ডাক্তারি পরীক্ষায় রিজার্ভ পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ভুয়ো শংসাপত্র। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন দুর্নীতির আবহেই ডাক্তারি পরীক্ষায় এমবিবিএস-এর রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র জমা দিয়ে নিয়োগের অভিযোগে আদালতে মামলা রুজু হয়েছিল। এই ঘটনাতেই এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
প্রসঙ্গত, এর আগেও ১৪ জন চিকিৎসকের নিয়োগ বাতিল করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরে আবারও মিলেছে জাতিগত ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়ে নিয়োগের তথ্য প্রমাণ। আর তারপরেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।
এদিন এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতির মন্তব্য, রাজ্য বিষয়গুলিকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। শেখ শাহজাহানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বিচারপতির মন্তব্য, আপনারা শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পেরেছেন কি? আর তাই এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আমার রাজ্যের ওপর ভরসা নেই বলেই জানান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আর এরপরেই, কারা এই ভুয়ো শংসাপত্র ইস্যু করেছে, এর নেপথ্যে কোনও আর্থিক লেনদেন আছে কি না, তা অবিলম্বে সিবিআইকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এরই সঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এর উদ্দেশ্যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, সব তথ্য সিবিআই কে হস্তান্তর করতে হবে। এমনকি শেখ শাহজাহানকে পুলিসের গ্রেফতার করতে না পারা। কেন্দ্রীয় সংস্থার গায়ে হাত তোলার ঘটনা নিয়ে রাজ্যের ওপর যে তাঁর কোনও ভরসা নেই, তা বলেও ভর্ৎসনা জানান রাজ্যের প্রতি। সঙ্গে জানান, আর্থিক দুর্নীতি হলে সেটাও সামনে আসা প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, এর আগেও মেডিক্যাল নিট-এ ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে নিয়োগের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এডুকেশন বোর্ডের ডিরেক্টরকে ডেকে পাঠিয়ে বিচারপতির প্রশ্ন করেছিলেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন হতেই পারে, কিন্তু সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কেন তদন্ত করেনি বোর্ড? সেদিনই সব পক্ষের বর্ণনা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, আদালত মনে করলে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেবে। তাঁর সেই ইঙ্গিতেই বুধবার সিলমোহর দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এবার মেডিক্যাল নিট-এ ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে নিয়োগের ঘটনার তদন্তের দায়ভার উঠল সিবিআইয়ের হাতে।
যদিও সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশে এবার স্থগিতাদেশ দিলেন বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়ে সিবিআই আধিকারিককে এজলাসে ডেকে পাঠানোর পর, সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এদিনই বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। তাঁর অভিযোগ, সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁর কোনও কথাই শোনেনি। তারপরেই, সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও, যেহেতু রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশের কোনও অর্ডার কপি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে পেশ করতে পারেনি, তাই পূর্ব রায়মাফিক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইয়ের হাতে যাবতীয় নথি তুলে দিলেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায়। এরপর আদালতের রায় মামলা কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটাই দেখার।
রাজ্যের শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। সোমবার আদালতে শিক্ষা দুর্নীতির চারটি মামলার তদন্ত শেষ করে চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিট চার্জশিটেই নাম রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এছাড়াও পার্থর প্রাক্তন সচিব সুকান্ত আচার্য (ডব্লুবিসিএস), এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন শর্মিলা মিত্র'র নাম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সিবিআই সূত্র জানা গিয়েছে, নবম-দশম, একাদশ - দ্বাদশ, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। এসএসসির একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এদিন পেশ করা চার্জশিটে অভিযুক্তরা হচ্ছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এসএসসি-র প্রাক্তন কর্তা সুবীরেশ ভট্টাচার্য, ওএমআর শিট প্রস্তুতকারক সংস্থা নাইসার কর্তা পুনীত কুমার, পঙ্কজ বনশাল, এজেন্ট প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিং, প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী, অরুণ মাইতি, অশোক মাইতি।
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় পেশ করা চূড়ান্ত চার্জশিটে নতুন অভিযুক্তর তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এসএসসি-র প্রাক্তন আধিকারিক সৌমিত্র ঘোষ, নাইসা, পুনীত কুমার, পঙ্কজ বনশাল। এমনকি অভিযুক্ত হিসেবে কয়েকজন শিক্ষকের নামও রয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, সৌমিত্র ঘোষ, সুবীর ঘোষ, দিলীপ ভৌমিক-এর নাম আছে। এসএসসির গ্রুপ ‘সি’ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মোট ২৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। এই মামলায় আগেই দু’দফায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সিবিআই সূত্রে আরও খবর, চার্জশিটে নাম রয়েছে এসএসসির প্রাক্তন আধিকারিক পর্ণা বসু-রও।
নিয়োগ দুর্নীতির চারটি মামলার তদন্ত শেষে চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। সোমবার নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি'র মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করা হয়েছে আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে। আর এই চারটি মামলাতেই নাম জড়াল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তবে চার্জশিট জমা পড়লেও এখনও সেই চার্জশিট নিয়ে শুনানি বা কোনও নির্দেশ হয়নি আদালতে। ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিপোর্ট দেওয়ার আগে এই চারটি মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই।
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, জানুয়ারির নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষ করে সোমবার চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে এক সঙ্গে চারটি মামলায় চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। আগামী সপ্তাহে প্রাথমিক মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ হতে পারে বলেই খবর। সোমবার নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডিতে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে চার্জশিট পেশ করছে সিবিআই। নবম-দশম মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ৭ জনের নাম রয়েছে বলে খবর। গ্রুপ-সি মামলার চার্জশিটে রয়েছে শিক্ষাদফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নাম। এছাড়াও চার্জশিটে রয়েছে একাধিক এজেন্টের নাম। রয়েছে একাধিক ব্যক্তির বয়ানও।
টাকা নিয়ে প্রশ্ন কাণ্ডের জের! একের পর এক বিপদে পড়েই চলেছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এবারে তাঁর প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহাদ্রাই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও সিবিআইয়ের কাছে মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, মহুয়া তাঁর উপর অবৈধভাবে নজরদারি করছেন। এমনকি বাংলার পুলিসের পদস্থ কর্তাদের কাজে লাগিয়ে তিনি এসব করছেন বলে অভিযোগ করেছেন জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। শুধু তাই নয়, তিনি দাবি করেছেন যে, এর আগেও মহুয়ার আরও এক প্রাক্তন বন্ধুর উপরও এভাবেই নজর রাখতেন প্রাক্তন সাংসদ।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং সিবিআইয়ের কাছে জমা পড়া অভিযোগপত্রে দেহাদ্রাই দাবি করেছেন, কলকাতা পুলিসের সাহায্য নিয়ে মহুয়া মৈত্র তাঁর ফোনের সমস্ত ডিটেলস পাচ্ছেন ও লোকেশন ট্র্যাক করছেন। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) অ্যাডভোকেট জয় অনন্ত অভিযোগ করেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) নেতা মহুয়া মৈত্র পশ্চিমবঙ্গ পুলিসের সহযোগিতায় তাঁর উপর অবৈধ নজরদারি চালাচ্ছেন। সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) ডিরেক্টর প্রবীন সুদ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আরও লিখেছেন যে, একাধিক সময় তিনি অনুভব করেছেন তাঁর গাড়িটিকে ফলো করা হচ্ছে।
এছাড়াও জয় অনন্ত তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মহুয়ার ওপর এক প্রাক্তন বন্ধু সোহান মুখার্জির কথা। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন মহুয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকাকালীন তিনি একাধিকবার দেখেছেন সোহান মুখার্জি কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, এই সমস্ত বিষয়গুলি মহুয়া ট্র্যাক করতেন। এবং এই কাজে তাঁকে সাহায্য করতেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিসের উচ্চপদস্থ কয়েকজন আধিকারিক। মহুয়াও একাধিকবার এই বিষয়ে তাঁকে জানিয়েছেন এবং এই সমস্ত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলেও চিঠিতে জানিয়েছেন জয় অনন্ত দেহাদ্রাই।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ডেডলাইন বেধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত সেই নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শেষ করতে হবে তদন্তকারীদের। ৯ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা করতে হবে সিবিআইকে। আর এই পরিস্থিতিতে এখনও অধরা নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক ফাইল ও নথি। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে একাধিক ফাইল চেয়ে পাঠানো হয়েছে শিক্ষা দফতরের কাছে। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগ, এখনও সেই সমস্ত ফাইল ও নথি এসে পৌঁছয়নি সিবিআইয়ের হাতে। ফলে এবার শিক্ষা দফতরের উপরে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।
সিবিআইয়ের হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। কিন্তু শিক্ষা দফতরের এহেন অসহযোগিতায় তদন্তে বিঘ্ন ঘটছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করতে বেগ পেতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের। শিক্ষা দফতরের উপর তাই বেজায় চটেছে সিবিআই গোয়েন্দারা। না পাওয়া নথি ও তথ্য পেতে এখন সিবিআই কী পথ বেছে নেয় সেটাই দেখার। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা এখনও রাস্তায়। তাদের চাকরির ব্যবস্থা এখনও করতে পারে নি সরকার। শিক্ষা দফতরের উপর এধাধিক অভিযোগ।
এই পেক্ষাপটে শিক্ষা দফতেরের কি উচিত ছিল না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির খন্ডন করা? না কি সর্ষের মধ্যেই ভৃত লুকিয়ে আছে? আর যে কারণে তথ্য প্রমাণ আড়াল করতে চাইছে শিক্ষা দফতর? প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।
এবারে কয়লা পাচার কাণ্ডে (Coal Scam) সুপার অ্যাকশন মোডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মোট ১২ টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে সিবিআই (CBI)। ভবানীপুর, আসানসোল, মালদা সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। জানা গিয়েছে, লালা ওরফে অনুপ মাঝি ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের বাড়িতে হানা দিয়েছে সিবিআই। ভবানীপুরে লালা ঘনিষ্ঠ স্নেহাশীষ তালুকদার ও দুর্গাপুরে সৌরভের ভাড়া বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে সিবিআই। আবার কলকাতায় এক সিআইএসএফ কর্মী শ্যামল সিংহের বাড়িতেও হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবারে যে যে ব্যক্তির বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই-এর স্ক্যানারে ছিল। ফলে এদিন তাঁদের বাড়ি বাড়ি হানা দিয়েছে সিবিআই আধিকারিকরা। লালা ওরফে অনুপ মাঝির সঙ্গে কোন সূত্রে ঘনিষ্ঠ এই ব্যক্তিরা, তা খতিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে। লক্ষ্মীবারে অনুপ মাঝি ওরফে লালা ঘনিষ্ঠ স্নেহাশীষ তালুকদারের ভবানীপুরের ৪৯এ গিরিশ মুখার্জী রোডের ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। অনুপ মাঝির হয়ে হ্যান্ডেলারের কাজ করত স্নেহাশিস তালুকদার, সিবিআই সূত্রে খবর।
আবার প্রাক্তন সিআইসিএফ অধিকর্তা শ্যামল সিংহের আসানসোল, মালদা, দুর্গাপুরের বাড়ির পাশাপাশি ভবানীপুরের বাড়িতেও সিবিআই হানা দিয়েছে। আজ সকাল আটটা নাগাদ আসানসোলের হিরাপুর থানার পুরোনো হাট এলাকায় শ্যামল সিংহের বাড়িতে সিবিআই হানা দেয়। প্রাক্তন সিআইসিএফ বর্তমানে জমি ব্যবসায়ী শ্যামল সিংহ। আবার তাঁর কয়লার ব্যবসা আছে বলেও জানা গিয়েছে। ফলে তাঁর সঙ্গে লালার টাকার লেনদেন হত কিনা, কোন সূত্রে তাঁরা ঘনিষ্ঠ, এই সমস্ত কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, মালদার বাড়ি থেকে কিছু নথিও সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দা দল।
আবার লালা ঘনিষ্ঠ সৌরভের ভাড়া বাড়িতেও সিবিআই হানা দিয়েছে। দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি আনন্দনগরের ভাড়া বাড়িতে ভাড়ায় আছে বলে জানা গিয়েছে। আজ সকাল ৭ টা নাগাদ সিবিআইয়ের পাঁচ সদস্যর টিম সৌরভের বাড়িতে তল্লাশিতে আসে। প্রায় পাঁচ ঘন্টা পর দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ সৌরভের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। এক মহিলা আধিকারিকের নেতৃত্বে এই টিম আজ তল্লাশিতে আসে, কিছু মন্তব্য করতে চায়নি সিবিআই দল। সূত্রের খবর, বেশ কিছু নথি নিয়ে সৌরভের বাড়ি ছাড়ে সিবিআই দল।
সিবিআই নয়, সিট-এই ভরসা কলকাতা হাইকোর্টের। আনিস খান মৃত্যু মামলায় নিম্ন আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল না কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলবে। এই মুহূর্তে সিবিআই তদন্ত নয়। সিট তদন্তের কাজ চালিয়ে যাবে। ৯ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
মঙ্গলবার সিটের আইনজীবী অয়ন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, সুমন বালা সাউ, সিটের প্রধান (আইপিএস) সম্প্রতি অবসর গ্রহণ করবেন। তাঁর জায়গায় নতুন সিটের প্রধান নিয়োগ করুক আদালত। এর পরই প্রধান বিচারপতি জানান, এই নির্দেশ জারি করেছিল ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। এই বিষয়ে ওই বৃহত্তর বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে বা বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখ্যপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। তাই প্রধান বিচারপতির পরামর্শ, 'সিটের পক্ষ থেকে অবসরের বিষয়টা জানিয়ে আপনারা রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানান যে সিটের ওই প্রধানের জায়গায় অন্য কোনও আইপিএসকে নিযুক্ত করা হোক।'
প্রসঙ্গত, আনিস খানের পরিবার প্রথম থেকেই ঘটনাটিতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে এসেছে। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পরিবার। কিন্তু বিচারপতি মান্থা সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন। আদালত জানিয়েছিল, এখনই এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রয়োজন নেই। তদন্ত করবে রাজ্যের সংস্থাই। এর পর আজ কলকাতা হাইকোর্টও সিবিআই নয় সিট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অ্যাকশন মোডে সিবিআই (CBI)। সোমবার ফের ২ তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা। আর এবারে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার করা হল নিয়োগ সংক্রান্ত আরও নথি ও অ্যাডমিট কার্ড। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কাউন্সিলরের বাড়িতে এই নথিগুলো কোথা থেকে এল? আর এরই তদন্ত করছে সিবিআই।
জানা গিয়েছে, সোমবার বিধাননগরের কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা। উদ্ধার করা হয় ১৪ থেকে ১৫ টি চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড এবং ৫ থেকে ৬ টি বদলি সংক্রান্ত নথি। সমস্ত নথি, সিবিআইয়ের কাছে প্রাপ্ত নথির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও অ্যাডমিট কার্ডের প্রার্থীদের এবং যাঁদের বদলি সংক্রান্ত নথি পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে সিবিআইয়ের তরফে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, তাঁদের খুব শীঘ্রই তলব করার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় সিবিআই আধিকারিকরা। উদ্ধার হয় প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত এবং এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি। প্রায় ১০০ পাতার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। কলকাতা পুরসভার একজন কাউন্সিলরের বাড়িতে এত নিয়োগ সংক্রান্ত নথি কেন ছিল এ নিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই। প্রয়োজনে তাঁকেও তলবের সম্ভাবনা রয়েছে সিবিআইয়ের তরফে বলে সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, পার্থ ঘনিষ্ঠ বলেও রাজনৈতিক মহলে পরিচিত এই কাউন্সিলর।
রাজ্য জুড়ে বেড়ে চলা দুর্নীতির আবহেই গ্রুপ সি (Group C) মামলায় তৎপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। আদালতের ডেডলাইনকে মাথায় রেখেই ময়দানে নেমেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এবারে রাজ্যের এসএসসি গ্রুপ সি পদে চাকরি পাওয়া সমস্ত শিক্ষাকর্মীদের নথি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই। এর পরই নড়েচড়ে বসেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
আদালতের চাপ বাড়তেই অ্যাকশন মোডে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতির রহস্য শেষ করতে তৎপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ফলে শিক্ষকদের পর এবারে গ্রুপ সি পদে চাকরি পাওয়া ক্লার্কদের নথি চেয়ে পাঠাল সিবিআই। নিয়োগ সংক্রান্ত নথি চেয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। এর পর পর্ষদের পক্ষ থেকে সমস্ত জেলার স্কুল পরিদর্শকদের চিঠি দিয়ে গ্রুপ সি পদে চাকরি পাওয়া ক্লার্কদের নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সমস্ত নথি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের হাতে আসলেই তা সিবিআই-এর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেই পর্ষদ সূত্রে খবর।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ইতিমধ্যেই জেলবন্দি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী থেকে শিক্ষাদফতরের একাধিক কর্তা। এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি রয়েছেন তাঁরা। কিন্তু দুর্নীতির শিকড়ে পৌঁছনোর দিশা দেখতে এখনও ব্যর্থ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর মধ্যেই ঘাড়ে এসে পড়েছে আদালতের ডেডলাইন। সেই নির্দেশকে মাথায় রেখেই তদন্তের জাল গোটাতে তৎপর তাঁরা। তদন্তে মূল মাথার সন্ধানের অপেক্ষায় রাজ্যবাসী।
এবারে শাসক দলের নেতা ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হল বেশ কিছু ভুয়ো ওএমআর শিট, একটি মোবাইল ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) তৎপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজ্যুজুড়ে তৃণমূল একাধিক বিধায়ক-কাউন্সিলরদের বাড়িতে হানা দিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। তবে শুধুমাত্র শাসক দলের নেতারা নন, নেতা ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ঝান্টু শেখের বাড়িতেও হানা দেয় সিবিআই। এর পর তাঁর ছেলে সুজল আনসারির কলেজেও তল্লাশি চালায় সিবিআই। আর সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয় ভুয়ো ওএমআর শিট।
জানা গিয়েছে, আজ সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট অবধি সুজল আনসারির বাড়ি ও কলেজে তল্লাশি চালানো হয়। এর পর বেশ কিছু ভুয়ো ওএমআর শিট, একটি মোবাইল ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে সুজল আনসারির কলেজ থেকে বেরিয়ে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, বড়ঞা থানার কুলি মোড়ের বাসিন্দা ঝান্টু শেখ পেশায় ব্যবসায়ী। ঝান্টু শেখের ভালো নাম মোহাম্মদ আনারুল হক আনসারি। তাঁর বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকাল কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানদের নিয়ে তদন্তকারী সংস্থা হানা দেয়। জানা গেছে, এই ঝান্টু শেখ ছাড়াও তাঁর ছেলে সুজল আনসারির নামেও রয়েছে একাধিক বাড়ি, সম্পত্তি ও বেসরকারি কলেজ। দুপুর ১টা থেকে বড়ঞার এক কলেজে শুরু হয়েছিল তদন্ত। তারপর সুজল আনসারির ভাই চঞ্চল আনসারিকে নিয়ে আসা হয়েছিল। কলেজে বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশি চালানোর পর কোন কোন অ্যাকাউন্টে কত কত টাকা গিয়েছে, সেই সংক্রান্ত একটি ডাইরির পাশাপাশি চঞ্চল আনসারির মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু ওএমআর শিট উদ্ধার করে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা।
আরও জানা গিয়েছে, সুজল আনসারি বর্তমানে কোথায় আছে তা কেও জানে না। সূত্রের খবর, বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি এই সুজল আনসারির। এছাড়াও আজ ঝান্টু শেখকে তাঁর ছেলের বিষয়ে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, 'আমার ছেলে চোর। তবে শুধু তাই নয়, তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও চরম দুর্ব্যবহার করেন।'
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এর আগে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কলকাতার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। এবারে তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হল লক্ষ লক্ষ টাকা। সিবিআই সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সিবিআই তল্লাশি চালিয়ে ডোমকলের বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে ২৪ লক্ষ টাকার বেশি।
শাহী সভার পরই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তৎপর সিবিআই। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজ্যজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন সিবিআই আধিকারিকরা। এদিন ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়িতেও হানা দেয় সিবিআই। এর পর বেলা গড়াতেই সেখানে আনা হয় টাকা গোনার মেশিন। এর পরই সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি থেকে নগদ ২৪ লক্ষ ১২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বিধায়ক জাফিকুল ইসলাম আগেই স্বীকার করেছিলেন যে, তাঁর কাছে বর্তমানে ২৪লক্ষ ১২ হাজার টাকা ছিল। এই টাকা তিনি তাঁর জমি বিক্রি করে জমা করে রেখেছিলেন বাড়িতে। আর সিবিআই সূত্রেও জানা গিয়েছে যে, আনুমানিক সেই পরিমাণ টাকাই উদ্ধার হয়েছে। কাউন্টিং মেশিনটি আবার পুনরায় ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
লক্ষ্মীবারের সকালে বিধাননগরের কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর রাজারহাটের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই আধিকারিকরা। বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য দেবরাজের বাড়িতে প্রায় চার ঘন্টা ধরে চলে তল্লাশি। এরপর বেলা ১ টা নাগাদ দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়ি থেকে বেরোয় সিবিআই। সঙ্গে অবশ্য় দেখা যায় দেবরাজকেও। এরপর দমদম পার্কে দেবরাজের দ্বিতীয় বাড়িতে তল্লাশির উদ্দেশে যান সিবিআই আধিকারিকরা। এরপর এদিন দুপুর পৌনে ৩ টে নাগাদ তাঁর দমদম পার্কের দ্বিতীয় বাড়ি থেকে বেরোয় সিবিআই। জানা গিয়েছে, পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার কারণে দেবরাজের বাড়িতে এদিন হানা দিয়েছে সিবিআই।
সংবাদমাধ্য়মে সরাসারি দেবরাজ জানায়, এদিন সকালে ৮ টা নাগাদ কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সাতজন সিবিআই আধিকারিকের একটি দল সহ কেন্দ্রীয়বাহিনী আমার বাড়িতে আসে। তখন বাড়ি ছিলাম না। খবর পেয়ে তারপর বাড়িতে এসে দেখি সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে সিবিআই এসেছিল। 'আমি আমার ব্য়াঙ্ক ডিটেলস সহ পরিজনদের ব্য়াঙ্ক ডিটেলস যা যা নথি চেয়েছিলেন আমি সব দিয়েছি' তবে আমার বাড়ি তল্লাশি করে গুরুত্বপূর্ণ কোনও নথি পায় নি তাঁরা। আমাকে সার্চ লিস্ট দিয়ে গেছে সিবিআই। তিনি আরও বলেন পরবর্তী সময়ে যদি কোনও নথি দরকার পড়ে তাহলে আমি তা পেশ করব।
জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৯ টা ১০ টা নাগাদ প্রথমে তৃণমূল কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর রাজারহাটের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। কিন্তু সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না দেবরাজ। সিবিআই আধিকারিকদের দেখে দেবরাজের বাড়ির সদস্য়রা খবর দেন তাঁকে। এরপর তিনি কিছুক্ষণের মধ্য়ে গাড়ি করে নিজের বাড়ির সামনে আসেন এবং সিবিআই আধিকারিকদের নিজে নিজের বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করেন।
এবারে ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়িতে আনা হল টাকা গোনার মেশিন। তবে কি শাসক দলের এই বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার হবে কোটি কোটি টাকা! এই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। নিয়োগ দুর্নীতি মামালায় আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজ্যজুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে সিবিআই (CBI)। শাসক দলের একাধিক নেতা-বিধায়ক-কাউন্সিলরের বাড়িতে হানা দিয়েছে সিবিআই আধিকারিকরা। এরপরই জানা গিয়েছে, বেলা গড়াতেই জাফিকুল ইসলামের বাড়িতে ইতিমধ্যেই টাকা গোনার মেশিন আনল সিবিআই।
শাহী সফরের পরই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তৎপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতেই তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ। মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ ডোমকলের বিধায়ক জাফিকুল ইসলাম নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত বলেই সন্দেহ তদন্তকারীদের। আর তল্লাশি চলাকালীন টাকা গোনার মেশিন আনা হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই বিধায়কের বাড়ি থেকে কত টাকা উদ্ধার করা হয়, সেটাই এখন দেখার। উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কলকাতার বাড়িতে রাখা টাকা গুনতে মেশিন আনতে হয়েছিল।
শাহ সফরের পরের দিনই সক্রিয় সিবিআই। সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় সিবিআই তল্লাশি শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সল্টলেক, মুর্শিদাবাদ, কলকাতার কিছু জায়গায় তৃণমূল কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীর বাড়িতে সিবিআই হানা দেয়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সকাল থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাসগুপ্তের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি শুরু হয়েছে। ওদিকে ডোমকলের তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়িতে বৃহস্পতিবার হানা দিল সিবিআই আধিকারিকরা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত মানিক ঘনিষ্ঠ জাফিকুল জড়িয়ে আছেন কি না তার তদন্তেই এদিন সকালে ডোমকলে আসেন তারা। এর আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
গতকাল অর্থাৎ বুধবার ধর্মতলার সভা থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহ দুর্নীতি নিয়ে মমতা ও তৃণমূলকে টার্গেট করেন। তারপর দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজ্যজুড়ে বহু যায়গায় সিবিআই হানা শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, ডোমকলের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদেও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছে। বড়ঞায় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের গ্ৰেফতারের পর এবার ফের সিবিআই হানা বড়ঞায়, বড়ঞা থানার কুলি মোড়ের বাসিন্দা ঝান্টু সেখ পেশায় ব্যবসায়ী তার বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকাল সকাল কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানদের নিয়ে তদন্তকারী সংস্থা হানা দেয়। জানা গেছে এই ঝানটু শেখের বেশ কিছু বেসরকারি কলেজ ও বিভিন্ন জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকেরা ঝান্টু শেখের বাড়িতে পৌঁছেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ওদিকে পাটুলি, সল্টলেকে তৃণমূল কাউন্সিলরদের বাড়িতে হানা সিবিআইয়ের। পাটুলিতে নিয়োগ দুর্নীতির মূল মাথা পার্থ ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাসগুপের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। ওদিকে বিধাননগর পৌরনিগমের মেয়র পরিষদ সদস্য ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়িতে সিবিআই হানা। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই এর এই অভিযান বলে সূত্র মারফত খবর।
শহরে নতুন প্রতারণার ফাঁদ। সিবিআই পরিচয় দিয়ে এবার সক্রিয় প্রতারকের গ্য়াং। বুধবার এমনই এক প্রতরণার শিকার হলেন টেগোর স্ট্রিট এলাকার এক ব্যবসায়ী। অভিযোগ, ভুয়ো সিবিআইয়ের পরিচয়ে এক লক্ষ টাকা লুঠ করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে ইতিমধ্য়ে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে ওই ব্য়বসায়ী তাঁর কর্মচারীর হাতে টাকার ব্য়াগ দিয়ে পাঠায় গন্ত্যব্যে পৌছে দেওয়ার জন্যে। এরপর যাওয়ার পথে টেগোর স্ট্রিটের কাছে কয়েকজন সিবিআই পরিচয় দিয়ে সেই কর্মীকে ঘিরে ধরে। এরপর ওই কর্মীর কাছ থেকে তাঁর ব্য়াগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ওই ভুয়ো সিবিআইয়ের দল। অভিযোগ, এরপর ওই কর্মী ব্য়াগ দিতে অস্বীকার করলে তাঁর কাছ থেকে জোরপূর্বক ব্য়াগ ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় ওই ভুয়ো সিবিআইয়ের দল। জানা গিয়েছে, ছিনতাই যাওয়া ব্য়াগের ভিতরে এক লক্ষ টাকা ছিল।
এরপর ছিনতাইয়ের অভিযোগে পোস্তা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস এই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্য়াপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।