শতাংশ বাঙালির বাস যেখানে, সেখানে উপজাতির মুখ্যমন্ত্রী হলে বাঙালিরা হয়তো বা মেনে নেবে না। কিংবা মহারাষ্ট্রের মতো শাসক জোটের শরিক হলেও হতে পারে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না হলে বিজেপি এখনই প্রধান চালিকাশক্তি হওয়ার জন্য ত্রিপুরায় হয়তো বা ঝাঁপাবে না। তারা অপেক্ষা করবে লোকসভা নির্বাচনের ফলের দিকে। কাজেই গো স্লো পদ্ধতিতে এগোবে পদ্মশিবির।
মনে রাখতে হবে এই বিশ্লেষণ পুরোটাই সম্ভাবনা এবং অনুমান ভিত্তিক। আদতে ভোটের ফলের উপর নির্ভরশীল শাসক-বিরোধী রাজনীতির দাড়িপাল্লা। সেটা জানতে অপেক্ষা করতেই হবে ২ মার্চ অবধি। (চলবে)
প্রসূন গুপ্ত: রাজনীতির ট্যুইস্ট, নতুন ঘটনা কিছু নয়, মোদী সরকারের আমলে বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধী সরকার পড়েছে, নতুন ইকুয়েশন তৈরি হয়েছে। দেখা গিয়েছে, এমনও যে দলের সঙ্গে বিজেপির কোনও কালেও সুসম্পর্ক ছিল না তারা হঠাৎই বিজেপির জুড়িদার হয়েছে যথা হরিয়ানা। আবার মহারাষ্ট্রে শিবসেনা ভেঙে দু'টুকরো হয়েছে। তেমনটা কী হচ্ছে ত্রিপুরায়?
যদিও বর্তমান ত্রিপুরা সরকারে বিজেপিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ কিন্তু তাদের জোট সঙ্গী আছে ত্রিপুরা আদিবাসীদের আইপিএফটি। এবার ভোটেও আইপিএফটি ফের জোটবদ্ধ কিন্তু এখন তাদের দল বলতে কিছুই নেই। দলের নেতা-বিধায়করা যোগ দিয়েছে নতুন দল তিপরা মোথাতে। বিজেপি দফায় দফায় এই তিপরা মোথার সঙ্গে বৈঠক করেও তাদের বাগে আনতে পারেনি।
দলের মূল কাণ্ডারি ত্রিপুরার মহারাজ প্রদ্যোত বিক্রম মানিক্য দেববর্মন। রাজার হুকুম একাই লড়তে হবে, কারণ নাকি ত্রিপুরীরাই ত্রিপুরার আসল দাবিদার। এখানে বাঙালি ও ত্রিপুরীদের মধ্যে ভেদাভেদ রয়েছে স্বাধীনতার পর থেকেই। আইপিএফটি যদিও স্থানীয় উপজাতির দল। কিন্তু বর্তমানে উপজাতি ভোটাররা তাদের উপর নাকি ভরসা হারিয়েছে! এমনটাই কানাঘুষো।
জানা যাচ্ছে ১৮টি উপজাতি আসনে কোনওভাবে প্রভাব ফেলতে পারবে না আইপিএফটি। বৃহস্পতিবার শেষ খবর, কংগ্রেস ও বামের জোটের সংকট শেষ হয়েছে। এই দুই দল একত্রে ভোট লড়বে কিন্তু পরোক্ষভাবে তাদের কাছে পেতে আগ্রহী তিপরা মোথা। সে তো ঠিক আছে কিন্তু লড়াই হবেটা কি করে?
এখানেই ট্যুইস্ট। বাম ও কংগ্রেস মোটামুটি ৬০টি আসনেই ভাগাভাগি করে প্রার্থী দিচ্ছে অন্যদিকে তিপরা মোথা ৪৮টি আসনে ইতিমধ্যে প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছে। তবে জোট হচ্ছে কী করে। এই জোট তলায় তলায়। ১৮টি উপজাতি অঞ্চলে কংগ্রেস ও বামেরা দুর্বল প্রার্থী দেবে অন্যদিকে টিএম দল ১৮টি আসন বাদে বাকি আসনগুলোয় দেবে দুর্বল প্রার্থী। খুব ঝুঁকির লড়াই তবে এমন কাণ্ড তো বিস্তর ঘটেছে ভারতীয় রাজনীতিতে। এবার দেখার কী প্রতিফলন দাঁড়ায় ভোটবাক্সে।
ফেব্রুয়ারিতেই নিউজ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন জেসিন্ডা আরডের্ন (Jacinda Ardern)। চলতি বছর দক্ষিণ গোলার্ধের এই দেশে (New Zealand) সাধারণ নির্বাচন, সেই ভোটে তিনি না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে এই দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটির নেত্রী (Prime Minister in New Zealand) হিসেবে কাজ করেছেন। করোনার সময় তাঁর কোভিড নীতি প্রশংসা কুড়িয়েছে গোটা বিশ্বের। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তাঁর লেবার (Labour Party) পার্টির উদ্দেশে এই বার্তা পাঠান জেসিন্ডা।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর মেয়াদ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী শেষ হবে। তবে এই বছর অর্থাৎ পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত সাংসদ থাকবেন তিনি। ২০১৭ সালে মাত্র ৩৭ বছরে আরডের্ন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ মহিলা হিসেবে নিউজ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
কোভিডকালে এবং ক্রাইস্টচার্চে দুটি সন্ত্রাসবাদী হামলা-সহ বিভিন্ন বিপর্যয়কালে তিনি নিউজ়িল্যান্ডকে ঠাণ্ডা মাথায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। রীতিমতো আবেগের সুরে আর়ডের্ন জানান, 'প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই সাড়ে পাঁচ বছর তাঁর জন্য কঠিন ছিল। আর তিনিও একজন মানুষ এবং তাই ক্ষেত্র বিশেষে সরে আসা জরুরি।'
প্রসূন গুপ্ত: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি এই সময়ে বিশ্ব দরবারে বাংলার অন্যতম মুখ। এবার এখনও তিনি তাঁর স্থানটি রাখতে পারছেন কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন। বিভিন্ন সময়ে রবীন্দ্রনাথ থেকে সত্যজিৎ রায় হয়ে অমর্ত্য সেনের নাম বাঙালি হিসাবে তাঁদের কৃতিত্ব বিশ্ব দরবারে উঠেছে। সৌরভ তেমন না হলেও ক্রিকেট দুনিয়াতে এসে নিজেকে এবং বাঙালির গর্বের জায়গাটি ধরেছেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
খেলার দুনিয়াতে ভারত অলিম্পিক বাদ দিলে একসময় নাম করেছিল হকিতে। সেই ঐতিহ্য ১৯৮৪ থেকে ফিকে। ফুটবলে বাংলা ৯০-এর দশকের আগে ভারত সেরা থাকলেও, বিশ্বের দরবারে ভারতীয় ফুটবল নেহাতই লিলিপুট। একমাত্র ক্রিকেটে ভারত দু'বার সীমিত ওভারের খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবং টি-২০-তে একবার। এই ভারতীয় দলে বাঙালি হিসেবে কিছুদিনের জন্য পঙ্কজ রায় সুনামের সঙ্গে খেললেও তখন ভারত বিদেশি দলের সঙ্গে খেলা মানে পরাজয় ছিল নিশ্চিত। ফলে পঙ্কজবাবু সেই অর্থে নাম করতে পারেননি। কিন্তু দীর্ঘদিন বাদে দলে এলেন সৌরভ গাঙ্গুলি, খেললেন, অধিনায়ক হলেন। বেটিং-কাণ্ডে বিদ্ধ ভাঙাচোরা একটা দলকে একসূত্রে বাঁধলেন। অজস্র রান করলেন, দলকে জেতালেন। কিন্তু বোর্ড রাজনীতির শিকার হয়ে বাদ পড়লেন।
ফের ফিরলেন এবং এক সফল কামব্যাক করে মাথা উঁচু করে বিদায় নিলেন। বাঙালি গর্বিত হলো। এরপর সৌরভ ক্রিকেট প্রশাসনে এলেন। বাংলা ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদ পেলেন, তারপর ভারতীয় ক্রিকেটের সভাপতি হলেন। এর আগে বিশ্ব ক্রিকেটে ক'জনের এই সম্মান এসেছে বা পেয়েছেন? শোনা যায় সৌরভ কেন্দ্রের বা বিজেপি নেতাদের সুনজরে ছিলেন।
হয়তো এমন কথাও হয়েছিল যে তিনি রাজ্য বিজেপির মুখ হবেন কিন্তু সৌরভ সেই দিক বেশ বুদ্ধি করে এড়িয়েছেন। সবসময়ে মানুষের সেরা দিন থাকে না, এটা অন্তত সৌরভের থেকে ভালো কেউ জানেন না। কোপ পড়ে তাঁর উপর।ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসন থেকে এক প্রকার তাঁকে বিদায় দেওয়া হলো।
সৌরভ দলে থাকুন বা নাই থাক বাঙালির চোখের মণি হয়েছিলেন। বর্তমানে তাঁর অবস্থান মোটেই সুবিধাজনক নয় ক্রিকেট দুনিয়াতে। টিভি চ্যানেলে গেম শো করেন কিন্তু তিনি জানেন বাঙালির কাছে আইকন থাকতে গেলে তাঁর নাম নিয়মিত খবরে থাকতে হবে, আপাতত লাইমলাইট থেকে তিনি অনেকটাই দূরে। এবারে কি তবে তৃণমূলের হয়ে রাজনীতিতে যোগ।
অসম্ভব কিছু নয়। খবর এমনটা না হলেও ইদানিং তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের মানুষ হতে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন এমনকি সম্প্রতি ফিল্ম ফেস্টিভেলেও দেখা গেল তাঁকে। ভাষণও দিলেন 'দিদি'কে ধন্যবাদ দিয়ে। দেখা গেলো এক বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলেনেও। সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ বাংলায় ভাষণ দিলেন যা অনেকের মতে অভূতপূর্ব। মঞ্চে তাবড় তাবড় বক্তা,রাজ্যপাল, প্রাক্তন লোকসভার স্পিকার থেকে বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের মতো মুখ।
তিনি বক্তব্যে জানালেন আচার্য সত্যম রায়চৌধুরীর ডাকে এসেছেন। কাজেই তিনি বাঙালির প্রিয় জায়গাগুলিতে যাচ্ছেন তা প্রমাণিত। একইসঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও। সৌরভ খুব বুদ্ধিমান এবং আত্মসম্মানী। তাঁকে গ্রেগ চ্যাপেল যে দল থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন তা আজও ভোলেননি। ক্রিকেট বোর্ড থেকে বাদ দেওয়াটাও হজম করবেন বলে মনে হয় না। ৫ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন ছিল (যদিও তিনি ওই দিনটিকে শংসাপত্রে লেখা জন্মদিন বলেন)। ওই দিন দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা যেমন এসেছিল তেমনই এসেছিলো সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় থেকেও। এই প্রথম কিনা জানা নেই কিন্তু 'খবরে' এই প্রথম। তবে আগামি দিনে সৌরভ কি রাজ্যসভায়? সৌরভ পিছনের বেঞ্চে বসে থাকার পাত্র নয় অতএব আরও একটা খবরের অপেক্ষায় বাঙালি।
ফের ড্রোন (Pak Drone) ব্যবহার করে ওপার থেকে ভারতে পাচারের চেষ্টা অব্যাহত। উদ্ধার পাকিস্তানি ড্রোন। জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত সেই ড্রোন থেকে এক কেজি মাদক (narcotics) উদ্ধার হয়েছে। সোমবার ভারত-পাক সীমান্তে পঞ্জাবের (Punjab Border) গুরদাসপুর থেকে বিএসএফ (BSF) এই ড্রোন বাজেয়াপ্ত করেন।
বিএসএফ-র বক্তব্য, ‘‘গুরুদাসপুরের কসোয়ালে আমাদের ঘাঁটি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে একটি পুরনো ভাঙাচোরা ড্রোন পাওয়া গিয়েছে। তার সঙ্গে ১ কেজি ওজনের হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।’’
সোমবার দুপুরে স্থানীয় কৃষকদের চোখে এই ড্রোন পড়ে। খবর যায় বিএসএফ-এ, তারা এসে ড্রোনটি বাজেয়াপ্ত করে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বছর শেষেও পাক একটি ড্রোন ঢুকে পড়েছিল সীমান্ত এলাকায়। জানা গিয়েছে, ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পঞ্জাবের অমৃতসরের জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ঢুকে পড়ে ড্রোনটি।
ধীরে ধীরে আবার দেশে ফিরে আসছ সেই খেলার আবহ, এমনটাই মত ক্রীড়া বিশেষজ্ঞদের। আর সেখানেই ফের সোনার সময় শুরু হবে বলেও আশাবাদী ক্রীড়া মহল। আর এবার সেই স্বপ্ন খানিক সত্যি করেই আশার আলো দেখাচ্ছে হুগলির (Hooghly) বুলটি রায়। সম্প্রতি ২৩ নভেম্বর থেকে মহারাষ্ট্রের নাসিকে (Nasik) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। দ্বিতীয় জাতীয় ফেডারেশন ক্রীড়া চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা (2nd National Federetion Meet) আর সেখানেই অংশগ্রহণ করেছিলেন বাংলার প্রতিযোগিরাও। আর সেখানেই যথাক্রমে ১০০ মিটার, ২০০ মিটার, ৪০০ মিটার, ৮০০ মিটার ও রিলে দৌড়ে (Relay Race) বাংলার হয়ে অংশগ্রহণ করেন বুলটি। শুধু তাই নয়, এই প্রতিটি বিভাগেই সোনা জিতেছেন এই কৃতি খেলোয়াড়। বাংলা ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন আরও ১২টি রাজ্য এবং পাশপাশি প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং নেপালের প্রতিযোগিতারা।
উল্লেখ্য, তারকেশ্বর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণ বাজার এলাকায় একটি ছোট্ট টালির চালের ভাড়া বাড়িতে স্বামী এবং দুই সন্তান কে নিয়ে বসবাস করেন বুলটি। স্বামী সন্তোষ দাস ট্রেনে হকারি করে সংসার চালান। অভাবের সংসারে থেকেও একের পর এক সফলতা অর্জন করে চলেছেন বুলটি। জাতীয় স্তরে পাঁচ পাঁচটি স্বর্ণ পদক জয়ের পর কোথাও যেন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে অলিম্পিকের স্বপ্ন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ২৭ শে এপ্রিল থেকে ১লা মে পর্যন্ত তামিলনাড়ুর জহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়া ৪২ তম জাতীয় মাস্টার্স অথ্যালেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলার হয়ে পাঁচটি মিটে অংশ গ্রহণ করেন বুলটি। সেখানেও ২০০ মিটার দৌড়,৪০০ মিটার দৌড় এবং ৪০০ মিটার হার্ডলসে স্বর্ণ পদক লাভ করেন তিনি।
অন্যদিকে ১০০ ও ৪০০ মিটার রিলেতে পান রুপো। তবে এত খুশির মধ্যেই রয়েছে বিষাদও। এতদিন যিনি বুলটিকে শিক্ষা দিয়ে এসেছেন, তিনি অর্থাৎ বুলটির ট্রেনার প্রয়াত হয়েছেন একদিন আগেই। তাই এদিন যথেষ্ট শোকে রয়েছেন বলে জানালেন বুলটি।
অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়েই চলছে দিনের পর দিন অনুশীলন। গত ২৫ বছরে অনুশীললের ফল হিসাবে বাড়িতে থাকা টিনের ট্যাঙ্কে ভর্তি হয়ে আছে বেঙ্গল এবং জাতীয় স্তরের হাজার হাজার শংসাপত্র এবং সোনা,রুপা, ব্রোঞ্জের মেডেল। হয়তো ভবিষ্যতে সেখানেই যুক্ত হবে কমনওয়েলথ বা অলিম্পিকের পদকও, এই আশাতেই বুক বাঁধছেন সকলে।
প্রসূন গুপ্ত: সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য অখিল গিরি, রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে যে কুকথা বলেছেন তাই নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজ্যজুড়ে। অখিলের কুমন্তব্যের কারণে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। এখানেই হয়তো শেষ হয়ে যেতে পারতো এই ইস্যু, কিন্তু হলো কি? অখিল প্রশ্নে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, অখিলকে কান ধরে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে দেওয়া উচিত। এখানেই থামেননি তিনি, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশেও আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি।
আবার তার পাল্টা বক্তব্য রেখেছেন ববি হাকিম। অন্যদিকে অখিলের মন্তব্যের সমালোচনা করে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন যে, এ কোন সংস্কৃতির মধ্যে চলছে? তিনি আরও বলেন, যে দিনের পর দিন সোনিয়া গান্ধীকে নানা কুবাক্য করা হয়েছে আইনসভায়। নীতিবোধ তখন কোথায় থাকে?
মনে পরে যায় আগের জমানার কথা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পার্লামেন্টে অটলবিহারী বাজপেয়ী ভূয়সী প্রশংসা করে ইন্দিরাকে দেবী দুর্গার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। আবার আমেরিকা সফরে ইন্দিরার সঙ্গে রোনাল্ড রেগনের মতবিরোধ হওয়ার পর ইন্দিরা বাজপেয়ীকেই আমেরিকা সফরে পাঠান। তর্ক-বিতর্ক, বিরোধিতা নেহেরুর আমল থেকেই ছিল কিন্তু শালীনতা ভেদ করেনি কখনও। এ রাজ্যে জ্যোতিবাবুর আমলে, মুখ্যমন্ত্রী যথেষ্ট সমালোচনা করেছেন কেন্দ্র বা রাজ্যের। তিনি সমালোচনা করেছেন মমতারও। আবার মমতাও প্রশাসনের চরম বিরোধিতা করেছেন কিন্তু কখনও তা সীমা ছাড়িয়ে যায়নি।
তৃণমূলের প্রথম আমলে বিরোধী নেতা হন সূর্যকান্ত মিশ্র। পরের বার অর্থাৎ ২০১৬-তে আসেন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান। তাঁরা সরকারের যথেষ্ট সমালোচনা করেছেন কিন্তু ব্যক্তি আক্রমণে যাননি কেউ। এই সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে গত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে। কুকথা, কুৎসিত ভাবে ব্যক্তি আক্রমণ চলেছে। তৃণমূল থেকে এমন অভিযোগ অহরহ করা হয় যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, যিনি একসময় রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন, তিনিও নানাভাবে ব্যক্তি আক্রমণ করেন।
কমতি যান না তৃণমূলের কুনাল ঘোষরাও। গতকাল শুভেন্দু জানিয়েছেন যে তিনি কারুর নাম করে ব্যক্তি আক্রমণ করেন না। কুনালও জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তি আক্রমণ করেননি। কিন্তু সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ইদানিং যে ভাষা বিজেপি ও তৃণমূলের সমর্থকরা করছেন তা পড়ার অযোগ্য। পিছিয়ে নেই বামপন্থীরাও। তাঁদের সূক্ষ্ম গালিগালাজ সবচাইতে উচ্চস্থানে রয়েছে।
আসন্ন ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে জাতীয় দলে ডাক পেলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডের স্তম্ভ ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। ডেনমার্কের ২৬ জনের দলে ২১ নম্বরে নাম রয়েছে এরিকসেনের। চলতি মাসের শুরু হতে যাওয়া কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ- ডি-তে রয়েছে স্ক্যান্ডনেভিয়ান এই দেশ। তাদের গ্রুপে ফ্রান্স,অস্ট্রেলিয়া এবং তিউনিশিয়া। আগামী ২২ শে নভেম্বর তিউনিশিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ খেলবেন ক্যাস্পার স্কিমাইকেল, এরিকসেনরা।
গ্রুপ পর্বে ডেনমার্কের বাকি দুই ম্যাচ ২৬ নভেম্বর ফ্রান্স এবং ৩০ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। ডেনমার্ক ম্যানেজার ক্যাসপার আশাবাদী এরিকসনকে নিয়ে। তিনি বলেন "অনেক কিছুই হতে পারে"। ২০২০ ইউরো কাপে ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এরিকসেন। মাঠে ফিরে ফের স্বমহিমায় এই খেলোয়াড়। প্রতি ম্যাচে জেতার বিষয়ে ১০০ শতাংশ আশাবাদী এই ড্যানিশ খেলোয়াড়।