বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মাঠের যুদ্ধে শক্তিশালী পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে উঠে কার্যত 'বোমা' ফাটালেন আফগানিস্তানের তারকা ক্রিকেটার ইব্রাহিম জাদরান। ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিতে গিয়ে কোনও রাখঢাক না করে খোলাখুলি আক্রমণ করলেন পাকিস্তান সরকারকে।
ধারাভাষ্যকার তথা পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার রামিজ রাজার সঙ্গে কথা বলছিলেন আফগান তারকা। রামিজের প্রশ্নের উত্তরে জাদরান সরাসরি বলেন, আফগানিস্তানের যে শরণার্থীদের দেশ থেকে বিতাড়ন করছে পাকিস্তান, সেই মানুষগুলিকে ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার উৎসর্গ করছেন তিনি৷
আগামী ১ নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত নথিবিহীন শরণার্থীদের পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের সরকার। এর ফলে বিপদে পড়েছেন প্রায় ১৭ লক্ষ আফগান শরণার্থী। ম্যান অফ ম্যাচের পুরস্কার তাঁদের উৎসর্গ করলেন ব্যাট হাতে ৮৭ রানে ঝকঝকে ইনিংস খেলা জাদরান। উল্লেখ্য, এই প্রথম একদিনের আর্ন্তজাতিক ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান।
ইংল্যান্ডের পর এবার পাকিস্তান। না কোনও চমক নয়। রীতিমতো পরিকল্পনা মাফিক পার্টনারশিপ, উইকেটের গতি বুঝে বোলিং ও ফিল্ডিং। এক ওভার বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে বাবর ব্রিগেডকে হারাল আফগানিস্তান।
পরপর দুটি ম্যাচ হেরে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন আফ্রিদিরা। এই ম্যাচে হেরে বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে বড়সড় ধাক্কা খেলেন বাবরা। এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তোলেন তাঁরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে রহমাতুল্লাহ গুরবাজ ৬৫ রান করেন। আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদ্রান করেন ৮৭ রান। ৭৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন রহমত শাহ। ৪৫ বলে ৪৮ রান করেন অধিনায়ক শাহিদি। খেলা শেষ করে ফেরে আফগানিস্তান।
বিশ্বকাপের মাঝেই ভারতীয় ক্রিকেটে শোকের আবহ। প্রয়াত ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার বিষাণ সিং বেদী । ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর। বিশ্বকাপ চলাকালীন বিশ্বক্রিকেটেও শোকের ছায়া। ১৯৬৭-১৯৭৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছিলেন তিনি।
বিষাণ সিং বেদি দেশের হয়ে ৬৭টি টেস্ট ও ১০টি ওয়ানডে খেলেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর ২৬৬টি উইকেট ও ১৪টি পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির আছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৭ উইকেট তুলেছিলেন একবার।
১৯৪৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অমৃতসরে জন্ম বিষাণ সিং বেদীর। বাঁ হাতি স্পিনার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাড়া ফেলেঠিলেন। ১৯৬৬ সালে ভারতীয় ক্রিকেট দলে অভিষেক করেন তিনি। ১৯৭১ সালে ইংল্যান্ড সফরে সিরিজ জয়ের নেপথ্যে ছিলেন তিনি। অজিত ওয়াদেকার চোট পেয়ে বাদ পড়ায় তাঁর নেতৃত্বেই সিরিজ জেতে ভারত।
বিশ সাল বাদ। বিরাট ব্যাটেই ভাঙল বিশ্বকাপের মিথ। ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ঘরের মাঠে শীর্ষে ভারত। কিউইদের ২৭৪ রান তাড়া করতে নেমে ভারত জিতল চার উইকেট।
পুণের পর ধর্মশালাতেও আরও একটা রূপকথা ইনিংস খেলে ভারতকে জেতাল বিরাটের ব্যাট। ৯৬ রানে শেষ হল তাঁর রূপকথার ইনিংস। এই বিশ্বকাপে ক্রমেই তিনি ফিনিশার হয়ে উঠছেন। বাংলাদেশ ম্যাচ শেষ করেছিলেন। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে জাডেজার কাঁধে দায়িত্ব দিয়ে মাঠ ছাড়লেন।
ধর্মশালার পাটা পিচকে কাজে লাগিয়ে দুরন্ত শুরু করেন রোহিত ও শুভমন। এই ম্যাচে একদিনের ক্রিকেটে দ্রুততম ২ হাজার রান পূর্ণ করেন শুভমান। নিজের মেজাজেই শুরু করেন হিটম্যান।
কিন্তু তিনি ৪৬ রানের মাথায় আউট হয়ে যান। ২৬ রান করেন শুভমান। এরপর হিমাচলের কোলে কিং কোহলি শো। উল্টোদিকে শ্রেয়স, রাহুল, সূর্যরা চলে গেলেও, কিউইদের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে অবিচল ছিলেন বিরাট।
ভারত জিতল, বিশ্বকাপের শীর্ষে উঠল। কিন্তু এই একটা ম্যাচে অনেক ভুল বিভ্রান্তি হয়ে গেল। যা নিয়ে ইংল্যান্ড ম্যাচে আগে ভাবতে হবে কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে। বিশেষ করে তিনি প্রার্থনা করবেন লখনউ ম্যাচে ফিরে আসবেন হার্দিক। কারণ, তাঁর না থাকা দলের ভারসাম্যে সত্যিই প্রভাব ফেলেছে।
চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (বিধায়ক/অভিনেতা): ক্রিকেট ফুটবল আমার জীবনের চলার পথে অন্যতম সাথী। এক সময়ে ছেলেবেলায় দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে খেলেওছি। খেলা দেখা আমার একটা নেশা। বিশ্বকাপ ফুটবল হোক বা ক্রিকেট, দেখতে তো হবেই। পুজোর সময়ে আমার কেন্দ্রে যাওয়া আসা থাকবে কিন্তু তারই ফাঁকে আজকের অধিনায়ক মোবাইলে খেলায় চোখ রেখেছি। আমার কাছে সব ম্যাচই প্রাধান্য পায়। আমি আগের লিখনিতে লিখেছিলাম যে, দুরন্ত ফর্মে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। আমাদের প্রথম চার ব্যাটার অর্থাৎ রোহিত, গিল, কোহলি এবং রাহুল প্রায় প্রতিদিনই ভালো ব্যাট করে দিচ্ছে কিন্তু তার আগে বোলিংয়ে বুমরা, সিরাজ এবং জাড্ডু ও কুলদীপ এতটাই ভালো বল করছে যে ব্যাটারদের টেনশন নিতে হচ্ছে না। আমি একটা ব্যাপার দেখে অবাক হচ্ছি, চারটি ম্যাচেই উল্টোদিকের দল শুরুটা বেশ ভালো করেও শেষ পর্যন্ত হঠাৎ খেলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও বাংলাদেশের একই ব্যাপার। দিব্বি শুরু করেছিল লিটন দাস। ৯০ রান উঠে যাওয়ার পরে মনে হচ্ছিলো বাংলাদেশ আজ হয়তো ৩০০ পার করবে কিন্তু হঠাৎ গুটিয়ে গেলো। জাড্ডু বা জাদেজা যেমন ফিল্ডিং করেছে তেমনিই বোলিং কিন্তু ম্যাচের সেরা হলো সেঞ্চুরি করা কোহলি। ভারত ফের ৭ উইকেটে জিতলো। এখন এটা একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
ভারতের এখন যা দলগত অবস্থা, আমি বলবো সর্বকালের সেরা একদিবসীয় দল। ওপেনিংয়ে রোহিত নিয়মিত ভালো রান পাচ্ছে কিন্তু ওঁর একটাই সমস্যা, ছক্কা হাঁকাতে চায়। মারবে না কেন? মারার জন্যই তো স্বল্প ওভারের ক্রিকেট কিন্তু একেবারে অনসাইড হিটার। একটা সিক্সারের পর ফের পরের বলেও ওই চেষ্টা। কালকে আউটও হলো ওই ভাবেই। ও অধিনায়ক এটা ভুলে গেলে চলবে কেন? আমি বরং বলবো টপ ফর্মে খেলছে বিরাট কোহলি। জীবনের অন্যতম সেরা ফর্মে আছে। ফের বলতেই হয় সচিনের অভাব পেতে দিচ্ছে না বিরাট। অসাধারণ খেলা। কি ধৈর্য কি পরিশ্রম। মাঠ কামড়ানো স্ট্রোক। কিন্তু আমার চিন্তা হার্দিক প্যান্ডিয়াকে নিয়ে। কাল পায়ের গোড়ালিতে ছোট পেয়ে গেলো। দেখুন চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে মিডলে এমন একজন খেলোয়াড় দরকার যে ব্যাট করবে আবার বলটিও করবে। অর্থাৎ অলরাউন্ডার। দেখবেন অলরাউন্ডারদের জন্যই ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুবার। ১৯৮৩-তে কপিল, মহিন্দার, ২০১১-তে যুবরাজ সিং। এবারে সেই কাজটিও করা দরকার এবং এক্সপার্ট হচ্ছে হার্দিক। আমি মনে করি শার্দুল ঠাকুর মোটেই সেই কাজটি করতে পারবে না। শ্রেয়স কিন্তু ভালো খেলছে না, আবার সে বোলারও নয়। সুতরাং হার্দিক ফিরে আসুক। (অনুলিখনঃ প্রসূন গুপ্ত)
ভারতের বিরুদ্ধে শাকিব না থাকলেও ভালো শুরু বাংলাদেশের। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে দুজন ওপেনারই হাফ সেঞ্চুরি করেন। এরপরে হাসান কুলদীপের বলে লেগ বিফোর হয়ে সাজঘরে ফিরে যায়, ওদিকে শান্ত অর্থাৎ অধিনায়ককে লীগ বিফোর করে ঘরে পাঠায় জাদেজা। মিরাজকে ঘরে ফেরায় সিরাজ। ওদিকে লিটন ৬৩ রানে ব্যাট করছে। ২৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১২৯ রানে ৩ উইকেট। ভারতের বিরুদ্ধে খেলছেন না শাকিব-আল-হাসান। ভারতের বিরুদ্ধে পুণের ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্ত। টস জিতে এদিন ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ড ম্যাচে ঊরুতে চোট পেয়েছিলেন শাকিব। তখন থেকেই চলছিল টানাপোড়েন। তার ইতি পড়ল পুণেতে। এদিনের দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেছেন বাংলাদেশ।
পুণে রোহিতও জানালেন টস জিতলে, তিনি আগে বলই করতেন। এই ম্যাচে অপরিবর্তিত ভারতীয় দল। কারণ, অহেতুক দল পরিবর্তন করতে নারাজ ভারত অধিনায়ক। এদিনও রোহিতের গলায়, দীর্ঘ টুর্নামেন্টের কথা। একইসঙ্গে ফের জানালেন ভারতকে ঘুরে ঘুরে খেলতে হচ্ছে। তাই এত তাড়াহুড়ো করতে নারাজ তিনি।
প্রাক্তনদের মতে, এই মাঠে রান তাড়া করা একটু কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। সুনীল গাভাসকর এবং নাসের হুসেনের মতে, বাংলাদেশকে ২৫০ রানের মধ্যে আটকে জিতে পারলে এই ম্যাচেও এগিয়ে থাকবে ভারত।
৮-০! মহালয়ার দিন পাকিস্তান বধ। বিশ্বমঞ্চে রেকর্ড অব্যাহত। একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর স্বপ্ন অধরাই রইল পাকিস্তানের। শনিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম খড়কুটোর মতো বাবর আজমের দলকে উড়িয়ে দিল ভারত। ১৯.৩ ওভার বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে জয় ভারতের। ৪২.৫ ওভারে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। জবাবে ৩০.৩ ওভারেই জয়সূচক রানে পৌঁছে যায় ভারত। ১১৭ বল বাকি থাকতেই অনায়াসে জয় তুলে নেয় ভারত। একইসঙ্গে রানরেট বাড়িয়ে নিলেন রোহিতরা। মহালয়ার দিন জয়ের হ্যাটট্রিক ভারতের। গ্যালারিতে বসে ঐতিহাসিক জয় দেখলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রেগন্যান্সি গুজবের মধ্যেই স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্কা শর্মা। দুর্দান্ত অধিনায়কত্বের পর ব্যাট হাতেও দুরন্ত রোহিত শর্মা। আগের দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে সর্বাধিক ছয়ের রেকর্ড করেন হিটম্যান। এদিনও নির্বিকার মুখে একের পর এক ছক্কা হাঁকালেন। একদিনের ক্রিকেটে ৩০০ ছয়ের গণ্ডি পেরিয়ে গেলেন। আফগানিস্তান ম্যাচের পর এদিন ব্যাক টু ব্যাক শতরানের হাতছানি ছিল। ২০১৯ বিশ্বকাপে ম্যাঞ্চেস্টারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৪০ করেছিলেন রোহিত। শনি সন্ধেয়ও সেদিকেই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু একশো হাতছাড়া হল। ৬৩ বলে ৮৬ রানে আউট হন রোহিত। বিধ্বংসী ইনিংসে রয়েছে ৬টি ছয়, ৬টি চার। বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার হওয়ার দৌড়ে বিশেষজ্ঞরা বিরাট কোহলি, শুভমন গিলকে রেখেছিলেন।
ফর্মের ধারেকাছে না থাকা রোহিতকে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই ধরেনি। কিন্তু পরপর দুই ম্যাচে অনবদ্য ব্যাটিংয়ে একনম্বরের দৌড়ে শীর্ষস্থানে ভারতের নেতা।
১৯২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেন রোহিত, শুভমন। ডেঙ্গি থেকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই ম্যাচের গুরুত্ব বুঝে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয় গিলকে। পরপর ড্রাইভে তিনটে চার মেরে ইনিংসের সূচনা দারুণ করেন। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। চারটে চার মেরে ১১ বলে ১৬ রান করে আউট হন শুভমন। ২৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। তবে উইকেটের অন্য প্রান্তে স্বমহিমায় ছিলেন রোহিত। চার, ছয়ের বন্যা বইয়ে দেন। রান পাননি বিরাট কোহলি। ১৮ বলে ১৬ রানে ফেরেন। তবে এদিন রান পান শ্রেয়স আইয়ার। অর্ধশতরান করেন। ৬২ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত শ্রেয়স। শেষ বলে চার মেরে দলকে জয়সূচক রানে পৌঁছে দেন। ১৯ রানে অপরাজিত কেএল রাহুল।
পাকিস্তানের অপরিকল্পিত ব্যাটিং? না স্নায়ুর চাপ? মাত্র ৩৬ রানে ৮ উইকেট হারানোর কারণ কী? আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে লক্ষাধিক ক্রিকেটপ্রেমীর গর্জন। গেরুয়া শহরে নীল ঝড়। তাতেই কি পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে ধস নামল? একটা সময় ২ উইকেটে ১৫৫ রান ছিল সবুজ আর্মির। ক্রিজে ছিলেন বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ান। মনে হয়েছিল ৩০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু সেখান থেকে ১৯১ রানে অলআউট। ৩৬ রানে পড়ল ৮ উইকেট।
বাকিরা এলেন আর গেলেন। প্রথম চারজনকে বাদ দিলে, হাসান আলি ছাড়া কেউই দু'অক্ষরের রানে পৌঁছতে পারেনি। সৌজন্যে যশপ্রীত বুমরা এবং কুলদীপ যাদব। বড় রানের জন্য রিজওয়ানের দিকেই তাকিয়ে ছিল পাকিস্তান। ৪৯ রানে পাক উইকেটকিপার ব্যাটারকে বোল্ড করেন বুমরা। ৭টি চারের সাহায্যে ৬৯ বলে অর্ধশতরানের এক রান দূরে থামলেন। তবে প্রশংসা প্রাপ্য মহম্মদ সিরাজেরও। শুরুটা ভাল না হলেও প্রথমে আবদুল্লাহ শফিক এবং পরে বাবর আজমকে প্যাভিলিয়নে ফেরান। পাকিস্তানের নেতা আউট হওয়ার পরই ব্যাটিংয়ে ধস নামে। অর্থাৎ এই একটা উইকেটই বদলে দিল গোটা চিত্র। পাকিস্তান যে এখনও বাবর এবং রিজওয়ানের ওপর নির্ভরশীল, সেটা আরও একবার প্রমাণিত। পাক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান অধিনায়কের। ৭টি চারের সাহায্যে ৫৮ বলে ৫০ রান করেন আইসিসি ব়্যাঙ্কিংয়ে একনম্বর ব্যাটার। তবে বিশ্বমঞ্চে পাক ব্যাটারদের পারফরম্যান্স খুবই হতাশজনক। দিশাহীন ব্যাটিং। বাজে শট সিলেকশন। অন্যদিকে বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্ব রোহিতের। ডিআরএস নেওয়ার সঠিক সিদ্ধান্ত। সবমিলিয়ে সেভেন স্টার পারফরম্যান্স ভারতীয় দলের। যদিও শুরুটা আশানুরূপ হয়নি ভারতের। প্রথম উইকেটে ৪১ রান যোগ করেন আবদুল্লাহ শফিক (২০) এবং ইমাম উল হক (৩৬)। ৭৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে ৮২ রান যোগ করেন বাবর, রিজওয়ান। ৩০ ওভার পর্যন্ত সঠিক দিশাতেই এগোচ্ছিল পাকিস্তান। দুই তারকা ব্যাটার আউট হতেই লাইনচ্যুত। শার্দূল ঠাকুর ছাড়া সবাই দুটো করে উইকেট নেয়।
ভারতের বিপক্ষে হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রীতিমতো নাকানিচুবানি খেলো পাকিস্তান। খেলতে পারলো না পুরো ৫০ ওভার। ম্যারম্যারে আর নতজানু ব্যাটিংয়ে ৪২.৪ ওভারে তারা অলআউট হয়েছে মাত্র ১৯১ রানে। জিততে ভারতকে করতে হবে ১৯২ রান।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ছোট ছোট জুটিতে ভালোই এগোচ্ছিল পাকিস্তান। ৪১ রানে প্রথম, ৯৩ রানে তৃতীয় ও ১৫৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় তারা। সেখান থেকে ১৯১ রানে যেতে অলআউট হয়ে যায় মেন ইন গ্রিনরা। ব্যাট হাতে বাবর সর্বোচ্চ ৫০, রিজওয়ান ৪৯ ও ইমাম-উল-হক ৩৬, আব্দুল্লাহ শফিক ২০ ও হাসান আলী ১২ রান করেন। বাকিদের কেউ দুই অঙ্কের কোটা ছুঁতে পারেননি।
বল হাতে ভারতের চার বোলার দুটি করে উইকেট নেন। তারা হলেন- জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা।
মুখিয়ে ছিলেন প্রত্যেকের 'প্রিয়' গায়ক অরিজিতের (Arijit Singh) গান শোনার জন্য। কিন্তু অপেক্ষাই সার হল। টিভিতে অরিজিৎ সহ বাকি সংগীতশিল্পীদের পারফরম্যান্স দেখতেই পেলেন না সাধারণ মানুষ। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় প্রি-ম্যাচ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথমে মনে করা হয়, হয়তো কিছুটা দেরিতে শুরু হবে অনুষ্ঠান। কিন্তু এর পরই আইসিসির তরফে দেওয়া হয় এক বিবৃতি। সেই বিবৃতিতে লেখা হয়, এই অনুষ্ঠান শুধুমাত্র ইনস্টেডিয়া ফ্যানদের জন্যই।
শনিবার নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে দুপুর ২টো ৩০ মিনিটে শুরু হয় ভারত-পাকের মহারণ। তার আগেই অরিজিৎ সিং, শঙ্কর মহাদেবন, সুনিধি চৌহান, সুখবিন্দর সিং-এর পারফর্ম করার কথা ঠিক ছিল। কিন্তু সাড়ে ১২ টার পরও টিভিতে দেখা যাচ্ছিল না অনুষ্ঠান। হতাশ হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। এর পরই আইসিসির তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, "নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি ইনস্টেডিয়া ফ্যানদের জন্য। ব্রডকাস্ট করা হবে না।" অর্থাৎ যারা ওখানে উপস্থিত হয়েছেন শুধুমাত্র তাঁদের জন্যই এই অনুষ্ঠান। টিভি বা ওটিটিতে দেখানো হবে না এই অনুষ্ঠান।
তবে মনে খারাপ করার দরকার নেই। এরই মধ্যে প্রি-ম্যাচ অনুষ্ঠানে সংগীতশিল্পীদের কিছু ঝলক সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে প্রকাশ্যে এসেছে। একটি ভাইরাল ভিডিও-তে চার জন সংগীতশিল্পীকেই একসঙ্গে গান করতে দেখা গিয়েছে। দেখা গিয়েছে, সবার পছন্দের গায়ক অরিজিতকেও।
Listen to the loudness from Crowd at Narendra Modi Stadium When All the 4 musician Arijit Singh, Sunidhi Chauhan, Shankar Mahadevan and Sukhwinder Singh sang together to cheer the crowd at the last minute. #INDvsPAK #ArijitSingh pic.twitter.com/QMXHa92s9t
— Mufa Kohli (@MufaKohli) October 14, 2023
Credit - @AJpadhi
এক বলে ১৩ রান! অবাক হওয়ার মতো এই ঘটনা ঘটেছে এবারের বিশ্বকাপে। সোমবার হায়দরাবাদে মুখোমুখি হয়েছিল নিউ জিল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডস। সেই ম্যাচেই এই অভিনব রেকর্ড তৈরি হয়েচে। শেষ ওভারে ব্যাট করছিলেন কিউই ক্রিকেটার মিচেল স্যাটনার। বল করছিলেন নেদারল্যান্ডসের বাস ডি লিড।
লিডের শেষ বলে ছয় মেরেছিলেন স্যাটনার। সেই বলকে নো করেছিলেন আম্পায়র। ফলে একটি ফ্রি হিট পেয়েছিলেন স্যাটনার। সেই বলেও ছক্কা হাঁকান তিনি। সবমিলিয়ে তৈরি হয় এক বলে ১৩ রানের নজির। এই ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ৯৯ রানে হারিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
সোমবার হায়দরাবাদে নিউ জিল্যান্ডের ৩২২ রান তাড়া করতে নেমে ২২৩ রানে অলআউট ডাচরা। ৫৯ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট স্যাটনারের। তিনটি উইকেট পেয়েছেন ম্যাট হেনরি। ডাচদের স্কোর কার্ডে ৬৯ রান কলিন অ্যাকরম্যানের।
বিশ্বকাপের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের সামনে ৩২৩ রানের টার্গেট রাখে নিউ জিল্যান্ড। সোমবার হায়দরাবাদে প্রথম ব্যাট করে ৫০ ওভারে সাত উইকেট ৩২২ রান করে কিউইরা। ৮০ বলে ৭০ রান করেন কিউই ব্যাটার ইয়ং।
নেদারল্যান্ডসকে ৯৯ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে সহজ জয় পেল কিউইরা। সোমবার হায়দরাবাদে নিউ জিল্যান্ডের ৩২২ রান তাড়া করতে নেমে ২২৩ রানে অলআউট ডাচরা। ৫৯ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট স্যাটনারের। তিনটি উইকেট পেয়েছেন ম্যাট হেনরি। ডাচদের স্কোর কার্ডে ৬৯ রান কলিন অ্যাকরম্যানের।
বিশ্বকাপের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের সামনে ৩২৩ রানের টার্গেট রাখে নিউ জিল্যান্ড। সোমবার হায়দরাবাদে প্রথম ব্যাট করে ৫০ ওভারে সাত উইকেট ৩২২ রান করে কিউইরা। ৮০ বলে ৭০ রান করেন কিউই ব্যাটার ইয়ং।
হাঁটুর চোটের কারণে এই ম্যাচেও খেলতে পারেননি কেন উইলিয়ামসন। তবে চোট সারিয়ে দলে ফিরেছেন লকি ফার্গুসন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঝড়ো হাফসেঞ্চুরির পর এই ম্যাচেও বড় রান করলেন রচিন রবীন্দ্র। এই ম্যাচে ৫১ রান করেন তিনি। অধিনায়ক ল্যাথমও ৫৩ রান করেন।
ডাচদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন তিন বোলার। এরমধ্যে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আর্য দত্ত। ব্যাট করতে নেমে লড়ছে নেদারল্যান্ডস।
বিশ্বকাপের আগে বড় ধাক্কা টিম ইন্ডিয়ার। সূত্রের খবর, বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের ওপেনার ব্যাটার শুভমনের ডেঙ্গি হয়েছে। বর্তমানে সে কড়া নিরাপত্তা ও চিকিৎসায় আওতায় রয়েছে বলে খবর।
২২ গজের মহাযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ম্যাচ রবিবার। তার আগেই টিম ইন্ডিয়ায় বিরাট ধাক্কা। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামতে চলেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে শুভমন গিলের খেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
প্রথম ম্যাচে শুভমন না খেললে দলের কম্বিনেশনও বদলে যেতে বাধ্য। এই আবহে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতে হবে মেন ইন ব্লুদের।বিশ্বকাপ শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলা তিনটি একদিনের ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন শুভমন গিল। তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই তিনি জ্বরে কাবু। ফলে নতুন করে চিন্তা বাড়ল রোহিত শর্মাদের।
দুশমন মুলক। বিশ্বকাপের আগে ভারতকে এবার এই ভাষাতে সমালোচনা করলেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান জাকা আফরফ। বৃহস্পতিবারই অনেক টালবাহানার পর বেতন বৃদ্ধি হয়েছে পাক ক্রিকেটারদের।
তা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে গিয়ে ভারতকে দুশমন মুলক বলে উল্লেখ করেন জাকা। সোশাল মিডিয়ার তাঁর এই মন্তব্য এখন ভাইরাল। এদিকে, সাত বছর পর শুক্রবার ভারতের মাটিতে প্রথম ক্রিকেট খেলতে নামল পাকিস্তান। হায়দরাবাদে বিশ্বকাপের ওয়াম-আপ ম্যাচে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করছেন বাবর আজমরা।
তার আগে পিসিবি প্রধানের এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এশিয়া কাপের সময় থেকেই ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব পাক ক্রিকেট বোর্ডের। এবার তার বহিঃপ্রকাশ জাকার কণ্ঠে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ভাইরাল হওয়ার পর ভারত তো বটে এমনকী পাক ক্রিকেট প্রেমীরা পিসিবি প্রধানের কড়া সমালোচনা করেছেন। ভারতকে দুশমন মুলক বলে উল্লেখ করায় সোশ্যাল মিডিয়াতেই জাকাকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। বোর্ডের এক কর্তার জানিয়েছেন, পিসিবির প্রধানের এই মন্তব্যকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখবে বিসিসিআই।
অস্ট্রেলিয়া অতীত। ফোকাসে এখন বিশ্বকাপ। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে ভারতের মাটিতে শুরু হচ্ছে একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ। তার আগে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানিয়েছেন, তাঁর দল তৈরি। তাঁর দলের ১৫ জন ক্রিকেটার কী করবেন, তাও ঠিক হয়ে গিয়েছে। অপেক্ষা এখন মাঠে নামার।
আট তারিখ থেকে বিশ্বকাপে শুরু ভারতের অভিযান। চেন্নাই টিম ইন্ডিয়ার প্রতিপক্ষ পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। টুর্নামেন্টের আগে সিরিজ জিতে রোহিত জানিয়েছেন, যা হয়েছে ভালই হয়েছে। তাদের হাতে প্রস্তুতির সময় আছে।
বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে টিম ইন্ডিয়া। তার আগে ব্যাটে রান ফিরে পেয়ে খুশি ভারত অধিনায়ক। রোহিতের মতে, তাড়াহুড়ো না করলে রাজকোটে একটা শতরান আসতে পারত।
বিএসএফ এর গুলিতে মৃত্যু হল এক বাংলাদেশি পাচারকারীর। বুধবার নদিয়ার ভীমপুর থানার অন্তর্গত রাঙিয়া পোতা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ঘটনাটি ঘটেছে। এখনও মৃতের পরিচয় পাওয়া যায়নি। বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। বিএসএফ মৃতদেহটি কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সূত্রের খবর, বুধবার মাঝরাতে একদল বাংলাদেশি ভারতের ভীমপুর থানার রানিয়াপোতা বি ও পি অধীনস্থ এলাকা দিয়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল। তখন ওই এলাকায় কর্মরত এক বিএসএফ কর্মী বাধা দিতে গেলে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ চালাতে যায়। এরপর ওই বিএসএফ কর্মী গুলি চালাতে শুরু করে। সেই সময় পালাতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে জখম হয় একজন।
এরপর আরও বিএসএফ কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে ওই এলাকার তল্লাশি চালায়। তখন সেই সময় একটি ঝোপের মধ্যে ওই ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে বিএসএফ কর্মীরা এবং তল্লাশি চালাতের উদ্ধার হয় এক বস্তা নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। তারপর মৃতদেহ পুলিসমর্গে নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য। বিএসএফের পক্ষ থেকে ভীমপুর থানায় সীমান্ত দিয়ে নিষিদ্ধ মাদক পাচারকারী হিসেবে একটি মামলা রজু করা হয়। ওই ব্যক্তির পরিচয় কী এবং নিষিদ্ধ সিরাপ পাচারচক্রে আর কারা কারা ছিল সমস্তটা জানার চেষ্টা করছে ভীমপুর থানা পুলিস।