প্রসূন গুপ্তঃ টানাপোড়েনের পরে এই মুহূর্তে শিক্ষা সংক্রান্ত মামলাগুলির (Education Scam) প্রাথমিকের একটি মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিচারপতি (Judge) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Abhijit Ganguly)। তাঁর হাত থেকে এই বিশেষ অংশটি নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওআই চন্দ্রচূড়। মামলা হয়েছিল এই প্রকার যে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর এজলাসে থাকা মামলার বিষয় মুখ খুলেছিলেন একটি বেসরকারি চ্যানেলে। সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে এবং কৌঁসুলি ছিলেন অভিষেক মনু সিংভি।
সমস্ত তথ্য জানার পর বিচারপতি চন্দ্রচূড় আদেশ দিয়েছিলেন যে, শিক্ষা সংক্রান্ত প্রাথমিক একটি মামলার শুনানি আর করতে পারবেন না বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং বাকি দায়িত্ব ন্যস্ত করবেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। সেই মোতাবেক গত ২৮ এপ্রিল রাতে কোর্ট থেকে বেরোনোর পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিচারপতি। তিনি জানান, এই মামলা ৬ মাসে হবে নাকি ৬০ বছর লাগবে তা তাঁর জানা নেই। তিনি আরও বলেন, তাঁর লড়াই জারি থাকবে ইত্যাদি।
এবারে সম্পূর্ণ বিষয়ের বাকি অংশের কী হবে বা কার এজলাসে যাবে তা তো ঠিক করবেন বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। শনিবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানালেন যে , যিনিই দায়িত্বে আসুন, তাঁরা চান দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হোক, দু তিন মাসের মধ্যে হোক। অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে যে শিক্ষা সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিস্পত্তি হোক এবং অপরাধ করলে শাস্তি বিধান হোক।
অন্যদিকে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সরে যাওয়াতে কোথাও ব্যথিত হয়েছে বিরোধী নেতারা। অবশ্য এই বিচারালয়ের বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশে থাকার বক্তব্য রেখেছেন প্রায় সব দলই। এবারে দেখা বিষয় এই সংক্রান্ত মামলার দায়িত্ব কে পান।
প্রসূন গুপ্ত: বহু বছর আগে প্রয়াত ভারত অধিনায়ক টাইগার পাতৌদি বলেছিলেন, স্পিনারকে পা বাড়িয়ে খেলতে হয়, কিন্তু পিছনের পা-টি যেন পপিং ক্রিজে থাকে। আজকের ক্রিকেটে ওই আপ্তবাক্য কেউই মানে না। অন্তত আইপিএলে, সে কারণেই সিক্সারও যেমন হয়, তেমনি আউটও হচ্ছে নিয়মিত। যদিও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিষয়টিকে ক্রিকেটের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে উদাহরণটি কিন্তু অস্বীকার করা যায় না। এজলাস বা কোর্টের প্রধানের আসনটি মোটেই খেলার স্থান নয়। অন্যদিকে বিচারপতির আদেশ শিরোধার্য করতে হবে এটাই দস্তুর। কিন্তু এখানেও নিয়ম নিশ্চিত আছে যে, মাননীয় বিচারপতি তাঁর প্রক্রিয়ায় কীভাবে এগোবেন বা কী আদেশ বা রায় দেবেন তা সর্বদা তাঁর নিজস্ব বিষয়। কে দোষী বা সন্দেহভাজন তা বিচারপতি আদেশের আগে প্রচার করেন না।
তিনি দুই পক্ষের কথা শুনে রায় বা আদেশ দেবেন এটাই চিরায়ত। শিক্ষা সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় একটি টিভি চ্যানেলে গত সেপ্টেম্বর মাসে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখানে এই শিক্ষা সংক্রান্ত মামলায় কী হচ্ছে বা তিনি কী ভাবছেন অথবা তাঁর ধরন কী, তা অনেকটাই প্রকাশ করে ফেলেছিলেন। যা আইনসিদ্ধ কিনা তাই নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক তুঙ্গে ছিল।
অভিজ্ঞ আইনজীবীরা বলেছিলেন, এসব তিনি আদেশ দেওয়ার আগে বলে ঠিক কাজ করেননি। ওই সময়ে বর্তমান সরকার বিরোধী মহলে তিনি নায়ক হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর নামে পোস্টার পড়েছিল বিভিন্ন স্থানে। এরপর তাঁকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে, এমনকি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও। মূল বিষয়ের বাইরে তিনি এজলাসে নাম করেছেন রাহুল গান্ধীর বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের, যাঁরা এই মামলায় ছিলেনও না। এই সমস্ত নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে অভিযোগ জমা পড়ে গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে। সমস্ত দিক বিচার করে প্রধান বিচারপতি শিক্ষা সংক্রান্ত মামলা থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে দিলেন। এমনটাই নাকি হওয়ার ছিল বলেই ধারণা আইজীবী মহলে। রাতারাতি নায়ক থেকে ট্রাজিক কিংয়ে চলে আসলেন তিনি। এরপর সম্মানের সঙ্গে তিনি কী করেন সেটাই দেখার।
২২ জুলাই, ২০২২ রাজ্য রাজনীতিকে তোলপাড় করে দিয়েছিল একটি ঘটনা। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের চর্চিত বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দক্ষিণ কলকাতার আবাসনে উদ্ধার হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। সময় যত গিয়েছে ইডির গুনতিতে, তত বেড়েছে টাকার অঙ্ক। নগদে থাকা সেই টাকা দেখে চক্ষু চড়ক গাছ বাংলার। সেই ঘটনার প্রায় ১০ মাস পর, এখনও জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। রাজ্য রাজনীতিতে এই জুটি 'অপা' নামে এখন বেশি পরিচিত। সেই অর্পিতার বাড়িতে উদ্ধার টাকার উৎস কী?
সোমবার সংবাদ মাধ্যম এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিল পার্থর দিকে। তাঁর জবাব, 'আপনারা খুঁজে বের করুন।' এই কয়েকটি শব্দের বাইরে সেভাবে এই প্রশ্নে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়া এদিন ফের ৮ মে পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ নিয়োগ-কাণ্ডে জেলবন্দি সাত জনের জেল হেফাজতের মেয়াদ বেড়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ফের নিজের উপর থাকা সব অভিযোগ অস্বীকার করলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। উলটে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ঘাড়ে ঘুরিয়ে দোষ চাপান তিনি। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, 'নিয়োগে মন্ত্রীর কোনও ভূমিকা নেই। মন্ত্রী নিয়োগ কর্তাও নয়। আইন অনুযায়ী প্রতি বোর্ড এক একটি সংস্থা। এতে মন্ত্রীর কোনও ভূমিকা নেই। এক বছরে কোনও অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। আর নতুন করে কী বলবো?'
এদিকে, ফের নিয়োগ-কাণ্ডে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হেফাজতের মেয়াদ বেড়েছে। আগামি ৮ মে পর্যন্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ সাত জনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি এদিন পঞ্চায়েত ভোটের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেওয়া জোড়া কর্মসূচির সাফল্য প্রার্থনা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
অপরদিকে, গত শুনানিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতের আংটি নিয়ে আদালতে আপত্তি তোলে ইডি। সেই আপত্তির পর এদিন কোনওরকম আংটি-অলঙ্কার ছাড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। যদিও আংটি প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেছেন, ওটা ধর্মাচারণের অঙ্গ। কোনও অলঙ্কার নয়।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের বিরুদ্ধে আরও কড়া হচ্ছে ইডি। ইতিমধ্যে অয়ন ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তীকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেছে ইডি। এবার এই কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে ইমন গঙ্গোপাধ্যায়। এই ইমন গঙ্গোপাধ্যায়, অয়ন শীলের ছেলে অভিষেক শীলের বান্ধবী। জানা গিয়েছে, অয়নের পুত্রের বান্ধবী ইমন উত্তরপাড়ার অমরেন্দ্র সরণির বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম বিভাস গঙ্গোপাধ্যায়।
অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকা ইমনের অ্যাকাউন্টেও গিয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান ইডির। নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা অয়ন শীল, তাঁর আত্মীয় পরিজন, এমনকী ছেলের বান্ধবী ইমন গঙ্গোপাধ্যায়ের অ্যাকাউন্টেও গিয়েছে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। তাই আদৌ সত্য কী, উদঘাটনে এবার ইমনকে তলব ইডির। চলতি সপ্তাহে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অয়ন পুত্রের বান্ধবীকে। পাশাপাশি অয়ন শীলের সংস্থার গাড়ির চালক এবং কর্মীকে তলব করা হয়েছে। প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করা হবে। অন্যদিকে অয়ন শীলের আরও একাধিক ফ্ল্যাটের হদিশ পেয়েছে ইডি। হুগলি জেলাতেই আরও আটটি ফ্ল্যাটের হদিশ মেলায় অয়নের ফ্ল্যাটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৬। বেনামে ৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে ইডি।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে তেহট্টের বিধায়ক (Tehatta MLA) তাপস সাহার সঙ্গেই সিবিআই র্যাডারে তৃণমূল মহিলা সেলের নেত্রী ইতি সরকার। এই নেত্রী নাকি তাপস সাহা ঘনিষ্ঠ। এমনটাই স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এদিকে শনিবার ইতির বাড়িতেও ঢুঁ মারে কেন্দ্রীয় সংস্থা। যদিও নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই এদিন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন ইতি দেবী। তিনি বলেন, 'আমি নিজেই ধারদেনায় ডুবে রয়েছি। আমি যে দেউলিয়া সেটা সিবিআই (CBI) আমার বাড়িতে এসে নথি ঘেঁটে বুঝে গিয়েছে। আমার বাড়িতে শুধু সরকারি একাধিক প্রকল্পের সাহায্যপ্রার্থীদের নথি মিলেছে। আমি একটা সেলফ হেল্প গ্রুপ চালাই। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে তৃণমূল কংগ্রেস করি। একুশের ভোটে তাপস সাহা দলের প্রার্থী হলে প্রচারে সাহায্য করেছিলাম। সেই সূত্রে শুধু পরিচয়।'
তিনি জানান, 'শুক্রবার তাপস সাহার বাড়িতে সিবিআই এসেছে। আমি একসময় ব্লক নেত্রী ছিলাম, এখন মহিলা সেলের জেলার জেনারেল সেক্রেটারি। যেহেতু আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তাই হয়তো সিবিআই এসেছে। একুশের প্রার্থী হওয়ার পর থেকে আমার সঙ্গে তাপস সাহার পরিচয়। আমার সঙ্গে কোনও চাকরিপ্রার্থী যোগাযোগ নেই।'
ইতি সরকার জানান, 'আমি চাকরির সুপারিশ কোনওদিন করিনি। আমি শুধুই রাজনীতি করি। তাপস কাকু ভোটের সময় শুধু প্রচারের কাজে এসেছেন আর বাড়িতে কোনওদিন আসেনি। সিবিআই এসে আমার ফোন, কিছু নথি ঘেঁটে দেখেছে। আমি চেয়েছিলাম সিবিআই এসে দেখুক আমি কী অবস্থায় আছি।'
'টাকা, খাবার যা প্রয়োজন সব দেব। কিন্তু সন্তানদের শ্রমিকের কাজ না করিয়ে স্কুলে পাঠান’— এই মূলমন্ত্র নিয়েই গ্রামে ঘুরে ঘুরে অভিভাবকদের বোঝাচ্ছেন এক সাব-ইনস্পেক্টর (SI)। পুলিসকর্মীর এই ভূমিকায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও স্বয়ং তাঁর প্রশংসা করে তাঁকে আরও উৎসাহ দিয়েছেন এই কাজের জন্য। ঠিক এমনই একটি ভিডিও (Viral Video) ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। এই ঘটনাটি ঘটেছে তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) মাদুরাইয়ের পেন্নালুরপেত্তাই এলাকায়। জানা গিয়েছে, ওই পুলিসকর্মীর নাম পরমশিবম।
তিনি তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের পেন্নালুরপেত্তাই এলাকার সাব ইন্সপেক্টর। ওই এলাকার বহু শিশু স্কুলে (Education) যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাই ওই শিশুদের স্কুলে ফেরাতে তিনি নিজেই উদ্যোগ নিয়ে যোগাযোগ করেন জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের সঙ্গে।
জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বেশিরভাগই উপজাতি সম্প্রদায়ের দরিদ্র এক একটি পরিবার। তাই টাকা উপার্জন করতে ও সংসার টানতে অধিকাংশই মা-বাবা তাঁদের সন্তানদের স্কুল যাওয়া বন্ধ করিয়ে শ্রমিকের কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। গ্রামে ঘুরে এ দৃশ্য দেখেন পরমশিবম। তারপরই তিনি গ্রাম ঘুরে ঘুরে অভিভাবকদের বোঝানোর কাজ শুরু করেন। কেন বাচ্চাদের স্কুল পাঠানো উচিত তাও অভিভাবকদের বুঝিয়ে বলেন তিনি।
অভিভাবকদের তিনি আরও বলেন, 'টাকা, খাবার, বইখাতা, স্কুলের বেতন— যা-ই দরকার হোক না কেন, নির্দ্বিধায় আমার কাছে চলে আসুন। আমি সব ব্যবস্থা করে দেব। কিন্তু দয়া করে সন্তানদের স্কুলে পাঠান।' তাই সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর জন্য অভিাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন এসআই পরমশিবম।
পাশাপাশি কড়া বার্তা দিয়ে পরমশিবম জানিয়েছেন, এরপরেও বাচ্চাদের যদি স্কুলে না পাঠানো হয়, তাহলে মা-বাবাদের অভিযুক্ত হিসাবে ধরা হবে এবং প্রয়োজনে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের (Education Scam) পর এবার পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে কোমর বাঁধছে ইডি। সূত্রের খবর, নিয়োগ-কাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজোন থেকে বাজেয়াপ্ত নথি কেন্দ্রীয় সংস্থার (ED) তুরুপের তাস হতে চলেছে। বাজেয়াপ্ত নথি ঘেঁটে ইডি দক্ষিণবঙ্গের ২২টি পুরসভায় নিয়োগে গরমিল পেয়েছে বলে খবর। তাই এই নিয়োগ-কাণ্ডে (Municipality Recruitment scam) তদন্তের অনুমতি চেয়ে দিল্লির সদর দফতরের দ্বারস্থ হচ্ছে ইডি। জানা গিয়েছে, মোট আড়াই হাজার কোটি টাকার পুর দুর্নীতি-কাণ্ডের প্রাথমিক খোঁজ মিলেছে।
এদিকে, প্রায় চার দিনের মাথায় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে সিবিআই গ্রেফতার করেছে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। সিবিআই সূত্রে খবর, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সুপারভাইজার পদে নিয়োগেও লক্ষ-লক্ষ টাকা তুলেছেন জীবন। আশাকর্মী নিয়োগের চাকরি বিক্রি করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। শুধু প্রাথমিক শিক্ষক বা এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের সঙ্গে নয়, তদন্তে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি স্থায়ী বা অস্থায়ী পদে নিয়োগের নামে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা তুলেছেন জীবনকৃষ্ণ।
নিয়োগ-কাণ্ডে (Education Case) ফের ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে অয়ন শীল (Ayan Shil)। মঙ্গলবার অয়নের আইনজীবী সওয়াল করেন, 'রিমান্ড পিটিশনের তথ্য অনুযায়ী, যে এজেন্টের কথা বলা হয়েছিল তাঁকে শনাক্ত করা গিয়েছে। ১০ জন কমপক্ষে প্রাথমিক নিয়োগে (Primary Scam) শিক্ষক হিসেবে অবৈধ নিয়োগ পেয়েছে। এখানে বেশিভাগ বক্তব্য পুরসভার চাকরি নিয়ে, যেটা আসল অভিযোগ নয়। আমার মক্কেলের কোনওদিন চাকরি দেওয়ার মতো অবস্থা ছিল না। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অয়ন শীলের কী সম্পর্ক সেটা পিটিশনে দেওয়া নেই।'
তিনি জানান, 'এটা সম্পূর্ণ আলাদা সেক্টর। কোনও নথি নষ্ট হয়নি। আমার মক্কেল ২৩ দিন হেফাজতে। অয়ন শীলকে হেফাজতে রাখার প্রয়োজনীয়তা কী সেটাই বুঝতে পারছি না। যেকোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক। যখনই তদন্তের স্বার্থে ডাকা হবে আসতে রাজি।' এই সওয়ালের প্রেক্ষিতে ইডির আইনজীবী জানান, 'একজন লোক যে কখনও স্কুলে যায়নি একটি মালবাহী গাড়ি চুরি করতে পারে। কিন্তু কারও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা থাকে, তাহলে সে পুরো রেলপথ চুরি করতে পারে। এমনটাই বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট।'
কেন্দ্রীয় সংস্থা জানিয়েছে, অভিষেক শীল অয়ন শীলের ছেলে। আর ইমন গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেক শীলের বান্ধবী। এদের শরিকি ব্যবসা আছে। সংস্থার নাম M/S Fossils। সন্দেহ নিয়োগ দুর্নীতির সব টাকা পেট্রোল পাম্পের ব্যবসায় খাটানো হয়েছে। একটা রেস্তোরাঁর ব্যবসা আছে, এটাও এঁরা ২ জন শরিক চালান। বিভাস গঙ্গোপাধ্যায়ের কন্যা ইমন। এই বিভাস গঙ্গোপাধ্যায় পুরসভার নগর উন্নয়ন বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা। এই তিনজন ইডির স্ক্যানারে আছেন। ২০১২-১৪ টেট পরীক্ষার দুর্নীতিতে কুন্তল-অয়ন-পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগ রয়েছে। জামিনের বিরোধিতা করে জেল হেফাজতে রাখার অনুরোধ করতে চাই।'
এরপরেই ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত অয়ন শীলকে জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত।
রাজ্যের সিলেবাস কমিটির (Syllabus Committee) নতুন চেয়ারম্যান হচ্ছেন উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভীক মজুমদারের স্থলাভিষিক্ত হলেন। দীর্ঘ ১২ বছরের বেশি সময়ের পর সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান পদে বদল আনা হল। এমনটাই প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। অভীক মজুমদার নিজেই তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। পুনরায় যোগ দিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপনার কাজে। সেই মোতাবেক অব্যাহতি চেয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হলে সেই আবেদন মঞ্জুর করেন ব্রাত্য বসু।
যদিও সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান পদে বদল আসলেও উপদেষ্টা পদে অভীক মজুমদারকে রেখে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সিলেবাস পরিবর্তনে মুখ্যমন্ত্রী ২০১১ সালে সিলেবাস কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির সুপারিশ মেনে ধাপে ধাপে বদলেছে প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সিলেবাস। এমনকি মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বদলও আনা হয়েছে সিলেবাস কমিটির সুপারিশে।
মণি ভট্টাচার্য: 'দিদি, বড় হয়ে তোমার মত শিক্ষক হব, সবাইকে পড়াব।' বলেই দাদা-দিদিদের জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছিল ছোট্ট ছেলেটি। বছর আটের (Minor) ছোট্ট ছেলে, দেবনাথের চোখে তখন বিরাট স্বপ্ন। চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে দেবনাথকে (Debnath Mondal) কাছে টেনে নেয়, ওর প্রিয় দিদিমণি।
পরিবারের প্রবল আর্থিক অনটনে স্কুল, স্বপ্ন, সবই ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল দেবনাথ মণ্ডল। বাম সমর্থিত ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের সাহায্যে ফের স্কুলে ভর্তি হল সে। স্কুলে ভর্তি হয়ে দেবনাথের প্রতিজ্ঞা, ভবিষ্যতেও শিক্ষক হবে এবং সবাইকে শিক্ষাদান করবে। সূত্রের খবর, রাজারহাট-নিউটাউন সমগ্র চত্বরজুড়ে এসএফআইয়ের উদ্যোগে একটি দল গঠন করা হয়েছে, যার নাম 'অ্যান্টি ড্রপ আউট স্কোয়াড' এই স্কোয়াডের মাধ্যমেই দেবু অর্থাৎ দেবনাথের খবর পায় তাঁরা। খবর পেয়েই শুরু হয় দেবুকে মুলস্রোতে ফেরানোর কাজ।
এই দাদা-দিদিরাই ওকে স্কুলে ভর্তি করালেন:
এসএফআই সূত্রে খবর, কয়েকদিন ওই স্কোয়াডের সদস্যরা দেবুকে বোঝাতে শুরু করলে জানতে পারে, লকডাউনের আগে দেবু অর্থাৎ দেবনাথ চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ত। লকডাউনের পরে পড়াশোনা ছেড়ে দিলে কেউই ওর পাশে দাঁড়ায়নি। পাড়ায় কমবেশি ওকে বুদ্ধিমান ছেলে হিসেবে চিনলেও, অধিকাংশই এখন ওকে দিয়ে দোকান-বাজার করিয়ে নেয়। নিউটাউন গৌরাঙ্গনগরের বাসিন্দা দেবনাথের বাবা, নিতাই মণ্ডল পেশায় দিন মজুর। কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে আর্থিক অনটনের মুখে ছেলের পড়াশুনা বন্ধ রাখতে হয়েছিল বলে স্বীকার করেন তিনি।
রবিবার সিএন-ডিজিটালকে তিনি বলেন, 'অনেক ছোট বেলায় মা কে হারিয়ে দমে যায়নি দেবু, পড়াশুনা করে বড় হতে চেয়েছিল। কিন্তু কোভিড এসে সব শেষ করে দিয়েছিল।' তিনি রবিবার এসএফআই সদস্যদের ধন্যবাদ দেন এবং বলেন, 'ওরা বোধ হয় আমার ছেলেটার স্বপ্ন নষ্ট হতে দিল না।'
স্কুলে দেবনাথ :
প্রথমদিনই দেবনাথ ওর স্বপ্নের কথা জানায় ওই দাদা-দিদিদের। পুনরায় স্কুলে ভর্তি করার আগে এসএফআইয়ের এক স্থানীয় কর্মী সুতপা মিস্ত্রি, বিনা পারিশ্রমিকেই ওকে পড়ানো শুরু করেন। শুরু হয় পুরোনো পড়া ঝালিয়ে নেওয়া। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নকে ফিরে পাওয়ার পর, দেবনাথের কাছের দিদিমণি হয়ে ওঠে সুতপা। রবিবার সুতপা সিএন-ডিজিটালকে জানায়, দেবনাথকে স্থানীয় যাত্রাগাছি প্রণবানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে, ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়েছে। নতুন করে পড়াশুনা শুরু করতে পেরে ওর ভালোই লাগছে।
দিদিমনি সুতপার সঙ্গে দেবনাথ:
প্রাথমিক শিক্ষায় (Primary Education) লিখিত পরীক্ষায় বসতে হবে না? জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নতুন এই খসড়ায় রাখা প্রস্তাবে ভ্রু কুঁচকেছেন শিক্ষাবিদরা। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের (Union Education Ministry) কাছে পাঠানো খসড়ায় বলা, দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষায় বসতে হবে না পড়ুয়াদের। ২০২০-র জাতীয় শিক্ষানীতি (National Education Policy) অনুসরণ করে তৈরি জাতীয় পাঠক্রম অনুযায়ী নতুন এই বদলের পথে হাঁটবে কি মোদী সরকার। ন্যাশনাল সিলেবাস কমিটির নয়া খসড়ায় বলা, নয়া পদ্ধতিতে তৃতীয় শ্রেণি থেকে লিখিত পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে ছাত্রছাত্রীদের।
ওই খসড়ায় বলা, 'পাঠ্যক্রম এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি এমন হওয়া উচিত, যাতে শিশুদের উপর বাড়তি চাপ না পড়ে।' কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০২২ সালে জাতীয় এবং রাজ্যস্তরে এ সংক্রান্ত সমীক্ষা হয়েছিল। সেই সমীক্ষার ফল পর্যালোচনা করেই এই পদক্ষেপের সুপারিশ। লিখিত পরীক্ষা উঠে গেলে বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি কী? বলা হয়েছে, শিশুর পর্যবেক্ষণ এবং শেখার অভিজ্ঞতার বিশ্লেষণের উপর জোর দেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জুলাই মাসে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। সেখানে প্রথম শ্রেণির আগে তিন বছরের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়েছিল।
প্রাথমিক শিক্ষায়(Primary Education) সিভিক ভলান্টিয়ার-কাণ্ডে বাঁকুড়া(Bankura) জেলা পুলিসের(Police) নতুন বিবৃতি। হইচইয়ের পর নবান্ন নড়েচড়ে বসতেই অবস্থান বদল অঙ্কুর প্রকল্পের। অঙ্কুর নিয়ে বাঁকুড়া জেলা পুলিসের নতুন বিবৃতিতে বলা, কিছু মানুষ এই উদ্যোগকে বিদ্যালয়ের নিয়মিত ক্লাস প্রতিস্থাপনের প্রচেষ্টা হিসাবে দেখিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিকৃত, ভুল তথ্য। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাবিজ্ঞানের যে ক্লাসগুলি নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কোচিং ক্লাসের আকারে বিদ্যালয়ের পশাপাশি ক্লাসের মতো চলবে।
বাঁকুড়া পুলিসের বিবৃতিতে আরও বলেন, বর্তমান উদ্যোগের সঙ্গে বিদ্যালয়ের ক্লাসের কোনও সম্পর্ক নেই। বিদ্যালয়ের নিয়মিত ক্লাসের পরেই এই কোচিং চলবে। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই ক্লাসগুলি কোনও বিদ্যালয়ে করা হবে না। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শের পরে শিশু-শিক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের সুবিধা অনুসারে নির্বাচিত স্থানগুলি থেকেই পরিচালিত হবে। বাঁকুড়া পুলিস জেলার সাধারণ মানুষদের জন্য নিরন্তর কাজ করে যাবে। আপনাদের গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া সাদরে গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বাঁকুড়া জেলা পুলিসের নেওয়া এই অঙ্কুর প্রকল্প ঘিরে বুধবার হইচই বাঁধে রাজ্য রাজনীতিতে। সরকারি স্কুলে পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়ার! ভলান্টিয়ারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি থাকলে সুযোগ দেওয়া হবে। সমাজের পিছিয়ে পড়া প্রাথমিক পড়ুয়াদের শিক্ষার মান উন্নতি করতে নয়া পদক্ষেপ নিয়েছিল বাঁকুড়া জেলা পুলিস। কিন্তু হইচই শুরু হতেই পদক্ষেপ করে নবান্ন।
সরকারি স্কুলে পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়ার! ভলান্টিয়ারদের(Civic Volunteer) শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি থাকলে সুযোগ দেওয়া হবে। সমাজের পিছিয়ে পড়া প্রাথমিক পড়ুয়াদের(Primary Education) শিক্ষার মান উন্নতি করতে নয়া পদক্ষেপ নিয়েছিল বাঁকুড়া(Bankura) জেলা পুলিস। কিন্তু হইচই শুরু হতেই পদক্ষেপ করে নবান্ন। সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিক স্কুলে অংক-ইংরেজির পাঠ দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে রীতিমতো ক্ষুব্ধ নবান্ন।
এই কর্মসূচি অবিলম্বে স্থগিত করার নির্দেশ দিল নবান্ন। এই ধরনের সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হয়েছিল, তা বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে 'অংকুর' নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সামাজে পিছিয়ে পড়া প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষা প্রদানের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বাঁকুড়া জেলা পুলিস।
বুধবার বাঁকুড়া পুলিস লাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই 'অংকুর' প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। বাঁকুড়ার জেলা পুলিস সুপার বৈভব তিওয়ারি জানান, 'প্রাথমিক পর্যায়ে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের পাঁচটি থানা এলাকার মধ্য দিয়েই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে এই কর্মসূচি বাঁকুড়া জেলার সবকটি থানাতেই নেওয়া হবে বলে জানান ওই আইপিএস। খবর, জেলা পুলিসের প্রায় শতাধিক সিভিক ভলান্টিয়ারকে উপযুক্ত পরিমাণ প্রশিক্ষণ দিয়েই এই কাজে করাবে বাঁকুড়া জেলা পুলিস।'
এবার পুলিসের এই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রী শেখর দানার দাবি, 'পুলিসের কাজ শিক্ষকতা করা নয়, পুলিসের কাজ আইনশৃঙ্খলাকে রক্ষা করা। এক্ষেত্রে পুলিসকে কেন দেখা যাচ্ছে? তার মানে জঙ্গলমহলে বুনিয়াদি শিক্ষার উন্নতিতে সরকার ব্যর্থ। তাছাড়া সামনেই পঞ্চায়েত ভোট তাই সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে ভোট পাওয়ার জন্যই এমন কাজ।'
এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, 'সিভিক ভলান্টিয়াররা ছোটদের স্কুলে অঙ্ক আর ইংরেজি শিখাবে। এটা একবিংশ শতাব্দীতে পশ্চিমবাংলার লজ্জা। এখানে শিক্ষক নিয়োগে যেমন দুর্নীতি, শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। আর এই অবস্থাতে প্রত্যন্ত গ্রামের বাচ্চা তাঁদের ইংরেজি শিখাবে সিভিক ভলান্টিয়ার, এর থেকে লজ্জার আর কিছু হয় না। সরকার যদি রাজ্য চালাতে না পারে তাহলে পদত্যাগ করুক।'
অপরদিকে শাসক দলের নেতা শ্যামল সাঁতরার দাবি 'পুলিস তাদের দায়িত্ব ছাড়াও অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। এমনকি পুলিস প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাগার, কোচিং ক্যাম্প ফ্রিতে করিয়ে থাকেন। সেরকমই জঙ্গলমহলের শিশুদের আরও ভালো পড়াশুনো করানোর জন্য তাঁরা উদ্যোগ নিয়েছেন। এটা সম্পুর্ণরূপে উন্নয়নমূলক কাজ। ভালো কাজ করলে যদি কেউ সমালোচনা করেন তাহলে করবেন। সমালোচনা করতে তো কোনও পয়সা লাগে না।'
মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata) বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার (Contempt of Court) মামলা দায়ের করতে চেয়ে হাইকোর্টে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Bhattacharya)। হাইকোর্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করুক, এমনটাই আবেদন বিকাশবাবুর। এই মর্মে বিচারপতি টি শিবাজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এই আইনজীবী। তাঁর আবেদন হলফনামা আকারে জমা করতে নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের। সেই মামলা গ্রহণ হবে কিনা বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেবে আদালত বলেই সূত্রের খবর। মঙ্গলবার আলিপুর জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যর কয়েকটি অংশে আপত্তি তুলে আদালতের দ্বারস্থ বিকাশরঞ্জন।
সেই মন্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে বলে অভিযোগ এই আইনজীবীর। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ-কাণ্ডে চাকরিহারাদের পাশে ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম মন্তব্য, 'যাঁদের চাকরি গিয়েছে আইনি পথে তাঁদের চাকরি ফেরানো হোক। দরকারে আবার ওদের পরীক্ষা নেওয়া হোক। আদালত যেভাবে বলবে সরকার সেভাবেই ব্যবস্থা করবে।' এখানেই আপত্তি তোলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তার প্রশ্ন, 'মুখ্যমন্ত্রীর মতো পদে থেকে কীভাবে এই ধরনের মন্তব্য বা আবেদন করা যায়?'
পাশাপাশি তাঁর বক্তব্যের শেষদিকে জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি প্রধান বিচারপতিকে সামনে পেলাম না। সুব্রত দা-কে পেলাম, আমি শুধু বললাম এটা আমার মনের ভাবনা।' এই মন্তব্যর বিরোধিতায় সরব বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এবারে হলফনামা আকারে বিকাশবাবুর আবেদন জমা পড়ার পর আদৌ এই মামলা গ্রহণ হবে কিনা, তার জন্য অপেক্ষা কয়েক ঘণ্টার।