নবান্নে ইস্টার্ন জনাল কাউন্সিলের (Nabanna Meeting) মিটিং শেষে মধ্যহ্নভোজ সারেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah at Kolkata)। এরপরেই নবান্নের ১৪ তলায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী (Mamata-Shah meeting)। জানা গিয়েছে, আন্তঃরাজ্য সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জলাধার থেকে জলছাড়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। গুরুত্বপূর্ণ এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে কলকাতা বিমানবন্দরে (Kolkata Airport) পৌঁছন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সেখান থেকে বিএসএফ-র বিশেষ বিমানে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার সন্ধ্যায় বারানসী থেকে কলকাতায় এসেছিলেন। শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কলকাতা বিমানবন্দরে বিদায় জানাতে আসেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এদিকে, রাজ্যর তরফে অমিত শাহকে বিদায় জানাতে কলকাতা বিমানবন্দর উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুজিত বসু এবং শশী পাঁজা।
২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (KIFF) উদ্বোধনের মঞ্চে দেখা গেল চাঁদের হাট। বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলার জামাই তথা বিগ-বি অমিতাভ বচ্চন, জয়া বচ্চন (Amitabh-Jaya), শাহরুখ খান, রানি মুখার্জি (Shahrukh-Rani), চঞ্চল চৌধুরী। ছিলেন তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, মহেশ ভাট, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অরিজিৎ সিং,কুমার শানু, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এছাড়া ছিলেন টলিউডের সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব, মিমি চক্রবর্তী, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়রা। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গোটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋষিকেশ মুখার্জির 'অভিমান' সিনেমা দিয়ে শুরু চলচ্চিত্র উৎসব। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর চলবে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব।
কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা অমিতাভ বচ্চনকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। আর জয়া বচ্চনকে স্বাগত জানাতে বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় ও শাহরুখ খানকে স্বাগত জানাতে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিমানবন্দরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নৃত্য পরিচালার উদ্বোধনী নৃত্য দিয়ে শুরু অনুষ্ঠান। এরপর প্রদীপ জ্বালিয়ে শুভ সূচনা করেন অমিতাভ বচ্চন।
সোমবার দিল্লি উড়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। তাঁর সফরসঙ্গী তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এদিন বিকেল ৫.৩০টা নাগাদ রাষ্ট্রপতি ভবনে জি-২০-র (G-20 Meet) প্রস্তুতি বৈঠকে যোগ দেবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার যাবেন আজমের শরীফ ও পুষ্কর। ৭ তারিখ দুপুরে দিল্লিতে সৌগত রায়ের বাসভবনে সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করবেন তৃণমূল (TMC) সভানেত্রী। এদিন দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'সোমবার বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী একটা বৈঠক ডেকেছেন জি-২০-র আয়োজন কেন্দ্রিক। কলকাতাতেও এই মহা সম্মেলনের তিন-চারটি ভেন্যু আছে। সেই বৈঠক শেষ হতে হতে রাত হয়ে যাবে। মঙ্গলবার আজমের শরিফ যাবো, পুষ্কর যাবো। মঙ্গলবার রাতেই ফিরে আসবো। বুধবার সাংসদের নিয়ে বৈঠক আছে, সেটা সেরে রাতে ফিরে আসবো।'
গুজরাতের দ্বিতীয় দফায় ভোটে রোড শোয়ের মাধ্যমে ভোট দিতে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই অভিযোগে সরব বিরোধীরা। এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এটা নির্বাচন কমিশনের দেখার কথা। ভোটের দিন রোড শো নিষিদ্ধ। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপর মারধরের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ঘটনার সময় দু'জন জুনিয়র ডাক্তার ছিল। একটা যুবক মারা গেলে বা দুর্ঘটনায় পড়লে একটু মন খারাপ থাকে। কিন্তু এভাবে করা উচিৎ না। আমি কষ্ট করে এসএসকেএম ট্রমা সেন্টার বানিয়েছি। রাতে মৃতদেহের পরিবার ঢুকে দু'জন জুনিয়র ডাক্তারকে নিগ্রহ করেছি। এই ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুপার এবং পুলিসের সঙ্গে কথা হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের নিরাপত্তা পুলিস দেবে।'
টাকি সফরের (Taki Tour) দ্বিতীয় দিনে অভিনব জনসংযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee)। প্রথমে ইছামতীর (Ichamati River) বুকে লঞ্চে সফর। তারপর হাসনাবাদ ব্লকের খাঁ পুকুর এলাকার একটা প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে খোশ গল্প এবং প্রগতি সংঘের মাঠে গিয়ে স্থানীয়দের শীত পোশাক বিতরণ। খেজুর পাতা দিয়ে চাটাই তৈরি শেখা এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে বসেই ট্যাংরা মাছের ঝোল, আলু আর কচুর তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়া (Lunch at Hasnabad)। এভাবেই পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) মাস কয়েক আগে জনসংযোগে জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর 'দিদি'কে হাতের কাছে পেয়ে নিজেদের অভাব-অভিযোগও জানালেন গ্রামবাসীরা।
এদিন খাঁ পুকুরের যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন, সেখানকার এক কর্মী এলাকার রাস্তার উন্নয়ন এবং জলের জোগান প্রতুল রাখার আবেদন জানান। উনি এসেছেন ভালো লেগেছে, স্কুল পরিদর্শন করে গিয়েছেন ভালোই লাগছে। ক্লাসরুমে ঢুকে মুখ্যমন্ত্রী বাচ্চাদের হাতে জামাকাপড় তুলে দিয়েছেন এবং কিছু প্রশ্ন করেন। এদিন জানান প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক। বুধবার যে বাড়ির উঠোনে বসে মুখ্যমন্ত্রী ভাত খেয়েছেন, সেই বাড়ির গৃহকর্ত্রী নমিতা মণ্ডল জানান, মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন খুব খুশি হলাম। উনি বলেছেন তরকারি রান্না খুব ভালো হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই এলাকা বন্যায় প্রতি বছর বাঁধ ভাঙে, সেই সমস্যা সমাধানে সুন্দরবনের জন্য মাস্টার প্ল্যান জমা দিচ্ছি। প্রকৃতি আমাদের হাতে নেই, তাই বাঁধ ভাঙার সমস্যা নিজে ঘুরে দেখতে এসেছি। কীভাবে আপনাদের ভালো হয়, মঙ্গল হয় দেখতে এসেছি। রাজ্য সরকার ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়েছে ভাঙন রোধে।
এদিকে, হাসনাবাদের খাঁ পুকুর গ্রামে নমিতা মণ্ডলের বাড়িতে মধ্যহ্ন ভোজ সারেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত বিষয় তিনি জানান, এত রান্না কীভাবে করলাম, জানতে চাইলেন। পাশাপাশি পানীয় জলের সমস্যা, বাঁধ ভাঙার সমস্যা, ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর ভেঙে যাচ্ছে, এসব বললাম। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন দুয়ারে সরকারে আবেদন করুন, ধীরে ধীরে সব হবে। গ্রামেরই এক প্রবীণ সদস্য জানান, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীকে ঘরের কথা বলেছি, পানীয় জল, চালের কথা বলেছি। সময়ে বিধবা ভাতা পাই, সেটাও জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ঠিক আছে ঘর হবে।'
সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় (Xaviers University) থেকে সাম্মানিক ডিলিট (D litt) পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সম্মান নিতে সম্মতি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও (CM Mamata)। জানা গিয়েছে, আগামি ৬ ফেব্রুয়ারি সাম্মানিক ডিলিট পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ডি লিট দিতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মুখ্যমন্ত্রীকে ডি লিট দিয়েছিল। তৎকালীন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির হাত থেকে সেই সম্মান গ্রহণ করেছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। যদিও সেই সম্মান প্রদান নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে।
এদিকে, শুক্রবার সংবিধান দিবসের একদিন আগে বিধানসভা নজিরবিহীন সৌজন্য দেখলো। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে বিধানসভায় তাঁর ঘরে গিয়ে দেখা করলেন শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির দুই বিধায়ক। ছিলেন অগ্নিমিত্রা পল এবং মনোজ টিগ্গা। যদিও এটা নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলে সংবাদ মাধ্যমের সামনে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা।
যখনই আমরা নতুন কিছু করতে চাই, লোক নিতে চাই, কেউ না-কেউ কোর্টে যাচ্ছে। স্টে অর্ডার নিয়ে চলে আসছে। কোর্টে লড়তে লড়তে সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় (Bengal Assembly) দাঁড়িয়ে নিয়োগে দুর্নীতির (Corruption Cases) অভিযোগে চলা একাধিক মামলার প্রেক্ষিতে বিরোধীদের বিরুদ্ধে এভাবে সরব মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। এই নিয়োগ দুর্নীতির জেরে জেলবন্দি তৃণমূলের একদা সেকেন্ড ইন কমান্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলবন্দি একাধিক শিক্ষাকর্তা এবং মিডলম্যান। প্রায়ই চাকরির দাবিতে পথে নেমে আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভায় ফের পরোক্ষে বিরোধীদের কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী
এদিন বিধানসভায় তিনি দুয়ারে রেশন প্রকল্পের পক্ষেও জোরালো সওয়াল করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'বিচারের বাণী যাতে নিভৃতে না-কাঁদে। আমি বিধানসভার মাধ্যমে কোর্টের কাছে আবেদন করছি যাতে মানুষের সুবিধা হয়। পাবলিক চায় দুয়ারে রেশন। কোর্ট দুয়ারে রেশনে বাধা হল। দুয়ারে রেশনের জন্য সরকার ডিলারদের আলাদা খরচ দিচ্ছে। ৪৮০ কোটি টাকা ইনসেন্টিভ হিসাবে দেওয়া হচ্ছে দুয়ারে রেশনের জন্য। ডিলারদের সঙ্গে আমি নিজে মিটিং করেছি। ৯৯% লোক ভালো থাকলে, ১% লোক মনে করে আমি একা খাব। ফল সবাইকে খেতে হয়। আমি যত দূর যেতে হয় যাব। কারও গায়ের জোরের কাছে মাথা নত করব না। দুয়ারে রেশন হবেই।'
এমনকি রাজ্যের পর্যটন শিল্পের আমূল বদল তাঁর আমলেই। এদিন বিধানসভায় দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, 'সবকিছু আন্তর্জাতিক হয়? তাহলে স্থানীয়রা কোথায় যাবেন? আজ বিশ্ব বাংলা সারা পৃথিবীর ইউনাইটেড ফোরাম বেস্ট টুরিস্ট এরিয়া হিসাবে চিহ্নিত। কালচারাল, এডুকেশন ট্যুরিজম আছে। দক্ষিণেশ্বর, কনক দুর্গা, কালীঘাট নতুন করা হয়েছে। জয়রামবাটি-কামারপুকুর থেকে উত্তর-দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে রাস্তা তৈরি করেছি।
চন্দন নগরে লাইটিং হাব হচ্ছে। মাহেশের রথ আমরা চালাই, ফুরফুরা শরীফ, তারকেশ্বর করে দিয়েছি। বাকিটা কী থাকল? অযোধ্যা পাহাড়ে ৬টা রাস্তা নতুন করে করা হয়েছে। নতুন হোটেল হয়েছে। পর্যটন দফতর দেখুক, আরও উন্নত করতে হবে। হোম স্টে-তে জোর দিতে হবে। ১৯৬৫-টি হোম স্টে গোটা রাজ্যে করতে পেরেছি। ঝাড়গ্রামের রাজবাড়ি দেখে আসুন।'
সম্প্রতি কলকাতায় গঙ্গা আরতির জায়গা খুঁজতে পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দির এবং গঙ্গার ঘাট, এই দুয়ের মিশেলে তিলোত্তমার বুকে গঙ্গা আরতির জায়গা বানাতে উদ্যোগী খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সরকারি একাধিক প্রকল্প এবং উদ্যোগ নিয়ে সরব হলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
সরকারি পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে ফের সিএএ এবং এনআরসি (CAA NRC) বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় বলেন, 'কখনও কখনও ভাঁওতা দেওয়া হয় তুমি নাগরিক নয়। নাগরিক না হলে সে ভোট দিল কী করে? আমার ভোটে তুমি প্রধানমন্ত্রী, আর আজকে বলছো তোমাকে নাগরিক অধিকার দেব। তুমি এটা অসম্মান করছো না? ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়ে, কলেজে পড়ে, কেউ রিক্সা চালায়, কেউ দোকানে কাজ করে, কেউ দোকান চালায়, কেউ চাষের কাজ করে। তাঁরা এই অধিকার কোথা থেকে পাচ্ছে? তাঁদের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, ভোটাধিকার আছে। তাঁরা ভোটও দেয়।'
এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়েও এদিন সুর চড়া ছিল তাঁর। ভোটার লিস্টে নাম তোলার সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে মমতা বলেন, 'মনে রাখেবন এখন ভোটার লিস্টে নাম তোলার কাজ চলছে, ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এনআরসির নামে আপনাদের নাম যেন কেউ কেটে না দিতে পারে। এখন থেকে আপনাদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের নাম তুলে আসবেন। দেখে আসবেন আপনার নাম রয়েছে কিনা। অনেক সময় আপনার নাম ঠিক থাকবে, স্বামীর নাম ভুল, তাহলে সেই নাম কেটে দাও। অসমে দেখেছিলেন কত লক্ষ মানুষকে নাম কেটে বাদ দিয়েছিল, আমরা কত বড় আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। এনআরসি লজ্জা, আবার একটা পরিকল্পনা শুরু করেছে।'
তাঁর আবেদন, 'বাংলার সব মানুষ নিজেদের নাম ভোটার লিস্টে তুলুন। নয়তো বলবে আপনি এনআরসি ডিটেনশন ক্যাম্পে চলে যাবেন। তাই ভোটার লিস্টে তড়িঘড়ি নাম তুলে নেবেন, যারা নতুন ভোটার হবে তাঁরাও নাম তুলুন।' পাশাপাশি এদিন তিনি রাজ্যের বকেয়া টাকা এবং সার নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'সার নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। চাষীরা সার পাচ্ছেন না, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপার। সার আমরা তৈরি করি না, কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে নিই। চাহিদা মতো কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের সার দিচ্ছে না। চলতি বছর তিন বার চিঠি লেখা হয়েছে কেন্দ্রকে। কেন্দ্রের সার উৎপাদনের জায়গা আছে, আগামি দিনে সার উৎপাদনের কথা রাজ্যকে ভাবতে হবে, এভাবে অসহযোগিতা চললে। রাজনৈতিকভাবে মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু একশো দিনের কাজের টাকা দেব না, সার দেব না এসব কী!'
মুরগির মাংস (Chicken) এবং আলুর দামবৃদ্ধি নিয়ে নবান্নে উদ্বেগ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata)। দাম নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বৈঠকে নবান্নে (Nabanna) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বেগের সুরে প্রশ্ন, 'চিকেনের দাম একটু বেশি আছে, দাম কমানোর ব্যবস্থা করো। চিকেনের দাম এতো বেশি কেন? আমি পোল্ট্রি করে দিচ্ছি, ইনসেন্টিভ দিচ্ছি, তাও এতো দাম!' তবে তিনি বাজারে ডিমের দাম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ডিম উৎপাদন বাড়াতে পরামর্শ দেন আধিকারিকদের।
এদিন আলুর দাম নিয়ে বাজার-ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'কাল পর্যন্ত বাজারে আলু কেজি প্রতি ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হোলসেল বাজারে দাম ৯-১০ টাকা/কেজি। কাল পর্যন্ত ২৫ টাকায় আলু বিক্রি হয়েছে, আজ বৈঠক আছে বলে দাম কমেছে। মানুষ একটু আলুসেদ্ধ ভাত খায়। আপনারা মজুত আলু বের না করলে আমরা বেঁচে দেব, যাতে আলু মানুষের কাছে পৌঁছয়। কৃষকদের দিকটা ভাবতে হবে।'
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূর (President Draupadi Murmu) উদ্দেশে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় করেছেন মন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil Giri)। এবার তাঁর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার আবেদন কলকাতা হাইকোর্টে (High Court)। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের ও দ্রুত শুনানির আবেদন। এই আবেদনে সাড়া দিয়ে মামলা দায়েরের অনুমতি দিলেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মন্ত্রী অখিল গিরিকে সরানো হোক মন্ত্রিত্ব থেকে সঙ্গে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিক আদালত। যদিও অখিল গিরির মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই নবান্নে (Nabanna) মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)।
এই মর্মেই মামলা দায়েরের আবেদন, যা গ্রহণ করেছে আদালত। এই প্রসঙ্গে মামলাকারী আইনজীবী বলেন, 'এই মন্তব্যের পর রাজ্য সরকার কোনও আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানি না। ও অবলীলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাষ্ট্রপতি দেশের সাংবিধানিক প্রধান। সব সাংবিধানিক সংস্থার প্রধানে নিয়োগ কর্তা। তাঁকে উদ্দেশ্য করে এভাবে বলা, আদিবাসি সমাজের বিরুদ্ধে বলা, এগুলো এক ধরনের হেট স্পিচ।'
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর উদ্দেশে নন্দীগ্রামের সভায় ঠিক কী বলেছিলেন অখিল গিরি? তিনি বলেছিলেন,'আমরা তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা? আমরা রূপের বিচার করি না।' আর শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে এভাবেই আলটপকা মন্তব্য করে বসেন অখিল গিরি। যদিও পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের এই নেতা ভুল বুঝতে পেরে বলেন, 'আমি দেশের সংবিধান এবং সংবিধানের রক্ষাকর্তা দেশের রাষ্ট্রপতিকে সম্মান করি। আমাকে নিয়ে যা বলা হয়েছে, সেই রাগে আমি এই মন্তব্য করেছি, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।'
তারপর থেকেই বেড়েছে রাজনৈতিক উত্তাপ। ইতিমধ্যে রাজ্যের একাধিক জেলায় অখিল গিরির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে বিজেপি। তাঁর বরখাস্ত চেয়ে সোমবার রাজ ভবন অভিযান করে বিজেপি বিধায়করা। নেতৃত্বে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
পাশাপাশি রাজ্যের আদিবাসী সমাজের তরফেও এদিন রাজ্যের একাধিক জায়গায় প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়েছিল। যদিও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রীর করা এই মন্তব্য সমর্থন করেননি। তিনি জানান,'রাষ্ট্রপতিকে অবমাননাকর মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। আমি এই মন্তব্যের নিন্দা করি। আমি আমার মন্ত্রীর হয়ে ক্ষমা চাইছি। অখিল গিরিকে দল থেকে সতর্ক করা হয়েছে। দেশের রাষ্ট্রপতিকে আমরা সবাই সম্মান করি। এই ধরনের মন্তব্য যেন ভবিষ্যতে না করা হয়।'
মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চাকরি ফিরিয়ে দিলেন মালবাজারের (Malbazar) হড়পা বানে নিহতের ভাই। ইতিমধ্যেই সেই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে (Chief Minister) চিঠি পাঠিয়েছেন সুদীপ পোদ্দার নামে ওই যুবক। গত ৫ই অক্টোবর ঠাকুর বিসর্জনের দিন মালনদীতে হড়পা বান বিপর্যয়ে দুই শিশু সহ ৮ জনের মৃত্যু (death) হয়। তার মধ্যে একজন ছিলেন সুস্মিতা পোদ্দার। সুদীপ তাঁরই ভাই। অক্টোবরে উত্তরবঙ্গ সফর চলাকালীন মালবাজারে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মৃতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন তিনি। সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি কী প্রয়োজন সেই কথাও জানতে চান। এরপরের দিন অর্থাত্ ১৮ই অক্টোবর প্রশাসনিক বৈঠক করে মৃতদের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সেই মোতাবেক ইতিমধ্যেই কয়েকজন সেই কাজে নিযুক্তও হয়েছেন। একইসঙ্গে মৃত সুস্মিতা পোদ্দারের ভাই, সুদীপ পোদ্দারকে পুলিসের হোমগার্ডে চাকুরির জন্য মনোনীত করা হয়। কিন্তু তাঁর হাতে পুলিস সুপার, হোমগার্ডের তরফে ইস্যু করা যে এনরোলমেন্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হয় তাতে উল্লেখ রয়েছে "ভলেন্টিয়ার ইন নেচার" এবং তা সম্পূর্নরুপে অস্থায়ী বলে দাবি সুদীপের। পাশাপাশি সুদীপের দাবি, ওই কাগজে উল্লেখ রয়েছে "এজ এন্ড হোয়েন নিডেড"। অর্থাৎ প্রয়োজন পড়লে তবেই কাজে ডাক পাবেন। এরপরই চাকরি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুদীপ।
মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে সুদীপ জানিয়ে দিয়েছেন অস্থায়ী হোমগার্ডের চাকরি নিতে অরাজি তিনি। পাশাপাশি, তিনি চিঠিতে এও আবেদনে জানিয়েছেন, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী মালবাজার শহরে কোনও সরকারি দফতরে স্থায়ী চাকরির সুযোগ দেওয়া হলে তিনি করতে রাজি রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠির প্রতিলিপি, জলপাইগুড়ি জেলাশাসক, জেলা পুলিস সুপার, পুলিস সুপার (হোমগার্ড), মালবাজারের মহকুমাশাসক, মালবাজার মহকুমা পুলিস আধিকারিকেও পাঠিয়েছেন। তাঁর এমন সিদ্ধান্তে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
এদিকে সুদীপের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন জলপাইগুড়ির বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদের বক্তব্য, মৃত্যুর কোনও ভর্তুকি হয়না। তারপরও যদি মৃতদের পরিবারের পাশে দাড়াতে চান মুখ্যমন্ত্রী, তাহলে যোগ্যতা অনুযায়ী স্থায়ী সরকারি চাকরি দেওয়া হোক। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যুব তৃণমূলের জেলা সম্পাদক সৈকত চ্যাটার্জীর দাবি, কেউ ভুল বুঝিয়ে থাকতে পারে ওই পরিবারকে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের সঙ্গে কথা বললেই সমস্যা মিটে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বারে নিত্যপ্রয়োজনীয় (Essential Commodity Price Hike) দ্রব্যের দাম কমাতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৪ নভেম্বর বিকেল ৪টের সময় নবান্নে এই বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে যোগ দেবেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, উদ্যানপালন মন্ত্রী সুব্রত সাহা, মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যে চাল,ডাল,তেলের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে, এমনটাই নবান্ন সূত্রে খবর। বাজার দর আয়ত্ত্বে রাখতে একগুচ্ছ নির্দেশ মন্ত্রীদের দিতে পারেন মমতা। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সমালোচনার সুরে বিঁধেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানান, তৃণমূল কংগ্রেস আপ্রাণ চেষ্টা করলেও দাম কমাতে পারব না। বিভিন্ন পণ্যের উপর এত বেশি ট্যাক্স বিভিন্ন রাস্তায় দিতে হয়, তা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দলের নেই। মুখে কেন্দ্রের বিরোধিতা করলেও, দলের উপর রাশ নেই সরকারের। যেভাবে তোলাবাজি চলছে, তাতে ঘুরিয়ে চাপ বাড়ছে মানুষের উপর।
আগামি দিনে বিজেপি (BJP) বাংলায় অশান্তি তৈরি করতে পারে। রাজ্য মন্ত্রিসভার (State Cabinet) বৈঠকে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। তাই মমতা মন্ত্রিসভার সদস্যদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের। রাজ্যজুড়ে নাকা চেকিং বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের (Nabanna) একটি সূত্র মারফৎ এই খবর। মূলত, নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সতর্ক থাকতে মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে।
পাশাপাশি এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার থেকে বিধবা ভাতার প্রাপকরাও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাবেন। এমনকি বুধবারের রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত, এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে করতে হবে যেকোনও প্রকল্পের ঘোষণা।
পরিবহন দফতর নবান্নকে না জানিয়ে বিভিন্ন রুটে বাস চালিয়ে দিচ্ছে, এটা করা যাবে না। ১০০ দিনের কাজে যারা যুক্ত তাদের অন্য দফতরের কাজে ব্যবহার করতে হবে। এমনকি, মেলায় খরচ কমাতে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। মেলার খরচ কমিয়ে ১০০ দিনের কাজে টাকা ব্যবহারের নির্দেশ দেন তিনি।
এদিকে, ক্যাবিনেট বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর অশান্তি পাকানোর আশঙ্কা প্রসঙ্গে বিজেপি জানিয়েছে, কোনও দলকে ভাঙানো যায় না। দল নিজের মতো করে চলে। সরকার যেভাবে চলছে তাতেই ডিসেম্বরের পর সরকার চালানো মুশকিল। বিজেপি এভাবে সরকার ভাঙানোর পক্ষপাতী নয়। বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বাস্তব চিত্রটা জানেন। উনি দল এবং সরকার তৈরি করেছেন। একা সামনে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিজেপি কোনওদিন এই সরকারকে অগণতান্ত্রিক ভাবে ফেলার কথা বলেনি। সরকার যেভাবে চলছে, তাতে রাজ্যে চরম নৈরাজ্য। হেভিওয়েট মন্ত্রীরা গ্রেফতার হচ্ছেন, কেউ গ্রেফতারির জায়গায় চলে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যাচ্ছে। একটা অরাজক অবস্থা তৈরি হচ্ছে, এই সরকার, এখন সরকারে নেই। অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে তৃণমূল আর টিকে থাকতে পারবে না, সেটা ইঙ্গিত পেয়েই এভাবে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।'
কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর খোঁচা, 'সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুন মুখ্যমন্ত্রী। এত বড় ঘটনায় একা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী। উনি আগে দলকে সামলান, যারা রাজ্যজুড়ে জহ্লাদরাজ কায়েম করেছে তাঁদের সামলান। মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত করতে না পেরে এসব বাহানা তৈরি।'
সিপিএম-র সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, 'বিজেপি কী কী করতে পারে, ভালো জানেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। উনি বিজেপির সব অপরাধের শরিক। কারণ বিজেপিকে স্বাভাবিক শরিক মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।'
কীভাবে একটা নির্বাচিত সরকার পড়ে যেতে পারে? এই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, 'কী করে সরকারের পতন হবে? ভারতের আইন, সংবিধান আছে, একজন নির্বাচিত সরকার কীভাবে এভাবে পড়ে যেতে পারে? দেশে সংবিধান, আইন ব্যবস্থা নেই? এসব প্রচার করে বিজেপি হাওয়া গরম করছে।'
একদিনের সফরে বুধবার চেন্নাই (Chennai Visit) উড়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। তার আগে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মোরবি ব্রিজ-কাণ্ডে (Morbi Bridge Incident) মৃতদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি কোনও সমালোচনা করতে চাই না। মানুষের জীবন রাজনীতির থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে সহমর্মী। আর কত মৃতদেহ পাওয়া যাবে জানি না। আমাদের একজনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনা কোনও সরকারের দায় নয়। কিন্তু যাদের গাফিলতিতে দুর্ঘটনা ঘটে, তাঁরা অবশ্যই অপরাধী।'
তিনি জানান, যারা এই ধরনের ব্রিজ বানায়, যারা বরাত পায় তাঁরাই অপরাধ করে। ভোটে ব্যস্ত থাকার জন্য গুজরাত সরকার দুর্গতদের সেভাবে সাহায্য করতে পারেনি। কিন্তু অসম্পূর্ণ ব্রিজকে, সম্পূর্ণ বলে চালিয়ে দেওয়া এক ধরনের অপরাধ। আমার মনে হয় সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতে বিচার বিভাগীয় কমিশন বানিয়ে যারা অভিযুক্ত, বিশেষ করে ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। এখন কেন সিবিআই-ইডি তদন্ত হবে না। ওরা শুধু আম আদমিকে হেনস্থা করে। কিন্তু যারা আসল অপরাধী, তাঁদের এভাবে ছেড়ে রেখেছে।
মোরবি ব্রিজ-কাণ্ডের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সারা বাংলাজুড়ে দেড় হাজার ব্রিজ রয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ, অভিজ্ঞতা না থাকলে সেতু সংস্কার করা উচিৎ নয়। আমি এই ঘটনায় খুব ব্যথিত, রাজনীতি করতে চাই না। গুজরাত আমিও যেতে চাই কিন্তু বলা হবে রাজনীতি করছি। আমাদের একজনের দেহ ভিখারির মতো পাঠিয়ে দিয়েছে।'
গুজরাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু শরণার্থীদের নাগরকিত্ব প্রসঙ্গে এদিন মমতা বলেন, 'পুরোটাই রাজনীতি। আমাদের এখানে এসব হতে দেব না। আমরা এখানে সবাই নাগরিক।'পাশাপাশি একদিনের চেন্নাই সফর প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যপালের পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ রক্ষা করতে চেন্নাই যাচ্ছি। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনের সঙ্গেও দেখা হবে। দু'জন রাজনৈতিক ব্যক্তি মুখোমুখি হলে রাজনৈতিক আলোচনাও হবে। ২০২৪-এ বিরোধী ঐক্য কী অবস্থায় রয়েছে, সব আঞ্চলিক দলের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারব।
সরকারি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে নভেম্বরে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister) নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। সূত্রের খবর, মাসের শুরু দিকে আসছেন শাহ এবং শেষের দিকে আসবেন মোদী। আলোচ্য বিষয়, দুজনের কর্মসূচিতেই থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
জানা গিয়েছে, শাহ ৫ নভেম্বর পূর্বাঞ্চল পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে একটি বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় আসবেন। ওই বৈঠকে পরিষদের ভাইস চেয়ারপার্সন হিসেবে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন নীতিশ কুমার। ফলে তাঁর সঙ্গেও দেখা হয়ে যাবে মুখ্যমন্ত্রীর।
'নমামি গঙ্গা' কর্মসূচি উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদীর কলকাতায় আসার কথা নভেম্বরের শেষে। দিল্লিতে মোদী-মমতা বৈঠক হয়েছে মাসখানেক আগে। তারপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় নানারকম চর্চা। এরপরে সম্ভবত এই কর্মসূচি হবে তাঁদের দু’জনের মুখোমুখি সাক্ষাৎ।
এর মধ্যেই ২ নভেম্বর মমতার চেন্নাই সফরও আছে। বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যপাল লা গণেশন মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতেই চেন্নাই যাচ্ছেন বলে খবর। চেন্নাই পৌঁছে প্রথমেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ডিএমকে নেতা এমকে স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানা গিয়েছে। আপাতত সব মিলিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা তুঙ্গে।
উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে জানবাজারে পুজো উদ্বোধনে যান মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। সেই ফাঁকেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর চলাকালীন ঝুলে থাকা কাজে গতি আনতে একাধিক ফাইলে সই করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর যুবভারতীতে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে করুণাময়ীতে (Karunamoyee) চলা টেট ২০১৪ নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের (TET Agitation) অনশন নিয়ে সেভাবে কিছু বলতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি জানান, আমি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানি না। ব্রাত্য বেশি ভালো বলতে পারবে। কারণ দফতরটা ওর। আমি এবিষয়ে কোনও মন্তব্যই করব না। তবে ন্যায্য দাবিতে যারা আন্দোলন করেন আমি তাঁদের ভালোবাসি। কোর্ট মামলা চলছে, আমরা কোর্ট নির্দেশ মেনে চলছি। আমি চাই না কারও চাকরি যাক। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আমরা খুশি। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
বিজেপির শমীক ভট্টাচার্যের মন্তব্য, 'আমরাও চাই সব শূন্যপদে নিয়োগ হোক। শিক্ষার অধিকার মৌলিক অধিকার। সব দফতরের ঊর্ধ্বে যিনি আছেন, তিনি এভাবে দায় ঝাড়তে পারেন না। তিনি এই জটিলতার সমাধান করুন।' তৃণমূলের এক নেতা চাকরিপ্রার্থীদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীও চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু এই জটিলতায় ধীরে ধীরে সরকারি স্কুলের হাল বেহাল হয়ে পড়ছে।'
২০১৪ টেট আন্দোলনকারী সন্তু দাস জানান, আমরা আশাবাদী ২০২০ সালে নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেই আশ্বাস তিনি রাখবেন আমরা সেই আশা রাখি। পাশাপাশি সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'উনি কাটমানি, পুজো উদ্বোধন, উৎসব ছাড়া কিছুই জানেন না। যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীর জানার পরিধি স্বল্প তাই এতকিছু হয়ে যাওয়ার পরেও কিছুই জানেন না। মিথ্যাচার করে মানুষকে বিপদে ফেলছেন মুখ্যমন্ত্রী।'