
স্কুলে যাওয়ার পথ মসৃণ নয়। প্রায় প্রতিদিনই রাস্তার বেহাল দশার কারণে স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায় একরত্তির। কিন্তু রোজ কি এমনটা চলতে পারে? না, কিছুতেই না। যানজটে ফেঁসে স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয় বলে রোজই শিক্ষকদের কাছে বকা শুনতে হয় তাকে। কিন্তু কেন? এর একটা উপায় বার করতেই হবে। তাই প্রশাসনকেই নিজেদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিতে থানায় হাজির হল ৬ বছরের খুদে কার্তিক। আর সেই ছবি ইতিমধ্যেই নেট মাধ্যমে ভাইরাল।
স্কুলের সামনের রাস্তাও খোঁড়া। কিন্তু কতদিন এই অবস্থায় থাকবে রাস্তা? কেন রাস্তা সারাই হচ্ছে না ? অভিযোগের ঝুলি নিয়ে খুদে হাজির হল পালামানের থানায়। সোশ্যাল মি়ডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পালামানের থানায় গিয়ে সার্কেল অফিসার এন ভাস্করের সঙ্গে কথা বলছে কার্তিক। হাত-পা নেড়ে সে পুলিসের কাছে যানজটের জেরে সমস্যার কথা রীতিমতো ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছে। কেন রাস্তা সারাই হচ্ছে না, প্রশ্ন একরত্তির। প্রথমে ছোট্ট অভিযোগকারীকে দেখে একটু ঘাবড়ে গেলেও, পরে মন দিয়েই যাবতীয় অভিযোগ শুনলেন সার্কেল ইন্সপেক্টর। দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাসও দিলেন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ওই ছোট্ট শিশুটি অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তোর জেলার বাসিন্দা কার্তিক। সে পড়ে ইউকেজিতে।
#AndhraPradesh: A 6-year-old UKG student Karthikeya of #Palamaner in #Chittoordistrict complaints to the police, on traffic issues near his school. He asked the police to visit the school and solve the problem.@NewsMeter_In @CoreenaSuares2 @ChittoorPolice @APPOLICE100 pic.twitter.com/RxiJpSYzY0
— SriLakshmi Muttevi (@SriLakshmi_10) March 19, 2022
ছোট্ট শিশুর আত্মবিশ্বাস মুগ্ধ করে থানার আধিকারিকদের। তাঁকে মিষ্টি মুখ করান কর্তব্যরত পুলিস আধিকারিকরা। এক পুলিসকর্মী নিজের ফোন নম্বরও দেন। ছোট্ট শিশুর অসম সাহসিকতা ও দায়িত্ববোধকে তারিফ না করে পারছেন না নেটাগরিকরা।
আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিক সংস্থা কি আচমকাই সাসপেন্ড করেছে দীপা কর্মকারকে? এমনই খবরে কিছুটা হলেও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যদিও তাঁকে আদৌ সাসপেন্ড করা হয়েছে কি না, বা হয়ে থাকলে কী কারণে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। দীপা এখন রয়েছেন আগরতলায়।
দীপাকে সাসপেন্ড করার খবর জানেন না বলেই ফোনে জানান তাঁর কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী। বিষয়টি নিয়ে তাঁদের কাছে পরিষ্কার চিত্র এখনও আসেনি বলেই জানিয়েছেন তিনি। তিনি দীপার সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর যে লিগ্যাল অ্য়াডভাইসার, তাঁর সঙ্গেও কথা বলেছেন। তিনিও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন বলেই তাঁদের জানিয়েছেন। তিনি উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে বিষয়টি আমাদের জানাবেন। ফলে প্রকৃত পরিস্থিতি কী, তা নিয়ে তাঁরাও দোলাচলে রয়েছেন। লিগ্যাল অ্যাডভাইসার জানালে সবাই সঠিক তথ্য পেয়ে যাবেন বলেই তিনি জানিয়েছেন।
চোটের জন্য অবসর নিতে চলেছেন দীপা কর্মকার। এমনই ইঙ্গিত দিলেন দীপার কোচ। তাঁর বক্তব্য, এমন একটা সময় তাঁর প্রতি এ ধরনের আচরণ কেন, সেটাই তাঁদের কাছে পরিষ্কার হচ্ছে না।
আনিস খানের মৃত্যুরহস্য নিয়ে এখন কি রাজনীতির মহড়া চলেছে? এমন প্রশ্ন ২০০৭ এ রহস্যজনকভাবে মৃত রিজওয়ানুর রহমানের দাদা রুকবানুর রহমানের। সিএন পোর্টালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুকবানুর এমন দাবি করছেন। রুকবানুর জানালেন, তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা সিবিআই পরিষ্কার জানায়নি। তারা আত্মহত্যা বলেছে। কিন্তু এমন আত্মহত্যা কেন হল, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও অধরা। কাজেই আনিসের মৃত্যুতে সিবিআইকে প্রয়োজন নেই।
২০০৭ এ প্রবল প্রতাপশালী ব্যবসায়ীর কন্যা প্রিয়াঙ্কা টোডির সঙ্গে প্রেম এবং পরে বিবাহ হয় আইটি ইঞ্জিনিয়ার রিজওয়ানুরের। পরে লালবাজারের চাপে পড়ে রহমান পরিবার। প্রিয়াঙ্কাকে রিজের বাড়ি থেকে পুলিশের সাহায্য নিয়ে তুলে আনা হয়েছিল। তখন কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রিয়পাত্র প্রসূন মুখোপাধ্যায়। প্রিয়াঙ্কা চলে যাওয়ার পর ২০০৭ এর ২১ সেপ্টেম্বর রিজের মৃতদেহ পাওয়া যায় দমদমের কাছে পাতিপুকুরের রেললাইনে। এ নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ কিন্তু তখন অনেকটাই নীরব ছিল। ওঠে সিবিআইয়ের দাবি। সিবিআই আত্মহত্যার শংসাপত্রই দিয়েছিল। কিন্তু কেন আত্মহত্যা, তা আজও অধরা, আক্ষেপ চাপড়ার তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমানের।
আজ আনিসের মৃত্যুর পর সিএন পোর্টালকে রুকবানুর জানালেন, এই মৃত্যুও মর্মান্তিক। যদি হত্যা হয়ে থাকে, তবে চাইব অবিলম্বে দোষীদের সাজা হোক। রুকবানুর জানাচ্ছেন, তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর পর যে আন্দোলন হয়েছিল, তা ছিল সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। কিন্তু আজ আনিসের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। কেউ বলছে, জ্ঞানবন্ত সিং রিজের মৃত্যু তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আজ কেউ কেউ তাঁকে দোষ দিচ্ছেন। কিন্তু সিবিআই জ্ঞানবন্তকে ক্লিনচিট দিয়েছিল। বাম ও মৌলবাদী সংগঠনগুলি আসন্ন পৌরসভা ভোটকে মাথায় রেখে ভোট পাওয়ার জন্য রাজনীতি করছে। আনিসের বাবা যে সিবিআই চাইছেন, তা তাঁর কথা নয়, কেউ উস্কানি দিচ্ছে। যদিও এসএফআই নেত্রী মৌপ্ৰিয়া রাহা বলেছেন, রুকবানুরকে পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না। কারণ তিনি তৃণমূলের বিধায়ক। কিন্তু রুকবানুরের বক্তব্য, ভোটের পরদিন অর্থাৎ ২৮ তারিখেও এদের আন্দোলনে পাওয়া যাবে তো?
নির্মমভাবে এই মুহূর্তে ভারতের সেরা তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহাকে যে ভঙ্গিমায় ভারতীয় দল থেকে ছেঁটে ফেলা হল, তাতে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে এবং 'বাংলার বিশেষ আত্মত্যাগের' দিনে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, স্বয়ং বাংলার দাদা সৌরভ গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে। অজিঙ্কা রাহানে বা চেতেশ্বর পূজারাকে বাদ দেবার যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। তাঁদের গত দুই বছরের ফর্ম যথেষ্ট খারাপ ছিল। ফলে তাঁদের বাদ যাওয়াটা সময়ের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু ঋদ্ধিমান কেন? ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন খেলোয়াড়রা। দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার এবং ১৯৮৩র বিশ্বকাপ জয়ী দলের স্তম্ভ সৈয়দ কিরমানি প্রশ্ন তুলেছেন। কিরির বক্তব্য, কী বা কোন ভুলে বাদ ঋদ্ধি, যাঁর নিখুঁত কিপিং এবং যথেষ্ট ভালো ব্যাটিংও। কিরি সরাসরি প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বর্তমান বোর্ডের বিরুদ্ধে। একই প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক তথা সিলেক্টর দিলীপ বেঙ্গসরকার। দিলীপও জানাচ্ছেন, অত্যন্ত খারাপ বার্তা ঋদ্ধির বাদ পড়া।
সম্প্রতি সৌরভ গাঙ্গুলি নাকি ঋদ্ধিমান সাহাকে একটি টেক্সট মেসেজ ছাড়েন, যা নাকি ঋদ্ধির পক্ষে যথেষ্ট অবমাননার বলে খবর। এই টেক্সট মেসেজ নাকি ঋদ্ধি প্রকাশ করে দিয়েছেন (ক্যালকাটা টেলিভশন নেটওয়ার্ক তা যাচাই করেনি)। এই সৌরভের বার্তা নাকি ঋদ্ধিমানের কাছে অতি অসম্মানের ছিল বলেই ধারণা ক্রীড়া মহলে। মনে রাখতে হবে, এই সৌরভ যখন প্রথম ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়েন, তখন বোর্ড সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া তাঁর পাশে না দাঁড়ালে সৌরভের আদৌ দলে ফিরে আসা সম্ভব ছিল কি? দ্বিতীয়বার বাদ পড়ার সময় সারা বাংলা এবং বাংলাদেশ তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছিল। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিজে উদ্যোগ নিয়ে শারদ পাওয়ারকে বিষয়টি দেখতে অনুরোধ করেছিলেন। তবেই সৌরভ দলে ফিরেছিলেন বলেই খবর হয়েছিল। আজ সৌরভের ভূমিকা কী? কেন তাঁর দাদা স্নেহাশিষ ঋদ্ধির পাশে না দাঁড়িয়ে তাঁর সমালোচনা করছেন? আজ কি ভারতীয় ক্রিকেট থেকে বঙ্গীয় ক্রিকেট গাঙ্গুলি পরিবারের সম্পত্তি হয়ে গিয়েছে? প্রশ্ন উঠেছে 'বাংলা পক্ষ' সংগঠনের প্রধান গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। গর্গ আমাদের জানাচ্ছেন, রবিবার এই নিয়ে তাঁরা আন্দোলনে নেমে গ্রেফতার হয়েছেন। ঋদ্ধির জন্য বাঙালি কি নীরব?
অটলবিহারী বাজপেয়িও প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, কিন্তু কখনই ভারতের ট্রাডিশনাল প্রশাসন থেকে সরে যাননি। জওহরলাল নেহরুর ভক্ত ছিলেন বাজপেয়ি। তিনি সম্পূর্ণ কংগ্রেস বিরোধী হলেও দেশীয় ও বিদেশনীতিতে যা নেহরুর আমল থেকে চলে এসেছিল, তাতে হাত দেননি। বাজপেয়ি নিয়মিতভাবে গান্ধীজি, নেহরু বা ইন্দিরার জন্মদিন বা প্রয়াণ দিবস পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করেছেন। কারণ হিসাবে তিনি বলতেন, যাঁরা দেশের জন্য প্রাণপাত করে কাজ করেছেন, তাঁদের অগ্রাহ্য করা যায় না।
কিন্তু ২০১৪ থেকে পটভূমি সম্পূর্ণ পরিবর্তনের দিকেই গিয়েছে অর্থাৎ মোদী শাসনে। হয়তো বা বর্তমান সরকার মনে করেছে বা হয়তো আরএসএস বুঝেছে যে, কংগ্রেসের সেন্টিমেন্ট ওই নেহরু/গান্ধী পরিবারকে ঘিরেই। সুতরাং এই পরিবারকে মূল স্রোত থেকে সরিয়ে দিলে দেশের প্রধান শক্তিকে অবাঞ্ছিত করে দেওয়া যাবে। এই কারণের জন্য তাঁদের আমলে সৃষ্ট নামধাম পরিকল্পনাকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে গেরুয়াপন্থীদের কোনও ভূমিকা ছিল না। সুতরাং সেই দুর্বলতাকে ঢাকতে মোদী থেকে সম্পূর্ণ বিজেপি দল এমনভাবে এগোচ্ছে যে, বর্তমান সময়ে আধুনিক ভারত যা কিনা এনেছেন মোদী। অতএব কংগ্রেসমুক্ত ভারতের স্ট্র্যাটেজি নেওয়া হয়েছে।
এই পরিকল্পনাতে কংগ্রেসকে শেষ করতে গেলে স্থানীয় বিরোধী দলগুলিকে তোল্লাই দেওয়া দরকার। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চেন্নাইয়ের স্ট্যালিন, নবীন পট্টনায়ক বা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উথানে বিচলিত নয় বিজেপি দল। কারণ তারা জানে, এঁরা হয়তো নিজের নিজের রাজ্যে বিজেপিকে হারাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু যখন লোকসভা নির্বাচন আসবে, তখন প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিতে এরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ফলে বিজেপির জেতাটা সহজ হবে। এই কাজে তারা যে অনেকটাই সফল, তা বলাই বাহুল্য। এখন চলতে থাকা উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস নেহাতই লিলিপুট, প্রধান বিরোধী এখন ওখানে সমাজবাদী পার্টি। এইভাবে তারা এগিয়ে চলেছে।
সময়ের সঙ্গে চলতে হয়। একই আত্মসন্তুষ্টি কংগ্রেসেরও ছিল। কিন্তু নরসিমা রাওয়ের জমানা শেষে কংগ্রেস আর কোনওদিন এককভাবে দিল্লির ক্ষমতায় আসতেও পারেনি। বিজেপির এই ওভার কনফিডেন্স তাদের বিপাকে ফেলতে পারে। যদি উত্তরপ্রদেশের ভোটে অন্তত ২৫০ আসন না পায় বিজেপি, তবে অনেকটাই সাহস বৃদ্ধি হবে বিরোধীদের। এরপর আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তালেগোলে যদি একটা সরকার গড়ে ফেলে বিরোধীরা, তবে তাদের প্রথম কাজ হবে "বিজেপিমুক্ত ভারত"।
এ এক অন্য গল্প। এখানে শাশুড়ির কাছে রান্না বা ঘর গেরস্থালি নয়, একেবারে রাজনীতির হাতেখড়ি হচ্ছে বৌমার। রাজনীতিতে অভিজ্ঞ শাশুড়ির কাছ থেকে আসন্ন পুরভোটের রণকৌশল জানতে নিচ্ছেন পাঠ।
শান্তিপুর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার নমিনেশন জমা করার পর বুধবার বহু প্রাচীন বিখ্যাত শ্যামচাঁদ মন্দিরে পুজো দিলেন তিনি। তারপরই শাশুড়ির সঙ্গে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন বাড়ি বাড়ি ভোট প্রচারে।
শাশুড়ি ইন্দিরা ভট্টাচার্য ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। রাজনীতিতে নবাগতা প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা জানান, পড়াশোনা করার কারণে বিয়ের আগে রান্না বা ঘরকন্নার কোনও কাজই জানতেন না। সবটাই শেখা শাশুড়ির কাছ থেকে। উনি কাউন্সিলর থাকাকালীনই প্রিয়াঙ্কার এই বাড়িতে আসা। ধীরে ধীরে রেসিডেন্ট সার্টিফিকেট, হাসপাতাল এবং বিভিন্ন সমস্যায় এলাকার মানুষকে সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিতে চিঠিপত্র লেখার কাজ ছিল তাঁর। বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমিতি, মহিলা গোষ্ঠী গঠন এবং ওয়ার্ডের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে পৌরসভাতেও ছিল যাতায়াত।
প্রিয়াঙ্কা আরও জানান, তাঁর স্বামীও ছাত্র রাজনীতি এবং পরবর্তীতে ওয়ার্ডে জনসংযোগের কাজে যুক্ত। ফলে রাজনীতিতে জায়গা পাকা করতে নিজেকে তৈরি করছেন শাশুড়ির ছত্রছায়ায়। এছাড়াও তিনি প্রার্থী হওয়ায় অনেকেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী এসেছিলেন তাঁর বাড়িতে। রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে পরামর্শ দিয়ে গেলেন বলে জানান তৃণমূল প্রার্থী।
আর জয়ের বিষয়ে প্রত্যয়ী তিনি, দাবি তৃণমূল প্রার্থীর। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
ড্রোনের (Pak Drone) মাধ্যমে অস্ত্র এবং মাদক পাচার আটকাল বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (BSF)। মঙ্গলবার মধ্যরাতের এই ঘটনা পঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্তের। বিএসএফ-এর এক কর্তা জানান, গুরুদাসপুর (Punjab Border) সেক্টরের পঞ্জগ্রেনে আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতীয় আকাশে ভোঁ ভোঁ শব্দ কানে আসে জওয়ানদের। তখনই শব্দের উৎস সন্ধানে উদ্ধার হয়, পাকিস্তানের দিক থেকে আসা একটি ড্রোন আকাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। সন্দেহ হওয়ায় গুলি করে নামানো হয় সেই ড্রোন।
এরপরেই এলাকাজুড়ে তল্লাশি শুরু হলে হলুদ রঙের দুটি প্যাকেটে উদ্ধার হয়েছে। যার ভিতর থেকে মাদক উদ্ধার হয়েছে। সন্দেহ, সেই প্যাকেট ফেলেই যখন পাকিস্তানের দিকে ফিরছিল সেই ড্রোন, তাকে আটকায় বিএসএফ। আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে প্রায় আড়াই কিমি দূরে এই জোড়া প্যাকেট বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যার একটির সঙ্গে পিস্তল মোড়ানো ছিল।
যদিও সন্দেহজনক সেই ড্রোনের কোনও হদিশ এখনও পায়নি বিএসএফ। সেটা কোনও জলাশয়ে ডুবেছে, না কোনওভাবে সীমান্ত পেরিয়ে পাক ভূখণ্ডে গিয়ে পড়েছে? উত্তর খুজতে তদন্ত শুরু করেছে বিএসএফ।
বেজিংয়ে আয়োজিত শীত অলিম্পিকে (Winter Olympic) উপস্থিত থাকবে না ভারতের দূত। চিনের (China) সাম্প্রতিক আচরণের বিরোধিতা করে এভাবেই প্রতিবাদের পথে হাঁটছে মোদী সরকার (Modi Government)। এই অলিম্পিকের মশাল দৌড়ে নেতৃত্ব দেন পিপল লিবারেশন আর্মি অর্থাৎ চিনা (PLA) ফৌজের এক সেনা। ঘটনাচক্রে ২০২০-র গালওয়ান সংঘর্ষের (Galwan Clash) সময় ঘটনাস্থলে মারপিটে অভিযুক্ত ছিলেন পিএলএ-র সেই সদস্য। এতেই আপত্তি নয়াদিল্লির। তারপরেই প্রতিবাদ জানাতে এই অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।
বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমকে একথা জানান বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি। গালওয়ান সংঘর্ষের অভিযুক্তকে দিয়ে অলিম্পিকের মশাল বইয়েছে চিন। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। তাই বেজিংয়ে আয়োজিত শীত অলিম্পিকের সূচনা কিংবা সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে না ভারতের কোনও কূটনৈতিক দূত। এমনটাই বিবৃতিতে জানান তিনি।
জানা গিয়েছে, ইন্দো-চিনা গালওয়ান সংঘর্ষে থাকা রেজিমেন্ট কমান্ডার কি ফাবিওকে এভাবে সম্মান জানিয়েছে জিংপিং সরকার। ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া শীত অলিম্পিকের আগে তাঁকে দিয়ে ঐতিহ্যবাহী মশাল বইয়েছে চিন। সেই ছবি ট্যুইট করেছে সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস। এতেই বেড়েছে ভারতের বিড়ম্বনা। আর কূটনৈতিক ভাবেই বেজিংয়ে বার্তা দিতে এই বয়কটের সিদ্ধান্ত। এমনটাই সাউথ ব্লক সূত্রে খবর।
বিভিন্ন রেডিমেড কারখানার ফেলে দেওয়া ছাঁট কাপড়ের টুকরো থেকে তৈরি হচ্ছে তুলো। নদিয়ার দক্ষিণ পশ্চিমাংশে গড়ে উঠেছে তুলো তৈরির কারখানা। রি-সাইকেল পদ্ধতির মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে তুলো। রি-সাইকেল কথাটি এখন বেশ ট্রেন্ডি। বিভিন্ন বর্জ্য এবং পরিত্যক্ত জিনিস থেকে রি-সাইকেল পদ্ধতিতে ফের ব্যবহারের জন্য অন্য উপাদান তৈরি করা হচ্ছে। শুধু জীবিকার ক্ষেত্রে নতুন পেশা নয়, এই পদ্ধতি পরিবেশকেও দূষণের হাত থেকে বাঁচায়।
মাত্র কয়েক বছর আগে পর্যন্ত নানা হোসিয়ারি কারখানার ছাঁট কাপড়ের টুকরো অথবা অন্যান্য রেডিমেড পোশাক কারখানার বাতিল কাপড়ের ছোট টুকরো আগুন জ্বালিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হত। যা পরিবেশের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক। কিন্তু বর্তমানে তা থেকে তৈরি হচ্ছে তুলো।
শিমুল বা কাপাস তুলো অত্যধিক দামের কারণে অনেকেই লেপ-তোষক, জাজিম, সোফাতে ব্যবহার করে উঠতে পারেন না। কিন্তু এ ধরনের ছাঁট কাপড় থেকে উৎপাদিত তুলো কম দাম হওয়ার কারণে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষত এই তুলো বিভিন্ন লোমশ কাপড়ের তৈরি টেডি বিয়ার, পুতুল বা অন্যান্য ঘর সাজানোর বিভিন্ন জীবজন্তুর দেহের আকৃতি আনতে ব্যবহার করা হয়।
নদিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের বীরনগর, কামগাছি, নবদ্বীপের ভালকোতে এ ধরনের বেশ কয়েকটি কারখানা গড়ে উঠেছে। ৬০-৭০ হাজার টাকার বিশেষ এক প্রকার কাঠের এবং লোহার মেশিনে প্রাত্যহিক তিন-চারশো কেজি পর্যন্ত তুলো উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। জেলার কৃষ্ণনগর, পালপাড়া, শিমুরালি, চাকদহ, বেথুয়াডহরি, বাদকুল্লা, শান্তিপুরের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট ছোট রেডিমেড পোশাকের কারখানা থেকে এ ধরনের ছাঁট কাপড় সংগ্রহ করে হকাররা। ৫ থেকে ৮ টাকা প্রতি কেজিতে কিনে বিক্রি করে লাভ রেখে। আর তা থেকে উৎপাদিত তুলো বাজারে বিক্রি হয় ১৮ থেকে ২০ টাকা প্রতি কেজি। তবে হোসিয়ারি সাদা কাপড়ের টুকরো ২৫ থেকে ২৮ টাকা পর্যন্ত দাম দিয়ে কিনতে পারে। সেই তুলো পাইকারি বিক্রি হয় ৪৫ টাকা পর্যন্ত।
নদিয়ার কৃষ্ণনগর, শক্তিনগর, পালপাড়া এলাকায় এরকমই দুটি কারখানায় এলাকার মহিলারা কাপড়ের টুকরো বাছার কাজ পেয়েছেন। লেপ-তোষক বালিশ সেলাইয়ের কর্মীর চাহিদা বেড়েছে স্থানীয়ভাবে। হকাররা পেয়েছেন নতুন জীবিকা। একটি তুলো তৈরির কারখানার মালিক মতিলাল চক্রবর্তী জানান, সমস্যা একটাই পুঁজির। ফলে সারা বছর মজুত করা সম্ভব হয় না। তবে তা করতে পারলে পুজোর পর থেকে মাঘ মাসের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায় সমস্তটাই।
আসলে জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা। তা অক্ষরে অক্ষরে সত্যি প্রমাণ হল এই রি-সাইকেল পদ্ধতির মাধ্যমে তুলো তৈরির ফলে। যা দিশা দেখাল নতুন কর্মসংস্থানের।
নেতাজি সুভাষ জাতীয় নেতা, আজকের দিনে তা প্রমাণ করতে মরিয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। পশ্চিমবঙ্গে স্বাধীনতা উত্তর যুগ থেকেই দেশনায়ককে নিয়ে আবেগ বাঙালির মধ্যে ছিলই। বিধান রায় থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রত্যেকেই ২৩ জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করেছেন, যা আজও বিদ্যমান। চিরকালই এই দিনটি বাঙালি উৎসবের মেজাজে থাকে এবং অবশ্যই বাংলায় এই দিনটি বছরের প্রথম ছুটির দিন হিসাবেই থাকে। ভারতে বিভিন্ন দল বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু কোথাও নমঃ নমঃ করে দিনটি পালন করা হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর নেহরু, গান্ধী পরিবারকে পিছনে ফেলে কংগ্রেসের বিভিন্ন দেশনায়ককে তুলে আনার চেষ্টা করেছে ঠিকই, কিন্তু আলাদা করে নেতাজির জন্মদিবসকে বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়নি। কিন্তু গত বছর ছিল নেতাজির ১২৫ বছরের পদার্পণের বছর, যা কিনা আজ ১২৫ পূর্ণ হচ্ছে। মোদীজি এই দুই বছর উৎযাপন করেছেন বা করছেন জন্মদিবস। গত বছর করেছিলেন ভিক্টরিয়ার প্রাঙ্গনে এবং এই বছর উৎযাপন করছেন ইন্ডিয়া গেটে মূর্তির রেপ্লিকা স্থাপন করে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপত্তি এখানেই তুলেছেন। গত বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোট ছিল এবং ভিক্টোরিয়াতে আমন্ত্রিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। কিন্তু সেখানে পরিবেশ কলুষিত হয়, যখন তিনি বক্তব্য রাখতে উঠেছিলেন, ধ্বনি উঠেছিল 'জয় শ্রীরাম'। অবশ্য এ বছর তেমন কোনও অনুষ্ঠান কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাখা হয়নি এ রাজ্যে। মমতাও দলকে নির্দেশ দিয়েছেন, এলাকায় এলাকায় নেতাজির জন্মদিবস পালন করতে। কিন্তু আজই তিনি ফের একবার কেন্দ্রীয় সরকারকে (পড়ুন মোদিকে) আবেদন করেছেন, নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণা করতে। মমতা এই দিনটিকে আখ্যা দিয়েছেন "দেশনায়ক দিবস"। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বিজেপি দিনটিকে 'পরাক্রম দিবস' ঘোষণা করেছে। মমতার প্রশ্ন, কেন দিনটিকে বিশেষ দিন হিসাবে গণ্য করে জাতীয় ছুটির দিন হিসাবে ধরা হবে না। এই নিয়ে রবিবার সকালেই ট্যুইট করে ওই দাবি করেছেন তিনি।
কংগ্রেস দলটির অবস্থা সত্যজিৎ রায়ের ছবি 'জলসাঘর'-এর মতো। জমিদারি গিয়েছে, অথচ ঠাটবাট বজায় রাখার প্রবল প্রয়াস। আসন্ন ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে গোয়া একটি নজরকাড়া রাজ্য। প্রায় ১০ বছর নানান ইকুয়েশনে বিজেপি সেখানে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। রাখতে অসুবিধাও ছিল না। কারণ, এখানে কংগ্রেসের বন্ধু পার্টিরা তাদের পথ বদলেছে, কিন্তু কংগ্রেস তার জেদে অটল। বিগত বিধানসভা ভোটে বেশি আসন পেলেও দল ভাঙিয়ে, জোট করে ফের ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। এবার কিন্তু কংগ্রেসের কাছে সুযোগ ছিল খুবই। মহারাষ্ট্রের লাগোয়া গোয়াতে কিন্তু মহারাষ্ট্র সংস্কৃতি বেশ কিছুটা গ্রহণযোগ্য। কোঙ্কনি ভাষা এবং মারাঠি ভাষার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। একটা সময় পর্তুগিজরা এদেশ থেকে চলে যাওয়ার পরেও গোয়াতে বিপুল সংখ্যক খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী ছিল। কিন্তু ধীরে তা কমেছে। এখন জানা যায়, সেখানে ৪০ শতাংশ ক্রিশ্চান। কংগ্রেস বরাবর খ্রিস্ট ধর্মের প্রতিনিধিদেরই মুখ্যমন্ত্রী করেছে ওই রাজ্যে। এবারে কিন্তু মাহারাষ্ট্রের অন্য দুই কংগ্রেসের জোটসঙ্গী শিবসেনা ও এনসিপি জোট বেঁধে লড়তে চাইছিল। কিন্তু সেখানেই সংকট। গোয়া ছোট্ট রাজ্য। নদিয়ার মতো জেলার থেকেও ছোট। ৪০ আসন বিশিষ্ট গোয়াতে সরকার গড়তে আসন দরকার ২১ টি মাত্র। কংগ্রেস এখানে সর্বত্রই প্রার্থী দাঁড় করাতে মরিয়া। অবশ্য কয়েকটি আসন গোয়ার একটি দলকে দেবে বলেই খবর। এই ঘটনায় চটেছে শিবসেনা ও এনসিপি। তারা শেষ খবর অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে আসন ভাগ করে আলাদা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। শারদ পাওয়ারদের অনুরোধ ছিল, তৃণমূলকে সাথে নিয়ে একটি মহাজোট গড়ার। কিন্তু কংগ্রেস ৫ টির বেশি আসন ছাড়তে নারাজ। কাজেই বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত। কংগ্রেস, এনসিপি, এসএস, তৃণমূল, স্থানীয় একটি দল, আপ পার্টি। এই পাঁচ ভাগে বিভক্ত হয়ে আখেরে এরা সুবিধা করে দিল বিজেপিকেই। কঠিন লড়াই ছিল এবারে বিজেপির। কিন্তু কাজটা সোজা করে দিয়েছে তাদের চির প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস।
কংগ্রেস দলটির অবস্থা সত্যজিৎ রায়ের ছবি 'জলসাঘর'-এর মতো। জমিদারি গিয়েছে, অথচ ঠাটবাট বজায় রাখার প্রবল প্রয়াস। আসন্ন ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে গোয়া একটি নজরকাড়া রাজ্য। প্রায় ১০ বছর নানান ইকুয়েশনে বিজেপি সেখানে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। রাখতে অসুবিধাও ছিল না। কারণ, এখানে কংগ্রেসের বন্ধু পার্টিরা তাদের পথ বদলেছে, কিন্তু কংগ্রেস তার জেদে অটল। বিগত বিধানসভা ভোটে বেশি আসন পেলেও দল ভাঙিয়ে, জোট করে ফের ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি।
এবার কিন্তু কংগ্রেসের কাছে সুযোগ ছিল খুবই। মহারাষ্ট্রের লাগোয়া গোয়াতে কিন্তু মহারাষ্ট্র সংস্কৃতি বেশ কিছুটা গ্রহণযোগ্য। কোঙ্কনি ভাষা এবং মারাঠি ভাষার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। একটা সময় পর্তুগিজরা এদেশ থেকে চলে যাওয়ার পরেও গোয়াতে বিপুল সংখ্যক খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী ছিল। কিন্তু ধীরে তা কমেছে। এখন জানা যায়, সেখানে ৪০ শতাংশ ক্রিশ্চান। কংগ্রেস বরাবর খ্রিস্ট ধর্মের প্রতিনিধিদেরই মুখ্যমন্ত্রী করেছে ওই রাজ্যে। এবারে কিন্তু মাহারাষ্ট্রের অন্য দুই কংগ্রেসের জোটসঙ্গী শিবসেনা ও এনসিপি জোট বেঁধে লড়তে চাইছিল। কিন্তু সেখানেই সংকট।
গোয়া ছোট্ট রাজ্য। নদিয়ার মতো জেলার থেকেও ছোট। ৪০ আসন বিশিষ্ট গোয়াতে সরকার গড়তে আসন দরকার ২১ টি মাত্র। কংগ্রেস এখানে সর্বত্রই প্রার্থী দাঁড় করাতে মরিয়া। অবশ্য কয়েকটি আসন গোয়ার একটি দলকে দেবে বলেই খবর। এই ঘটনায় চটেছে শিবসেনা ও এনসিপি। তারা শেষ খবর অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে আসন ভাগ করে আলাদা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। শারদ পাওয়ারদের অনুরোধ ছিল, তৃণমূলকে সাথে নিয়ে একটি মহাজোট গড়ার। কিন্তু কংগ্রেস ৫ টির বেশি আসন ছাড়তে নারাজ। কাজেই বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত। কংগ্রেস, এনসিপি, এসএস, তৃণমূল, স্থানীয় একটি দল, আপ পার্টি। এই পাঁচ ভাগে বিভক্ত হয়ে আখেরে এরা সুবিধা করে দিল বিজেপিকেই। কঠিন লড়াই ছিল এবারে বিজেপির। কিন্তু কাজটা সোজা করে দিয়েছে তাদের চির প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস।
ভারতবর্ষের একমাত্র রাজ্য গোয়া, যেখানে ঠিক ভারতীয় সংস্কৃতি খুবই কম। গোয়া অধিবাসীদের ভারতীয় হতে সমস্যা একটাই ছিল যে, ওই রাজ্য একটা দেশ ছিল ১৯৬১ অবধি। প্রায় ৪৫০ বছর আগে এই রাজ্যের রাজত্ব করা সুলতান ইউসুফ আদিল শাহকে পরাজিত করে ভাস্কো দা গামার অনুচররা এই রাজ্য দখল করে। শোনা যায়, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল ওই সময় এবং বহু মানুষের প্রাণ যায়। শেষ পর্যন্ত পর্তুগালের পতাকা ওঠে গোয়াতে। ক্ষমতায় আসে পর্তুগিজরা। এই ইতিহাস অনেকটা ভারতে ব্রিটিশের আবির্ভাবের মতো।
কিন্তু ব্রিটিশরা অনেক পরে ভারত দখল করে। ভারতের মতো ওই সময় ব্রিটিশরা অনেক দেশ দখল করলেও গোয়াতে হাত দেয়নি। কারণ, ইউরোপ মহাদেশে কোনও দেশ অন্য দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতো না। ব্রিটিশরা এ দেশে আসার পর কিছু মানুষ খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করলেও সাহেবরা জোর করে ধর্ম বিভাজন করেনি। করার দরকারও হয়নি। কারণ, হিন্দু-মুসলিমের দেশে এই ধর্মের বিভাজনেই খুশি ছিল ব্রিটিশরা।
গোয়াতে কিন্তু বিষয়টি ভিন্ন ছিল। পর্তুগিজরা এত অত্যাচার করত যে, প্রচুর মানুষ সেখানে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে এবং পর্তুগিজ ভাষা শিখে প্রশাসনকে খুশি রেখেছিল। আজও গোয়াতে খ্রিস্টধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ৪০ শতাংশ।
গোয়ার নিজের ভাষা ছিল কোঙ্কনি, যা অনেকটাই মারাঠির মতো। গোয়াতে মারাঠি বংশোদ্ভূত কোঙ্কনির সংখ্যাই বেশি। পর্তুগিজদের হাত থেকে গোয়াকে উদ্ধার করা হয় ১৯৬১ তে। ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় তারা। এই রাজ্যের আয়তন উত্তর চব্বিশ পরগনার থেকেও ছোট। এদের জীবনযাত্রাও ভিন্ন, অনেকটাই ইউরোপিয়ানদের মতো। এদের রোজগারের মূল উৎস ট্যুরিজম। কিছু শিল্পাঞ্চল রয়েছে, কিন্তু কৃষির ক্ষেত্রে খুব বেশি এগিয়ে নেই গোয়া। ফলে করোনা আবহে খুব ক্ষতি হয়েছে এই রাজ্যের অর্থনীতির। এরা হইচই করতে ভালোবাসে। শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবযাত্রা নয় এদের খুব বেশি। মূল খাদ্য অবশ্যই ভাত, সঙ্গে চিংড়ি মাছের অদ্ভুত স্বাদের ঝোল, সামুদ্রিক মাছের ঝোল, শুকরের মাংস এবং মদ্যপান। এদের নিজেদের তৈরি এক ধরনের দেশি মদ আছে 'ফেনী', যা কাজুবাদাম থেকে তৈরি এবং কাজুর চাষ এখানে বেশি। এদের নিজস্ব ঢঙের নাচগান আছে যা বিভিন্ন সিনেমায় ব্যবহৃত হয়েছে এবং সংগীত যন্ত্রাংশও ভিন্ন। এখানকার আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। খুব গরম পড়ে এপ্রিল-মেতে। তখন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি এবং জুলাই থেকে অক্টোবরে বৃষ্টির কারণে তাপমান ২৭ থেকে ২৯ ডিগ্রি। সর্বনিম্ন ১৯ ডিগ্রি একমাত্র জানুয়ারিতে।
এদের জীবনযাত্রায় আর যাই থাক, রাজনীতি নিয়ে বিন্দুমাত্র উৎসাহী নয় এরা। কাজেই এই রাজ্য নতুন দল "এলাম আর দখল করলাম" করা সম্ভব নয় বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
না ফেরার দেশে পাড়ি দিল নয়ন দাস। তরতাজা এই যুবক জানত না রাজনীতির মারপ্যাঁচের অঙ্ক। জটিল এক রাজনীতির অঙ্কের সমাধান করতে না পেরে অকালে চলে যেতে হল নয়নকে। দুর্গাপুরের লাউদোহার লস্করবাঁধের এই ঘটনায় উঠছে অনেক প্রশ্ন।
সন্তানহারা মা-বাবার করুণ আর্তি, একমাত্র সন্তানের মৃত্যুর সুবিচার চান তাঁরা।
দুর্গাপুরের লাউদোহার নয়ন দাসের পরিবার এখন জীবনের এক জটিল অঙ্কে জড়িয়ে গেল।বছর ২৬ এর নয়ন দাসকে নিয়ে বাবা-মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিল। চাষবাস করে কোনও রকমে দাস পরিবারের চলছিল সংসার। কিন্তু একটা চাকরির খুব দরকার হয়ে পড়েছিল নয়নের। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে সে বিজেপিতে যোগ দেয়। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য পার্টিতে যোগ দিয়েই খুব তাড়াতাড়ি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সে। আর স্থানীয় স্তরের জনপ্রিয়তার নিরিখে দল তাকে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের ১৪৬ নম্বর বুথ সভাপতি করে। কিন্তু এটাই কি ছিল নয়নের অপরাধ?
অভিযোগ, বিজেপি করার অপরাধে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতী ভোটের আগে তাকে মারধর করে। ভোটের ফল বেরোতেই সেই রোষ আছড়ে পড়ে গোটা দাস পরিবারের উপর। ভোট পরবর্তী হিংসার বলি হয় ছেলেটি। অভিযোগ, ভোটের ফল বেরোতেই রণংদেহি দুষ্কৃতীরা একদিন লস্করবাঁধের তার বাড়িতে ঢুকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে বের করে নিয়ে যায় তাকে। একটি বিদ্যুৎ স্তম্ভের মধ্যে তাকে বেঁধে রেখে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মাথায় আঘাত পায় নয়ন। দুর্গাপুরের বেসরকারি এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। একটা সময় সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফেরেও সে। কিন্তু মাস দুয়েক আগে ফের মাথায় যন্ত্রণা শুরু হয় তার। ফের তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। কিন্তু শেষ রক্ষে আর হল না। গত শনিবার নয়নের নিথর দেহ ফিরল তার বাড়িতে। একটা তরতাজা যুবকের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল এক লহমায়।
নয়নের মৃত্যু নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা। দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন পান্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি জানান, খোঁজ নিয়ে দেখবেন বিষয়টি।
ইতিমধ্যে এই ঘটনায় রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে সরব হয়েছেন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। জেলা বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক শ্রীদীপ চক্রবর্তী সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন।
বিজেপি করায় সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত বহু বিজেপি কর্মী। সরকারি সুবিধা বলতে শুধু রেশনের চাল পান তাঁরা। এছাড়া ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে সরকারি আবাস যোজনার বাড়ি, সমস্ত কিছু থেকেই বঞ্চিত তাঁরা। অভিযোগ এমনটাই। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের ফরিদচক গ্রামের।
স্থানীয় এক মহিলা জানান, বিজেপি করায় তাঁদের এলাকায় রাস্তা করে দেয়নি। জল নিয়ে ভীষণ সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। অনেকবার ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল নেতাকে বললেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁদের অপরাধ, তাঁরা বিরোধী রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেন। তাই তাঁরা সমস্ত পরিষেবা থেকে বঞ্চিত।
যদিও সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেই জানান স্থানীয় তৃণমূল নেতা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সকলেই সব কিছু পাচ্ছেন। রেশন, ঘর-বাড়ি, ১০০ দিনের কাজ সবই। যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা সরকারের নামে মিথ্যা রটনা করছেন।
নতুন বছর শুরু হয়ে গেল। কিন্তু এই ২০২২ কেমন যাবে, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে শুরুতেই যেভাবে করোনার তৃতীয় ঢেউ এসে গেল বলে আন্দাজ করা হচ্ছে, তাতে নতুন বছরের শুরুটাই যে আতঙ্কের হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এটি করোনার তৃতীয় বছর, সংযুক্ত হয়েছে ওমিক্রন নামক এক নব্য সংক্রমণ। ইতিমধ্যে ইউরোপ, আমেরিকা বা আফ্রিকাতে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমণের ঢেউ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষও সংক্রামিত হচ্ছে সেদেশে। তবে মৃত্যুর ঘটনা কম। ভারতেও এই আতঙ্ক ফের প্রবেশ করেছে। কে যে করোনা আক্রান্ত আর কে ওমিক্রন, তা পরীক্ষা করতেই সময় কেটে যাচ্ছে। মোটের উপর ভয়ঙ্কর সময়ের উপরে শুরু ২০২২।
করোনার প্রভাবের আগে থেকেই ভারতের অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ। কোভিডকালে এই অর্থনীতি আরও তলানিতে পৌঁছেছে। শিল্প-বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। বিক্রি নেই, উৎপাদন করতে ভরসা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এই অবস্থা কতদিন চলবে, জানা যাচ্ছে না। তবে সরকার নিজে আর ভর্তুকি দিয়ে শিল্প-বাণিজ্য চালাতে চাইছে না। বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সরকারি সংস্থা।
খেলাধুলা থেকে সাংস্কৃতিক জগৎ এপ্রিল-মে থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ বাড়ার ফলে তারাও গুটিয়ে যাচ্ছে। রইল রাজনীতি। গত বছরটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল এবং তিনি সম্পূর্ণভাবে লেটার মার্কস নিয়ে উত্তীর্ণ। এ বছরটি কিন্তু বিজেপি বা খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বিশাল অ্যাসিড টেস্ট। ২০২৪ এ লোকসভা নির্বাচনের আগে এ বছর উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, যা তাঁদের জিততেই হবে। মোদী দলের এবং দেশের রাজনৈতিক মুখ। কাজেই তাঁকেই নামতে হচ্ছে প্রচারে। তবে যেভাবে করোনা বাড়ছে, তাতে আদৌ সময়মতো ভোট হবে কিনা, থাকছে প্রশ্ন। পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্র দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এবং পরীক্ষা না দিয়েই পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিদ্যালয় খুলেছে, কিন্তু এই অবস্থা চলতে থাকলে ফের বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কার্যত ২০২২ কোনও শুভবার্তা বছরের শুরুতে দিতে পারছে না।