
ডাক্তারের দেখা নেই। রোগীদের ভরসা সেই ফার্মাসিস্ট। অর্থাত্ অসুখ জানাতেই কোনও প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধ দিচ্ছেন ফর্মাসিস্টরা (Pharmacist)। ছবিটা মুর্শিদাবাদ জেলার (Murshidabad) কান্দি ব্লকের অন্তর্গত পুরন্দরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। কোথায় গেলেন ডাক্তাররা? কেনই বা ফার্মাসিস্ট ওষুধ দিচ্ছেন? প্রশ্ন করতেই বেজায় চটে যান স্বাস্থ্যকর্মীরা। সংবাদমধ্যমের ক্যামেরায় হাত দিয়ে বাধা দেওয়া হয় খবর সংগ্রহে।
ডাক্তার না থাকায় হাসপাতালে চিকিত্সা করাতে আসা রোগীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। অভিযোগ, নিজেদের খেয়াল খুশিতেই হাসপাতালে আসেন ডাক্তাররা। অগত্যা ভরসা ফার্মাসিস্ট। এমনকি কিছু কিছু রোগীরা অন্য হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যান।
তবে এই বিষয়ে একজন ফার্মাসিস্ট জানান, হাসপাতালের দুটি ডাক্তারের মধ্যে একজন ট্রেনিং-এ গিয়েছেন এবং অপরজনের শরীর অসুস্থ। স্থানীয়দের অভিযোগকে অস্বীকার করে তিনি বলেন, এখন প্রতিদিনই হাসপাতালে ডাক্তার থাকে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ দেওয়ার বিষয়টি তুলতেই তিনি জানান, ডাক্তার তো নেই তাই দিতে হচ্ছে। তবে এই বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হবে, জানান কান্দি ব্লকের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক রাজেশ সাহা।
শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়েও সরকারের গা ঢিলেমি মনোভাব। গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির দিকে নজর দিচ্ছে না সরকার। কোথাও ভগ্নদশা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তো কোথাও দেখা নেই চিকিত্সকের। এমন অভিযোগে সরব রাজ্যের বিরোধী দলগুলো।
মধ্যরাতে ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড (Fire)। আগুনের কারণে মৃত্যু (Death) অন্তত পাঁচ জনের। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন ডাক্তার। পাশাপাশি একটি পোষ্য কুকুরও পুড়ে মারা গিয়েছে বলে খবর। মর্মান্তিক এই ঘটনা শুক্রবার রাতে ধানবাদ (Dhanbad) ব্যাঙ্ক মোড় এলাকার এক বেসরকারি হাসপাতালের।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত চলেছে উদ্ধারকাজ। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। তবে ততক্ষণে কালো ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালের মালিক তথা চিকিৎসক বিকাশ হাজরা, তাঁর স্ত্রী চিকিৎসক প্রেমা হাজরা এবং পরিচারিকা তারা দেবীর। এছাড়া মারা গিয়েছেন নার্সিং হোমের মালিকের ভাগ্নে সোহান খামারি। মোট ৫ জনের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিস। আর সেই আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় এক পোষ্যেরও। আগুন লাগার ঘটনায় কয়েক জন আহতও হয়েছেন।
পুলিস সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে হঠাৎই ওই হাসপাতালের স্টোর রুমে আগুন লাগে। আর হাসপাতালটি বাড়ির একটি অংশ জুড়ে ছিল। ফলে গোটা বাড়িতেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে যায় ঝাড়খণ্ড পুলিস এবং দমকলবাহিনী। তবে আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে তদন্ত করছে পুলিস।
উন্নয়ন হয়েছে নাম মাত্র। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে শুধুই হয়েছে উদ্বোধন, তারপর সবই বন্ধ। এমনই অভিযোগ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বাগদা (Bagda) বিধানসভায় লক্ষাধিক মানুষের। বাগদা-সহ এর আশেপাশের একাধিক এলাকার মানুষ জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবার (Emergency health services) প্রয়োজনে দিনরাত বাগদা গ্রামীণ হাসপাতালে (hospital) ছুটে আসেন৷ স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল, প্রসূতি মহিলাদের (pregnant woman) জন্য সিজার ওয়ার্ড চালু করার। এরপরই বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করেন৷ বৈঠকের পর চালু হয় এই পরিষেবা৷ কিন্তু কয়েক মাস পরই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ক্ষুব্ধ বিরোধী দল সহ সাধারণ মানুষ৷
বাগদা ব্লক হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনজন চিকিৎসক নিয়ে এই বিভাগটি চালু হয়েছিল৷ তবে বর্তমানে একজন চিকিৎসক উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে যাওয়ায় প্রসূতিদের জন্য সিজারের ওয়ার্ডটি প্রায় বন্ধের মুখে৷ তবে দ্রুত চিকিৎসক এনে পরিষেবা আগের মতোন সচল করার পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের৷ বিশ্বজিৎ বাবু আশ্বাস দেন, দ্রুত স্বাভাবিক হবে এই পরিষেবা৷
প্রসঙ্গত, গত ১৭ই নভেম্বর ২০২১ মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাগদা হাসপাতালে সিজার ওয়ার্ডের আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনে সাড়াও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটা করে গত ১০ই ফেব্রুয়ারী ২০২২ উদ্বোধন করেছিলেন বাগদার বিধায়ক। কিন্তু কয়েক মাস পরের থেকেই বন্ধ হয়ে পরে আছে সিজার ওয়ার্ডটি।
ফল কাটার ছুরি নিয়ে দুই চিকিৎসকের উপর হামলা এক রোগীর (Patients attack Doctor)। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) যবৎমল জেলার শ্রী বসন্তরাও নায়েক সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা। ঘটনায় জখম হয়েছেন দুই চিকিৎসক। এই হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন চিকিৎসকেরা।
জানা গিয়েছে,বৃহস্পতিবার রাতে রাউন্ডে বেরিয়েছিলেন এক রেসিডেন্ট চিকিৎসক। হঠাৎই তাঁর উপর ছুরি নিয়ে চড়াও হয়েছিলেন ওই রোগী। সহ-চিকিৎসকে উদ্ধার করতে তড়িঘড়ি ছুটে আসে অন্য এক চিকিৎসক। তখনই রোগীর হাতে জখম হয় ওই চিকিৎসকও।
যবৎমলের পুলিশ সুপার পবন বানসোড় বলেন,"অভিযুক্ত রোগীর নাম সুরজ ঠাকুর। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। গত ‘দু’দিন আগে নিজেকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছিলেন সুরজ। তার পর ওই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত রোগীকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’’
৪ ডোজ অ্যানেস্থেশিয়া প্রয়োগ করে আত্মহত্যা (Suicide) করেন ২৪ বছর বয়সী এক মহিলা ডাক্তার। ঘটনাটি ঘটেছে ভোপালের (Bhopal) সরকারি গান্ধি মেডিকেল কলেজের (জিএমসি) হস্টেলে। পুলিস জানিয়েছে, অ্যানেস্থেশিয়া ড্রাগ দিয়ে ইনজেকশন দেন নিজেকে। এর ফলে ওই মহিলা ডাক্তারের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, ওই মৃত মহিলা ডাক্তারের নাম আকাঙ্খা মাহেশ্বরী (Akansha Maheshwari)। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় মৃতদেহ। পুলিস তাঁর ঘর থেকে খালি ইনজেকশনের শিশি এবং একটি সিরিঞ্জশুদ্ধার করেছে। কোহ-ই-ফিজা থানার ইনচার্জ বিজয় সিসোদিয়া বলেছেন, 'মহিলা নিজেকে ২.৫ মিলি অ্যানেস্থেশিয়ার চারটি ডোজ দিয়েছিলেন।'
একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে ঘর থেকে। সেখানে লেখা ছিল, তিনি মানসিকভাবে শক্তিশালী নয় এবং উত্তেজনা সহ্য করতে অক্ষম। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন ব্যক্তিগত কারণে তিনি জীবনের এই কঠিনতম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর জন্য কেউ দায়ী নয়। এমনকি বাবা-মার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনাও চেয়েছেন।
হস্টেলের অন্যরা জানান, বুধবার সকাল থেকে তাঁর ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। যখন তাঁরা সন্ধ্যায় ফিরে আসে, তখনও দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী এবং মেডিকেল ম্যানেজমেন্টকে জানায় বিষয়টি। খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। ওই মহিলাকে ঘরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
জানা গিয়েছে, তিনি গোয়ালিয়রের বাসিন্দা ছিলেন এবং প্রায় এক মাস আগে জিএমসিতে যোগদান করেছিলেন। বুধবার সকাল ৭টার দিকে তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। পুলিস একটি মামলা দায়ের করেছে এবং ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে মহিলা চিকিৎসকের (Woman Doctor) মৃতদেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য। ঘটনাটি রবিবার ওড়িশার (Odisha Incident) কেওনঝড় জোডা এলাকার এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসক মহিলাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত (Woman Death) বলে ঘোষণা করেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলা চিকিৎসকের নাম শুভশ্রী কর। স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই দোতলায় থাকতেন তিনি। আর নীচের তলায় রোগী দেখতেন শুভশ্রী। নববর্ষের দিন রোগী আসলেও তিনি নীচে নামেননি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তখনই তাঁদের মধ্যে সন্দেহ জাগে। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারেননি। এরপরই তাঁরা পুলিসের দ্বারস্থ হন।
খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিস। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখে ওই চিকিৎসক যে ঘরে থাকতেন, সেই ঘরের দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এর পরই দরজা ভাঙা হয়।
ঘরের মধ্যে বিছানায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায় চিকিৎসককে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, কীভাবে মৃত্যু হল তা খতিয়ে দেখছে। তবে প্রাথমিক অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন ওই মহিলা। যদিও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। মৃতার পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
সৌমেন সুর: আমি চিকিৎসা বিজ্ঞান পর্বে মোট চারজন খ্যাতিমান যশস্বী চিকিৎসককে বেছে আপনাদের কাছে তুলে ধরছি। এক একটি পর্বে এক একজন চিকিৎসকের প্রসঙ্গ থাকবে। আজ ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়ের কাহিনী। বিধান রায় জন্মগ্রহণ করেন বিহারের পাটনায়। আদি বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার টাকির শ্রীপুরে। মাত্র ৫ বছর বয়সে মায়ের মৃত্যুর পর বাবার তত্ত্বাবধানে মহত্তর মানবসেবার আদর্শেই জীবনের আদর্শ প্রস্তুত হয়। ১৯০৬ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে বিধান রায় সসম্মানে এল.এম.এস ও এম.বি পাশ করেন। ১৯০৮ সালে তিনি এমডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯০৯ সালে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে বিলেত গিয়ে দু'বছরের মধ্যে MRCP (London) এবং FRCS পাশ করে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর ১৯১১ সালে জাতীয়তাবাদী আদর্শে অনুপ্রেরণায় রাধাগোবিন্দ কর প্রতিষ্ঠিত ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। তখন এই প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে ক্যাম্বেল মেডিক্যাল স্কুল রাখা হয়েছিল।
১৯১৮ সালে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিনের অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯২৩ সালে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এবং দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের নির্দেশে স্বরাজ পার্টির পক্ষে প্রার্থী হয়ে রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেন। এবং বিধান রায় বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন থেকেই শিক্ষাকে ঔপনিবেশিক শাসনমুক্ত করার জন্য তাঁর সংগ্রাম শুরু হয়। মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের অকুতোভয় যোদ্ধা হিসেবে কারারুদ্ধ হওয়ার পর, তাঁর জাতীয়তাবাদী চেতনা আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের পর জাতীয় শিক্ষা পরিষদের সভাপতি হয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশ করিয়ে এক বিপ্লব আনেন তিনি। কলকাতা পুরসভার মেয়র, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গুরুত্বপূর্ণ পদের অভিজ্ঞতায় তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। জীবনে বহু কল্যাণমূলক কাজে দুর্নিবার ছিলেন তিনি। ডিভিসির সদর দফতর বাংলায় স্থাপনে তাঁর কৃতিত্ব উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং দুর্গাপুরকে শিল্পনগরী আর কল্যানীকে কলকাতার উপনগরী করার কৃতিত্ব বিধান রায়ের।
কিংবদন্তী চিকিৎসক, শিক্ষক এবং দেশসেবক হিসেবে তিনি ভারতরত্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৬২ সালের পয়লা জুলাই তাঁর প্রয়ান দিবস। একই দিনে জন্ম এবং মৃত্যুদিন বিধানচন্দ্র রায়ের। যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পয়লা জুলাই 'চিকিৎসক দিবস' পালন করা হয়। মানুষ বিধান রায় এবং মুখ্যমন্ত্রী বিধান রায় পাশাপাশি প্রশাসক বিধান রায়, সবেতেই তিনি ছিলেন সমুজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। (শেষ)
সৌমেন সুর: হিন্দু কলেজের শিক্ষা সমাপ্ত করার পর, ১৮৬১ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে মহেন্দ্রলাল সরকার আই.এম.এস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৮৬৩ সালে এই প্রতিষ্ঠান থেকেই ডক্টর অফ মেডিসিন ডিগ্রির অধিকারী হন। ভারতে সুশৃঙ্খল প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞান চর্চার মূল্যায়ন প্রসঙ্গে শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর 'রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ' গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন, "বঙ্গদেশকে যত লোক উঁচু করে তুলেছেন এবং শিক্ষিত বাঙালিদের মনে মনুষ্যত্বের আকাঙ্ক্ষা দীপ্ত করেছেন, তাঁদের মধ্যে ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকার ছিলেন অন্যতম। এরকম বিমল সত্যানুরাগী, সাহসী ও দৃঢ়চেতা অতি অল্প বাঙালিই দেখাতে পেরেছেন। এইরকম জ্ঞানানুরাগ মানুষ বঙ্গদেশে দুর্লভ।"
যাই হোক, এম.ডি ডিগ্রি পাওয়ার পর ডাক্তার সরকার প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করেন। তাঁর অসামান্য রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ের খ্যাতি সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যসাগর তাঁর অত্যন্ত গুণগ্রাহী ছিলেন। ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের ক্যানসার রোগের চিকিৎসার জন্য, তাঁর ভক্তরা ডাঃ সরকারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। জীবনের প্রাথমিক পর্বে হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে তাঁর অনাস্থার প্রধান কারণ ছিল- ওই পদ্ধতিতে অ্যানাটমি ও ফিজিওলজির তেমন গুরুত্ব না থাকা। পরবর্তীতে বিদ্যাসাগরের প্রেরণায় নিজের চিকিৎসার ধারা পাল্টে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে নিজেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা হোমিওপ্যাথি বিশেসজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার।
ডাক্তার সরকারের শ্রেষ্ঠ কীর্তি হল 'ইন্ডিয়ান এ্যাসোসিয়েশন ফোর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স' প্রতিষ্ঠা করা। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় সমকালের সেরা ছাত্রদের মধ্যে বিজ্ঞানচর্চায় যাতে মগ্ন থাকে তারই জন্য এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা। ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকারের মৃত্যুর পর এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তাঁরই ভাইপো অমৃতলাল সরকার। তাঁর সময়েও এই প্রতিষ্ঠানের প্রভূত উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। প্রতিষ্ঠানটি যাদবপুরে অবস্থিত। ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার সেই সময়ের রোগ নিরাময়ে ছিলেন ধন্বন্তরী, তাইতো আজও তাঁকে ভুলতে পারিনি আমরা।
সৌমেন সুর: আমি চিকিৎসা বিজ্ঞান পর্বে মোট চারজন খ্যাতিমান যশস্বী চিকিৎসককে বেছে আপনাদের কাছে তুলে ধরছি। এক একটি পর্বে এক একজন চিকিৎসকের প্রসঙ্গ থাকবে। আজ ডাক্তার নীলরতন সরকার নিয়ে আলোচনা। নীলরতন সরকার জয়নগর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ক্যামবেল মেডিক্যাল স্কুল থেকে ডাক্তারির প্রাথমিক পরীক্ষায় পাশ করেন। এরপর সাব অ্যাসিস্টেন্ট সার্জেন্টের চাকরি পাওয়ার পরেও জ্ঞানপিপাসু নীলরতন মেট্রোপলিটন স্কুল থেকে এফ.এ এবং বি.এ পাশ করেন। কিছুদিন চাতরা হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষকের চাকরি করার পর, মেডিক্যাল কলেজে ফিরে এসে এখানে এম.এ ও এম.ডি পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হন।
এই সময় থেকে প্রাইভেট প্র্যাকটিসে তাঁর সাফল্যের সূত্রপাত। ১৮৯৩ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেলো নির্বাচিত হন। এছাড়া ১৯১৭ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত উপাচার্য ছিলেন। চিকিৎসক হিসেবে নীলরতন সরকারের নাম-যশ-খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর এই খ্যাতির কারণে দেশীয় শিল্পোদ্যোগী হিসেবে তাঁর অগ্রণী ভূমিকা কম আলোচিত। এদেশে তিনি প্রথম বিজ্ঞানসম্মত দূষণমুক্ত ট্যানারি, সার ও সাবান কারখানা স্থাপন করেন। জাতীয় শিক্ষা পরিষদের সভাপতি হিসেবে আসীন হওয়ার পর বহু যুবককে শিল্পে নিযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করেন।
একমাত্র নীলরতন সরকারের প্রচেষ্টায় বেঙ্গল টেকনিক্যাল স্কুল ও যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা; 'সিরোসিস অফ লিভার ইন চিলড্রেন।' তাঁর ছাত্রদের মধ্যে ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় ছিলেন সবচেয়ে বেশি যশস্বী। অন্যদিকে ব্রাহ্ম সমাজের সক্রিয় সদস্য হিসেবে অনেক সামাজিক আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন এই চিকিৎসক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যক্তিগত চিকিৎসক বেশ আস্থাভাজন ছিলেন ডাক্তার এনআরএস। মধ্য কলকাতার শিয়ালদহে এনআরএস সরকারি হাসপাতাল তাঁর নামাঙ্কিত এবং নীলরতন সরকারের দান। এই হাসপাতালের সূত্রে এবং নামী চিকিৎসক হিসেবে নীলরতন সরকারের নাম মানুষের কাছে চির অক্ষয় হয়ে থাকবে।
(চলবে)
হাইকোর্টের নির্দেশে চলা রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের (State Medical Council Vote) ভোটেও উত্তেজনা এড়ানো গেল না। নির্বাচনে তুমুল অশান্তি ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে। আর এই ঘটনায় কাঠগড়ায় শাসক দলপন্থী চিকিৎসক সংগঠন (Doctors Forum)। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে বিধান নগর (Bidhannagar) দক্ষিণ থানার বিশাল পুলিস বাহিনী। জানা গিয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিল বোর্ড গঠনের শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮-তে। সেই সময় নির্বাচনে অশান্তির ওই নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হয়।
এরপর চলতি বছর হাইকোর্টের নির্দেশে বুধবার সেই নির্বাচন পুনরায় হয়। কোর্টের তরফে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকের উপস্থিতি এবং ভোট গ্রহণস্থলে সিসিটিভি লাগানো নিশ্চিত করা হয়েছিল। এই ভোটের নিয়ম, প্রত্যেক ভোটদাতার বাড়িতে পোষ্টের মাধ্যমে ব্যালট পেপার পৌঁছবে। এদিন ভোট গ্রহণের সময় দেখা যায় বেশ কয়েকজন বান্ডিল বান্ডিল ব্যালট ব্যাগ থেকে বের করে ড্রপবক্সে ফেলছে। যদিও নিয়ম এক ব্যক্তি একটি ব্যালট খামবন্দি অবস্থায় ড্রপ বক্সে ফেলবে বা পোস্টের মাধ্যমে পাঠাতে পারবেন।
কিন্তু একসঙ্গে অনেকগুলো ব্যালট, একাধিক ব্যক্তি ড্রপ বক্সে ফেলতে থাকায় অপরপক্ষ রুখে দাঁড়ায়। মূলত ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে বহু সংখ্যক ব্যালট ড্রপ করার অভিযোগ ওঠে। তাঁরা ভোটে কারচুপি এবং রিগিংয়ের অভিযোগ তোলে। রিটার্নিং অফিসার অভিযোগ পেয়ে বাধা দিতে এলে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। গালিগালাজ শুরু করে দেন বলে অভিযোগ।
এতে উত্তেজনা বাড়ায় বিধান নগর দক্ষিণ থানায় খবর যায়। ঘটনাস্থলে বিধান নগর দক্ষিণ থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন। ভোট প্রক্রিয়া কিছুক্ষণ বন্ধ থাকলেও আবার শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। তবে কোর্ট নির্দেশে অবমাননা করার অভিযোগ তুলে পুজোর পরে আদালতে দরবার করতে পারে একপক্ষ। আগামী ১৮ তারিখ অবধি এই ভোটগ্রহণ চলবে। এই বিষয়ে এদিন রিটার্নিং অফিসারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি টু শব্দ করেননি। উলটে অটো নিয়ে তাঁকে বেড়িয়ে যেতে দেখা যায়।
এই গণ্ডগোল প্রসঙ্গে এক প্রার্থী তথা চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত জানান, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন সিসিটিভির সামনে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক রাখতে হবে। আমরা গণ্ডগোলের আশঙ্কা করছিলাম। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং কীভাবে এতগুলো ব্যালট পেল? তদন্তের দাবি করেন ওই চিকিৎসক। যদিও বিরোধী শিবিরের দিকে পাল্টা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে শাসক দলপন্থী চিকিৎসক সংগঠন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ছটি চিকিৎসক সংগঠন বনাম শাসক দল পন্থী চিকিৎসক সংগঠনের এই ভোটযুদ্ধ।
খাস কলকাতায় (Kolkata) এমনও ঘটনা ঘটতে পারে যা শুনলেই শিউরে উঠছেন সকলেই। মঙ্গলবার সল্টলেকে (salt lake) একটি বন্ধ ঘর থেকে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের পচা গলা দেহ (body) উদ্ধার হয়। ঘটনার পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিস (police)। পুলিস সূত্রে খবর, মৃত চিকিৎসকের নাম প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়।
জানা যায়, পুজোর সময় বিবি ব্লকের ২১০ নম্বর বাড়িতে আসেন ওই চিকিৎসক। দীর্ঘদিন ধরে ওই বাড়িতে ভাড়ায় ছিলেন তিনি। বাড়ির কেয়ারটেকারের দাবি, দশমীর পর থেকে ওই ঘর থেকে চিকিৎসককে বেরোতে দেখা যায়নি। তবে ২ দিন আগে থেকে পচা গন্ধ পেয়ে বাড়ির মালিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন কেয়ারটেকার। এরপর বাড়ির মালিক সোমবার মৃত চিকিৎসকের পরিবারকে খবর দেয়। এরপর মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পাশাপাশি মৃতের স্ত্রীও পৌঁছন ওই ঘরে।
কেয়ারটেকারের আরও দাবি, দরজা খোলার পর চিকিৎসকের পচা গলা দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ইতিমধ্যেই মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এদিকে, বিধাননগর উত্তর থানার পুলিসের পক্ষ থেকে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিস।
এবার এক কর্তব্যরত নার্সকে (nurse) হেনস্থা করার অভিযোগে উত্তাল নদিয়া (Nadia)। জানা যায়, কল্যাণী কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের (hospital) প্রসূতি বিভাগে লেবার রুমে কর্তব্যরত ছিলেন ওই নার্স। অভিযোগ উঠেছে ওই হাসপাতালেরই এক জুনিয়র চিকিৎসকের (doctor) বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ঘটনার পর বিক্ষোভে সরব জুনিয়ার চিকিৎসকেরাও। অন্যদিকে এই অভিযোগের প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকরাও একত্রিত হন কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের মূল ভবনের সামনে। অভিযুক্ত সলমন হালদারও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিযোগকারী নার্সের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, মঙ্গলবার এই অভিযোগে হাসপাতালে সকল নার্সরা একত্রিত হয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। যদিও অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাতদিনের সময় চেয়েছিল। তবে সমস্ত নার্সরা একত্রিত হয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, এই অভিযোগের সঠিক বিচার না হলে তাঁরা ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এফআইআর করবেন। একই সঙ্গে কর্মবিরতিতেও যাবেন। যদিও অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত চিকিৎসক সলমন হালদার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। পাশাপাশি এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমকে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেফতারির পরই একাধিক জায়গায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতারিতরা প্রতারকদের বাড়ি গিয়েও চড়াও হয়েছে, কিন্তু ফল কিছুই হয়নি। যে টাকা গিয়েছে তা আর ফেরত পাওয়া যায়নি। তবে অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়েছেন বেশ কিছু জায়গায়, আবার অনেকেই পলাতক। সেই তালিকায় এবার নাম জুড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুর (Sonarpur) থানা এলাকা। বুধবার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার (arrest) করা হয় একই সঙ্গে বাবা ও ছেলেকে।
পুলিস (police) সূত্রে খবর, সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় ১৫৬ জনের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার মতো এই দুই অভিযুক্ত নিয়েছিল, এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নামে পুলিস। এরপর মঙ্লবারই এই ঘটনায় আটক করা হয়েছিল পেশায় চিকিৎসক উত্তম মুখোপাধ্যায় ও তার ছেলে অর্ণব মুখোপাধ্যায়কে। সেদিন তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ২২ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। পাশাপাশি অশোকস্তম্ভ দেওয়া প্রচুর সরকারি নথি উদ্ধার হয়েছে। এরমধ্যে চাকরির নিয়োগপত্রও রয়েছে। যদিও সেগুলি নকল নাকি আসল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। তবে ধৃতরা তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে।
তবে ধৃত অভিযুক্তদের সঙ্গে আর কারও যোগাযোগ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
ছুটি না নিয়ে একটানা কাজ করার ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর একাধিক জওয়ান (Army) কখনও গুলি করে আত্মঘাতী (Suicide) হয়েছে। আবার কখনও সার্ভিস রিভলভার দিয়ে গুলি চালিয়েছে ব্যারাকে থাকা সহকর্মীদের উদ্দেশ্যে। তাদের নিয়ম মেনে ছুটি (holiday) দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এবার সতর্ক হল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (National Medical Commission)।
দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্নাতকোত্তরের চিকিৎসকদের মানসিক স্বাস্থ্যের দুরবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। সাপ্তাহিক কোন ছুটি না নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা হাসপাতালে কাজ করার ফলে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে্ন পোস্ট গ্রাজুয়েটের মেডিক্যাল ছাত্ররা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য। এর ফলে কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন। আবার কেউ নানান ধরনের সমস্যায় ভুগছেন। যা ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারে রোগী চিকিৎসা ব্যাবস্থায়।
সে কারণে গত ২৮ শে জুন এই সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। এই বৈঠকের পর সমস্ত দেশের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্নানকোত্তরের চিকিৎসক পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে। আর যাঁরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন তাঁদের কাউন্সেলিং করা থেকে শুরু করে, যোগাভ্যাস এবং ছুটি দিতে হবে প্রয়োজন মত।
পাশাপাশি, এই সংক্রান্ত সমস্যা দেখভালের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। স্নানকোত্তরের মেডিক্যালের পড়ুয়ারা তাঁদের সমস্যা ইমেইল মারফত কিংবা কমপ্লেইন বক্সে লিখিতভাবেও জানাতে পারবেন বলে জানায়।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) গ্রেফতার (Arrest) হওয়ার পরই অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে (Indefinite Leave) গেলেন বোলপুর মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সেই চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী (Dr Chandranath Adhikary)।
গত মঙ্গলবার তিনি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়েছিলেন চিকিৎসা করার জন্য। তবে চিকিৎসা শেষে তিনি বেশ কিছু বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি নাকি সুপারের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই চিকিৎসা করতে গিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি মন্তব্য করেন, তাঁকে ১৪ দিনের জন্য সাদা কাগজে ছুটি লিখে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। এসবের পরেই যখন বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হলেন, তারপর তিনি নিজের জীবনের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত। তাছাড়া তিনি মানসিকভাবেও বিধ্বস্ত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ছুটি নিয়েছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে তিনি ফোনে আমাদের প্রতিনিধিকে বিশদে আর কী কী বললেন, আসুন শুনে নেওয়া যাক।