জানুয়ারিতেই মুক্তি পেতে চলেছে কিং খান অভিনীত ছবি পাঠান (Pathaan)। বহু প্রতীক্ষিত এই ছবির প্রচার নিয়ে জল্পনা বেশ তুঙ্গে। শাহরুখ খান (Shah Rukh Khan) নিজে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) পোস্ট করে তাঁর আপকামিং সিনেমার খুটিনাটি সকলের সামনে তুলে ধরছেন। এককথায় বলিউড বাদশা বেজায় সক্রিয় হয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সোমবার সকালে মুক্তি পায় 'পাঠান' ছবির প্রথম গান। সেকারণে গান মুক্তির আগে ভগবানের আশীর্বাদ নিতে বৈষ্ণোদেবীতে (Vaishno Devi Temple) পৌঁছলেন অভিনেতা। কিছুদিন আগে তাঁকে মক্কায় দেখা গিয়েছিল।
একটি ভিডিও নেটপাড়ায় খুব ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, কালো রঙের হুডি জ্যাকেটে মুখ ঢেকে বৈষ্ণোদেবী দর্শনে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। আর তাঁর চারপাশে রয়েছে বডিগার্ড। শাহরুখ ভক্তরা মুহূর্তের মধ্যে চিনে ফেলেন ওটা কে? যদিও আগাম কোনও বার্তা দেয়নি বাদশাহ। কেউ যাতে চিনতে না পারে তাই নিজেকে একপ্রকার লুকিয়ে সিকিউরিটি গার্ডের সঙ্গে বৈষ্ণোদেবীতে পৌঁছে যান শাহরুখ খান।
Shah visited Vaishno Devi Temple ❤️
— 👸Sharania Jhanvi𓀠🌹BesharamRang (@SharaniaJ) December 12, 2022
May Devi Maa fulfill all his wishes 🙏🏻 #ShahRukhKhan𓀠 pic.twitter.com/1XrL82XaCW
উল্লেখ্য, সেই ভিডিও এখন যথারীতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। পাশাপাশি নজরে রয়েছে পাঠান ছবির প্রথম গান। সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ড করছেন কিং খান। তার সঙ্গে এই বৈষ্ণোদেবী দর্শনের ভিডিয়ো সামনে আসতে এক প্রকার ভক্তদের মন্তব্য, তবে কি বড় ইনিংসের আগেই আশীর্বাদ নিয়ে আসলেন শাহরুখ? চার বছর পর পর্দায় ফেরা, তাই উত্তেজনা উদ্বেগ দুই বর্তমান হওয়া খুব স্বাভাবিক বিষয়। ২৫ জানুয়ারি বড় পর্দায় আসছে শাহরুখ খানের ছবি পাঠান।
জঙ্গির দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য হরিদেবপুরে (Haridevpur)। বাংলাদেশের কুখ্যাত জঙ্গি (terrorist) তমাল রায় চৌধুরী ওরফে ম্যাক্সন নামক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয় বৃহস্পতিবার। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই ডানলপ (Dunlop) এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি (CID)। এরপর ৮ এপ্রিল সে ছাড়া পায়। পরবর্তীকালে জীবনের মূল স্রোতে ফেরার চেষ্টাও করেছিল সে। অর্পিতা হাজরা নামে এক মহিলাকে বিয়েও করে। হরিদেবপুর থানা অন্তর্গত মতিলাল গুপ্ত রোডে ভাড়া নিয়ে থাকাও শুরু করে তারা। এরপর বৃহস্পতিবার তার দেহ উদ্ধার (deadbody) ঘিরে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। খুন নাকি আত্মহত্যা? খুন হলে কী কারণে তাকে খুন হতে হল? তার মৃত্যুর নেপথ্যে আদতে কার বা কাদের হাত রয়েছে? সব মিলিয়েই শুরু হয়েছে ধোয়াশা।
পুলিস সূত্রে খবর, এর আগে সিআইডি তাকে গ্রেফতার (arrest) করেছিল বাংলাদেশের একটি জঙ্গি দলের সঙ্গে সে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল সে কারণে। তবে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সে জীবনের মূল স্রোতে ফেরার চেষ্টা করেছিল। স্থানীয়দের বক্তব্য, এই ফ্ল্যাটে অনেকেরই যাতাযাত ছিল। এই ম্যাক্সন নামক ব্যক্তি তার পার্টনারকে নিয়েই থাকত। তবে দুজনেই বিবাহিত ছিল। সেই নিয়ে মাঝে মধ্যেই গণ্ডগোল হতো। ম্যাক্সনের পার্টনারের গায়ে মারের দাগ দেখা যেত। তবে প্রতিবেশীদের সঙ্গে যথেষ্ট ভালো ব্যবহার ছিল তার। কিন্তু হাতে কোনও কাজ ছিল না ম্যাক্সনের।
বৃহস্পতিবার তার পার্টনার বাজার যান, বাড়ি ফিরে এসে দেখেন ম্যাক্সনের ঝুলন্ত দেহ। তড়িঘড়ি বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুরো ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিস। তার পার্টনারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সমস্ত বিষয়।
সৌমেন সুর: কবির মনে ইচ্ছা জাগে প্রাচীন ভারতের তপোবনের আদলে শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করার। এই ইচ্ছা প্রকাশ করেন জগদীশ চন্দ্র বসুকে চিঠি লিখে। তিনি লেখেন, 'শান্তিনিকেতনে আমি একটি বিদ্যালয় খুলিবার জন্য বিশেষ চেষ্টা করিতেছি। সেখানে ঠিক প্রাচীনকালে গুরুগৃহ বাসের মতো থাকবে নিয়ম। বিলাসিতার নাম গন্ধ থাকিবে না। ধনী-দরিদ্র সকলকেই কঠিন ব্রহ্মচর্যে দীক্ষিত হইতে হইবে। উপযুক্ত শিক্ষক কিছুতেই খুঁজিয়া পাইতেছি না। এতদিনকার ইংরেজি বিদ্যায় আমাদের কাহাকেও তেমন কর্মযোগী করিতে পারিল না কেন? আমাদের এখানে সেরকম ত্যাগী অথচ কর্মী নেই কেন? ছেলেবেলা হইতে ব্রহ্মচর্য না শিখিলে আমরা প্রকৃত হিন্দু হইতে পারিবো না। অসংযত প্রবৃত্তি ও বিলাসিতায় আমাদিগকে ভ্রষ্ট করিতেছে। দারিদ্রকে সহজে গ্রহণ করিতে পারিতেছি না বলিয়াই সকল প্রকার দৈন্যে আমাদিগকে পরাভূত করিতেছে।'
১৯০১ সালের ২২ ডিসেম্বর স্থাপিত হয় শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মাচর্যাশ্রম বিদ্যালয়। শিলাইদহের পাট চুকিয়ে রবীন্দ্রনাথ পরিবার নিয়ে চলে আসেন শান্তিনিকেতনে। রবীন্দ্র-জায়া মৃণালিনী দেবী হলেন শান্তিনিকেতনের আশ্রম জননী। স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করেন তিনি। শান্তিনিকেতনে বিদ্যালয় চালাতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ হয়ে গেলেন ঋণগ্রস্ত। পৈতৃক ব্যবসার অংশীদার হয়ে সেই ব্যবসার ক্ষতির পুরো দায়ভার তাঁর উপর বর্তায়। স্ত্রী মৃণালিনী দেবী স্বামীকে ঋণমুক্ত করার জন্য তাঁর সমস্ত গয়না কবির হাতে তুলে দেন। এদিকে রবীন্দ্রনাথের অর্থ নেই। ঋণ থেকে বাঁচার জন্য পুরীর বাড়ি বিক্রি করে দিয়েও রেহাই পেলেন না।
একে একে তিনি সব বিক্রি করতে লাগলেন। তবু ব্রহ্মচর্যাশ্রম বিদ্যালয়কে যেমন করে হোক বাঁচাতেই হবে। কবি নিজের লাইব্রেরি সব বই বিক্রি করে দিলেন। এমনকি, বিয়েতে যৌতুক পাওয়া সোনার ঘড়িটা পর্যন্ত বিক্রি করে দিলেন শরৎকুমারী চৌধুরানীকে ওরফে লাহোরীনিকে। বন্ধুপত্নীকে লাহোরীনি নামটা রবীন্দ্রনাথই দিয়েছিলেন। এভাবে কবি অনেক কিছুই বিক্রি করে দিলেন বটে। কিন্তু স্বপ্নের বিদ্যালয় অবশেষে বহু কষ্ট ও পরিশ্রমের মূল্য দিয়ে তৈরি হয়েছিল। বিদ্যালয়ে প্রথমে ৫ জন ছাত্র, তারপর তো ইতিহাস।
এক মহিলাকে কুপ্রস্তাব (Indecent to Woman) দেওয়ার অভিযোগে সাসপেন্ড হরিদেবপুর থানার সাব ইনস্পেক্টর (Police SI) আইনুল হক। সেই মহিলার ১০০ ডায়ালে (100 Dial) অভিযোগ পেয়ে তা খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার (Lalbazar)। জানা গিয়েছে, সম্পত্তিগত বিবাদের অভিযোগ জানাতে হরিদেবপুর থানায় (haridevpur PS) যান ওই মহিলা। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অভিযুক্ত এসআই ওই মহিলার বাড়িতে যান। সেখানেই তাঁকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি অভব্য আচরণের অভিযোগ ওঠে এসআইয়ের বিরুদ্ধে।
সঙ্গে সঙ্গেই ওই মহিলা ১০০ ডায়ালে ফোন করে এসআই-র বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। অভিযোগ খতিয়ে দেখেই আইনুল হককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। এদিকে, রক্ষকের এভাবে ভক্ষক হয়ে ওঠার ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই নাগরিক সমাজে চাঞ্চল্য। এখন দেখার সাসপেনশন ছাড়াও বিভাগীয় তদন্ত শেষে আর কতটা শাস্তি অপেক্ষা করছে ওই এসআই-য়ের।
বেলপাহাড়ি থেকে ঝাড়গ্রাম (Jhargram) যাওয়ার পথে শিলদার কাছে হঠাৎ থামল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় (Mamata Banerjee)। গ্রামের নাম মাগুরিয়া, সেই গ্রামের রাস্তার ধারে বড় স্টিলের থালায় রাখা ভাজাভুজি ও ডিমের চপ (Egg Devil)। ছোট্ট এই চপের দোকান দেখেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কনভয় (Mamatas Convoy) থামিয়ে ঢুকে গেলেন দোকানের ভিতর। কথা বললেন দোকান মালিক বুদ্ধদেব মহন্তের সঙ্গে। চপ বেচার কাজে তারপরই হাত লাগালেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের হাতে যেমন চপ ভাজলেন, তেমনই স্টিলের থালায় সাজিয়ে রাখা ভাজাভুজি-চপ কাগজে মুড়ে তুলে দিলেন সকলের হাতে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজার টাকার শুধু চপই বিক্রি হয়ে গেল বুদ্ধদেব মহন্তর।
মুখ্যমন্ত্রীর এই কাণ্ড দেখে যেমন বিস্মিত বুদ্ধদেব, তেমনই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে চোখের সামনে দেখে আপ্লুত এই তরুণ বিক্রেতা। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বেলপাহাড়িতে কর্মসূচি সেরে ঝাড়গ্রাম ফিরছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফেরার পথে শিলদার কাছে বুদ্ধদেবের চপের দোকানে এভাবে ঢুকে পড়েন তিনি।
সেই সময় দোকানেও ছিলেন জনা কয়েক। তবে তাঁদের কেউই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ঘেঁষতে পারেননি। নিরাপত্তা বলয়ে থেকে হাজার টাকার চপ এবং চকলেট বিক্রি করে মাগুরিয়া ছাড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বোমা। কিন্তু এবার শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরসভার খোদ মেয়র গৌতম দেবের বাড়ির ওয়ার্ড থেকেই হদিশ মিলল আগ্নেয়াস্ত্রের (firearm)। ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যেও। প্রশ্ন উঠছে স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিয়েও। ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে শিলিগুড়ি থানার পুলিস (police)।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে নালা সাফাইয়ের কাজ করছিলেন পুরকর্মীরা। এমন সময় কলেজ সংলগ্ন এলাকার একটি নালা থেকে ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার হয়। ঘটনায় তড়িঘড়ি স্থানীয় কাউন্সিলর সহ পুলিসে খবর দেওয়া হয়। পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগ্নেয়াস্ত্রটি বাজেয়াপ্ত করে। পাশাপাশি তদন্তেও নেমেছে পুলিস। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্রটি বহু পুরনো, মরচে ধরেছে। তবে কোথা থেকে আসল, কে বা কারা রেখেছে বা ফেলেছে, সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ি থানা এলাকায় সম্প্রতি একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কখনও হোটেলে ঢুকে মালিককে মারধর, কখনও ছুরি চালানোর ঘটনা। এবার আগ্নেয়স্ত্র উদ্ধার। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে। কোথা থেকে এল সেই আগ্নেয়াস্ত্র তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
তৃণমূল সাংসদ (TMC MP) দেবের ঘাটাল (Ghatal) সফরের আগে বিজেপির তরফে শহরজুড়ে পোস্টার। তীব্র কটাক্ষ করা হয়েছে সেই পোস্টারে। শাসক শিবিরের সাংসদকে নিশানা করে এই পোস্টারিং করেন বিজেপি (BJP) বিধায়ক শীতল কপাট। মঙ্গলবার সাংসদ দেবের কেন্দ্র ঘাটালজুড়ে 'হিরণের খোঁচা খেয়ে মলদ্বীপ থেকে ঘাটালে আসছেন সাংসদ দেব', এই ধরনের পোস্টারে ছেয়ে যায়।
বিজেপির তরফেই পোস্টারগুলো সাঁটানো হয় ঘাটালে। এই পোস্টার লাগাতে দেখা গিয়েছে খোদ ঘাটালের বিজেপি বিধায়ককে। সম্প্রতি ঘাটালে এক অনুষ্ঠানে এসে কাটমানি প্রসঙ্গে অভিনেতা-সাংসদ দেবকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন হিরণ। তৃণমূলের তরফে উড়ে আসে পাল্টা প্রতিক্রিয়া।
এই পোস্টারিং প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক জানান, হিরণের কথায় ছুটে আসছেন দেব। আবার কেউ উনাকে মনে করিয়ে দেবেন ঘাটালবাসীর কথা। এছাড়া উনি সিনেমা বানাবেন আর এনামূল হকের থেকে কাটমানি নেবেন। পাল্টা দেবের প্রতিক্রিয়া, 'সাংসদ হয়ে আমার কাজ বেড়েছে, আমি ব্যস্ত হয়েছি এমন নয়। চাইলে এই আক্রমণের জবাব দিতে পারতাম। যে আমার বন্ধু, যার সঙ্গে খেয়েছি, তাঁকে কেন আমি আক্রমণ করতে যাবো? আমি কোনওদিন নিজের দলকে বড় করার জন্য অন্য দলকে ছোট করেছি। আর সব দলেই আমার বন্ধুবান্ধব ছড়িয়ে রয়েছে।'
কাটমানি ইস্যুতে (Cut Money Issue) তৃণমূল সাংসদ দেবকে (MP Dev) বেনজির আক্রমণ বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের। ঘটনাচক্রে এই দুজন বাংলা ছবির একদা সতীর্থ এবং ভালো বন্ধুও বটে। রাজনৈতিক ময়দানে আবার একে অপরের বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধি। কিন্তু সোমবার ঘাটালের (Ghatal) এক অনুষ্ঠানে বিজেপি বিধায়ক হিরণের (Hiran) মন্তব্যে শোরগোল বঙ্গ রাজনীতিতে।
খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক ঘাটালের সাংসদ দেবের উদ্দেশে বলেছেন, 'সাংসদ হিসেবে আমি প্রত্যেক মাসে মাইনে নেব। এখানে যা কাজ হবে সেখান থেকে কাটমানি নেব, গরু চোর এনামূল হকের থেকে কাটমানি নিয়ে সিনেমা করব। আর বান্ধবীকে নিয়ে মলদ্বীপ ঘুরতে যাবো। আমি মলদ্বীপে জলে বান্ধবীকে নিয়ে সাঁতার কাটবো, আর ঘাটালের মানুষ জলের তলায় ডুবে থাকবে।'
তিনি জানান, ঘাটালের একজন ফিল্মস্টার নায়িকাদের সঙ্গে শ্যুটিং করবে আর এনা মূলের থেকে টাকা নিয়ে ছবি প্রযোজনা করবে। আর সিবিআই ডাকলে বলবে আমি তো টাকা নিই নি। সিবিআই আমাকে চা খেতে ডেকেছিল। আর সামনে-পিছনে পুলিস এবং মলদ্বীপে বান্ধবী নিয়ে ঘুরবো। এভাবেও তীব্র কটাক্ষ দেবকে করেন হিরণ।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ পাল্টা জানান, হিরণ আমার খুব ভালো বন্ধু। কাউকে ছোট করে বড় হওয়া যায় না। আমি ৮ বছর ধরে রাজনীতিতে আছি, আমার রাজনীতি ঘাটালের মানুষকে ভালো রাখা এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা। ওর কাছে হাফ ইনফর্মেশন রয়েছে। আমি মলদ্বীপ নয় গ্রিসে ছিলাম। হিরণ চ্যাম্প বলে একটা ছবিতে কাজ করেছে কোনও পারিশ্রমিক ছাড়া। আমার অনেক ছবির জন্য প্রচার করে গিয়েছে। কেন একথা ও বলেছে আমি সত্যি জানি না।'
সৌমেন সুর: কোজাগরী পূর্ণিমার সন্ধ্যায় পরাশক্তি ধনদায়িনি মহালক্ষ্মীর পদ সঞ্চার প্রতি গৃহস্থের আঙিনায়। কার্তিক মাসের অমাবস্যায় সেই একই মায়ের অর্চনা করবো অন্য নামে, ভিন্নরূপে, ধ্যানান্তরে। আজ যে জগৎ মাতার শুভ আগমন, তিনি মহাশক্তির এক বরণীয় রূপ, মহাকালের শক্তিমূর্তি আদ্যাশক্তি, চতুর্ভুজা, দিগবসনা, সুখপ্রদায়িনী ও বরাভয়দায়িনী। সৌন্দর্য, মাধুর্য এবং গাম্ভীর্যের এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে দেবী কালিকার বর্ণিত ধ্যানমন্ত্রে।
'কালিকা বঙ্গদেশে চ' এই শাস্ত্রবাক্য শত শত বৎসর ধরে। পরম শ্রদ্ধায়, বড় আন্তরিকতায় ও গভীর ভক্তিতে এই বঙ্গভূমিতে এই পরম জননী কালিকারূপিণী মহাদেবী নিত্য সেবিতা ও পূজিতা। প্রচলিত কথা আছে 'যেখানে বাঙালি বাড়ি, সেখানে আছে কালীবাড়ি।' সৃষ্টিস্থিতিকারিনী কালরূপা মুক্তিদাত্রী দেবী কালিকার উপাসনাই হল কালের হাত থেকে নিষ্কৃতির একমাত্র উপায়।
শ্যামা মায়ের মূর্তিতে সারল্য ও কাঠিন্যের এক অপূর্ব সমাবেশ। তাই মহাকালী নৃমুণ্ডমালিনী ও করালবদনা ভয়ঙ্করা, আবার সেইসঙ্গে তিনি বরাভয় করা। একদিকে সৃজন, অপরদিকে নিধন। দুষ্টের দমন আর সৃষ্টের পালন। ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ বলেছেন, 'কালী কি কালো?' দূর থেকে কালো, জানতে পারলে কালো নয়। সমুদ্রের জল দূর থেকে নীল, কাছে গিয়ে দেখো আর হাতে তুলে দ্যাখো-- রঙ নেই। ব্রহ্মশক্তি এই বিশ্বমাতা বিবসনা। দেশকালে ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে আদৌ আবদ্ধ নয় তিনি বলেই দিগম্বরী। এই অভয়া মা ত্রিনয়ণ দিয়ে তাঁর করুণা ধারা বর্ষণ করেন তাঁর সন্তানকে সত্য, শিব ও সুন্দরকে প্রত্যক্ষ করান।
আমাদের আর্যঋষিরা বলেন, সৃষ্টির মধ্যেই সৃজন, পালন, সংহার বিদ্যমান। সেই করুণাময়ী পরমেশ্বরী মা কালী সৃষ্টি, স্থিতি, লয় করছেন। একদিকে সংহার, অন্যদিকে তিনি অভয় বরদা। একহাতে ভীতি প্রদর্শন অপর হাতে সন্তানকে কোলে ধারণ। এই নিয়েই মা। মা আমাদের করুণাময়ী, মঙ্গলময়ী, জয় মা ওঁ তৎসাৎ।
সৌমেন সুর: নিউ থিয়েটার্সকে প্রথম ভারতজোড়া খ্যাতি ও সাফল্য এনে দিয়েছিলেন দেবকী কুমার বসু। তাঁর তৈরি 'চণ্ডীদাস' ও 'পুরান ভগৎ' (হিন্দি) ছবি দুটি সে সময় যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের যথাযথ ব্যবহার ছবিতে এক নতুন মাত্রা এনে দেয়, সেটা দেবকী বসুর 'বিদ্যাপতি' প্রমাণ করে। তাঁর সিনেমাগুলিতে সংগীত পরিচালক রাইচাঁদ বড়ালের সুর এবং কৃষ্ণচন্দ্র দে'র গাওয়া গানগুলি যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল।
সবাক যুগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্রের কাহিনী অবলম্বনে বহু সিনেমা তৈরী হয়। ১৯৩৫ সালে শরৎচন্দ্রের 'দেবদাস' গল্পটি প্রমথেশ বড়ুয়াকে খ্যাতি এনে দেয়। সিনেমায় উক্ত গল্পটির নায়ক দেবদাসের ব্যর্থ প্রেম ও মর্মান্তিক মৃত্যু, বাঙালির মধ্যবিত্ত মনকে বিষাদে ভরিয়ে দেয়। ছবিটি সুপারহিট হয়, এরপর প্রমথেশ বাবু 'মুক্তি' ছবি তৈরি করেন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছবির নায়িকা কানন দেবী। তাঁর অসামান্য অভিনয়, গান ও সৌন্দর্য তামাম সিনেমাপ্রেমী মানুষকে আকর্ষিত করে।
'পরিচয়' ও 'শেষ উত্তর' ছবিতে পর পর দুবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পান তিনি। সিনেমায় সামাজিক, পারিবারিক ও রোম্যান্টিক বিষয়কে কেন্দ্র করে বাণিজ্যসফল ছবি বানিয়ে তিনি এক নতুন ধারা প্রবর্তন করেন বাংলা সিনেমা শিল্পে। প্রমথেশ বড়ুয়ার কৃতিত্বের কথা স্বীকার করে ঋত্বিক ঘটক কোনও এক সাক্ষাৎকারে বলেন 'সেই বন্ধ জানালার যুগে এই লোকটা কিছু একটা করার চেষ্টা করেছে।' ভারতে প্রমথেশ বড়ুয়া প্রথম সাবজেক্টিভ ক্যামেরার ব্যবহার করেন। এদিকে বাংলাজুড়ে ব্রিটিশ বিরোধী তীব্র আন্দোলন এবং শেষমেষ হাজার হাজার মানুষ গৃহছাড়া, দেশছাড়া, ভাগ্য বিড়ম্বিত উদ্বাস্তু মানুষের হাহাকার, খণ্ডিত স্বাধীনতা, বাংলা সিনেমার বদল ঘটালো।
এমন কয়েকটি ছবি তৈরি হল যা বাস্তববাদী এবং শিল্পধর্মী। সেই সময়কার বামপন্থী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী খাজা আহমেদ আব্বাস, বিমল রায়, শম্ভু মিত্র, ঋত্বিক ঘটক, বলরাজ সাহানি প্রমুখের ভূমিকায় বাংলা সিনেমায় মেলোড্রামাটিক, সামাজিক সেন্টিমেন্টাল প্লটের বদলে এল বাস্তবধর্মী জীবন আলেখ্য। বিমল রায় নির্দেশিত 'দো বিঘা জমিন', (রবি ঠাকুরের 'দুই বিঘা জমি' অবলম্বনে) সারা ভারতকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। পরবর্তীতে দেশভাগ, যুদ্ধ, প্রভৃতি কারণে বাংলা সিনেমার বাজার ছোট হয়ে আসে। অনেক ষ্টুডিও বন্ধ হয়ে যায়। সিনেমা শিল্পে অব্যবস্থা ও বিশৃঙ্খলার ফলে কলকাতার গুরুত্ব কমে যায়।
তবে সিনেমা শিল্পে বাংলার অবদান সৃজনশিল্পে বরাবর উচ্চস্থানে ছিল, আজও তাই বহন করে।
বিভিন্ন কারণে নানা সময় চর্চায় থাকেন যোগগুরু বাবা রামদেব (Baba Ramdev)। এবার বলিউডের (Bollywood) একাধিক তারকা মাদক সেবন করেন বলে অভিযোগ তুললেন তিনি। আর সেই তালিকায় রয়েছেন শাহরুখ পুত্র আরিয়ান এবং সলমন খানও। এমনকি যোগগুরুর হুঁশিয়ারি, মাদকাসক্তির (Drug Addiction) বিরুদ্ধে বড়সড় আন্দোলনে নামবেন তিনি। জোরকদমে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বাবা। এখন তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য দেশবাসীকে মাদকমুক্ত রাখা।
উল্লেখ্য, মোরাদাবাদে আর্যবীর এবং বীরাঙ্গনা সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন যোগগুরু। সেখান থেকে রামদেব বলেন, 'বলিউড নেশায় আসক্ত। প্রায় সকলেই মদ খান।' তবে বলি খানদের নিয়ে বিশেষ দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'সলমন খান মাদক নেন। আমির খানের কথা বলতে পারব না। শাহরুখের ছেলে মাদক-কাণ্ডে ধরা পড়ে জেল খাটল। অভিনেত্রীদের তো ভগবানের নামেই ছেড়ে দিলাম।'
তিনি আরও বলেন, 'বলি-হলি সর্বত্র মাদক চক্রের যোগ রয়েছে। রাজনৈতিক জায়গায়ও মাদক আসক্তদের ছড়াছড়ি। ভোট আসলেই ভোটারদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মদ।' এর থেকে মুক্তি চেয়ে আন্দোলনে নামার কথা বলেন রামদেব।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য অভিনব দাওয়াই বাতলেছিলেন রামদেব। তা নিয়ে তর্ক হয়েছিলও বিস্তর। সোশাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছিল রামদেবের জনসংখ্যা কমানোর নিদান নিয়ে চর্চায়।
হরিদেবপুরে (Haridevpur Murder) অয়ন মণ্ডল হত্যাকাণ্ডে ডায়মন্ডহারবার হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্তের (Post Mortem) প্রাথমিক রিপোর্ট হরিদেবপুর থানার কাছে। সেই রিপোর্টে উল্লেখ ভারী ও ভোঁতা বস্তুর আঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু অয়নের। রিপোর্টে উল্লেখ ময়না তদন্ত হওয়ার ৩০ ঘণ্টা আগেই মৃত্যু হয়েছে অয়নের (Ayan Mondal)। এদিকে এই ঘটনায় পুলিস প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, বৃহস্পতিবার ভোররাতকে অয়নের মৃতদেহ লোপাটের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। মাগুর পুকুরের কাটাখালের নির্জন স্থানে ছোট হাতি গাড়ি করে অয়নের দেহ আনা হয়েছিল।
এই গাড়িটি কবরডাঙ্গা থেকে নেপালগঞ্জ হয়ে উচ্ছেখালির মোড় থেকে মাগুর পুকুরে এসেছিল। তারা যে সময়টা বেছেছিল, সেটা ঠিক ভোরের সময় কারণ। উচ্ছেখালি এলাকায় মধ্যরাত পর্যন্ত ঠাকুর বিসর্জন চলছিল। সেই ভাসান দেখতে সাধারণ মানুষের যেমন ভিড় ছিল, তেমনি পুলিস প্রশাসন সজাগ ও সতর্ক ছিল।
ফলে তাঁদের চোখ এড়িয়ে মাগুর পুকুরের নির্জন স্থানে প্রমাণ লোপাটের কারণে ঝোপের মধ্যে রেখে দিয়ে তারা আবার নেপালগঞ্জ দিয়ে কবরডাঙ্গার দিকে এগোয়। যেটা পুলিস সূত্রে খবর, যে অয়নের মোবাইল তারা নেপালগঞ্জের দিকে ফেলেছিল। সেই সূত্রে একটা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ক্যালকাটা নিউজের হাতে এসেছে, যেখানে শুনশান রাস্তায় একটা ছোট হাটি গাড়ি ধরা পড়েছে। যদিও সেই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেন সিএন নিউজ।
ক্রমশই ঘণীভূত হচ্ছে হরিদেবপুরে (Haridevpur) অয়ন মণ্ডল (Ayan Mondal) খুনের রহস্য। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিস (police) সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল- দীপক জানা (বাবা), রুমা জানা (মা), প্রীতি জানা (বান্ধবী), বিবেক জানা (বান্ধবীর নাবাল ভাই), রাহুল রায় (ভাইয়ের বন্ধু), সুজিত রায় (মেটোডোর ডাইভার), দীপজ্যোতি সাহু (ভাইয়ের বন্ধু)। ধৃতদের উড়িশা থেকে গ্রেফতার (arrest) করে নিয়ে আসা হয় হরিদেবপুর থানায়।
খুনের (murder) ঘটনায় বান্ধবী, মা, বাবা, ভাই এদেরকে শুক্রবার দুপুর বেলা বাড়ি থেকে হরিদেবপুর থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল জিজ্ঞাসা করার জন্য। এরপরই তাদের গ্রেফতার করে পুলিস। তাদের জেরা করে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তিতে উড়িশা থেকে অয়নের বান্ধবীর ভাইয়ের এই বন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে পুলিস।
প্রসঙ্গত, নিহত যুবক অয়নের হত্যার চক্রান্তে অভিযুক্ত প্রেমিকার ভাই ও ড্রাইভারকে শনিবার হরিদেবপুর স্পেশাল পুলিস টিম ও মগরাহাট থানার পুলিসের সহায়তায় যে জায়গায় অয়নের দেহ পড়েছিল, তার শনাক্ত করতে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয় দুজনকে নিয়ে এসে। পাশাপাশি মগরাহাট ও হরিদেবপুর পুলিস কোথায় মারা হয়, কীভাবে মারা হয়, কারা ছিল ঘটনাস্থলে, কীভাবে রাখা হয় অয়নের দেহ, কোন দিক দিয়ে আসা হয়েছিল, এই সমস্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বাগুইহাটি-কাণ্ডের (Baguiati Case) ছায়া হরিদেবপুরে। এখানেও পুলিসের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ। দশমীর দিন থেকে নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধার মগরাহাটে। আর এই ঘটনায় কাঠগড়ায় যুবকের বান্ধবী এবং পরিবার। জানা গিয়েছে দশমীর দিন বান্ধবীর বাড়িতে দেখা করতে বেড়িয়ে নিখোঁজ যুবক অয়ন মণ্ডলের দেহ উদ্ধার শুক্রবার। ঘটনাস্থল হরিদেবপুরের (Haridevpur Incident) কেওড়াপুকুর। প্রায় ৪৮ ঘণ্টার নিখোঁজ থাকার পর সেই যুবকের (Youth Body) দেহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট থানার অন্তর্গত মাগুরপুকুর পুলিস ক্যাম্পের পাশ থেকে থেকে উদ্ধার হয়েছে।
স্থানীয় থানার পুলিস তাঁর দেহ উদ্ধার করে মর্গে নিয়ে যায়। শুক্রবার এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে পুলিস প্রশাসন। কলকাতা পুলিস নিখোঁজ যুবকের পরিবারকে মগরাহাটের ওই ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। মৃতের পরিবার অয়নের দেহ শনাক্ত করেন। ইতিমধ্য়েই অভিযুক্ত বান্ধবী এবং তাঁর বাবা মাকে হরিদেবপুর থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধেই খুনের (murder) অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, দশমীর দিন রাতে বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে বের হয়েছিল অয়ন। তিনি সারারাত বাড়ি ফেরেনি। বান্ধবী বাড়ি চলে গেলেও এই যুবকের কোনও পাত্তা নেই এমনটাই বলছেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর থানায় ডায়রি করা হলেও কোনওরকম স্টেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছিল পরিবার। পুলিসের বিরুদ্ধে উঠেছে একাধিক গাফিলতির প্রশ্ন।
তাঁর বন্ধুদের সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, দশমীর দিন তাঁর বান্ধবী বাড়িতে একা ছিল। সেই সময়ে অয়ন তাঁর বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তারপর হঠাৎই তাঁর বাবা-মা চলে আসে, ভয়েতে তখন অয়ন ছাদের উপর চলে যায়। শেষ বন্ধুকে কল করেছিল রাত ৩টের দিকে। তিনি ফোনে তাঁর বন্ধুকে জানান, মেয়েটির মা অয়নকে বুকে ঘুসি এবং বেধড়ক মারধর করেছে। বন্ধুরা তখন অয়নকে বলে, "আমরা গিয়ে তোকে নিয়ে আসছি।" কিন্তু অয়ন বলে, "না। আমি একাই চলে আসবো তোদের আসতে হবে না।" পরিবার এবং স্থানীয় লোকের বক্তব্য, স্থানীয় থানা হরিদেবপুর কোনও এফআইআর নেয়নি প্রথমে। শুধুমাত্র মিসিং ডায়েরি নিয়েছিল আর সেই জন্য অয়নের বাবা লালবাজারের দ্বারস্থ হন। এরপর এই মর্মান্তিক মৃত্যুর সংবাদ। এমনকি পরিবারকে থানা থেকে বলা হয়েছিল, নিজেরা ছেলেকে খুঁজে নিন। এমনকি একদিন সকাল ১১টা-রাত ৮টা পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল অয়নের পরিবারকে। এই অভিযোগও সংবাদ মাধ্যমের সামনে করেছে অয়নের পরিবার।
তবে অভিযুক্ত সেই বান্ধবী এবং তাঁর বাবা-মাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস। কিন্তু পুলিসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে হরিদেবপুর থানা ঘেরাও স্থানীয়দের। গোটা ঘটনার দায় নিয়ে পুলিসকে জবাবদিহি করতে হবে। এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।
শনিবার সকাল থেকেই কলকাতার একাধিক জায়গায় ঘুরে দেখল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাঠানো অনুসন্ধানকারী দল (Fact Finding Committee)। মূলত বিজেপির (BJP) নবান্ন অভিযানকে (Nabanna Abhijan) ঘিরে পুলিসি বর্বরতার অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী। অভিযোগ, দলের একাধিক কর্মী-সমর্থক পুলিসের অতিসক্রিতায় জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গুরুতর আহত বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত। বঙ্গ বিজেপির এই অভিযোগের গুরুত্ব খতিয়ে দেখতেই এই অনুসন্ধানকারী দলের চার সদস্যের কলকাতা সফর। শনিবার তাঁরা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ (calcutta Medical College), মীনাদেবী পুরোহিতের বাড়ি এবং হেয়ার স্ট্রিট থানায় যান। রবিবার তাঁরা বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন। এমনটাই বঙ্গ বিজেপি সূত্রে খবর।
মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন বিজেপি কর্মী সৌমিক হালদার দেখে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই অনুসন্ধান দলের সদস্য সাংসদ ব্রিজ লাল বলেন, 'বিজেপি যুব মোর্চার কর্মী সৌমিক হালদার নবান্ন অভিযানের পর পুলিসি বর্বরতার শিকার। লাঠি দিয়ে মেরে উনার হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমিও একসময় আইপিএস ছিলাম কিন্তু এরকম পুলিসি গুণ্ডাগিরি দেখিনি। সৌমিক হালদারের অবস্থা এখনও গুরুতর। এখানে বীরভূমে মানুষ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, ঘর থেকে নগদ উদ্ধার হয়, শিক্ষায় দুর্নীতি। আর যুবরা কাজের দাবিতে সরব হলে তাঁদের মারধর করা হয়।'
এদিন বিজেপির এই সাংসদ তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনায় সরব ছিলেন। তাঁর মন্তব্য, 'উপর থেকেই পুলিসি এই বর্বরতার নির্দেশ এসেছিল। নয়তো একজন সাংসদ মাথায় গুলি মারার কথা কীভাবে বলে। এখানে জঙ্গলরাজ, নৈরাজ্য চলছে ২০২৪-এ জবাব দিয়ে দেব।'
শনিবার দুপুরে বিজেপির হেস্টিংস দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন অনুসন্ধান দলের সদস্যরা। এই দলের অন্যতম সদস্য তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর জানান, বামপন্থীদের অত্যাচার আর কংরেসের দুর্নীতি, এই দুই মিলিয়ে রাজ্যে তৃণমূল সরকার চালাচ্ছে। দেশ যেখানে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে বাংলায় অত্যাচার হচ্ছে। এই দেশে আইনব্যবস্থা রয়েছে আর মানুষই সবার সরকার। সেই মানুষ বাংলার এই নিষ্কর্মা সরকারকে বুঝিয়ে দেবে আসল রাজা কে।
তাঁর মন্তব্য, 'বাংলার পুলিসের মধ্যে তৃণমূল ঢুকে গিয়েছে। কে তৃণমূল, কে পুলিস বোঝা দায়। রাজ্যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। শাসক দলের কেউ বিরোধিতা করলে তাঁকে ডাণ্ডা খেতে হবে।'